রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কমপ্লেক্সের একটি কক্ষ মোফাজ্জল হোসেন (৩০) নামের একজনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মোফাজ্জল হোসেনের বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের যুগলপুর গ্রামে। বাবার নাম ইসরাফিল মন্ডল।
শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে তিনি খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
গত ২০ নভেম্বর হরিপুর ইউনিয়নের নলপুকুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে রিয়ার সঙ্গে পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয়েছিল।
মোফাজ্জলের স্ত্রী রিয়ার অভিযোগ, তার স্বামী মাদকাসক্ত ছিলেন। এজন্য তিনি শ্বশুরবাড়িতে যাবেন না বলে জানিয়েছিলেন। তাই মোফাজ্জল শুক্রবার তাকে নিতে যান।
সেখানে গিয়ে মদ্যপ অবস্থায় এলাকার লোকজন ধরে তাকে শ্বশুরবাড়িতে দিয়ে আসেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে ধরে চেয়ারম্যানের কাছে তুলে দেন বলে জানান স্থানীয়রা।
চেয়ারম্যান বজলে রেজভী আল হাসান মুঞ্জিল জানান, দেনমোহরের ১ লাখ ২০ হাজার আর খরচ বাবদ আরও ১১ হাজার টাকা দিলে তালাক দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এই টাকা দিতে না পারায় শনিবার রাতে মোফাজ্জলকে আটকে রাখা হয় পরিষদের একটি কক্ষে। রোববার সকালে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
নিহত মোফাজ্জলের বড় ভাইয়ের দাবি, তার ভাই আত্মহত্যা করতেই পারেন না। তাকে খুন করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘শনিবার বিকেল থেকে ইউপি চেয়ারম্যান তার ভাই মোফাজ্জলকে আটকে রেখেছিল। ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা না দিলে ছাড়া হবে না বলে তিনি জানিয়ে দেন। চেয়ারম্যান ও মোফাজ্জলের শ্বশুরবাড়ির লোকজনই তাকে হত্যা করেছে।’
হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান বজলে রেজভী আল হাসান মুঞ্জিল দাবি করেন, ওই যুবক আত্মহত্যা করেছে। কয়েকদিন আগে তার বিয়ে হয়। কিন্তু মাদকাসক্ত হওয়ায় স্ত্রী তার সঙ্গে সংসার করতে চাননি। রোববার ইউপি কার্যালয়ে বসে তাদের মিমাংসা হওয়ার কথা ছিল।
চেয়ারম্যান বলেন, শনিবার মদ্যপ অবস্থায় পবা উপজেলার হড়গ্রাম এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে শ্বশুরবাড়িতে দিয়ে যান। কিন্তু তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে বাড়িতে রাখতে চাননি। বিষয়টি তার পরিবারকেও জানানো হয়। পরে সিদ্ধান্ত হয় স্বামী-স্ত্রীর তালাক হবে।
শনিবার চৌকিদাররা ঘরের জানালায় তার লাশ ঝুলে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সিআইডিকে বিষয়টি আগেই জানানো হয়। রোববার দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি আত্মহত্যা নাকি অন্যকিছু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত করে বলা যাবে।’
রাজশাহী সিআইডির ইন্সপেক্টর আনিসুর রহমান জানান, ঘটনা শোনার পর সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেছেন।