× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

কৃষি
গরম বাতাসে তিন জেলায় পুড়ল ৪২ হাজার হেক্টর বোরো
google_news print-icon

হাওরে নতুন দুর্যোগে দিশেহারা কৃষক

হাওরে-নতুন-দুর্যোগে-দিশেহারা-কৃষক
গরম বাতাসে পুড়ে গেছে তিন জেলার হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান। ছবি: নিউজবাংলা
এর সঠিক কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না কৃষিবিজ্ঞানীরা। তবে কেউ কেউ বলছেন ‘লু হাওয়া’ তথা গরম বাতাসের কারণে এমনটি হয়েছে। যদিও আবহাওয়াবিদদের দাবি, বাংলাদেশে এখন যে তাপমাত্রা তাতে লু হাওয়া বয়ে যাওয়ার মতো কোনো অবস্থা নেই।

দেশের বোরো ধানের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণার কৃষকদের মাথায় হাত। হঠাৎ অচেনা এক দুর্যোগ ‘গরম বাতাসে’ এসে এলোমেলো করে দিয়েছে সব। পুড়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান। একই দশা গোপালগঞ্জেরও কয়েকটি উপজেলায়।

প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, গরম বাতাসে তিন জেলায় অন্তত ৪২ হাজার হেক্টর বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত এর সঠিক কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না কৃষিবিজ্ঞানীরা। কৃষকদের স্বপ্ন তছনছ করে দেয়া এই দুর্যোগকে কৃষিবিদদের কেউ বলছেন ‘হিট শক’, কেউ বলছেন ‘লু হাওয়া’। আর আবহাওয়াবিদদের দাবি, বাংলাদেশে এখন যে তাপমাত্রা তাতে লু হাওয়া বয়ে যাওয়ার মতো কোনো অবস্থা নেই।

নেত্রকোণা

জেলাটিতে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা।

চলতি বোরো মৌসুমে নেত্রকোণার ১০ উপজেলায় ১ লাখ ৮৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছিল। আবহাওয়া পরিস্থিতি এত দিন চমৎকার থাকলেও রোববার হানা দেয় অচেনা বিপত্তি।

সেদিন সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কালবৈশাখির দমকা বাতাস বয়ে যায় জেলার ওপর দিয়ে। এই বাতাস শুরুর কিছু সময় পর বইছিল গরম বাতাস। এই প্রথম তখন ১০ থেকে ১৫ মিনিট নাগাদ বয়ে যাওয়া গরম বাতাসে ফুল অবস্থায় থাকা জমির পুরোটাই শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।

জেলার প্রতিটি উপজেলাতেই কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে মদন, খালিয়াজুরী ও কেন্দুয়া উপজেলায় বেশি ক্ষতি হয়েছে।

মদনে ৪ হাজার হেক্টর, কেন্দুয়ায় ২ হাজার ৭০০ হেক্টর ও খালিয়াজুরী উপজেলায় ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ফসল পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষি বিভাগ বলছে, প্রাথমিকভাবে ১৪ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১১৬ কোটির বেশি টাকা।

ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, তারা ঋণ করে ফসল করছেন। হাওরাঞ্চলে একটাই ফসল হয়। এখন ঋণ পরিশোধ হবে কীভাবে, আর কীভাবে সংসার চলবে, সেটি বুঝে উঠতে পারছেন না তারা।

মদন উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আব্দুর রহমান বলেন, ‘জীবনে এইরম গরম বাতাস দেখছি না। অক্করে আগুনের লুক্কার মতো গরম। ঝড় কইম্যা গেলে ঘরতে বাইর অয়া দেহি পুড়ার গন্ধ। পয়লা বুঝতে পারছি না। বেইন অক্ত (সকালে) হাওরে গেয়া দেহি, ধানের ভিতরে যে চাউল অয় হেইডা অক্করে ঝইরা পুইড়া গেছে।’

