বঙ্গবন্ধু হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ খুনির ছয়জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। একজনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে পলাতক অবস্থায়, বিদেশের মাটিতে। দুজন অবস্থান করছেন কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু বাকি তিনজনের কোনো খোঁজ নেই বাংলাদেশ সরকারের কাছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, একজন সে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছিলেন বছর দুই আগে। তারপর তার আর কোনো খবর নেই।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, পাঁচ খুনির একজন কানাডা ও একজন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। মিথ্যা তথ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন খুনি এ এম রাশেদ চৌধুরী ওরফে রাশেদ চৌধুরী। অন্যদিকে কানাডা সরকারের আশ্রয়ে আছেন খুনি এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী ওরফে নূর চৌধুরী। এরা দুজনই সাবেক সেনা কর্মকর্তা।
অপর তিন খুনি সাবেক সেনা কর্মকর্তা খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম ও মোসলেমউদ্দিন সম্পর্কে কোনো তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।
তবে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের খুঁজে বের করার জন্য ১৯৯৬ সালে গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্য অ্যাম্বাসেডর ওয়ালিউর রহমান বলেন, মেজর ডালিম ও খন্দকার আব্দুর রশীদ পাকিস্তানের পাসপোর্টধারী এবং কোটিপতি ব্যবসায়ী। মেজর ডালিম পাকিস্তান থেকে কেনিয়ায় নিয়মিত যাতায়াত করছেন। আর আব্দুর রশীদ লিবিয়ার বেনগাজিতে থাকেন। সেখানকার একজন বড় ব্যবসায়ী তিনি। পাকিস্তান ও লিবিয়ার বাইরে বেলজিয়ামেও তার যাতায়াত রয়েছে।
জাতি যখন স্বাধীনতার ৫০ বছর ও মুজিবশতবর্ষ পালন করছে, তখন এই পাঁচ আত্মস্বীকৃত খুনির তিনজনকে খুঁজে বের করা এবং তাদের সবাইকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করতে না পারা হতাশা ও লজ্জার বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার হয়েছে কেবল বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত চাওয়ায়। তা না হলে এই ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধের সব ব্যবস্থাই করা হয়েছিল।
‘দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের গ্রহণযোগ্য বিচার হয়েছে। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ এই বিচার-প্রক্রিয়া শুরু করে। বিচারের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে থাকে। অবশেষে বিচার হয়। সব ধাপ অতিক্রম করে আইনি পরিক্রমায় কিছু আসামির রায় বাস্তবায়নের মাধ্যমে শাস্তি কার্যকর করা হয়েছে।
‘কিন্তু আমরা ১২ দণ্ডপ্রাপ্তের মধ্যে পাঁচজনের সাজা কার্যকর করতে পারিনি। এদের দুজনের সন্ধান আমরা জানি। তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশ্রয়দানকারী দুই দেশের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু অন্য তিনজনের বিষয়ে এখনও আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। এটা আমাদের জন্য লজ্জাকর। যে দুজনের সন্ধান আমরা জানি, তাদের দেশে এনে আদালতের রায় বাস্তবায়নের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। তিনি সেখানে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তাকে আমরা ফিরিয়ে আনতে পারব। কিন্তু কানাডায় থাকা নূর চৌধুরীর বিষয়ে আপডেট তথ্য আমার কাছে নেই। কানাডায় আমাদের হাইকমিশনার হালনাগাদ তথ্য দিতে পারবেন।
‘আর বাকিরা লুকিয়ে আছেন। কোথায় আছেন, জীবিত না মৃত- কেউ তাদের তথ্য দিতে পারে না। এটা লজ্জার। এ দেশে তাদের আত্মীয়স্বজন আছে। অথচ কেউ তাদের তথ্য দেয় না। এটা অবিশ্বাস্য! আমরা পুরস্কার ঘোষণা করে তথ্য চেয়েছি। যদি কেউ খুনিদের সম্পর্কে কিছু জানেন, তবে আমাদের জানান।’
মোমেন বলেন, ‘রাশেদ চৌধুরীর বিষয়টি আমরা যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রেসিডেন্টকে চিঠি দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তারা বিষয়টি রিভিউ করছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাশেদের অবস্থান করার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে রিভিউ চলছে। রিভিউতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার নতুন একজন অ্যাটর্নি নিয়োগ করেছে। আমরা আশাবাদী, রাশেদ চৌধুরীকে দেশে আনতে পারব।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, খুনিদের ফিরিয়ে আনতে একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। এতে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় সব এজেন্সির সঙ্গে কাজ করছে। এই টাস্কফোর্স বা এজেন্সিগুলোর কাছেও তিন খুনি সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই।
টাস্কফোর্সের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চার্টার অব রাইটস অ্যান্ড ফ্রিডমস’ নামে কানাডায় একটি আইন আছে। তাতে একটি ধারায় বলা আছে, যে দেশে মৃত্যুদণ্ড আছে, সে দেশে কোনো ব্যক্তিকে পাঠানো যাবে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোনো দেশের সরকার যখন গ্যারান্টি দিয়েছে যে, তাদের আবারও বিচারের সুযোগ দেয়া হবে, তখন কিছু অপরাধীকে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
