দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ লবণাক্ত বনভূমি সুন্দরবন। এই বন থেকে প্রায় ২০ বছর ধরে মাছ, মধু ও কাঁকড়া আহরণ করছেন খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার কালাবগী গ্রামের আমজাদ হোসেন।
আমজাদের আক্ষেপ, বনের যেসব জায়গায় মাছ বা কাঁকড়া বেশি পাওয়া যায়, সেগুলোয় জেলেদের ঢোকা নিষিদ্ধ। আর যেসব খাল বা নদীতে ঢোকার অনুমতি আছে, সেগুলোয় মাছ কম। অনেক জেলে সেখানে একত্রে মাছ-কাঁকড়া আহরণ করায় ভাগে কম পড়ে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সাত দিন বনে যাই। আবার সাত দিন বাড়িতে থাকি। এ হিসাবে এক মাসে মাত্র ১৫ দিন সুন্দরবন থেকে রোজগার করতে পারি। পূর্ণিমা বা অমাবস্যার সময় ছাড়া বনে মাছ বা কাঁকড়া পাওয়া যায় না। এক মাসে একটি পূর্ণিমা ও একটি অমাবস্যা থাকে। সেই সময়ে আমরা এক সপ্তাহ করে বনে থাকি।’
জেলেরা বন বিভাগ থেকে লিখিত অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া শিকারে ঢোকেন। একেক নৌকায় সাত দিনে যে মাছ বা কাঁকড়া পাওয়া যায়, তা ৬ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করা সম্ভব হয় বলে জানান তারা। প্রতিবারের শিকার অভিযানে প্রায় ২ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যেতে হয়। এ ছাড়া বন বিভাগের অনুমতি নিতেও সরকারকে রাজস্ব দিতে হয়।
জেলে আমজাদ বলেন, ‘২০ বছর ধরে এভাবে বনের ওপর নির্ভর করে উপার্জন করে আসছি। নদীর চরে ছোট একটু সরকারি জায়গায় বনের গাছ ও গোলপাতা দিয়ে ঘর বেঁধে থাকি। কোনো বাড়তি টাকা সঞ্চয় করতে পারিনি। যখন বনে মাছ বা কাঁকড়া কম পাই, তখন অর্ধাহারে-অনাহারে আমাদের পরিবারের দিন কাটে।’
জীবিকার জন্য সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল খুলনার দাকোপ উপজেলার নলিয়ান থেকে কালাবগী পর্যন্ত হাজার হাজার বনজীবী।
সম্প্রতি ওই এলাকার অন্তত ৩০ জন বনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। তারা জানিয়েছেন, আগের চেয়ে সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়ার পরিমাণ কমেছে অনেক।
এ ছাড়া বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় মাছ-কাঁকড়া আহরণ বন্ধ থাকে। সে সময় বনজীবীদের জীবিকার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা থাকে না। সঙ্গে রয়েছে বাঘ-কুমিরের আক্রমণে প্রাণ হারানোর সার্বক্ষণিক ভয়।
সুন্দরবন থেকে প্রায় ১২ বছর ধরে মধু সংগ্রহ করছেন মৌয়াল রেজাউল গাজী। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতি বছরে তিন মাস করে বনে মধু আনতে যাওয়ার অনুমতি পাই। বাকি সময় বনের মাছ বা কাঁকড়া আহরণ করি।’
তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করার সময় বাঘের আক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। কারণ মৌচাক খুঁজতে বনের মালের (ভূমিতে) মধ্যে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা ঘুরে বেড়াই, চোখ থাকে গাছের ওপরের দিকে। নিচ থেকে বাঘের আক্রমণ হলে কিছু করার থাকে না।’
এমন ঝুঁকির সঙ্গে রয়েছে দাদনদারদের চাপ। তাই বাধ্য হয়েই ঝুঁকির মধ্যে বনে মৌচাক খুঁজতে যেতে হয় বলে জানান রেজাউল গাজী।
বলেন, ‘আমরা দলে ৫ থেকে ১০ জন থাকি। ৭ দিনে যে মধু পাই, তাতে একেক জনের ভাগে ৬ থেকে ৭ হাজার করে টাকা থাকে।’
নিউজবাংলা কথা বলেছে কয়েকজন বাওয়ালির সঙ্গেও। বাওয়ালি নজরুল সানা বলেন, 'আমি কর্মচারী হিসেবে গোলপাতা কাটতে বনে এসেছি। এর জন্য আমাকে ১৫ হাজার টাকা মাইনে দেবেন। প্রায় দেড় মাস আমরা বনে থাকব। আমাদের নৌকায় মোট ২ জন বাওয়ালি আছেন।’
এখন আর গোলপাতার চাহিদা তেমন নেই। তাই আয়ও নেই।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহাফুজুর রহমান মুকুল বলেন, ‘বনে এখন সম্পদ কম, আবার বনজীবীর সংখ্যাও বেড়েছে। তাই বন থেকে পর্যাপ্ত উপার্জন করতে পারেন না বনজীবীরা। এ জন্য সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। বনজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে বন সুরক্ষার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান করলে সুন্দরবন সুরক্ষিত থাকত।’
