আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দরে আতঙ্কিত অবস্থায় হুড়োহুড়িতে সাত আফগান নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী।
ভিড়ের মধ্যে হুড়োহুড়ি ও পদদলিত হয়ে রোববার ওই সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদমাধ্যম এপির প্রতিবেদনে।
তালেবান সশস্ত্র গোষ্ঠী আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতা দখলের পর থেকে হাজার হাজার আফগান দেশ ছাড়তে মরিয়া হয়ে ওঠেন। তারা যেকোনো উপায়েই কাবুল বিমানবন্দরে পৌঁছান।
কাবুল বিমানবন্দরে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগান শাখা হামলা চালাতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সেই হামলার আশঙ্কার কথার মধ্যেই হুড়োহুড়িতে এমন প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।
অবশ্য তালেবান যোদ্ধারা এরই মধ্যে বিমানবন্দর এলাকা ঘিরে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশ তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, আইএস বিমানকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে।
এ জন্য দেশটি শনিবার নতুন একটি নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করেছে। বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশনা ছাড়া যেন সে দেশের কোনো নাগরিক ব্যক্তিগতভাবে কাবুল বিমানবন্দরে প্রবেশ না করেন।
যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনী বরং দেশটির নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিমানবন্দরে আনার ব্যবস্থা করবে।
ব্রিটিশ সেনাবাহিনী বলেছে, রোববার যে সাতজন নিহত হয়েছেন তারা পদদলিত হয়ে ও ভিড়ের মধ্যে পড়ে মারা গেছেন। মূলত তালেবান যোদ্ধারা কাবুল বিমানবন্দরে প্রবেশে বাধা দিতে ফাঁকা গুলি ছুড়লে হুড়োহুড়িতে তাদের মৃত্যু হয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিমানবন্দরের অবস্থা এখন খুব চ্যালেঞ্জিং। এটা ভালো অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সেনারা কাজ করছেন। তারা বিশ্বাসী, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা তারা দ্রুতই ফিরিয়ে আনবেন।’
আফগানিস্তানের সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তালেবান গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর থেকেই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশ। তাদের সঙ্গে যেকোনোভাবে বিমানে উঠতে মরিয়া হাজারো আফগান পরিবার।
এ অবস্থায় গত রোববার থেকে বিমানবন্দরটিতে বিশৃঙ্খলার মধ্যে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ১২ জনের। কয়েকজন ভিড়ে পদদলিত হয়ে এবং কয়েকজন গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন।
দুই দশক আগে প্রথম দফায় আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকাকালীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ ছিল ধর্মভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের বিরুদ্ধে। দেশ দখলের পর সুন্নি মুসলিম সংগঠনটি আবারও কঠোর শরিয়াহ আইন চালু করতে পারে বলে শঙ্কা ঘনিয়ে উঠছে।
এ অবস্থায় শনিবার পর্যন্ত সাত দিনে আফগানসহ বিভিন্ন দেশের ১৭ হাজার মানুষকে কাবুল বিমানবন্দর হয়ে আফগানিস্তান থেকে বের করা হয়েছে। এদের মধ্যে আমেরিকান নাগরিক প্রায় আড়াই হাজার।
ভিড়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের হাজারো কূটনীতিক ও নাগরিকদের উদ্ধার কার্যক্রম চরম ব্যাহত হচ্ছে। ফ্লাইটে চড়ে দেশ ছাড়তে কংক্রিটের দেয়াল আর কাঁটাতারের বেড়া বেয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করছিল হাজারো আফগান মা-বাবা, সন্তান।
অরাজক পরিস্থিতির কারণে শুক্রবার প্রায় ছয় ঘণ্টা বন্ধ ছিল বিমানবন্দরের কার্যক্রম। শনিবারও একটি চার্টার ফ্লাইট স্থগিত করতে বাধ্য হয় সুইজারল্যান্ড।
আরও পড়ুন:BREAKING: The British military says seven Afghan civilians have been killed in the crowds near Kabul’s international airport amid the chaos of those fleeing the Taliban takeover of the country. https://t.co/UgQsleH28t
— The Associated Press (@AP) August 22, 2021
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বাংলাদেশের উন্নতির ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নতি দেখে আমাদের লজ্জা হয়।
দেশটির ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বুধবার মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন বলে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