ওই সদস্য আরও বলেন, ‘কানাডার ওই আইনে আরেকটি ধারা আছে, যাতে বলা হয়েছে, যে দেশে মৃত্যুদণ্ড আছে সে দেশেও এমন অপরাধীদের পাঠানো যাবে, যদি তাদের অপরাধ ব্যতিক্রমধর্মী হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব সময়ই নূর চৌধুরীর অপরাধকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উল্লেখ করে ফেরত চাওয়া হয়েছে।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে একদল বিপথগামী সেনা। ওই সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। নারকীয় এই হত্যাকাণ্ডের বিচারে পদে পদে বাধা আসে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরপরই দায়মুক্তি (ইনডেমনিটি) অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর দায়মুক্তি আইন বাতিল করে আওয়ামী লীগ সরকার। ওই বছরের ২ অক্টোবর ধানমন্ডি থানায় বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সহকারী মহিতুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকার দায়রা জজ কাজী গোলাম রসুল ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে রায় দেন।
নিম্ন আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণের শুনানি শেষে ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট দ্বিধাবিভক্ত রায় দেয়। ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টের তৃতীয় বেঞ্চ ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে তিনজনকে খালাস দেয়।
১২ আসামির মধ্যে প্রথমে চারজন ও পরে এক আসামি আপিল করে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও আপিল শুনানি না হওয়ায় বিচার-প্রক্রিয়া আটকে যায়। দীর্ঘ ছয় বছর পর সর্বশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আপিল বিভাগে একজন বিচারপতি নিয়োগ দেয়ার পর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলাটি ফের গতি পায়।
২০০৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির লিভ টু আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে। আপিলের অনুমতির প্রায় দুই বছর পর ২০০৯ সালের অক্টোবরে শুনানি শুরু হয়। ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পাঁচ আসামির আপিল খারিজ করে। ফলে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে হাইকোর্টের দেয়া ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকে।
এরপর ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি রাতে সৈয়দ ফারুক রহমান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান ও মুহিউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। আর ওই রায় কার্যকরের আগেই ২০০২ সালে পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান আরেক খুনি আজিজ পাশা।
গত বছরের ৭ এপ্রিল ভোরে মিরপুরের গাবতলী এলাকায় কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিস) ইউনিটের একটি দল আটক করে আরেক পলাতক আসামি খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্তকৃত) আবদুল মাজেদকে। সেদিন দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হয় কারাগারে। সব আনুষ্ঠানিকতা সেরে পাঁচ দিন পর ১২ এপ্রিল প্রথম প্রহরে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত আরেক খুনি রিসালদার (বরখাস্ত) মোসলেম উদ্দিন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে গত বছরের ২২ এপ্রিল এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে কলকাতার প্রভাবশালী গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সম্প্রতি গ্রেপ্তার ও ফাঁসি কার্যকর হওয়া বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ দীর্ঘদিন কলকাতায় ছিলেন। তার ফাঁসি কার্যকরের আগে তার কাছ থেকে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা মোসলেম উদ্দিনের অবস্থান জেনে নেয়।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘ভারতের গোয়েন্দাদের সহযোগিতায় রিসালদার মোসলেম উদ্দিনকে উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে। তবে অন্য একটি সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, মাজেদ আটক হওয়া মাত্রই নিজের মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে গা ঢাকা দিয়েছে মোসলেম উদ্দিন।’
আনন্দবাজার-এর ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘লকডাউনের সময় ভারত থেকে মোসলেম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ায় সমস্যা হতে পারে বলে ঢাকা বিষয়টি ভারতের গোয়েন্দাদের জানায়। ভারতীয় গোয়েন্দারা এই খুনিকে কার্যত তাড়িয়ে সীমান্তের কোনো একটি অরক্ষিত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। তবে সরকারিভাবে কিছুই স্বীকার করা হয়নি। উত্তর চব্বিশ পরগনার একটি আধাশহরে ইউনানি চিকিৎসক সেজে ভাড়া ছিলেন মোসলেম উদ্দিন।’
তবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ কখনোই আনন্দবাজারের এই সংবাদ স্বীকার করেনি। গত বছরের ১২ আগস্ট ইন্টারপোলের বাংলাদেশ শাখা অফিসের প্রধান (এনসিবি) ও পুলিশের সহকারী উপমহাপরিদর্শক (এআইজি) মহিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘গণমাধ্যমেই আমরা বঙ্গবন্ধুর খুনি মোসলেম উদ্দিনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জেনেছিলাম। এরপর আমরা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ভারতীয় এনসিবির কাছে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু গত চার মাসেও আমরা ওই চিঠির কোনো জবাব পাইনি। গত ১২ এপ্রিল পলাতক সাবেক ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।’
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সে সময় আনন্দবাজারের প্রতিবেদন সম্পর্কে জেনেছিলাম। কিন্তু এর কোনো সত্যতা পাইনি।’
দুজন পাকিস্তানের পাসপোর্টধারী?
সরকারের কাছে তিন খুনির সন্ধান না থাকলেও সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব পালনকারী একটি টিমের সদস্য অ্যাম্বাসেডর ওয়ালিউর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, খোঁজহীন তিনজনের মধ্যে দুজনের সর্বশেষ খবর তার কাছে আছে। মেজর শরিফুল হক ডালিম ওরফে মেজর ডালিম ও লে. কর্নেল খন্দকার আব্দুর রশীদ পাকিস্তানের পাসপোর্টধারী এবং কোটিপতি ব্যবসায়ী।
ওয়ালিউর রহমান বলেন, ‘ডালিম পাকিস্তান থেকে কেনিয়ায় সব সময় যাতায়াত করছেন। কেনিয়ায় বিনিয়োগকারী বিদেশিদের মধ্যে তিনি অন্যতম। সে দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা প্রভাবশালীরা বংশপরম্পরায় তাকে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে।
‘১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ইনডেমনিটি বিল বাতিলের পর আমরা কেনিয়ায় গিয়ে সে দেশের সকল পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে দেখা করি এবং তাকে ফেরত চাই। তারা সরাসরি তা প্রত্যাখ্যান করে।’
তিনি বলেন, ‘খন্দকার আব্দুর রশীদও পাকিস্তানের পাসপোর্ট বহন করেন। তিনি মূলত লিবিয়ার বেনগাজিতে থাকেন। সেখানকার একজন বড় ব্যবসায়ী তিনি। পাকিস্তান ও লিবিয়ার বাইরে বেলজিয়ামেও তার যাতায়াত রয়েছে।’
খুনিদের ফিরিয়ে এনে শাস্তি দেয়া প্রসঙ্গে ওয়ালিউর রহামন বলেন, ‘আমরা ছয়জন খুনিকে ফাঁসি দিতে পেরেছি। এটা একটি বড় সংখ্যা। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরো চারজনকে ক্ষমা করে দেন খালেদা জিয়া। তা না হলে ফাঁসি হতো ১০ জনের। বিশ্বের কোথাও এতদিন পর বিচার করে শতভাগ রায় বাস্তবায়ন করা যায়নি। তারপরও আমরা কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক দুজনকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশাবাদী।’
আরও পড়ুন:গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পদ্মা সেতুতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্যাশলেস, টোল কালেক্টর ব্যতীত ননস্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC) সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের টোল পরিশোধ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায় এসেছে।
বর্তমানে বিকাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের অ্যাপ এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর টোল পরিশোধ করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা বিকাশ অ্যাপে গিয়ে “টোল” অপশনের অধীনে “মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করুন” এ প্রবেশ করে গাড়ির নম্বর ও চেসিস নম্বরের শেষ ৪ (চার) ডিজিট প্রদান করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। সফল রেজিস্ট্রেশনের পর ফিরতি এসএমএসে একটি Ekpass ID প্রেরণ করা হবে।
এই Ekpass ID ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাপের “Pay Bill” অপশনের “D-Toll Top-Up” সেবার মাধ্যমে রিচার্জ করতে হবে। এরপর পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজার নিকটস্থ রেজিস্ট্রেশন বুথে বিআরটিএ অনুমোদিত RFID ট্যাগ প্রথমবারের মতো যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। একবার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে, যানবাহন কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে ETC লেন ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারবে।
