ফুটবলপ্রেমীদের বহুল প্রতীক্ষিত উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩১ আগস্ট। মোনাকোতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় (বাংলাদেশ সময় রাত দশটায়) ২০২৩-২৪ আসরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
আসন্ন ২০২৩-২৪ মৌসুমের জন্য হওয়া ড্রয়ে শক্তি ও সামর্থ্যের বিচারে সব ধরনের দল নিয়ে হয়েছে বিভিন্ন গ্রুপ। এবার শক্তিশালী দলের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে তুলনামূলক কম শক্তিধর দল। আবার শুধু শক্তিধর দলগুলোকে নিয়ে যেমন হয়েছে গ্রুপ, তেমনই তুলনামূলক দুর্বল দলগুলো নিয়েও রয়েছে গ্রুপ।
ধারাবাহিকভাবে আমরা প্রতিটি গ্রুপ নিয়ে আলোচনা করব। আজ চলুন জেনে নেই গ্রুপ ‘এ’ সম্পর্কে।
গ্রুপ ‘এ’র দল চারটি হচ্ছে- বায়ার্ন মিউনিখ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, এফসি কোপেনহেগেন ও গালাতেসারাই।
২০২৩-২৪ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ ‘এ’ নিয়ে চর্চা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে এক গ্রুপে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ড্র হওয়ায় হচ্ছে আলোচনা। কারণ চলতি দলবদলের মৌসুমে টটেনহ্যাম থেকে হ্যারি কেইনকে দলে টানার চেষ্টা করেছিল এরিক টেন হাগের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কিন্তু তাদের সে চেষ্টা সফল হয়নি। কেইন পাড়ি জমিয়েছেন জার্মানিতে। একই গ্রুপে দুই দল পড়ায় তাই হ্যারি কেইনের বায়ার্নের মোকাবিলা করতে হবে ইউনাইটেডের।
বায়ার্ন মিউনিখ
জার্মান লিগে প্রতি বছর আধিপত্য বিস্তার করা বায়ার্ন মিউনিখ ইউরোপ সেরার মঞ্চেও কম যায় না। ২০১০-১১ মৌসুমের পর থেকে মাত্র একবার শেষ ষোল পার করতে ব্যর্থ হয়েছে জার্মানির এ ক্লাবটি। এর মধ্যে তিনবার ফাইনালে উঠে দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। তাছাড়া প্রতিবছরই ফাইনালসে অংশ নিতে দেখা যায় তাদের।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ও এসি মিলানের পরই লিভারপুলের সঙ্গে যৌথভাবে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন। তবে মূল একাদশের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় চলে যাওয়ায় এবারের আসরে তারা ঠিক কেমন পারফরম করবে, তা নিয়ে ভক্তদের থাকতে হবে অপেক্ষায়। চলতি গ্রীষ্মকালীন দলবদলে দলটির প্রতিষ্ঠিত দুই সেন্টার ব্যাক লুকা এরনান্দেস ও বেনিয়ামিন পাভার্দ বায়ার্ন ছেড়ে নাম লিখিয়েছেন যথাক্রমে ফ্রান্সের পিএসজি ও ইতালির ইন্টার মিলানে। ফরোয়ার্ড সাদিও মানে সৌদির ক্লাব আল-নাসর এবং মিডফিল্ডার মার্সেল জাবিৎসার গিয়েছেন বায়ার্নের ঘরোয়া প্রতিপক্ষ বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে। মানুয়েল নয়ার ইনজুরিতে পড়ার পর গত মৌসুমে দলে ভেড়ানো গোলরক্ষক ইয়ান জমারও বায়ার্ন ছেড়ে ইন্টার মিলানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ফলে দলের শক্তি ও ভাসাম্য যে খানিকটা কমে গিয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
অবশ্য দলে শক্তিও বাড়িয়েছে তারা। ইংলিশ ফুটবলের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড হ্যারি কেইনকে রেকর্ড ১০০ মিলিয়নে ইউরোর বিনিময়ে দলে ভিড়িয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। তাছাড়া ৫০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে নাপোলির দক্ষিণ কোরিয়ান সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার মিন-জায়ে কিমকে দলে টেনেছে তারা। এছাড়া ফ্রি ট্রান্সফারে আরবি লাইপসিজ থেকে বায়ার্নে এসেছে সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার কনরাড লাইমার ও ডর্টমুন্ড থেকে লেফট ব্যাক রাফায়েল গেরেইরো।
