× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Lemon hali 3 thousand rupees
google_news print-icon

লেবুর হালি ৩ হাজার টাকা

লেবুর-হালি-৩-হাজার-টাকা
আকারে বিশাল একেকটি জারা লেবুর ওজন এক থেকে দুই কেজিরও বেশি হয়। ছবি: নিউজবাংলা
জারা একটি সাইট্রাস গোত্রের লেবু জাতীয় ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম sytrus medica. আর্দ্র ও অম্লীয় মাটি এবং উঁচু পাহাড়ি অঞ্চলে ফলে এই লেবু। এটি চাষে প্রচুর বৃষ্টিপাতেরও প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীনে সিলেটের জৈন্তাপুরে রয়েছে সাইট্রাস গবেষণা কেন্দ্র। দীর্ঘদিন ধরে জারা নিয়ে গবেষণা চলছে এই কেন্দ্রে। উদ্ভাবন করা হয়েছে নতুন জাতও।

লেবুর হালি কত হতে পারে? ১০, ২০, ৫০ কিংবা বড়জোর ১০০ টাকা। এই তো হওয়ার কথা। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এই যে, সিলেটে এখন লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকায়! তবে এটি সাধারণ লেবু নয়, বিশেষ জাতের এই লেবুর নাম- জারা।

বিশেষ এই লেবুটি দেশের মধ্যে কেবল সিলেট জেলাতেই চাষ হয়। আর হয় সিলেটের পার্শ্ববর্তী ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে।

সিলেটে ব্যাপক জনপ্রিয় এই ফল রপ্তানিও হয়। ফলে বছরজুড়েই এর চাহিদা থাকে। দামও থাকে আকাশছোঁয়া।

আকারেও বিশাল এই লেবুর একেকটা বড় পেঁপের মতো হয়। ফলে একেকটির ওজন এক থেকে দুই কেজিও ছাড়িয়ে যায়।

রোববার সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতি হালি জারা লেবু ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর একটি করে কিনলে দাম পড়ছে ৮০০ টাকা।

জারা লেবুর সবচেয়ে বেশি চাষ হয় সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায়। সম্প্রতি এই উপজেলার হরিপুর বাজারে গিয়েও দেখা যায়, প্রতি হালি লেবু ৩ হাজার টাকা দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতা।

লেবুর হালি ৩ হাজার টাকা

জারা কী

জারা একটি সাইট্রাস গোত্রের লেবু জাতীয় ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম sytrus medica. আর্দ্র ও অম্লীয় মাটি এবং উঁচু পাহাড়ি অঞ্চলে ফলে এই লেবু। এটি চাষে প্রচুর বৃষ্টিপাতেরও প্রয়োজন হয়।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীনে সিলেটের জৈন্তাপুরে রয়েছে সাইট্রাস গবেষণা কেন্দ্র। দীর্ঘদিন ধরে জারা নিয়ে গবেষণা চলছে এই কেন্দ্রে। উদ্ভাবন করা হয়েছে নতুন জাতও।

এই গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিন ভূইয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জারা লেবু সাইট্রাস গোত্রের মধ্যে ইউনিক ফল। এর সঙ্গে অন্য কোনো জাত মিলবে না। সাইট্রাস গোত্রের আদি তিনটি ফলের মধ্যে রয়েছে কমলা, বাতাবি লেবু ও জারা লেবু। এগুলোর মধ্যে সংমশ্রিণ হয়ে এবং প্রাকৃতিক উপায়ে হাইব্রিড হয়ে পরে আরও অনেক জাতের সৃষ্টি হয়েছে।’

স্বাদ ও গন্ধে জারা লেবু ‘ইউনিক’ উল্লেখ করে বোরহান উদ্দিন জানান, এর উৎপত্তি সিলেটের আরও উপরে, আসাম ও মেঘালয়ের পাহাড়ে। জারার অনেকগুলো ধরন রয়েছে। এর মধ্যে গোল জারা, গুটি জারা ও পানি জারা সবচেয়ে প্রসিদ্ধ। সিলেট অঞ্চলে মূলত গুটি ও পানি জারা চাষ হয় বলে জানান তিনি।

বোরহান উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ‘আমরা ২০১৯ সালে বারি-১ নামে জারার একটি নতুন জাত উদ্ভাবন করে উন্মুক্ত করেছি। এখন আরও কয়েকটি জাত নিয়ে কাজ করছি।’

সিলেটের মাটিকে জারা চাষের উপযুক্ত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জারা চাষের জন্য টিলাভূমির অম্লীয় মাটি প্রয়োজন। যেখানে প্রচুর বৃষ্টি হবে। কিন্তু পানি জমে থাকবে না। দ্রুত নিষ্কাষণ হবে। এ কারণে সিলেট এই ফল চাষের উপযুক্ত।’

লেবুর হালি ৩ হাজার টাকা

কীভাবে খাওয়া হয়

সাধারণত লেবুর রসটুকুই গ্রহণ করে মানুষ। তবে জারা লেবুর খোসা আর চামড়াও খাওয়া যায়। এই লেবুর চামড়া ও খোসা বেশ পুরু। আর রসের পরিমাণ খুবই কম। এ ক্ষেত্রে সালাদ হিসাবে জারা লেবুর কদর সবচেয়ে বেশি। এটি দিয়ে আচারও তৈরি হয়।

