মৎস্য খাতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য দেশের ২১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় মৎস্য পদক-২০২২ দেয়া হয়েছে।
রোববার ৯ ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দেয়া হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে একটি করে স্বর্ণপদক দেয়া হয়।
রাজধানীর আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন।
এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২’এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এবার মাছের গুণগত মানের রেণু উৎপাদনের জন্য এই পুরস্কার পেয়েছে ব্রহ্মপুত্র ফিশ ফিড হ্যাচারি ময়মনসিংহ, গুণগত মাছের পোনা উৎপাদনের জন্য দিনাজপুরের বিরামপুর থেকে তাজ অ্যাগ্রো ফার্ম, মৎস্য উৎপাদনে গোপালগঞ্জের হাভানা ফার্ম প্রোডাক্টস ও গুণগত মানের গলদা চিংড়ি উৎপাদনে ভাই ভাই কুয়াকাটা হ্যাচারি কলাপাড়া পটুয়াখালী।
বাগদা চিংড়ি উৎপাদনের জন্য পুরস্কার পেয়েছে খুলনার দাকোপের কোয়েস্ট অ্যাগ্রো কালচার লিমিটেড, মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াকরণ এবং বাজারজাতকরণে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের এসিআই অ্যাগ্রো লিমিটেড এবং মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জেলা টাস্কফোর্স, বরিশাল।
সুইডেনভিত্তিক এক নিউজপোর্টালের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশে গুমের শিকার ব্যক্তিদের ‘আয়নাঘর’ নামের একটি স্থাপনায় নিয়ে রাখা হয়।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে সব রাজনৈতিক দলকে এই আয়নাঘর বন্ধে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘আয়নাঘর চুরমার করে দিতে হবে। পুলিশকে উদ্দেশ করে সব বিরোধী দলকে সমবেত কণ্ঠে বলতে হবে- আপনারা যদি এই আয়নাঘর বন্ধ না করেন তাহলে প্রতিটি পুলিশের বিচার হবে।
‘অথচ আমাদের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি একবারও বলছে না যে ক্ষমতায় গেলে তারা সব আয়নাঘর ভেঙে চুরমার করে দেবে।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত সমাবেশে জাফরুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
দেশজুড়ে বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকারদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়াসহ তিন দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এই সমাবেশের আয়োজন করে। অন্য দুটি দাবি হলো- সব রাজবন্দিকে মুক্তি দেয়া এবং জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে গুমের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা।
সমাবেশ শেষে একটি মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমেরিকা যেমন গুয়ানতানামো বে তৈরি করেছে, তেমনই আওয়ামী সরকার তৈরি করেছে আয়নাঘর। কিন্তু গুয়ানতানামো বে-তে যাদেরকে নেয়া হয়, তাদের তথ্যও প্রকাশ করা হয়। কিন্তু আয়নাঘরের বন্দিদের কোনো হদিস মেলে না। দ্রুত গুমের শিকারদের পরিবারের কাছে ফেরত দিতে আমি জোর দাবি জানাচ্ছি।’
নিজেও গুমের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের সাহিত্যিক ফরহাদ মজহার মুখ খোলেননি। তিনিও গুম হয়েছিলেন। শেখ সাহেবের আমলে আমিও কয়েকদিনের জন্য গুম হয়েছিলাম। সিরাজ শিকদারও গুম হয়েছেন।’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া কোনো পথ নেই। নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার বা নিরপেক্ষ সরকার করতে হবে। ২০১৪ সালের খেলা আর চলবে না, ১৮ সালের খেলাও চলবে না। এবার ইভিএমের চালাকি চলবে না। একই চালাকি বারে বারে করা যায় না।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘ভয় পাবেন না। আপনার প্রতি অন্যায় হবে না। আপনি খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়ে দেন। দেখেন না মাঠে কী হয়! ছাত্রদের কথা শোনেন। তারা আগামী দিনের ভোর দেখতে পায়।
