দেশের বোরো ধানের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণার কৃষকদের মাথায় হাত। হঠাৎ অচেনা এক দুর্যোগ ‘গরম বাতাসে’ এসে এলোমেলো করে দিয়েছে সব। পুড়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান। একই দশা গোপালগঞ্জেরও কয়েকটি উপজেলায়।
প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, গরম বাতাসে তিন জেলায় অন্তত ৪২ হাজার হেক্টর বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত এর সঠিক কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না কৃষিবিজ্ঞানীরা। কৃষকদের স্বপ্ন তছনছ করে দেয়া এই দুর্যোগকে কৃষিবিদদের কেউ বলছেন ‘হিট শক’, কেউ বলছেন ‘লু হাওয়া’। আর আবহাওয়াবিদদের দাবি, বাংলাদেশে এখন যে তাপমাত্রা তাতে লু হাওয়া বয়ে যাওয়ার মতো কোনো অবস্থা নেই।
নেত্রকোণা
জেলাটিতে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা।
চলতি বোরো মৌসুমে নেত্রকোণার ১০ উপজেলায় ১ লাখ ৮৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছিল। আবহাওয়া পরিস্থিতি এত দিন চমৎকার থাকলেও রোববার হানা দেয় অচেনা বিপত্তি।
সেদিন সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কালবৈশাখির দমকা বাতাস বয়ে যায় জেলার ওপর দিয়ে। এই বাতাস শুরুর কিছু সময় পর বইছিল গরম বাতাস। এই প্রথম তখন ১০ থেকে ১৫ মিনিট নাগাদ বয়ে যাওয়া গরম বাতাসে ফুল অবস্থায় থাকা জমির পুরোটাই শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
জেলার প্রতিটি উপজেলাতেই কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে মদন, খালিয়াজুরী ও কেন্দুয়া উপজেলায় বেশি ক্ষতি হয়েছে।
মদনে ৪ হাজার হেক্টর, কেন্দুয়ায় ২ হাজার ৭০০ হেক্টর ও খালিয়াজুরী উপজেলায় ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ফসল পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, প্রাথমিকভাবে ১৪ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১১৬ কোটির বেশি টাকা।
ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, তারা ঋণ করে ফসল করছেন। হাওরাঞ্চলে একটাই ফসল হয়। এখন ঋণ পরিশোধ হবে কীভাবে, আর কীভাবে সংসার চলবে, সেটি বুঝে উঠতে পারছেন না তারা।
মদন উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আব্দুর রহমান বলেন, ‘জীবনে এইরম গরম বাতাস দেখছি না। অক্করে আগুনের লুক্কার মতো গরম। ঝড় কইম্যা গেলে ঘরতে বাইর অয়া দেহি পুড়ার গন্ধ। পয়লা বুঝতে পারছি না। বেইন অক্ত (সকালে) হাওরে গেয়া দেহি, ধানের ভিতরে যে চাউল অয় হেইডা অক্করে ঝইরা পুইড়া গেছে।’
কেন্দুয়া উপজেলা রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের কইলাটি গ্রামের কৃষক মজিবুর রহমান বলেন, ‘রাইতে যে হাওয়াডা অইছে এইডায় জমি পুইরা গেছেগা। আমার ২৫ কাঠা জমির ধান শেষ অইয়া গেছে।’
খালিয়াজুরী উপজেলার আদমপুর বোয়ালবাড়ি গ্রামের কৃষক বাবলু চৌধুরী এবার ৮ একর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। তার অর্ধেক জমির ফসলই নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘ভাটি অঞ্চলে একডাই ফসিল অয়। ঋণ ফিন কইরা বোরো করছিলাম। সব গেছেগা। অহন আমরা কী খাইয়া বাঁচব।’
মোহনগঞ্জ উপজেলার বানিহারি গ্রামের কৃষক আইন উদ্দিন বলেন, ‘কী কষ্ট কইরা রেনাদেনা কইরা একডাই ফসিল করলাম। সব নষ্ট অইয়া গেছে। কিবায় চলাম?’