তবে নতুন খেলোয়াড় এসে নতুন পরিবেশ, নতুন ম্যানেজারের খেলোয়াড়ি দর্শনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। ফলে কতটা তাড়াতাড়ি বায়ার্ন ম্যানেজার টমাস টুখেল দলে ভারসাম্য এনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের শক্তিমত্তার প্রমাণ দিতে পারবে, সেটা দেখতে অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
২০০৭-০৮ মৌসুমে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সেবার চেলসির সঙ্গে ফাইনালে ১-১ গোলে ড্রয়ের পর টাই-ব্রেকারে ৬-৫ গোলে জিতে ইউরোপ সেরার মুকুট পরে স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের শিষ্যরা। তারপর থেকেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ধুঁকছে দলটি। তার পর ২০০৮-০৯ ও ২০১০-১১ মৌসুমে ফাইনালে উঠলেও দুবারই বার্সেলোনার কাছে হেরে যায় দলটি। তখন থেকে ঘরোয়া লিগসহ ইউরোপিয়ান কম্পিটিশনে খুব বেশি ভালো করতে পারেনি ম্যানচেস্টারের এ ক্লাবটি। গতবার তো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগই পায়নি তারা। তার আগেরবার শেষ ষোলোয় আতলেতিকো মাদ্রিদের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় রেড ডেভিলসদের। ২০২০-২১ মৌসুমে গ্রুপ পর্বই পার হতে পারেনি তারা।
অবশ্য গত মৌসুমে এরিক টেন হাগ দলটির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই নতুন করে দল গোছানোর চেষ্টা করছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। নতুন খেলোয়াড় দলে টানা ও কোচের পরিকল্পনায় না থাকা খেলোয়াড়দের বিক্রি করে দিয়ে দলবদলের বাজারে তারা বেশ সাড়া ফেলেছে গত দুই মৌসুম ধরে।
চলতি মৌসুমে ক্লাবের প্রথম দুই গোলরক্ষক দাভিদ দে হেয়া ও ডিন হেন্ডারসনকে বিদায় দিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তাছাড়া ফরোয়ার্ড ভুট ভেগহোর্স্ট, বায়ার্ন থেকে ধারে আনা মিডফিল্ডার মার্সেল জাবিৎসার, ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফ্রেদ, ডিফেন্ডার অ্যালেক্স টেলেস ও ব্রেন্ডন উইলিয়ামসকে ছেড়ে দিয়েছেন টেন হাগ।
পরিবর্তে হ্যারি কেইনকে দলে ভেড়াতে ব্যর্থ হয়ে কিনেছেস আতালান্তার ফরোয়ার্ড রাসমুস হইলুনকে। তাছাড়া ইন্টার মিলানের গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা, চেলসির অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ম্যাসন মাউন্টের মতো খেলোয়াড়রা ইতোমধ্যে ইউনাইটেডের লাল জার্সি পরে খেলা শুরু করেছেন। দলবদলের শেষ সময়ে মরোক্কান মিডফিল্ডার সোফিয়ান আমরাবাট এবং সেভিয়া থেকে উইং ব্যাক সের্হিও রেগিলনকেও দলে টানার চেষ্টা করছে বলে জানা যাচ্ছে।
টেন হাগের নেতৃত্বে গত মৌসুম থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েছে ইউনাইটেড। গত মৌসুমে রক্ষণে শক্তি বাড়ানোর পর এ মৌসুমে আক্রমণভাগ ও মিডফিল্ডের প্রতি নজর দিয়েছেন দলটির কোচ। নতুন মৌসুমের শুরুতে প্রিমিয়ার লিগে এর ফলও দেখা যাচ্ছে তাদের পারফরম্যান্সে। নতুন করে ফিরে আসা ইউনাইটেড ইউরোপ সেরার মঞ্চে কতটা ভালো করে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এফসি কোপেনহেগেন
গত মৌসুমে লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ালিফাইয়ার খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ডেনমার্কের এ ক্লাবটি। ১৯৯২ সালে আত্মপ্রকাশের পর ইউরোপের মঞ্চে প্রায় নিয়মিতই বলা চলে কোপেনহেগেনকে।
১৯৯৩-৯৩ মৌসুমে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও এ পর্যন্ত তারা ছয়বার ইউরোপ সেরার লিগে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে। তবে তাদের সেরা পারফরম্যান্স ছিল ২০১০-১১ মৌসুমে। সেবার শেষ ষোলোতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে দলটি। তবে চেলসির কাছে হেরে শেষ ষোলো থেকেই বিদায় নিতে হয় তাদের। এছাড়া বাকি মৌসুমগুলোতে গ্রুপ পর্বে অংশগ্রহণ করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের।