‘জিঘাংসা, হিংসা-প্রতিহিংসা বাদ দিন। আপনার কোনো লোকের ওপর হাত উঠানো হবে না। আমি নিশ্চিত, আমি আপনার পাশে দাঁড়ালে এরাও দাঁড়াবে।’
ছাত্র অধিকার পরিষদকে উদ্দেশ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আপনাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকুক। এই আন্দোলনে জয়ের আশা করছি। আপনারাই আমাদের ভবিষ্যৎ। আপনারাই দেশে শান্তি আনবেন।’
সমাবেশে গুম ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাদা পোশাকের হাত গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষার্থীরা সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করেন।
তাদের একজন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাকিলুজ্জামান বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাস থেকে সাদা পোশাকের পুলিশের হাতে গুমের শিকার হই। প্রথমে গামছা দিয়ে চোখ-মুখ বেঁধে গাড়িতে তুলে আমাকে বিভিন্ন স্থানে নেয়া হয়। রাতভর নির্যাতন করা হতো। তিনদিন পর আমাকে আদালতে তোলা হয়। ওই তিনদিন আমি কোথায় ছিলাম সেটা জানতাম না। সেটা এখনো দুঃস্বপ্নের মতো লাগে।’
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান কোটা সংস্কার আন্দোলনে তার ওপর চলা পুলিশি নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
গুমের শিকারদের ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নয়তো ছাত্র-জনতার প্রতিবাদের মুখে আয়নাঘর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে।’
মিনা আলামিন নামে মোদিবিরোধী আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নেত্রনিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আপনারা যা দেখেছেন তা অনেক কম। বাস্তবে চিত্র আরও ভয়াবহ। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমিসহ কয়েকজন বন্ধুকে গুম করা হয়। সেখানে কী হয় সেটা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বুঝবে না।’
ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতি আখতার হোসাইন বলেন, প্রোগ্রামের ঘোষণা করার পরই গতকাল আমার বাড়িতে পুলিশ গিয়ে হয়রানি করেছে। কিন্তু আমরা দমে যাইনি। আমরা আজ রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়িয়েছি সেসব মানুষের কথা বলার জন্য যারা গুমের শিকার হয়ে ভয়ের কারণে জনপরিসর থেকে হারিয়ে যান। আমরাও যদি কোনোদিন গুম হয়ে যাই, আপনারা কথা বলবেন, ইনশাআল্লাহ।
ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাবি শাখার দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাতের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব ও ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হুসাইন।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রচিন্তার সংগঠক দিদারুল আলম ভূঁইয়া ও ছাত্র ফেডারেশন নেতা আরমানুল হক।
এছাড়াও সমাবেশে সংহতি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সামিনা লুৎফা, ড. তানজিম উদ্দিন খান, ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আনু মুহাম্মদ, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিচালক এএসএম নাসিরুদ্দিন এলান, সু্প্রিমকোর্টের আইনজীবী কাজী মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী সারা হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মতিঝিলে গোয়েন্দা ডিবি পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যাওয়া ব্যক্তির পেটে ৩০টি অর্ধগলিত ইয়াবা পাওয়া গেছে। আরও ২০টি ইয়াবা ভালো অবস্থায় পাওয়া যায়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে ৬২ বছর বয়সী সিদ্দিক আহমেদের ময়নাতদন্তের সময় এই ইয়াবার সন্ধান পাওয়া যায়।