এ বিষয়ে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘জারা লেবুর খোসা ও চামড়ায় একটি বিশেষ ধরনের মিষ্টি স্বাদ রয়েছে। এর গন্ধও আলাদা। স্বাদ ও গন্ধের কারণেই এটি ভোজনরসিকদের প্রিয়।’

তিনি জানান, সাইট্রাস গোত্রের ফলের মধ্যে শুধু জারার চামড়াই রান্না করে কিংবা রান্না ছাড়াই খাওয়া যায়।

সিলেটের রন্ধনশিল্পী সেলিনা চৌধুরী বলেন, ‘জারা লেবুর রসের স্বাদ টক আর খোসা মিষ্টি। এর রস বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে খাওয়া হয়। আর খোসা ও চামড়া সালাদের পাশাপাশি তরকারি বিশেষ করে মাছের সঙ্গে রান্না করে খাওয়া হয়। খোসা দিয়ে হয় আচারও।’

তবে মাংসের সঙ্গে জারার খোসা রান্না করা যায় না জানিয়ে সেলিনা বলেন, ‘এতে মাংসের স্বাদ তেতো হয়ে যায়।’

কোথায় চাষ

সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার টিলাভূমিতে জারা লেবুর চাষ হয়। তবে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় জৈন্তাপুর উপজেলায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, জেলায় জারা লেবুর প্রায় ১৫০টি বাগান রয়েছে। এর মধ্যে জৈন্তাপুর উপজেলায়ই রয়েছে প্রায় ৬০টি। তবে বছরে কী পরিমাণ জারা উৎপাদন হয় তার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই কৃষি অফিসের কাছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই লেবু চাষ খুবই লাভজনক। কারণ এর ক্রেতা মূলত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। সিলেটের প্রচুর মানুষ ইউরোপ আমেরিকায় থাকেন। তারাই এই লেবুগুলো কিনেন। ফলে এগুলো অনেক উচ্চ দামে বিক্রি হয়। সিলেট ছাড়াও দেশের অন্যান্য স্থানেও এই লেবুর চাহিদা বাড়ছে। ফলে জারা চাষ করে সহজেই লাভবান হওয়া সম্ভব।’

তিনি জানান, সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে চারা রোপনের এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে জারার ফল ধরে। একটি গাছ থেকে অনেক বছর ফলন পাওয়া যায়।

এখন সিলেটের বাইরে অনেকে ছাদবাগানেও জারা চাষ করছেন বলেও জানান তিনি।

জৈন্তাপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বাগেরখাল গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫০ শতক ভূমিতে লেবু চাষ করি। সাধারণত বর্ষকালে এর ফলন হয়।’

আগে কেবল নিজেরা খাওয়ার জন্য চাষ করতেন জানিয়ে সাইফুল বলেন, ‘এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছি। গত বছরও প্রায় লাখ টাকার জারা বিক্রি করেছি। বাজারেও নিয়ে যেতে হয়নি। বাগান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে নিয়ে গেছেন।’

এই এলাকার আরেক লেবু চাষী খাইয়রুল ইসলাম বলেন, ‘পরিণত একেকটি গাছে সহস্রাধিক লেবু ধরে। তবে বৃষ্টি ভালো না হলে ফলন কমে যায়। লেবুতে নানা পোকাও আক্রমণ করে।’

লেবুর হালি ৩ হাজার টাকা

এতো দাম কেন

সম্প্রতি জৈন্তাপুরের হরিপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাহার উদ্দিন নামে এক বিক্রেতা গোটা বিশেক জারা লেবু নিয়ে বসেছেন। এর মধ্যে বড় আকারের প্রতি হালি জারার দাম তিনি ৩ হাজার টাকা করে চাইছেন।

লেবুর এমন দামের বিষয়ে জানতে চাইলে বাহার বলেন, ‘এখন তো লেবুর সিজন না। এটি বর্ষাকালে ভালো পাওয়া যায়। এখন নানা জায়গা থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনে আনতে হয়। ফলে দামও বেশি।’

সিলেট নগরের মধ্যে কেবল বন্দরবাজারে গিয়ে জারা লেবু বিক্রি হতে দেখা গেছে। এখানে আকৃতিভেদে দামের তারতম্য রয়েছে। বড় আকারের লেবু প্রতিটি ৮০০ টাকা ও ছোট আকারেরগুলো প্রতিটি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এই বাজারের লেবু বিক্রেতা জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে এসব লেবুর হালি ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু এখন লেবুর মৌসুম না হওয়ায় এগুলোর দাম বেশি।’

তিনি জানান, জৈন্তাপুরের বিভিন্ন বাগান থেকে বন্দরবাজারে লেবু আসে। বাগান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আগে কিনেন। পরে তাদের হাত ঘুরে বন্দরবাজারের খুচরা বিক্রেতাদের কাছে আসে এই লেবু।

দাম বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ জানালেন রোববার ওই বাজারে জারা লেবু কিনতে আসা ফয়সল আহমদ। তিনি বলেন, ‘এই লেবুগুলোর ক্রেতা সাধারণত প্রবাসীরা। তাদের আত্মীস্বজন এগুলো কিনে বিদেশে পাঠায়। প্রবাসীরা মূল ক্রেতা হওয়ায় ব্যবসায়ীরা অহেতুক অনেক বাড়িয়ে দিয়েছেন। এ কারণে আমরা এগুলো কিনতে পারছি না।’

