চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় সারা দেশে তীব্র সমালোচনার মধ্যে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয় মূল অভিযুক্তসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন চবি শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে শনিবার র্যাবের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানোর পর ওই তিন শিক্ষার্থীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যে চারজনকে ধরা খুবই কষ্টকর। তাও সেটা হয়েছে। চারজনের মধ্যে তিনজন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তাদের আজ অথবা আগামীকালের মধ্যে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই ঘোষণা গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে প্রতিটি সংবাদমাধ্যম। তখন সবার নজরে আসে, সংবাদ সম্মেলনের পর র্যাব থেকে পাঠানো একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি। যেখানে উল্লেখ করা হয়, ছাত্রী নিপীড়নে চবির তিন নয়, দুই শিক্ষার্থী জড়িত।
এই দুজন হলেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আজিম হোসাইন এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নুরুল আবসার বাবু। বাকি দুজনের মধ্যে নুর হোসেন শাওনকে শুরু থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলা হলেও তিনি হাটহাজারী কলেজের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী। র্যাবের সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আটক অন্যজন হলেন হাটহাজারী কলেজের আরেক শিক্ষার্থী মাসুদ রানা।
উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার বলেন, ‘আমরা আজকে ডিসিপ্লিনারি কমিটি বৈঠকে বসব। এ পর্যন্ত যতটুকু খবর জানা গেছে, অভিযুক্ত ছয়জনের পাঁচজনকে আটক করা গেছে। তার মধ্যে দুজন আমাদের শিক্ষার্থী, দুজন হাটহাজারী কলেজের শিক্ষার্থী। আমাদের ছাত্রের বিরুদ্ধে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা নেবে। হাটহাজারী কলেজের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা আবেদন জানাব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘র্যাব থেকে ক্লিয়ার করেছে হাটহাজারী কলেজের দুজন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন।’
গত ২০ জুলাই বিকেলে হাটহাজারী থানায় যৌন হেনস্তার অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ওই ছাত্রী। এজাহারে পথরোধ করে মারধর, ছিনতাই ও অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে হুমকি দেয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
যেভাবে যৌন নিপীড়ন
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক বলেন, ‘অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি, সেদিন রাত ১০টা-সাড়ে ১০টার দিকে ওই ছাত্রী তার এক ছেলে বন্ধুসহ হলের দিকে ফিরছিলেন। আজিম ও তার গ্রুপটি মোটরসাইকেল নিয়ে রাতে ঘোরাঘুরি ও আড্ডা দিতে থাকে। মোটরসাইকেল দুটি ছিল সাইফুল ও শাওনের। ঘোরাঘুরির সময় হঠাৎ তাদের নজরে আসে, একটি ছেলে ও একটি মেয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের দিক থেকে হেঁটে আসছে, জায়গাটি একটু নির্জন।
‘শুরুতে তারা গিয়ে ভুক্তভোগীদের চার্জ করেন। ছাত্রীর ছেলে বন্ধুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন না। অভিযুক্তরা তাদের কাছে গিয়ে এত রাতে বাইরে থাকার কারণ জিজ্ঞেস করেন। ছেলে বন্ধুর কাছে দাবি করা হয় চাঁদা। একপর্যায়ে তাদের মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়।
‘তখন তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পরে ছয়জন তাদের ওপর আরও বেশি চড়াও হয়। ছেলেটিকে আটকে রেখে মেয়েটিকে তারা নির্যাতন করে। প্রথমে চড়-থাপ্পড় মারে, তারপর বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের চেষ্টা করে।’
ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ ও টাকা পয়সা নিয়ে নেয়ার পর তারা (জড়িতরা) ঘটনাস্থল ত্যাগ করে জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘তখন ভুক্তভোগীরা একটি হলে গিয়ে এক ছাত্রের মোবাইল থেকে ফোন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অভিযোগ জানায়।’
ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত না দাবি করে তিনি বলেন, ‘এখানে আমরা কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাইনি। যার নেতৃত্বে ঘটনা ঘটেছে, আজিম, সে অকপটে বলেছে, ঘটনাটি ঘটেছে তাৎক্ষণিক। কোনো পূর্ব পরিকল্পনা ছিল না বা মেয়েটিকে টার্গেট করার কোনো প্ল্যান ছিল না। এমনকি মেয়েটিও আমাদের বলেছে, সে আজিমকে আগে থেকে চিনতো না।’
আজিমের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আজিম যেহেতু এলাকায় অবস্থান করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে, এই কারণে এলাকায় তার প্রভাব ছিল। এই প্রভাব-প্রতিপত্তি খাটিয়ে সে হয়তো ছোটখাটো কিছু ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জেনেছি। এগুলো তদন্ত করে আমরা বের করব।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত সবাই বলছে তারা ছাত্রলীগ সমর্থন করে। সমর্থন তো যে কেউ করতে পারে। কিন্তু তাদের কোনো পদ-পদবি নেই। তারা যেটা বলছে যে, তাদের মধ্যে দুই গ্রুপেরই সমর্থক রয়েছে। এখানে নির্দিষ্ট কোনো গ্রুপের কেউ না।
‘তাদের ভাষ্য অনুযায়ী একেক জন একেক গ্রুপ সমর্থন করে। সমর্থন করা মানেই আমি বলতে পারি না যে, তারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। সমর্থন তো যে কেউ করতে পারে, জনসাধারণ হিসেবে তার অধিকার রয়েছে।’
আরও পড়ুন:ফেনী মডেল থানার ওসি, তিন এসআই এবং স্থানীয় দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে যুবদল নেতাকে ফাঁসানোর অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আশিকুর রহমানের আদালতে বুধবার বিকেলে এই মামলার আবেদন করেন জেলা যুবদল সভাপতি জাকির হোসেনের স্ত্রী লুৎফুন নাহার।
বিচারক আবেদন আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক গোলাম মোহাম্মদ জিলানী এসব নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, যুবদল নেতা জাকিরকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ করা হয়েছে এজাহারে।
আসামি করা হয়েছে ওসি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, এসআই মো. ইমরান হোসেন, নারায়ণ চন্দ্র দাশ, হাবিবুর রহমান এবং ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন ও মো. সৈকত।
যুবদল নেতা জাকিরকে ফেনী মডেল থানা পুলিশ গত ২১ জুলাই রাজধানীর পল্টনের বিজয়নগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ি ফেনীর শহরের রামপুরে তার বাসায় শুক্রবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে একটি ৭.৬৫ এমএম পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, ৪ রাউন্ড গুলি এবং ২টি দেশীয় অস্ত্র জব্দ করে ফেনী মডেল থানা পুলিশ। থানা পুলিশ তার নামে এরপর অস্ত্র মামলা করে।
এই অভিযোগ শুরু থেকে অস্বীকার করে আসছিল জাকিরের পরিবার। তাকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন স্বজনরা।
আরও পড়ুন:যশোরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুই আরোহী নিহত হয়েছেন।
যশোর-ঢাকা রোডের রোজা ফার্নিচারের সামনে বুধবার বিকেল ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন যশোর শহরের বারান্দী মোল্যাপাড়ার ইসমাইল হোসেন ও সিটি কলেজপাড়া বউ বাজার এলাকার আল আমিন হোসেন। তারা দুজন ছিলেন বন্ধু।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (পরিদর্শক-তদন্ত) মো. মনিরুজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বিকেল ৪টার দিকে নিউমার্কেট থেকে মোটরসাইকেলে করে বের হয়েছিলেন ইসমাইল ও আল আমিন। ঢাকা রোড ব্রিজের পাশে রোজা ফার্নিচারের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে তাদের বাইকের সংঘর্ষ হয়।
স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শুভাশিস রায় জানান, হাসপাতালে নেয়ার আগেই দুই বন্ধুর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন:উদ্বোধনের একদিন পরেই ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা চলাচলে সরকারি সংস্থা বিআরটিসি বাস বন্ধ করে দিয়েছে জেলা বাস মালিক সমিতি। এমনকি মাঝপথ থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে যাত্রীদের। তাদের সঙ্গে করা হয়েছে দুর্ব্যবহার, বাসের শ্রমিকদের হাত পা কেটে দেয়ার হুমকিও এসেছে।
পরিবহন মালিকদের কাছে সরকারি সংস্থার এই করুণ ‘আত্মসমর্পণে’ যাত্রীরা একইসঙ্গে হতাশ ও ক্ষুব্ধ। এর কারণ, বিআরটিসির বাসে ভাড়া যেমন তুলনামূলক কম, সেই সঙ্গে আসনও কিছুটা আরামদায়ক।
