× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
What will happen to the 4000 workers in the hills after the project?
google_news print-icon

প্রকল্প শেষে কী হবে পাহাড়ের ৪ হাজার কর্মীর

প্রকল্প-শেষে-কী-হবে-পাহাড়ের-৪-হাজার-কর্মীর
টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো না হলে পার্বত্য অঞ্চলে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়বে বলে মনে করেন এ এলাকার মানুষ। তাছাড়া প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ৪ হাজার ৮০০ পাড়াকর্মীর ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে যাবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পরিচালিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান’ প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৩ সালের ৩০ জুন শেষ হচ্ছে। এরপর প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত পাড়াকেন্দ্রের পাড়াকর্মী, অত্যাবশ্যকীয় জনবল, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ভাগ্যে কী হবে– এ নিয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন।

প্রকল্পটি স্থায়ী করতে চান পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ। এটি চালু রাখা হলে পার্বত্য অঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ ধীরে ধীরে উন্নয়নের ধারায় যুক্ত হতে পারবে বলে তারা আশা করছেন। মেয়াদ বাড়ানো না হলে পার্বত্য অঞ্চলে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়বে বলে তারা মনে করেন।

এটির দ্বিতীয় পর্যায়ে মেয়াদ বাড়ানোর জন্য উন্নয়ন বোর্ডের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইয়াছিনুল হক।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়, প্রকল্পটিতে পাঁচ বছরে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এই প্রকল্পে সরকারি বরাদ্দ ৩৫০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং দাতা সংস্থা ইউনিসেফ থেকে ১২৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে পাড়াকর্মী ও মাঠ সংগঠকদের সম্মানীর পেছনে প্রতি মাসে খরচ ৪ কোটি ১২ লাখ টাকা; ২৩৯ জন কর্মকর্তার বেতন বাবদ প্রতি মাসে ব্যয় ৬২ লাখ টাকা।

২০১৮ সালের ১ এপ্রিল প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২৩ সালের ৩০ জুন এর মেয়াদ শেষ হবে। তখন এর আওতায় পরিচালিত ৪ হাজার ৮০০ পাড়াকেন্দ্রে নিযুক্ত ৪ হাজার ৮০০ পাড়াকর্মী, ২৩৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়বে। অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে পড়বে নিবেদিত হয়ে কাজ করা মানুষগুলো।

প্রকল্পসূত্রে জানা গেছে, আশির দশকের শুরুর দিকে বাংলাদেশ সরকার ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে পার্বত্য অঞ্চলের মা ও শিশুদের কল্যাণের জন্য সেবামুলক কর্মসুচি গ্রহণ করা হয়। এই জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, বৃত্তিমুলক প্রশিক্ষণ, আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে আয়বৃদ্ধি এবং শিক্ষার হার সম্প্রসারণ ছিল প্রধান লক্ষ্য।

নব্বই দশকের শেষের দিকে ‘সমন্বিত সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায়’ নাম দিয়ে ২৫ থেকে ৫০টি পরিবারের জন্য একটি পাড়াকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে সামাজিক সেবা প্রদান কার্যক্রম চালু রাখা হয়।

ওই নামে প্রকল্পটি ২০১১ সাল পর্যন্ত চলে। প্রকল্পের আওতায় তিন পার্বত্য জেলার ২৫টি উপজেলায় ৩ হাজার ৫০০টি পাড়াকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিটি পাড়াকেন্দ্রে একজন পাড়াকর্মী নিয়োগ দিয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মা ও শিশুদের টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করা, বিশুদ্ধ পানি পান, গর্ভ ও প্রসবকালীন সেবা ও পরামর্শ দেয়া, স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃব্যবস্থাপনা, জন্ম নিবন্ধন, কম্যুনিটির সক্ষমতা বাড়ানো, কিশোর-কিশোরী উন্নয়ন এসব বিষয়ে স্থানীয় জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করা হয়।

২০১২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সমন্বিত সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প তৃতীয় পর্যায় নাম দিয়ে আগের কার্যক্রমই চালু রাখা হয়। ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়।

ওই সময় প্রকল্পে আরও অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়। পার্বত্য তিন জেলার ১১৮টি ইউনিয়নের ৩ হাজার ৬১৬টি গ্রামে ১ লাখ ৬০ হাজার পরিবারের মধ্যে মৌলিক সেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়। পাড়াকেন্দ্রগুলোকে সব ধরনের মৌলিক সেবা বিতরণের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়।

২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলায় নির্মিত ৪ হাজারতম পাড়াকেন্দ্রটির উদ্বোধন করেছিলেন।