ময়নাতদন্ত করেন ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক সোহেলী মঞ্জুরী তন্নী।
এর আগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব আব্দুল্লাহ আল মাহফুজের এর উপস্থিতিতে মর্গে সিদ্দিকের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক সুব্রত দেবনাথ।
প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়, ‘ভিকটিমের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।’
বুধবার রাতে মতিঝিল ডিবি পুলিশ সিদ্দিক আহমেদকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসলে মেডিসিন ওয়ার্ডে তিনি মারা যান।
গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগের পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) এরশাদ হোসেন বলেন, ‘রমনা থানার মাদক মামলায় বুধবার সিএমএম কোর্টে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তিনি মারা যান।’
নানা সময় প্যাকেটে ইয়াবা ভরে সেগুলো গিলে পেটে করে তা বহনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বহুজন একাজ করতে গিয়ে পুলিশের অভিযানে আটক হয়েছেন।
চিকিৎসকরা এই প্রবণতাকে বিপজ্জনক বলে থাকেন এই কারণে যে, পেটের ভেতর যদি কোনো প্যাকেট ফেটে যায়, তাহলে বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হতে পারে। এই ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আরও পড়ুন:ঝরো ঝরো মুখর বাদরদিন এবার কবিগুরুর গানেই। বর্ষা চলে গেল, বৃষ্টির দেখা নেই বললেই চলে।
জুনের মাঝামাঝি থেকে আগস্টের মাঝামাঝি সময় বাংলা ঋতুর যে বর্ষাকাল, সেটি শেষ হয়েছে সবে। তবে চারপাশের আবহাওয়া দেখে বোঝা কঠিন এটি নাতিশীতোষ্ণ শরৎকাল। বরং চৈত্র বা বৈশাখের মতোই চোখ রাঙাচ্ছে এই ঋতুর প্রথম মাস ভাদ্রের শুরুর সপ্তাহ সূর্য।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে এমন শুকনো বর্ষা গত ৪২ বছরেও আসেনি। অবাক করা ঘটনা হলো, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দিন বৃষ্টি দেখেছে এই ধরণি। তবে বর্ষার ঝুম বৃষ্টি দেখেনি এক দিনও।
ফলত কাঠফাটা রোদে মানুষের নাভিশ্বাস। তাপমাত্রা যতটা দেখায়, গরমের বোধ তার চেয়ে ন্যূনতম ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি বেশি। কখনও কখনও মরুর সমান গরম এই সবুজ দেশে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বছরের এই সময়টায় যে তাপমাত্রা থাকার কথা, এর চেয়ে অন্তত ৬ থেকে সাড়ে ৬ ডিগ্রি বেশি রয়েছে।
আবহাওয়ার এই চরিত্র এমনিতেই পণ্যমূল্য বৃদ্ধিজনিত সমস্যায় জর্জর দেশবাসীকে ভোগাবে আরও বেশি। কৃষিবিদদের শঙ্কা এই বৃষ্টিহীনতার প্রভাব পড়বে ফসল উৎপাদনে। সেচ দিয়ে পানির চাহিদা হয়তো পূরণ করা যাবে। তবে তাতে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। ফলে আরও বেশি দামে পণ্য কিনতে হবে ভোক্তাকে।
দেশে বৃষ্টিপাতের প্রধান মাস জুলাইয়ে এবার বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪২ শতাংশ কম। আগস্টের পরিসংখ্যান এখনও পাওয়া যায়নি, তবে এই মাসের পূর্বাভাসেও স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টির কথাই বলা হয়েছে। জুনেও ছিল তাই।
শুকনোর মধ্যে আবার সবচেয়ে বেশি খারাপ দশা চট্টগ্রাম বিভাগে। এই বিভাগে স্বাভাবিকের তুলনায় বৃষ্টি হয়েছে কেবল ৩২ দশমিক ২ শতাংশ।
বরিশাল বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ, খুলনা বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ আর ঢাকা বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬০ দশমিক ৫ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে।