কেন্দুয়া উপজেলা রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের কইলাটি গ্রামের কৃষক মজিবুর রহমান বলেন, ‘রাইতে যে হাওয়াডা অইছে এইডায় জমি পুইরা গেছেগা। আমার ২৫ কাঠা জমির ধান শেষ অইয়া গেছে।’

খালিয়াজুরী উপজেলার আদমপুর বোয়ালবাড়ি গ্রামের কৃষক বাবলু চৌধুরী এবার ৮ একর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। তার অর্ধেক জমির ফসলই নষ্ট হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘ভাটি অঞ্চলে একডাই ফসিল অয়। ঋণ ফিন কইরা বোরো করছিলাম। সব গেছেগা। অহন আমরা কী খাইয়া বাঁচব।’

মোহনগঞ্জ উপজেলার বানিহারি গ্রামের কৃষক আইন উদ্দিন বলেন, ‘কী কষ্ট কইরা রেনাদেনা কইরা একডাই ফসিল করলাম। সব নষ্ট অইয়া গেছে। কিবায় চলাম?’

হাওরে নতুন দুর্যোগে দিশেহারা কৃষক
কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকায় গরম বাতাসে মাঠের পর মাঠ ধান পুড়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। ছবি: নিউজবাংলা

কিশোরগঞ্জ

গরম বাতাসের প্রভাবে গত রোববার কিশোরগঞ্জে হাজার হাজার একর জমির বোরো ধান পুড়ে গেছে।

জেলার ১৩টি উপজেলার হাওরে মাত্র ১০ মিনিটের গরম বাতাসে প্রায় ২৬ হাজার হেক্টর জমির ধান পুড়ে গেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ২০০ কোটি টাকার মতো।

জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, বোরো ধানের জমি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে ৩ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমির। আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমির ধান।

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার রায়টুটী ইউনিয়নের কৃষক পালন মিয়া। এই চাষি ধান আবাদ করেছিলেন ছয় একর জমিতে। আশা করছিলেন ধান পাবেন কমছে কম চার শ মণ। কিন্তু সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। মাত্র ১০ মিনিটের গরম বাতাসে নষ্ট হয়েছে কৃষক পালন মিয়ার জমির ফসল।

রায়টুটী এলাকার তলার হাওরে ১২ একর জমি আবাদ করেছিলেন কৃষক আ. হেকিম। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত বছর ধানের দাম বেশি ফাইছি, হের লাইগ্যা এইবার আরও বেশি কইরে জমি করছি। জমির মইধ্যে ফসলও অইছিন বালা। কিন্তু গত রাইতেই ১০ মিনিডের একটা গরম বাতাসে সব পুইড়ে ছারকার কইরে দিসে। আমার সত্তর বছর বয়সে এই যাইত্তে বাতাস আমি জীবনেও দেখছি না। সহালে ঘুমেত্তে উইট্টে জমিতে গিয়া দেহি সব শেষ।

কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি কৃষি বিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছি। তালিকা হাতে পেলে সহায়তা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে লিখিত পাঠানো হবে।’

হাওরে নতুন দুর্যোগে দিশেহারা কৃষক
গোপালগঞ্জের অনেক ধান মাঠেরও একই একই অবস্থা। ছবি: নিউজবাংলা

গোপালগঞ্জ

গরম বাতাসে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে গোপালগঞ্জের বোরোচাষিরাও। জেলা কৃষি বিভাগ ক্ষতির পরিমাণ এখনও সুনির্দিষ্ট করতে না পারলেও তাদের ধারণা অন্তত হাজার- বারো শ হেক্টর জমির ধান পুড়ে গেছে।

জেলার কৃষি বিভাগ বলছে, অন্তত ১০টি ইউনিয়নে এই হাওয়ার প্রভাব দেখা গেছে। হঠাৎ করে এ ধরনের ঘটনায় একদিকে যেমন কৃষকেরা হতবাক অন্যদিকে, এর জুতসই কারণ খুঁজে পাচ্ছে না কৃষি বিভাগ।