এখন এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, এর সঙ্গে জড়িতদের দুশ্চিন্তাও বাড়ছে।

এসব বিষয়ে কথা হয় বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের তন্ন্যছড়ি (২) মডেল পাড়াকেন্দ্রের পাড়াকর্মী পহেলী চাকমা সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘শুনেছি ২০২৩ সালের জুন মাসে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তথ্যটি শোনার পর থেকে চিন্তা করছি পাড়াকেন্দ্রে পড়ুয়া শিশুদের ভবিষ্যত নিয়ে। কারণ পাড়াকেন্দ্রে এসে তারা যে শিক্ষাগুলো পায় তা প্রাথমিকে গেলে তা পায় না।

‘শিক্ষার পাশাপাশি পাড়াকেন্দ্রে গান, ছড়া ও কবিতা আবৃত্তি, নানা রকম খেলাধুলায় মাতিয়ে রাখা হয় শিশুদের। এ ছাড়া বর্ণমালা পরিচিতি, সংখ্যা শেখানো, সহজ শব্দ গঠনও শিখতে পারে শিশুরা। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গর্ভবতী মা, প্রসুতি মা ও কিশোর-কিশোরীদের মাঝে স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ দেয়া হয়।’

প্রকল্প শেষে কী হবে পাহাড়ের ৪ হাজার কর্মীর

সদর উপজেলার বন্দুক ভাঙ্গা ইউনিয়নের কুমড়া পাড়া কেন্দ্রের পাড়াকর্মী জিতা চাকমা বলেন, ‘প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে পাড়াকেন্দ্রে যে শিশুরা পড়াশোনা করে, তারা আর শিখতে পারবে না। পাড়াকেন্দ্রে পড়তে এসে তাদের মানসিক বিকাশ ঘটে। তিন থেকে পাঁচ বছরের শিশুরা পাড়াকেন্দ্রে পড়ার সুযোগ হওয়াতেই প্রাথমিকে গেলে তারা সহজে সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারে।’

অন্যদিকে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পের কার্যক্রম চালু রাখতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে একটি স্বতন্ত্র শাখা চালু এবং অত্যাবশ্যকীয় সম্পদ ও জনবল রাজস্বখাতে আনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ৮৫ কোটি টাকার বার্ষিক বরাদ্দ দেয়ার একটি সুপারিশ পরিকল্পনা কমিশন দিয়েছে। কিন্তু বোর্ড কর্তৃপক্ষ এখনও মন্ত্রণালয়ে কোনো প্রস্তাব পাঠায়নি বা কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইয়াছিনুল হক বলেন, ‘প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজ চালাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ অনুযায়ী নতুন ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে। আশা রাখি প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়তে পারে।’

এই প্রকল্পের স্থায়িত্ব সবাই চায় বলে মন্তব্য করছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।

তিনি বলেন, ‘প্রকল্পটি পার্বত্য অঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকার জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর শিশুদের মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির উন্নয়ন, নারী ও শিশুদের কল্যাণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

‘প্রত্যন্ত অঞ্চলের জন্য এটি একটি জনবান্ধব প্রকল্প। পাড়াকর্মী, মাঠ সংগঠক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও নিরলসভাবে দক্ষতা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।’

আরও পড়ুন:
ঢাকা-ভাঙ্গা রেল সংযোগের কাজ এগিয়েছে ৬১ ভাগ: রেলমন্ত্রী
উপজেলা প্রশাসনেও ব্যয়ের সীমা বেঁধে দিল সরকার
এবার কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প স্থগিত
আশ্রয়ণের ৮ ঘরের পিলার ভাঙচুর, মামলা
অর্ধেকে এসে থেমে গেছে উন্নয়নকাজ

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Cultivation of Philippine foreign variety MD 2 pineapple started in Comilla

ফিলিপাইনের আনারস চাষ কুমিল্লায়

ফিলিপাইনের আনারস চাষ কুমিল্লায় কুমিল্লায় কৃষি বিভাগের উদ্যোগে ফিলিপাইনের আনারসের জাত এমডি-২ চাষ শুরু হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লা কার্যালয়ের উপপরিচালক আইয়ুব মাহমুদ বলেন, ‘এমডি-২ জাতের আনারসের আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক সুনাম আছে। বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকায় বেশ জনপ্রিয়। এ জাতের আনারস দেশীয় আনারসের তুলনায় অনেক বেশি মিষ্টি।’

