বিশ্বের ‘সবচেয়ে কমবয়সী প্রফেসর’ সুবর্ণ আইজ্যাক বারী ঢাকায় আসছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আগামী ১৫ মার্চ তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে লেকচার দেবেন এমন খবরও প্রচারিত হচ্ছে।
এর মধ্যেই নয় বছরের সুবর্ণ আসলেই প্রফেসর কি না সেটি নিয়েও চলছে বিতর্ক।
তবে ইন্টারনেটে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে সুবর্ণ আইজ্যাক বারীর অধ্যাপনার কোনো প্রমাণ মেলেনি। এমনকি তিনি বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী প্রফেসর এমন দাবিরও কোনো সত্যতা মেলেনি।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী প্রফেসরের নাম আলিয়া সবুর। ২০১৮ সালে তিনি প্রায় ১৮ বছর বয়সে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে মনোনীত হন।
সুবর্ণ আইজ্যাক বারীর শিক্ষাজীবন নিয়ে তেমন কিছুই জানা যায়নি। বর্তমানে উইকিপিডিয়াতে তার কোনো পেইজ নেই। ভুল তথ্য ও ভুয়া খবর প্রচারের কারণে সুবর্ণকে নিয়ে আগের পেইজটি মুছে ফেলেছে উইকিপিডিয়া।
২০২০ সালের ২৫শে অক্টোবর একটি ওয়েবসাইটে সাড়ে ৮ বছর বয়সে বাংলাদেশি বালক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হলেন শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়।
ওই খবরের প্রথম লাইনে বলা হয়, সুবর্ণ আইজ্যাক বারী, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিস্ময়কর এক বালক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
এরপরে হার্ভার্ডের স্বীকৃতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য না দিয়ে সুবর্ণর জন্ম, বাল্যকাল ও নিউ ইয়র্কের মেয়রের স্বীকৃতির কথা বলা হয়েছে।
তবে সুবর্ণর আনভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে বা ওয়েবসাইটে বা ইউটিউব চ্যানেলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রফেসর হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
২০১৭ সালে হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে তাকে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে ভাষণ দিতে দেখা যায়। তবে সুবর্ণকে হার্ভার্ডের ক্লাসরুমে বা অফিসে কখনও দেখা যায়নি।
ফ্যাক্ট ওয়াচ নামে একটি ওয়েবসাইটের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সুবর্ণ কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন করেননি, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হননি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতাও অর্জন করতে পারেননি।
পাকিস্তানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলোতে একটি গুজব ছড়িয়েছে যে, দেশটি ও প্রতিবেশী ভারতে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আঘাত হানতে পারে বড় ধরনের ভূমিকম্প। এ গুজব আরও ডালপালা মেলে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সোলার সিস্টেম জিওমেট্রি সার্ভে (এসএসজিইওএস) নামের একটি সংস্থার টুইটার অ্যাকাউন্টে দেয়া পূর্বাভাসে।
এসএসজিইওএসের ৩০ জানুয়ারির এক টুইটে দক্ষিণ এশিয়ায় ভূমিকম্পের আভাস দেয়া হয়। এতে বেগুনি দুটি রেখা টানা একটি মানচিত্রের ছবি সংযুক্ত করে লেখা হয়, বেগুনি রেখার মধ্যকার বা কাছাকাছি অঞ্চলে ১ থেকে ৬ দিনের মধ্যে শক্তিশালী ভূকম্পনজনিত ঘটনা ঘটতে পারে। বেগুনি রেখার বাইরের অঞ্চলও শঙ্কামুক্ত নয়।
