শরীয়তপুর সদর উপজেলায় কীর্তিনাশা নদীর ভাঙনে হাজরাসার এলাকায় পালং শিবচর সড়কের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে শহরের সঙ্গে জেলার সাতটি ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিঘ্ন ঘটছে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে কয়েকটি জেলার যাতায়াতে।
এ অবস্থা চলছে চার বছর ধরে। কিন্তু ভাঙা সড়কটি পুনর্নির্মাণ কবে শুরু হবে, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) বলছে, সড়কটি তাদের দায়িত্বে নেই। পৌরসভা বলছে, সড়কটি মেরামত এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কাজ। অন্যদিকে পাউবো বলছে, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প পরিকল্পনা জমা দেয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে শুরু হবে কাজ।
২০০০ সালে শরীয়তপুরের সদর উপজেলার সঙ্গে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার যাতায়াতের জন্য ১৫ কিলোমিটার এই সড়কটি নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে সড়কটি কীর্তিনাশার ভাঙনের কবলে পড়ে। এর ২০০ মিটার অংশ ধসে পড়েছে।
সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শতাধিক পারিবার। ভুক্তভোগী হয়েছে সদর উপজেলার তুলাসার, বিনোদপুর, মাহমুদপুর, চন্দ্রপুর, চিকন্দি, ডোমসার ও শৌলপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোর সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ায় বেড়েছে সময় ও অর্থের অপচয়।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর এলজিইডির প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা নির্মাণ করলেও এখন সড়কটি আমাদের দায়িত্বে নেই। পুরো সড়কের তিন কিলোমিটার পৌর এলাকায় পড়েছে। পৌরসভা আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়হীনতায় সড়কটি চার বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে।’
তুলাসার ইউনিয়নের দুধ বিক্রেতা আবদুস সালাম বলেন, ‘এই রাস্তাডা ভাইঙ্গা যাওয়ার কারণে তিন ডবল ভাড়া দিয়া ঘুইরা যাইতে হয়। অনেক সময় বাজার পাই না। এতে আমগো লোকসান হইতাছে। সরকার এইডা দ্যাখলে আমগো ভালো হয়।’
পালং শিবচর রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে মানুষ। ছবি: নিউজবাংলা
গয়াতলা বাজারের ব্যবসায়ী বাদশা খালাসী জানান, শরীয়তপুর থেকে সহজে মালামাল নিয়ে বাজারে আসতেন তিনি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে অনেক দূর ঘুরে মালামাল আনতে হচ্ছে। এতে খরচ বেড়েছে; সময়ও লাগছে বেশি।
শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল জানান, সড়কটি পৌর এলাকার মধ্যে হলেও এটি পৌরসভার সড়ক নয়। এটি এলজিইডির সড়ক। এলজিইডি সড়কটি পৌরসভাকে এখনও বুঝিয়ে দেয়নি।
তিনি আরও জানান, সড়কটি মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। কিন্তু নদী ভাঙন থাকায় বিশ্বব্যাংক কাজটি করতে পারেনি। যদি ভাঙনের ওই অংশটি পাউবো মেরামত করে দেয়, তাহলে পৌরসভা থেকে সড়কটি মেরামত করে দেয়া হবে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আহসান হাবিব জানান, কীর্তিনাশার ভাঙন মোকাবিলায় একটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা রয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে আগামী বর্ষার আগেই কাজ শুরু করা যাবে।