সার্বিকভাবে জুলাই মাসে দেশে ৫২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক হলেও এবার হয়েছে ২১১ মিলিমিটার।
তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে, বৃষ্টি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম হলেও বৃষ্টিপাতের দিন স্বাভাবিকের চেয়ে ছিল বেশি।
ঢাকা বিভাগে জুলাইয়ে ২০ দিন বৃষ্টি হয় সাধারণত। কিন্তু এই মাসে বৃষ্টি হয়েছে ২৮ দিন। কিন্তু এত কম বৃষ্টি হয়েছে যে মাটিও সেভাবে ভেজেনি। বর্ষার জলাবদ্ধতা এবার চোখেই পড়েনি রাজধানীতে।
গোটা দেশে এই মাসে ২৬ দিন বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয়েছে ৩১ দিন। প্রায় প্রতিদিনই ঝিরঝিরে বৃষ্টি মনের ক্ষুধা বাড়িয়েছে কেবল।
মরুর তামপাত্রা ঢাকায়
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে তাপমাত্রা আর এর অনুভব এক নয়।
আবহাওয়াবিষয়ক ওয়েবসাইট অ্যাকুওয়েদারের হিসাবে এদিন ঢাকায় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ অনুভূত হচ্ছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সাধারণত কোনো এলাকার আর্দ্রতা, মেঘাচ্ছন্ন অবস্থা এবং বৃষ্টি ও বাতাসের সম্ভাবনার ওপর নির্ভর করে অনুভূত তাপমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
ঢাকাবাসী আর মরুর দেশ সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদবাসীর গরমের অনুভূতি এদিন ছিল সমান। সেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪ ডিগ্রি আর গরমের অনুভূতি ছিল ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আবুল কালাম মল্লিক নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, বছরের এই সময়ে ঢাকার স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকার কথা ৩১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকার বাইরে থাকার কথা ৩১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আগামী তিন মাসের পূর্বাভাস কী বলে
অক্টোবর পর্যন্তই বৃষ্টিপাত কম হবে বলে মনে করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ত্রৈমাসিক যে পূর্বাভাস দেয়া আছে তাতে জানানো হয়েছে, আগস্টে স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ থেকে ২০ শতাংশ কম বৃষ্টি হতে পারে।
অবশ্য মাসের অর্ধেক সময় এই পূর্বাভাসের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছে।
সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে স্বাভাবিকের কাছাকাছি বৃষ্টি হবে বলেও পূর্বাভাসে উল্লেখ আছে।
‘এটা সারা বিশ্বের চিত্র’
বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও বনভূমি উজাড় বৃষ্টি কম হওয়ার অন্যতম কারণ। তাছাড়া পৃথিবীর অন্য জায়গায় পরিবেশে যে ঘটনা ঘটে তার প্রভাবও বাংলাদেশে পড়ে। ৬৬ বছর পরে ফ্রান্সের তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়েছে এবার। এই পরিস্থিতির জন্য ফ্রান্স প্রস্তুত ছিল না। বৃষ্টিপাত কম হওয়ার বিষয় নিয়ে আরও গবেষণা চলছে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ না, আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে এবার বৃষ্টি কম হয়েছে। ৪২ বছরের মধ্যে এ বছরের জুলাই মাসে বৃষ্টি এত কম হয়েছে।’
চলতি মাসে বৃষ্টি কেমন হতে পারে- জানতে চাইলে মল্লিক বলেন, ‘এই মাসেও বৃষ্টি একটু কম হবে।
‘তবে একটা লঘুচাপ তৈরি হয়েছে। আমাদের দক্ষিণ অঞ্চলে আগামীকাল থেকে দুই-তিন দিন বৃষ্টি হবে মুষলধারে। এই বৃষ্টিতে গরম কিছুটা কমবে। আবার যেহেতু বাতাসে জলীয় বাষ্প বৃদ্ধি পাবে, সেহেতু উত্তর অঞ্চলে গরমের অস্বস্তি থাকবে।’
কৃষিতে বিপদ
