রাজধানী ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশের অনুমতি চাইতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন সংগঠনটির চার নেতা। কিন্তু কার্যালয়ের সদর দরোজা থেকেই তাদেরকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। কয়েক ঘণ্টা পর অবশ্য তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। ছাড়া পেয়ে তারা ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়ে চলে যান।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার বিকেলে। ওই ঘটনার পর পুলিশের এমন আচরণ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে- দলীয় কর্মসূচি পালনের জন্য অনুমতি চাইতে যাওয়া জামায়াত নেতাদের পুলিশ কেন আটক করলো? আবার আটকের কয়েক ঘণ্টা তাদেরকে কেনই বা ছেড়ে দেয়া হলো।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সোমবার রাতে মোবাইল ফোনে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জামায়াতের একটি প্রতিনিধি দল আমার কার্যালয়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু তারা কারা, প্রতিনিধি দলে কোন কোন সদস্য থাকবেন- সেসব বিষয়ে আগে থেকে কোনো তথ্য সরবরাহ করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এই সংগঠনটি নানা জায়গায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাদের অনেক নেতাকর্মী বিভিন্ন মামলার আসামি। প্রতিনিধি দলে যদি তেমন কেউ তাহলে তাদের সঙ্গে পুলিশ কমিশনারের মিটিং করার পর সমালোচনা তৈরির শঙ্কা ছিল।
‘এ অবস্থায় রমনা বিভাগের পুলিশ প্রতিনিধি দলের সদস্যদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ বিশেষ করে নাম-ঠিকানা যাছাই-বাছাই করার জন্য তাদের সঙ্গে কথা বলেছে। তবে তাদের কাউকে আটক করা হয়নি।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘জামায়াতের ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে ও বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে তারা কোনো মামলার আসামি নন। এরপরই তারা আমার কার্যালয়ে এসেছিলেন। তাদের আবেদনপত্র গ্রহণ করেছি। সন্ধ্যার দিকে তারা চলে গেছেন।
‘দলটির পক্ষ থেকে আগে থেকে প্রতিনিধি দলের সদস্যদের নাম জানালে আমরা তাদের আসাটা আরও সহজ করতে পারতাম।’
আগামী ৫ জুন কর্মসূচি পালনে সহযোগিতা চেয়ে সোমবার বিকেলে ডিএমপি কার্যালয়ে আবেদন জমা দিতে যান জামায়াত ঢাকা মহানগর দক্ষিণের চার সদস্যের এই প্রতিনিধি দল। এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সম্পাদক সাইফুর রহমান, সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আবদুল বাতেন ও জালাল উদ্দীন ভূঁইয়া এবং সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম রহমান ভূঁইয়া। কিন্তু তাদেরকে কার্যালয়ের গেট থেকেই আটক করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।
ওই ঘটনার পর জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রচার ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আশরাফুল আলম ইমন সোমবার একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠান। তাতে বলা হয়, ‘আগামী ৫ জুন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামী। ওই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনে সহযোগিতা চাইতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কার্যালয়ে গেলে তাদের আটক করা হয়।’
জামায়াত নেতাদের আটক ও ছেড়ে দেয়া প্রসঙ্গে একাধিক গোয়েন্দা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। তারা বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় জামায়াত নেতাদের গতিবিধি নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। কারা কোথায় যাচ্ছেন, তারা কোন কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করছেন সেসবই নজরদারিতে রয়েছে। এর অংশ হিসেবে দলটিকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবেই পুলিশ তাদের আটক করেছিল।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আশরাফ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিনিধি দলের সদস্যদের একজন শাহ আলী থানার একটি মামলার আসামি ছিলেন। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, তিনি সেই মামলায় জামিনে আছেন।
‘তাছাড়া ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য যারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে অন্য কোনো মামলার কোনো আসামি ছিল কিনা তাও যাছাই করা হয়। কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।’
জামায়াতের আবেদনপত্র অনুযায়ী তাদের সমাবেশে পুলিশ কী ধরনের ব্যবস্থা নেবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আগে ৫ জুন আসুক, তারপর দেখা যাবে।’
