দীর্ঘ চার বছর পর মঙ্গলবার হয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন। তবে সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করা হয়নি, তা পরে ঠিক করা হবে।
উপমহাদেশের সর্বপ্রাচীন এই ছাত্র সংগঠনটি দীর্ঘ চার বছর পর নতুন নেতৃত্ব পাবে এই আশায় নেতা-কর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। পদপ্রত্যাশীরাও করছে শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপ।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর ঢাবি ছাত্রলীগের সম্মেলনে এসে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটি এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের কমিটি একসঙ্গে ঘোষণা করা হবে।
সেই হিসেবে ধারণা করা হচ্ছিল, কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বে কারা আসছেন সেই নাম সম্মেলনেই ঘোষণা হতে পারে। নানা কারণে তা হয়নি।
সম্মেলন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিন, টিএসসি আর হাকিম চত্বরে রাজনৈতিক আড্ডায় মেতে থাকতে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশীদের। করছেন শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপ।
কমিটি ঘোষণার আগে প্রার্থীদের নিয়ে নানা ধরনের বিতর্কমূলক তথ্য ছড়ানো হয়। এসব ভুল তথ্য থেকে নিজেদের বাঁচাতে তারা নিজের স্বচ্ছ ইমেজ, পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড, শিক্ষার্থীবান্ধব বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত তথ্যগুলো নিজের টাইমলাইনে প্রচার করছেন অনেকে।
দুই পদের জন্য ২৫৫ জনের মনোনয়নপত্র
ছাত্রলীগের এই সম্মেলন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশনের প্রধান কমিশনার, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম সুমন বলেন, ‘আমরা এক ডিসেম্বর থেকে তিন ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রদান এবং জমা নিয়েছি। ২৫৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে সভাপতি পদে ৯৬টি আর সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫৯টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছে। ৫ নারী নেত্রীও শীর্ষ পদের জন্য মনোনয়নপত্র নিয়ে তাদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘সিভি নেওয়ার একমাত্র শর্ত ছিল ছাত্রলীগের যেকোনো ইউনিটের একটি সাংগঠনিক পদ থাকা। আর প্রতিটি মনোনয়নপত্রের মূল্য ছিল তিন হাজার টাকা। আমরা এখন জমা পড়া সব সিভি যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করছি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যাদের বয়স ২৮ বছর ৩৬৪ দিনের ওপরে তাদের সিভিগুলো আলাদা করছি। মাননীয় নেত্রী সার্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের শীর্ষ পদের জন্য মোট ২৪৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এই কমিটির জন্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আলাদা পদে মনোনয়নপত্র জমা না নিয়ে একসঙ্গে দুই পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি রায়হান কাওসার।
দুই মহানগরের শীর্ষ পদের জন্য মনোনয়নপত্র বিক্রি হয় গত ২৬ থেকে ২৯ নভেম্বর, যার প্রতিটি মনোনয়নপত্রের বিক্রয়মূল্য ছিল ৫ হাজার টাকা। মহানগর উত্তরের শীর্ষ পদের জন্য মনোনয়নপত্র বিক্রি হয় মোট ১৮৭টি।
ঢাকা মহানগর উত্তর বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, ‘সভাপতি পদে ১০২ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৮৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উভয় পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।’
অন্যদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের জন্য বিক্রি হয়েছে ১৮২টি মনোনয়নপত্র। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ পদে ১৮২টি মনোনয়ন সংগ্রহ করা হলেও সভাপতি পদে ৮৩টি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৭০টি মনোনয়নপত্র ওপর মহলে জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি আলিমুল হক।
যাদের হাতে আসতে পারে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব
সূত্র বলছে, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে মাথায় রেখেই এবারের ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব বাছাই করা হবে। তাই পারিবারিক পরিচিতি এবং সংগঠনের জন্য ত্যাগকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। আর স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নেতা বাছাইয়ে নেতৃত্ব দেবেন।
