বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চাঁদপুরে স্বাধীনতার পতাকা ওড়ে ৮ ডিসেম্বর

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ১১:৪১

৭ ডিসেম্বর হাজীগঞ্জ ও মুদাফ্ফরগঞ্জে যৌথ বাহিনীর আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটতে শুরু করে। প্রায় ৩৬ ঘণ্টাব্যাপী যুদ্ধে বেশ কয়েকটি স্থানে পর্যুদস্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত চাঁদপুর থেকে পালাতে শুরু করে তারা।

আজ ৮ ডিসেম্বর। চাঁদপুর মুক্ত দিবস। মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণের মুখে ১৯৭১ সালের এই দিন ভোরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী চাঁদপুর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

চাঁদপুর থানার সামনে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন চাঁদপুরে বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সেসের (বিএলএফ) প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আউয়াল কিরন।

চাঁদপুরের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এমএ ওয়াদুদ জানান, ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল দুটি সেভারজেট বিমান থেকে পুরো চাঁদপুর শহরে এলোপাতাড়ি গোলাবর্ষণ করে মূল যুদ্ধের সূচনা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। ওই দিন গোলার আঘাতে পুরাণবাজার ও বড়স্টেশন এলাকায় দুজন নিহত হন।

এরপর ৭ ডিসেম্বর হাজীগঞ্জ ও মুদাফফরগঞ্জে যৌথ বাহিনীর আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটতে শুরু করে। প্রায় ৩৬ ঘণ্টাব্যাপী যুদ্ধে বেশ কয়েকটি স্থানে পর্যুদস্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত চাঁদপুর থেকে পালাতে শুরু করে তারা।

ওয়াদুদ বলেন, ৮ ডিসেম্বর ভোরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রায় ৫০০ সদস্য  যুদ্ধজাহাজে মেঘনা নদী দিয়ে পালানোর সময় চাঁদপুর বড় স্টেশন থেকে ট্যাংকের গোলায় সেটি ডুবিয়ে দেয় যৌথ বাহিনী। চিরতরে শত্রুর কবল থেকে মুক্ত হয় চাঁদপুর।

মুক্তিযুদ্ধের সময় চাঁদপুর শহরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রবেশ করে ৮ এপ্রিল। ওই দিন বিকেলে পাঁচ শতাধিক সেনা অস্ত্রবোঝাই একটি বহর নিয়ে শহরের অদূরে টেকনিক্যাল স্কুলে ক্যাম্প করে। সেনা কর্মকর্তারা অবস্থান নেন শহরের ওয়াপদা রেস্টহাউজ, রেলওয়ে রেস্টহাউজ ও জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে।

শহরে ঢোকার প্রথম দিনেই ওই স্কুলমাঠ থেকে গরু-ছাগল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে এক বৃদ্ধাকে গুলি করে হত্যা করে হানাদার বাহিনী। রাতের খাবার হিসেবে ওই বৃদ্ধার একটি গরু ও একটি ছাগলও রেখে দেয় তারা।

নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের তথ্য পেয়ে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ওই রাতেই পাকিস্তান সেনাদের ক্যাম্পে আক্রমণ করে। কিন্তু হানাদার বাহিনীর ভারী অস্ত্রের মুখে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা তেমন সুবিধা করতে পারেননি।

পরদিন ৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয় পাকিস্তানি সেনাদের নির্যাতন, নিপীড়ন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন ও নারীদের সঙ্গে বর্ববতা। ওই দিন থেকেই তারা চাঁদপুর শহরে সকাল-সন্ধ্যা কারফিউ জারি করে। এই অবস্থা চলে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

এরপর দীর্ঘ আট মাস ধরে সাধারণ লোকজনকে চাঁদপুর বড় স্টেশনের টর্চার সেলে নিয়ে অত্যাচার করে হত্যা করে পাকিস্তান সেনারা। এতে সহযোগিতা করত স্থানীয় দালাল, রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর সদস্যরা।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, চাঁদপুর শহরে পাকিস্তান সেনাদের আটটির মতো টর্চারসেল ছিল। এসব টর্চার সেলে নারী-পুরুষদের ধরে এনে নির্যাতন ও ধর্ষণের পর হত্যা করা হতো। এরপর হাত-পা বেঁধে লাশগুলো মেঘনায় ফেলা হতো।

চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের আট মাসে যারা শহিদ হয়েছেন, তাদের জন্য শহরে নির্মাণ করা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ ‘অঙ্গীকার’।

এ ছাড়া বোমা বানাতে গিয়ে চাঁদপুরের প্রথম চার শহিদের স্মরণে নির্মিত হয় ‘মুক্তিসৌধ’। সব শহিদের স্মরণে শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে ‘শপথ ফোয়ারা’ এবং সবশেষে চাঁদপুর বড় স্টেশনের মোলহেডের বধ্যভূমিতে ‘রক্তধারা’ নামের একটি শহিদ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর