ফিফা বিশ্বকাপের পর্দা নামছে ১৮ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্সের ফাইনাল ম্যাচের মধ্য দিয়ে। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি তারকা লিওনেল মেসির শেষ বিশ্বকাপটা ঘরে তুলতে চায় আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে ফ্রান্সের সামনে লক্ষ্য শিরোপা ধরে রাখা।
চলতি বিশ্বকাপের শুরুটা সৌদির বিপক্ষে হার দিয়ে হলেও পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়ায় আর্জেন্টিনা। ম্যাক্সিকোর বিপক্ষে জয়ের পর আর পেছনে ফিরে তাকানো লাগেনি আলবেসেলেস্তিয়ানদের। একে একে পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, ক্রোয়েশিয়া বাধা টপকে সোজা নাম লিখিয়েছে ফাইনালে।
অন্যদিকে বিশ্বকাপের শুরু থেকেই উড়ছে ফ্রান্স। মাঝে তিউনিসিয়ার বিপক্ষে হোঁচট খেলেও ফাইনাল নিশ্চিতে তাদের খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। ফরাসি গতির কাছে প্রতি ম্যাচেই হার মানতে হয়েছে প্রতিপক্ষকে।
এই গতিই কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে আর্জেন্টিনার তৃতীয় শিরোপা ঘরে তোলায়। অন্যদিকে কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে শিরোপা বাগিয়ে নেয়ার মধ্য দিয়ে মেসির বিদায়টা মধুর করতে চান সতীর্থরা। এই চাওয়া কোটি ফুটবল ভক্তেরও।
কিন্তু শিরোপা জয়ের পথটা মসৃণ নয় আর্জেন্টিনার। সেই পথে রয়েছে অনেক বাধা। ফ্রেঞ্চ গতি, এমবাপে-জিরু-গ্রিজম্যানের উড়ন্ত পারফরম্যান্স, গেল বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা, চাপ সব মিলিয়ে পথটা বেশ কঠিন আর্জেন্টিনার।
কিন্তু শিরোপা যে বাগিয়ে নিতে হবে যেকোনো মূল্যে। আর সেটিই করতে ‘কালো যাদুর’ আশ্রয় নিয়েছেন আর্জেন্টাইনরা, এমন গুঞ্জনে বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো।
Falleció @LaBrujinetaOk pic.twitter.com/9TCETTV4dW
— PERICLES 🦁🇦🇷 🇸🇪 (@Chadoca_Rey_32) December 17, 2022
বেশ কিছুদিন ধরে গুঞ্জন চলছে আর্জেন্টিনার জাদুকর সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ আর্জেন্টাইন ম্যাজিশিয়ান’ ও ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ আর্জেন্টাইন উইচেস’ ফরাসি ফুটবলারদের কালো জাদু করেছে। আর এই রীতিমতো ঘি ঢেলে দিয়েছে ফ্রান্স শিবিরে ‘ক্যামেল ভাইরাসের’ আক্রমণ।
এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যেই ঠাণ্ডা জ্বরে ভুগছেন পাঁচ ফরাসি ফুটবলার। সেমিফাইনালে তো মাঠেই নামা হয়নি আদ্রিয়ান রাবিও এবং দাইয়ু উপামেকানোর। তারা কিছুটা সুস্থ হয়ে অনুশীলনে ফিরলেও নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন রাফায়েল ভারান, ইব্রাহিম কোনাতে ও কিংসলে কোম্যান।
শুক্রবারের অনুশীলনে দলের সঙ্গে থাকা হয়নি এই তিন ফুটবলারের।
যদিও কালো জাদুর বিষয়টি পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অফ আর্জেন্টাইন উইচেস। তার এক টুইট বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা বারবার বলছি যে সবার ভাবনা, সিদ্ধান্তকে আমরা সম্মান জানাই। সবাই সেটাই করে যেটা তারা চায় ও জানে। আমরা এটাই বলতে চাই, আমরা যেটা চিন্তা করি, সেটাই সেরা। আমাদের কোনো ভাবনায় কেউ বিপদে পড়বে না। সবাই মুক্ত ও সম্মানিত।’
Gente, repetimos constantemente que se respeten todas creencias y decisiones. Cada quien hace lo que quiere y lo que sabe, nosotras simplemente recomendamos lo que nos parece mejor. Para que en base de NUESTRAS creencias nadie se ponga en riesgo. Cada quien es libre y respetado🤍
— LaBrujinetaOK (@LaBrujinetaOk) December 15, 2022
কিন্তু তাতেও নিশ্চিন্ত হওয়ার অবকাশ থাকে না। কেন না কথায় আছে, যা রটে তার কিছু হলেও ঘটে।
আরও পড়ুন:অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নারী ফুটবলারদের সমস্যাগুলো সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শনিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে ফুটবলারদের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে গত ৩০ অক্টোবর রাতে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জেতায় নারী দলকে সংবর্ধনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।
ওই সময় নারী ফুটবলাররা তাদের স্বপ্ন এবং তাদের দৈনন্দিন সংগ্রামের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বিজয়ী খেলোয়াড়দের দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সাফল্য অর্জনের জন্য আমি সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে তোমাদের অভিনন্দন জানাই। জাতি তোমাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
‘আমাদের দেশের মানুষ সাফল্য চায়। তোমরা আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছো।’
ক্যাপ্টেন সাবিনা খাতুন সংবর্ধনার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। আয়োজনে যোগ দিতে পেরে তারা সম্মানিত বোধ করেছেন বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘অনেক বাধা অতিক্রম করে আমরা এই পর্যায়ে এসেছি। শুধু নারী ফুটবল দলই নয়, বাংলাদেশের সব নারীকেই অনেক সংগ্রামের মুখোমুখি হয়।’
সাবিনা খাতুন ২০০৯ সালে ফুটবলার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপকালে ফুটবলকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেয়ার জন্য পূর্ব প্রজন্মের ফুটবলাররা তাকে সাহস জুগিয়েছেন উল্লেখ করে জ্যেষ্ঠ নারী ফুটবলারদের অবদানের কথা স্মরণ করেন তিনি।
সাবিনা বলেন, ‘নারী ফুটবল দলের মধ্যে অনেকেই দরিদ্র পরিবার থেকে এসেছেন। অনেকের পরিবার তাদের ওপর নির্ভরশীল।
‘আমাদের বেতন দিয়ে পরিবারের জন্য আমরা তেমন কিছু করতে পারি না। কারণ আমাদের বেতন তেমন ভালো নয়।’
মারিয়ার মতো তার সতীর্থদের সংগ্রামের বর্ণনা দেয়ার সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সাবিনা।
তিনি বলেন, ‘সাফজয়ী দলের ছয়জন খেলোয়াড় ময়মনসিংহের বিখ্যাত কলসিন্দুর গ্রাম থেকে এসেছে। মারিয়া তাদের মধ্যে একজন।
‘অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়েছেন। পরিবারের দায়িত্ব তিনিই পালন করেন।’
কৃষ্ণা রানী সরকার ঢাকায় তাদের আবাসন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
মনিকা চাকমা খাগড়াছড়ি জেলার প্রত্যন্ত উপজেলা লক্ষ্মীছড়ি থেকে জাতীয় ফুটবলার দলে আসা পর্যন্ত তাকে যে কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছে সেসব কথা বর্ণনা করেন।
মিডফিল্ডার স্বপ্না রানী দিনাজপুরে তার গ্রামের দুর্বল অবকাঠামোর বর্ণনা দিয়েছেন।
উইঙ্গার কৃষ্ণা প্রধান উপদেষ্টাকে এশিয়ার বাইরে তাদের জন্য একটি প্রীতি ম্যাচের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন। বিশেষ করে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী বার্সেলোনার বিরুদ্ধে একটি প্রীতি ম্যাচ ব্যবস্থা করে দেয়ার অনুরোধ জানান।
প্রধান উপদেষ্টা প্রতিটি খেলোয়াড়কে তাদের ব্যক্তিগত আশা এবং আকাঙ্ক্ষা, সংগ্রাম এবং দাবিগুলো আলাদা কাগজে লিখে সেগুলো তার কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিতে বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তোমরা যা খুশি লিখতে পারো, কোনো দ্বিধা করবে না। আমরা তোমাদের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করব।
‘এখন যদি কিছু সুরাহা করা যায় তবে আমরা এখনই সেটা করব।’
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন কোচ পিটার বাটলার ও ম্যানেজার মাহমুদা আক্তার।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় নারী ফুটবলারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাদের সমস্যার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তাদের বিভিন্ন সমস্যা লিখিতভাবে দেয়ার জন্য বলেছেন যাতে খুব দ্রুত সেগুলোর সমাধান করা যায়। কেননা নারী ফুটবলারদের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নেবেন।’
সাফজয়ী নারী ফুটবল দলকে প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা শেষে যমুনার বাইরে শনিবার এসব কথা বলেন আসিফ।
এ উপদেষ্টা বলেন, ‘নারী ফুটবলাররা প্রত্যেকের সাইন করা জার্সি এবং ফুটবল প্রধান উপদেষ্টাকে গিফট করেছেন। প্রধান উপদেষ্টাসহ আমরা সবাই নারী ফুটবলারদের সঙ্গে ব্রেকফাস্ট করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আবাসন সমস্যা, অনুশীলন, বেতন কাঠামোসহ সবকিছু নিয়ে কথা হয়েছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে উনারা (ফুটবলার) আমাদের তাদের সমস্যাগুলো লিখিতভাবে দেবেন। সেটা আমি সরাসরি স্যারকে পৌঁছে দেব।’
ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘নারী ফুটবলাররা জানিয়েছেন যে, ক্যাম্পটা সারা বছর চলার কারণে এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে। সেটাকে যেন সারা বছর চলমান রাখা যায়, সে আবদার তারা করেছেন।
‘বাফুফের নতুন কমিটির সঙ্গে মিলে নারী ফুটবল দলের সমস্যা এবং ফুটবলের যে সমস্যা সবগুলো আমরা সমাধান করব।’
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘স্পোর্টসের স্টেকহোল্ডার হচ্ছে আমাদের খেলোয়াড়রা। তারাই সবার ঊর্ধ্বে থাকবে।
‘সবার ঊর্ধ্বে ছিল কমিটির মেম্বাররা। সেটা আর হবে না। এটা অন্তত আমার সময় নিশ্চিত করব।’
তিনি বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি যে, দুই মাসের স্যালারি ডিউ (বকেয়া) আছে। এতদিন বাফুফে সালাউদ্দিন সাহেবের কমিটি ছিল।
‘এখন নতুন কমিটি এসেছে। নতুন কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এর সমাধান করব এবং ভবিষ্যতেও যেন ডিউ না হয়, তা নিশ্চিত করব।’
বাফুফের বিশাল অঙ্কের ঋণ কীভাবে হলো প্রশ্ন রেখে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। সেগুলো নিয়ে অলরেডি নতুন কমিটিকে অডিট করার জন্য বলেছি।
‘যদি কোথাও অনিয়ম হয়ে থাকে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি।’
এর আগে বেলা ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাফজয়ী নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আরও পড়ুন:সাফজয়ী নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শনিবার এ সংবর্ধনা দেয়া হয়।
সংবর্ধনায় সব ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়াকে নারী ফুটবল দলের একটি অসাধারণ অর্জন উল্লেখ করে নারী ফুটবল দলকে অভিনন্দন জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘আমি তোমাদের নিয়ে গর্বিত। পুরো জাতি তোমাদের নিয়ে গর্বিত। আমাদের এই গৌরব এনে দেয়ার জন্য তোমাদের সবাইকে অভিনন্দন।’
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় যমুনায় প্রবেশ করেন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলটি।
নেপালে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪ জিতে বৃহস্পতিবার দেশে ফেরে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। সেদিন সাফজয়ী নারী দল বিমানবন্দর থেকে ছাদখোলা বাসে করে রয়ানা দেওয়ার তিন ঘণ্টা পর বাফুফে ভবনে এসে পৌঁছায়।
বাফুফে ভবনে পৌঁছালে সাবিনাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
ফুটবলারদের বরণ করার পর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা দেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সাফজয়ীদের এক কোটি টাকার আর্থিক পুরস্কার দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা তাৎক্ষণিক পুরস্কারের চেক তুলে দেন সাফজয়ী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের হাতে।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা দেবেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে বলে বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়।
নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে বুধবার স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে চ্যাম্পিয়ন দল ঢাকায় পৌঁছায়।
দেশে এসে ছাদখোলা বাসে চড়ে বিমানবন্দর ছাড়ে সাফজয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। বাসটির সামনে বড় করে লেখা ছিল ‘চ্যাম্পিয়ন’।
সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে এক কোটি টাকা পুরস্কার দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার কাঠমান্ডু থেকে ঢাকায় ফেরা সাফজয়ী দলটি বাফুফে ভবনে পৌঁছলে তাদের স্বাগত জানান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এ সময় তিনি অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের হাতে পুরস্কারের ডামি চেক তুলে দেন।
টানা দ্বিতীয়বারের মতো নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা বাংলাদেশ দল বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার পর ছাদ খোলা বাসে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে আসে। সেখানে সাবিনা, ঋতুপর্ণা, তহুরাদের স্বাগত জানান ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
এরপর নারী দলকে এক কোটি টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় উপদেষ্টা জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার তার বাসভবন যমুনায় সাফজয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা দেবেন।
এর আগে দুপুরে নারী ফুটবল দলকে পুরস্কৃত করার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ।
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতিতে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সাফ শিরোপা জয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বিসিবি থেকে পুরস্কৃত তাদেরকে করা হবে। তাদেরকে কিছুটা পুরস্কৃত করতে পারব ভেবে আমি খুশি। পরপর দুবার তারা আমাদের গর্বিত করেছে।’
সন্ধ্যার দিকে এক বিবৃতিতে বিসিবি জানায়, নারী দলকে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে। গত আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সাবিনা-সানজিদাদের ৫০ লাখ টাকা অর্থ পুরস্কার দেয় নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড।
প্রসঙ্গত, বুধবার কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জেতে বাংলাদেশ। শিরোপার লড়াইয়ে বাংলাদেশের হয়ে গোল করেন মনিকা চাকমা ও ঋতুপর্ণা চাকমা। ২০২২ সাফে একই ভেন্যুতে এই নেপালকে হারিয়েই প্রথমবারের মতো সাফ জয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন:ছাদ খোলা বাসে চড়ে বিমানবন্দর ছেড়েছে সাফজয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। বাসটির সামনে বড় করে লেখা হয়েছে, ‘চ্যাম্পিয়ন’।
সাবিনাদের বহনকারী বিমান বেলা আড়াইটায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষ করে বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন সাফ জয়ী মেয়েরা। কিছুক্ষণ পর ছাদ খোলা বাসে চড়ে তারা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসেন।
খেলোয়াড়দের বহনকারী ছাদ খোলা বাসটি রাজধানীর বিভিন্ন রুট ঘুরে যাবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কার্যালয়ে। সেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া ও যুব উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া তাদের সঙ্গে দেখা করবেন।
বুধবার নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। এরপর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চ্যাম্পিয়ন দল ঢাকায় পৌঁছায়।
বুধবার রাতেই জানা গিয়েছিল সাফজয়ী দলকে ছাদখোলা বাসে চড়িয়ে বাফুফে ভবনে আনা হবে। এর আগে ২০২২ সালে প্রথমবার সাফ জেতে বাংলাদেশ। সেবারও একইভাবে ছাদখোলা বাসে চড়ে বিমানবন্দর ছাড়েন খেলোয়াড়রা।
টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ নারী ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দল বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে।
তাদের বরণের জন্য কমলাপুরে বিআরটিসির বাস ডিপো থেকে একটি ছাদখোলা বাস এরই মধ্যে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
বাসটির সামনে বড় করে লেখা হয়েছে, ‘চ্যাম্পিয়ন’।
সাবিনারা বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাদের ছাদখোলা বাসে করে সরাসরি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তাদের সংবর্ধনা দেয়া হবে।
সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট ধরে রেখেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। এই জয়যাত্রায় ফাইনালে আবারও তাদের কাছে হেরেছে স্বাগতিক নেপাল। এর মধ্য দিয়ে সাফে টানা দ্বিতীয়বার সাফ চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশের মেয়েরা।
কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে বুধবার স্বাগতিক নেপালের বিরুদ্ধে ম্যাচের ৫২তম মিনিটে দারুণ এক আক্রমণে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন মনিকা চাকমা। অবশ্য তিন মিনিট পরই দলকে সমতায় ফেরান নেপালি ফরোয়ার্ড আমিশা।
ম্যাচের ৮১তম মিনিটে দারুণ এক আক্রমণে বাংলাদেশকে জয়সূচক গোলটি এনে দেন ঋতুপর্ণা চাকমা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য