রপ্তানি হয় না ১৫ বছর

এক সময় জারা লেবুসহ সাইট্রাস গোত্রের বিভিন্ন ফল সিলেট থেকে রপ্তানি হতো ইউরোপ ও আমেরিকায়। তবে ১৫ বছর ধরে রপ্তানি বন্ধ। ক্যাংকারস ভাইরাস সংক্রমণের কারণে ২০০৭ সালে সাইট্রাস গোত্রের ফল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা। এখনও এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়নি।

জালালাবাদ ভেজিটেবল অ্যান্ড ফ্রোজেন ফিশ এক্সপোর্টার্স গ্রুপের সভাপতি হিলকিল গুলজার জানান, ইউরোপ ও আমেরিকায় জারা লেবু, সাতকরাসহ সাইট্রাস গোত্রের ফলের বড় বাজার রয়েছে। দীর্ঘদিন রপ্তানি বন্ধ থাকায় এই বাজার এখন হারিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় সাইট্রাস ক্যাংকারস জটিলতা দূর করে সিলেটে সরকারি উদ্যোগে সবজি ও ফল রপ্তানি অঞ্চল স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছি। কৃষকদের প্রশিক্ষণের কথা বলছি। কিন্তু কোনো সুফল মিলছে না।’

সাইট্রাস গোত্রের ফল ক্যাংকারসমুক্ত করা গেলে বছরে কয়েকশ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আয় সম্ভব বলে জানান এই রপ্তানিকারক। এও জানান, রপ্তানি না হলেও এখন অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রবাসী আত্মীয়স্বজনের কাছে লেবু ও সাতকরা পাঠান।

ক্যাংকারস ভাইরাস প্রসঙ্গে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ‘বাগান বেশি পুরনো হয়ে যাওয়া, অপরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় না রেখে গাছ লাগানো, নিয়ম মেনে ওষুধ ব্যবহার না করা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবেই এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাগান ক্যাংকারসমুক্ত রাখতে আমরা চাষিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এর ফলে সিলেট অঞ্চলের বেরিভাগ বাগানই এখন ক্যাংকারসমুক্ত।’

আরও পড়ুন:
বিচি ছাড়া লেবু
হাত ঘুরতেই দাম বাড়ছে লেবুর
কাগজি লেবুর আসল-নকল কোনটা
বন্যায় তলিয়েছে লেবু, ঘুরে দাঁড়ানোর আকুতি কৃষকের

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Marina Tabassum on Time magazines list of influential people

টাইম ম্যাগাজিনের প্রভাবশালীদের তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম

টাইম ম্যাগাজিনের প্রভাবশালীদের তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম বাংলাদেশের খ্যাতনামা স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের এই খ্যাতনামা স্থপতি টাইম ম্যাগাজিনের ২০২৪ সালের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন সেরা উদ্ভাবক ক্যাটাগরিতে।

টাইম ম্যাগাজিনের ২০২৪ সালের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন মেরিনা তাবাসসুম। বাংলাদেশের এই খ্যাতনামা স্থপতি সেরা উদ্ভাবক ক্যাটাগরিতে তালিকায় স্থান পেয়েছেন।

মঙ্গলবার এই তালিকা প্রকাশ করে টাইম ম্যাগাজিন। তাবাসসুমকে নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনে লিখেছেন অ্যামেরিকান স্থপতি স্যারাহ হোয়াইটিং।

তাবাসসুমকে ‘নিঃস্বার্থ স্থপতি’ উল্লেখ করে স্যারাহ লিখেছেন, ‘‘তাবাসসুমের স্বার্থহীনতার পরিচয় তার নকশা করা ভবনগুলোর মাঝেও দেখা যায়। পৃথিবীর সম্পদে ভাগ বসানো প্রাণিকুলের অংশ হিসেবে তিনি তার নিজের সৃষ্টির প্রতি যত্নশীল।

“আগা খান পুরস্কারপ্রাপ্ত ঢাকার বাইত উর রউফ মসজিদ নিয়ে তাবাসসুম নিজে বলেছেন, ‘কৃত্রিম কোনো সাহায্য ছাড়াই একটা ভবনকে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে দিতে হবে।’ আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে বন্যা ঝুঁকি বাড়তে থাকা একটি দেশে তিনি এমন সব বাড়ির নকশা করেছেন যেগুলো কম খরচে নির্মাণ করা যায় ও সহজে সরিয়ে ফেলা যায়।’’

বাইত উর রউফ ছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতা জাদুঘর ও স্বাধীনতা স্তম্ভ মেরিনা তাবাসসুমের উল্লেখযোগ্য কীর্তি। আগা খান পুরস্কার ছাড়াও ২০২১ সালে সোন পুরস্কার পান এই স্থপতি।

টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় এবারে জায়গা করে নিয়েছেন এনএফএল সুপারস্টার প্যাট্রিক মাহোমস, অ্যানিমেটর হায়াও মিয়াজাকি, ফরমুলা ওয়ান ড্রাইভার ম্যাক্স ভেরস্টাপেন, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই, ভারতীয় অভিনেত্রী আলিয়া ভাট ও ব্রিটিশ পপ তারকা ডুয়া লিপা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Ants cannot fly due to lack of money

টাকার অভাবে চলতে পারছে না ‘পিপীলিকা’

