বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুই শতাধিক রাজাকারের আত্মসমর্পণে ওড়ে বিজয়ের পতাকা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১০ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:১২

শোষণ বঞ্চনাহীন সুখি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার মুক্তি সংগ্রামের সেই চেতনা সঠিক বাস্তবায়নের প্রত্যাশায় অজো দিন গুনছেন নড়াইলের সেইসব বীরসেনারা।

আজ ১০ ডিসেম্বর নড়াইল হানাদার মুক্ত দিবস। একাত্তর সালের এই দিনে নড়াইলের মুক্তি পাগল দামাল ছেলেরা মিত্র বাহিনীর কোন প্রকার সহযোগিতা ছাড়াই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সম্মুখযুদ্ধে পরাজিত করে।

মুক্তিযুদ্ধের বিশাল ক্যানভাসে নড়াইল দেশের একটি ক্ষুদ্র এলাকা হলেও মুক্তিযুদ্ধে এই জেলার রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস।

শোষণ বঞ্চনাহীন সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার মুক্তি সংগ্রামের সেই চেতনা সঠিক বাস্তবায়নের প্রত্যাশায় আজও দিন গুনছেন এখানকার সেইসব বীরসেনারা।

 

 

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে দশ লাখের বেশি মানুষের জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণে স্বাধীনতার যে আহ্বান ছিল নড়াইলের মুক্তি পাগল জনতা তা থেকে পিছ পা হয়নি। নড়াইল ছিল মুক্তিযুদ্ধে ৮নম্বর সেক্টরের অধীন রণ-কৌশলগত এলাকা। প্রথম দিকে ওসমান চৌধুরী এবং পরে মেজর মঞ্জুর নেতৃত্ব দেন এই সেক্টরের।

১৩ এপ্রিল যশোর অবস্থানের পরই হানাদাররা, তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদরদের সহায়তায় নড়াইলের নিরীহ জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় তৎকালীন নড়াইল মহাকুমার অস্ত্রাগারের তালা ভেঙে অস্ত্র সংগ্রহের মধ্য দিয়ে প্রতিরোধ সংগ্রামের সূচনা করে নড়াইলের মুক্তি পাগল জনতা ।

নড়াইলে একাত্তরের শহিদদের নামসহ ফলক। ছবি: নিউজবাংলা 

 

নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত তৎকালীন ওয়াপদা ডাক বাংলায় (বর্তমান পানি উন্নয়ন বোর্ড) পাকিস্তানি মিলিশিয়া ও রাজাকার বাহিনীর সবচেয়ে বড় ক্যাম্প ছিল। ৮ ডিসেম্বর নড়াইল মহকুমার লোহাগড়া থানা শত্রু মুক্ত হয় এবং কালিয়া থানাও মুক্তির দ্বারপ্রান্তে।

৭ ডিসেম্বর রাজাকারদের কূট কৌশলে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র ও মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান রাজাকারদের হাতে নিহত হন। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষিপ্ত হয়ে ৯ তারিখ দুপুরে রূপগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থানরত পাকিস্তানি রিজার্ভ ফোর্স, পুলিশ ও রাজাকারদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী চলা এ যুদ্ধে পাক বাহিনী ও রাজাকাররা পরাস্ত হলেও সদরের বাগডাঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান শহীদ হন।

এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা আরও সংগঠিত হয়ে ১০ ডিসেম্বর ভোর ৪টা থেকে রূপগঞ্জ জামে মসজিদ এলাকা, বর্তমান উৎসব কমিউনিটি সেন্টার এলাকা এবং মালেক মোল্লার দোতলায়  রূপগঞ্জ ওয়াপদায় পাকিস্তানি ও রাজাকার বাহিনীর ওপর গুলি শুরু করে। দুপক্ষের মধ্যে টানা ৭ ঘণ্টা ব্যাপক গোলাগুলির পর বেলা ১১টার দিকে পাকিস্তানি ও রাজাকার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এ সময় পাক অধিনায়ক বেলুচ কালা খান ২২ পাক সেনা ৪৫ জন রাজাকার ও বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রসহ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। শত্রুমুক্ত হয় নড়াইল।

মুক্তিযোদ্ধারা সারা রাত শহরে বিজয় উল্লাস করে জয় বাংলা স্লোগানে শহর প্রকম্পিত করে তোলেন এবং ১০ ডিসেম্বর নড়াইলকে পাক হানাদার মুক্ত ঘোষণা করে। পরে ১৪ ডিসেম্বর মেজর মঞ্জুর নড়াইলে আসেন এবং মুক্তি পাগল হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে ডাকবাংলো প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান।

নড়াইলে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদসহ নয় জন খেতাব পান।

এ বিভাগের আরো খবর