এর আগে এ ধরনের ঘটনা কোথাও ঘটেছে কি না কারও জানা নেই। যে কারণে গোপালগঞ্জ কৃষি অফিস থেকে বিষয়টির ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অবস্থিত ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়েছে।

গত রোববার রাতে ৩০ মিনিটের মতো জেলার বিভিন্ন এলাকায় গরম বাতাস বয়ে যায়। আর এতে ক্ষেতে উঠতি বোরো ধান যেগুলেতে কেবল ধানের শিষ (দুধ) এসেছে সেই ধান সব চিটায় পরিণত হয়ে সাদা বর্ণ ধারণ করে। আর এতে জেলার শত শত কৃষক কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে রয়েছে কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি, পিঞ্জুরী, হিরণ ও আমতলী ইউনিয়ন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর, ডুমুরিয়া, পাটগাতি ও বর্নি ইউনিয়ন, কাশিয়ানীর রাতইল ইউনিয়ন, সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের শ শ হেক্টর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষকেরা আগামী বছর কী খেয়ে বাচঁবে তা নিয়ে তাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। রোববার বিকেলেও কৃষকেরা তাদের ধান ক্ষেতে সবুজ দেখে আসলেও সকালে জমির আলে গিয়ে দেখেন সব ধান সাদা হয়ে গেছে। কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি। কীভাবে কী হলো।

জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় ৭৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে।

যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর এক দল বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার পুড়ে যাওয়া বিভিন্ন জমি পরিদর্শন করেন। এই দলে ছিলেন ইনস্টিটিউটের ড. মো. নজরুল বারী, মোহাম্মদ আসিক ইকবাল খান, ড. মো. সাজ্জাদুর রহমান।

কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম শাহজাহান কবীর জানান, বিজ্ঞানী দলের সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন করেছেন। তারা উপজেলার তাম্বুলিপাড়া, গোগ এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে যান। সেখানে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরে ধানের ফুল ও দুধ অবস্থায় তাপ প্রবাহের দরুণ ‘হিট শক’ হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন দলের সদস্যরা ।

হাওরে নতুন দুর্যোগে দিশেহারা কৃষক
নেত্রকোণায় গরম বাতাসে পুড়ে যাওয়া ধান মাঠ পরিদর্শনে যান কৃষি বিজ্ঞানীরা। ছবি: নিউজবাংলা

তিনি আরও জানান, এ অবস্থায় করণীয় সম্পর্কে বারির পরিদর্শন টিমের সদস্যরা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। তাদের পরামর্শ, যেসব ধান এখনও শীষ বের হয়নি অর্থাৎ বুটিং ও হেডিং স্টেজ এ আছে, সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে। তাই এই স্টেজে থাকা ধানের ক্ষেতগুলোতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখা এবং ম্যাজিক স্প্রে (১০ লিটার পানিতে ৬০ গ্রাম এমওপি সার, ৬০ গ্রাম থিওভিট ও ২০ গ্রাম চিলেটেড জিংক) জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় থাকা ধানগাছগুলো কিছুটা শক কাটিয়ে উঠতে পারবে।

কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ছাইফুল আলম বলেন, ‘বৃষ্টিবিহীন ঝড়ো বাতাসে এই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাওরের ধানের গাছগুলো এখন মিল্কিং স্টেজে (দুধ অবস্থায়) আছে। এই সময়ে প্রায় ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার গরম বাতাসে ধান পুড়ে চিটা হয়ে গেছে।’

গরম বাতাস তথা ‘লু হাওয়ার’ কারণেই এসব ধান নষ্ট হয়েছে বলে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিদের বরাতে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায়।

তিনি বলেন, ‘জেলার টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া এবং কাশিয়ানীতে এক রাতের মধ্যে শত শত হেক্টর জমির ধান সবুজ থেকে সাদা হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে ধানের শিষ (দুধ অবস্থায়)। কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন লু হাওয়া বা গরম বাতাসের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।’