আরও পড়ুন:মেহেরপুর সদর উপজেলার বাজিতপুরে হেরোইনসহ এক পুলিশ সদস্য ও তার সঙ্গীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সোমবার বিকেলে মেহেরপুর সদর উপজেলার বাজিতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশের কনস্টেবল আশরাফুল ইসলাম ও তার সঙ্গী সবুজ শেখ আটক হন।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেন বিজিবি সদস্যরা। পরে রাত সাড়ে নয়টার দিকে মাদক মামলা দিয়ে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আটক আশরাফুল ইসলাম মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার পরানপুর গ্রামের আফসার আলীর ছেলে। বর্তমানে তিনি সুপ্রিম কোর্ট অ্যান্ড স্পেশাল কোর্টে কনস্টেবল পদে কর্মরত। তার সঙ্গী সবুজ শেখ মেহেরপুর সদর উপজেলার রায়পুর গ্রামের মন্টু শেখের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহেরপুর বাজিতপুর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার আলাউদ্দিন বিশ্বাস জানান, বাজিতপুর গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা সড়ক দিয়ে মাদক পাচার হচ্ছে- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে ৩ গ্রাম হেরোইনসহ পুলিশ কনস্টেবল আশরাফুল ইসলাম ও সবুজ শেখকে আটক করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে মেহেরপুর সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারের স্থানে স্থানে অব্যবস্থাপনা-অবহেলার ছাপ। সর্বত্র এক ধরনের গা-ছাড়া ভাব। ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকরা সংবাদ লিখতে গিয়ে পড়েন বিড়ম্বনায়। কারণ রুমের কম্পিউটার, এসি, সোফা- কোনোটাই সেভাবে ব্যবহার উপযোগী নেই।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষকে এসব সমস্যা জানিয়েও প্রতিকার মেলেনি।
ডিএমপির নতুন কমিশনার হাবিবুর রহমান শনিবার দায়িত্ব গ্রহণের পর সোমবার ব্রিফিংয়ে আসেন। এ সময় সাংবাদিকরা মিডিয়া সেন্টারের নানা অব্যবস্থাপনা তুলে ধরেন তার কাছে। তাৎক্ষণিক কমিশনার নির্দেশ দেন- তিনদিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
জানা গেছে, দশ বছর আগে ডিএমপির তৎকালীন কমিশনার মিডিয়া সেন্টারে দুটি কম্পিউটার, বসার জায়গায় সোফা ও এসি সংযুক্ত করেছিলেন। সেসব জরাজীর্ণ হয়ে গেছে অনেক আগেই।
নতুন কমিশনার সোমবার ‘মিট দ্য প্রেস’ শেষে সাংবাদিকদের বসার জায়গা পরিদর্শন করে নতুন করে সবকিছু স্থাপনের নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান- কয়দিনের মধ্যে বদল চান এ অবস্থার? সাংবাদিকরা সাতদিনের মধ্যে বদলের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও হাবিবুর রহমান প্রতিশ্রুতি দেন, সাতদিন নয়, তিনদিনে বদলে যাবে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের সাংবাদিকদের বসার জায়গা।
নবনিযুক্ত কমিশনার বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় পরিবর্তন দরকার হলে আগে সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন। সচেতনতা ও অপরাধ দমনে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। অপরাধবিয়ষক সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে ডিএমপিতে আসতে হয়। মিডিয়া সেন্টারে বসতে হয়। এখানকার পরিবেশ জন ও সাংবাদিকবান্ধব হওয়া উচিত।’
তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ডিসি মিডিয়া ও ডিসি লজিস্টিককে ডেকে একটি এসি, দুটি নতুন আপডেটেড কম্পিউটার, নতুন সোফা ও টেবিল-চেয়ার স্থাপনের নির্দেশ দেন। তার এমন ঘোষণায় গণমাধ্যমকর্মীরা কমিশনারকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে ডিএমপির ৩৬তম কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেই রাজারবাগে ফোর্সদের ব্যারাকে যান হাবিবুর রহমান। সরেজমিনে তিনি সদস্যদের থাকার জায়গা, রান্নাঘর, বাথরুম, জিমনেসিয়াম পরিদর্শন করেন। তাৎক্ষণিক তিনি সদস্যদের থাকা-খাওয়ার সমস্যা সমাধানে নির্দেশনা দেন।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহে বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা।
ঈশ্বরগঞ্জ থানায় রোববার ময়মনসিংহ বিভাগীয় রোড মার্চ কর্মসূচির সমাবেশে ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণে ঘটনায় আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া মনিকে প্রধান আসামি করে এবং ছয়জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ১২০ জনকে আসামি করে এ মামলাটি হয়।