তবে পারিবারিক পরিচিতি এবং সংগঠনের জন্য ত্যাগের পাশাপাশি নিয়মিত ছাত্রত্ব, বয়স এবং এলাকার বিষয়টিও প্রাধান্য পাবে।
বয়সসীমা কত হবে সেটি একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নির্ধারণ করবেন। তবে একটি ঘটনায় বয়সসীমার বিষয়ে কিছু ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
বেশ কয়েক দিন আগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রত্বের ব্যাপার নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন। তিনি জানতে চান, কত বছরে একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করতে পারে। তার জবাবে ছাত্রলীগের এই দুই নেতা আওয়ামী লীগ প্রধানকে জানান, ২৫ বা ২৬ বছরেই শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব গঠনে এ বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে।
এ ছাড়া করোনাকালে যেসব নেতা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেবায় নিয়োজিত ছিল এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভুক্তভোগীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সেবা পৌঁছে দিয়েছেন তাদেরও বিবেচনায় রাখা হবে।
এসব কিছু বিবেচনায় এবার বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে সম্ভাবনা রয়েছে সাদ বিন কাদের চৌধুরী, তানভীর হাসান সৈকত এবং তাহসান আহমেদ রাসেল। এর মধ্যে সাদ বিন কাদের চৌধুরী করোনাকালে বিনা মূল্যে অক্সিজেন সেবা দিয়ে সাড়া ফেলেছেন। তিনি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। এর আগে তিনি ডাকসুর ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
আর তানভীর হাসান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-সমাজসেবা সম্পাদক এবং ডাকসুর সদস্য। সৈকত করোনাকালে টানা কয়েক মাস টিএসসিতে দুস্থদের খাবার খাওয়ানোয় জাতিসংঘের রিয়েল লাইফ হিরোর মর্যাদা পেয়েছেন।
ঢাকা অঞ্চল থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক এহসান পিয়াল।
বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চল থেকে অনূর্ধ্ব ৩০-এর কোটায় আছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আইন সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, কর্মসংস্থান সম্পাদক রনি মুহাম্মদ।
উত্তরাঞ্চল থেকে আলোচনায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক এজিএস সাদ্দাম হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও ডাকসুর সাবেক সদস্য রাকিবুল হাসান রাকিব, প্রশিক্ষণ সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু, গ্রন্থনা-প্রকাশনা সম্পাদক আবুল হাসনাত হিমেল।
এদের মধ্যে রাকিবুল হাসান রাকিব এবং আবুল হাসনাত হিমেল অনূর্ধ্ব ২৯ বয়সসীমার মধ্যে আছেন।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, উপপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার উদয়, সহসম্পাদক এস এম রাকিব সিরাজী।
এস এম রাকিব সিরাজী ও রাশেদ শাহরিয়ার উদয় আছেন অনূর্ধ্ব ২৯ বয়সসীমার কোটায়।
বৃহত্তর খুলনা অঞ্চল থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন, মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহীন এবং ধর্মবিষয়ক সম্পাদক তুহিন রেজাও আলোচনায় থাকছেন।
এদের মধ্যে রেজা ও নাহিদ হাসান শাহীন আছেন অনূর্ধ্ব ২৯ বয়সসীমার কোটায়।
বরিশাল অঞ্চল থেকে সম্ভাবনায় আছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, উপবিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক সবুর খান কলিন্স, ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক ইমরান জমাদ্দার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান, উপকর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয়। তারা সবাই অনূর্ধ্ব ২৯ এর কোটায়।
সিলেট অঞ্চল থেকে আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন রহমান।
এবারের সম্মেলনে ঢাবির বাইরে থেকে কয়েক ডজন যোগ্য নেতাকর্মী রয়েছে। তাদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার জামিউস সানী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক হামজা রহমান অন্তর।
তবে সুত্র বলছে, ছাত্রলীগের গত চার কমিটিতে শীর্ষ নেতৃত্ব এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এই সংস্কৃতি বিবেচনায় রেখে আগামী ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় ৩০তম সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এবারও এই প্রতিষ্ঠান থেকে শীর্ষ নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে— এমনটাই প্রত্যাশা অনেকের।
কেমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করেন জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘যারা দক্ষ সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে যারা বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে যারা গ্রহণযোগ্য, স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি জামায়াতের ষড়যন্ত্র সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করে, যারা গণতান্ত্রিক এবং সাংগঠনিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারবে, শিক্ষার পরিবেশ যারা সমুন্নত রাখতে পারবে, একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যারা যুগপৎ সমন্বয় করতে পারবে এবং আন্দোলন এবং বিনির্মাণের রাজনীতি যারা একই সঙ্গে চালিয়ে নিতে পারবে আমি মনে করি তাদের মধ্য থেকেই নেতৃত্ব আসা দরকার।
কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস বলেন, ‘আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও সংগঠনের প্রশ্নে আপসহীন, জামায়াত বিএনপি ও উগ্ৰ সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সর্বদাই সোচ্চার এবং যারা সংগঠনের সংকটে পাশে ছিল, দীর্ঘদিন রাজপথে যাদের শ্রম-ঘাম আছে, তৃণমূল কর্মীদের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে, এমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করি।’
সাদ বিন কাদের চৌধুরী বলেন, ‘আগামীতে এই সংগঠনের যারাই নেতৃত্ব আসুক তাদের জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। আগামীর নেতৃত্ব ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প উপড়ে ফেলতে কাজ করবে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি জামাত দেশকে অস্থিতিশীল করার যে ষড়যন্ত্র করছে সে ষড়যন্ত্র যারা মোকাবিলা করতে হবে তেমন নেতৃত্ব আসুক। মুক্তিযুদ্ধ ও মাননীয় শেখ হাসিনার প্রশ্নে যে নেতৃত্ব আপোষহীন থাকবে সে নেতৃত্ব আসুক। অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে কাজ করবে।
তাহসান আহমেদ রাসেল বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীতে দেশরত্ন শেখ হাসিনার দর্শনকে যারা বুঝতে পারবে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তৃনমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যন্ত সব নেতা-কর্মীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে পারবে এবং বঙ্গবন্ধুতনয়ার ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে এমন নেতৃত্বই আমরা কামনা করছি। এছাড়াও কর্মীদের আবেদনকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের মধ্যে নব উদ্যোগে কাজ করে যাবার প্রেরণা যোগাতে সহযোগিতা করে যাবে।’
আরও পড়ুন:শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই সংস্কারের কাজের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার রাত ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ও ছাত্রা বাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিন দুপুর ৩টায় জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয় সর্বোচ্চনীতি নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, 'সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একমাস বন্ধ থাকবে ইনস্টিটিউট। এ সময় অনলাইনে ক্লাস নেবেন শিক্ষকরা। পাশাপাশি আজ রাত ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের চারুকলা ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশনাও দিয়েছে সিন্ডিকেট।'
এর আগে গত বছরের ২ নভেম্বর থেকে ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাসবর্জন শুরু করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন দাবি মানতে ইতিবাচক সাড়া দিলেও পরে ২২ দফা দাবি হঠাৎই মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দাবিতে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, মূল ক্যাম্পাস ছাড়া তাদের এই ২২ দফা দাবির সবগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়। আন্দোলন নিয়ে গত ২১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। পরদিন অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী এর সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে আলোচনার পর আন্দোলন স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। তবে শর্তপূরণ না হওয়ায় গত মঙ্গলবার থেকে ফের আন্দোলনে নামেন তারা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মূল ক্যাম্পাস শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারীতে অবস্থিত। ২০১০ সালে চবি চারুকলা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজকে একীভূত করার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নগরীর বাদশাহ মিয়া চৌধুরী সড়কে বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলে (ছাত্রাবাস) তল্লাশি চালিয়েছে প্রক্টরিয়াল বডি।
