× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
What is behind the hijab debate in Naogaon school?
google_news print-icon

নওগাঁর স্কুলে ‘হিজাব বিতর্কের’ পেছনে কী?

হিজাব
দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে হিজাব ইস্যুতে বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বুধবার দুই শিক্ষক বেত্রাঘাত করলেও শুধু আমোদিনি পালের বিরুদ্ধে অভিযোগ কেন ভাইরাল হলো, সে ব্যাপারেও অনুসন্ধান করেছে নিউজবাংলা। এলাকার লোকজন এবং স্কুল শিক্ষার্থীদের প্রায় সবাই বর্তমান প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণের সঙ্গে আমোদিনি পালের বিরোধের বিষয়টি সামনে এনেছেন। ঘটনাচক্রে গত বুধবার স্কুলে ছিলেন না ধরণী কান্ত।

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার একটি স্কুলে হিজাব পরার কারণে কমপক্ষে ২০ ছাত্রীকে মারধরের তথ্য প্রকাশ করেছে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুজনের বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।

বিষয়টির সত্যতা জানতে শুক্রবার দিনভর দাউল বারবাকপুর গ্রামে অনুসন্ধান চালিয়েছে নিউজবাংলা। স্কুলটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, এলাকাবাসী এবং প্রশাসনের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। ঘটনার সময় উপস্থিত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী নিউজবাংলাকে জানায়, হিজাবের কারণে কাউকে সেদিন মারা হয়নি। স্কুলের নির্ধারিত পোশাক না পরার কারণে দুই শিক্ষক বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করেন। তাদের মধ্যে হিন্দু ছাত্রী ও ছেলে শিক্ষার্থীও ছিল।

বুধবার অ্যাসেমব্লির সময় ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ওঠে।

শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাতের ঘটনাটি ঘটে বুধবার সকালে স্কুলের অ্যাসেমব্লির সময়। সে সময় ছেলে ও মেয়েদের পিটির লাইনের সামনে ছিলেন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল, শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক বদিউল আলম এবং শিক্ষক সুনিতা রাণী মণ্ডল।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্কুলড্রেস না পরার কারণে সেদিন মেয়েদের বেত্রাঘাত করেন আমোদিনী পাল, আর ছেলেদের একই শাস্তি দেন বদিউল আলম। তবে কেবল আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভাইরাল হয়।

ঘটনাটি প্রচার পায় ‘হিজাব পরা’র শাস্তি হিসেবে। এই অভিযোগ তোলা দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছে নিউজবাংলা। তবে তাদের কাউকেই শুক্রবার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরাও সেখানে নেই। দুই শিক্ষার্থীর বাড়িই তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে।

‘হিজাব পরার কারণে শাস্তি’র অভিযোগটি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পায় বৃহস্পতিবার। একই দিন ফেসবুকে ভাইরাল হয় দুই শিক্ষার্থীর বক্তব্য এবং স্কুলে হামলার ভিডিও।

নওগাঁর স্কুলে ‘হিজাব বিতর্কের’ পেছনে কী?
দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী উম্মে সুমাইয়া বলে, ‘আমরা স্কুলড্রেসের সঙ্গে হিজাব পরে ছিলাম। ম্যাডাম এসে বলল, তোমরা হিজাব পরে আসো কেন? আমাদের মাস্ক ধরে টানাটানি করেছিল। মাস্ক খুলে দিল, হিজাব ধরে টানাটানি করেছিল। যারা যারা হিজাব পরেছিল সবাইকে মেরেছে। বলছে যে তোমরা হাজিগিরি করতে আসছ, ঘরের ভেতর গিয়ে বোরখা পরে থাকো।

‘স্কুলে পর্দা করা যাবে না, মাথায় কাপড় দেয়া যাবে না। শুধু স্কুলড্রেস পরে আসবে। হিজাব পরবে না, এই বলে আমাদের হিজাব ধরে টানাহেঁচড়া করেছে। মোটা কঞ্চি দিয়ে অনেক মেরেছে। যারা হিন্দু ছিল তাদের এক সাইডে নিয়ে আমাদের বলেছে, তোমরা ওদের মতো করে আসবে।’

প্রায় একই ধরনের অভিযোগ করে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন। তাদের অভিভাবকদেরও দাবি, হিজাব পরার কারণে শিক্ষক আমোদিনী পাল মেয়েদের মেরেছেন।

ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার ওই স্কুলে হামলা হয়। অভিযুক্ত শিক্ষক আমোদিনী পালকে স্কুলে না পেয়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিউজবাংলার প্রতিবেদক শুক্রবার দাউল বারবাকপুর গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসী ও স্কুল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে পাশের আরেকটি স্কুল দাউল বারবাকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিয়ন মোস্তাকিন রহমান ছিলেন সেখানে।

এই দুই স্কুলের পাশের মাঠে বুধবার অ্যাসেমব্লির সময় ঘটনাটি ঘটে। মোস্তাকিনের দাবি, তিনি সে সময় মাঠের একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

তিনি জানান, প্রতিদিন এই অ্যাসেমব্লি হয়। পিটির সময় একদিকে মেয়েরা, আরেক দিকে ছেলেরা দাঁড়ায়।

নওগাঁর স্কুলে ‘হিজাব বিতর্কের’ পেছনে কী?