চলতি মৌসুমে ঘরোয়া লিগে ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে লিগ টেবিলের দুইয়ে রয়েছে কোপেনহেগেন। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তাদের বায়ার্ন, ইউনাইটেডর মতো বড় দলের বিপক্ষে ভালো করার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এক্ষেত্রে পয়েন্ট টেবিলের তিনে অবস্থান করাই হতে পারে তাদের লক্ষ্য। তাহলে ইউরোপা লিগে অবনমন হলেও ইউরোপিয়ান কোনো আসরে টিকে থাকার সম্ভাবনা থকবে ফুটবল ক্লাব কোপেনহেগেনের।
গালাতেসারাই
দলবদলের এ মৌসুমে দলের শক্তিমত্তা বাড়াতে বেশ ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে গালাতেসারাইকে। পিএসজির আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মাউরো ইকার্দিকে ১০ মিলিয়ন ইউরোরর বিনিময়ে ও চেলসি থেকে ধারে মরক্কোর অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হাকিম জিয়েচকে দলে ভিড়িয়ে আলোচনায় উঠে আসে তুরস্কের এ ক্লাবটি। এ ছাড়া ক্রিস্টাল প্যালেসের উইঙ্গার উইলফ্রেড জাহা ও আরবি লাইপসিগের লেফট ব্যাক আঞ্জেলিনিওকে চলতি দলবদলে দলে টেনেছে তারা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জনের পরই যে তারা প্রতিপক্ষকে টক্কর দিতে দলের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করেছে, একথা স্পষ্ট। ইউরোপের অন্যতম দুই পরাশক্তি বায়ার্ন ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে দিলেও গালাতেসারাইকে নিয়ে এ মৌসুমে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ট্যাকটিকাল বিশ্লেষণ
নিজের মাঠে তিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই জিতে পূর্ণ পয়েন্ট অর্জন করতে চাইবে বায়ার্ন মিউনিখ। সেইসঙ্গে প্রতিপক্ষের মাঠেও সবগুলো ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য থাকবে টমাস টুখেলের।
তবে এরিক টেন হাগ এক্ষেত্রে কিছুটা রক্ষণশীল কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। নিজেদের মাঠে ও তুলনামূলক দুর্বল দুই প্রতিপক্ষের মাঠে জয়ের পরিকল্পনা করলেও বায়ার্নের মাঠ থেকে অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে আসতে চাইবেন তিনি। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অবলম্বন করতে পারেন ভিন্ন কৌশল। তুলনামূলক দুর্বল দলগুলোর বিপক্ষে বেশি গোলের ব্যবধানে জেতার লক্ষ্য থাকবে তার। তাহলে বায়ার্নের সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে গ্রুপ পর্ব শেষ করার সম্ভাবনা থাকবে তাদের।
গালাতেসারাইয়ের কৌশল নিয়ে খানিকটা ধন্ধে থাকবে সবাই। প্রথমত তারা অন্তত দ্বিতীয় হয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়ার চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে বড় দুই দলের যেকোনো একটিকে টার্গেট করতে পারেন ক্লাবটির কোচ ওকান বুরুক। নিজেদের মাঠে বায়ার্ন কিংবা ইউনাইটেডের অন্তত একটি দলের সঙ্গে জিততে পারলে ওই দলের মাঠে গিয়ে অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে চাইবেন তিনি। অর্থাৎ নিজেদের সমর্থকের সামনে সব দলের বিপক্ষেই জয় এবং বড় দুই দলের মাঠে গিয়ে অন্তত ড্র এবং কোপেনহেগেনের বিপক্ষে ৬ পয়েন্ট আদায় করতে পারলে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে থাকতে পারে তারা। আর এ কাজে সফল হতে পারলে পরের রাউন্ডে না পৌঁছাতে পারলেও তিনে থেকে ইউরোপা লিগে প্রতিযোগিতা করাটা তাদের জন্য অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।
