মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে সাংবাদিক অনুজকান্তি দাশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শ্বশুর দিলীপ দাশের করা মামলায় শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটায় শ্রীমঙ্গল শহরতলীর পূর্বাশা আবাসিক এলাকা থেকে অনুজকে গ্রেফতার করা হয়।
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মুরারআবদা গ্রামের দিলীপ দাশের মেয়ে অনিতা রানী দাশের সঙ্গে পারিবারিকভাবে ২০১৭ সালে শ্রীমঙ্গল নিবাসী অনুজ কান্তি দাশের বিয়ে হয়। অনুজ শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সদস্য ও দৈনিক ইত্তেফাকের শ্রীমঙ্গল সংবাদদাতা।মামলার এজাহার ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আলমগীর হোসেনের কাছ থেকে জানা যায়, অসুস্থতার কথা বলে স্ত্রী অনিতা দাশকে প্রথমে শ্রীমঙ্গলের একটি প্রাইভট ক্লিনিকে ভর্তি করান অনুজ। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে পরে সিলেটের রাগীব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে অনিতা দাশ মারা যান।
হাসপাতাল থেকে অনিতার মরদেহ শ্রীমঙ্গলের পূর্বাশায় অনুজের বাসভবনে নেয়া হয়। তখন অনিতার বাবার বাড়ির লোকজন এসে অনিতাকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ তোলেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। বুধবার অনিতার মরদেহ শ্রীমঙ্গলে সমাহিত করা হয়।
প্রাথমিক তদন্ত শেষে নির্যাতনের কিছুটা সত্যতা নিশ্চিত হয়ে শুক্রবার রাতে মামলা রেকর্ড করে থানা এবং শনিবার বিকেলে পূর্বাশা এলাকা থেকে অনুজকে আটক করা হয়। আদালতের মাধ্যমে তাকে মৌলভীবাজার জেলহাজতে পাঠনো হয়েছে।
এ ব্যাপারে অনিতার বাবা দিলীপ দাশ নিউজবাংলাকে বলেন, বিয়ের কিছুদিন পর তিনি জানতে পারেন মেয়ের জামাই নেশা করেন। প্রায়ই জামাই মেয়েকে নির্যাতন করতেন। এ নিয়ে একাধিকবার সালিস হয়েছে। জামাই সর্বশেষ গত ২৮ নভেম্বর তার মেয়েকে নির্যাতন করে শ্রীমঙ্গল পলী ক্লিনিকে ভর্তি করান। খবর পেয়ে তিনি গিয়ে মেয়ের অবস্থা খারাপ দেখে সিলেটে নিয়ে রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যালে ভর্তি করান।
তিনি আরও বলেন, তার মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় তিনি অনুজ কান্তি দাশ, তার মা পুরবী রাণী দাশ ও বাবা নরেশ চন্দ্র দাশকে আসামি করে মামলা করেছেন। তিনি দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
অনুজের বড় ভাই পান্না লাল দাশ বলেন, অনিতাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। তিনি মেনিনজাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাদের কাছে হাসপাতালের রিপোর্ট রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালেক নিউজবাংলাকে বলেন, অনিতার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রকৃত সত্য জানা যাবে।