টাকার অভাবে চলতে পারছে না ‘পিপীলিকা’ বাংলা ভাষায় বিশ্বের প্রথম সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকার লোগো। ছবি: পিপীলিকা
অর্থ সংকটে ধুঁকছে শাবির সাড়া জাগানো চার উদ্ভাবন। তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বিশ্বের একমাত্র বাংলা সার্চ ইঞ্জিন ‘পিপীলিকা’। প্লে-স্টোরে থাকলেও নিস্ক্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ‘একুশে বাংলা কি-বোর্ড’। ফান্ডিং সংকটে আটকে গেছে দ্রুত ক্যানসার শনাক্তের ‘ননলিনিয়ার অপটিকস’ ডিভাইসটিও। অর্থ ও জনবলের অভাবে এগোতে পারেনি বাংলায় কথা বলা রোবট ‘রিবো’।

২০১৩ সালে বিশ্বের প্রথম বাংলা সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করে সাড়া ফেলে দেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। এই সার্চ ইঞ্জিনের নাম দেয়া হয় ‘পিপীলিকা’। তবে গত তিন বছর ধরে থমকে আছে এর কার্যক্রম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থ সংকটে সার্চ ইঞ্জিনটির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

কেবল সার্চ ইঞ্জিন ‘পিপীলিকা’ই নয়, একই অবস্থা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ‘একুশে বাংলা কি-বোর্ড’-এরও। প্লে-স্টোরে অ্যাপটি থাকলেও তা একপ্রকার নিস্ক্রিয়। দ্রুত ক্যানসার শনাক্তের সম্ভাবনাময় ‘ননলিনিয়ার অপটিকস’ ডিভাইসটিও অর্থ সংকটে আটকে গেছে। করোনা মহামারি এবং অর্থ ও জনবলের অভাবে এগোতে পারেনি বাংলায় কথা বলতে পারা রোবট ‘রিবো’।

দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তেত্রিশ বছর আগে সিলেটে প্রতিষ্ঠিত হয় শাহজালা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কিছু উদ্ভাবন সকলের প্রশংসা কুড়ায়। উদ্ভাবনী কার্যক্রমের মাধ্যমে দ্রুত দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠে পরিণত হয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে গত কয়েক বছর ধরেই নেই নতুন কোনো উদ্ভাবন। এমনকি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে থমকে আছে পুরনোগুলোও।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ওপর অ্যাকাডেমিক চাপ অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে তারা গবেষণা, উদ্ভাবনসহ সৃজনশীল কাজে যুক্ত হতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকেও এ ব্যাপারে এখন কোনো উৎসাহ দেয়া হয় না।

পিপীলিকা

২০১৩ সালের ১৩ এপ্রিল ১১ জন ডেভেলপার মিলে তৈরি করেন বিশ্বের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র বাংলা সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকা। পিপীলিকার প্রকল্প পরিচালনায় ছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের তৎকালীন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। মুখ্য গবেষক ও টিম লিডার হিসেবে কাজ করেন মো. রুহুল আমীন সজীব।

শাবির আইআইসিটি বিভাগ জানায়, বাংলা সার্চ ইঞ্জিন ‘পিপীলিকা’ সংক্রান্ত কিছু সার্ভিস গ্রহণের বিনিময়ে সরকারের এটুআই (অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন) প্রোগ্রাম থেকে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ৮ কিস্তিতে মোট ১ কোটি ৭১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৬৬ টাকা দেয়া হয়। শেষ কিস্তির (৯ম কিস্তি) ২১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৫৩ টাকা পিপীলিকাকে পরিশোধের আগেই সরকারের এটুআই প্রোগ্রামের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর থেকেই অর্থ সংকটে পিপীলিকা বন্ধ রয়েছে।

আগের মতো ৫-৬ জন পূর্ণকালীন আইটি/সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের মাধ্যমে কাজ করানোর জন্য মাসিক ৩-৪ লাখ টাকা অনুদান পেলে পিপীলিকার উন্নয়ন কাজ চলমান রাখা যাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এই প্রজেক্টটির বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে টিম লিডার মো. রুহুল আমীন সজীব বলেন, ‘আমি এখন এই প্রকল্পের সঙ্গে সংযুক্ত নই।’

শাবির আইআইসিটির পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রজেক্টের ফান্ডিং আসত সরকারের কাছে থেকে। ২০২০ সাল থেকে আমাদের প্রজেক্ট সংশ্লিষ্ট সবকিছু সঠিক সময়ে পাঠালেও কোনো অর্থ পাইনি। সর্বশেষ আমাদের প্রায় ২২ লাখ টাকা আটকে আছে।’

তিনি বলেন, ‘টাকা ছাড়া তো আমরা গবেষক ও কর্মচারীদের কাজ করাতে পারি না। আমরা যতটুকু সম্ভব দিয়েছি। তবুও তাদের বেশ কিছু টাকা বকেয়া রয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের আর টাকা দেয়া হয়নি। আবার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও কিছু বলা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আর্থিক সাপোর্ট না পাওয়ায় কারণে বর্তমানে তা বন্ধ আছে। বিষয়টি নিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী, সচিব ও এটুআইয়ের পিডিসহ সকলের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি, কিন্তু কাজ হয়নি। আমাদের সব রিসোর্স আছে। সরকারের কাছে থেকে আবার সাপোর্ট পেলে আমরা তা সচল করতে পারব।’

এটুআই প্রোগ্রামের তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, “যতটুকু মনে পড়ে ‘পিপীলিকা’ সার্চ ইঞ্জিনটা যেমন প্রত্যাশা করা হয়েছিল, সেই মানের হয়নি। এজন্য ফান্ডিং বন্ধ করা হয়। এ বিষয়ে বর্তমান পিডি ভালো বলতে পারবেন।’