এই অবস্থায় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নিলেও রুখে দাঁড়িয়েছে জনতা। বিআরটিসি বাস চলতে দেয়া না হলে বোয়ালমারীতে ফরিদপুর জেলা বাস মালিক সমিতির কোনো বাস ঢুকতে দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তারা।
পদ্মাসেতু চালু হওয়ার আগে থেকেই ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিআরটিসি বাস চলাচলের দাবি উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ ফরিদপুরের নগরকান্দা থেকে বাস চালু করে।
মঙ্গলবার বোয়ালমারী থেকে বিআরটিসি বাস চালু করে কর্তৃপক্ষ। উদ্বোধনের পরদিন বুধবার সকাল ৭টায় বোয়ালমারী টার্মিনাল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার গুলিস্তানের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে একটি বাস।
পথে ভাঙ্গা বাস টার্মিনালে এসে যাত্রী তুলতে গেলে সেটিকে আটকে দেয় সেখানকার বাস মালিক সমিতির লোকজন। নামিয়ে দেয়া হয় যাত্রীদের। ফলে চরম বিপাকে পড়েন তারা।
বাসের সুপারভাইজার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বাসটি সকাল ৭টায় ভাঙ্গা টার্মিনালের কাছে পৌঁছালে সেটিকে আটকে দেয়া হয়। আমাকে মারধর করে এবং হাত পা কেটে ফেলার হুমকি দেয়।’
যাত্রী ইমরান ফরহাদ বলেন, ‘আমাদের বাসটি ভাঙ্গা বাস টার্মিনালে আসার পর বেশ কয়েক ব্যক্তি চালকের কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নেয়। তারা চালক ও হেলপারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। যাত্রীদের সঙ্গেও তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।’
বাস বন্ধ করে দেবার খবর বোয়ালমারীতে পৌঁছালে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
বেশ কয়েকজন ক্ষুব্ধ মানুষ ঘোষণা দেন, বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করা হলে ফরিদপুর জেলা বাস মালিক সমিতির কোনো গাড়িই বোয়ালমারীর উপর দিয়ে চলাচল করতে দেয়া হবে না।
বিআরটিসির ম্যানেজার (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বিআরটিসির বাস বন্ধ করার কোনো এখতিয়ার নেই জেলা বাস মালিক গ্রুপের। পরিবহন সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। সেই হিসাবে বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করা ঠিক হয়নি।’
ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান বলেন, ‘বিআরটিসি সারাদেশের ২৩ রুটে যে রুট পারমিট দিয়েছে সেখানে কোন উপজেলার অনুমতি নেই। তাছাড়া জেলা বাস মালিক গ্রুপ থেকেও অনুমতি নেয়নি। ফলে আমরা বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ‘বাস চলাচলের বিষয়ে একটি ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আশা করছি এ সমস্যাটির সমাধান হয়ে যাবে।
‘বিআরটিসির পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মানব পাচার মামলায় চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। খালাস দেয়া হয়েছে চারজনকে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল তিন আসামির উপস্থিতিতে বুধবার দুপুরে এ রায় দেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডিতরা হলেন মর্জিনা বেগম, জেসমিন বেগম, মো. টিটু ও সাহাবুদ্দিন। এর মধ্যে জেসমিন বেগম পলাতক।
পরিদর্শক জানান, ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর বায়েজিদ নামের ৮ বছরের এক শিশু নিখোঁজ হয়। পরে বায়েজিদের মা নারায়ণগঞ্জ র্যাব-১১-এর কাছে অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়া হচ্ছে। মুক্তিপণ না পেলে বায়েজিদকে হত্যার হুমকিও দিয়েছেন অপহরণকারীরা। এরপর ১৮ জানুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগং রোড এলাকা থেকে বায়েজিদকে উদ্ধার করে র্যাব।
এ ঘটনায় ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সায়েদাবাদ ও সিদ্ধিরগঞ্জ বাগমারা এলাকা থেকে ৮ জনকে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মানব পাচার আইনে মামলা হয়।