মঙ্গলবার ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের ভাঙ্গা (ব্রি) এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. একলাচুর রহমান, বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মনোজিৎ কুমার মল্লিক, গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. অরবিন্দ কুমার রায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।

তারা জানান, গরম বাতাসের কারণে যেসব ধান কেবল দুধ অবস্থায় বা ফ্লাওয়ারিং অবস্থায় রয়েছে সেসব ধানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা কৃষকদের ধান গাছে পানি দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাতে যেসব ধান ফ্লাওয়ারিং অবস্থায় রয়েছে সেগুলো বাঁচানো সম্ভব হতে পারে।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

কৃষি
Professor Yunus has joined the 5th Social Business Day

১৫তম সোশ্যাল বিজনেস ডে-তে যোগ দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস

১৫তম সোশ্যাল বিজনেস ডে-তে যোগ দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস

১৫তম সোশ্যাল বিজনেস ডে উপলক্ষে বিশ্বজুড়ে সামাজিক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নেতা ও উদ্যোক্তাদের নিয়ে আয়োজিত কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন তিনি। পাশাপাশি মূল প্রবন্ধও উপস্থাপন করবেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।

শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে সাভারের জিরাবোতে সামাজিক কনভেনশন সেন্টারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে আজ প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয়।

ইউনূস সেন্টার ও গ্রামীণ গ্রুপ আয়োজিত এবারের সোশ্যাল বিজনেস ডে-র মূল প্রতিপাদ্য: ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সোশ্যাল বিজনেসই সর্বোত্তম পথ।’

প্রথম দিনের উদ্বোধনী পর্বে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট (১৯৯২–২০০০) ড. ইসমাইল সেরাগেলদিন, গ্রামীণ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল হাসান ও ইউনূস সেন্টারের রিলেশনস ম্যানেজার জিনাত ইসলাম।

দুদিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের লক্ষ্য হলো, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে বৈষম্য ও সীমাবদ্ধতা মোকাবিলা করে একটি টেকসই, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক বিশ্ব গড়ে তোলা।

এই আয়োজনে রয়েছে পাঁচটি প্লেনারি ও আটটি ব্রেকআউট সেশন, যেখানে বৈচিত্র্যময় মত ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পাবেন অংশগ্রহণকারীরা। ৩৪টি দেশের ১৮০ জনের বেশি বিদেশি প্রতিনিধিসহ সহস্রাধিক অংশগ্রহণকারী এতে যোগ দিয়েছেন।

আলোচকদের মধ্যে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ সহকারী অধ্যাপক মো. সাইদুর রহমান, মেডট্রনিকের সাবেক সিইও ও চেয়ারম্যান এবং ইন্টেল করপোরেশনের সাবেক বোর্ড চেয়ারম্যান ওমর ইশরাক, জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও নরওয়ের সাবেক পরিবেশ ও জলবায়ুমন্ত্রী এরিক সোলহেইম। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের সম্প্রসারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ২৯ জুন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ অ্যাকাডেমিয়া ডায়লগ, যেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা অংশ নিয়ে সমাজে অগ্রগতির চালিকাশক্তি হিসেবে সামাজিক ব্যবসায়ের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করবেন।

এ ছাড়া, সেদিন ৩-জিরো ক্লাব কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে। এই কনভেনশনের উদ্দেশ্য হলো ‘তিন শূন্য’ বা ‘থ্রি জিরো’ অর্জন: শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ ও শূন্য বেকারত্ব।