বর্তমান পিডি (যুগ্মসচিব) মো. মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, ‘এটি আমার জানা নাই। এটা আসলে কী অবস্থায় আছে, খোঁজ নিয়ে জানার চেষ্টা করব।’

একুশে বাংলা কি-বোর্ড

কি-বোর্ড নিজেই বুঝে ফেলবে ব্যবহারকারী কী লিখতে চাইছেন- ২০১৮ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন এমন কি-বোর্ড কি-বোর্ড উদ্ভাবন করেন শাবি শিক্ষার্থীরা। এর নাম দেয়া হয় ‘একুশে বাংলা কিবোর্ড’।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংযোজনের পাশাপাশি দ্রুত টাইপিং ও স্পর্শ করে লেখার ব্যবস্থা রয়েছে এ কি-বোর্ডে। ফলে টাইপ না জানলেও যে কেউ সহজেই বাংলা টাইপিং শিখতে পারে এর মাধ্যমে।

২০২০ সালে কি-বোর্ডটির উদ্ভাবক তৎকালীন শাবির সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী বিদেশে চলে গেলে সেটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। প্লে-স্টোরে অ্যাপটি থাকলেও নিস্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে।

প্রজেক্টটির বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমাদের কাছে এই প্রজেক্টের কোনো আপডেট নেই। আমি দেশের বাইরে চলে যাওয়ার পর এ ব্যাপারে আর কোনো কাজ করা হয়নি।’

ননলিনিয়ার অপটিকস

রক্তের নমুনা পরীক্ষা করার মাধ্যমে ক্যানসার শনাক্তকরণ পদ্ধতি উদ্ভাবনেও রয়েছে শাবিপ্রবির সাফল্য। অল্প খরচে ও কম সময়ে ‘ননলিনিয়ার অপটিকস’ নামের উদ্ভাবিত এ পদ্ধতিতে রক্তের একটি পরীক্ষার মাধ্যমে মাত্র ১০ থেকে ২০ মিনিটেই ক্যানসার শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে দাবি ছিল উদ্ভাবকদের।

হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (হেকেপ) আওতায় শাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সেসময়কার অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হকের নেতৃত্বে একদল গবেষক ক্যানসার শনাক্তকরণের এ সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন।

গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন- অধ্যাপক ড. শরীফ মো. শরাফ উদ্দিন, মনজ কান্তি বিশ্বাস ও এনামুল হক।

প্রজেক্টটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শরীফ মো. শরাফ উদ্দিন বলেন, ‘ফান্ডিংসহ অনেক সমস্যা আছে। মূলত ফান্ডিংয়ের জন্য আমরা আটকে গেছি। বিশ্বব্যাংকের একটি প্রজেক্ট শিগগিরিই চালু হবে। সম্ভবত পিডি নিয়োগ হয়ে গেছে। ওটা হলেই আমরাও ফান্ড পেয়ে যাব।

‘বর্তমানে আপগ্রেডের কাজ চলছে। ফান্ডিং পেলে আমরা ক্লিনিক্যালি ব্যবহারের উপযুক্ত করে তুলব।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল, কোনো ডিভাইসের মাধ্যমে এটাকে সর্বসাধারণের ব্যবহাপযোগী করে তোলা। হেকাপের আওতায় কাজটি চলছিল, পরে হিট আসার কথা ছিল। সেভাবে প্রস্তুতিও নিয়েছি আমরা। পরবর্তী প্রজেক্ট পেলে আমরা বাকি কাজ করে ফেলতে পারব।’

প্রকল্পটি একেবারে বন্ধ হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কাজ আমাদের মতো করে চলছে।’

রোবট রিবো

২০১১ সাল থেকে শাবির তৎকালীন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও শিক্ষার্থী নওশাদ সজীব উদ্যোগে ১১ জনের একটি দল রোবট নিয়ে কাজ শুরু করে।

২০১৫ সালে বার্ষিক সায়েন্স ফিকশন ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি রোবোসাস্টকে মানবসদৃশ রোবট তৈরির করতে ১ লাখ টাকা অনুদান দেয়। দলটি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো মানবসদৃশ রোবট তৈরি করে, যার নাম দেয়া হয় ‘রিবো’।

রোবটটি ২৪ ডিগ্রি কোণে স্বাধীনভাবে ঘুরতে, নাচতে, মুখের অঙ্গভঙ্গির প্রকাশ, হ্যান্ডশেক, হাত উপর-নিচে তোলা, বাংলায় কথা বলা, এমনকি নিজের নামও বলতে পারত। বাংলাদেশ ও মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারত।

রোবটটি তৈরিতে নেতৃত্ব দেয়া শাবির সিএসই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নওশাদ সজীব বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন।

দলের সদস্য মেহেদী হাসান রূপক বলেন, ‘আমরা ঢাকায় প্রোগ্রাম করেছিলাম। সেখানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। তিনি বলেছিলেন ফান্ডিং করবেন। আমরা তখন উনাকে একটা আবেদনপত্রও দিয়েছিলাম। পরে করোনা ও জনবল সংকটে আর এগোতে পারিনি। এর মধ্যে আমাদেরও পড়ালেখা শেষ হয়ে যায়।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন বলেন, ‘এই উদ্ভাবনগুলোর বর্তমান অবস্থার বিষয়ে আমি খোঁজখবর নেব। প্রয়োজনে সরকারের উচ্চ পর্যায়েও আমরা কথা বলব।’

উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত কর্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
School students invention to prevent train accidents

ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে স্কুলছাত্রের উদ্ভাবন

ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে স্কুলছাত্রের উদ্ভাবন ‘ট্রেন সিকিউরিটি সিস্টেম’ উদ্ভাবন করেছে চুয়াডাঙ্গার ফার্স্ট মাল্টিমিডিয়া মডেল স্কুলের ছাত্র জাহিদ। ছবি: নিউজবাংলা
জাহিদ বলে, ‘এই সিস্টেম আগুন লাগা প্রতিরোধ করবে। ট্রেনের প্রতিটি বগিতে থাকা ওয়াশরুমের পানিকে কাজে লাগিয়ে ট্রেনে লাগা আগুন নেভানো সম্ভব। ট্রেনের কোনো বগিতে যখনই আগুন লাগবে, সেই মুহূর্তে ফায়ার ডিটেকশন সেন্সর অ্যাক্টিভেট হয়ে যাবে এবং পুরো ট্রেনে পানি ছড়িয়ে গিয়ে আগুন নিভে যাবে।’

সম্প্রতি ঢাকার গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের আগুনে নারী ও শিশুসহ চারজন নিহতের ঘটনা নাড়া দেয় পুরো দেশকে। এ ছাড়াও গত কয়েক মাসে ট্রেনে আগুন, ট্রেনের স্লিপার খুলে নেয়া এবং অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা সংবাদ শিরোনাম হয়েছে বহুবার।

এসব দুর্ঘটনা রোধের উদ্দেশ্যে ‘ট্রেন সিকিউরিটি সিস্টেম’ উদ্ভাবন করেছে চুয়াডাঙ্গার ফার্স্ট মাল্টিমিডিয়া মডেল স্কুলের ছাত্র জাহিদ হাসান জিহাদ।

দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ চত্বরে মঙ্গলবার আয়োজিত ৪৫তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ ও বিজ্ঞান মেলায় ফার্স্ট মাল্টিমিডিয়া মডেল স্কুলের স্টলে ট্রেন সিকিউরিটি সিস্টেম এবং এআই বেইজড আর্টিফিশিয়াল রোবট প্রদর্শন করে জাহিদ।

সিকিউরিটি সিস্টেমটি সম্পর্কে জানতে কথা হয় জাহিদের সঙ্গে।

সে বলে, ‘বর্তমানে হরতাল-অবরোধের সময় ট্রেনে আগুন দেয়া, ট্রেনের স্লিপার খুলে নেয়া ও অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের কারণে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে অনেক। যদি কোনো দুর্গম জায়গায় ট্রেনে আগুন লাগে তাহলে ওই মুহূর্তে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছানো সম্ভব হয় না। ফলে যদি তাৎক্ষণিক আগুন না নেভানো যায় তাহলে পুরো ট্রেনে আগুন লেগে যাবে।’

জাহিদ বলে, ‘এই সিস্টেম আগুন লাগা প্রতিরোধ করবে। ট্রেনের প্রতিটি বগিতে থাকা ওয়াশরুমের পানিকে কাজে লাগিয়ে ট্রেনে লাগা আগুন নেভানো সম্ভব। ট্রেনের কোনো বগিতে যখনই আগুন লাগবে, সেই মুহূর্তে ফায়ার ডিটেকশন সেন্সর অ্যাক্টিভেট হয়ে যাবে এবং পুরো ট্রেনে পানি ছড়িয়ে গিয়ে আগুন নিভে যাবে। সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনে অ্যালার্ম বেজে উঠবে এবং ট্রেন থেমে যাবে।’

এতে শত শত মানুষের প্রাণ ও কোটি টাকার সম্পদ বাঁচবে বলে জানায় জাহিদ।

জাহিদ এ সিস্টেম সম্পর্কে আরও জানায়, দেশে ট্রেন লাইন অনেক সময় গ্রাম কিংবা বাজারের ভেতর দিয়ে যায়। এই সিস্টেমে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বা বাজারের ভেতর যে রেললাইন রয়েছে তার ৫০০ মিটার পরপর পোলের ব্যবস্থা আছে। যেখানে ট্রেন আসার ৫০০ মিটার আগে থেকেই সেই পোলগুলোতে অ্যালার্ম বেজে উঠবে।

এ ছাড়াও এ সিস্টেমে ট্রেনের স্লিপার খুলে নেয়া মাত্রই ট্রেন চালক সংকেত পাবেন এবং ট্রেন নিজে থেকেই থেমে যাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত ট্রেন লাইন ঠিক না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো ট্রেন চলবে না।

ইংরেজি-বাংলায় কথা বলা রোবট সম্পর্কে জাহিদ বলে, ‘আমরা দীর্ঘ সাত মাসের প্রচেষ্টায় এআই বেইজড আর্টিফিশিয়াল রোবটটি তৈরি করতে পেরেছি। এ রোবটটি ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষায় কথা বলে। যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো প্রয়োজনে রোবটটি ব্যবহার করতে পারবেন।’

জাহিদের উদ্ভাবন সম্পর্কে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘জাহিদ হাসান জিহাদ খুব ছোট থেকেই ছোটো-খাটো বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে আসছে। আমাদের স্কুলের কম্পিউটার ল্যাবে বিজ্ঞানের শিক্ষকদের সহযোগিতায় ট্রেন সিকিউরিটি সিস্টেম এবং এআই বেইজড আর্টিফিশিয়াল রোবট তৈরি করেছে সে।’

