মিয়ানমার থেকে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের পরিবার পরিকল্পনার আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত।
বুধবার বেলা দুইটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা বোট ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে টিম পাঠাবে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর। তারা সেখানে থাকবে। সারা দেশে যেভাবে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর কাজ করে রোহিঙ্গারাও সেই সুবিধা পাবে। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিও এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে।
এর আগে মঙ্গলবার রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ভাসনচর পরিদর্শন করে। পরে তারা রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করে।
ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ম্যানেজ করা অবশ্যই চ্যালেঞ্জের কাজ। কারণ ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আছে। এটি সকলের জন্য চ্যালেঞ্জ। কিন্তু সত্য কথা হলো আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে অভ্যস্ত। আমাদের কাছে কক্সবাজারের চাইতে ভাসানচরে চ্যালেঞ্জ অনেক কম। বাংলাদেশ নেভি যেভাবে কাজগুলো গুছিয়ে নিয়ে গেছে, আমার মনে হচ্ছে সমস্যা এখানে অনেক কম।’
ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের আগামী তিন মাস রেড ক্রিসেন্ট খাদ্য সহায়তা দেবে জানিয়ে হাবিবে মিল্লাত বলেন, ‘যেহেতু সেখানে যাতায়াত ব্যবস্থার সমস্যা রয়েছে, রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে সে সহায়তাও করা হবে। সাথে সাথে সেখানকার পয়োনিস্কাশনেও সহায়তা করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের কাউকে হাতের কাজ, কাউকে সবজিচাষ শেখানো হবে, যাতে তারা ব্যস্ত থাকে। এ ছাড়া তারা যেহেতু মানসিক ক্ষত নিয়ে মিয়ানমার থেকে এসেছে, তাদের সাইকো স্যোশাল সাপোর্ট দেয়া হবে। আমরা তাদের বলে এসেছি কী কী লাগবে আমাদের জানান। আমরা আপনাদের পূর্ণ সুবিধা দেব।’
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘ভাসানচরে প্রায় ১৩টি আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা আমাদের সাথে কাজ করছে। আমাদের ভূমিকা তাদের আস্বস্ত করবে। ধীরে ধীরে তারা বিষয়টি বুঝতে পারবে। সময়ের সাথে সাথে তারা অবশ্যই স্বীকার করবে কক্সবাজারের চেয়ে ভাসানচরে তারা অনেক ভালো আছে।’
হাফিজ আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘ভাসানচর সম্পর্কে যে ধারণাটা প্রচার পেয়েছে, সেটার কারণ হলো অনেকে এখনো ভাসানচরে যায় নাই। আমাদের বিদেশি বন্ধুরা লাফ দিয়ে যেমন কক্সবাজারে যেতে পারছেন, ঠিক সে রকমভাবে ভাসানচরে যেতে পারছেন না। তাই এমনটা বলছেন। আস্তে আস্তে তারা সেখানে যেতে পারবেন। সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক হয়ে গেলে ভাসানচরে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।’
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে দুই দশক আগে জেগে ওঠা ভাসানচর দ্বীপে ১৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে ৪ ডিসেম্বর স্থানান্তরিত করা হয়েছে। কিন্তু হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ অনেকগুলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা রোহিঙ্গাদের এভাবে স্থানান্তর করা উচিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সোসাইটির ট্রেজারার লুৎফুর রহমান চৌধুরী হেলাল, আইনজীবী শিহাব উদ্দিন শাহীন, ব্যবস্থাপনা পর্ষদ সদস্য ডা. শেখ সফিউল আজম ও সোসাইটির চট্টগ্রাম ইউনিটের কর্মকর্তারা।