মালমা বাদী মশিউর রহমান কাঞ্চন ঈশ্বরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত রয়েছেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি পীরজাদা শেখ মোস্তাছিনুর রহমান।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, রোববার দুপুর দেড়টার দিকে বাদী ও তার বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের ঈশ্বরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চর হোসেনপুর ভূইয়া ফিলিং স্টেশনের সামনের সড়কের পাশে আড্ডা দিচ্ছিলেন।
এ সময় বিএনপির রোড মার্চ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া বেশকিছু নেতা-কর্মী অতর্কিতে তাদের ওপর ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায়। পরে তাদের পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে গুড়িয়ে দেয়। হামলাকারীরা পাশের একটি দোকানে হামলা চালিয়ে ফ্রিজ ভাঙচুর ও মালামাল তছনছ করে।
ভাঙচুরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জেলা উত্তর বিএনপির সদস্য ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আমীরুল ইসলাম মনি বলেন, ‘সরকার হটানোর আন্দোলন থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের দূরে রাখতে এখন ঘটনা সাজিয়ে মামলা দেয়া হচ্ছে। গত রোববারের রোডমার্চ কর্মসূচির সমাবেশে যোগ দিতে আসা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের গাড়ি বহরে হামলা করেছে সরকারের পেটোয়া বাহিনী। এসব করে সরকার পতনের আন্দোলন থামানো যাবে না।
ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান কাঞ্চন বলেন, ‘আমাদের উপর সশস্ত্র হামলা করে গাড়ীতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আসামিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
ওসি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মনিরুজ্জামান মনিরকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করেছে চেম্বার আদালত। আট সপ্তাহের জন্য তার জামিন স্থগিত করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুল আলম।
পরে নিউজবাংলাকে তিনি জানান, চেম্বার আদালত ২৭ সেপ্টেম্বর মনিরের জামিন স্থগিত করে। ওই দিন আসামি পক্ষে আইনজীবী শুনানি করবেন বলে সময় নেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড মধুমালতি চৌধুরী। পরে আদালত ২ অক্টোবর দিন ঠিক করে দেয়। সে অনুযায়ী সোমবারও শুনানিতে তার পক্ষে কেউ আসেনি। পরে আদালত আট সপ্তাহের জন্য তার জামিন স্থগিত রাখে।
হাইকোর্ট ২৫ সেপ্টেম্বর মনিরুজ্জামান মনিরকে জামিন দেয়। সেই জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এদিকে একই মামলার প্রধান আসামি বহিষ্কৃত ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করে ২০ সেপ্টেম্বর আদেশ দেয় চেম্বার আদালত।
চলতি বছরের ১৪ জুন রাতে জামালপুরের বকশীগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় সন্ত্রাসীরা সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে গুরুতর আহত করে। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জুন তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ১৭ জুন নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বকশীগঞ্জ থানায় মাহমুদুল আলম বাবুসহ ২২ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন:হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাদক পাচারের অভিযোগে এক যাত্রীকে আটক করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এবিপিএন)। এক্স-রে করে তার পাকস্থলি ভর্তি ইয়াবার পুটলি দেখা যায়। পরে সেগুলো অপারেশনের মাধ্যমে বের করা হয়।
কক্সবাজার থেকে একটি ফ্লাইটে করে ঢাকায় অবতনের পর রোববার সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ২৫ বছর বয়সী জাহিদ হোসেন কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে এবিপিএন।
এবিপিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, রোববার সন্ধ্যায় ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে জাহিদ অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে অবতরণ করলে সাদা পোশাকে দায়িত্বরত এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা দলের তাকে সন্দেহ হয়।
এক পর্যায়ে তারা তাকে আটক করে আর্মড পুলিশের অফিসে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় তিনি স্বীকার করেন তিনি পাকস্থলিতে ইয়াবা বহন করছেন এবং এর পরিমাণ হতে পারে ৩৫০০ পিস।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পাওয়ার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য এয়ারপোর্ট এপিবিএন যাত্রীকে উত্তরার হলিল্যাব ডায়গনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায় এবং তার এক্স-রে করা হয়। এক্স-রে রিপোর্টে জাহিদের পাকস্থলিতে ছোট ছোট প্যাকেট করা প্রায় ৭২টি প্যাকেটের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