কিশোরগঞ্জ
গরম বাতাসের প্রভাবে গত রোববার কিশোরগঞ্জে হাজার হাজার একর জমির বোরো ধান পুড়ে গেছে।
জেলার ১৩টি উপজেলার হাওরে মাত্র ১০ মিনিটের গরম বাতাসে প্রায় ২৬ হাজার হেক্টর জমির ধান পুড়ে গেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ২০০ কোটি টাকার মতো।
জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, বোরো ধানের জমি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে ৩ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমির। আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমির ধান।
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার রায়টুটী ইউনিয়নের কৃষক পালন মিয়া। এই চাষি ধান আবাদ করেছিলেন ছয় একর জমিতে। আশা করছিলেন ধান পাবেন কমছে কম চার শ মণ। কিন্তু সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। মাত্র ১০ মিনিটের গরম বাতাসে নষ্ট হয়েছে কৃষক পালন মিয়ার জমির ফসল।
রায়টুটী এলাকার তলার হাওরে ১২ একর জমি আবাদ করেছিলেন কৃষক আ. হেকিম। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত বছর ধানের দাম বেশি ফাইছি, হের লাইগ্যা এইবার আরও বেশি কইরে জমি করছি। জমির মইধ্যে ফসলও অইছিন বালা। কিন্তু গত রাইতেই ১০ মিনিডের একটা গরম বাতাসে সব পুইড়ে ছারকার কইরে দিসে। আমার সত্তর বছর বয়সে এই যাইত্তে বাতাস আমি জীবনেও দেখছি না। সহালে ঘুমেত্তে উইট্টে জমিতে গিয়া দেহি সব শেষ।
কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি কৃষি বিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছি। তালিকা হাতে পেলে সহায়তা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে লিখিত পাঠানো হবে।’
গোপালগঞ্জ
গরম বাতাসে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে গোপালগঞ্জের বোরোচাষিরাও। জেলা কৃষি বিভাগ ক্ষতির পরিমাণ এখনও সুনির্দিষ্ট করতে না পারলেও তাদের ধারণা অন্তত হাজার- বারো শ হেক্টর জমির ধান পুড়ে গেছে।
জেলার কৃষি বিভাগ বলছে, অন্তত ১০টি ইউনিয়নে এই হাওয়ার প্রভাব দেখা গেছে। হঠাৎ করে এ ধরনের ঘটনায় একদিকে যেমন কৃষকেরা হতবাক অন্যদিকে, এর জুতসই কারণ খুঁজে পাচ্ছে না কৃষি বিভাগ।
এর আগে এ ধরনের ঘটনা কোথাও ঘটেছে কি না কারও জানা নেই। যে কারণে গোপালগঞ্জ কৃষি অফিস থেকে বিষয়টির ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অবস্থিত ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়েছে।
গত রোববার রাতে ৩০ মিনিটের মতো জেলার বিভিন্ন এলাকায় গরম বাতাস বয়ে যায়। আর এতে ক্ষেতে উঠতি বোরো ধান যেগুলেতে কেবল ধানের শিষ (দুধ) এসেছে সেই ধান সব চিটায় পরিণত হয়ে সাদা বর্ণ ধারণ করে। আর এতে জেলার শত শত কৃষক কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে রয়েছে কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি, পিঞ্জুরী, হিরণ ও আমতলী ইউনিয়ন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর, ডুমুরিয়া, পাটগাতি ও বর্নি ইউনিয়ন, কাশিয়ানীর রাতইল ইউনিয়ন, সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের শ শ হেক্টর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে।
কৃষকেরা আগামী বছর কী খেয়ে বাচঁবে তা নিয়ে তাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। রোববার বিকেলেও কৃষকেরা তাদের ধান ক্ষেতে সবুজ দেখে আসলেও সকালে জমির আলে গিয়ে দেখেন সব ধান সাদা হয়ে গেছে। কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি। কীভাবে কী হলো।
জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় ৭৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে।
যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর এক দল বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার পুড়ে যাওয়া বিভিন্ন জমি পরিদর্শন করেন। এই দলে ছিলেন ইনস্টিটিউটের ড. মো. নজরুল বারী, মোহাম্মদ আসিক ইকবাল খান, ড. মো. সাজ্জাদুর রহমান।
কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম শাহজাহান কবীর জানান, বিজ্ঞানী দলের সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন করেছেন। তারা উপজেলার তাম্বুলিপাড়া, গোগ এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে যান। সেখানে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরে ধানের ফুল ও দুধ অবস্থায় তাপ প্রবাহের দরুণ ‘হিট শক’ হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন দলের সদস্যরা ।
