বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বলেশ্বর ও বিষখালীনদী ঘেঁষা জিনতলা ও পদ্মা বেড়িবাঁধ। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরের প্রবল জলস্রোত তাণ্ডব চালায় এই বাঁধে।
পরে ওই স্থানে নির্মাণ করা হয় বেড়িবাঁধ দুটি। এরপর ১৩ বছরে প্রতিবারই ভেঙেছে দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাঁধ দুটি। সংস্কারও করা হয়েছে প্রতি বছর। কিন্তু জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করায় উপকার পাননি স্থানীয়রা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ইউপি সদস্য আবু বকর সিদ্দিক জানান, গত ১৩ বছরে ১৩ বার বাঁধ দুটি সংস্কার হয়েছে। এতে সরকারের অর্থ গচ্চা গেলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
সিডরে দেশের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে বরগুনা পাথরঘাটা উপজেলা একটি। প্রলয়ঙ্করী ওই ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলায় পদ্মা রুহিতা এলাকার আব্দুর রহমানের পরিবারের ১১ জন, জাকির হাওলাদারের পরিবারের সাতজনসহ ৫২ জন মারা যান। সর্বস্ব হারান অনেকে।
১৩ বছর আগের সেই ক্ষত এখনও মোছেনি এই জনপদে। এরমধ্যে প্রতিবছর বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অনেকে।
সিডরের পর থেকে এখানে ক্রমাগত ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছেন অর্ধশতাধিক পরিবার। তাদের দাবি, অন্তত ভিটেমাটিটুকু টিকিয়ে রাখতে সরকার ওই স্থানে টেকসই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করুক।
সর্বশেষ চলতি বছরের আগস্টে সামুদ্রিক জোয়ারে পদ্মা-জিনতলা এলাকার এক কিলোমিটার বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এতে জলবন্দি হয়ে পড়েন আশপাশের আটটি গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা বলেন, পদ্মা ও জিনতলা এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা না হলে পাশ্র্ববর্তী এলাকাগুলো নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কাইছার আলম বলেন, ‘বরগুনা জেলার ২২টি পোল্ডারে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ টেকসই সংস্কার ও ভাঙন রোধে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এটি অনুমোদন পেলে বরগুনার কোনো এলাকায় আর সমস্যা থাকবে না।’
বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, আগস্টে বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার পর তিনি ঘটনাস্থলে যান। আপাতত দ্রুত সংস্কার করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্প হাতে নিয়েছে। অনুমোদন হলেই টেকসই সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হবে।