প্রক্টরিয়াল টিম পুলিশের উপস্থিতিতে বুধবার রাত ১টার দিকে এ অভিযান চালায়।
তল্লাশির সময় ওই ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে এক ছাত্রীর উপস্থিতি পাওয়া যায়। অনুমতি ছাড়া ছাত্রহলে ঢোকায় তাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আরেকটি কক্ষ থেকে উদ্ধার হয়ছে কিছু পরিমাণ গাঁজা।
চারুকলার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্থ ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে এই তল্লাশি চালানো হয়েছে। তল্লাশি ছাড়াও শিক্ষক ক্লাবের তালা এবং তাদের ব্যানার-ক্যানভাস ভেঙে ফেলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, ‘চারুকলার ক্লাস নেয়ার পক্ষে ও বিপক্ষে অনেকেই আন্দোলন করছেন। এখন সেখানে বহিরাগত কেউ হোস্টেলে আছে কি না, মাদক আছে কি না সেগুলো তল্লাশিতে অভিযান চালানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযানে আমরা এক ছাত্রীকে ১২টা ৪০ এর সময় ছাত্র হোস্টেলের একটি কক্ষে পেয়েছি। পাশে আরেকটি কক্ষে কিছু পরিমাণ গাঁজা পাওয়া গেছে। ছাত্রীর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘এখানে তল্লাশির বাইরে আর কিছুই হয়নি।’
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই ছাত্রী অনুমতি ছাড়াই ছাত্র হোস্টেলে অবস্থান করছিলেন। নিয়মানুযায়ী হোস্টেল ওয়ার্ডেনের অনুমতি ছাড়া রাতে কিংবা দিনে কোনো সময়ই ছাত্রীরা ছাত্রদের হোস্টেলে প্রবেশ করতে পারবেন না।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মো. শহীদ বলেন, ‘রাতে চারুকলার দুই গেইট দিয়েই পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি আসে। একজন ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসছিল। যার বাসায় যাবে সে চারুকলায় অপেক্ষা করছিল। প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ এসে সবাইকে রুমে যেতে বলে, ওই সময় ওই ছাত্রী রুমে গিয়ে বসে যায়। এরপরই যার জন্য অপেক্ষা করছিল, সে আসে। পরে সে বিষয়টা বিস্তারিত খুলে বললে তাকে ছেড়ে দেয়। তবে মুচলেকার বিষয়টা একটু বাড়াবাড়ি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা হলে তল্লাশি করে ঠিক আছে। কিন্তু শিক্ষক ক্লাবের তালা ভেঙে ফেলা ও আমাদের ব্যানার-ক্যানভাস ছিড়ে দিল কেন সেটা আমরা বুঝতেছি না। তবে মাদকের বিষয়টা তারা প্রমাণ দিক ৷ তারা তো সব তন্নতন্ন করে খুঁজেছে। আমি ভিডিও করার সময় আমার মোবাইলও কেড়ে নেয়া হয়।’
আরেক শিক্ষার্থী জহির রায়হান অভি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই প্রশাসন এটি করছে।’
আরও পড়ুন:বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতি ‘শ্রদ্ধা’ জানিয়ে বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও আইন অনুষদের অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতির সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. বোরহান উদ্দিনসহ পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চের এ আদেশের ফলে তার একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন।
আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন বলেন, হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে দ্রুত এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। এ আদেশের ফলে ঢাবি শিক্ষক রহমত উল্লাহর একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাতে বাধা নেই।
গত বছরের ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাবি প্রশাসন। সেখানে অধ্যাপক রহমত উল্লাহ মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে খন্দকার মোশতাকের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান।শ্রদ্ধা জানানোর পর খন্দকার মোশতাকের প্রতি ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেও বক্তব্য দেন তিনি।
এ ঘটনায় ওই বছরের ২০ এপ্রিল রহমত উল্লাহকে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দেয় বিশ্ববিদ্যালয়।