তিনি আরও জানান, এ অবস্থায় করণীয় সম্পর্কে বারির পরিদর্শন টিমের সদস্যরা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। তাদের পরামর্শ, যেসব ধান এখনও শীষ বের হয়নি অর্থাৎ বুটিং ও হেডিং স্টেজ এ আছে, সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে। তাই এই স্টেজে থাকা ধানের ক্ষেতগুলোতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখা এবং ম্যাজিক স্প্রে (১০ লিটার পানিতে ৬০ গ্রাম এমওপি সার, ৬০ গ্রাম থিওভিট ও ২০ গ্রাম চিলেটেড জিংক) জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় থাকা ধানগাছগুলো কিছুটা শক কাটিয়ে উঠতে পারবে।
কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ছাইফুল আলম বলেন, ‘বৃষ্টিবিহীন ঝড়ো বাতাসে এই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাওরের ধানের গাছগুলো এখন মিল্কিং স্টেজে (দুধ অবস্থায়) আছে। এই সময়ে প্রায় ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার গরম বাতাসে ধান পুড়ে চিটা হয়ে গেছে।’
গরম বাতাস তথা ‘লু হাওয়ার’ কারণেই এসব ধান নষ্ট হয়েছে বলে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিদের বরাতে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায়।
তিনি বলেন, ‘জেলার টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া এবং কাশিয়ানীতে এক রাতের মধ্যে শত শত হেক্টর জমির ধান সবুজ থেকে সাদা হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে ধানের শিষ (দুধ অবস্থায়)। কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন লু হাওয়া বা গরম বাতাসের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।’
মঙ্গলবার ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের ভাঙ্গা (ব্রি) এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. একলাচুর রহমান, বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মনোজিৎ কুমার মল্লিক, গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. অরবিন্দ কুমার রায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।
তারা জানান, গরম বাতাসের কারণে যেসব ধান কেবল দুধ অবস্থায় বা ফ্লাওয়ারিং অবস্থায় রয়েছে সেসব ধানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা কৃষকদের ধান গাছে পানি দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাতে যেসব ধান ফ্লাওয়ারিং অবস্থায় রয়েছে সেগুলো বাঁচানো সম্ভব হতে পারে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পিআরের (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পক্ষে নয় বিএনপি। এটার কোনো ভিত্তি নেই। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে গতকাল বৃহস্পতিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের সিদ্ধান্ত নিজেদেরই নিতে হবে এবং সেটা ঐক্যবদ্ধভাবে। যেকোনো বিষয় আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান হবে মনে করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আলোচনার মধ্যে কর্মসূচি দেওয়ার অর্থ হচ্ছে অহেতুক চাপ সৃষ্টি করা। এটি গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। রাজপথে নামলেই সমস্যার সমাধান হবে কি? আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি কোনো ইস্যুতেই আন্দোলনে যায়নি। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। এ সময় বিএনপি কোনও রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের আগামী অধিবেশনে যোগ দেব। কিন্তু এজেন্ডা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
অনুমোদিত ১,২০০ মেট্রিক টন ইলিশের মধ্যে সরবরাহ সীমিত থাকায় গত দুই দিনে মোট ৫৬.২৫ মেট্রিকটন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার রাতে ৩৭.৪৬ মেট্রিক টন এবং বৃহস্পতিবার ১৮.৭৯ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে পাঠানো হয়েছে।