ওই বছরের শেষের দিকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা। এতে বলা হয়, অপহরণকারীরা বায়েজিদকে অপহরণের কথা স্বীকার করেন। একই সঙ্গে তারা আরও অন্তত ১৭টি শিশু অপহরণের কথাও জানান।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রকিব উদ্দিন বলেন, ‘১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে অভিযোগ প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারক চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। পাশাপাশি একটি ধারায় ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:বরিশালের মেঘনা নদীতে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি বস্তা চিনি নিয়ে একটি ট্রলার ডুবে গেছে।
হিজলা উপজেলার কাইছমা বাজারসংলগ্ন এলাকায় বুধবার সকাল ১০টায় তলা ফেটে ট্রলারটি ডুবে যায়।
হিজলা নৌপুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ফারহান-ফাহিম নামের ট্রলারটি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে ৩ হাজার ৭২০ বস্তা চিনি নিয়ে ভোলার উদ্দেশে রওনা দেয়। নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় চালক ডুবোচর খেয়াল করেননি। ট্রলারটি একটি ডুবোচরে উঠে গেলে এর তলা ফেটে কাত হয়ে যায়। একপর্যায়ে প্রচণ্ড বাতাস ও ঢেউয়ের তোড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়।
এ সময় টহলে থাকা নৌপুলিশের একটি দল ট্রলারে থাকা পাঁচজনকে উদ্ধার করে।
পরিদর্শক বলেন, ‘স্থানীয় জেলেরা নৌকা ডেকে এনে ট্রলার থেকে ৩০০ বস্তা চিনি উদ্ধার করতে পেরেছেন। বাকি বস্তাসহ ট্রলারটি ডুবে গেছে। এ চিনি ভোলার হোসেন ট্রেডার্সের। মালিক ঘটনাস্থলে এসেছেন।’
আরও পড়ুন:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের জয়ধরকান্দি গ্রামে বুধবার বেলা ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
সরাইল সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, জয়ধরকান্দি গ্রামের আল আমিন প্রবাসে আছেন। প্রবাসে যাওয়ার আগে বোরহান নামের একজনকে বিদেশ নেয়ার জন্য তার কাছ থেকে টাকা নেন আল আমিন। বুধবার সকালে বোরহান তার টাকা ফেরত চান আল আমিনের বাবার কাছে৷ এ নিয়ে কথা কাটাকাটি থেকে দুইপক্ষ দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আহতরা হলেন, বকুল, বিল্লাল, শাসসু, আজগর, শিমুল, তকির, বাহার, নাহিদ, নাদিম, জুবায়েদ, জসিম, ইলিয়াস, হারিস। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ছাড়াও এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা আছে।’
আরও পড়ুন:বরগুনার পাথরঘাটায় বঙ্গোপসাগরে একটি ট্রলার ডুবে গেছে। এ সময় দুইজনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ রয়েছেন ১০ জেলে।
উপজেলা থেকে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় বুধবার সকাল ৮টার দিকে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায় ট্রলারটি। বিকেল ৫টা পর্যন্ত দুই জেলেকে উদ্ধার করে অপর একটি ট্রলারের জেলেরা।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি আবুল কালাম তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে ৪০ বছরের আখতার হোসেন ও ২৪ বছরের সোহেল রয়েছেন। তাদের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সন্দীপ এলাকায়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অপর নিখোঁজদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘কয়েক দিন আগে রসদ সামগ্রী নিয়ে এফবি নিশান ফিস ট্রলারটি গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের জন্য যায়। নিম্ন চাপের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় বুধবার সকাল ৮টার দিকে বঙ্গোপসাগরের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় ট্রলারটি ডুবে যায়।
‘সাগরে মাছ শিকারের সময় বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা মিজান মল্লিকের মালিকানাধীন এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি আবুল কালাম দুই জেলেকে ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন। এ ছাড়া চার জেলে ভাসতে ভাসতে পটুয়াখালীর মহিপুরে উঠেছেন।’
এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারটি উদ্ধার হওয়া ওই দুই জেলেকে বৃহস্পতিবার ঘাটে নিয়ে আসবে বলেও জানান তিনি।
কোস্টগার্ডের পাথরঘাটা স্টেশনের পেটি অফিসার আনোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমি আপনার কাছেই শুনলাম। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য