ওই পূর্বাভাসের পর টুইটারে একই অ্যাকাউন্টে ২ ফেব্রুয়ারি আরেকটি ভিডিও পোস্ট করেন ডাচ ভূতত্ত্ববিদ ফ্র্যাংক হুগারবিটস। এতে তিনি ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ সম্ভাব্য কিছু এলাকার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে ভূকম্পনজনিত ঘটনা ঘটতে পারে।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পের আগে ‘সঠিক’ আভাস দেয়ায় অনলাইন ব্যাপক প্রশংসিত হন হুগারবিটস। সেই থেকে ভারত ও পাকিস্তানে সম্ভাব্য ভূমিকম্প নিয়ে ডাচ এ গবেষকের ভিডিও শেয়ার করতে থাকেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা।
এসএসজিইওএসের টুইটার অ্যাকাউন্টে দেয়া পূর্বাভাস সত্য হতে পারে কি না, তা যাচাইয়ের চেষ্টা করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
বিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমিকম্প আগে থেকে আঁচ করা অসম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের মতে, ‘ইউএসজিএসের কিংবা অন্য কোনো বিজ্ঞানী কখনও বড় ভূমিকম্প নিয়ে পূর্বাভাস দেননি।’
ইউএসজিএসের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, নির্দিষ্ট কয়েক বছরের মধ্যে কোনো এলাকায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকম্পের সম্ভাব্যতা নিয়ে হিসাব-নিকাশ করতে পারেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (ক্যালটেক) মতে, ঠিক কখন এবং কোথায় ভূমিকম্প হবে, সেটা আগে থেকে ধারণা করা সম্ভব নয়। ভূমিকম্প কতটা ব্যাপক হবে, তা নিয়েও পূর্বাভাস দেয়া যায় না।
দক্ষিণ এশিয়ায়, বিশেষত ভারত ও পাকিস্তানে ভূমিকম্প নিয়ে হুগারবিটসের ভিডিওর সমালোচনা করেছেন গবেষকরা। তাদের একজন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ অরেগনের ভূপদার্থবিদ্যার সহযোগী অধ্যাপক ডিয়েগো মেলগার এক টুইটে মজা করে লিখেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রে একে বলি ‘সর্ব রোগের মহৌষধ’। এটাকে ‘হাতুড়ে’ হিসেবেও আখ্যা দেয়া যেতে পারে।”
আরও পড়ুন:তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা দেখল নেপাল। এতে এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুজন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ২৪ বছর বয়সী বিমানবালা ওশিন আলে মাগারও। সম্প্রতি তার একটি টিকটক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগের।
তবে এ দাবি সম্পূর্ণ ভুয়া বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ভাইরাল হওয়া ওশিনের ভিডিওটি দুর্ঘটনা আগের নয়। সেটি গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বরের।
ওশিনের মোবাইলের স্ক্রিন রেকর্ডও এ তথ্য নিশ্চিত করে যে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দুর্ঘটনার আগের নয়।
রোববার সকালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ৬৮ যাত্রী ও চার ক্রু নিয়ে পোখারার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ইয়েতি এয়ারলাইনসের এটিআর ৭২ উড়োজাহাজটি পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং পুরনো বিমানবন্দরের মাঝামাঝি এলাকায় দুর্ঘটনায় পড়ে।
ওশিন পরিবার জানায়, ফ্লাইট থেকে ফিরে একটি উৎসবে অংশ নেয়ার কথা ছিল তার। দুবছর আগে ইয়েতি এয়ারলাইনসে যোগ দেয়ার পর কাঠমান্ডুতে থাকতেন তিনি।
ওশিনের বাবা জানান, দুর্ঘটনার দিন তার মেয়েকে কাজে যেতে বারণ করেছিলেন তিনি। চার ভাইবোনের মধ্যে ওশিন ছিলেন সবার বড়। দুবছর আগে বিয়ে করেছিলেন তিনি। তার স্বামী বর্তমানে যুক্তরাজ্যে থাকেন।
