ঘুষের প্রতিবাদ করায় শেরপুরের নলিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আব্দুল জলিলের হামলায় আহত সুজন মিয়ার (৩৫) মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার ১১ দিন পর শনিবার রাতে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমদ বাদল নিউজবাংলাকে এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ১০ নভেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড প্রদানে ঘুষ গ্রহণের প্রতিবাদ করেছিলেন সুজন। ওই সময় সুজনের ওপর লোকজন নিয়ে হামলা করেন রামচন্দ্রকুড়া ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল জলিল।
ওসি বছির জানান, আব্দুল জলিল প্রায় দুই বছর আগে কেরেঙ্গাপাড়া গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী আব্দুল হালিমের (২৩) কাছ থেকে চার হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে তার নামে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেন। সম্প্রতি স্মার্ট কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র কোনটিই না থাকায় অনলাইনে নিবন্ধন সংক্রান্ত জটিলতায় পড়েন হালিম। বিষয়টি বুঝতে না পেরে ঘুষ লেনদেনের ঘটনা গণমাধ্যমকর্মী ও এলাকাবাসীকে জানান তিনি।
নালিতাবাড়ীর ওসি জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য জলিলের সঙ্গে হালিমের প্রতিবেশী সুজন মিয়া ও ফারুকদের ঘুষ লেনদেনের ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জলিল তার লোকজন নিয়ে সুজনের মুদি দোকানে হামলা চালান। ওই সময় কোপে সুজন ও তার ভাই ফারুকসহ ছয় জন আহত হন। দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
অন্যদিকে জলিল ও তার পক্ষের চার জন আহত হন। উভয় পক্ষের আহত ১০ জনকে শুরুতে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে সুজনসহ দুজনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অবস্থার অবনতি হলে সুজনকে ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন সুজন।
বাড়ি এসে আবারও অবস্থার অবনতি হলে ২০ নভেম্বর তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত ৯টার দিকে মৃত্যু হয় তার।
এ ঘটনায় গত ১১ নভেম্বর সুজনের ভাই সুমন ইউপি সদস্য আব্দুল জলিলসহ পাঁচ জনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।
ওসি বছির জানান, আগের হত্যাচেষ্টার মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।