ইয়াবার অস্তিত্ব নিশ্চিত হবার পর বিমানবন্দর থানার সহযোগিতায় জাহিদকে রাতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে তার পেট থেকে মোট ৭২টি ইয়াবা প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। গণনা শেষে সেখানে ৩ হাজার ৫১৮ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।
এবিপিএন আরও জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে জাহিদ জানিয়েছে যে, প্রতি ১০০০ পিস ইয়াবা বহনের জন্য তিনি ১০ হাজার টাকায় চুক্তিবদ্ধ। এই চালান পৌঁছে দিতে পারলে তিনি প্রায় ৪০ হাজার টাকা কমিশন পেতেন।
এবিপিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ‘এর আগেও জাহিদকে গত ২৬ মে বিমানবন্দরের সামনে থেকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে মামলা দেয়া হয়। সেই মামলায় ১০ দিন আগে জামিন পেয়েই তিনি আবারও একই কাজ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হলেন। জাহিদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’
আরও পড়ুন:সাভারের আশুলিয়ায় ভাড়া বাসার ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রী ও শিশুকে গলা কেটে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। টাকাপয়সার লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ ঘটনায় সাগর ও ঈশিতা নামে দুজনকে আটক করে র্যাব। তারা পরস্পর স্বামী-স্ত্রী।
সোমবার গাজীপুরের শফিপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪-এর একটি টিম।
র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সোমবার রাতে নিউজবাংলাকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে মঙ্গলবার ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
শনিবার রাত ১০টার দিকে আশুলিয়ায় ইউনিক ফকিরবাড়ী মোড় এলাকায় মেহেদী হোসেনের মালিকানাধীন পাঁচতলা বাড়ির চতুর্থ তলা থেকে শিশুসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন- বাবুল হোসেন, তার স্ত্রী সহিদা বেগম ও তাদের ১২ বছর বয়সী ছেলে মেহেদী হাসান জয়।
সে সময় নিহতের পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া গার্মেন্টস কর্মীী আঁখি আক্তার জানান, বাবুল স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ৭-৮ বছর ধরে দুই রুমের ওই ফ্ল্যাটটিতে ভাড়া থাকতেন। তারা দুজনই পৃথক দুটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। ফ্ল্যাটের অন্যদের সঙ্গে তেমন পরিচয় বা মেলামেশা ছিল না তাদের।
শনিবার সন্ধ্যায় চতুর্থ তলার বাবুলদের ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ পান পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া। এ সময় তাদের ফ্ল্যাটের বাইরের দরজা ভেড়ানো অবস্থায় ছিল। পরে ভেতরে গিয়ে একটি কক্ষের বিছানায় মা ও তার ছেলে জয়ের এবং আরেকটি কক্ষে বাবুলের হাত বাঁধা গলাকাটা মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, ‘আমিই প্রথম পুলিশে খবর দেই।’
আরেক ভাড়াটিয়া আফরোজা বেগম বলেন, ‘আমরা তেমন কিছু জানি না। আজ দুর্গন্ধ পেয়ে সবাই এসে দেখে এই অবস্থা। প্রথমে জয় ও তার মায়ের লাশ সবাই দেখতে পেলেও পরে আরেক কক্ষে জয়ের বাবা বাবুলের লাশ পাওয়া যায়।’
আরও পড়ুন:আইফোনের শখ ছিল এসএসসি পাস করে সদ্য কলেজে ভর্তি হওয়া এক শিক্ষার্থীর। পরিবারকে বিষয়টি জানালে তার শখ পূরণে অপরাগতা প্রকাশ করে সদস্যরা। তাই চুরির পথ বেছে নেন ওই যুবক।
রোবাবর মিরপুর শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে ওই কলেজ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকালে তার কাছ স্বর্ণ ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, পরিবার আইফোন কেনার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে চুরির পথ বেছে নেন তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদে ইমনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘আইফোন কেনার জন্য বাসা থেকে চুরি করেন ওই যুবক।’
ওসি জানান, ‘গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে মিরপুর মডেল থানার পূর্ব মনিপুরের একটি বাসার দ্বিতীয় তলায় চুরি হয়। ঘরের তালা ভেঙে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ মোট চার লাখেরও বেশি টাকার মালামাল চুরি হয়। পরে পাশের একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্তসহ দুজনকে শনাক্ত করা হয়। পরে রোবাবর মিরপুর শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যে একটি স্বর্ণের ও একটি ডায়মন্ডের নাকফুল এবং চুরি করা স্বর্ণ বিক্রির ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য