লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের মাতব্বর ও প্রভাবশালীদের ফতোয়ায় একঘরে হয়েছে একটি পরিবার।
ওই পরিবারের এক মেয়ের বিরুদ্ধে অবৈধ গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগ এনে গত শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় মসজিদে বসে ওই ফতোয়া দেন তারা।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, একঘরে করায় তারা থানায় কিংবা চেয়ারম্যানের কাছে বিচারও চাইতে পারছেন না।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মেয়েটির সঙ্গে একটি ছেলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মেয়েটি। পরে তার গর্ভপাত করানো হয়।
মেয়েটির বাবা বলছেন, ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক ভয়ভীতি দেখিয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা নেন। বিনিময়ে তিনি ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শুক্রবার ওই মসজিদে বৈঠক করে মাতব্বররা পরিবারটিকে একঘরে করার ফতোয়া দেন। এমন কি বাজার থেকে কেউ যেন তাদের কোনো জিনিস কিনে না দেন সে নির্দেশও দেন তারা।
এই প্রতিবেদক ভুক্তভোগী পরিবারটির সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও পারেননি। কারণ তাদের কারও সঙ্গেই কথা বলতেও নিষেধ করেছেন মাতব্বররা।
এ প্রসঙ্গে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি আরফান আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেহেতু মেয়েটি অন্যায় ও জঘন্য কাজ করেছে। তাই সবার সম্মতিতে তাদের একঘরে করে রাখা হয়েছে।’
ছেলেটির শাস্তির বিষয়ে জানতে চাইলে সেক্রেটারি চুপ করে থাকেন। এক পর্যায়ে বলেন, ‘মেয়ের পরিবার যতদিন পর্যন্ত বিয়ের কাবিননামা দেখাতে না পারবে ততদিন তাদের একঘরে রাখা হবে।’
ছেলেটির বাবা বলেন, ‘ওই মেয়ের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ইউপি সদস্য আবু বক্কর দায়িত্ব নিয়েছে বিচারের। তাকে টাকা-পয়সা দেয়া আছে। তিনি বিচারে যা করবেন তাই হবে।’
মীমাংসা ও টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিককে বেশ কয়েকবার ফোন করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। ভুক্তভোগী পরিবার কোনো অভিযোগ করেননি। ফতোয়াবাজির মতো ঘটনা ঘটায় আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’