বৃষ্টিপাত কম হওয়ার প্রভাব কৃষি উৎপাদনে পড়বে, এটা বলাই বাহুল্য।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বছর বৃষ্টি কম হওয়াতে বৃষ্টিনির্ভর কৃষিতে সেচ দিয়ে কাভার করা লাগছে। এটা বাড়তি একটা খরচ। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে।
‘কম বৃষ্টিপাত পরিবেশের ওপরেও প্রভাব ফেলবে। আমাদের দেশে আগে ষড়ঋতু ছিল। এখন ষড়ঋতুর প্রভাব পরিবেশে নাই। শীতের মেয়াদ, প্রকোপ কমে গেছে। সব মিলিয়ে পরিবেশের একটা পরিবর্তন এসেছে।’
বৃষ্টি কম হওয়ায় ফসল উৎপাদন কম হতে পারে কি না জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সময়মতো পানি না দিতে পারলে অবশ্যই উৎপাদন কম হবে। সেচের মাধ্যমে ফসলে পানি দেয়ার সক্ষমতা সবার নাও থাকতে পারে।’
আরও পড়ুন:আদালতে অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর সিদ্দিক আহমেদ নামে এক আসামির মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
মতিঝিল ডিবি পুলিশ পুলিশের উপপরিদর্শক এসআই মো. এরশাদ হোসেন জানান, সিদ্দিক আহম্মেদের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফ হিলা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উলু চামারী গ্রামে।
তিনি জানান, রমনা থানার মাদক মামলায় ৬২ বছর বয়সী সিদ্দিককে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার তাকে সিএমএম আদালতে নেয়া হলে সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে দ্রুত রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ডিবিসির স্টাফ রিপোর্টার সাইফুল ইসলাম জুয়েল ও ক্যামেরাপারসন আজাদ আহমেদের নামে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব)।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউ চত্বরে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা জুয়েল ও আজাদের বিরুদ্ধে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভিক্টর ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী কাওসার ভূঁইয়ার ভাই নাজমুল হাসান ভূঁইয়ার মামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা এ মামলাকে মিথ্যা আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা জানান।
সমাবেশ থেকে বলা হয়, কাওসার ও তার সহযোগীরা গত ২ আগস্ট সাংবাদিক জুয়েল ও আজাদের ওপর হামলা চালান। এতে তারা গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় কাওসার ও তার সহযোগীরা গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে। কারাগারে বসেই তারা দুই সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।
সমাবেশে বক্তাদের একজন বলেন, সমঝোতার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর কাওসার ও সহযোগীরা দুই সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা করেছেন। কাওসার বাহিনীর সদস্যরা দুই সাংবাদিকের বাসা ও অফিসের সামনেও মহড়া দিচ্ছেন।
সমাবেশে সাংবাদিক জুয়েল ও আজাদের নামে হওয়া মামলা সাত দিনের মধ্যে প্রত্যাহার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন সাংবাদিক নেতারা। একই সঙ্গে নির্যাতনের শিকার সাংবাদিকের করা মামলার অভিযোগপত্র দ্রুত দেয়ার দাবিও জানান তারা।
সমাবেশ থেকে বলা হয়, জুয়েল ও আজাদের নামে হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পেশ করা হবে। সাত দিনের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করা না হলে ক্র্যাব, ডিআরইউ ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) শিগগিরই ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানানো হয়।
ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমালের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন ডিইউজে সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য, ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু, সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব, ডিআরইউ সাবেক সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ খান, ক্র্যাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম, র্যাক সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক নেতা মাহমুদুর রহমান খোকন, গোলাম মুজতবা ধ্রুব, দিপন দেওয়ান, রুদ্র রাসেল, জিয়া খান, নাদিয়া শারমিন, আবু দাউদ খান, সুশান্ত সাহা, আতাউর রহমান, ইসমাইল হোসেন ইমুসহ অনেকে।
সমাবেশ পরিচালনা করেন ক্র্যাব সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু।
আরও পড়ুন:রাজধানীর পল্লবীতে নির্মাণাধীন ভবনের চতুর্থ তলায় কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিচে পড়ে সঞ্জয় দাস নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সঞ্জয়ের সহকর্মী অতুল দাস বলেন, ‘পল্লবীতে নির্মাণাধীন ভবনের চতুর্থ তলায় দাঁড়িয়ে কাজের তদারকি করছিলেন সঞ্জয়। এ সময় পাশে থাকা বিদ্যুতের তারে হাত লাগে তার। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনি নিচে পড়ে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। চিকিৎসক বেলা পৌনে ২টায় তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, সঞ্জয়ের বাড়ি সুনামগঞ্জের ধীরাই থানা এলাকায়।
ঢাকা মেডিক্যালের পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ এএসআই আব্দুল করিম বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
রাজধানীর উত্তরায় বক্স গার্ডার দুর্ঘটনার পেছনে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের অবহেলার আরেক নমুনার কথা জানিয়েছে ক্রেন পরিচালনাকারীকে গ্রেপ্তার করা র্যাব।
বাহিনীটি জানিয়েছে, যে গার্ডারটি গাড়িতে তোলা হচ্ছিল, সেটির ওজন ৭০ টন। কিন্তু যে ক্রেন দিয়ে সেটি তোলা হচ্ছিল, সেটি বড়জোর ৫০ টন তোলার ক্ষমতা রাখে।
এই ক্রেনটির কাগজে-কলমে উত্তোলন ক্ষমতা ৮০ টন হলেও পুরোনো হওয়ার কারণে শক্তি ক্ষয়ে সেই ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
গত সোমবার বিকেলে উত্তরার জসিম উদ্দীন মোড়ে রাখা গার্ডারটি একটি গাড়িতে তোলার সময় সেটি পিছলে পাশ দিয়ে চলা একটি প্রাইভেট কারকে পিষ্ট করে। এতে এর পাঁচ আরোহী মারা যান। বেঁচে ফেরেন কেবল দুজন, যাদের বিয়ে হয়েছে দুর্ঘটনার কেবল দুই দিন আগে।
এই দুর্ঘটনার পরপরই জানা যায়, নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি না করেই এই গার্ডারটি তোলা হচ্ছিল। সেদিনই প্রশ্ন ওঠে, ক্রেনটির এই সক্ষমতা ছিল কি না, আর আসলে সেই ক্রেনটি কে পরিচালনা করছিলেন।
তবে ক্রেনের চালক এবং ঠিকাদারি কোম্পানির কর্মীরা সবাই পালিয়ে যাওয়ায় সেদিন এসব প্রশ্নের জবাব মেলেনি।
দুর্ঘটনার দুই দিন পর ক্রেনচালকসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। আর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কী পাওয়া গেছে, সেটি বাহিনীটি প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার।
দুপুরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীটির মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ হারানো ক্রেনটির সর্বোচ্চ ৪৫ থেকে ৫০ টন ওজনের গার্ডার সরানোর সক্ষমতা ছিল। কিন্তু সোমবার ১৫ আগস্ট দুর্ঘটনার দিন এই সক্ষমতার ক্রেনটি দিয়ে ৬০ থেকে ৭০ টন ওজনের গার্ডার সরানো হচ্ছিল।
‘এত ভারী গার্ডার উঠানোর সময় ক্রেনে কাউন্টার ওয়েট রাখার দরকার ছিল। তাও রাখেনি দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। ফলে ক্রেনের বাড়তি ওজন বহন করা সম্ভব হয়নি।’