তবে কোপেনহেগেনের চিন্তাটা থাকবে অন্য জায়গাতে। বড় দুই দলের বিপক্ষে অন্তত ড্র করতে চাইবে তারা। আর গালাতেসারাইকে টার্গেট করতে পারে ক্লাবটির কোচ। তুরস্কের ক্লাবটির সঙ্গে দুই লেগেই জিততে পারলে অন্তত ইউরোপা লিগে খেলার সুযোগ পাবে দলটি। তবে বড় দুই দলের বিপক্ষে চমক দেখাতে পারলে পরের রাউন্ডেও উঠে যেতে পারে এ গ্রুপের সবচেয়ে আন্ডারডগ এ দলটি।
প্রেডিকশন
ক্রমিক | দল | খেলা | জয় | ড্র | হার | পয়েন্ট |
১ | বায়ার্ন মিউনিখ | ৬ | ৫ | ১ | ০ | ১৬ |
২ | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | ৬ | ৩ | ২ | ১ | ১১ |
৩ | গালাতেসারাই | ৬ | ২ | ১ | ৩ | ৭ |
৪ | কোপেনহেগেন | ৬ | ০ | ০ | ৬ | ০ |
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) গ্রুপ পর্বের সময়সূচি জানা যাবে। আর গ্রুপ পর্বের খেলা শুরু হবে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর, যা চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে নকআউট পর্বের খেলা। এ মৌসুমের ফাইনাল ম্যাচটি হবে আগামী বছরের ১ জুন। এবারের ফাইনালের জন্য লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামকে নির্ধারণ করেছে উয়েফা।
বর্তমান ফরম্যাটে ৩২ দল নিয়ে প্রতিযোগিতার এটিই শেষ আসর। আগামী মৌসুম থেকে নতুন ফরম্যাটে ভিন্ন আঙ্গিকে চ্যাম্পিয়ান্স লিগের আয়োজন করবে উয়েফা। ৩২ থেকে বেড়ে হবে ৩৬টি দল নিয়ে হবে আগামী মৌসুমের আসর।
আরও পড়ুন:টার্ফের সবুজ গালিচায় মৃদু আলোর অপরূপ দৃশ্য। চারপাশে সারিবদ্ধ দর্শকের ভিড়। থেমে থেমে উল্লাসের সুর বেজে উঠছে দর্শক ও খেলোয়াড়দের মাঝে।
রেফারি বাঁশিতে ফুঁ দিতেই শুরু হয়ে যায় যুদ্ধ। তবে এ যুদ্ধ সংঘাতের নয়, সৌহার্দ্যের ফুটবল যুদ্ধ।
প্রথম দিন প্রতিটি ম্যাচে ফুটবল শৈলীতে শেষমেশ জয়ের হাসি হাসে ছয়টি দল। তবে গোলে স্বপ্নভঙ্গ হলেও দারুণ খেলে সবার মন কেড়েছে প্রতিটি ফুটবল দল।
টানটান উত্তেজনার মধ্যে টুর্নামেন্টের প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হয় ছয়টি ম্যাচ। হালিশহর কেএসআরএম টুর্নামেন্টের গতকালের চিত্র এটি।
নগরের হালিশহরের কেএসআরএম টার্ফে শুক্রবার টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন কেএসআরএমের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক নবাব সিরাজুদ্দৌলা, সেলিম উদ্দিন, করিম উদ্দিন ও সরওয়ার জাহান।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (করপোরেট) শামসুল হক ও পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) জসিম উদ্দিনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে কেএসআরএম গ্রুপের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে ২৮টি দল। প্রথম দিনে ১২টি দলই তাদের নৈপুণ্য দেখাতে সক্ষম হয়।
৫২ ম্যাচের প্রতিযোগিতামূলক এ টুর্নামেন্টের খেলা চলবে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:ঐতিহ্যবাহী সান মামেসে ম্যাচ শুরুর পর থেকেই নিজেদের জাত চেনাতে থাকেন অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের ফুটবলাররা। প্রথম মিনিট থেকেই রিয়াল মাদ্রিদকে চেপে ধরে গোল আদায়ের চেষ্টা চালান তারা। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম গোলটিও পেয়ে যায় বিলবাও।
ওই গোলের ১৫ মিনিট পরই বিলবাও গোলরক্ষকের ভুলে পেনাল্টি পেয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। তবে দুর্বল স্পটকিকের কারণে হুলেন আগিরেসাবালাকে বোকা বানাতে ব্যর্থ হন তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে।
মিনিট দশেক পর বেলিংহ্যামের গোলে রিয়াল মাদ্রিদ সমতায় ফিরলেও ম্যাচটি ২-১ গোলে হেরে বার্সেলোনার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমানোর সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে লস ব্লাঙ্কোসদের।