১৮ অক্টোবর সেতু বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ পদ্মা সেতুর ইটিসি বুথ পরিদর্শন করেন এবং ইটিসি সেবা ব্যবহার করে পদ্মা সেতু পারাপার করেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ETC সিস্টেমের লাইভ পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই সেবার পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ETC সিস্টেমের মাধ্যমে মোট ১,৮১৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং মোট ৩৪,৯১,৭০০ টাকা টোল আদায় সম্পন্ন হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মহোদয়ের বিশেষ নির্দেশনা ও দিকনির্দেশনায় পদ্মা সেতুতে এই ETC সিস্টেম বাস্তবায়িত হয়েছে। এটি দেশের টোল ব্যবস্থাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা সময়, জ্বালানি ও মানবসম্পদের অপচয় হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপ এই সেবার আওতায় যুক্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর a2i (এটুআই) কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং নতুন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে সংযুক্তির কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই টোল কালেক্টর ব্যতীত নন স্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে পদ্মা সেতু ব্যবহারকারীরা দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছভাবে টোল পরিশোধ করতে পারবেন—যা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৫ আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহিদ ৫৮ টি পরিবার এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহিদ ১৯টি পরিবারের সদস্যদের মাঝে পরিবার প্রতি ১০ লক্ষ টাকা করে, মোট ৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, "শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। ঐতিহাসিক শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আজকের এই স্বীকৃতি তারই প্রমাণ।" শহীদ পরিবারদেরকে স্বীকৃতি দিতে পেরে সরকার গর্বিত উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন ইতিহাস থেকে যেনো কেউ ঐতিহাসিক শাপলা চত্বরের শহীদদের নাম মুছতে না পারে, এজন্য শাপলা চত্বরেই খোদাই করে লেখা হবে শহীদদের নাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন,"শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহিদদের আর্থিক সহায়তা প্রদান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ।" এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মোদি বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, "স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এই মহতী উদ্যোগে সারা বাংলার আলেম সমাজ সম্মানিত হয়েছে। "
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির চেয়ারম্যান জনাব মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি জনাব নুরুল হক নুর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।
‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঐক্য ও সংস্কারের পথে বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
তিনি আরও বলেন, এটি ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার ফেসবুক পোস্টে মিলার লেখেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। এই দলিল মৌলিক সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গড়ে ওঠা ব্যাপক ঐকমত্যের প্রতিফলন।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ২০২৬ সালের নির্বাচনের পথে দেশটি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এটি তারই প্রমাণ।
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ মোট ২৫টি রাজনৈতিক দল যোগ দেয়।
অনুষ্ঠানে মিলারের উপস্থিতি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও শাসনব্যবস্থা সংস্কারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগীতা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত বহন করে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের পক্ষে তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
এ লক্ষ্যে ইইউ কারিগরি সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর প্রস্তাবও দিয়েছে। এসব উদ্যোগ গণতান্ত্রিক চর্চা ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি ইইউর প্রতিশ্রুতির অংশ। সূত্র: বাসস
ইতালির রোমে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব খাদ্য ফোরাম ২০২৫-এ যোগ দিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে আরও রয়েছেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান ও অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি উইং) ড. মো. মাহমুদুর রহমান।
উপদেষ্টার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ফোরামে দেশের কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সদস্য দেশসমূহের সাথে বিভিন্ন সেশনে অংশগ্রহণ করবে। সফরকালে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা ইতালির ইন্টেরিয়র মিনিস্টার এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতালির রোমস্থ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য এ ফোরাম ১০ অক্টোবর শুরু হয়ে চলবে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। সূত্র: বাসস