মন্তব্য

কৃষি
The wind of Dhaka on the holidays means the degradation

ছুটির দিনে ঢাকার বাতাসের মানে লক্ষণীয় অবনতি

ছুটির দিনে ঢাকার বাতাসের মানে লক্ষণীয় অবনতি

টানা চার দিন ‘মাঝারি’ শ্রেণিতে থাকার পর ছুটির দিনে অনেকটা অবাক করে দিয়ে ঢাকার বাতাসের মানে অবনতি হয়েছে। সেইসঙ্গে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকাতেও লম্বা লাফ দিয়ে উপরের দিকে চলে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী শহর।

শুক্রবার (২৭ জুন) সকাল ৯টায় ঢাকার বাতাসের একিউআই সূচক ছিল ১০২। বায়ুমানের শ্রেণি অনুযায়ী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর মানুষের জন্য এই মান অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত হয়।

সবশেষ গত ২১ জুন এই শ্রেণিতে নেমেছিল ঢাকার বায়ুমান। তার পরের চার দিন ‘মাঝারি’ শ্রেণিতে থাকার পাশাপাশি দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকাতেও বেশ নিচে অবস্থান করছিল শহরটি।

এর মধ্যে ২১ জুন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দশম, ২২ জুন একই সময়ে ১৭তম, ২৩ জুন সকাল ৯টায় ২১তম, ২৪ জুন ২৯তম, ২৫ জুন ৩১তম এবং গতকাল ২৬ জুন ঢাকার অবস্থান ছিল ৩৮তম। অর্থাৎ ক্রমেই উন্নতি হচ্ছিল ঢাকার বায়ুমানে।

গত কয়েক দিনে একটু একটু করে দূষণ থেকে দূরে সরলেও আজ (শুক্রবার) ফের শীর্ষ দশ শহরের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে ঢাকা। শহরটির অবস্থান আজ দশম।

এই সময়ে ১৭৩ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত বায়ুর শহরগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, স্কোর ১৬৫ নিয়ে পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থান দ্বিতীয় এবং গতকাল এই সময়ে শীর্ষে থাকা কঙ্গোর কিনশাসা রয়েছে আজ তিন নম্বরে; শহরটির একিউআই স্কোর ১৫৯।

এ ছাড়া ১৫৪ ও ১৫২ স্কোর নিয়ে শীর্ষ পাচ শহরের অপর দুটি স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ও চিলির সান্তিয়াগো।

এর মধ্যে আজ লক্ষণীয় উন্নতি হয়েছে দিল্লির বাতাসের। ৭৯ স্কোর নিয়ে ভারতের শহরটির বায়ুমান ‘মাঝারি’, আর তালিকায় রয়েছে ২১তম স্থানে।

কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।

একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।

ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।

মন্তব্য

কৃষি
Courtesy of CEC with the chief adviser

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সৌজন্য সাক্ষাৎ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সৌজন্য সাক্ষাৎ

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ কথা জানিয়েছে।

মন্তব্য

কৃষি
Berobi students press conference of the students who rejected the charge sheet of Abu Saeed murder case

আবু সাঈদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র প্রত্যাখ্যান ,বেরোবি শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন

আবু সাঈদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র প্রত্যাখ্যান ,বেরোবি শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন

আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও অভিযোগ পত্র প্রত্যাখান করে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীরা।

২৬ জুন সন্ধ্যায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, যারা জড়িত নয় তদন্ত প্রতিবেদনে তাদেরও জড়ানো হয়েছে। এছাড়া প্রকৃত দুই তিনজন আসামিকে আড়ালের চেষ্টা করা হয়েছে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্তু আবু সাঈদ হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা সাবেক প্রক্টরকে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন। এবং এর পুনরায় তদন্ত দাবি করেন। একই সময় তারা আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচারের দাবিও করেন।

