বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রবীণদের প্রতি যত্নশীল হওয়া জরুরি

  • সম্পাদকীয়   
  • ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২২:৩৫

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের প্রবীণ হিসেবে ধরা হয়। বয়স বৃদ্ধির জন্য তাদের নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। পরিবার ও সমাজে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। তবুও তারা অনেক সময় অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে অবহেলার স্বীকার হন।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, কিডনি, হৃদরোগসহ ইত্যাদি অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এই সময়ে যদি তাদের সঠিক যত্ন না নেওয়া হয়।তাহলে শারীরিক সমস্যার সাথে সাথে মানসিক সমস্যাও দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেতে থাকে। পারিবারিক ও সামাজিক সাহায্য ছাড়া প্রবীণদের জীবন অসহনীয় পর্যায়ে চলে যেতে পারে।

আগের মতো এখন আর যৌথ পরিবার তেমন দেখা যায় না। পরিবারের ছেলেমেয়েরা তাদের উচ্চশিক্ষা ও চাকরির জন্য পরিবার থেকে দূরে গেল তাদের জীবনযাপন শুরু করে। এতে একটা পর্যায়ে বয়স্করা ধীরে ধীরে একা হতে শুরু করে। প্রবীণরা অধিকাংশ সময় আর্থিক সংকট, নিঃসঙ্গতা, অবহেলা, এবং প্রতারণার শিকার হন।

প্রবীণদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, চিকিৎসা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা যদি রাষ্ট্র পক্ষ থেকে সরাসরিভাবে ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়। তবে প্রবীণদের জন্য এই কঠিন সময়টা কিছুটা সহজ হবে। প্রবীণরা তাদের পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাদের মাধ্যমে একটা পরিবার সুপরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হয়। যা শুধু পরিবার নয়, দেশ ও জাতি গঠনে মূল্যবান দায়িত্ব পালন করে। তাদের প্রাপ্য সম্মান ও সহযোগিতা পাওয়ার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। কারণ তাদের ছাড়া একটা সুষ্ঠু জাতি গঠন অসম্ভব।

প্রবীণরা যেন পরিবারের সাথে নিরাপদ পরিবেশে থাকতে পারে সেই অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাদের জন্য সকল ধরনের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে যদি সম্পূর্ণ সেবা দেওয়া সম্ভব না হয়। তাদের জন্য সরকারিভাবে সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রবীণদের প্রতি আমাদের আরও শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবার গড়ে ওঠার ফলে পরিবারের বাচ্চারা তাদের দাদা, দাদি ও নানা নানির সাথে আগের মতো সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারছে না। তারাও সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে পারিবারিক পরিবেশ দিন দিন ভঙ্গুর হয়ে যাচ্ছে। প্রবীণদের সাথে বাচ্চাদের সুসম্পর্ক রক্ষার মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্মকে সামাজিকতা রক্ষার দায়িত্ব পালন সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে। এতে করে পারিবারিক সম্পর্ক দৃঢ়ভাবে টিকে থাকবে। প্রবীণদের জীবনও স্বাভাবিক ভাবে সামজিক ও পারিবারিক পরিবেশে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।

আমাদের দেশে সরকারিভাবে সমাজসেবা অধিদপ্তর বয়স্ক ভাতা কর্মসূচি পালন করে। তবে তা প্রবীণদের জন্য যথেষ্ট নয়। বয়স্ক ভাতার সাথে প্রবীণদের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন ধরনের মানসিক সংস্থা গঠন ও সেবাদান কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে বয়স্ক নাগরিকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা উচিত। যা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের মাধ্যমে পরিবারে ও সমাজে মর্যাদা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

প্রবীণরা আমাদের পারিবারিক সম্পর্কের মূল ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত করেন। তারা শুধু পরিবার নয়, সামজিক ও দেশের সুনাগরিক গঠনে দায়িত্ব পালন করেন। আমাদের সমাজে তাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই নতুন প্রজন্মকে সুন্দর ভবিষ্যৎ উপহার দিতে হলে প্রবীণদের প্রতি আমাদের সকলের আরও মানবিক ও দায়িত্বশীল হতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর