বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ঐতিহাসিক মেহেরপুর’ মুক্ত হওয়ার দিন

  •    
  • ৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৪:৫৪

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল অস্থায়ী সরকার মেহেরপুরের মুজিবনগরে শপথ নেয়ার পরই মেহেরপুর পাক হানাদার বাহিনীর নজরে আসে। ১৮ এপ্রিল দুপুর থেকে চুয়াডাঙ্গা হয়ে মেহেরপুর শহরে প্রবেশের সময় সদর থানার আমঝুপি গ্রামে গণহত্যা ও লুটপাট চালায় তারা।

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা একসঙ্গে মেহেরপুর শহরে প্রবেশ করার আগেই পালাতে থাকে পাক হানাদার বাহিনী। এ সময় অবরুদ্ধ জনতা মিত্র বাহিনীর সঙ্গে মেতে উঠে বিজয়ের উল্লাসে। মুক্ত হয় মেহেরপুর।

মুক্তিযোদ্ধাদের চোরাগোপ্তা হামলায় পাক হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন সামরিক বলয় ভেঙে যায়। ৫ ডিসেম্বর রাত থেকে গোপনে মেহেরপুর জেলা ছাড়তে থাকে তারা।

১৯৭১ সালের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা মুফাজ্জেল হক জানান মুক্তিযুদ্ধ ও মেহেরপুর মুক্ত হওয়ার গল্প।

তিনি জানান, ১৭ এপ্রিল অস্থায়ী সরকার মেহেরপুরের মুজিবনগরে শপথ নেয়ার পরই মেহেরপুর পাক হানাদার বাহিনীর নজরে আসে। ১৮ এপ্রিল দুপুর থেকে চুয়াডাঙ্গা হয়ে মেহেরপুর শহরে প্রবেশের সময় সদর থানার আমঝুপি গ্রামে গণহত্যা ও লুটপাট চালায় তারা।

প্রবেশের এক মাসের মধ‍্যে মেহেরপুরে তাণ্ডব শুরু করে পাকবাহিনী। যুদ্ধের শেষের দিকে ৩ ডিসেম্বর থেকে পাকবাহিনীর ক্যাম্পগুলতে হামলার ছক করে মুক্তিযোদ্ধারা।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পাশের গণকবর ও স্মৃতিসতম্ভ। ছবি: নিউজবাংলা

 

৪ ডিসেম্বর জেলার করমদি ব্রিজসহ কয়েকটি পুল ও কালভার্টে মুক্তিযোদ্ধারা মাইন বিস্ফোরণ ঘটায়, যাতে গ্রামে ফিরে আসা মানুষের ওপর পাকিস্তানি বাহিনী সহজে হামলা করতে না পারে।

৫ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা একজোট হওয়ার উদ্দেশ্যে গাংনী বাজারের দিকে আসতে থাকেন। বিকেল থেকে জেলার বিভিন্ন জায়গায় হানাদার বাহিনীর ওপর গেরিলা হামলা করেন তারা। একই সঙ্গে শিকারপুর অ‍্যাকশন ক‍্যাম্প থেকে মুক্তিযোদ্ধারা কাজীপুর সাহেব নগর হয়ে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের বামন্দীতে হামলা চালান মুক্তিযোদ্ধারা। ওই রাত থেকেই পাকিস্তানি বাহিনী মেহেরপুর থেকে কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গার দিকে পিছু হঠতে শুরু করে।

কুষ্টিয়া সড়কের খলিশাকুন্ডি রোড দিয়ে পালানোর সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা তাহাজের নেতৃত্বে অন্য মুক্তিযোদ্ধারা শুকুরকান্দিতে পাকবাহিনীর গাড়িতে হামলা চালালে কয়েকজন হানাদার সেনা নিহত হয়। বাকিরা কুষ্টিয়া হয়ে পালিয়ে যায়।

অবশেষে ৬ ডিসেম্বর সকালে ব্রিগেডিয়ার জৈল সিংয়ের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীর বিশাল দল মেহেরপুরে প্রবেশ করে। এ সময় মুক্তিকামী জনগণ মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর সঙ্গে আনন্দ মিছিলে অংশ নেয়। মুক্ত হয় মেহেরপুর।

জেলা পরিষদ গেইটে অবস্থিত শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামফলক। ছবি: নিউজবাংলা

 

গাংনী উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মজনু রহমান নিউজবাংলাকে জানান, মেহেরপুর মুক্তির পর দেশ স্বাধীন হলেও মেহেরপুর জেলার অনেক মুক্তিযোদ্ধাই মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হুদা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ থাকার পরেও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার সঠিক ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভাতা পাচ্ছি না আমরা অনেকেই। প্রায় ১৮ বছর ধরে আমরা বঞ্চিত। এ সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও পাক্ষিক পশ্চিমাঞ্চলের সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস টিটো নিউজবাংলাকে জানান, জেলার বধ‍্যভূমিগুলো সংস্কারসহ স্মৃতিস্তম্ভগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন যাতে এই নিদর্শনগুলো দেখে বতর্মান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ ও মেহেরপুরের ইতিহাস জানতে পারে।

এ বিভাগের আরো খবর