বেনাপোল মৎস্য কোয়ারেন্টিন অফিসার সজীব সাহা, মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমরা নিশ্চিত করেছি যে রপ্তানির জন্য নির্বাচিত প্রতিটি ইলিশ স্বাস্থ্যসম্মত, রোগমুক্ত এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী যোগ্য। এই পরীক্ষা ও মান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করতে চাই, যে প্রতিটি চালান নিরাপদ ও উচ্চমানের। এছাড়া সরবরাহ সীমিত থাকায় দুই দিনের রপ্তানি অনুমোদিত পরিমাণের তুলনায় কম হলেও আমাদের মূল লক্ষ্য মানসম্পন্ন ইলিশ রপ্তানি বজায় রাখা।
এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত বছর ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৩,৯৫০ টনের অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু বেনাপোল ও আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে সব মিলিয়ে ইলিশ রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৮০২ টন। এর মধ্যে বেনাপোল বন্দর দিয়ে একাই রপ্তানি হয়েছে ৫৩২.৩ মেট্রিক টন।
স্থানীয় ইলিশ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সততা ফিশের ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম বলেন, দুর্গাপূজা ও আসন্ন উৎসবের কারণে ইলিশের চাহিদা বেশি। আমরা চেষ্টা করছি বাজার চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ সরবরাহ বজায় রাখতে। তবে মাছের সীমিত পরিমাণ রপ্তানিতে কিছুটা বাধা থাকলেও আমাদের কার্যক্রম সচল রয়েছে।
"একজন শিক্ষার্থী অন্য শিক্ষকের কাছে পড়লে আপনি তাকে কম মার্কস দিবেন, আপনার কাছে পড়লে প্র্যাক্টিক্যালে ভালো মার্কস দিবেন, তার সাথে ভালো আচরণ করবেন এটাও কিন্তু এক ধরণের দুর্নীতি। দুর্নীতি কিন্তু শুধু টাকা খাওয়া না, শুধু অন্যায় করা না। শিক্ষার্থী যে শিক্ষকের কাছেই পড়ুক না কেন তার খাতাটি আপনি নিরপেক্ষভাবে দেখবেন। আপনারা কখনোই শিক্ষার্থীদের সাথে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করবেন না। দুর্নীতি করে কিন্তু কেউই বেশি দূর এগোতে পারে না। পরকালের কথা বাদ দিয়ে ইহকালেও কিন্তু দুর্নীতি করে কেউ সফল হতে পারেনি। কাজেই আপনার শিক্ষার্থীদের সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করুন।"
এসময় পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “ভালো ফলাফল পেতে হলে তোমাদেরকে পরিশ্রম করতে হবে। পরীক্ষা ভয় পাওয়ার বিষয় নয়, এটি জীবনের একটি ধাপ মাত্র। নিয়মিত পড়াশোনা, সঠিক সময় ব্যবস্থাপনা ও আত্মবিশ্বাসই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। তোমাদের পরিশ্রম, সততা ও অধ্যবসায় একদিন পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য গর্বের কারণ হবে।”
অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, "আপনারা আপনাদের বাচ্চাদেরকে সময় দিন। অফিস থেকে এসে রিলাক্স মুডে মোবাইল দেখবেন না, ঘণ্টার পর ঘণ্টা আত্মীয়-স্বজনের সাথে কথা বলবেন না। আপনি সন্তানের সামনে মোবাইল ব্যবহার করলে ও কিন্তু ভালো কিছু শিখবে না।"
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় রাজবাড়ীর পাংশায় এস.এস.সি-২০২৬ পরীক্ষার প্রস্তুতি, শিক্ষার মান উন্নয়ন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং মাদকাসক্তির কুফল সম্পর্কে সচেতনতার লক্ষ্যে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক মন্ডলীর উপস্থিতিতে অভিভাবক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা আক্তার এসব কথা বলেন।
পাংশা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন পাংশা পৌরসভার পাংশা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, কাজী আব্দুল মাজেদ একাডেমি ও এয়াকুব আলী চৌধুরী বিদ্যাপীঠের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম. আবু দারদা'র সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও পাংশা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মো. বাহারাম হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল কালাম আজাদ।
সঞ্চালনায় ছিলেন উদয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সামসুল আলম (সোহরাব)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির উদ্দেশে মানপত্র পাঠ করেন পাংশা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সান্ত্বনা দাস।
শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের প্রস্তুতি, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলওয়াত ও পবিত্র গীতা পাঠ করা হয়। আলোচনা শেষে জেলা প্রশাসক ৩টি বিদ্যালয়ের মাঝে বিভিন্ন ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করেন।
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় আধুনিক পৌর পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নান্দাইল মডেল থানার সংলগ্ন এ পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার।
এ সময় পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা বৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তারকে ঘিরে শুরু হয় প্রশংসার ঢল। স্থানীয়রা মন্তব্য করছেন, তাঁর দূরদর্শী উদ্যোগ ও সাহসী পদক্ষেপের কারণেই অবশেষে নান্দাইলবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হতে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে ইউএনও সারমিনা সাত্তার বলেন, “এ পার্ক হবে নান্দাইলবাসীর জন্য একটি উন্মুক্ত বিনোদনকেন্দ্র। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষ এখানে সময় কাটাতে পারবেন। একইসঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা এবং সামাজিক আড্ডার একটি নিরাপদ স্থান হিসেবে এটি ব্যবহৃত হবে।”
তিনি আরও জানান, পার্কে বসার স্থান, ফুলের বাগান, হাঁটার ট্র্যাকসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নান্দাইলে দীর্ঘদিন ধরে একটি মানসম্মত বিনোদনকেন্দ্রের অভাব ছিল। পরিবার নিয়ে বেড়ানো কিংবা শিশুদের খেলাধুলার জন্য উপযুক্ত জায়গার অভাবে অনেক সময় ভোগান্তি পোহাতে হতো। নতুন এ পৌর পার্ক সেই শূন্যতা পূরণ করবে বলেই মনে করছেন তারা।
ফেসবুকে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, নান্দাইলের সৌন্দর্যবর্ধনে ইউএনও সারমিনা সাত্তারের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। কেউ কেউ লিখেছেন, “এ পার্ক শুধু বিনোদনের জন্য নয়, বরং তরুণ প্রজন্মকে ইতিবাচক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে।”
উপস্থিত বক্তারাও একে নান্দাইলের জন্য যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা বলেন, এ পার্ক উদ্বোধনের পর থেকে পুরো এলাকা প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, নান্দাইল পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। কাজ শেষ হলে এটি শুধু বিনোদন কেন্দ্র নয়, বরং নান্দাইল পৌরসভার সৌন্দর্যবর্ধনেও নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে বাগেরহাটে টানা তৃতীয় দিনের মতো জেলা ও ৯টি উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলা এ কর্মসূচিতে বিএনপি-জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির শত শত নেতা-কর্মী অংশ নেন। কর্মসূচি চলাকলীন নির্বাচন অফিসের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকে। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
কর্মসূচি শেষে কমিটির কোকনভেনার এম এ সালাম জানান, (আজ) শুক্রবার ও (কাল) শনিবার কোনো কর্মসূচি না থাকলেও আগামী রোববার ও সোমবার দুই দিন আবারও ঘেরাও কর্মসূচি চলবে। এবং সোমবারের কর্মসূচি চলাকালীন পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এ প্রসঙ্গে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করীম বলেন, আপনারা ইতোমধ্যেই দেখেছেন বাগেরহাটবাসী তাদের দাবি আদায়ে একত্র হয়েছে এবং রাজপথে নেমেছে। তবুও নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিকে আমলে নিচ্ছে না। কমিশন যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয়, তাহলে যেভাবে আন্দোলন করলে দাবি আদায় সম্ভব, বাগেরহাটবাসী সেভাবেই আন্দোলন চালাবে।
সর্বদলীয় কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি শেখ মুহাম্মাদ ইউনুস জানিয়েছেন, গত ১৭ বছর আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করে এসেছি। যার কারণে মামলা-হামলাকে আমরা ভয় পাই না। যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি আদায় না হবে ততদিন আমরা রাজপথ ছাড়ব না।