মোস্তাকিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মাঠ থেকে ৩০ হাতের মতো দূরে ছিলাম। সব স্যার-ম্যাডাম মাঠে ছিলেন। হেডমাস্টার স্যার ছিলেন না। ওই দিন বদিউল স্যার পিটি করান।’

কী হয়েছিল জানতে চাইলে মোস্তাকিন বলেন, ‘রোজার দিন তো, সবাই একটু হিজাব পরে। কেউ বোরকা পরছে। একটু পরে শুনি আমোদিনী ম্যাডাম কয়েকটা মেয়েকে মারছে, তাদের বলতেছে হিজাব কেন পরে আসছ?’

মাঠ থেকে ৩০ হাত দূরে দাঁড়িয়েও কীভাবে কথাগুলো শুনলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম তো জোরে জোরে বলেছেন। তাই স্পষ্ট শুনছি।’

মোস্তাকিনের কাছ থেকেই স্কুলের দশম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর ঠিকানা পায় নিউজবাংলা। গ্রামের ভেতরেই তাদের বাড়ি গিয়ে কথা বলেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক। এই শিক্ষার্থীরা জানায়, সেদিন হিজাবের কারণে বেত্রাঘাতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। শাস্তি দেয়া হয়েছিল স্কুলড্রেস ঠিকঠাক না পরার কারণে।

আল মোক্তাদির নামে এক শিক্ষার্থী নিউজবাংলাকে বলে, ‘আমি শুরু থেকে ছিলাম, জাতীয় সংগীতের সময় স্কুলের ড্রেস না পরা কিছু ছেলেমেয়ে ছিল, তাদের মারছিল। বদিউল স্যার আগে ছেলেদের মারে। এক সপ্তাহ আগে বদিউল স্যার স্কুলড্রেস পরে আসতে হবে বলছিল। মেয়েদেরকেও তা বলা হইছে।

‘কিছু ছেলেমেয়ে ওইভাবে আসেনি বলে শাসন করছে। সারিবদ্ধ করে দাঁড় করায় তাদের মারছে। বদিউল স্যার ছাত্রদের মারছে, তারপর ম্যাডাম (আমোদিনী পাল) মেয়েদের মারছে। তবে জোরে মারে নাই, একটু মারছে। হালকা, খালি শাসন করার জন্য আরকি।’

নওগাঁর স্কুলে ‘হিজাব বিতর্কের’ পেছনে কী?

হিজাবের কারণে কাউকে মারা হয়নি জানিয়ে মোক্তাদির বলে, ‘স্কুলড্রেস তারা ঠিকমতো পরে আসে নাই। আর যারা মার খাইছে তাদের সবার মাথায় তো হিজাব ছিল না। হিজাবের জন্য তো মারে নাই। হিজাব নাই এমন মেয়েদেরও তো মারছে। ছেলেদেরও মারা হইছে।’

ওই দিন স্কুলড্রেসে না যাওয়ায় আমোদিনী পালের বেত্রাঘাত খেয়েছে প্রমি রাণী পাল নামে এক শিক্ষার্থী।

প্রমি নিউজবাংলাকে বলে, ‘আমরা কয়েকজন আনড্রেস (স্কুল ড্রেস না পরা) ছিলাম। তাই আমোদিনি ম্যাডাম মেরেছিল। কঞ্চি দিয়ে একটু মারছে। আমি সেদিন এমনিই স্কুলড্রেস পরে যাইনি।’

হিজাবের কারণে শাস্তির অভিযোগে বিস্মিত প্রমি নিউজবাংলাকে বলে, ‘এটা কীভাবে আসল আমি তো জানি না। আমি তো হিন্দু, হিজাব করি না, আমিও মার খাইছি। অন্য মেয়েরা যারা মার খেয়েছে তাদের কেউ কেউ মাথায় ওড়না দিয়ে ছিল, ওগুলাও তো হিজাব না। তারাও আনড্রেসে ছিল। ছেলেদের মেরেছিল বদিউল স্যার।’

ভাইরাল ভিডিওর সুমাইয়াকে চেনে জানিয়ে প্রমি বলে, ‘সে তো ওই দিন আনড্রেসে ছিল। হিজাব তো পরা ছিল না। ওড়না দেয় মাথায়, তাও মাঝে মাঝে। ম্যাডাম তো ওগুলো নিয়ে বলে নাই, আমিও তো মাথায় ওড়না দিয়ে ছিলাম। হিজাব নিয়ে কোনো কথা হয় নাই।’

সেদিন বেত্রাঘাতের মুখে পড়া আরেক শিক্ষার্থী সজিব হোসেন নিউজবাংলাকে বলে, ‘আমাদের তো অনেক দিন আগে থেকেই স্কুলড্রেস পরে আসতে বলছিল। আমিও সেদিন আনড্রেসে গেছি, অন্য অনেকেই তো আনড্রেসে যায়, তাই আমিও গেছি। পরে বদিউল স্যার প্রথমে আমাদের মারে। এরপর মেয়েদেরকে ম্যাডাম মারছে। জোরে না আস্তেই মারছে।’

দশম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী দীপা ও কাকলী রানী পাল নিউজবাংলাকে জানায়, ওই দিন ইউনিফর্ম ঠিকমতো পরে না আসায় আমোদিনী পাল ও বদিউল আলম তাদের অনেকে শাসন করেন। কিছু মারধরও করেন। তবে হিজাব নিয়ে টানাহেঁচড়ার মতো ঘটনা ঘটেনি।

নওগাঁর স্কুলে ‘হিজাব বিতর্কের’ পেছনে কী?
অভিযোগ তোলা দুই শিক্ষার্থীর বাড়িই তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে

মূল ইস্যু ‘প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বিরোধ’!

