মৌলভীবাজার মুক্ত দিবস আজ ৮ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মরনপণ লড়াই করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে মৌলভীবাজার থেকে বিতাড়িত করেছিল।
মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই ও ভারত থেকে মুক্তি বাহিনীর ক্রমশ ক্যাম্প অভিমুখে এগিয়ে আসার খবরে পাকিস্তানি বাহিনী ভীত হয়ে পড়ে। ওই দিন অবস্থা বেগতিক দেখে ভোরে মনু ব্রিজসহ বিভিন্ন স্থাপনা পাকিস্তানি হানাদাররা ধ্বংস করে সিলেটের দিকে পালিয়ে যায়। এর পর মুক্ত হয় মৌলভীবাজার শহর, ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সদর দফতর ছিল মৌলভীবাজার টিচার্স ট্রেনিং সেন্টারে। সেখানে ছিল একটি পাকা বাংকার। বাংকারের ভিতরে ছিল দুইটি কক্ষ। সারা জেলা থেকে লোকজন ধরে এনে সেই কক্ষগুলোতে চালানো হতো পাশবিক নির্যাতন। পাশের হোস্টেলগুলোও ছিল তাদের নির্যাতনের কেন্দ্র। পাশেই একটি কুয়ো ছিল যেখানে ফেলে দিয়ে বা গুলি করে ফেলে মেরে ফেলা হতো।
মৌলভীবাজার জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. জামাল উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে জেলায় মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনী শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে। যার ফলে প্রথমে শমসেরনগর, পরে জুড়ি, কমলগঞ্জ, রাজনগর, বড়লেখা, শ্রীমঙ্গল ও ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার শত্রুমুক্ত হয়।
পাক হানাদার বাহিনী টিকতে না পেরে মনু নদীর ওপর চাঁদনীঘাট ব্রিজসহ নানা স্থাপনা ধ্বংস করে সিলেটের দিকে চলে যায় এবং মৌলভীবাজার মুক্ত হয়।
মৌলভীবাজার মুক্ত দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ ও স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।