পরে এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে তিনি হাইকোর্টে আবেদন করলে গত বছরের ৮ জুন তা স্থগিত করে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে যায় ঢাবি কর্তৃপক্ষ। ঢাবি কর্তৃপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশটি বহাল রাখে।
আরও পড়ুন:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষে তিন ইউনিটে ১৫৪টি আসন ফাঁকা রয়েছে। নবম মেধা তালিকা থেকে ভর্তির পরও আসন ফাঁকা থাকায় এসব আসন পূরণে তাৎক্ষণিক সাক্ষাৎকারে ভর্তি বা স্পট অ্যাডমিশন নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার দিনব্যাপী এ তাৎক্ষণিক সাক্ষাৎকারে ভর্তি কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান ও একাধিক অনুষদের ডিন।
রেজিস্ট্রার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষে এ, বি ও সি ইউনিটে নবম মেধাতালিকা থেকে ভর্তির পর বিভিন্ন ইনস্টিটিউট ও বিভাগে বিদ্যমান শূন্য আসনে মেধাক্রমের ভিত্তিতে তাৎক্ষনিক ভর্তি বা স্পট অ্যাডমিশন নেয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা আসছে এবং তাদের ভর্তি নেয়া হচ্ছে। পরে আমরা বিষয়সহ মেধাতালিকা প্রকাশ করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি জানায়, ‘এ’ ইউনিটের শিক্ষার্থীদের মেধাক্রম ৫৪৬৬ থেকে ১০০০০ পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে সাক্ষাৎকার ও ভর্তি চলবে। একই সময়ে ‘বি’ ইউনিটের মেধাক্রম ২০৪৪ থেকে ৩০০০ পর্যন্ত ভর্তি চলবে কলা অনুষদ অফিসে। আর ‘সি’ ইউনিটের ৯০৩ থেকে ১১০০ পর্যন্ত ভর্তি চলবে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ অফিসে। আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে বিষয় বরাদ্দ দেয়া হবে।
কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি আরও জানায়, মঙ্গলবার দুপুর ২টায় বিষয় বরাদ্দ তালিকা প্রকাশ করা হবে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনলাইনে মোট ভর্তি ফি জমা দিয়ে সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ডিন অফিসে সনদপত্রাদি জমা দিয়ে এবং যারা ইতোমধ্যে জিএসটি গুচ্ছের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আছে, তারা অনলাইনে অবশিষ্ট ভর্তি ফি জমা দিয়ে পূর্বে জমাকৃত ভর্তি ফিসের স্লিপ সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং ডিন অফিসে জমা দিয়ে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।
‘এ’ ইউনিটের বাংলা, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ইসলামিক স্টাডিজ, দর্শন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, সমাজবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ, মনোবিজ্ঞান, এডুকেশন (আইইআর) ও ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ (আইএমএল) বিভাগের আসন ফাঁকা রয়েছে।
এ ছাড়া ‘বি’ ইউনিটে ইসলামিক স্টাডিজ ও ‘সি’ ইউনিটে ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ (আইএমএল) বিষয়ে ভর্তি নেয়া হবে। ভর্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীকে নগদ, বিকাশ, রকেট বা শিওর ক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভর্তি ফি জমা দিতে হবে।
শুধুমাত্র নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য মনোনয়নপ্রাপ্ত বিভাগে সনদপত্র ও কাগজপত্রাদি জমা দিতে হবে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শক কর্তৃক স্বাক্ষরিত এডমিট কার্ড, অনলাইন হতে প্রিন্টকৃত ভর্তি ফরম ও ৪ কপি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার মূল সনদপত্র ও নম্বরপত্র এবং প্রতিটির একটি করে সত্যায়িত ফটোকপি, এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার মূল নম্বরপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড এবং প্রতিটির একটি করে সত্যায়িত ফটোকপি।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি বিভাগীয় শিক্ষকদের সহযোগিতায় যাচাই-বাছাই পূর্বক ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সব অনুষদ, ইনস্টিটিউট ও বিভাগীয় দপ্তরে শেয়ারকৃত অনলাইন প্যানেলে ভর্তিকৃত বা বাতিলকৃত শিক্ষার্থীদের তথ্যাদি যথাসময়ে ও সতর্কতার সঙ্গে ইনপুট দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হলো।
আরও পড়ুন:প্রতিষ্ঠার মাত্র ৭ বছরেই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে দেশের স্বনামধন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ (সিইউবি)। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে থাকবেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ও ভারতের শিশু অধিকারকর্মী কৈলাস সত্যার্থী।