এ সময় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা তাদের (ট্রাইব্যুনাল) সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে বসতে চেয়েছি কিন্তু তারা আসেনি। তারা বলছে হামলা নাকি ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে হয়েছে। এটা মিথ্যাচার। বাংলাদেশের বিচারহীনতার বড় প্রমাণ আজ এই অফিযোগপত্র দেওয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষকের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন আহমেদ বলেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অভিযোগ পত্র প্রকাশের আগে তদন্ত কমিটির রংপুর এসে আবু সাঈদ হত্যার সাক্ষী ও সহযোদ্ধাদের সঙ্গে বসে অভিযোগ পত্র প্রকাশ করার কথা ছিলো। কিন্তু তারা কারো সঙ্গে কোনো যোগাযোগ না করে মনগড়া তদন্ত করে অভিযোগপত্র প্রকাশ করেছে। যা এক ধরনের প্রহসন। তাই এই মিথ্যা প্রহসন ও মিথ্যা তদন্তকে বেরোবি শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং তারই ধারাবাহিকতায় আমরা প্রশাসনিক ভবনে সকল ডিপার্টমেন্টর শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।

যতক্ষণ পর্যন্ত আবু সাঈদ হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে কোনো প্রহসন সহ্য করা হবে না। প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, এটাতো আইনের বিষয়ে তারা কি করছে এখনতো আমরা জানি না। সাবেক প্রক্টর শরিফুলের এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল কি ছিলো না তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করলে জানা যাবে। তারা কি তদন্ত রিপোর্ট দিবে তা তো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে দেবে না।

উল্লেখ্য, এ মামলায় চার আসামি কারাগারে রয়েছেন। তারা হলেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশ।

মন্তব্য

কৃষি
Revenue collection in the ongoing movement is somewhat hindered NBR chairman

চলমান আন্দোলনে রাজস্ব আদায় কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে: এনবিআর চেয়ারম্যান

চলমান আন্দোলনে রাজস্ব আদায় কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে: এনবিআর চেয়ারম্যান

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনে রাজস্ব আদায় কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।

এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আপনারা আমরা সবাই দেশের জন্য কাজ করব। আমাদের সবার আগে দেশের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করা উচিত। যেকোনো ধরনের সংস্কার করি, আইন করি বা আন্দোলন ও সংগ্রাম করি, সবই যেন আমাদের নিজেদের জন্য না হয়ে দেশের জন্য হয়।’

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্ক আয়োজিত ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা ও ভ্যাট’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

সেমিনারে ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা। এ সময় ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্কের গবেষণাপ্রধান ইমরুল হাসান তার উপস্থাপনায় বলেন, ‘আমরা দেশের ১৫টি স্থানে ১ হাজার ২২ জন নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর গবেষণা পরিচালনা করেছি। গবেষণায় আমরা দেখতে পেয়েছি, তাদের মধ্য ৮৮ শতাংশ নিম্ন আয়ের মানুষ এক বেলা বিস্কুট ও পাউরুটি খান। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশেরই প্রত্যাশ্য ছিল, এই বাজেটে এসব পণ্যর ওপর ট্যাক্স নিয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ আসবে। তবে এ নিয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।’

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআরের চেয়ারম্যান আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম বাজেটের আকার কমেছে। লক্ষ্য ছিল, মানুষের ওপর যেন চাপ না পড়ে। বাজেটের আকার যতটা ছোট হয়েছে—ধরে নিতে হবে, রাষ্ট্র ততটা সঞ্চয় করেছে, ততটা ঋণের চাপ কমেছে।

চেয়ারম্যান আরও জানান, চলতি অর্থবছরে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার সংখ্যা ১৭ লাখ ছাড়িয়েছে। যেখানে গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৫ লাখ। গতবার অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া সেপ্টেম্বরে শুরু হলেও এবার জুলাই থেকেই অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের লাইসেন্সসহ অন্যান্য সুবিধার জন্য চালু হচ্ছে ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’। এর ফলে ১৯টি সংস্থার ১১০ ধরনের লাইসেন্স, অনুমোদন ও সনদ অনলাইনে জমা ও গ্রহণ করা যাবে।

করনীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় একসঙ্গে বিবেচনা করতে হয়। একদিকে যেমন রাজস্ব আয়ের নির্ধারিত লক্ষ্যে থাকে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার শর্ত পূরণের চাহিদাও মাথায় রাখতে হয়। আগামী বছর উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় যুক্ত হওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে দেশের বেশ কিছু কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে। এর মধ্যে শুল্ক হার কমিয়ে আনা অন্যতম। বর্তমানে দেশের কিছু পণ্যে সর্বোচ্চ ৮০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হয়। এই শুল্ক কমাতে হবে ধাপে ধাপে। তা না হলে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের ধাক্কা সামলানো কঠিন হবে।

আবদুর রহমান খান আরও বলেন, পাউরুটি ও বিস্কুটে ভ্যাট বাড়ানো হলেও এই বাড়তি ভ্যাট ব্যবসায়ীরা নিজেরা বহন না করে পুরো বোঝা ভোক্তার ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন কি না, সে বিষয়েও আমাদেরে খেয়াল রাখতে হবে। সরকারের কর যেখান থেকে নেওয়ার কথা, সেখান থেকে নিতে পারলে সহজেই করছাড় দেওয়া যেত। অনেক সময় আবার কর বাড়ানোর যে সুবিধার কথা বলা হয়, তা ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছায় না। এর ফলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় সরকারের ঋণ নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।

মন্তব্য

কৃষি
Eggs sell the world

ডিম সিঙ্গাড়া বিক্রি করে সংসার চলে শ্রবণ প্রতিবন্ধী ঝর্ণার

ডিম সিঙ্গাড়া বিক্রি করে সংসার চলে শ্রবণ প্রতিবন্ধী ঝর্ণার

বয়স ষাট পেরিয়েছে। সংসার উন্নতির আশায় রাস্তার পাশে ছোট্ট একটি দোকানে ডিম, সিঙ্গাড়া, পাপড় ও পরোটা বিক্রি করে জীবনের প্রায় অর্ধেক সময় পার করেছেন। পরিশ্রম করলেও ভাগ্য তার এখনো সহায় হয়নি। অভাব ঘোচানোর আশায় যে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন তা এখন রূপ নিয়েছে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে।

প্রায় বছর ৩৫ আগে শ্রবণ প্রতিবন্ধী ঝর্ণার বিয়ে হয় একই এলাকার হরিচাঁদ বিশ্বাসের সঙ্গে। বিয়ের পর সহায়সম্বলহীন স্বামীর সঙ্গে থাকতেন সদর উপজেলার শেখহাপি ইউনিয়নের মালিয়াট বাজারের একটি ঝুপড়ি ঘরে। সে সময় স্বামীর অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে ঘরের সামনে ছোট একটি দোকান দেন ঝর্ণা। সেখানে ডিম, সিঙ্গাড়া, পাপড়, পরোটা বিক্রি শুরু করেন। স্বামীও খেত-খামারে কাজ করে আয়-রোজগার করতেন তখন। তবে বিয়ের দীর্ঘদিন পার হলেও তাদের কোনো সন্তানাদি না হওয়ায় ঝর্ণার সম্মতিতে স্বামী হরিচান দ্বিতীয় বিয়ে করেন।

সেই ঘরে এক সন্তানের জন্ম হয়। দুজনের সংসার হয় চারজনের। ঝুপড়ি ঘরে জায়গা না হওয়ায় পাশে সরকারি জমিতে একটি দোচালা ঘর উঠিয়ে সেখানে বসবাস শুরু করেন ৷ গাদাগাদি করে এখনো সেখানেই বসবাস করছেন তারা। একই সঙ্গে ৩০ বছর ধরে রাস্তার পাশে ডিম-সিঙাড়া বিক্রি করে যাচ্ছেন ঝর্ণা ৷ তবে এসব বিক্রি করে এখন আর তেমন আয় নেই। স্বামীর রোজগারও ভাল না। কোনোমতে চলছে তাদের সংসার। সচ্ছলতা ফেরানোর সংগ্রামে জয়ী না হতে পেরে এখন কেবল বেঁচে থাকার লড়াই চালাচ্ছেন ঝর্ণা ও তার পরিবার।