ওই বিদ্যালয়ে বুধবার দুই শিক্ষক বেত্রাঘাত করলেও শুধু আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে অভিযোগ কেন ভাইরাল হলো, সে ব্যাপারেও অনুসন্ধান করেছে নিউজবাংলা। এলাকার লোকজন এবং স্কুল শিক্ষার্থীদের প্রায় সবাই বর্তমান প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণের সঙ্গে আমোদিনী পালের বিরোধের বিষয়টি সামনে এনেছেন। ঘটনাচক্রে গত বুধবার স্কুলে ছিলেন না ধরণী কান্ত। তার দাবি, সেদিন স্কুলের কাজে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে গিয়েছিলেন।

প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বিরোধের বিষয়টি সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল স্বীকার করেছেন। তার অভিযোগ, বর্তমান প্রধান শিক্ষক নিয়োগসহ অনেকগুলো খাতে দুর্নীতি করেছেন। আগামী ১০ মে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। এরপর নিয়ম অনুযায়ী আমোদিনী পালের ওই পদে যাওয়ার কথা। তিনি প্রধান শিক্ষক হয়ে ধরণী কান্ত বর্মণের দুর্নীতির হিসাব যাতে না চাইতে পারেন সে কারণেই এমন ষড়যন্ত্র হয়ে থাকতে পারে।

বুধবারের ঘটনা সম্পর্কে আমোদিনী পাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেদিন কেবল স্কুলড্রেস ঠিকমতো পরে না আসার কারণে কিছু ছেলেমেয়েকে শাসন করা হয়েছিল। হিজাব নিয়ে কিছুই হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘পোশাকের ব্যাপারে বারবার বলার পরও আনড্রেসে আসে ছেলেমেয়েরা। আমাকে ওই বদিউল স্যারই বলছে যে, আপনি একটু মেয়েদের বলেন...

‘ওরা অন্য কালারের জামা পরা ছিল, ফ্যাশন পোশাক যাকে বলে। তাদের আমি হালকা শাসন করলাম, নামমাত্র শাসন আরকি। ওটাই হিজাব হিসেবে ছড়ায় গেছে। ওরা বলছে আমি নাকি হিজাব নিয়ে বলছি। এটা আমাকে ফাঁসানোর জন্য চক্রান্ত। পত্রপত্রিকায় আমার নাম আসছে, কিন্তু যেই স্যার শারীরিক শিক্ষা টিচার, তার নামই আসেনি। শাসন তো আমরা দুজন করছি, কিন্তু আমার নামটা আসল অন্যভাবে।’

নওগাঁর স্কুলে ‘হিজাব বিতর্কের’ পেছনে কী?
অভিযোগ তোলা দুই শিক্ষার্থীর বাড়িই তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে

মেয়েরা কী ধরনের পোশাকে ছিল- এমন প্রশ্নের উত্তরে আমোদিনী বলেন, ‘কালার পোশাকে ছিল, ওইগুলার তো নাম মনে নাই। স্কুলের ড্রেস না আরকি, কালার ড্রেস পরা ছিল। স্কুলের পোশাক পরাও অনেকে ছিল, শুধু কয়েকজন ছিল না।

‘আমার চাকরির বয়স ২২ বছর, আমি তো হিজাব নতুন দেখছি না। যারা হিজাব পরবে, পরবে। খালি স্কুলের ড্রেস হলেই হয়ে গেল। কখনও কোনো ক্লাসে হিজাব নিয়ে আমি বলি নাই। মাঠে সবার সামনেই তো সমাবেশ হয়েছে। নামেমাত্র যে শাসন, তাও প্রকাশ্যে সবার সামনেই হয়েছে। আমার শিক্ষকরা সবাই ছিল সেখানে। বদিউল স্যার কিছু ছাত্রকেও শাসন করেছিলেন। তিনিই বলছেন, আপনি মেয়েদের কিছু বলেন।’

চক্রান্তের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আমার প্রধান শিক্ষক (ধরণী কান্ত বর্মণ) সামনের মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত তার ডেট, তারপরে চলে যাবে। আইন অনুয়ায়ী ওই পদে আমি যাব। ওই পদ সে আমাকে দিতে চায় না। যার জন্য এই কৌশল করে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।

'আমি ওই পদে যদি যাই, ওই হেড মাস্টারের অনেক কুর্কীতি আছে, দুদক পর্যন্ত চলে গিয়েছিল, এই কিছুদিন আগেই। ১০টা নিয়োগ দিয়েছিল কোনো হিসাব দিতে পারেনি। এখন আমি যদি ওই পদে যাই, আমাকে তার হিসাব দিয়ে যেতে হবে তার। তাই আমাকে পদটা দেবে না। তার পছন্দমতো একজনকে পদটা দিয়ে পার পাবে। যার জন্য আমার এই অবস্থা করছে।’

বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক বদিউল আলমের সঙ্গেও কথা বলেছে নিউজবাংলা। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন বলা হয় ইউনিফর্মের কথা। ম্যাডাম দুয়েকজনকে একটু মেরেছে। ম্যাডাম কিন্তু এমনিতে কখনও মারে না। ছাত্রদেরও কেউ কেউ অন্য ড্রেস, গেঞ্জি এসব পরে আসছে। আমরা তো সব সময় বলি স্কুলড্রেস পরে আসতে।’

তিনি বলেন, ‘হঠাৎ বৃহস্পতিবার শুনি এসব ঘটনা। ফেসবুকে কী জানি ভাইরাল হয়েছে। আসলে এ রকম কিছু তো না। হিজাব নিয়ে কিছু হয়েছে বলে তো শুনিনি। ভুল বোঝাবুঝি কিছু হয়েছে হয়তো।’

এদিকে আমোদিনী পালের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওনার (আমোদিনী পাল) সঙ্গে তো আমার বিরোধ নাই, কারণ তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক, আমার পর তো উনিই হেড মাস্টার হবে। এটা তো আইন হিসেবেই পাবে। এটা নিয়ে তো আমার কিছু নাই।’

নওগাঁর স্কুলে ‘হিজাব বিতর্কের’ পেছনে কী?

বুধবার বিদ্যালয়ে ছিলেন না জানিয়ে ধরণী কান্ত বলেন, ‘আমি ওই দিন ছিলাম না, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ছিলাম। পরদিন আমি স্কুলে গিয়া ঘটনাটা জানতে পারি।

‘অনেক অভিভাবক এসেছিলেন। তাদের অভিযোগ ছিল মেয়েদের হিজাব পরার জন্য মারছে। এই রকম একটা বক্তব্য আরকি। সেদিন আমোদিনী পাল স্কুলে আসেননি। আগে থেকে ছুটিও নেননি। শুধু ফোন কল করে জানিয়েছেন অসুস্থ, তাই আসতে পারবেন না।’

এর পরের ঘটনাপ্রবাহ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাধ্যমিক স্যার আমাকে কল দিলেন, আমাকে তাড়াতাড়ি আসতে বললেন। তবে আমি যেতে পারিনি কারণ বিভিন্ন সাংবাদিক আর পুলিশ ছিলেন, তাদের নিয়ন্ত্রণ করে তারপর আমি স্যারের কাছে যাই। তিনি আমাকে নির্দেশ দিলেন তাকে (আমোদিনী পাল) শোকজ করে চিঠিটা স্যারকে দেখাতে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য আমি তাকে শোকজ করি। জবাব দেয়ার সময় সাত দিন।’

তিনি বলেন, ‘হিজাবের বিষয়টা আমি শিওর না, কারণ আমি ছিলাম না। মেয়েরা যখন পুলিশকে জানায় তখন আমি ছিলাম। মেয়েরা ওই রকম কথাই বলছে।

‘হিজাব হোক, স্কুলড্রেস হোক; যে কারণেই হোক, টিচার তো মারধর করতে পারে না।’

যা বলছে প্রশাসন

মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্কুলের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটির পর থেকেই পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্কুল ও সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পালের বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আর স্কুলে যে ঘটনাটি ঘটেছে সে বিষয়ে জেলা প্রশাসন, শিক্ষা বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন যৌথভাবে তদন্ত করছি।’

নওগাঁর স্কুলে ‘হিজাব বিতর্কের’ পেছনে কী?

মহাদেবপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘স্কুলে ইউনিফর্ম না পরার কারণে বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রীকে মারধর করা হয়েছে। তবে হিজাব পরার কারণে কাউকে শাসন করা হয়নি। তবুও আমরা ঘটনাটি আরও গভীরভাবে তদন্ত করছি।’

জেলা প্রশাসক খালিদ মেহদী হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের বেত দিয়ে মারা হয়েছে, এটা সত্য। তবে সেটা হিজাবের কারণে নয়, স্কুলড্রেস না পরে আসার কারণে মারা হয়েছে।

‘স্কুলে মুসলিম ছাত্র ও সনাতন ধর্মের ছাত্রীদেরও শাসন করা হয়েছে। ওই ঘটনার সময় বদিউল আলম নামে একজন মুসলমান শিক্ষকও ছিলেন।’

গুজব সম্পর্কে সচেতন থাকার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে একজন হিন্দু শিক্ষকের পক্ষে এমন সাহস কতটুকু হবে একটু ভাবা দরকার। ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি। পরে আরও বিস্তারিত জানাতে পারব।’

আরও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে অধ্যক্ষ বরখাস্ত
বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয়ের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে বিভ্রান্তি
বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয়ের পাশে নির্মূল কমিটি
বিজ্ঞানশিক্ষকের বিরুদ্ধে উসকানিদাতা বহিরাগত কারা
‘সত্য বলায় গ্রেপ্তার কেন?’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
A teenager killed his friend due to a dispute over online gambling