আরও পড়ুন:কাতার বিশ্বকাপের সময় ড্রোনের ওপর দাঁড়িয়ে সৌদি আরবের পতাকা নাড়ছেন এক ব্যক্তি, এমন একটি ভিডিও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ভিডিওটি ১৪ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
ভিডিওটি আসলে সৌদি আরবে ধারণ করা। ২০১৯ সালের মে মাসে স্থানীয় কিংস কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের সময়।
গত বছরের ২২ নভেম্বর ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার হয়। সেখানে ১৪ লাখের বেশিবার এটি দেখা হয়েছে।
ভিডিওর সঙ্গে উর্দু ভাষার ক্যাপশন বাংলায় করলে দাঁড়ায়, ‘কাতারে ফিফা বিশ্বকাপ চলাকালীন ড্রোনে থাকা এক ব্যক্তি কালেমা তাইয়্যেবা লেখা পতাকা নেড়ে বিশ্বকে একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন। সেটা হলো, কেবল এই পতাকাটিই ইসলামিক বিশ্বের সবচেয়ে উঁচুতে উড়বে।’
কালেমা বা কালিমা (আরবি: ٱلكَلِمَات) ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস সংবলিত কয়েকটি আরবি পঙক্তির নাম। এর মাধ্যমেই ইসলামের প্রথম স্তম্ভ শাহাদাহ্ পূর্ণতা পায়। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বাক্যের অর্থ- আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য মাবুদ বা উপাস্য নেই। এটি ইসলামের চূড়ান্ত কালেমা। সৌদি আরবের পতাকার মাঝখানে এটি লেখা থাকে।
ক্লিপটি ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব এবং টিকটকে শত শত বার শেয়ার হয়েছে।
প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করে কাতার। এ সময় লাখ লাখ দর্শক আরব দেশটিতে আসে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইসলাম ধর্মের প্রচার করে কাতার কর্তৃপক্ষ।
তবে ভিডিওটি কাতারে ধারণ করা হয়নি।
২০১৯ সালে সৌদি টুর্নামেন্ট
বিপরীত চিত্র এবং কীওয়ার্ড অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সৌদি ক্রীড়া প্ল্যাটফর্ম ডাওরি প্লাস ২০১৯ সালের ২ মে টুইটারে এমন একটি ভিডিও পোস্ট করে।
আরবি ভাষার লেখা টুইটটি বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘উড়ন্ত মানুষ বিশাল এই শোডাউনের উদ্বোধন করছে। এরপর লেখা- #আল-তাওউন_আল-ইত্তিহাদ
#কাস্টোডিয়ান_অফ_দ্য_টু_হোলি_মস্ক_কাপ #দাওরি_প্লাস।’
ক্যাপশনে হ্যাশট্যাগগুলো দুটি পবিত্র মসজিদ কাপ বা কিংস কাপের কাস্টডিয়ানকে নির্দেশ করে, যেখানে আল-তাওউন দল ২০১৯ সালের ২ মে ফাইনালে আল-ইত্তিহাদকে পরাজিত করেছিল।
এদিন সৌদি সংবাদপত্র আরব নিউজের খবরে বলা হয়, ‘বাদশাহ সালমান টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন। বিজয়ী দলকে তিনি ট্রফি তুলে দিয়েছিলেন। সেবার প্রথমবারের মতো কিংস কাপ ট্রফি জেতে ফুটবল দল আল-তাওউন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক আবুধাবি স্পোর্টস পরদিন ইউটিউবে সে ম্যাচের একটি ডিভিও আপলোড করে। ক্লিপ্টির ৩ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে একই রকম দৃশ্য দেখা যায়।
নিচে একটি স্ক্রিনশট দেয়া হল, যার মধ্যে ভুয়া পোস্টের (বামে) দৃশ্যের তুলনা করা হয়েছে দাওরি প্লাসের (ডানে) সঙ্গে।
ভারতীয় ফ্যাক্ট-চেকিং প্ল্যাটফর্ম ফ্যাক্টক্রেসেন্ডোও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন:
‘সোনার চর’ নামে সিনেমার শুটিংয়ে পিরোজপুরের কাউখালী গিয়েছিলেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। শুটিং স্পট থেকে নিয়মিত ছবি পোস্ট করে ফেসবুকে গত কয়েক দিন ধরে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত এ অভিনেতা।
