লাইসেন্সহীন হাসপাতাল বন্ধের নির্দেশ পাওয়ার পর পর চট্টগ্রামে একটি হাসপাতাল সিলগালা করে দিয়েছে প্রশাসন। রোগীদেরকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বির নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে বন্ধ করে দেয়া হয় চট্টগ্রামে চট্টেশ্বরী রোডে সিটি হেলথ ক্লিনিক।
সিভিল সার্জন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনুমোদন ছাড়া হাসপাতালটি পরিচালিত হচ্ছিল। এজন্য হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’
অভিযানের সময় ১০ শয্যার সিটি হেলথ ক্লিনিকে ৭ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। সেসময় চারজন রোগী ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি চলে যান। বাকি তিন রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘এলাকার ভেতর হওয়ায় সিটি হেলথ ক্লিনিকটিতে মানুষের আনাগোনা কম। ক্লিনিকটি অনুমোদন ছাড়া চলছিল। হারুন নামে এক লোক সেটির মালিক। অভিযানের খবর পেয়ে সটকে পড়েন।
‘অভিযানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি অনুমোদনহীন। ক্লিনিকটিতে সন্ধ্যার পর কোনো চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। পরিবেশও অস্বাস্থ্যকর। ক্লিনিকের ফ্রিজে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া গেছে। এজন্য তাৎক্ষণিক সিলগালা করে দেয়া হয়।’
চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে নির্দেশনা এসেছে। কোনো চিকিৎসাকেন্দ্রে অনিয়ম ও ত্রুটি পাওয়া গেলে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এর আগে সিভিল সার্জন নগরের হালিশহর এলাকায় আল-আমিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে আরও একটি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে যান। এ সময় হাসপাতালটির এ-ক্সরে বিভাগে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় বিভাগটি সিলগালা করে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ‘তিন হাজার’ হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ
সারা দেশে অনুমোদন ছাড়া চলা সব হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে গত সোমবার দেশের সব সিভিল সার্জনের কাছে নির্দেশ গেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল বিভাগের পরিচালক পরিচালক ফরিদ উদ্দীন মিয়া নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, তাদের তথ্য বলছে, দেশে অনুমোদনহীন হাসপাতালের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। বন্ধ করে দেয়া হবে সবগুলো।
বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক নিয়ে অভিযোগের পাহাড় জমার পর চলতি বছর সরকার এই খানে শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ নেয়। লাইসেন্স নবায়ন বা আবেদন করতে গত ২৩ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়।
এই সময়ের মধ্যে জমা পড়ে ১৪ হাজারের মতো আবেদন। কথা ছিল যারা আবেদন করবে না, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে হয়নি অভিযান।