সমাবর্তন কেন্দ্র করে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসটি সাজানো হয়েছে নয়নাভিরাম সাজে। আর রাজধানীর পূর্বাচলে নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হবে সমাবর্তন-পরবর্তী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
প্রথমবারের মতো এই সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন প্রায় পাঁচশ’ গ্র্যাজুয়েট। প্রথম সমাবর্তন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাই উদ্বেলিত। রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ডিগ্রি নেয়ার অপেক্ষায় আছেন গ্র্যাজুয়েটরা।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এ বিষয়ে বলেন, ‘সমাবর্তনের দিনটি আমাদের জন্য এক বিশেষ মাইলফলক। কারণ এই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে সমাবর্তনের মাধ্যমে সার্টিফিকেট তুলে দিতে পারছি। এর জন্য আমি আমাদের ফ্যাকাল্টি, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, অ্যালামনাইসহ সিইউবি-সংশ্লিষ্ট সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসটি হবে পরিবেশবান্ধব। এখানে আধুনিক ভবন, দৃষ্টিনন্দন লেক ও বিশাল খেলার মাঠ থাকবে। সর্বাধুনিক ল্যাব, স্টুডিও, লাইব্রেরি, থিয়েটার, স্টাডি জোনের সঙ্গে থাকছে শিক্ষার্থী লাউঞ্জ, অবসর কাটানোর জায়গা, জিম, ফুড লাউঞ্জসহ বিভিন্ন সুবিধা। বিশ্বমানের স্থাপত্য নকশায় গড়ে তোলা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির নান্দনিক স্থায়ী ক্যাম্পাস।
সিইউবিতে রয়েছে আধুনিক সময়ের উপযোগী বিভিন্ন বিভাগ যেমন- শিপিং ও মেরিটাইম সায়েন্স, বিবিএ, এমবিএ ও ইএমবিএ, সিএসই, ইইই, এলএলবি, ইংলিশ, মিডিয়া কমিউনিকেশন ও জার্নালিজম, মাস্টার্স ইন মেরিটাইম ট্রান্সপোর্টেশন ও লজিস্টিকস। শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে রয়েছে বৃত্তির সুযোগ।
বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। এ ছাড়া কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ আছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে সাজানো হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের পাঠক্রম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টির চার শিক্ষার্থীকে স্থায়ী ও ১০৯ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শৃঙ্খলা পরিষদের সভার সুপারিশ অনুযায়ী সোমবার অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক সভায় বহিস্কারের এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভায় সভাপতিত্ব করেন। সিন্ডিকেট সভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালসহ সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও এর অধিভুক্ত কলেজের ১১৪ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী, সাময়িক ও বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের সুপারিশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি। এর মধ্যে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন ও পরীক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণের দায়ে ১০৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়।
ডাকে একটি বেনামি চিঠি পাঠিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাসকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
রোববার সকালে বিভাগের চেয়াম্যানের চিঠির বাক্স থেকে তিনি এই চিঠি পান বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন।
অধ্যাপক মিল্টন জানয়েছেন, চিঠিতে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে কলাম লেখার কারণে তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, চার পৃষ্ঠার চিঠিটিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার নিয়ে কটূক্তি করাসহ অশ্লীল ভাষায় গাল-মন্দ করে সরকারের সমালোচনা করা হয়। এতে প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ ৯টি ছবির ওপর বিভিন্ন লেখা আছে।
এর আগেও ২০১৪ সালে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন নিয়ে কলাম লেখার কারণে অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাসকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল।
চিঠির বিষয়ে অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাস বলেন, যারাই এসব কাজের সাথে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করবো।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য