এসব ছবিতে জায়েদকে কখনও দেখা গেছে শীতের সকালে নৌকার মাঝি হিসেবে, কখনও তিনি বানাচ্ছেন কুঁড়েঘর, আবার কনকনে শীতের মাঝে নদীতীরের কাদামাটিতে তার বিপর্যস্ত ভঙ্গি জুগিয়েছে আলোচনার খোরাক।
সবশেষ জায়েদ খান কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, সিনেমার প্রয়োজনে তিনি কুমিরের ভীতি উপেক্ষা করে ঝাঁপ দিয়েছেন বিপজ্জনক কালীগঙ্গা নদীতে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত সিনেমার একটি দৃশ্যে পাকিস্তানি বাহিনীর হাত থেকে পালাচ্ছিলেন জায়েদ। এর অংশ হিসেবে পানিতে ঝাঁপ দেন জায়েদ। তার ভাষায়, ‘কুমির থাকা নদীতে’ ঝাঁপ দিতে তিনি পরোয়া করেননি। এরপর অনেকটা পথ সাঁতরাতে হয়েছে তাকে।
বিষয়টি নিয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠকে জায়েদ খান বলেন, ‘একটি দৃশ্য ছিল কালীগঙ্গা নদীতে আমাকে লাফ দিতে হবে। ছোটবেলা থেকেই জানি, এই নদীতে কুমির আছে, আমরা দেখেছি। ফলে লাফ দেব কি না, সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না।
‘যেহেতু অভিনয় করতে এসেছি। ঝুঁকি নিতেই হবে। অবশেষে লাফ দিলাম। তারপর অনেকটা পথ সাঁতরাতে হলো। খুবই কষ্টকর একটি দৃশ্য ছিল। ফাইনালি ভালোভাবে শেষ হয়েছে।’
জায়েদ খান যে নদীকে কুমির-সংকুল বলছেন, সেটি সত্যিই তেমন কি না, তা জানার চেষ্টা করেছে নিউজবাংলা।
বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়নে পিরোজপুর জেলার কালীগঙ্গা নদী সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘পিরোজপুর জেলা শহরের প্রবেশপথ হুলারহাট লঞ্চঘাট কালীগঙ্গা নদীতীরে অবস্থিত। নাজিরপুর উপজেলা সদর, শ্রীরামকাঠী বাজারও এ নদীর পাড়ে। নদীটি বলেশ্বর থেকে সূচিত।’
অন্যদিকে মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাকের লেখা বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি বইয়ে এই নদী সম্পর্কে বলা হয়েছে, কালীগঙ্গা নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পিরোজপুর জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৩২ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৩৩০ মিটার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পাউবো কালীগঙ্গা নদীকে পরিচিত করেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২০ নম্বর নদী হিসেবে।
এ বইয়ে আরও বলা হয়, কালীগঙ্গা নদীটি পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার শঙ্করপাশা ইউনিয়নে প্রবহমান শালদহ নদী থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। অতঃপর এই নদীর জলধারা শ্রীরামকাঠী, গুয়ারেখা ও কালাখালী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পিরোজপুর সদর উপজেলার শরিকতলা-ডুমুরিতলা ইউনিয়নে প্রবাহিত কচা নদীতে পড়েছে। নদীটিতে সারা বছর পানিপ্রবাহ থাকে। নদীতে জোয়ার-ভাটার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
স্থানীয় লোকজন নিউজবাংলাকে জানান, নদীটি অনেক বছর ধরে ক্ষীণ ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে, বিশেষ করে শীত মৌসুমে এর বেশির ভাগ অংশই শুকিয়ে যায়। কেবল মধ্যবর্তী অংশে কিছু পানি থাকে।
এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, ছোট এই নদীতে কুমির আছে, এমন কিছু তারা শোনেননি।
কালীগঙ্গা নদীপাড়ের বাসিন্দা মো. সজীব সিকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই নদীতে কুমির গত ১৫ বছরেও দেখা যায়নি বা শুনিনি। আমাদের চরে জায়েদ খানের শুটিং হয়েছে। আমরা সেটা দেখেছি, কিন্তু সেখানে কুমির ছিল এমন কোনো তথ্য আমরা জানি না।’