এদিকে চারটি আসন বহালের দাবিতে দায়ের করা রিটে হাইকোর্ট রুল জারি করেছে, যেখানে নির্বাচন কমিশনকে ১০ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব বিসিক শিল্পনগরীর প্লট বরাদ্দের তিন বছরে উৎপাদনে গেছে মাত্র একটি কারখানা। অথচ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৩৪টি প্লট। বরাদ্দপ্রাপ্ত প্লটগুলোর বেশিরভাগই পড়ে আছে ফাঁকা। সেখানে গজিয়ে উঠেছে কাঁশবন। দ্রুত বাকি সব কারখানা চালুর দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের পাশে বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে বিসিক শিল্পনগরী। প্রধান ফটক পেরিয়ে চোখে পড়ে কয়েকটি নির্মাণাধীন কারখানা। তাদের মধ্যে মেসার্স জিলানী ফ্লাওয়ার মিলস অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস নামের একটি কারখানা উৎপাদন কার্যক্রম চালাচ্ছে। বাকি কয়েকটি কারখানার নির্মাণকাজ চলছে। একটু সামনে এগোতেই দেখা মিলছে সারি সারি কাঁশবন। প্রতিটি প্লটেই ফুটেছে ফুল। নেই কোনো কর্মচাঞ্চল্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৩ সালে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কালিকাপ্রসাদ এলাকায় ৪০ একর ভূমিতে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলার জন্য সরকার অনুমোদন দেয়। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে নির্মাণকাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়। ২০২১ সালে সেপ্টেম্বরে ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজ কাজ শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। তবে শিল্পের বিকাশ ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কাজ শুরু হলেও আশানুরূপভাবে এগোচ্ছে না ভৈরব বিসিক শিল্পনগরীর কার্যক্রম।
প্লট বরাদ্দের পর তিন বছরে মাত্র একটি কারখানা উৎপাদন শুরু করেছে। উৎপাদনের অপেক্ষায় রয়েছে আটটি কারখানা, নির্মাণাধীন সাতটি এবং নির্মাণের অপেক্ষায় রয়েছে ১৮টি। বাকি ২২টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে তারা এখনো কোনো দৃশ্যমান কার্যক্রম শুরু করেননি।
ভৈরব বিসিক শিল্পনগরীতে ১২৪ শিল্প ইউনিটে ২৩৪ প্লট বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্য খাদ্য উৎপাদন খাতে ৪০টি, বস্ত্র উৎপাদন খাতে তিনটি, রসায়ন খাতে ৪০টি, চামড়া ও রাবার শিল্প উৎপাদন খাতে ২২টি, প্রকৌশলী উৎপাদন খাতে ১৪টি এবং প্যাকেজিং উৎপাদন খাতে পাঁচটি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদি শিল্পনগরীর সব কারখানা চালু হয়, তাহলে প্রায় ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে। বদলে যাবে ভৈরবের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান পেশা পাদুকা শিল্পের ক্লাস্টারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে এ শিল্পে জড়িতরা সহজ শর্তে ঋণসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মিলাত মিয়া বলেন, ‘বিসিকের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় এখানে রাত হলেই অপরাধ চক্রের দৌরাত্ম বেড়ে যায়। ফলে বিসিক সংলগ্ন এলাকায় ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটছে।’
কালিকা প্রসাদ ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মিয়া বলেন, ‘প্রশাসনের কাছে দাবি, যেন দ্রুত বিসিকের সব কার্যক্রম শুরু করা হয়। এটা হলে এলাকার হাজারও মানুষের কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
ভৈরব চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি জাহিদুল হক জাবেদ বলেন, বিসিক শিল্পে তিন বছরে মাত্র একটি কারখানা উৎপাদনে যেতে পেরেছে। বাকিগুলো এখনো উৎপাদনে যেতে পারেনি। তাদের মধ্য বরাদ্দ পাওয়া বেশিরভাগই এখনো স্থাপনার কাজ শুরু করেনি। যারা বিসিক শিল্পে এখনো তাদের বরাদ্দকৃত প্লটে কোনো কাজ শুরু করেননি, সেসব প্লটের মালিকানা বাতিল করে নতুনভাবে বরাদ্দের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে ভৈরব শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবিদুর রহমান খান জানান, শিল্পনগরীর কার্যক্রম শুরু হয়েছে, তবে পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু হতে কিছু সময় লাগবে। তবে বিসিক শিল্পের পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় অফিসিয়াল কার্যক্রমসহ শিল্পের নিরাপত্তা রক্ষায় বিঘ্ন ঘটছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। আশা করছি, খুব শিগগির বিসিক শিল্পের কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে শুরু হবে।
