‘কিছু কথা বলতে এসেছি বাবা। যদি তুমি মন দিয়ে শোন; তবে তোমার ভাগ্যের দুয়ার খুলে যাবে। তোমার পবিত্র জবান থেকে যে আশা করবে; সেই আশাই পূরণ হবে। বাবাজি, বাজান! তবে এই পবিত্র বাণী কাউকে বলা যাবে না। গোপন বাণী, গোপন রাখতে হবে।’
‘বাবা তুমি যে গুনাগার বান্দা, এই গুনা থেকে মুক্তি পেতে....তিন হাজার জন জিন জাতি আমরা যে সম্পদগুলো পাহারা দিচ্ছি; খাস মনে, খাস দিলে এই জিনদের মাঝে মিষ্টি মুখ করাতে হবে বাবাজি।’ ‘আব্বা, পাঁচ-দশ টাকা দামের ১৫ টাকার মধ্যে একটি করে খানা খাওয়াতে হবে জিনদের। বাজান, এই খানা খাওয়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই এই সম্পদ তোর হাতে তুলে দেয়া হবে।’
এভাবেই গভীর রাতে ঘুমন্ত মানুষকে মোবাইলে ফোন দিয়ে নানা প্রলোভন ও অর্থ-সম্পত্তি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রতারণা করে আসছিল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের একটি প্রতারক চক্র। সেই চক্রের এক জন রহিম বাদশা।কীভাবে মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেয় চক্রটি; গ্রেফতারের পর তার একটি ভিডিও মানুষকে সচেতনার জন্য সোস্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে পুলিশ। সেই ভিডিওটি বানানোর সময় থানার কক্ষে রহিম বাদশার কথা শুনে হঠাৎ ভিডিওর শেষে পুলিশ সদস্যারা হেসে ওঠেন। পুলিশের এমন অট্ট হাসিতে নিজেকে সামাল দিতে পারেনি বাদশা। তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তিনিও হেসে ওঠেন।
পুলিশ বলছে, গভীর রাতে ঘুমন্ত মানুষকে মোবাইলে ফোন করে নানা প্রলোভন ও অর্থ-সম্পত্তি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রতারণা করে আসছিল জিনের বাদশা পরিচয়ধারী এই চক্রটি। এর আগেও চক্রের বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেহেদী হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, গ্রেফতার রহিম বাদশার নামে কুমিল্লা, বরগুনা, বগুড়া ও গাইবান্ধা জেলায় প্রতারণা, মাদক ও নারী নির্যাতনসহ সাতটি মামলা রয়েছে। গোপন খবরে অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর গ্রাম থেকে দুইশ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। রহিম বাদশা ওই গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে।
বিকেলে গ্রেফতার রহিমকে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক পার্থ ভদ্র তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলেও জানান ওসি।