তিনি বলেন, ‘বন বিভাগ একটি গবেষণা করতে পারে যে বনের কতটুকু সম্পদ আহরণযোগ্য। সেই অনুযায়ী বনজীবীর সংখ্যা নির্ধারণ করে বনে প্রবেশ করতে দিলে সমস্যা হতো না। তবে বন বিভাগের কাছে যে কেউ গিয়ে অনুমতি চাইলেই বনে প্রবেশের অনুমতি পেয়ে যায়। এতে বনজীবীরাও লাভবান হন না, অন্যদিকে সুন্দরবনেরও ক্ষতি হয়।’
কমছে না বিষ দিয়ে মাছ শিকার
সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের কালাবগি স্টেশন অফিসার মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনে এখন কাঠ পাচার ও হরিণ শিকার প্রায় শূন্যের কোঠায় নামানো সম্ভব হয়েছে। তবে বিষ দিয়ে মাছ শিকার রোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল স্টেশন অফিসার মো. আজাদ কবীর বলেন, সুন্দরবনে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা জরুরি। তা না হলে বিষ দিয়ে মাছ শিকার রোধ করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, সুন্দরবন মাছ প্রজননের একটি নিরাপদ স্থান হওয়া উচিত। কোনো একটি খালে অসাধু জেলেরা বিষ দিলে পানির অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। ফলে মাছের পোনা থেকে শুরু করে বড় মাছ পর্যন্ত সবই মারা যায়।
সুন্দরবনে প্রায় ১০ বছর ধরে চরপাটা জাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন আনিচুর রহমান। তিনি বলেন, ‘কোনো একটি খালে যদি কেউ বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে, তবে পরবর্তী ১৫ দিন ওই খালে চরপাটার জালে কোনো মাছ পাওয়া যায় না। খালে মাছই থাকে না।’
সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে বন বিভাগের কাছে আটক হয়েছেন এমন কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলেছেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক। তারা জানান, বনে স্বাভাবিকভাবে আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। খালে বিষ দিলে অনেক মাছ একসঙ্গে পাওয়া যায়। যে কারণে জেলেরা বিষ প্রয়োগ করেন।
খুলনা অঞ্চলের নদ-নদী ও পরিবেশ নিয়ে প্রায় ২৫ বছর ধরে গবেষণা করছেন গৌরাঙ্গ নন্দী। তিনি বলেন, ‘জেলেরা হতদরিদ্র মানুষ। তারা বাড়তি লাভের আশায় বনের নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরে। এটা তারা প্রয়োজনের তাগিদে করে। তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান করা গেলে বনের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে। তখনই বন নিরাপদ হবে।’
বনের সম্পদ আহরণে ক্ষতি হয় বাস্তুতন্ত্রের
সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলছেন, ‘নিয়মতান্ত্রিকভাবে বন থেকে সম্পদ আহরণ না করা হলে স্বাভাবিক ইকোসিস্টেমের (বাস্তুতন্ত্র) ক্ষতি হয়।’
তিনি বলেন, ‘সুন্দরবন থেকে একেবারেই কোনো গাছ কাটতে দেওয়া উচিত নয়। বর্তমানে অন্যান্য গাছ কাটা বন্ধ হলেও গোলপাতা কাটা বন্ধ হয়নি। বনের গাছ থেকে ফল পড়বে সেই ফল জোয়ার-ভাটায় অন্য স্থানে গিয়ে নতুন গাছ জন্মাবে। মরে যাওয়া গাছ মাটিতে মিশে জৈব সার সৃষ্টি করবে। এটা বনের স্বাভাবিক ইকোসিস্টেম।’
তিনি বলেন, ‘মাছ আহরণে নির্দিষ্ট এলাকা ঠিক করে রাখা উচিত, যেখানে মাছেরা প্রজনন ঘটাবে। সেখানে জেলেদের প্রবেশ করতে দেওয়া উচিত নয়। আর বিষ দিয়ে মাছ শিকারের ঘটনা ঘটলে তো একেবারে খারাপ অবস্থা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজস্ব নিয়ে বনজীবীদের সম্পদ আহরণের অনুমতি দেওয়া হয়। সুন্দরবন থেকে রাজস্ব আসছে এই চিন্তা মাথা থেকে ফেলে দিতে হবে। বিরক্ত না করে বনটাকে বনের মতো থাকতে দিতে হবে। তা হলে সেখানের ইকোসিস্টেমের কোনো ক্ষতি হবে না।’
এ প্রসঙ্গে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মহসিন হোসেন বলেন, বর্তমানে সুন্দরবনের ৫২ শতাংশ স্থান অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে কোনো জেলে, বাওয়ালি বা বনজীবী প্রবেশ করতে পারে না। ভবিষ্যতে আরও এলাকায় অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হবে।
যা বলছে বন বিভাগ