কাউখালীর রঘুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুনেছি এই নদীতে অনেক আগে কুমির ছিল, তাও প্রায় ৩০ বছর আগের কথা, তবে বর্তমানে আছে কি না, সঠিক বলতে পারি না।’
জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারীর কাছেও কালীগঙ্গা নদীতে কেউ কুমির দেখেছে, এমন তথ্য নেই।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পিরোজপুর জেলা উপকূল অঞ্চলে। তা ছাড়া সাগর ও সুন্দরবনের কাছের জেলা। সে ক্ষেত্রে কুমির থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়, থাকতে পারে, তবে কেউ দেখেছে এমন তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
নায়ক জায়েদ খানের বন্ধু জুবায়ের আল মামুনও মনে করছেন এমন দাবিটি তথ্যভিত্তিক নয়।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বন্ধু জায়েদ খানের শুটিং বেশ কয়েক দিন ধরে কালীগঙ্গা নদীর পাড়ে চলছে, আমরাও দেখতে গিয়েছি। তবে কেউ কুমির দেখেছেন এমন তথ্য আমাদের জানা নেই।’
জায়েদ খান অবশ্য এখন বলছেন, স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে তিনি নিজেও কখনও কালীগঙ্গা নদীতে কুমির দেখেননি, তবে তিনি শুনেছেন।
আলোচিত এ অভিনেতা শনিবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পিরোজপুরে সোনার চর সিনেমার শুটিংয়ে কালীগঙ্গা নদীতে একটা সিকোয়েন্সে নদীর মাঝখানে ঝাঁপ দিয়েছিলাম। এরপর অনেক দূর সাঁতরে উঠেছি এবং ওই নদীতে কুমির আছে এটা প্রকাশ পেয়েছে।’
নদীতে কুমির থাকার তথ্য দেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি তো ওখানে, আমি তো সব জানি। ওখানে স্থানীয় অধিবাসীরা বলছিল কয়েক দিন আগে চরে এসে একটা গরু নিয়ে গেছে কুমিরে। ওখানে কুমির আছে আমরা জানি।’
তাহলে লোকজনের কথা শুনে এমনটি বলেছেন কি না, প্রশ্ন করলে জায়েদ খানের জবাব, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, রাইট রাইট।’
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ে উদ্বেল সারা বিশ্বের কোটি কোটি সমর্থক। বাংলাদেশেও ভক্তদের মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা। অনেকেই নানাভাবে উদযাপন করছেন প্রিয় দলের চোখধাঁধানো অর্জন।
এরই মধ্যে একটি পোস্ট ছড়িয়েছে ফেসবুকে। একজন প্রবীণ ব্যক্তির সঙ্গে এক তরুণীর বিয়ের ছবি দিয়ে ওই পোস্টে দাবি করা হয়েছে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ শিরোপা জয় না করা পর্যন্ত ওই ব্যক্তি বিয়ে না করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। শিরোপা জয়ের পর সেই প্রতিজ্ঞার অবসান ঘটেছে।
চ্যানেল ঢাকা নামের একটি ফেসবুক পেজের বরাতে পোস্টটি শেয়ার করছেন অনেকে। এতে বলা হয়েছে, ‘শপথ নিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা জিতলে তবেই বিয়ে করবেন। সে অপেক্ষায় ৩৬ বছর পেরিয়ে গেছে। অবশেষে ২০২২ বিশ্বকাপ জিতে নিল আর্জেন্টিনা। খবর পেয়ে আজ সকালে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন গাইবান্ধার আব্দুল লতিফ।’
এই দাবির সত্যতা যাচাই করেছে নিউজবাংলা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে ‘চ্যানেল ঢাকা’ ফেসবুকভিত্তিক একটি স্যাটায়ার পেজ। এর অ্যাবাউট সেকশনে বলা হয়েছে, পেজের প্রতিটি কনটেন্টের লক্ষ মানুষকে বিনোদন দেয়া। চ্যানেল ঢাকার একটি ওয়েব অ্যাড্রেস থাকলেও সেটি সচল নেই।
‘চ্যানেল ঢাকা’ পেজে মঙ্গলবার আলোচিত পোস্টটি দেখা যায়নি।