ম্যাচ হেরে, বিশেষ করে পেনাল্টি থেকে গোল আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন পিএসজির পাঠ চুকিয়ে চলতি মৌসুমে রিয়াল শিবিরে যোগ দেয়া এমবাপ্পে।
এ নিয়ে পরপর দুই ম্যাচে দুটি পেনাল্টি নিয়ে ব্যর্থ ফরাসি স্ট্রাইকার। সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুলের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারের ম্যাচেও পেনাল্টি মিস করেন এমবাপ্পে। মাঝে লা লিগায় গেটাফের বিপক্ষে জয়ের রাতে আরও একটি পেনাল্টি পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে সেটি নিজে না নিয়ে জুড বেলিংহ্যামকে দেন ২৫ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। তা থেকে দলকে গোলও এনে দেন বেলিংহ্যাম। তবে পরের ম্যাচেই পেনাল্টি পেয়ে নিজে শট নিয়ে ব্যর্থ এমবাপ্পে।
এর ফলে ক্যারিয়ারে এই প্রথম এমবাপ্পে এক সপ্তাহে দুটি পেনাল্টি মিস করলেন। আর পিএসজি ও রিয়াল মিলিয়ে এ বছর তার পেনাল্টি মিসের সংখ্যা মোট চারটি। এক বছরে চারটি পেনাল্টি মিস করার ঘটনাও তার ক্যারিয়ারে এই প্রথম।
টানা দুই ম্যাচে পেনাল্টি মিস করায় ‘ট্রল ফুটবল’ নামের এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি মিম শেয়ার করা হয়েছে, যেখানে একজন মিস ইউনিভার্সের শরীরের ওপর এমবাপ্পের মাথা লাগিয়ে ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে- আমাদের নতুন ‘মিস পেনাল্টি’।
তবে এমন কঠিন সময়েও ভেঙে না পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন ফ্রান্সের ২০১৮ বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘বাজে ফল। যে ম্যাচে ছোটখাটো বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে এটি বড় ধরনের ভুল। এর পুরোটা দায় আমি নিচ্ছি। কঠিন মুহূর্ত! তবে পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার এবং আমি কে, তা দেখিয়ে দেওয়ার এখনই সেরা সময়।’
তবে শিষ্যের কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি। প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও এখনই তাকে কাঠগড়ায় তুলতে চান না এই ইতালিয়ান।
ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কোচ বলেন, ‘ওর সঙ্গে আমার এখনও কথা হয়নি। তবে পেনাল্টি দিয়ে আমি একজন খেলোয়াড়কে মূল্যায়ন করতে পারি না। নিশ্চিতভাবেই সে হতাশ ও ভারাক্রান্ত। তবে আমাদের নিজেদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
‘জানি, সে তার সেরা ফর্মে নেই। কিন্তু (দলে) মানিয়ে নিতে তাকে আমাদের সময় দিতে হবে। এরই মধ্যে সে (মাদ্রিদের জার্সিতে) ১০ গোল করেছে। আরও ভালো করার সামর্থ্য সে রাখে এবং সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:কোপা আমেরিকা জয় এবং ইন্টার মায়ামির হয়ে মাঠে দারুণ সময় কাটালেও এ বছরের ব্যালন ডি’অরের ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন না লিওনেল মেসি। তবে বছরজুড়ে মেসির কাজের স্বীকৃতি দিতে ভোলেনি বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ২০২৪ সালে ফুটবলের বর্ষসেরার পুরস্কার ‘দ্য বেস্ট’-এর তালিকায় রয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
শুক্রবার ফিফার ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের দ্য বেস্টের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ১১ জনের ওই সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছে মেসির নাম।
মেসি ছাড়াও এই তালিকায় রয়েছেন এবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী রদ্রি। তালিকায় রিয়াল মাদ্রিদেরই রয়েছেন ছয়জন- ভিনিসিউস জুনিয়র, জুড বেলিংহ্যাম, দানি কারভাহাল, ফেদেরিকো ভালভার্দে, টনি ক্রুস ও কিলিয়ান এমবাপে।