দামুড়হুদা উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার রাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘ক্ষুদে বিজ্ঞানী জিহাদের এমন উদ্ভাবনে আমি মুগ্ধ। তার উদ্ভাবন দেখে অন্য শিক্ষার্থীরাও উৎসাহিত হবে। আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করব।’

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোকসানা মিতাও জাহিদের এ উদ্ভাবনের প্রশংসা করেন।

আরও পড়ুন:
প্লাস্টিক-পলিথিনকে জ্বালানিতে রূপান্তর!
মিষ্টি আলুর নতুন জাতে ফলন বিপ্লবের আশা
বিনায় নতুন জাতের বরই, অসময়ে হবে ফল
বঙ্গবন্ধু ১০০ ধান: পরীক্ষামূলক চাষেই সফলতা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
3 day long Robofest at CUB

সিইউবিতে ৩ দিনব্যাপী রোবোফেস্ট

সিইউবিতে ৩ দিনব্যাপী রোবোফেস্ট কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ চত্বরে সোমবার বিকেলে রোবোফেস্ট উদ্বোধন করেন সিইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান শাহনুল হাসান খান। ছবি: নিউজবাংলা
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে শুরু হয়েছে রোবোফেস্ট। তিন দিনের এ ইভেন্ট চলবে বুধবার পর্যন্ত।

ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগ, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (সিইউবি) ক্লাব ইলেক্ট্রো এবং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশনের যৌথ আয়োজনে তিন দিনের রোবোফেস্ট সংস্করণ আলফা অনুষ্ঠিত হচ্ছে সিইউবিতে।

সোমবার বিকেলে সিইউবি চত্বরের লেভেল-৯ এ সিইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও প্রধান অতিথি হিসেবে শাহনুল হাসান খান ফেস্টের উদ্বোধন করেন। এটি চলবে বুধবার পর্যন্ত।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এইচ এম জহিরুল হক, ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আক্তার হোসেন।

ফেস্টে সভাপতিত্ব করেন ইইই-এর প্রধান, সিআরআই-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. এমডি শাহরুখ আদনান খান। ক্লাব ইলেক্ট্রোর উপদেষ্টা মো. আমানত হোসেন, সহউপদেষ্টা মো. সাদরিবুল হাসান ও মো. নাসিম তাজ ফ্যাকাল্টি, সকল ইইই অনুষদ ফেস্টের আয়োজক ছিলেন।

আরও পড়ুন:
সিইউবিতে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ঐশী
সিইউবি শিক্ষার্থীদের নিয়ে পদ্মা ব্যাংকের রোড শো
ভর্তি মেলায় ৫০ শতাংশ ছাড় কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির
বিদ্যুৎকেন্দ্রে শিল্প প্রশিক্ষণ নিল কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা
পাইথন-মেশিন লার্নিংয়ে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন সিইউবির ইইই শিক্ষার্থীদের

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Transforming plastic polyethylene into fuel

প্লাস্টিক-পলিথিনকে জ্বালানিতে রূপান্তর!

প্লাস্টিক-পলিথিনকে জ্বালানিতে রূপান্তর! স্বল্প খরচে মাটি দিয়ে অনুঘটকের মাধ্যমে পাইরোলাইসিস পদ্ধতিতে প্লাস্টিক ও পলিথিন থেকে জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপন্ন করতে সফল হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান। ছবি: নিউজবাংলা
গবেষক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এই জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে। সরকারের কাছ থেকে গবেষণার জন্য বড় আকারের তহবিল পেলে বড় আকারে উৎপাদনের জন্য একটি প্লাস্টিক রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট স্থাপন করতে পারব।’

প্লাস্টিক-পলিথিন থেকে তেল-গ্যাস উৎপাদনের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান।

স্বল্প খরচে মাটি দিয়ে অনুঘটকের মাধ্যমে পাইরোলাইসিস পদ্ধতিতে প্লাস্টিক ও পলিথিন থেকে জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপন্ন করতে সফল হয়েছেন তিনি। পরিবেশ দূষণকারী বর্জ্য প্লাস্টিককে তরল জ্বালানিতে রূপান্তরের গবেষণা প্রকল্পের অংশ হিসেবে গবেষণায় তিনি এই সাফল্য পেয়েছেন।

গবেষণা প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্যাটালিস্ট বা অনুঘটকের মাধ্যমে পাইরোলাইসিস পদ্ধতিতে প্লাস্টিক ও পলিথিন থেকে জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপন্ন হয়। প্রথমে মাটি থেকে সিলিকা অ্যালুমিনা ভেঙে ক্যাটালিস্ট তৈরি করা হয়েছে। সেই ক্যাটালিস্ট দিয়ে প্লাস্টিককে ভেঙে ডিজেল, পেট্রল, কেরোসিন জাতীয় জ্বালানি তেল তৈরি করেছি। এই জ্বালানি তেল দিয়ে ছোট ও মাঝারি নৌকার ইঞ্জিনও চালনা করা সম্ভব। এ ছাড়া জেনারেটরের মাধ্যমে এ জ্বালানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।’

প্লাস্টিক-পলিথিনকে জ্বালানিতে রূপান্তর!