অনলাইন জুয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বন্ধু প্রাণ কাড়ল কিশোর

অনলাইন জুয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বন্ধু প্রাণ কাড়ল কিশোর ফাইল ছবি
গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বন্ধক রাখা ক্যামেরা বিক্রি করা নিয়ে দুই বন্ধুর দ্বন্দ্বের জেরে এক বন্ধু অপরজনকে হত্যা করে। অভিযুক্ত রিফাত পরিকল্পিতভাবে তার বন্ধু সম্রাটকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ৭/৮টি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে পান করায়, যা খেয়ে খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ে সম্রাট। পরে ঘুমন্ত সম্রাটকে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে হত্যা করা হয়।’

গাইবান্ধার সাঘাটায় ১৭ বছরী বয়সী কিশোর সম্রাট হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। অনলাইন জুয়া খেলতে ক্যামেরা বন্ধক নেয়ার জেরে তাকে খুন করে তারই বন্ধু রিফাত। পরিকল্পিতভাবে ঘুমের ট্যাবলেট মিশ্রিত কোমলপানীয় পান করে অজ্ঞান হয়ে গেলে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে হত্যা করা হয় সম্রাটকে।

শুক্রবার রাত ১টার দিকে উপজেলার পশ্চিতবাড়ি গ্রামের এক পুলিশ সদস্যের বাড়ির পেছনের সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে সাঘাটা থানা পুলিশ। এর আগে গত ১৭ এপ্রিল ওই বন্ধুর বাড়িতে ক্যামেরা আনতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সম্রাট।

সম্রাট উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের আফজাল হোসেনের ছেলে। অন্যদিকে অভিযুক্ত ১৭ বছরের রিফাত সাঘাটা উপজেলার পশ্চিম বাটি গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, সম্রাট ও রিফাত একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা দুজনে একই বিদ্যালয়ের একই ক্লাসের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি অনলাইন জুয়া খেলে টাকা খোয়ায় সম্রাট। জুয়ায় হেরে সে তার ক্যামেরাটি দশ হাজার টাকার বিনিময়ে বন্ধু রিফাতের কাছে বন্ধক রাখে। কয়েকদিন পর রিফাতের কাছে ক্যামেরা ফেরত নিতে যায় সে। সেখানে গিয়ে সম্রাট জানতে পারে, রিফাতও জুয়ায় হেরে বন্ধক নেয়া ক্যামেরা বগুড়ায় কারও কাছে ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। পরে এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।

পরবর্তীতে গত ১৭ এপ্রিল পরিকল্পিতভাবে সম্রাটকে ক্যামেরা নিতে নিজ বাড়িতে ডাকেন রিফাত। ওইদিন বিকেলেই সম্রাট বন্ধু রিফাতের বাড়িতে ক্যামেরা নিতে গিয়ে সেদিন থেকেই নিখোঁজ হয়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সন্তানকে না পেয়ে পরের দিন নিখোঁজ সন্তানের সন্ধান চেয়ে সাঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে সম্রাটের পরিবার। রিফাতের ডাকে সম্রাট বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়।

জিডির পর শুক্রবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সম্রাটকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে সাঘাটা পুলিশ। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বন্ধু সম্রাটকে খুন করে সেপটিক ট্যাংকে গুম করে রাখার কথা স্বীকার করে সে।

পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত ১টার দিকে পশ্চিতবাড়ি গ্রামের এক পুলিশ সদস্যের বসতঘরের পেছনের সেপটিক ট্যাংক থেকে সম্রাটের মরদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বন্ধক রাখা ক্যামেরা বিক্রি করা নিয়ে দুই বন্ধুর দ্বন্দ্বের জেরে এক বন্ধু অপরজনকে হত্যা করে। অভিযুক্ত রিফাত পরিকল্পিতভাবে তার বন্ধু সম্রাটকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ৭/৮টি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে পান করায়, যা খেয়ে খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ে সম্রাট। পরে ঘুমন্ত সম্রাটকে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে হত্যা করা হয়।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্ত রিফাতকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। সম্রাটের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।’

আরও পড়ুন:
টাকা চেয়ে না পেয়ে বাবার প্রাণ নিল ছেলে
মেলায় জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগে ইউপি সদস্যের নামে মামলা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Local government elections have no political flavor EC Alamgir

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক ফ্লেভার নেই: ইসি আলমগীর

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক ফ্লেভার নেই: ইসি আলমগীর শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হলরুমে হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলার প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। ছবি: নিউজবাংলা
নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনে কার কোন আত্মীয় অংশ নিল বা কে অংশ নিল না- সেটা আমাদের বিষয় নয়; সেটা রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক বিষয়।’

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক নির্বাচন নয়। কারণ বর্তমান সরকার দলীয় রাজনৈতিক দল স্থানীয় সরাকর নির্বাচনকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। কাজেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক কোনো ফ্লেভার নেই।

তিনি বলেছেন, তারপরও যাতে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে যে কেউ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন, সেটার অপশনও রাখা হয়েছে, অর্থাৎ ভোট ফ্লেক্সিবল করা হয়েছে। ইচ্ছে করলে স্বাধীনভাবে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন; রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। আবার চাইলে অনেকে রাজনৈতিক পরিচয়েও নির্বাচন করতে পারবেন, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।

শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হলরুমে হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলার প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির উদ্দেশে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের অনেক সমর্থক-প্রার্থী আনঅফিশিয়ালি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সুতরাং এটা বলার সুযোগ নেই যে, নির্বাচন অংশগ্রহণ মুলক নির্বাচন হচ্ছে না।’

ইসি আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন অবশ্যই শান্তিপূর্ণ হতে হবে এবং কোনোমতেই যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি না হয়। অন্যায়ভাবে কেউ যাতে কোনো প্রার্থীকে প্রচারে ও ভোটদানে বাধা দিতে না পারে। সবাই যাতে সমানভাবে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা করতে পারে এবং ভোটরা যাতে স্বাধীনভাবে তার ভোট দিতে পারে। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে।’

নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কার কোন আত্মীয় অংশ নিল বা কে অংশ নিল না- সেটা আমাদের বিষয় নয়; সেটা রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক বিষয়, কিন্তু আমাদের নির্বাচনি আইনে যদি কোনো ব্যক্তি ওই এলাকার ভোটার হয় এবং তার বিরুদ্ধে যদি কোনো আইনি ঝামেলা না থাকে, তাহলে তিনি নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন। আমাদের আইনে আত্মীয়তার সঙ্গে কোনো সর্ম্পক নেই।’

এ সময় জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. তরিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সুজন সরকার ও জেলা নির্বাচন অফিসার আমিনুর রহমান মিঞাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
দল থেকে শোকজ পেয়েছেন সিংড়ার রুবেল
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে বৈধ প্রার্থী ১৭৮৬ জন
নাটোরে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী ও ভাইকে অপহরণ
উপজেলা নির্বাচনে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ২০ এপ্রিলের পর
পরবর্তী কমিশনের জন্য সুপারিশ রেখে যাবে ইসি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Two die of heatstroke in Chuadanga Record temperature 42 3

যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬, হিটস্ট্রোকে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় মৃত্যু ২

যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬, হিটস্ট্রোকে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় মৃত্যু ২ তীব্র তাপপ্রবাহে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। ছবি: নিউজবাংলা
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘কয়েকদিন থেকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। এদিন এখানে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অঞ্চলে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।’

তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। এর মধ্যে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। শনিবার যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজধানী ঢাকায় শনিবার চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শনিবার হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় টানা চার দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে জেলায় এটি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

জেলার দামুড়হুদায় গ্রামে মাঠে কাজ করার সময় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমানবলেন, ‘কয়েকদিন থেকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। এদিন এখানে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অঞ্চলে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।’

দিন ও রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় অতিষ্ঠ এই অঞ্চলের জনজীবন। দিনের বেলায় একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। শহর-গ্রামের রাস্তাঘাট ফাঁকা।

শ্রমজীবী মানুষগুলো বেশি বিপাকে পড়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে তারা কাজে বেরুতে পারছে না। ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু সূর্যের প্রখর তাপের কারণে শ্রমিকরা মাঠে যেতে সাহস পাচ্ছে না।

দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডে ভ্যানচালক করিম আলী বলেন, ‘জীবনে আমি এত তাপ দেখিনি। ছেমায় গিয়িও শান্তি নেই। যে তাপ পড়চি তাতে মানুষ রাস্তায় বের হচ্চি না। আমাদের ভাড়াও কমি গিচে।’

এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে বলায় জনসাধারণকে সচেতন করতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে পথচারী ও এলাকাবাসীকে সতর্ক করছে জেলা প্রশাসন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

পাবনা প্রতিনিধি জানান, অসনীয় গরমে অতিষ্ঠ পাবনার জনজীবন। শনিবার জেলার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা পাবনা জেলায় চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ।

শনিবার দুপুরে পাবনা শহরের রূপকথা রোডে চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় এক ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত সুকুমার দাস পাবনার শহরের শালগাড়িয়া জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, কয়েকদিন ধরেই পাবনায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস । এর আগে চলতি বছরে জেলায় এতোটা বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়নি। ঈশ্বরদীসহ আশপাশের এলাকাজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে তীব্র গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। তীব্র এই তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন শ্রমজীবী মানুষ। জীবন-জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে কাজ করতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের। বাইরে বের হওয়ার সময় অনেকেই ছাতা নিয়ে বের হচ্ছেন।

আরও পড়ুন:
‘ঘরে টিকতে পারছি না, বাইরেও দাঁড়াতে পারছি না’
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বেশি গরম কর্কটক্রান্তির প্রভাবে
চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড ৪২.৬ ডিগ্রিতে তাপমাত্রা
দাবদাহে পুড়ছে ইউরোপ, মরছে মানুষ
ভারতে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে পাখিরা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Called from the house to kill expatriates and demand trial

ঘর থেকে ডেকে নিয়ে প্রবাসীকে হত্যার বিচার দাবি  

ঘর থেকে ডেকে নিয়ে প্রবাসীকে হত্যার বিচার দাবি   মুন্সীগঞ্জের চরপানিয়া এলাকায় শনিবার ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: নিউজবাংলা
চরপানিয়া এলাকার একটি ক্ষেত থেকে গত ১০ মার্চ প্রবাসী মুজিবুরের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যায় অভিযুক্ত জহির হোসেন। 

