রওজা মনির বয়স এখন ৭ বছর ১০ মাস। তার জন্মের দুই মাস আগে খুন হন গাড়িচালক বাবা জাহাঙ্গীর আলম। বাবার আদর, ভালোবাসা পায়নি রওজা। তবে বাবার ছবির সঙ্গে সে প্রায়ই কথা বলে, ধরে নানা বয়না। আর সেই দৃশ্য দেখে কাঁদেন রওজার মা নুপুর আক্তার।
আট বছর আগে এই দিন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন সরকার, তার গাড়িচালক মো. ইব্রাহিম, যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান স্বপন, নজরুলের সহযোগী তাইজুল ইসলাম ও তার বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটনকে অপহরণ করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এর তিন দিন পর শীতলক্ষ্যায় একের পর এক ভেসে ওঠে তাদের মরদেহ।
সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলীতে শ্বশুরবাড়িতে মেয়ে ও শাশুড়িকে নিয়ে থাকেন নুপুর আক্তার। কাজ করেন সিটি করপোরেশনের স্থানীয় কার্যালয়ে। বুধবার দুপুরে তার কদমতলীর বাড়িতে যান নিউজবাংলার প্রতিবেদক।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিলের কথা তুলতেই ভিজে ওঠে নুপুরের চোখ। কিছুটা সময় নিয়ে কথা বলা শুরু করেন তিনি। বলেন, ‘সুখের সংসার ছিল তার। মেয়েকে বুকে জড়িয়ে সাত বছর কাটিয়ে দিয়েছি। এই বছরগুলোয় জীবন সংগ্রাম কাকে বলে জেনেছি। তবুও হাল ছাড়িনি। যতদিন পর্যন্ত ওই খুনিদের ফাঁসি কার্যকর না হবে, ততদিন পর্যন্ত শান্তি পাব না।’
তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েটা দিন দিন বড় হচ্ছে। ও এখন বোঝে ওর বাবা নেই। তবুও যখন দেখে অন্যের বাবারা তার ছেলেমেয়েদের এটা-ওটা কিনে দিচ্ছে তখন ও বাবার ছবি ধরে কথা বলতে থাকে। আমি কাজ শেষে বাড়িতে এসে প্রায়ই এই দৃশ্য দেখি...।’
কথা শেষ হওয়ার আগেই গলা ধরে আসে নুপুরের। গড়িয়ে পড়ার আগে চোখের জল মুছে নেন তিনি। একটা বড় শ্বাস নিয়ে আবারও বলতে শুরু করেন।
তিনি বলেন, ‘মেয়ে বড় হয়ে যখন জানতে চাইবে তার বাবা কীভাবে মারা গেছে। তখন আমি কী উত্তর দেব সে কথাই ভাবি। ও যখন জানতে চাইবে যারা তার বাবাকে মেরেছে, তাদের কী শাস্তি হয়েছে...। আমি আমার মেয়েকে বলতে চাই, যারা তোমার বাবাকে মেরেছে তারা ফাঁসিতে ঝুলে মরছে। উচ্চ আদালতের কাছে আমার দাবি, মামলার রায়টি দ্রুত কার্যকর করা হোক।’
শুধু নুপুরই নয়, তার মতো স্বজন হারানো অন্য পরিবারগুলো দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছে।
নিহত তাইজুলের বাবা আবুল খায়ের বলেন, ‘আট বছর ধরে সন্তানের হত্যার বিচার চেয়ে ঘুরছি। আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাই, হাইকোর্ট বিভাগ যে রায় দিয়েছে সেই রায় বহাল রেখে দ্রুত কার্যকর করা হোক।’
সাত খুনের ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় দুটি মামলা করেন। এক বছর তদন্তের পর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় গোয়েন্দা পুলিশ।
২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুটি মামলায় নূর হোসেনসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়। ১২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০৬ জন সাক্ষ্য দেন আদালতে।
২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত নূর হোসেন, র্যাব-১১-এর চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লেফেটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়।
পরে উচ্চ আদালতে ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখে বাকি আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখা হয়। বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের রায়ের পর নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের মামলাটি এখন আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
২০১৮ সালে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর আসামিরা আপিল করেন। এরপর তিন বছর পেরোলেও এই আপিল শুনানি শুরু হয়নি।
সাত খুনের মামলার বাদী নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটির সঙ্গেও কথা বলেছে নিউজবাংলা। তিনি বলেন, ‘আট বছরেও হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষ হয়নি। আমরা বার বার দাবি করে আসছি, দ্রুত রায় কার্যকর করা হোক। তারা আমাদের সাতটা পরিবার শেষ করে দিয়েছে। ছেলেমেয়েদের নিয়ে জীবনযুদ্ধ কতটা কঠিন আমরা জানি।’