অনুসন্ধানের পরিধি বাড়িয়ে দেখা যায়, একই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথম ভাইরাল হয় পাঁচ বছর আগে। বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা ছবিটি ২০১৭ সালে শেয়ার করেছিলেন।
OkXxxxx নামের একটি আইডি থেকে কোনো শিরোনাম ছাড়াই ছবিটি ২০১৭ সালের ১৪ আগস্ট পোস্ট করা হয়। এই পোস্টটি কয়েকজন পাকিস্তানি শেয়ার করেন, যার মধ্যে একটি আইডি ছিল Jabbar Samejo Jabbar Khan নামে।
এরও কয়েক মাস আগে ছবিটি ফেসবুকে বহু মানুষের নজর কাড়ে। সে সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে দাবি করেন, ভারতের মধ্যপ্রদেশে সরকারিভাবে আয়োজিত গণবিয়ের সময় ছবিটি তোলা।
তবে তখন ভারতের এবিপি নিউজ এক প্রতিবেদনে জানায়, ভাইরাল ছবিটি মধ্যপ্রদেশে গণবিয়ের সময় তোলা হয়নি। ওই বিয়ের আয়োজকদের একজন বিষয়টি এবিপি নিউজকে নিশ্চিত করেন। এমনকি অনুষ্ঠানে উপস্থিত মাওলানাও জানান তিনি এ ধরনের কোনো জুটির বিয়ে পড়াননি।
এপিবির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ছবির আলোচিত বর-কনে বাংলাদেশি। তাদের বিয়ের ছবিটি বাংলাদেশের একটি ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ আপলোড করা হয়।
ভাইরাল ছবিটি নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক গানও রয়েছে ইউটিউবে। ‘ওরে বুইরা নানা কী করলা, সব পোলাপানের ঘুম কাইড়া নিলা। নাতনি বিয়া কইরা রেকর্ড করলা, সারা দ্যাশে তুমি দ্য ওয়ান অ্যান্ড ওনলি’ শিরোনামের একটি গানে ব্যবহার করা হয়েছে ছবিটি।
গানটি দুই বছর আগে আপলোড করা হয়েছে এমন একটি ইউটিউব চ্যানেলও খুঁজে পেয়েছে নিউজবাংলা।
আরও পড়ুন:
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বুধবার আর্জেন্টিনার জার্সি পরে গুলি চালানো এক ব্যক্তির ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ওই ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়েছে ফেসবুকে। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা কোন বাহিনীর সদস্য তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাতে ওই ব্যক্তিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্য বলে দাবি করেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার তথ্যও জানানো হয়েছে।
তবে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, আলোচিত ওই ব্যক্তি আনসার বাহিনীর সদস্য। তিনি আইনবহির্ভূত কোনো কাজ করেননি।
ফেসবুকে ভাইরাল ওই ব্যক্তিকে ছাত্রলীগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-বিষয়ক সম্পাদক আল-আমিন রহমান হিসেবেও প্রচার করছেন অনেকে। এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে আল-আমিন বলছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপপ্রচারের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।
আর্জেন্টিনার জার্সি পরে অস্ত্র হাতে নয়াপল্টনে তৎপর আলোচিত ব্যক্তির নাম মাহিদুর রহমান বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, ‘আর্জেন্টিনার জার্সি পরে গুলি চালানো ওই ব্যক্তি পল্টন থানার অন্তর্ভুক্ত আনসার সদস্য মাহিদুর রহমান। জানমাল রক্ষার্থে যেকোনো পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা অংশ নিতে পারেন। আমি নিজেও সিভিল পোশাকে ছিলাম। এটা অন্যায় নয়।’
এর আগে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারের বরাতে জানায়, আলোচিত ওই ব্যক্তি ডিবির সদস্য। তাকে ক্লোজ করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিপ্লব কুমার সরকারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি, খুদেবার্তারও সাড়া দেননি।