কুমিল্লা কৃষি বিভাগের উদ্যোগে জেলায় শুরু হয়েছে আনারসের ফিলিপাইনের একটি জাত।

এ উদ্যোগে ‍যুক্ত একজন কৃষি কর্মকর্তা জাতটির বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, এ বছর আনারস চাষ সফল হলে আগামী বছর আরও বড় পরিসরে এ জাতের চাষ করা হবে।

রোপণ করা চারা থেকে আগামী মাস ছয়েকের মধ্যে ফলন পাওয়া যাবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভাষ্য, বিদেশি আনারসের এ জাতটির নাম এমডি-২। এটির আদি নিবাস ফিলিপাইন। এর আগে বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলায় এ জাতের আনারস চাষ হয়েছে। এ আনারসের চামড়া পাতলা ও প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।

অধিদপ্তরের কুমিল্লা কার্যালয়ের উপপরিচালক আইয়ুব মাহমুদ বলেন, ‘এমডি-২ জাতের আনারসের আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক সুনাম আছে। বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকায় বেশ জনপ্রিয়। এ জাতের আনারস দেশীয় আনারসের তুলনায় অনেক বেশি মিষ্টি।

‘এ আনারস দ্রুত পচে না। প্রথমবারের মতো এ বছর আমরা পুরো কুমিল্লা জেলায় দেড় হাজার চারা বিতরণ করেছি। জেলায় আদর্শ সদর, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, সদর দক্ষিণ ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় বেশ কিছু টিলা ও পাহাড় রয়েছে। ছাড়াও লালমাই পাহাড়কে টার্গেট করে আমরা চারা বিতরণ করেছি। আশা করছি কুমিল্লার মাটি ও আবহাওয়া এমডি ২ জাতের আনারস চাষে বেশ উপযোগী হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফলন ভালো পাওয়া যাবে। এ বছর আমরা সফল হলে আমাদের আগামী বছরে আরও ব্যাপকভাবে এমডি-২ জাতের আনারস চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Crowds to watch the Eid festival of farmers and farmers in Kurigram

কুড়িগ্রামে কিষাণ-কিষাণীর ঈদ উৎসব, দেখতে ভিড়

কুড়িগ্রামে কিষাণ-কিষাণীর ঈদ উৎসব, দেখতে ভিড় কোলাজ: নিউজবাংলা
কৃষকদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ব্যতিক্রমী এ আয়োজন করে  ফাইট আনটিল লাইট (ফুল) নামে একটি সামাজিক সংগঠন। মূলত কৃষকদের ঈদকে প্রাণবন্ত করতে এ উৎসবের আয়োজন করে সংগঠনটি।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলায় ঈদ উৎসবে কিষান-কিষানিদের নিয়ে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। সেসব খেলা দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজারো দর্শনার্থী এস ভিড় জমায়।

কৃষকদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ব্যতিক্রমী এ আয়োজন করে ফাইট আনটিল লাইট (ফুল) নামে একটি সামাজিক সংগঠন। মূলত কৃষকদের ঈদকে প্রাণবন্ত করতে এ উৎসবের আয়োজন করে সংগঠনটি। খেলা শেষে ৩৫ জন বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।

শুক্রবার দিনব্যাপী ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর বড়ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসব খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

কুড়িগ্রামে কিষাণ-কিষাণীর ঈদ উৎসব, দেখতে ভিড়

দিনব্যাপী চলা অনুষ্ঠানে প্রায় ২২ ধরনের ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল হাঁড়ি ভাঙা, বালিশ খেলা, সুঁইসুতা, সাঁতার, তৈলাক্ত কলাগাছ বেয়ে চড়া, স্লো সাইকেল রেস, বেলুন ফাটানো এবং কিষানিদের বল ফেলা, বালিশ খেলা এবং যেমন খুশি তেমন সাঁজোসহ আরও অন্যান্য খেলা। এসব খেলায় অংশ নেন বিভিন্ন বয়সের শতাধিক কিষান-কিষানি।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আইনুল ইসলাম, সাংবাদিক শফি খান, রংপুর বিভাগীয় হিসাবরক্ষক সাইদুল হক, ফুল-এর নির্বাহী পরিচালক আব্দুল কাদের প্রমুখ।

খেলা দেখতে আসা ময়নাল হক বলেন, ‘গ্রামে এসব খেলা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ১০-১৫ বছর পর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী খেলা দেখে খুবই আনন্দ পেলাম। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে কৃষকদের হাঁড়ি ভাঙা, সাইকেল খেলা দেখে। এছাড়া কিষানিদের সুঁইসুতা খেলা ও বালিশ খেলা ছিল বেশ আনন্দের।’