তিনি বলেছেন, “যে সময় বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ ছিল তখন তাদের বলা হতো, এই অংশটি ‘পাকিস্তানের ওপর একটি বোঝা’। কিন্তু ওই ‘বোঝাই’ এখন অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ব্যাপক উন্নতি করেছে। ফলে এখন বাংলাদেশের দিকে তাকালে আমি লজ্জিত হই। কারণ বাংলাদেশ এগিয়ে গেলেও পাকিস্তান এখনও অনেক পিছিয়ে আছে।”
সময়ের পরিক্রমায় সেই ‘বোঝা’র জনপদ এখন উন্নতির নানান সূচকে ছাড়িয়ে গেছে পাকিস্তানকে।
১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভাগ হওয়ার পর বাঙালিদের এ ভূখণ্ড পাকিস্তানের একটি অংশ হয়ে শাসিত হতে থাকে, কিন্তু সবকিছুতে এ জনপদের মানুষের ওপর ছিল বৈষম্য। পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে একসময় মুক্তির সংগ্রাম শুরু হয়, যার ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে হয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ শেষে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে গত বুধবার সিন্ধ সিএম হাউসে একটি মতবিনিময় সভা করেন শাহবাজ শরিফ।
সে সভায় মুক্তিযুদ্ধের আগের সময়ের প্রসঙ্গ টেনে শাহবাজ শরিফ বলেন, “আমি তখন অনেক তরুণ ছিলাম...তখন আমাদের বলা হতো ওই অঞ্চল (বাংলাদেশ) আমাদের জন্য বোঝা। আজ আপনারা জানেন, সেই ‘বোঝা’ কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। তাদের দিকে তাকালে আমি এখন লজ্জিত হই।”
এদিকে শাহবাজ শরিফের সঙ্গে আলোচনায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন ব্যবসায়ীরা। তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গেও ব্যবসাবিষয়ক আলোচনা শুরুর তাগিদ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন শাহবাজ শরিফ। বেশ কিছু বছর ধরে পাকিস্তানের অর্থনীতি ধুঁকছে। মূল্যস্ফীতি, দারিদ্র্য বৃদ্ধি, দুর্নীতিসহ নানা সঙ্কটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নাজুক অবস্থায় রয়েছে। অনুষ্ঠানে শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য দেশটির ব্যবসায়ীদের রপ্তানি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেন।
এ ছাড়া দেশে ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার’ জন্য পিটিআই প্রধান ইমরান খানের প্রতি তার নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গিও প্রকাশ করেন শাহবাজ।
মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করার বিষয়ে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া। অপরদিকে রাশিয়া ও চীনের উত্থাপিত সংশোধনী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে পরিষদ।
মস্কো স্যাটেলাইট ধ্বংস করতে সক্ষম এমন একটি পারমাণবিক ডিভাইস তৈরির চেষ্টা করছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সমর্থিত উদ্বেগের মধ্যে বুধবার এমন প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল।
রাশিয়ার অ্যাম্বাসেডর ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া জাতিসংঘের খসড়াটিকে একটি ‘নোংরা প্রদর্শনী’ এবং প্রস্তাবের সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের তৈরি করা ‘খামখেয়ালি চাল’ বলে বর্ণনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত ফেব্রুয়ারিতে নিশ্চিত করে বলেন, রাশিয়া স্যাটেলাইট বিধ্বংসী পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা অর্জন করছে বলে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্যের সঙ্গে জড়িত তিনটি সূত্র পরে সিএনএনকে জানায়, এই অস্ত্র বিস্ফোরিত হয়ে ব্যাপক শক্তির তরঙ্গ তৈরি করে স্যাটেলাইটকে ধ্বংস করতে পারে।
জাতিসংঘে ভোটাভুটির আগে যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দাবি করেছিলেন, ওই প্রস্তাবে ভেটো দিলে বুঝতে হবে রাশিয়া কিছু গোপন করার চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বুধবার ভোটাভুটির পর তার বক্তব্যে এসব দাবির প্রতিধ্বনি করেন।
প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘কেন? আপনি যদি নিয়ম মেনে চলেন, তাহলে কেন এমন একটি প্রস্তাব সমর্থন করবেন না? আপনি কী লুকাতে পারেন? এটা বিস্ময়কর এবং এটি লজ্জাজনক।’
ভোটাভুটির সময় চীনের অনুপস্থিতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বেইজিং দেখিয়েছে যে বিশ্বব্যাপী বিস্তার রোধ ব্যবস্থাকে রক্ষা করার পরিবর্তে তারা বরং রাশিয়াকে তাদের অংশীদার হিসেবে রক্ষা করবে।’
থমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘বুধবারের ভোটে অনুপস্থিতি বিদ্যমান অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বাধ্যবাধকতার ওপর অতিপ্রয়োজনীয় আস্থা পুনর্নির্মাণের একটি সত্যিকারের সুযোগ হারানো।’
যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের খসড়া প্রস্তাব ৬০টিরও বেশি সদস্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে আন্তঃআঞ্চলিক সমর্থন পেয়েছে।
জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোকে পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপনের জন্য পরিকল্পিত পারমাণবিক অস্ত্র বা গণবিধ্বংসী অন্যান্য অস্ত্র তৈরি না করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। শুক্রবার দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। দেশের নাগরিকদের ভোটদানে উৎসাহ দিতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো। তাদের সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন কোম্পানি।
দক্ষিণ ভারতের বেঙ্গালুরুতে নাগরিকদের ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে অনেক কোম্পানি বিনামূল্যে খাবার থেকে শুরু করে ফ্রিতে ট্যাক্সি পর্যন্ত অফার করেছে।
প্রতিবারই কম ভোটার উপস্থিতির জন্য খবরের শিরোনাম হয় কর্ণাটক রাজ্যের শহর বেঙ্গালুরু। তাই ভোটারদের ভোটের মাঠে আকৃষ্ট করতে এবার রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি কোমর বেঁধে নেমেছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। ভোট দেয়ার পুরস্কার হিসেবে সেখানে হোটেল, ট্যাক্সি পরিষেবা এমনকি কিছু প্রতিষ্ঠান কর্মীদের প্রণোদনা দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এসব সুবিধার মধ্যে ফ্রি বিয়ার, বিনামূল্যে ট্যাক্সি রাইড এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার মতো সুবিধাকে উল্লেখযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করছে বিবিসি।
এছাড়া আঙুলে ভোটের কালি দেখাতে পারলে অনেক হোটেল ক্রেতাদের বিনামূল্যে খাবার খাওয়াবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে।
বুধবার নির্বাচনি আইন লঙ্ঘন না করার শর্তে স্থানীয় হোটেল মালিক সমিতিকে ফ্রিতে বা বিশেষ ছাড়ে খাবার বিক্রির অনুমতি দিয়েছে রাজ্যের উচ্চ আদালত।
এ বিষয়ে ব্যাঙ্গালুরুর হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি পিসি রাও ডেইলি মিররকে বলেন, ‘ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহ দিতে হোটেলগুলো বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছে। কেউ কেউ বিনামূল্যে কফি, ডোসা দেবে। আবার কেউ কেউ গরমে ভোটারদের জুস খাওয়াবে। কিছু হোটেল তো খাবারের ওপর বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে।’
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কর্ণাটক রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পড়ে দক্ষিণ ব্যাঙ্গালুরুতে। সেবার ওই নির্বাচনি এলাকার মোট ভোটারদের ৫৩.৭ শতাংশ নাগরিক ভোট দিয়েছিলেন।
ব্যাঙ্গালুরুর জনপ্রিয় পার্ক ‘ওয়ান্ডারলা’ ভোটারদের জন্য টিকিটে বিশেষ মূল্যছাড় দিয়েছে। অন্যদিকে ভোট দিয়ে আসা প্রথম পঞ্চাশ জন ক্রেতাকে বিনামূল্যে বিয়ার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ‘ডেক অফ ব্রুস’ নামের একটি পানশালা।
স্থানীয় রাইড শেয়ার অ্যাপ ‘ব্লু-স্মার্ট’ ভোটকেন্দ্রের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে ভোটারদের রাইডে ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়েছে। এছাড়া ‘র্যাপিডো’ নামের ট্যাক্সি শেয়ারিং কোম্পানি ভোটারদের বিনামূল্যে রাইড দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
মিস্টার ফিলি’স নামের একটি ফাস্টফুড রেস্তোরাঁ প্রথম ১০০ জন ভোটারকে বার্গার ও মিল্কশেকের ওপর ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘এটি আসলে নাগরিকদের ভোটের গুরুত্ব বোঝানো এবং আমাদের গণতন্ত্র উদযাপনের উপায়।’
তিনি বলেন, ‘আশা করছি, এই উদ্যোগটি ব্যাঙ্গালুরুর নাগরিকদের মধ্যে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও পরিবর্তন আনতে উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে।’
উল্লেখ্য, ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ২১টি রাজ্যের ১০২টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। দেশটির নির্বাচন কমিশনের মতে, প্রথম দফা নির্বাচনে সব রাজ্যে গড়ে প্রায় ৬০-৬৫ শতাংশের বেশি ভোটারের উপস্থিতি রেকর্ড করা হয়েছে।
