ম্রো জাতিগোষ্ঠীর বসতি উচ্ছেদ করে বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে পর্যটন স্পট ও পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ছাত্র সমাজ এবং সচেতন নাগিরকবৃন্দের ব্যানারে সোমবারের এই প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টায়। এরপর আদালত সড়ক হয়ে খাগড়াছড়ি সদরের শাপলা চত্ত্বরের পাশে মুক্তমঞ্চে সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পাহাড়ের ভূমি ও আদিবাসী জীবন সংস্কৃতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই পাহাড়ের ওপর এখন কিছু ব্যক্তি ও সংস্থার শকুনের দৃষ্টি পড়েছে। বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় ম্রো জাতি গোষ্ঠীর মানুষকে উচ্ছেদ করে পর্যটন স্পট ও পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ এই শকুনের দৃষ্টির ধারাবাহিকতার একটি ফল।
জেলা পরিষদ থেকে ইজারার নামে বান্দরবানের চিম্বুক-থানচি সড়কের পাশে ২০ একর জমিতে একটি কল্যাণ সংস্থা ও সিকদার গ্রুপ পাঁচ তারকা হোটেল ও পর্যটন স্পট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর এসেছে। এর প্রতিবাদে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ করে প্রতিবাদ চলছে।
খাগড়াছড়িতেও বক্তারা বলেন, পাহাড়ে ‘খাস জমি’ বলতে কোন কিছুই নেই। পাহাড়ের সকল ভূমি ঐ এলাকার বাসিন্দাদের সামাজিক মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত। পাহাড়ের ভূমি ব্যবস্থা ১৯০০ সালের রেগুলেশন অনুসারে পরিচালিত হয়। এই রেগুলেশনে পাহাড়ের সামাজিক মালিকানা স্বীকৃত।
সমাবেশ থেকে বক্তারা জেলা পরিষদ কর্তৃক সম্পাদিত তথাকথিত লিজ চুক্তি বাতিল, উন্নয়নের নামে পাহাড়িদের উচ্ছেদ বন্ধ করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন কার্যকর করার আহ্বান জানান।
এ ছাড়া পাহাড়ের তথাকথিত উন্নয়নের নামে যাই করা হোক না কেন, তা স্থানীয় বাসিন্দাদের অবহিত করার দাবি জানান তারা।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের সভাপতি নিঅং মারমা, বাংলাদেশ ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের সভাপতি প্রেম ময় ত্রিপুরা, নিয়ংগ্য মারমা, ত্রিপায়ন ত্রিপুরা প্রমুখ।