এই দুর্ঘটনায় ঠিকাদারি কোম্পানির অবহেলার আরেক নমুনার কথা জানান এই র্যাব কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া ক্রেনটি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী। চালক নিজেরও এ ধরনের কোনো ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ছিল না।’
এই দুর্ঘটনার পরপরই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক হাদিউজ্জামান ঠিকাদারি কোম্পানি, বাস্তবায়নকারী সংস্থা আর তদারকি সংস্থা তিন সংস্থার অবহেলাকেই দায়ী করেছিলেন।
সেদিন তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্রেন ঠিক আছে কি না। তার আগে দেখতে হবে ক্রেন যে অপারেট করছিল, তার লাইসেন্স আছে কি না। সে অভিজ্ঞ কি না, এটাও তদন্তের মাধ্যমে দেখতে হবে।
‘আমার গার্ডারের যে ওজন এবং ক্রেনের যে সক্ষমতা, সেটা ঠিক আছে কি না। এই জিনিসটাও গুরুত্বপূর্ণ।’
এখানে প্রশাসনিক অবহেলা আছে বলেও মনে করেন এই দুর্ঘটনা বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটা করছে, ভালো কথা। কিন্তু তারা ঠিকমতো প্র্যাকটিস করছে কি না, এটার নজরদারি বা তদারকির দায়িত্ব তো বাস্তবায়নকারী সংস্থার। এই ধরনের প্রকল্পের সুপারভিশনের দায়িত্ব আরেক সংস্থার থাকে।
‘তার মানে কাজটা ঠিকমতো হচ্ছে কি না, সেটার জন্য সুপারভিশন সংস্থা আছে, আমাদের বাস্তবায়নকারী সংস্থা আছে, এটার একটা সমন্বয় দরকার। আমি যেটা মনে করি, এই ধরনের কাজ একটা বড় কাজ।
‘পাশাপাশি এটা অনেক বিজি একটা করিডর। এই করিডরে কাজ করতে গেলে অবশ্যই যারা বাস্তবায়ন করছে, তাদের ২৪ ঘণ্টা ৭ দিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি এবং তদারকি করতে হবে। কোথাও যদি কনস্ট্রাকশন প্র্যাকটিসের ব্যত্যয় হয়, তাকে কিন্তু জবাব দিতে হবে। এই জবাব দিতে হয় না বলেই আমরা দেখছি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে যেভাবে কাজ করার কথা, সেভাবে হয় না। তাদের মধ্যে অবহেলার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে।’
এই দুর্ঘটনার পর যে প্রাথমিক তদন্ত করেছে সরকার, তাতে ঠিকাদারি কোম্পানির অবহেলার প্রমাণ উঠে এসেছে বলে জানানো হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনায় বাস্তবায়নকারী সংস্থা বিআরটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলামকেও তদন্তের আওতায় আনতে বলেছেন।
এই নির্মাণকাজ নিয়ে সফিকুলের যে অবহেলা রয়েছে, সেটি দুর্ঘটনার দিন তার বক্তব্য ও র্যাবের বক্তব্যের পার্থক্যে উঠে এসেছে। সফিকুল ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেছিলেন, যে ক্রেন দিয়ে বক্স গার্ডারটি তোলা হচ্ছিল সেটির সক্ষমতা ছিল।
র্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘বিআরটি প্রকল্পের থার্ড পার্টি হিসেবে বিল্ড ট্রেড ইঞ্জিনিয়ার লিমিটেড থেকে মাসিক ভাড়ার চুক্তিতে ক্রেনটি আনা হয়। ক্রেনটি ১৯৯৬-৯৭ সাল থেকে চলছে। প্রথমে ক্রেনটির সক্ষমতা ৮০ টন ছিল। পরে আস্তে আস্তে ক্রেনটির সক্ষমতা কমে যায়। সর্বশেষ ক্রেনটি দিয়ে ৪৫ থেকে ৫০ টন ভর শিফট করা সহজ ছিল। কিন্তু এই ক্রেন দিয়ে ৬০ থেকে ৭০ টন ওজনের গার্ডারটি শিফট করা হচ্ছিল।’
তিনি জানান, ২০২১ সালে সর্বশেষ ফিটনেস যাচাই করা হয়, এরপর ক্রেনটির আর কোনো ফিটনেস যাচাই করা হয়নি।
খন্দকার মঈন বলেন, ‘আমরা গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, অতিরিক্ত ভার বহন করায় ক্রেনটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যায়। এ ধরনের গার্ডার শিফট করতে কাউন্টার লোড ব্যবহার করা উচিত ছিল। আরেকটি ক্রেন পাশাপাশি স্ট্যান্ডবাই রাখা উচিত ছিল। নিরাপত্তাব্যবস্থার অনেক ঘাটতি ছিল।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য