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের বালুচরে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে প্রবাসীকে হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেছেন স্বজন ও স্থানীয়রা।

উপজেলার চরপানিয়া এলাকায় শনিবার বেলা ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

এতে অংশ নেন নিহতের স্ত্রী-সন্তানসহ শতাধিক মানুষ।

পরিবারের এক সদস্যের ভাষ্য, পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় সৌদি আরব প্রবাসী মুজিবুরকে (৪৫)। এ ঘটনায় মামলা করা হলেও ঘটনায় জড়িত খাসকান্দি এলাকার জহির হোসেনকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। জহির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ফাঁসি দিতে হবে।

চরপানিয়া এলাকার একটি ক্ষেত থেকে গত ১০ মার্চ প্রবাসী মুজিবুরের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যায় অভিযুক্ত জহির হোসেন।

আরও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে নদীতে নিখোঁজ ঢাকা ব্যাংক কর্মকর্তাসহ দুজনের মরদেহ উদ্ধার
মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত পথচারী
‘ছাত্রদল শিবির হিজবুতের কর্মকাণ্ডেরও প্রতিবাদ জানিয়েছি আমরা’
শ্রীনগরে আগুনে পুড়ল পাঁচ ঘর
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালাবেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Father and son killed by car in Sonargaon

সোনারগাঁয়ে গাড়ির চাপায় বাবা-ছেলে নিহত

সোনারগাঁয়ে গাড়ির চাপায় বাবা-ছেলে নিহত কাঁচপুর হাইওয়ে থানা। ছবি: নিউজবাংলা
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল হক জানান, শুক্রবার রাতে স্বামী-সন্তানসহ নারায়ণগঞ্জে ‘বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী’ মন্দিরে পূজার করতে যান তারা। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্বামী স্ত্রী ও সন্তান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কেওঢালা এলাকা পার হচ্ছিলেন। এ সময় একটি গাড়ি তাদের চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গাড়ির চাপায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন একজন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কেওডালা এলাকায় শনিবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রাণ হারানো দুজন হলেন ঝালকাঠি সদর উপজেলার খেজুরা এলাকার সুরেশ ডাকুয়া (৩৫) ও তার ছেলে লোকেশ ডাকুয়া (৯)। এ ঘটনায় আহত লোকেশ ডাকুয়ার মা নিপু রায় (৩০) বলে জানিয়েছেন কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল হক।

তিনি জানান, শুক্রবার রাতে স্বামী-সন্তানসহ নারায়ণগঞ্জে ‘বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী’ মন্দিরে পূজা করতে যান তারা। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্বামী স্ত্রী ও সন্তান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কেওঢালা এলাকা পার হচ্ছিলেন। এ সময় একটি গাড়ি তাদের চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, আহত অবস্থায় তিনজনকে স্থানীয়রা একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে লোকেশকে চিকিৎসক মৃত বলে জানান। সুরেশ ও নিপু রায়কে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে সুরেশ ডাকুয়ার মৃত্যু হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল হক বলেন, ‘নিপু রায় ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি শঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে। নিহত দুইজনের মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

এ ঘটনায় মামলাসহ গাড়ি ও চালককে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন:
ঝালকাঠিতে দুর্ঘটনা: স্বামী হারিয়ে দিশাহারা হেনারা
মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল মামা-ভাগ্নের 
গরু চুরির আসামির বিরুদ্ধে বাদীকে হত্যার অভিযোগ
ঝালকাঠিতে সড়ক দুর্ঘটনা: নিহত প্রত্যেকের পরিবার পাবে ৫ লাখ টাকা
সড়কে প্রাণ গেল জনপ্রিয় শিল্পী পাগল হাসানের

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Symbolic march in Naogaon to commemorate the refugees of 1971

একাত্তরের শরণার্থীদের স্মরণে নওগাঁয় প্রতীকী পদযাত্রা

একাত্তরের শরণার্থীদের স্মরণে নওগাঁয় প্রতীকী পদযাত্রা ঐতিহাসিক ২০ এপ্রিলের এ দিনে ‘রোড টু বালুরঘাট’ স্মরণ করল নওগাঁবাসী। ছবি: নিউজবাংলা
একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি এম আব্দুল বারী বলেন, ‘লাখ লাখ মানুষ নওগাঁ শহরের ওপর দিয়ে দেশ ছেড়েছিল দেশকে মুক্ত করার জন্য। চলার পথে সেই সময় পাকহানাদার ও দোসরদের আক্রমণে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। নওগাঁর মূল ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী এ জেলার সব তরুণ প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের জানানোর লক্ষ্যেই আয়োজনটি করা হয়েছে।’

নওগাঁয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁর উদ্যোগে ১৯৭১ সালের অসহায় শরণার্থীদের দুর্ভোগ স্মরণে ‘রোড টু বালুরঘাট’ প্রতীকী পদযাত্রায় ফুটে উঠেছে নওগাঁয় রোড ধরে ভারতে পাড়ি দেয়া শরণার্থীদের দুর্দশার চিত্র।