দ্বিতীয় দফায় দেশটির ১৩ রাজ্যের ৮৯টি লোকসভা আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ছত্তিশগড়, কর্ণাটক, কেরালা, আসাম, বিহার, মণিপুর, রাজস্থান, ত্রিপুরা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং জম্মু-কাশ্মীরে শুক্রবার ভোটগ্রহণ হবে।
এবার ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে সাত ধাপে, চলবে প্রায় দুই মাস ধরে। ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হবে আগামী ১ জুন এবং ৪ জুন ভোটের ফল ঘোষণা হবে।
নিরাপত্তা খাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে একটি সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) সই করেছে রাশিয়া ও ইরান।
রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে বুধবার নিরাপত্তা বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের আন্তর্জাতিক বৈঠকের ফাঁকে এমওইউটি সই করে দুই দেশ।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম প্রেস টিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এসএনএসসি) সচিব আলি আকবর আহমেদিয়ান ও তার রাশিয়ার সমকক্ষ নিকোলাই পাত্রুশেভ এমওইউতে সই করেন।
সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, কৌশলগত বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করবে তেহরান ও মস্কো।
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক গভীরতর করেছে ঘনিষ্ঠ ও কৌশলগত দুই মিত্র ইরান ও রাশিয়া।
সেন্ট পিটার্সবার্গে গত ২৩ এপ্রিল থেকে নিরাপত্তা বিষয়ে ১২তম আন্তর্জাতিক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের বৈঠক শুরু হয়, যা শেষ হবে ২৫ এপ্রিল। এতে অংশ নেন ১০৬টি দেশের প্রতিনিধিরা।
বৈঠকে দেয়া ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে আগ্রহী যেকোনো অংশীদারের সঙ্গে নিবিড় সহযোগিতায় প্রস্তুত মস্কো।
আরও পড়ুন:রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার শুরু করেছে ইউক্রেন, যেগুলো যুক্তরাষ্ট্র গোপনে সরবরাহ করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
বিবিসি বৃহস্পতিবার জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদিত ৩০ কোটি ডলার সামরিক সহায়তা প্যাকেজের অংশ। চলতি বছরের মার্চে সহায়তার অনুমোদন দেয়া হয়। এপ্রিলে অস্ত্রগুলো ইউক্রেনে পাঠানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের বরাতে বিবিসির খবরে বলা হয়, ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য অন্তত একবার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে ইউক্রেনের জন্য নতুন করে ছয় হাজার ১০০ কোটি ডলার সহায়তার প্যাকেজে সই করেছেন বাইডেন।
ইউক্রেনে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে বিভিন্ন সময়ে ওয়াশিংটনকে তাগিদ দিয়ে আসছিল কিয়েভ, তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এর আগে ইউক্রেনকে মধ্যমপাল্লার আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেমস তথা এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দেয়া হয়েছিল।
ইউরোপের দেশটিকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিতে রাজি হচ্ছিল না বৈশ্বিক পরাশক্তিটি।
বিবিসির খবরে বলা হয়, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দিতে বাইডেন ফেব্রুয়ারিতে সবুজ সংকেত দেন। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ৩০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দূরপাল্লার এটিএসিএমএস সরবরাহ করেছে বলে আমি নিশ্চিত করতে পারি।’
আরও পড়ুন:ইসরায়েলি সৈন্যরা অভিযান চালিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা গাজার দুটি প্রধান হাসপাতালে গণকবরের সন্ধান মিলেছে। সেসব গণকবরের স্পষ্ট, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্বস্ত তদন্তকারীদের অবশ্যই স্থানগুলোতে প্রবেশাধিকার থাকতে হবে। গাজার প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরার জন্য আরও সাংবাদিকদের নিরাপদে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’
এর আগে মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, ‘গাজা শহরের আল শিফা মেডিক্যাল সেন্টার ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল ধ্বংস এবং ইসরায়েলিরা চলে যাওয়ার পর ওইসব স্থাপনার আশপাশে গণকবরের সন্ধান পাওয়ার খবরে আমি আতঙ্কিত।’
