বিএনপি নেতারা কোন মুখে নির্বাচনের কথা বলে- এ কথাও জানতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার অভিযোগ, এই দলটি অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় এসেছে। আর ক্ষমতায় থাকাকালে দলটির কর্মীরা দিনের বেলায় প্রকাশ্যে জোর করে সিল মারত।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগের রাতেই ভোট হয়ে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপির অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ নেত্রী বলেন, তাই তাদের রাতে ভোট দেয়া লাগবে কেন?
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস স্মরণে সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগ আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনের আগে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ প্রধান। তিনি এই অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে যুক্ত হন ভার্চুয়ালি।
বিএনপি কয়েক বছর ধরেই অভিযোগ করছে যে আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি পূরণ না হলে ২০১৪ সালের মতোই ভোট বর্জন করে আন্দোলনে নামার হুমকিও এসেছে।
বিএনপি নেতাদের দাবি, ২০১৮ সালে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাসে ভোটে অংশ নিলেও তাদের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগের রাতেই বিভিন্ন কেন্দ্রে নৌকা মার্কায় সিল দিয়ে আওয়ামী লীগকে জেতানো হয়।
বিএনপির ভোট বর্জনের হুমকির জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের ক্ষমতায় আসা তো নির্বাচনের পথ ধরে নয়। অবৈধভাবে এবং সংবিধান লঙ্ঘন করে।
‘আর বিভিন্ন নির্বাচনে দলটির নেতাকর্মীরা দিনের বেলায় প্রকাশ্যে জোর করে সিল মারত। কাজেই তাদের রাতে ভোট দেয়া লাগবে কেন? পাশাপাশি বিএনপি আমলে মানুষের ভোট দেয়ার অধিকার ছিল না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালের ১ অক্টোবরে নির্বাচন। সে নির্বাচন কি নির্বাচন হয়েছিল? সেখানে কি কোনো মানুষ ভোট দিতে যেতে পেরেছে?
‘সমস্ত বাংলাদেশে সেনাবাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। সিল মারা বলে, এরা (বিএনপি) তো প্রকাশ্যে সিল মারত। এটা রাতের ভোট না, এক একটা বাসে করে যাবে, বিএনপির সন্ত্রাসীরা এক একটা বুথে ঢুকবে, সিল মারবে বাক্স ভরবে চলে আসবে। সেটা না পারলে সোজা ঘোষণা।
‘এসব প্রক্রিয়ায় মাগুরা নির্বাচন, মিরপুরে নির্বাচন, ঢাকা-১০ এ ফালু যখন নির্বাচন করে- এগুলো তো মানুষের চোখে দেখা। তখন মানুষ তো ভোট দিতে পারেনি। তারা ভোট দেয়ার অধিকারী ছিল না বিএনপির আমলে। তাদের কাছে কথা শুনতে হয় নির্বাচন নিয়ে, তারা কথা বলে কোন মুখে?‘
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আসার প্রসঙ্গও তোলেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘নির্বাচনের ভিত্তি ধরে তো তাদের ক্ষমতায় আসা না, ক্ষমতায় আসা অবৈধভাবে অথবা দেশ বিক্রির মুচলেকা দিয়ে আসা এই তো।
‘জাতির পিতাকে হত্যা করে মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে যারা দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চেয়েছিল। যুদ্ধাপরাধী এবং খুনিদের রাজত্ব করেছিল, বাংলাদেশে যেন আর কখনও মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে।'
আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, ‘সামরিক শাসক অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে যে দল গঠন করেছিল ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে। তাদের কাছে এখন নানান রকম নীতির কথা শুনতে হয়। যারা এই বাংলাদেশটাকে বানিয়েছিল অস্ত্র চোরাকারবারির একটা জায়গা। সন্ত্রাসীর দেশ জঙ্গিবাদের দেশ, বাংলা ভাই সৃষ্টির দেশ। তারাই এখন নীতির কথা বলে!’