ঐতিহাসিক ২০ এপ্রিলের এ দিনে ‘রোড টু বালুরঘাট’ স্মরণ করল নওগাঁবাসী। প্রায় ৬০ মিনিটে ৩ কিলোমিটার পদযাত্রায় যুদ্ধকালীন নওগাঁ রোডের শরণার্থীদের যুদ্ধ বিভীষিকা ও অবর্ণনীয় দুর্দশা তুলে ধরা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পর শনিবার বেলা ১১টার দিকে পাঁচ শতাধিক মানুষ নওগাঁ রোডে এ প্রতীকী পদযাত্রায় অংশ নেন। শহরের তাজের মোড় শহিদ মিনার পাদদেশ থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল মুক্ত মঞ্চ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

একুশে পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি এম আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে শরণার্থীদের প্রতীকী পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন উপদেষ্টা মইনুল হক দুলদুল, সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যক্ষ বিন আলী পিন্টু, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, সাইমা ফেরদৌসী, নাইস পারভীন, বিষ্ণু কুমার দেবনাথ, গুলশানারাসহ অনেকে।

এ সময় বক্তারা জানান, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বর্বরোচিত অত্যাচার-নিপীড়ন ও গণহত্যা থেকে বাঁচতে যুদ্ধের শুরু থেকে বিশেষ করে ২০ এপ্রিল এই দিনে পায়ে হেঁটে নওগাঁর সড়ক পথে হাজার হাজার মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতের বালুরঘাটে আশ্রয় নেন। চলার পথে সেই সময় পাকহানাদার ও দোসরদের আক্রমণে অনেকের মৃত্যু হয়। সে সব শরণার্থীদের ক্লান্তি ও দুর্ভোগ স্মরণে একুশে পরিষদ নওগাঁ ‘রোড টু বালুরঘাট’ প্রতীকী পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।

একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি এম আব্দুল বারী বলেন, ‘আমরা অনেকেই একাত্তরের ইতিহাস ভুলে গেছি। ৫৩ বছরের আগে কী ঘটেছিল। লাখ লাখ মানুষ নওগাঁ শহরের ওপর দিয়ে দেশ ছেড়েছিল দেশকে মুক্ত করার জন্য। চলার পথে সে সময় পাকহানাদার ও দোসরদের আক্রমণে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। নওগাঁর মূল ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী এ জেলার সব তরুণ প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের জানানোর লক্ষ্যেই আয়োজনটি করা হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
মুখ সেলাই করে প্রতিবাদ নাউরুতে আটকা দুই বাংলাদেশির
আগামী বছরের মার্চে রাজাকারের তালিকা প্রকাশ: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী
একাত্তরের নৃশংসতার জন্য পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়া উচিত: হিনাকে মোমেন
‘শিশুদের আবদারে দেশ চলবে না’
নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা নিবন্ধনের সুযোগ নেই: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

মন্তব্য

বাংলাদেশ
16 people were arrested for attacking four people including the police in Tangail

টাঙ্গাইলে পুলিশসহ চারজনের ওপর হামলা, গ্রেপ্তার ১৬

টাঙ্গাইলে পুলিশসহ চারজনের ওপর হামলা, গ্রেপ্তার ১৬ টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানা ভবন। ছবি: নিউজবাংলা
গোপালপুর থানার ওসি ইমদাদুল হক তৈয়ব বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। হামলার অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’ 

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে জোর করে ধান কাটা বন্ধে উদ্যোগ নেয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলায় পুলিশের এক উপপরিদর্শক তথা এসআইসহ চারজন আহত হয়েছেন।

উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের পলশিয়া গ্রামে শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে শনিবার আদালতে পাঠায় পুলিশ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘পলশিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের কাজিম মন্ডল একদল সন্ত্রাসী নিয়ে একই গ্রামের সানু মিয়ার ডুব বিলের দুই বিঘা পাকা বোরো ধান কাটা শুরু করেন। সানু মিয়া ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে গোপালপুর থানার এসআই সাইফুল ইসলাম একজন কনস্টেবল নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। পুলিশ দেখে সস্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়।

‘তারা রামদা, লাঠি ও লোহার রড নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলামের মাথা ফেটে যায়। কনস্টেবল শফিকুল ইসলামসহ সানু মিয়ার দুই আত্মীয় আহত হয়। আহতরা সবাই গোপালপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’

গোপালপুর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলামের মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই দেয়া হয়েছে।’

গোপালপুর থানার ওসি ইমদাদুল হক তৈয়ব বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। হামলার অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
অস্ত্রাগার নিয়ে ৩ বহিরাগতের ফেসবুক লাইভ, এসপি রানা বাধ্যতামূলক অবসরে
ছেলের বিরুদ্ধে মাকে খুন করার অভিযোগ
নওগাঁয় ঈদসামগ্রী পেলেন শতাধিক গ্রাম পুলিশ
ঈদে মহাসড়কে তিন স্তরের ব্যবস্থা: অতিরিক্ত আইজিপি
বান্দরবানের ঘটনার প্রভাব পড়বে না পর্যটনে: টুরিস্ট পুলিশ

মন্তব্য

p
উপরে