বন বিভাগের তথ্য মতে, সুন্দরবন থেকে সরাসরি সম্পদ আহরণ করে জীবিকা উপার্জন করে ২ থেকে ৩ লাখ মানুষ। আর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে বনের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৩০ লাখ মানুষ। তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘বনজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থানসহ বনের সুরক্ষায় বেশ আগে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছিল। তবে সেটি থেকে বনজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থান বাদ রেখে পাস হয়েছে।’
‘ফলে যেটি পাস হয়েছে, সেই প্রকল্পের আওতায় বনে বিদ্যমান অবকাঠামো, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, উপযুক্ত কর্মপরিবেশ তৈরি ও বনে টহল শক্তিশালী করা হবে।
‘একই সঙ্গে সম্পদের পরিমাণ, বন্যপ্রাণীর সংখ্যা, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল, রোগ-বালাই, রক্ষিত বনাঞ্চলের বৈশিষ্ট্য ও জলজ সম্পদ পরিমাপ করা হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মাটি ও পানির লবণাক্ততা পরীক্ষা সংক্রান্ত জরিপকাজ সম্পাদনের মাধ্যমে পরিবীক্ষণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও মরে যাওয়া নদী খনন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের টাকা ছাড় হতে শুরু করেছে। সে অনুযায়ী কাজ চলছে।’
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মহসিন হোসেন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছি বনজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার। নতুন করে আবারও প্রকল্প করে আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব।’
আরও পড়ুন:ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮-এর তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে মাত্র ২৯ শতাংশ নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে। অর্থাৎ প্রায় ৭১ শতাংশ নারী এখনও স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে না। পিরিয়ডের সময় অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করার ফলে সার্ভিক্যাল ইনফেকশন হতে পারে। এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহারের ফলে পরবর্তীতে বন্ধ্যাত্ব এমনকি ক্যান্সার-এরও ঝুঁকি থাকে। এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা।
এ লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই)-এর জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন’ দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশেষ ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। ‘এক্সিলেন্স বাংলাদেশ’-এর সাথে যৌথ উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে। ক্যাম্পেইন-এর অংশ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ওয়ার্কশপ ও সেশন। এর বাইরে কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের নারীদের জন্য সহজে ও সুলভ মূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন সংগ্রহরে সুবধর্িাথরে জন্য ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করছে ফ্রেশ অনন্যা।
ফ্রেশ অনন্যা-ই বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র স্যানিটারি ন্যাপকিন, যাতে রয়েছে ডাবল লেয়ারড অ্যাডভান্সড অ্যাবজর্পশন টেকনোলজি। সুবিধা ও উপযোগিতার কথা বিবেচনায় রেখে, ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এ ব্যবহার করা হয়েছে এয়ারলেইড পেপার এবং এডিএল লেয়ার। যা নিশ্চিত করে আরও দ্রুত শোষণ এবং সুরক্ষা। তাই পিরিয়ডের দিনগুলো কাটে আরও বেশি স্বস্তিতে।
ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের মাঝে পিরিয়ডকালীন পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে দেশব্যাপী স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম, ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন ইত্যাদি।
৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:
মন্তব্য