আরও পড়ুন:বিশ্ব যেন বাংলাদেশের কাছে আসে, সেভাবেই দেশকে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বের কাছে যাব না। বিশ্ব যেন বাংলাদেশে আসে সেভাবেই দেশকে গড়ে তুলতে হবে।’
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ‘বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যানের শতবর্ষ উদযাপন: ঢাকার ঐতিহ্য’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ এ সেমিনার আয়োজন করে।
ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর মানুষ নতুন করে চিন্তার স্বাধীনতা পেয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বিপ্লবের সুফল পেতে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে সবার পরামর্শ চান।
ওই সময় বিজ্ঞান চর্চাকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে সরকার বদ্ধপরিকর বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।
সংশ্লিষ্ট সবার কাছ থেকে সংস্কারের চাহিদা নিয়ে কাজ করা হবে বলে উল্লেখ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান এবং এসএনবিএনসিবিএস, কলকাতার সাবেক অধ্যাপক পার্থ ঘোষসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:দেশজুড়ে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানায়।
এতে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপটি দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
পূর্বাভাসে জানানো হয়, বুধবার যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে সর্বনিম্ন ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়।
আজ ভোর ছয়টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৫টা ১৬ মিনিটে। আগামীকাল ঢাকায় সূর্যোদয় ভোর ৬টা ৯ মিনিটে।
আরও পড়ুন:জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
বিএফআইইউ বুধবার রাতে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করে।
পুঁজিবাজারে কারসাজি ও আর্থিক অনিয়ম খতিয়ে দেখতে গত ২ অক্টোবর সাকিব, তার স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশির ও তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করে সংস্থাটি।
তদন্ত শেষে সরকারের নির্দেশে বিএফআইইউ তার সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করে।
প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজি করে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর সাকিবকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
তারকা অলরাউন্ডার সাকিব জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আদাবর থানায় হওয়া হত্যা মামলার আসামি তিনি।
বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন সাকিব আল হাসান।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী শুক্রবার ৮ নভেম্বর তিনি যুক্তরাজ্যের লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করতে পারেন। সূত্র: বাসস
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডি্যাাল বোর্ডের সাতজন চিকিৎসকসহ সব সফরসঙ্গীর ভিসা প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
শারীরিক অবস্থাসহ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৮ নভেম্বর ‘লং ডিসট্যান্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে’ খালেদা জিয়াকে প্রথমে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে নেয়া হবে। তবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়া গেলে তার বিদেশযাত্রা দুই-একদিন পিছিয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডনে যাওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। শারীরিক অবস্থাসহ সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৮ নভেম্বর তার লন্ডনে যাওয়ার কথা রয়েছে।’
বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে মেডিক্যাল বোর্ডের সাত চিকিৎসক, নার্স ও তিন সহকারীসহ ১৬ জন যাবেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘ঢাকা থেকে বেগম খালেদা জিয়া প্রথমে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যাবেন। সেখান থেকে পরবর্তীতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা জার্মানির কোনো ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি হেলথ সেন্টারে’ নেয়া হতে পারে লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য।’
তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে লন্ডনের কয়েকটি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশে নেয়ার কথা রয়েছে তাতে সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা থাকবে।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শে তাকে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয়েছে। বর্তমানেও গুলশানের বাসায় মেডিক্যাল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ, নির্বিচারে মামলা এবং ব্যক্তিগত ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে স্বার্থান্বেষী মহলের অপতৎপরতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ধরনের পদক্ষেপ বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ-এর জন্য ভালো বার্তা বয়ে আনবে না।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবি।
এতে ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কি ফাঁকা বুলি’-এমন প্রশ্ন তুলে মুক্ত সাংবাদিকতার পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করার এই প্রবণতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের জন্য ভয়-ডরহীন পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় টিআইবি। পাশাপাশি গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার চর্চা নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বার বার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হবে না। ক্ষমতার প্রভাবের বাইরে থেকে দেশে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে।