কুড়িগ্রামে কিষাণ-কিষাণীর ঈদ উৎসব, দেখতে ভিড়

কৃষক নুর ইসলাম বলেন, ‘কৃষকদের নিয়ে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন সত্যি ভালো লেগেছে। আমরা এখানে শতাধিক কিষান-কিষানি আজকের খেলায় অংশ নিয়েছি। খু্ব ভালো লেগেছে।’

ফুল-এর নির্বাহী পরিচালক আব্দুল কাদের বলেন, ‘কৃষক হাসলে বাংলাদেশ হাসে- এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে দিনব্যাপী শতাধিক কিষান-কিষানিকে নিয়ে প্রায় ২২টি খেলার আয়োজন করা হয়েছে।

‘এ খেলার মাধ্যমে সমাজে বাল্যবিয়ে বন্ধে সচেতনতা বাড়াতে চেষ্টা করেছি। এছাড়া গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতেও এ খেলার আয়োজন করা হয়েছে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Eid card making competition

ঈদ কার্ড তৈরি প্রতিযোগিতা

ঈদ কার্ড তৈরি প্রতিযোগিতা শনিবার মাগুরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ছবি: নিউজবাংলা
প্রতিযোগিতায় মাগুরা শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষও অংশগ্রহণ করেন। শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

‘ঈদ কার্ড বানিয়ে খোলা উদ্যানে, শৈশবে ফিরে যাই নব উদ্যমে’ স্লোগান নিয়ে মাগুরায় ঈদ কার্ড তৈরি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার সকাল ১০টায় মাগুরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ‘পরিবর্তে আমরাই’ নামক একটি সংগঠন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন মাগুরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন ও মাগুরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার মজুমদার।

প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম শফিক, চিত্রশিল্পী আবুল আজাদ ও মনিরুল ইসলাম। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিরা। এ প্রতিযোগিতায় শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষও অংশগ্রহণ করেন।

‘পরিবর্তে আমরাই’ সংগঠনের পরিচালক নাহিদুল রহমান দুর্জয় বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের সপ্তম বার্ষিকীতে এ আয়োজন। মাগুরাতে এ সংগঠন বিভিন্ন সৃজনশীল কাজ করে থাকে। বিভিন্ন জাতীয় দিবসসহ নানা উৎসবে আমরা সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি। মাগুরাতে আমরাই বির্তকের নানা কলাকৌশল শিক্ষার্থীদের শিখিয়ে থাকি। আগামী দিনে মাগুরায় আরও ভালো কিছু সৃজনশীন কাজ আমরা করতে চাই। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন:
শুনানিতে কমিশনের প্রশ্ন- কোন ধানে কোন চাল
চালের ব্যবসা না থাকার দাবি বসুন্ধরার
বাজার কারসাজি: শীর্ষ আরও ৩৬ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা
র‍্যাম্পে হাঁটায় বদলি ৫ পুলিশ সদস্য
বর্ষা নিয়ে ফাউন্টেন পেন কালচারের প্রতিযোগিতা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Eid gift to students with tiffin money

দুই জেলায় টিফিনের টাকায় শিক্ষার্থীদের ঈদ উপহার

দুই জেলায় টিফিনের টাকায় শিক্ষার্থীদের ঈদ উপহার কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে ডিলাইট কিন্ডারগার্টেন বৃহস্পতিবার ঈদ উপহার বিতরণ করেন। ছবি: নিউজবাংলা
শিশুদের টিফিনের টাকায় ছয় বছর ধরে ঈদ উপহার বিতরণ করছে ‘ডিলাইট কিন্ডারগার্টেন’ নামের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে, কুমিল্লার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘ’-এর আয়োজনে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদের নতুন পোশাক উপহার দেয়া হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের শিশুকাল থেকে মানবতার শিক্ষা দিতে তাদের টিফিনের টাকায় ছয় বছর ধরে ঈদ উপহার বিতরণ করছে ‘ডিলাইট কিন্ডারগার্টেন’ নামের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে, কুমিল্লা রেল স্টেশনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘ’-এর আয়োজনে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদের নতুন পোশাক উপহার দেয়া হয়েছে।

ডিলাইট কিন্ডারগার্টেন প্রাঙ্গণে পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মো. কাছেদ মিয়ার সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঈদ উপহার বিতরণে প্রধান অতিথি ছিলেন অষ্টগ্রাম সদর ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ছয় বছর ধরে পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নে ডিলাইট কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের একদিনের টিফিনের টাকার সঙ্গে শিক্ষক, অভিভাবক এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহযোগিতা মিলিয়ে প্রতি বছর নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণের আয়োজন করা হয়।

এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শতাধিক স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে দুধ, চিনি, সেমাই, নুডুলস, সাবানসহ ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