মালিয়াট এলাকার বাসিন্দা শংকর বিশ্বাস ও নিউটন গোস্বামী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ঝর্ণা বিশ্বাস এখানে দোকানদারি করছেন। এই দোকান থেকে যে আয় হয় তাতে তাদের সংসার চলে না। তাদের কোন জায়গা-জমি নেই, সরকারি জমিতে থাকে। তারা যদি একটু সরকারি সাহায্য পায় তাহলে ভাল লাগবে।’

ঝর্ণার স্বামী হরিচাণ বিশ্বাস বলেন, ‘দোকান চালাতে ঝর্ণাকে সবসময় সহযোগিতা করি। তবে এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে আর বাঁচা যাচ্ছে না। কোন রকমে চলছে সংসার। খুব কষ্টে দিন যায়। ঝর্ণা বিশ্বাস বলেন, এই দোকান ঘরেই এক সময় স্বামীর সঙ্গে বসবাস করতাম। এখন পাশের একটা সরকারি জায়গায় কোনোমতে থাকি। প্রায় ২৫-৩০ বছর ধরে এই দোকানদারি করছি। এই ব্যবসায় এখন আর সংসার চলে না। তারপরও বাঁচতে তো হবে। তাই দুচার টাকা আয়ের আশায় দোকানদারি করি। সরকারি একটু সাহায্য-সহযোগিতা পেলে একটু ভালোভাবে বসবাস করতে পারতাম।

শেখহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সুরঞ্জন গুপ্ত বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মালিয়াট বাজারে সিঙ্গারা, ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালায়। সে একজন অসহায় প্রতিবন্ধী। ইতোমধ্যে তাকে একটি প্রতিবন্ধী কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামীতে ঝর্ণাকে সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানান। সরকারের সহযোগিতা পেলে তাদের উপকার হবে।

শেখহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অশোক বিশ্বাস বলেন, সরকারি সহায়তা বরাদ্দ পেলে অসহায় দরিদ্র শ্রেণির মানুষকে ভাল রাখার চেষ্টা করি। ঝর্ণা রানীকে সাধ্যমত সহায়তা করা হয়েছে। আগামিতেও করা হবে।

মন্তব্য

কৃষি
Water is increasing in the Jamuna River

যমুনা নদীতে হু-হু করে বাড়ছে পানি

একদিনে পানি বেড়েছে ৪৮ সেন্টিমিটার
যমুনা নদীতে হু-হু করে বাড়ছে পানি

উজান থেকে নেমে আশা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে হু-হু করে বাড়ছে পানি। এতে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে।
ফলে জেলা সদর, কাজীপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার চরাঞ্চলের অনেক গ্রামের ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ অংশে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৬ দিনে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় ১০৭ ও কাজিপুর মেঘাইঘাট পয়েন্টে ১১২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রুত পানি বৃদ্ধির কারণে নদী তীরবর্তী অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে চরের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় ফসলি জমিতে পানি ওঠায় ফসলের ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে।

সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামের কৃষক মতিন মোল্লা জানান, গত কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীতে দ্রুতগতিতে পানি বাড়ছে। এতে চরাঞ্চলের বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতে প্লাবিত হচ্ছে। এতে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

বাড়াবাড়ি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল জানান, উজানে বৃষ্টিপাত বেড়েছে এবং মেঘের অবস্থান দেশের উত্তরের দিকে রয়েছে, ফলে পানি বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে যমুনায় পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ৪৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পানি বাড়লেও সিরাজগঞ্জে বিপৎসীমার ১৯৯ সেন্টিমিটার ও কাজীপুরে ২১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়লেও বন্যার কোন আশঙ্কা নেই।

মন্তব্য

p
উপরে