এই হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দায়মুক্তির বিদ্যমান পরিবেশের পরিপ্রেক্ষিতে এতে আন্তর্জাতিক তদন্তকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’
ভলকার তুর্ক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে হাসপাতালগুলো বিশেষ সুরক্ষার অধিকারী। আর যুদ্ধে অংশ নিতে অক্ষম এমন বেসামরিক নাগরিক, বন্দি ও অন্যদের ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা যুদ্ধাপরাধ।’
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল হাসপাতালগুলোতে গণকবরের খবরকে অবিশ্বাস্যভাবে উদ্বেগজনক বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইসরায়েলি সরকারের কাছে এ বিষয়ে তথ্য চেয়েছেন।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভ থামাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মকর্তারা। একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে প্রশাসন।
নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে (এনওয়াইইউ) বিক্ষোভকারীদের একটি ক্যাম্প ভাঙতে সোমবার রাতে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দিনের শুরুতে ইয়েল থেকে বহুসংখ্যক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি সশরীরে ক্লাস বাতিল করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে ইহুদি-বিদ্বেষ ছড়ানোর উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
গাজার শাসক দল হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালানোর পর সাঁড়াশি হামলা শুরু করে ইসরায়েল। সেই থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিক্ষোভ ও উত্তপ্ত বিতর্ক যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বেড়েই চলেছে।
উভয় পক্ষের শিক্ষার্থীরাই বলছেন, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদি-বিদ্বেষ ও ইসলাম-বিদ্বেষ উভয় ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশ গত সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডেকে এনে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করার পর এই বিক্ষোভ-আন্দোলনের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।
এরপর থেকে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। এনওয়াইইউ এবং ইয়েল ছাড়াও বার্কলের ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি), ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান, এমারসন কলেজ এবং টাফ্টসে ক্যাম্প স্থাপন করে গাজায় ইসরায়েলি হামলা-হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে।
অন্যান্য বিক্ষোভকারীর মতো এনওয়াইইউ-এর বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রতিষ্ঠানকে ইসরায়েলি দখলদারত্বে আগ্রহী অস্ত্র প্রস্তুতকারক এবং সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আর্থিক অনুদান না নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আলেহান্দ্রো তানন নামের এক শিক্ষার্থী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র একটি সংকটময় মুহূর্তে রয়েছে। এই বিক্ষোভ ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও সাউথ আফ্রিকার বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক বিক্ষোভের সঙ্গে তুলনীয়।’
এক বিক্ষোভকারী সিবিএস নিউজকে বলেন, ‘আমরা প্যালেস্টাইনের পাশে আছি এবং সব মানুষের মুক্তির পক্ষে।’
এনওয়াইইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিজনেস স্কুলের বাইরে মূল ক্যাম্পে ৫০ জন ছিল। তারা এই বিক্ষোভকে অননুমোদিত বলে বর্ণনা করে বলেছে, এর ফলে ক্লাস ব্যাহত হচ্ছে।
সোমবার সন্ধ্যা থেকে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার শুরু করে। তবে কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে কানেক্টিকাটের নিউ হ্যাভেনের ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে প্রায় ৫০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শত শত বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছিল। তাদের অনেকেই বিক্ষোভস্থল থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।
সোমবার কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষার্থীদের ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানিমূলক আচরণের উল্লেখ করে ক্যাম্পাস থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান। সেখানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য