মন্ত্রণালয়ের নাম ব্যবহার করে নিয়োগ দুর্নীতি, সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দাবি করা বগুড়ার বহুল আলোচিত আব্দুল মান্নান সরকারের বিরুদ্ধেও তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সেই সঙ্গে বগুড়াসহ দেশের কয়েকটি জেলায় মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিয়োগ বন্ধেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত সোমবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সৈয়দ শাহজাহান আহম্মেদ স্বাক্ষরিত এ সম্পর্কিত বিজ্ঞপ্তি বগুড়া, যশোর, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বগুড়াসহ কয়েকটি জেলায় রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এসব কলেজের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দাবি করে বগুড়ার আব্দুল মান্নান সরকার নিয়োগ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বগুড়ায় তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে একাধিক মামলাও করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্বাহী পরিচালক পদবি ব্যবহারকারী আব্দুল মান্নান সরকারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি নিজেকে সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্বাহী পরিচালক ঘোষণা দিয়ে বগুড়া, যশোর, ঝিনাইদহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ওই প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অনুমতি দিয়েছেন।
এসব প্রতিষ্ঠান পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম ব্যবহার করে জনবল নিয়োগ করছে। ফলে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে বলে জানা যায়। এ ধরনের অবৈধ নিয়োগ দ্রুত বন্ধ করা প্রয়োজন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এমন অবস্থায় কথিত মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজগুলোকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেয়া হয়নি। এ কারণে অভিযোগগুলো তদন্ত করে নিয়োগ বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মান্নান সরকার মোবাইলে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই চিঠির বিষয়ে আমি জানি। আমাদের মজনু সাহেব (বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান) আমার বিরুদ্ধে দরখাস্ত দিয়েছেন। উনি চেয়ারম্যান হবেন। যশোরের এমপি সাহেব, ডিসি চিঠি দিয়েছেন। সবগুলো একত্র করে চিঠি দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কী মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপনের অনুমোদন দিই নাকি? এটা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আমি তো সরকারের অধীনে চাকরি করি না। আমার কী অনিয়ম! প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের একটি কমিটি আছে। বিষয়টি কমিটি দেখবে। আর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই।’
কয়েক বছর আগে বগুড়ায় জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমির (নেকটার) পরিচালক পদে থেকে বিভিন্ন অনিয়ম করার আবদুল মান্নান সরকারকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়। এই মামলায় তিনি কয়েক বছর জেলও খেটেছেন।