বিউটি বলেন, ‘আমার স্বামী নজরুল সাহেব সারা জীবন আওয়ামী লীগ করে গেছেন। এখন ওই সরকারের আমলে যদি বিচার কার্যকর না হয়, তাহলে এর চেয়ে বড় কষ্ট আমাদের আর নাই। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই, আপনি আমাদের প্রতি একটু দৃষ্টি দিন।’
আলোচিত এই মামলার রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী সাখাওয়া হোসেন খান। তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের বিচারকি আদালত থেকে যে রায়টি হয়েছিল তা নিয়ে জেলার মানুষ খুশি হয়েছিল। এরপর হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তাতেও আমার আস্থা ছিল। কিন্তু আসামিরা আপিল বিভাগে গিয়েছেন। মামলাটি এখন অ্যাপিলিয়েট ডিভিশনে আছে। রায় কার্যকরে যত দেরি হবে, তত বিচারপ্রার্থীরা হতাশ হবেন।’
আরও পড়ুন:ব্যবসায়ের অংশীদার করবেন এমন আশ্বাস দিয়ে মোহাম্মদ হোসেন নামে এক যুবকের কাছ থেকে ৫৫ লাখ টাকা নিয়েছিলেন চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বারের সাবেক পরিচালক ফাতেমা বেগম। কিন্তু ২০১৭ সালে টাকা দেয়ার পর দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও কোনো অংশীদারত্ব পাননি ওই যুবক। এমনকি টাকা নেয়ার কথাও অস্বীকার করেন ফাতেমা।
এ ঘটনায় ২০২০ সালে অর্থ আত্মসাৎ ও চেক প্রতারণার দায়ে ফাতেমার বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করেন ভুক্তভোগী মোহাম্মদ হোসেন। অবশেষে মামলার রায়ে উইম্যান চেম্বারের সাবেক পরিচালক ফাতেমা বেগমকে বিভিন্ন মেয়াদে মোট ৩ বছর ১০ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার বিকেলে চট্টগ্রামের যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ ড. আবুল হাসনাতের আদালত এই রায় দেয়।
সাজাপ্রাপ্ত ফাতেমা বেগম বর্তমানে পলাতক আছেন। তিনি নগরের পাঁচলাইশ থানার শুলকবহর আবদুল লতিফ রোডের মৃত জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাফর ইকবাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অর্থ আত্মসাৎ ও চেক প্রতারণার ৬টি মামলায় আদালত বিভিন্ন মেয়াদে আসামি চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বারের সাবেক পরিচালক ফাতেমা বেগমকে মোট ৩ বছর ১০ মাস সাজা দিয়েছেন। পাশাপাশি ৫৫ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশসহ তাকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের সাবেক ইউএনও এবং তার বাবাকে হত্যাচেষ্টা মামলার দুই তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দিতে সমন জারি করেছে আদালত।
দিনাজপুর আদালত পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান নিউজবাংলাকে সোমবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (আমলি আদালত-৭) আদালতের বিচারক আগামী ৩০ মে এই মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য সমন জারি করেছেন। একই দিনে এই মামলার অভিযোগপত্র দেয়া কর্মকর্তাকেও আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দিতে বলা হয়েছে। এই দুজনের সাক্ষ্য শেষ হলে এই মামলার যুক্তিতর্ক শুরু হবে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এই মামলার ৬১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘোড়াঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুল ইসলাম, অভিযোগপত্র জমা দেয়া তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন ডিবি পুলিশ পরিদর্শক জাফর ইমামের সাক্ষ্য গ্রহণ হলেই মামলার সাক্ষ্যপর্ব শেষ হবে। পরে রায়ের তারিখ ঠিক করবেন বিচারক।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাতে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহেদা খানম ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখের ওপর হামলা হয়। সরকারি বাসভবনে ঢুকে তাদের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পালিয়ে যায় উপজেলা পরিষদের তখনকার মালি রবিউল ইসলাম।
এ ঘটনায় ওয়াহেদা খানমের ভাই পুলিশ পরিদর্শক ফরিদ উদ্দীন শেখ বাদী হয়ে পরের দিন ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করেন। পরে ওই মামলাটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই মামলায় মালি রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার একমাত্র আসামি রবিউল কারাগারে আছেন।
জয়পুরহাটে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখা ব্যবস্থাপকের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের সময় ধারালো অস্ত্রসহ ৩ ছিনতাইকারীকে আটক করেছে পুলিশ। জয়পুরহাট সদর উপজেলার চান্দা ব্রিজ এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জয়পুরহাট থানার ওসি এ কে এম আলমগীর জাহান এ তথ্য জানিয়েছেন।