অন্যদিকে, আর্জেন্টিনার জার্সি পরা ওই ব্যক্তিকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-বিষয়ক সম্পাদক আল-আমিন রহমান হিসেবেও প্রচার চলছে।
এতে বিস্ময় ও ক্ষোভ জানিয়েছেন আল-আমিন রহমান। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা খুবই অপ্রত্যাশিত ব্যাপার। ক্যাম্পাসের বাইরের একটি ঘটনায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে জড়ানো হয়েছে। বিএনপি মিথ্যাচার আর গুজবের রাজনীতি করে। তারাই এ কাজ করেছে।’
এই ছাত্রনেতা দাবি করেন, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে প্রথম অপপ্রচার চালানো হয়। এরপর বিএনপির বিভিন্ন পেজ এটি ছড়িয়ে দেয়।
আল-আমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে পাঁচটি ফেসবুক পেজের উল্লেখ করে শাহবাগ থানায় জিডি করেছি।’
বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন আল-আমিন। এতে তিনি নিজেকে ব্রাজিল সমর্থক উল্লেখ করে ব্রাজিলের জার্সিতে নিজের ছবিও শেয়ার করেছেন।
আল-আমিন লেখেন, ‘১০ তারিখ রাজধানী শহর ঢাকায় বিএনপি-জামায়াত দেশবিরোধী চক্রের নাশকতা প্রতিরোধে গোয়েন্দা পুলিশের সাদাপোশাকে অস্ত্র হাতে এবং হেলমেট পরা এক সদস্যের ছবিকে দেশে-বিদেশে আমার ছবি বলে বিরোধী দলের গুজববাহিনীর লোকজন ফেসবুকে ভাইরাল করে প্রাণপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও আমার বিরুদ্ধে জঘন্য অপপ্রচার করছে।
‘এ তালিকায় লন্ডনে পালিয়ে থাকা তারেক গংয়ের প্রোপাগান্ডা সেলের লোকজনেরও পরিচয় পাওয়া গেছে। হাস্যকর ব্যাপার হলো, আমি ছোটবেলা থেকে বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সমর্থক। আমার শত্রুও তা জানে। সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরে আছেন আর্জেন্টিনার জার্সি।
‘উপরন্তু, আমার উচ্চতা ছয় ফুট। ছবিটা ভালো করে দেখলেই স্পষ্ট বুঝা যায়। পেছনে পুলিশের গাড়িও আছে। এ ছবি বিশ্লেষণ করে প্রকৃত ব্যক্তিকে আইডেন্টিফাই করতে বায়োলজি বা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ হবার দরকার নেই। একটু পর্যবেক্ষণই যথেষ্ট।’
এদিকে আর্জেন্টিনার জার্সি পরিহিত ওই ব্যক্তি নিজেকে আনসার সদস্য পরিচয় দিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টুয়েন্টিফোরকে বলেন, ‘আমি পল্টন থানায় আনসার সদস্য হিসেবে কর্মরত আছি। ঘটনার আগে দুপুরের খাবারের পর আমি বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। এ সময় আমাদের বিশেষ অ্যালার্ম বেজে ওঠে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের প্রতি ওসি স্যারের নির্দেশনা রয়েছে যখন অ্যালার্ম বেজে উঠবে তখন যে যে অবস্থায় থাকবে, সে অবস্থায় থানার নিচে নেমে আসতে হবে। আমিও যে অবস্থায় ছিলাম সে অবস্থায় শুধু জুতা পরে নিচে নেমে আসি ও কাজ শুরু করি।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশি ফুটবল-ভক্তদের মাঝে লিওনেল মেসি ও আর্জেন্টিনাকে নিয়ে উন্মাদনা নতুন কিছু নয়। ডিয়েগো ম্যারাডোনার কারণে আর্জেন্টিনার প্রতি বিপুল সমর্থন তৈরি হয়। সেটা বহু গুণে বেড়েছে ২০০৬ সালে মেসির প্রথম বিশ্বকাপ থেকে।
২০২২ সালে ফিফা বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনা ও মেসিকে নিয়ে বাংলাদেশি ভক্তদের মাঝে রয়েছে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। আর্জেন্টিনার ম্যাচ ঘিরে টান টান উত্তেজনায় ভরপুর সমর্থকরা। আর্জেন্টিনার সমর্থনে দেশের বিভিন্ন স্থানে হচ্ছে পতাকা মিছিল।