এ ঈদ উপহার বিতরণের মাধ্যমে শিশুদের মানবিক ও পরোপকারী করে গড়ে তোলার জন্য এ আয়োজনকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপস্থিত এক বক্তা বলেন, ‘আগামী বছর আরও বড় পরিসরে এ আয়োজন করতে সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে।’

দুই জেলায় টিফিনের টাকায় শিক্ষার্থীদের ঈদ উপহার
কুমিল্লা রেল স্টেশন এলাকার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করেছে লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘ। ছবি: নিউজবাংলা

অন্যদিকে, কুমিল্লা রেল স্টেশনে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে বৃহস্পতিবার সকালে ঈদের নতুন পোশাক বিতরণের মাধ্যমে সারা দেশে পাঁচ দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ৭০টি শিশুকে ঈদের নতুন পোশাক দেয়া হয়।

সংগঠনটির সদস্যরা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থী। তারা নিজেদের একদিনের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে শিশুদের মুখে হাঁসি ফুটাতে ঈদের নতুন জামা উপহার দিচ্ছেন।

আগামী পাঁচ দিন ধারাবাহিক এ কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে ঈদের নতুন জামা উপহার দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।

এ বিষয়ে লাল-সবুজ উন্নয়ন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেল বলেন, ‘১৩ বছর ধরে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাঠদান, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, ঈদের নতুন পোশাক বিতরণ ছাড়াও মাদক ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আমরা কাজ করছি।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
9 food items in five taka market

পাঁচ টাকার বাজারে ৯ খাদ্য উপকরণ

পাঁচ টাকার বাজারে ৯ খাদ্য উপকরণ শনিবার খুলনা মহানগরীতে দুস্থদের মাঝে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন কেএমপি কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক। ছবি: নিউজবাংলা
পুলিশ সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওয়াব-এর উদ্যোগে শনিবার খুলনা নগরীতে পাঁচ টাকার বিনিময়ে ৩ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি করে চিড়া, ছোলা, চিনি, মুড়ি, পেঁয়াজ এবং আধ কেজি করে খেজুর ও তেল কিনতে পেরেছেন দুস্থ-হতদরিদ্ররা।

বাজার খরচ পাঁচ টাকা। আর ওই সামান্য টাকায় মিলেছে ৯ ধরনের খাদ্য উপকরণ। আর এই বাজারের ক্রেতারা সবাই সমাজের পিছিয়ে পড়া দুস্থ, অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষ।

শনিবার দুপুরে খুলনা মহানগরীর আলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন পাকা রাস্তায় বসেছিল এই বাজার। ‘উই আর বাংলাদেশ’ (ওয়াব) নামের একটি সংগঠন পবিত্র রমজানের মাহাত্ম্য ছড়িয়ে দিতে এই আয়োজন করেছে।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা পুলিশের কনস্টেবল এস এম আকবর। সংগঠনটি পরিচালনাকারী অন্যরাও পুলিশের সদস্য। চাকরির পাশাপাশি জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে তারা মানুষের পাশে দাঁড়ান। তাদের সঙ্গে সমাজের অন্যান্য শ্রেণী-পেশার মানুষও যুক্ত হয়ে হতদরিদ্রদের সহায়তায় হাত বাড়ান। এরই ধারাবাহিকতায় রমজানে হাজারও পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে তারা উদ্যোগ নিয়েছেন।

মাত্র পাঁচ টাকার বিনিময়ে ক্রেতারা পেয়েছেন ৩ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি করে চিড়া, ছোলা, চিনি, মুড়ি, পেঁয়াজ এবং আধ কেজি করে খেজুর ও তেল। কার্যক্রম শুরুর দিনে প্রায় ৩০০ পরিবারের মাঝে এসব উপকরণ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করা হয়েছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

কেএমপি কমিশনার এ সময়ে বলেন, ‘ওয়াব নামের সংগঠনটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা পুলিশের চাকরি করার পাশাপাশি মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন। এটা মানবিক পুলিশিং কর্মকাণ্ডের একটি অংশ। এই সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি ইতোপূর্বেও বিভিন্নভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।

‘সংকটাপন্ন রোগীকে বিনামূল্যে রক্তদান, গৃহহীনদের গৃহনির্মাণ, ছাত্র-ছাত্রীদেরকে শিক্ষা উপকরণ কিনে দেয়াসহ শিক্ষার খরচ বহন, দুস্থ রোগীদের বিনামূল্যে ‌ওষুধ প্রদান, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষদের পুনর্বাসনের জন্য সেলাই মেশিন প্রদান এবং প্রাকৃতিক প্রতিটি দুর্যোগে তারা মানুষের পাশে থাকেন।’