‘কিন্তু গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, স্বার্থান্বেষী বিভিন্ন মহল দেশের কোনো কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, হামলা, ঘেরাওয়ের হুমকিসহ নানাবিধ আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো মহলের স্বার্থের বাইরে গেলেই গণমাধ্যমকে আক্রমণ ও সাংবাদিক হেনস্তা, গণমাধ্যমকে দখল বা খেয়াল-খুশিমতো পরিচালনার প্রচেষ্টা চলছে। এটা মুক্ত গণমাধ্যমের সম্ভাবনার জন্য অশনি সংকেত।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘টিআইবি মনে করিয়ে দিতে চায়- ভিন্নমত ও মুক্ত গণমাধ্যমের ঢালাও নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তাহীনতা মূলত কর্তৃত্ববাদের পুনরাগমনের পথ সৃষ্টি করবে। আমরা বিশ্বাস করি, অবিলম্বে দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য ভয়-ডরহীন উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে সুস্পষ্ট ও কঠোর পদক্ষেপ নেবে অন্তর্বর্তী সরকার। অন্যথায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফাঁকা বুলিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘টিআইবি বিশ্বাস করে, সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ থাকলে বা যারা সরাসরি কর্তৃত্ববাদের দোসরের ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। কিন্তু পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সহযোগী ‘ট্যাগ’ দিয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যথেচ্ছ মামলা, তথ্য অধিদপ্তরের দেয়া স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল, হুমকি, বরখাস্ত করার মতো ঘটনা দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সপক্ষে কোনো ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে না।’
একইসঙ্গে সাংবাদিকতার ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা চর্চা নিশ্চিতের জন্য গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানায় টিআইবি।
আরও পড়ুন:ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় তাকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস উইং থেকে বুধবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শুভেচ্ছা বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আপনাকে বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন। আপনাকে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করায় প্রতিফলিত হয় যে, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের সঙ্গে আপনার নেতৃত্ব এবং দৃষ্টি প্রতিধ্বনিত হয়েছে। আমি নিশ্চিত আপনার তত্ত্বাবধানে যুক্তরাষ্ট্র উন্নতি করবে এবং বিশ্বজুড়ে অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৮ বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে এক মেয়াদের বিরতিতে দ্বিতীয় বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার ট্রাম্পকে লেখা এক অভিনন্দন বার্তায় দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার ও ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বার্তায় বলেন, ‘২০২৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আপনি বিজয়ী হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে আপনাকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাতে পেরে আমি আনন্দিত।
‘আপনাকে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা মানে আপনার নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে। আমি নিশ্চিত, আপনার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র সমৃদ্ধি লাভ করবে এবং বিশ্বজুড়ে অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে।’
চিঠিতে ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট অসংখ্য ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। অফিসে আপনার আগের মেয়াদে সম্পর্কের গভীরতা এবং প্রশস্ততা বাড়তে থাকে। আমি আমাদের অংশীদারত্ব আরও জোরদার করতে এবং টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যাশায় রয়েছি।’
বার্তায় আরও বলা হয়, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সম্ভাবনাগুলো অফুরন্ত, আমাদের দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ অংশীদারত্বের নতুন নতুন পথ খোঁজার লক্ষ্যে কাজ করে।’
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে লেখা চিঠিতে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলার অঙ্গীকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সবার জন্য শান্তি, সম্প্রীতি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আপনার প্রচেষ্টার অংশীদার ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশের সরকার ও শান্তিকামী মানুষ।’
বুধবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা এটাকে (তার জয়) স্বাগত জানাই। আমরা আশা করি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও গভীর হবে এবং সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে।’
সম্প্রতি বাংলাদেশ সম্পর্কে ট্রাম্পের বক্তব্য সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাকে সম্ভবত ভুল তথ্য দেয়া হয়েছিল।’
এ সময় প্রেস উপ-সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ট্রাম্পের বিজয়কে এমন একজন সাবেক প্রেসিডেন্টের জন্য অসাধারণ প্রত্যাবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে, যিনি চার বছর আগে পরাজয় মেনে নিতে অস্বীকার করে ইউএস ক্যাপিটল হিলে সহিংস বিদ্রোহের সূত্রপাত করেছিলেন। এমননি গুরুতর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন এবং দুটি হত্যাচেষ্টার হাত থেকে বেঁচে গেছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য