আর্জেন্টিনার প্রতি বাংলাদেশি সমর্থকদের বিপুল ভালোবাসার স্বীকৃতি দিচ্ছে ফুটবল-বিশ্বও। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে মেসির গোলের পর দর্শকদের উচ্ছ্বাসের ভিডিও নিজেদের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডল থেকে শেয়ার করেছে ফিফা। সেটি রি-টুইট করেছেন গ্যারি লিনেকারের মতো ফুটবল কিংবদন্তিসহ অনেকে।
বহু দূরের ও সম্পূর্ণ ভিন্ন সংস্কৃতির একটি দেশে আর্জেন্টিনাকে নিয়ে এমন উচ্ছ্বাসে আর্জেন্টাইনরাও মুগ্ধ। আর্জেন্টিনার প্রফেশনাল ফুটবল লিগ সোমবার টুইটার ও ফেসবুকে একটি বিশেষ পোস্টের সম্মান জানিয়েছে বাংলাদেশি ভক্তদের।
তাদের অফিশিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে মেক্সিকোর বিপক্ষে লিওনেল মেসির গোল উদযাপনের একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। সেই ছবিতে ফটোশপের মাধ্যমে মেসির প্রসারিত দুই হাতে বসিয়ে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের পতাকা।
পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বাংলাদেশের ভক্তদের পাশাপাশি দেশের বাইরের অনেকেও সেটি শেয়ার করেছেন।
এই পোস্টে ব্যবহৃত ছবির প্রকৃত উৎস অনুসন্ধান করেছে নিউজবাংলা।
দেখা গেছে আর্জেন্টিনার প্রফেশনাল ফুটবল লিগ সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ৫২ মিনিটে তাদের টুইটার হ্যান্ডলে প্রথম আলোচিত পোস্টটি দেয়। এরপর তাদের ফেসবুক পেজে একই ছবিযুক্ত পোস্টটি দেয়া হয় রাত ১০টা ৫৩ মিনিটে।
দুটি পোস্টের ক্যাপশনেই লেখা হয়,
‘Lionel Messi Bangladesh
That's it. That's the tweet.’
মঙ্গলবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ফেসবুকের পোস্টটি ২২ হাজারের বেশি শেয়ার করা হয়েছে। আর ৫৩ হাজারের বেশি লাইক করা হয়েছে টুইটারে, রি-টুইট হয়েছে আড়াই হাজারের বেশি।
অনেক জনপ্রিয় ফ্যানপেজও শেয়ার করেছে পোস্টটি। স্পেন ও বার্সেলোনার তরুণ মিডফিল্ডার গাভির ফেসবুক ফ্যানপেজ থেকে পোস্টটি শেয়ার করা হয় রাত ১টা ৯ মিনিটে। তাদের পোস্টটি মঙ্গলবার বেলা ৩টা পর্যন্ত শেয়ার হয়েছে ৫ হাজার ৬০০ বার।
ফটোশপের মাধ্যমে মেসির হাতে বাংলাদেশের পতাকা বসানো ছবিটির উৎস সন্ধান করে দেখা গেছে এটি তুলেছেন ফটোসাংবাদিক জেনস ফার্নান্দো।
আর্জেন্টিনার সরকারি প্রচারমাধ্যম টেলাম-এর ফটোসাংবাদিক ফার্নান্দো ছবিটি তোলেন মেক্সিকোর বিপক্ষে মেসির গোলের পরপর।
টেলাম ছবিটি প্রকাশের সময় ক্যাপশনে লিখেছে, ‘ফিফা বিশ্বকাপে গ্রুপ-সি এ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে রোসারিওর তারকা লিওনেল মেসি মেক্সিকোর বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধের ১৮ মিনিটে গোল করে দলকে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেন।’
টেলাম-এর ওয়েবসাইটে ছবিটি প্রকাশ করা হয় গত শনিবার আর্জেন্টিনার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে।
আর্জেন্টিনার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ওই দিন তাদের বিভিন্ন প্রতিবেদনে টেলম-এর ছবিটি ব্যবহার করে।
একই ছবিতে মেসির হাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ছবি বসিয়ে সোমবার বাংলাদেশি ভক্তদের সম্মান জানায় আর্জেন্টিনার প্রফেশনাল ফুটবল লিগ। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে এই কর্তৃপক্ষ দেশটির ঘরোয়া লিগ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য