ওয়াব-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের সেবামূলক কার্যক্রমের প্রশংসা করে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘একটি মানুষ তার কর্ম দিয়েই কিন্তু প্রমাণিত হয়; সে কী চাকরি করে তা দিয়ে প্রমাণিত হয় না। মানুষকে ভালোবাসার মাধ্যমেই পরমাত্মা তথা স্রষ্টাকে পাওয়া যায়। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোও একটি ইবাদত।’

সামাজিক সংগঠন ওয়াবের অ্যাডমিন সরদার মসনুর আলী বলেন, ‘রমজানে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের এই কার্যক্রম শুরু হবে। খুলনা থেকে এর উদ্বোধন হলো। ভোগ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে যারা ঠিকমতো বাজার করতে পারছেন না তারা পাঁচ টাকার বিনিময়ে এসব উপকরণ পাবেন। এছাড়া যাদের পণ্য কেনার সামর্থ্য নেই তাদেরকে সহায়তা পৌঁছে দেয়ার জন্য আমাদের একটি স্বেচ্ছাসেবী দল রয়েছে। রাতের আঁধারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা পণ্য পৌঁছে দিয়ে আসেন, যাতে গ্রঈতা সামাজিকভাবে নিজেকে হেয় মনে না করেন।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The embankment was built on the banks by the volunteers of the locals

স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে গড়াই তীরে হলো বেড়িবাঁধ

স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে গড়াই তীরে হলো বেড়িবাঁধ নদীভাঙন রোধে শুক্রবার প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছেন দোরাননগর গ্রামের শতাধিক গ্রামবাসী। ছবি: নিউজবাংলা
এলাকাবসী জানান, গত বর্ষা মৌসুমে তিন কিলোমিটার জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গত পাঁচ বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অনেকবার এ বিষয়ে আবেদন করেও কোনো ফল পাননি তারা। যে কারণে উপায়ান্তর না পেয়ে নিজেরাই এ উদ্যোগ নিয়েছেন।

গড়াই নদীর ভাঙন থেকে নিজেদের ঘরবাড়ি, ফসলি খেতসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রক্ষায় নিজ উদ্যোগে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছেন মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার দোরাননগর গ্রামের বাসিন্দারা।

নদীভাঙনের আশঙ্কা মাথা নিয়ে প্রতিরাতে ঘুমাতে যেতে হয় ওই গ্রামের বাসিন্দাদের। গত কয়েক বছরে ভাঙনে এ গ্রামের গড়াই তীরবর্তী বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ফসলি খেত বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙন রোধে শুক্রবার প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছেন দোরাননগর গ্রামের শতাধিক গ্রামবাসী।

এলাকাবসী জানান, গত বর্ষা মৌসুমে তিন কিলোমিটার জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গত পাঁচ বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অনেকবার এ বিষয়ে আবেদন করেও কোনো ফল পাননি তারা। যে কারণে উপায়ান্তর না পেয়ে নিজেরাই এ উদ্যোগ নিয়েছেন।

দোরাননগর গ্রামের বাসিন্দা প্রকৌশলী রথীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘প্রতি বছর গড়াই নদীর ভাঙনে আমাদের দোরাননগর গ্রামের রাস্তা, বসতবাড়ি বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে সমাজের বিত্তবান মানুষের আর্থিক সহায়তায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছি আমরা।’

তিনি বলেন, ‘গত বছর গ্রামবাসীর উদ্যোগে ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁশ, কাঠ দিয়ে ৮টি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। সেটির রুপান্তর ঘটিয়ে এবার নতুন করে ইট, বালু, রড দিয়ে তৈরি কংক্রিটের পিলার দিয়ে সেটিকে মজবুত করা হচ্ছে।’

এই বেড়িবাঁধ নির্মাণের ফলে আগামী বর্ষা মৌসুমে গোটা গ্রাম নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে বলে জানান তিনি।

ওই এলাকার বাসিন্দা ডা. পঙ্কজ কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা ভাঙনের মুখে পড়ছি। এতে বাড়িঘর রাস্তাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। যে কারণে এবার ইট বালু, সিমেন্ট, লোহার রড দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর নিজস্ব অর্থায়নেই এটি করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মমতাজ মহল বলেন, ‘আমি বিষয়টি মাত্র জানলাম। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bechi dai kini book and then Ekushey Padak