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের প্রশাসনিক সংস্কার, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ করে মোট ১২ টি নতুন কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস ও বিশেষায়িত ইউনিট সৃজন করে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক গতকাল একটি সরকারি আদেশ জারী করা হয়েছে। কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগ দু’টির বিদ্যমান কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস এবং বিশেষায়িত ইউনিটসমূহে জনবল বৃদ্ধি এবং নতুন ১২টি কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস এবং বিশেষায়িত ইউনিটসমূহে ৩৭৩টি ক্যাডার পদ এবং ৩,২২৪ টি নন-ক্যাডার পদসহ মোট ৩,৫৯৭টি পদ নতুনভাবে সৃজন করা হয়েছে।
কর জাল সম্প্রসারণ করে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে স্বনির্ভরতা অর্জন, সেবার মান উন্নয়নের মাধ্যমে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং সর্বোপরি পরোক্ষ কর ব্যাবস্থাকে অধিকতর গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের প্রশাসনিক সংস্কার, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ এবং মন্ত্রি পরিষদ বিভাগসহ প্রয়োজনীয় সকল প্রশাসনিক অনুমোদন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক উক্ত আদেশ জারী করা হয়। উক্ত আদেশ অনুযায়ী ৩ পর্যায়ে ৫টি নতুন মূল্য সংযোজন কর কমিশনারেট, ৪টি নতুন কাস্টমস হাউস এবং ৩ টি বিশেষায়িত দপ্তর সৃজন করা হলো।
নতুন ১২ টি কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস ও বিশেষায়িত ইউনিট সৃজন ছাড়াও উক্ত সরকারি আদেশের মাধ্যমে বিদ্যমান কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস ও বিশেষায়িত ইউনিটসমূহের সম্প্রসারণ, ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাস্টমস কার্যক্রম এবং কাস্টমস ও ভ্যাট গোয়েন্দা কার্যক্রমের সম্প্রসারণ ও বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে।
কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের প্রশাসনিক সংস্কার, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণের ফলে পরোক্ষ কর আহরণ কার্যক্রমের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি পাবে, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
-জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, আগামীর স্বপ্নপূরণে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে। এজন্য প্রস্তুতি লাগবে।
তিনি বলেন, যোগ্য হয়েই সুযোগ্য স্থানে অধিষ্ঠিত হতে হবে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সকল ক্ষেত্রে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে হবে। দেশ ও জাতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে।
গতকাল সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠানটির ছাত্র সংসদের আয়োজনে ১ম এমডিসি জাতীয় স্কুল, কলেজ ও আন্তঃমাদ্রাসা বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্রান্ড ফিনালে ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আমাদেরকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। আমরা একটি স্থানে আসতে পেরেছি। এখানেই শেষ নয়, আরো বহুদূর যেতে হবে। এই পথ পাড়ি দিতে কোনো বাঁধা আসলে আমাদেরকে থেমে গেলে চলবে না। সকল বাঁধা অতিক্রম করেই এগিয়ে যেতে হবে।’
ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. খালিদ বলেন, সকল ভেদাভেদ ও মতপার্থক্য ভুলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যে সুযোগ এসেছে সেটাকে পরিপূর্ণ কাজে লাগাতে হবে। এ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেলে আমাদেরকে বহুবছর সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তিনি সকলকে কালেমা তায়্যেবার পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অনুরোধ জানান।
পরে উপদেষ্টা চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ ক্যাটাগরিতে বিজয়ী দলের সদস্যদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
উল্লেখ্য, তিন মাসব্যাপী স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা ক্যাটাগরিতে এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সারাদেশের ৫৪টি প্রসিদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।
স্কুল ক্যাটেগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মুগদা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং রানারআপ হয়েছে বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
কলেজ ও উন্মুক্ত ক্যাটাগরিতে নটর ডেম কলেজ চ্যাম্পিয়ন এবং মনিপুর স্কুল ও কলেজ রানারআপ হয়েছে।
মাদ্রাসা ক্যাটাগরিতে তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা চ্যাম্পিয়ন এবং বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা রানারআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ খলিলুর রহমান মাদানীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চেয়ারম্যান ড. শামসুল আলম, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব মো. মনিরুজ্জামান ভূইয়া, আল ফাতাহ পাবলিকেশন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ সাঈদ, ডাকসুর নির্বাচিত ভিপি আবু সাদিক কায়েম, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান প্রফেসর নুরুন্নবী মানিক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য