এছাড়াও ম্যানচেস্টার সিটির আর্লিং হলান্ড, বেয়ার লেভারকুসেনের ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস ও বার্সেলোনার বিস্ময়বালক লামিন ইয়ামাল জায়গা করে নিয়েছেন এই তালিকায়।
ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ প্রচলনের পর থেকে এ পর্যন্ত ৯ বারই মনোনয়ন পেলেন মেসি। এর মধ্যে তিনি পুরস্কারটি জিতেছেন তিনবার- ২০১৯, ২০২২ ও ২০২৩ সালে।
‘দ্য বেস্ট’ পুরুষ ফুটবলারের পাশাপাশি আরও ১০টি পুরস্কারের মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেছে ফিফা। এর মধ্যে রয়েছে বর্ষসেরা নারী ফুটবলার, বর্ষসেরা কোচ, বর্ষসেরা গোলরক্ষক, বর্ষসেরা একাদশ ও বর্ষসেরা গোলের পুরস্কার। এছাড়া দেয়া হবে ফিফা ফ্যান অ্যাওয়ার্ড।
পুরস্কারগুলোর প্রতিটির জন্য ভোট দিতে পারেন ভক্ত-সমর্থকরা। সেরা খেলোয়াড়, সেরা কোচ ও সেরা গোলরক্ষক নির্বাচনে মোট ভোটের এক-চতুর্থাংশ রাখা হয়েছে দর্শকদের জন্য। বাকি তিন ভাগ দেন ফিফার সদস্য দেশগুলোর অধিনায়ক, কোচ ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা। সেরা গোল ও একাদশ নির্বাচনে ভক্তদের ভোটের হার অর্ধেক।
ফিফার ওয়েবসাইটে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভোট দেয়া যাবে।
২০২৩ সালের ২১ আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট পর্যন্ত পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি বিভাগের সংক্ষিপ্ত মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেছে ফিফা। ‘দ্য বেস্ট’-এর ১১ জনের মধ্যে ইউরোপের বাইরের ক্লাব থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন শুধু মেসিই।
মেসিকে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাখ্যায় ফিফা বলেছে, বয়স ৩৭ হয়ে গেলেও ইন্টার মায়ামি ও আর্জেন্টিনা দলে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছেন মেসি। তার অনুপ্রেরণামূলক পারফরম্যান্সে ২০২৩ লিগস কাপের পর রেকর্ডসংখ্যক পয়েন্ট অর্জন করে ২০২৪ সালের সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছে মায়ামি। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে তার নেতৃত্বে কোপা আমেরিকা জিতেছে আর্জেন্টিনা। এমনকি বিশ্বকাপ বাছাইয়ের লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে জয় দিয়ে বছর শেষ করা আর্জেন্টিনা রয়েছে পয়েন্ট টেবিলের চূড়ায়, আর এই আসরে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬ গোল নিয়ে সবার উপরে রয়েছেন মেসি।
এক নজরে ‘দ্য বেস্ট’-এর সংক্ষিপ্ত তালিকা
সেরা পুরুষ ফুটবলার: জুড বেলিংহ্যাম (ইংল্যান্ড/রিয়াল মাদ্রিদ), দানিয়েল কারভাহাল (স্পেন/রিয়াল মাদ্রিদ), আর্লিং হলান্ড (নরওয়ে/ম্যানচেস্টার সিটি), টনি ক্রুস (জার্মানি/রিয়াল মাদ্রিদ), কিলিয়ান এমবাপে (ফ্রান্স/রিয়াল মাদ্রিদ), লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা/ইন্টার মায়ামি), রদ্রিগো এরনান্দেস (স্পেন/ম্যানচেস্টার সিটি), ফেদেরিকো ভালভার্দে (উরুগুয়ে/রিয়াল মাদ্রিদ), ভিনিসিউস জুনিয়র (ব্রাজিল/রিয়াল মাদ্রিদ), ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস (জার্মানি/বেয়ার লেভারকুসেন) ও লামিন ইয়ামাল (স্পেন/বার্সেলোনা)।
সেরা কোচ: শাবি আলোনসো (বেয়ার লেভারকুসেন), কার্লো আনচেলত্তি (রিয়াল মাদ্রিদ), লুইস দে লা ফুয়েন্তে (স্পেন), পেপ গার্দিওলা (ম্যানচেস্টার সিটি) ও লিওনেল স্কালোনি (আর্জেন্টিনা)।
সেরা গোলরক্ষক: জানলুইজি দোন্নারুম্মা (ইতালি/পিএসজি), এদেরসন মোরায়েস (ব্রাজিল/ম্যানচেস্টার সিটি), আন্দ্রিই লুনিন (ইউক্রেন/রিয়াল মাদ্রিদ), মাইক মাইনিয়ঁ (ফ্রান্স/এসি মিলান), এমিলিয়ানো মার্তিনেস (আর্জেন্টিনা/অ্যাস্টন ভিলা), দাভিদ রায়া (স্পেন/আর্সেনাল), উনাই সিমোন (স্পেন/আথলেটিক বিলবাও)।