আটক ছিনতাইকারীদের মধ্যে ৪০ বছরের জামিউল ইসলাম জেলা শহরের আমতলী এলাকার মৃত মজিবর রহমানের ছেলে, ৩১ বছর বয়সী শামসুজ্জোহা ধানমন্ডি এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে এবং ৩৪ বছরের সুমন হাজি মাদ্রাসা রোড এলাকার মৃত আফজাল হোসেনের ছেলে।
ওসি আলমগীর জাহান জানান, গত রোববার ইসলামী ব্যাংকের জেলা শাখা থেকে কয়েক লাখ টাকা তুলে জামালগঞ্জের মাহা ট্রেডিং কর্পোরেশনের এজেন্ট ব্যাংকে নেয়া হবে এ কথা এজেন্টের গাড়িচালক সুমন জানতেন। ওই টাকা লুট করতে ছিনতাইকারীদের সঙ্গে পরিকল্পনা করেন তিনি।
রোববার এজেন্ট শাখার ম্যানেজার আবুল হোসেন তার সহকারীকে নিয়ে ব্যাংক থেকে ১৩ লাখ টাকা তুলে মোটরসাইকেলে চড়ে চান্দা ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে দুটি মোটরসাইকেলে আসা ৬ জন ধারালো ছুরি দেখিয়ে তাদের পথরোধ করে। একপর্যায়ে চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে টাকাগুলো ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে তারা।
এ সময় ভুক্তভোগীরা চিৎকার শুরু করলে পথচারী ও আশপাশের মানুষ দৌড়ে এসে দুজনকে আটকের পর মারধর করে পুলিশে খবর দেয়।
পুলিশ ওই দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর আরও একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। ওই তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ১৩ লাখ টাকা আদালতের মাধ্যমে এজেন্ট ব্যাংক নিয়ে যেতে পারবে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বিয়ের দাবিতে এক যুবকের বাড়িতে অবস্থান নেয়া তরুণী ওই যুবকের নামে ধর্ষণের মামলা করেছেন।
ঈশ্বরগঞ্জ থানায় সোমবার দুপুরে তিনি ওই মামলা করেন বলে জানান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম মুন্না।
এর আগে শনিবার রাত ৮টা থেকে উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামে দেলোয়ার হোসেন নামে ওই যুবকের বাড়ির সামনে অবস্থান নেন ওই তরুণী। দেলোয়ার তাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দেন। তবে বাড়িতে নেই দেলোয়ার।
মামলার বরাত দিয়ে পরিদর্শক জহিরুল জানান, দেলোয়ারের সঙ্গে বাদীর প্রেমের সম্পর্ক চলছে ১৩ বছর ধরে। বিয়ের আশ্বাস দেয়ায় তার সঙ্গে বাদীর একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। হঠাৎ বাদী জানতে পারেন আগামী বৃহস্পতিবার পারিবারের পছন্দে দেলোয়ার অন্য কাউকে বিয়ে করছেন।
এ কারণে তিনি বিয়ের দাবিতে দেলোয়ারের বাড়িতে অবস্থান নেন।
সোমবার সন্ধ্যায় মেয়ের বড় ভাই নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার পরামর্শে বোন অনশন ভেঙেছে। তাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবে বলে জানিয়েছে। এখন সে ধর্ষণ মামলা করে আইনের আশ্রয় নিয়েছে।’
থানার ওসি পীরজাদা শেখ মোহাম্মদ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, ‘মামলার পর তরুণীর ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামির বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের সাত ঘণ্টার চেষ্টায় গাজীপুরের স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (ঢাকা বিভাগ) দিনমনি শর্মা নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সোমবার সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে কারখানার লার্জ ভলিউম প্যারেন্টাল ইউনিটে আগুন লাগে।
কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, প্রথমে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ও মির্জাপুরের একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
আগুন বাড়তে থাকলে কালিয়াকৈর থেকে আরও একটি, মির্জাপুর থেকে একটি, টাঙ্গাইলের সখিপুর থেকে দুটি, সাভার ইপিজেড থেকে দুটি, জয়দেবপুরের দুটি ও ফায়ার সার্ভিসের হেডকোয়ার্টার থেকে দুটি ইউনিট এসে যোগ দেয়।
স্টেশন মাস্টার বলেন, ‘কারখানার নিচতলা, দ্বিতীয় তলা, তৃতীয় তলাসহ প্রতিটি ফ্লোরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। যে ভবনটিতে আগুন লাগে সেখানে ওষুধ তৈরির নানা কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থ রয়েছে। যে কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়।’
এ ঘটনার তথ্য ও ছবি সংগ্রহে কারখানা এলাকায় সংবাদকর্মীদের বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