এদিকে, গত ১৭ আগস্ট এক আনন্দঘন ও প্রেরণাদায়ক পরিবেশের মধ্য দিয়ে বিসিক জেলা কার্যালয়, কিশোরগঞ্জ-এর উদ্যোগে আয়োজিত 'শিল্পোদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কোর্স (১ম ব্যাচ)'-এর উদ্বোধন করা হয়। হাওরপাড়ের সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণীদের আত্মনির্ভরশীল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিসিকের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ সাইফুল ইসলাম। সেদিন তিনি তাঁর দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে বলেন, বিসিক সৃষ্টি লগ্ন থেকেই সারা দেশে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের দৃঢ় মনোবল, উদ্ভাবনী চিন্তা ও প্রশিক্ষণে অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান। তাঁর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে একদল স্বপ্নবাজ তরুণের নতুন পথচলা শুরু হয়।
দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে, বিসিকের চেয়ারম্যান বিসিক শিল্পনগরী, কিশোরগঞ্জ এবং শিল্পনগরী, ভৈরব পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি শিল্পনগরী দুটির সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন, উদ্যোক্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, এসব নির্বাচন নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই, ভালোভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছি। এজন্য আপনাদের (সাংবাদিক) সাহায্য ও সহযোগিতা দরকার।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে রাকসু ও চাকসু নির্বাচন-২০২৫ উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ক সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি রাকসু ও চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজ তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা দেশের সবচেয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত, শুধু দেশেই না বিদেশেও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত । যারা ভোট দেবে তারাও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত।
তিনি বলেন, ‘তাদের অভিজ্ঞতা আজ শেয়ার করলাম। যেহেতু আমাদের একটা জাতীয় নির্বাচন আছে ফেব্রুয়ারিতে, এই নির্বাচনগুলো দেখে আমাদের কিছু অভিজ্ঞতা হচ্ছে। সেটা আমরা জাতীয় নির্বাচনে কীভাবে প্রয়োগ করতে পারবো সেজন্য আজকে বসেছিলাম।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তারা আজ ভালো ভালো সাজেশন দিয়ে গেছে। সেই সাজেশন আমরা ভবিষ্যতে কাজে লাগাবো। একইসঙ্গে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় তাদেরও উপকার হয়েছে। যেহেতু দুইটা নির্বাচন হয়েছে। সেখানে নির্বাচনে কী করতে হবে, ছোটখাটো ভুল-ত্রুটি থাকলে সেগুলো কীভাবে সমাধান করা হবে, এসব নিয়ে বিস্তারিত কথা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সভায় তারা কোনো ধরনের শঙ্কার কথা জানায়নি।
আজকের সভায় কি ধরনের সাজেশন এসেছে-এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে তারা বলেছে- কতগুলো সেন্টার হওয়া দরকার, ভোট গণনা কীভাবে হবে, কালি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, এসব নিয়ে কথা হয়েছে। দ্রুত ফল ঘোষণার জন্যও কি ব্যবস্থা নেয়া যায়, আলোচনা হয়েছে। ভোটারদের ছবিযুক্ত আইডি কার্ড ও ভোটার তালিকা যেন স্বচ্ছ থাকে এসব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার বলেন, রাকসু ও চাকসু নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়, এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ দুটি নির্বাচন থেকে অনেক কিছু শনাক্ত হয়েছে। এসব নির্বাচনে কোন বিষয়গুলো কাজ করেছে বা কোন বিষয়গুলো কাজ করেনি, তার একটি ধারণা পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে আমরা এখানে এসেছি। আজকের সভায় ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এ দুটি নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে। ভালো নির্বাচন হবে বলে আশা করছি।
মন্তব্য