আরও পড়ুন:চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু। সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
রোববার সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পিন্টু। আরও কিছু গুরুতর শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ায় তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে রাখা হয়েছিল।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের শীর্ষ ফুটবলাররা গঠন করেছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। দেশের মানুষের মুক্তির পক্ষে বিশ্ব জনমত তৈরি করেছিল এই ফুটবল দল।
জাকারিয়া পিন্টু ছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের গর্বিত অধিনায়ক। তিনি একজন অসাধারণ ডিফেন্ডার ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক হিসেবে অমর হয়ে থাকবেন বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল জাকারিয়া পিন্টুর নেতৃত্বে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ১৬টি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল। এর ১২টিতেই জিতেছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। ওই ম্যাচের টিকিট বিক্রির অর্থ স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল তুলে দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে।
১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়ার মারদেকা কাপে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলকে নেতৃত্ব দেন জাকারিয়া পিন্টু। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলেরও প্রথম অধিনায়ক। মোহামেডানের সাবেক এই তারকা সংগঠন হিসেবেও মোহামেডানের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন।
১৯৪৩ সালের ১ জানুয়ারি নওগাঁয় জন্ম নেয়া এই কিংবদন্তির ফুটবলের শুরু পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে। ১৯৬১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত টানা খেলেছেন মোহামেডানে। ক্লাবটির কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
ফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো জানুয়ারিতে বাংলাদেশে যুব উৎসবে যোগদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা আসন্ন যুব উৎসবে যোগদানের জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানান এবং বিশ্বজুড়ে স্বনামধন্য কয়েকটি নারী ফুটবল দলকে বাংলাদেশে আনার বিষয়ে তার সহযোগিতা চান।
জবাবে ফিফা প্রেসিডেন্ট তার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং যুব উৎসবে উপস্থিত থাকার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন।
নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে টানা দু’বার শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। তাদের টানা নৈপুণ্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে এক কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার নেপালে ২০২৪ সাফ জয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের জন্য দেড় কোটি টাকা অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)
শনিবার সাবিনা-তহুরাদের জন্য দেড় কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করা হয়েছে।
তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বাফুফের নতুন কমিটির প্রথম সভা ছিল শনিবার। টানা কয়েক ঘণ্টার সভা শেষে সদস্য আমিরুল ইসলাম বাবু সংবাদ মাধ্যমে এমন কথা জানান।