চ্যানেল-২৪-এর গাজীপুর প্রতিনিধি রফিক খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগুন লাগার পরপরই ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। তবে কারখানার গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। পাশের সিমেন্ট কারখানা থেকে অনেক কষ্টে ফুটজ ও ছবি সংগ্রহ করছি।’
তবে এই অভিযোগের বিষয়ে কারখানার নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট কেউ কথা বলতে চাননি।
আরও পড়ুন:পায়রা বন্দরের জন্য উচ্চক্ষমতার দুটি টাগবোট নির্মাণ করছে খুলনা শিপইয়ার্ড।
৭০ টন বোলার্ড পুলবিশিষ্ট দুটি টাগবোট তৈরি করা হবে। নির্মাণ শেষ হলে এ দুটি হবে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বোলার্ড পুল ক্ষমতার টাগবোট।
সোমবার দুপুরে খুলনা শিপইয়ার্ডে দুটি টাগবোটের কিল লেয়িং উদ্বোধন করেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
তিনি বলেন, পায়রা বন্দরের মাধ্যমে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। অচিরেই এটি দেশের আমদানি-রপ্তানির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে যাচ্ছে। এই বন্দরকে কেন্দ্র করে প্রচুর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসছে।
পায়রা বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, জাহাজ নির্মাণে খুলনা শিপইয়ার্ডের ঐতিহ্য রয়েছে। ভবিষ্যতেও পায়রা বন্দর ও খুলনা শিপইয়ার্ড পারস্পরিক উন্নয়নে এক সঙ্গে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর এম সামছুল আজিজ। উপস্থিত ছিলেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর এম মামুনুর রশীদসহ শিপইয়ার্ডের কর্মকর্তারা।
খুলনা শিপইয়ার্ড সূত্রে জানা যায়, সর্বাধুনিক প্রযুক্তির টাগ বোট দুটিতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন হবে। এটা আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় যাতায়াতে সক্ষম।
বোট দুটি বন্দরের সক্ষমতা বহুগুণ বাড়াবে। এ ছাড়া পায়রা বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বন্দরে পরিণত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
তিন মাস আগেই বিয়ে হয়েছিল। নববধূর হাতে মেহেদির রং এখনও শুকায়নি। এর মধ্যেই বিষপান করে একসঙ্গে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী-স্ত্রী! কিন্তু এ ঘটনাটিকে রহস্যজনক বলছে তাদের স্বজন ও পরিচিতরা। কারণ মাত্র তিন মাসেই সুখী দম্পতি হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি পেয়েছিলেন তারা।
ময়মনসিংহের সদর উপজেলার ভাটি দাপুনিয়া এলাকায় রোববার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নবদম্পতির এমন মৃত্যুকে রহস্যজনক বলছে পুলিশও।
নিহত দম্পতির মধ্যে ২২ বছর বয়সী স্বামী রনি মিয়া ভাটি দাপুনিয়া এলাকার মৃত শামসুল হকের ছেলে। রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন তিনি। আর ১৯ বছর বয়সী স্ত্রী সেতু আক্তার নগরীর বলাশপুর কসাইপাড়া এলাকার তারা মিয়ার মেয়ে।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক ফারুক হোসেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, তিন মাস আগে রনি ও সেতুর বিয়ে হয়। তাদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক ছিল। রোববার মধ্যরাতে নিজ বাড়িতে বিষ পান করেন তারা।
বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন ওই নবদম্পতিকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ভোর ৪টার দিকে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
সেতু আক্তারের বাবা তারা মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তারা স্বামী-স্ত্রী সুখেই ছিল। প্রায় দিনই মোবাইলে কথা বলতাম। গত রাত ১২টার দিকেও মেয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছি। তখন তারা ভালোই ছিল। কথা বলার আধঘণ্টা পর শুনি মেয়ে অসুস্থ। পরে হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি মেয়ে আর জামাই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে না। কীভাবে কী হলো বুঝতে পারছি না।’
দাপুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ছুটে গেছি। এরা এভাবে মারা যাবে কল্পনাও করিনি। মৃত্যুটি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। কারণ দুইজনের সুখের সংসার ছিল।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ‘মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে মৃত্যু রহস্যজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য