বেচি দই কিনি বই, অতঃপর একুশে পদক

বেচি দই কিনি বই, অতঃপর একুশে পদক একুশে পদকের জন্য মনোনীত চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটের জিয়াউল হকের রুটি-রুজির মাধ্যম দই বিক্রি। ছবি: নিউজবাংলা
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মুশরীভুজা বটতলা গ্রামের সাদাসিধে মানুষটি শিক্ষার আলো ছড়াতে গড়ে তুলেছেন একটি পাঠাগার। শুধু পাঠাগার নয়, নানা প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আসছেন। সামাজিক কাজে তিন কোটি টাকার বেশি খরচ করেছেন এই সাদা মনের মানুষ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মুশরীভুজা বটতলা গ্রামের জিয়াউল হক এবার একুশে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন। অতিসাধারণ মানুষটি সমাজ সেবায় অনন্য অবদানের জন্য পর্যাদাপূর্ণ এই পদক হাতে নিতে যাচ্ছেন।

গ্রামের এই সাদাসিধে মানুষটি শিক্ষার আলো ছড়াতে গড়ে তুলেছেন একটি পাঠাগার। ১৯৬৯ সালে নিজ বাড়িতেই গড়ে তোলেন জিয়াউল হক সাধারণ পাঠাগার। শুধু পাঠাগারই নয়, নানা প্রয়োজনে মানুষের পাশে থাকছেন। সামাজিক কাজে তিন কোটি টাকারও বেশি খরচ করেছেন এই সাদা মনের মানুষ।

জিয়াউল হক বলেন, ‘ভালো কিছু করলে যে ভালো কিছু পাওয়া যায় তার প্রমাণ পেলাম। আমাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে যে সম্মান জানানো হবে এটা জানার পর থেকে মন থেকে আনন্দিত হয়েছি। এ বয়সে একুশে পদকের মতো এতো বড় সন্মান পেয়ে আমি সত্যিই খুশি হয়েছি।’

বেচি দই কিনি বই, অতঃপর একুশে পদক
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মুশরীভুজা বটতলা গ্রামে নিজ বাড়িতে পাঠাগারে সাদা মনের মানুষ জিয়াউল হক। ছবি: নিউজবাংলা

বেচি দই কিনি বই

সাদাসিধে মানুষটি পেশায় দই বিক্রেতা। এক সময় সাইকেলে ঝুড়ি মাথায় নিয়ে পথে-ঘাটে ঘুরে ঘুরে দই বিক্রি করতেন। ৯১ বছর বয়সে এসেও তার রুটি-রুজির অবলম্বন দই বিক্রি।

জিয়াউল হকের দইয়ের খ্যাতি জেলা জুড়েই। খাঁটি গরুর দুধ দিয়ে দই বানানো। সেই সততার কারণেই ভোক্তাদের মনে জায়গা করে নেয় জিয়াউল হকের দই। অনেকেই তার দই কেনার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে তার বাড়ি পর্যন্ত ছুটে যান।

দই বিক্রি করে সামান্য আয় থেকেই এলাকার হতদরিদ্র তরুণদের মূলত পাঠ্যবই কিনে দিতেন জিয়াউল হক। নিজে অভারের কারণে পড়ালেখা করতে না পারার আক্ষেপ তার বরাবরের। গ্রামের কারও পড়ালেখা যাতে অর্থের অভাবে বন্ধ না হয়ে যা, সেই ভাবনা থেকেই পাঠ্যবই কিনে দেয়া শুরু করেন জিয়াউল হক।

বইয়ের সংখ্যা বাড়তে থাকলে পাঠাগার গড়ে তোলেন তিনি। ১৯৬৯ সালে ভোলাহাট উপজেলার মুশরীভূজা এলাকার বটতলা গ্রামে নিজ বাড়ির একটি কক্ষে গড়ে ওঠে তার পাঠাগার। ‘জিয়াউল হক সাধারণ পাঠাগার’ নামে সেই পাঠাগার দিন যত গড়িয়েছি ততই আলোকবর্তিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে এ পাঠাগারে ২০ হাজারের বেশি বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে।

জিয়াউল হকের দেয়া বই পড়ে আজ তারা শিক্ষক

জিয়াউল হকের কাছ থেকে বই নিয়ে পড়ে শিক্ষক হয়েছেন ভোলাহাট উপজেলার পীরগাছি দারুস সুন্নাত দাখিল মাদ্রাসার মজিবুর রহমান (৫৯) ও মুসরীভূজা ইউসুফ আলী হাইস্কুল এন্ড কলেজের আজিজুল হক (৪৫)।