এছাড়া সভায় কমিটিও গঠন করা হয়েছে। চার বছরের জন্য গঠিত ফিন্যান্স কমিটির দায়িত্ব থাকবে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের অধীনে। এছাড়া অন্য কমিটিগুলো হবে এক বছর মেয়াদি।
বাফুফের সদস্য ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই কমিটির পক্ষ থেকে সাফজয়ী মেয়েদেরকে দেড় কোটি টাকা বোনাস দেয়া হবে। সভায় এটাই ছিল প্রথম সিদ্ধান্ত।’
গত ৩০ অক্টোবর কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে বাংলাদেশ। দেশে ফেরার পর ছাদখোলা বাসে আবারও সংবর্ধনা দেয়া হয় তাদের।
পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সংবর্ধনা দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসও।
আরও পড়ুন:চোটের কারণ দেখিয়ে অক্টোবরের আন্তর্জাতিক বিরতির সময়ে ফ্রান্স দলে ছিলেন না রিয়াল মাদ্রিদের তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপে। এবার নভেম্বরে নেশন্স লিগের দুই ম্যাচের জন্য তাকে ছাড়াই দল ঘোষণা করেছে ফ্রান্স।
নেশন্স লিগের ‘এ’ লিগের ২ নম্বর গ্রুপের পঞ্চম ম্যাচে ১৪ নভেম্বর ইসরায়েলকে আতিথ্য দেবে দিদিয়ের দেশমের দল। এর তিন দিন পর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে টেবিলের শীর্ষে থাকা ইতালির বিপক্ষে মাঠে নামবে ২০২১ সালের শিরোপাজয়ীরা।
এই দুই ম্যাচের জন্য ঘোষিত ২৩ সদস্যের ফ্রান্স স্কোয়াডে প্রথমবার ডাক পেয়েছেন চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ পারফর্ম করা লিলের তরুণ গোলরক্ষক লুকা শেভালিয়েঁ। তবে ঘোষিত স্কোয়াডে জায়াগা হয়নি এমবাপের।
অক্টোবরে চোটের কারণ দেখিয়ে রিয়াল মাদ্রিদে থেকে যান এমবাপে। এরপর ইউরোপীয় সংবাদধ্যমের খবরে জানা যায়, ফ্রান্স যখন নেশন্স লিগের ম্যাচ খেলছে, তখন তিনি সুইডেনের একটি ক্লাবে আড্ডা দিচ্ছেন। ওই ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ২৫ বছর বয়সী ফরাসি অধিনায়ক।
স্টকহোমের যে হোটেলে তখন তিনি ছিলেন, সে সময় সেখানে একটি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। এ খবর চাউর হওয়ার পর রিয়াল মাদ্রিদ তাকে পোশাকের একটি বিজ্ঞাপন থেকেও সরিয়ে দেয়। এবার রিয়ালের জার্সিতে মাঠে বেশ কিছুদিন ধরে বিবর্ণ থাকার পর ফ্রান্স দলেও ব্রাত্য হলেন এই ফরোয়ার্ড।
স্কোয়াড ঘোষণার সময় এমবাপের অনুপস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দেশম বলেন, ‘অনেক ভেবেচিন্তে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, এই মুহূর্তে এটিই সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।’
এমবাপেকে দলের বাইরে রাখার সিদ্ধান্তের পেছনে ফুটবলের বাইরের কোনো কারণ নেই জানিয়ে কোচ বলেন, ‘আমি কিলিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছি। সে দলে ফিরতে চায়। তবে আগামী দুই ম্যাচের জন্য এটি একটি বিশেষ সিদ্ধান্ত।’
ফ্রান্স স্কোয়াড
গোলরক্ষক: লুকা শেভালিয়েঁ (লিল), মাইক মাইনিয়ঁ (এসি মিলান) ও ব্রাইস সাম্বা (লঁস)।
ডিফেন্ডার: জনাথন ক্লুস (নিস), লুকা দিনিয়ে (অ্যাস্টন ভিলা), ওয়েসলে ফোফানা (চেলসি), থেও এরনান্দেস (এসি মিলান), ইব্রাহিমা কোনাতে (লিভারপুল), জুল কুন্দে (বার্সেলোনা), উইলিয়াম সালিবা (আর্সেনাল) ও দায়োত উপামেকানো (বায়ার্ন মিউনিখ)।
মিডফিল্ডার: এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা (রিয়াল মাদ্রিদ), মাতেও গেন্দুসি (লাৎসিও), এনগলো কান্তে (আল ইত্তিহাদ), মানু কোনে (রোমা), আদ্রিয়েন রাবিও (অলিম্পিক মার্শেই) ও ওয়ারেন জাইরে-এমেরি (পিএসজি)।
ফরোয়ার্ড: ব্রাদলে বারকোলা (পিএসজি), উসমান দেম্বেলে (পিএসজি), রান্দাল কোলো মুয়ানি (পিএসজি), ক্রিস্তোফার এনকুঙ্কু (চেলসি), মিকেল অলিস (বায়ার্ন মিউনিখ) ও মার্কাস থুরাম (ইন্টার মিলান)।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য