তারা জানান, জিয়াউল হকের কাছ থেকে পাঠ্যবইসহ সার্বিক সহযোগিতা না পেলে তারা জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারতেন না। এ জন্য তাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। জিয়াউল হক একুশে পদকের জন্য মনোনীত হওয়ার খবরে তারা খুবই আনন্দিত।

শুধু এ দুজনই নন, আরও অনেকেই পড়ালেখা করেছেন জিয়াউল হকের পাঠাগারের বই নিয়ে।

জিয়াউল হক বলেন, ‘১৯৬০ সালে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণের কাজ শুরু করি। এখনও তা চলমান।’

মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেছেন সাড়ে তিন কোটি টাকা

পেশায় দই বিক্রেতা, সাদাসিধে জিয়াউল হক সামাজিক নানা কল্যাণ কাজে এ পর্যন্ত খরচ করেছেন সাড়ে তিন কোটি টাকার বেশি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অসহায় মানুষের ঘর নির্মাণ, টিউবওয়েল স্থাপন, মসজিদ, কবরস্থানের উন্নয়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণসহ নানা খাতে তিনি ব্যায় করেছেন এই টাকা। জিয়াউল হকের সততার কারণে অনেকেই তার কাছে অনুদান পাঠিয়েছেন। সেসব সহযোগিতা গ্রহণ করে তিনি জনকল্যাণকর কাজে ব্যয় করেছেন।

জিয়াউল হক বলেন, ‘স্কুল-কলেজে বই বিতরণ, অসহায় মানুষের ঘর নির্মাণসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজে যে সহযইগতা করেছি তার মধ্যে দেড় কোটি টাকাই দিয়েছেন আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা। বাকিটা দই বিক্রি করেই করা।’

পদকের অর্থে বানাবেন পাঠাগারের ঘর

জিয়াউল হকের নিজ বাড়ির একটি ঘরেই কার্যক্রম পরিচালিত হয় তার পাঠাগারের। বিকেল বেলা অনেক শিক্ষার্থী বই পড়ার জন্য আসেন। কিন্তু তাদের বসার স্থান সংকুলান হয় না। পাঠাগারের পরিসর বাড়ানোর পরিকল্পনা অনেক দিন থেকেই করছেন তিনি। কিন্তু পেরে উঠছিলেন না। তাই পদক থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়েই পাঠাগারের পরিসর বাড়ানোর চিন্তা গুণী এই মানুষটির।

পদকের অর্থ দিয়ে কী করবেন- এমন প্রশ্নে তাই জানালেন, ‘পাঠাগারে জায়গার সংকুলান হয় না। আরও একটি ঘর করতে পারলে ভালো হয়। এ অর্থ দিয়ে পাঠাগারের আরও একটি ঘর বানাব।’

ব্যক্তি-জীবন

মরহুম তৈয়ব আলী ও শরীফুন নেসা দম্পতির ছেলে জিয়াউল হকের জন্ম ১৯৩৮ সালে। ব্যক্তিগত জীবনে তার স্ত্রী, দুই কন্যা ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রী সারাবান তহুরার মৃত্যুর পর দ্বিতীয় স্ত্রী ফরিদা হককে নিয়ে বটতলা গ্রামে বসবাস করছেন।

আনন্দের বন্যা চাঁপাইনবাবগঞ্জে

একুশের পদকের জন্য সাদামনের মানুষ মনোনীত হওয়ায় আনন্দের বন্য বয়ে যাচ্ছে উপজেলা ভোলাহাটসহ গোটা চাঁপাইনবাবগঞ্জে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকেই তার ছবি পোস্ট দিয়ে জানাচ্ছেন অভিনন্দন। বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকেই ফুল দিয়ে যাচ্ছেন জিয়াউল হকের বাড়িতে।

বুধবার তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা স্কাউটস। জেলা স্কাউট সম্পাদক গোলাম রশিদের অভিব্যক্তি, সাদা মনের মানুষ জিয়াউল হক একুশে পদকের জন্য মনোনয়ন পাওয়ায় জেলাবাসী গর্বিত ও আনন্দিত। তার এ সম্মানপ্রাপ্তিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নামটাও উজ্জ্বল হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ -২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) আসনের সংসদ সদস্য মু. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘যোগ্য একজন মানুষকেই একুশে পদকের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। তিনি দই বেচে বই কিনে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করে এবং গরিব ছাত্রদের মাঝে বই বিলি করে সাদা মনের মানুষ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। সমাজসেবায়ও অনন্য অবদান রেখেছেন এই গুণী। তার এই প্রাপ্তিতে জেলাবাসী গর্বিত।’

আরও পড়ুন:
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহসহ একুশে পদক পাচ্ছেন ২১ জন

মন্তব্য

p
উপরে