প্লাস্টিক ও পলিথিন থেকে জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপন্ন করতে সফল হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান। ছবি কোলাজ: নিউজবাংলা

তিনি বলেন, ‘আমাদের চারপাশে অনেক প্লাস্টিক বর্জ্য পড়ে থাকে। এসব পরিবেশের জন্য হুমকি এবং মাটির উর্বরতা নষ্ট করে। এই প্লাস্টিক পলিথিন ধুয়ে পরিষ্কার করে জ্বালানি উৎপাদনের উপযোগী করা সম্ভব। মাটি ও প্লাস্টিক দুটি উপাদানই আমাদের হাতের কাছে পাওয়া যায়। এতে করে খুব অল্প খরচে সরকার চাইলে জ্বালানি সংকটের এই সময়ে তেল উৎপাদন করতে পারবে।’

মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ‘এই জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে। কারণ জ্বালানির বেশির ভাগ অংশ ডিজেল, পেট্রল ও কেরোসিন থেকে আসে। সরকারের কাছ থেকে গবেষণার জন্য বড় আকারের তহবিল পেলে বড় আকারে উৎপাদনের জন্য একটি প্লাস্টিক রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট স্থাপন করতে পারব। আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক-পলিথিন রয়েছে। ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদী এবং অন্যান্য নদী ও খাল থেকে প্লাস্টিক সংগ্রহ করে তা ডিজেল, পেট্রল ও কেরোসিনে রূপান্তরিত করা যাবে। সেই সঙ্গে পরিবেশের ওপর বর্জ্যের প্রভাবও কমে যাবে।’

এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা যাবে বলে দাবি গবেষকদের। বর্তমানে প্লাস্টিক দূষণ একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রকল্পের মাধমে দূষণ কাটিয়ে বর্জ্য প্লাস্টিককে জ্বালানিতে রূপান্তর করে এর সংকটও মোকাবেলা করা যাবে। এই জ্বালানিকে বাণিজ্যিকভাবেও উৎপাদন করা যাবে বলে জানান এই অধ্যাপক।

গবেষণা প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ল্যাবে এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তহবিল বা বাজেট পেলে বড় আকারে গবেষণা করার চেষ্টা করব।’

গবেষণা প্রকল্পটি ‘ইউরোপিয়ান জার্নাল অফ ইনঅর্গানিক কেমিস্ট্রি, ওয়াইলি’ নামের একটি বিখ্যাত আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল একক ব্যবহারের বর্জ্য পলিথিনকে জ্বালানিতে রূপান্তর করে পরিবেশ রক্ষা করা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে এই গবেষণা প্রকল্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাফীস আহমেদ, ড. জয়ন্ত কুমার সাহা এবং রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. সুব্রত চন্দ্র রায় সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। এ ছাড়া একই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আরিফুল রহমান ও জুনায়েদ মাহমুদ শুভ গবেষণায় সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Hand grown artificial nose placed on womans face

হাতে গজানো কৃত্রিম নাক নারীর মুখে স্থাপন

হাতে গজানো কৃত্রিম নাক নারীর মুখে স্থাপন নারীর হাতে প্রোসথেটিক পদ্ধতির মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে নাক তৈরি করা হয়। ছবি: তুলুজ ইউনিভার্সিটি হসপিটাল
ন্যাজাল ক্যাভিটি ক্যানসারে আক্রান্ত দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর তুলুজের বাসিন্দা ওই নারী ২০১৩ সালে রেডিওথেরাপি ও ক্যামোথেরাপি নেয়ার সময় নাক হারান। তখন নাকের স্থানে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এরপর চিকিৎসকদল তার হাতে কৃত্রিম নাক তৈরির কাজ শুরু করেন।

নারীর হাতে থ্রি-ডি প্রিন্টারের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে নাক তৈরি করে তা সফলভাবে তার মুখমণ্ডলে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ফ্রান্সের এক দল চিকিৎসক এমন অসাধ্য সাধন করেছেন। ক্যানসারের চিকিৎসায় নাকসহ মুখের একাংশ হারিয়েছিলেন ওই নারী।

ন্যাজাল ক্যাভিটি ক্যানসারে আক্রান্ত দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর তুলুজের বাসিন্দা ওই নারী ২০১৩ সালে রেডিওথেরাপি ও ক্যামোথেরাপি নেয়ার সময় তার নাক হারান। তখন নাকের স্থানে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এর পর প্রায় এক দশক তিনি নাক ছাড়াই দুর্বিষহ জীবন কাটিয়েছেন।

একপর্যায়ে চিকিৎসকদল তার হাতে কৃত্রিম নাক তৈরির কাজ শুরু করেন। প্রোসথেটিক পদ্ধতির মাধ্যমে এই নাক তৈরিতে কয়েকবার তারা ব্যর্থও হয়েছিলেন।

তুলুজ ইউনিভার্সিটি হসপিটালের বিশেষজ্ঞরা ওই নারীর শরীর থেকে কোষ নিয়ে থ্রি-ডি ফরম্যাটে অবয়ব তৈরি করে তা গজানোর জন্য স্থাপন করা হয় তার বাম হাতে। সেটি ধীরে ধীরে নাকের আকৃতি পায়। দুই মাসের মধ্যে এটি প্রতিস্থাপনের জন্য পুরোপুরি তৈরি হয়।

তুলুজ ইউনিভার্সিটি হসপিটাল কর্তৃপক্ষ জানায়, কৃত্রিমভাবে তৈরি করা অঙ্গটি সফলভাবে প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচারে অধ্যাপক অ্যাগনেস ডুপ্রেট-বোরিস এবং ডা. বেঞ্জামিন ভাইরেল নেতৃত্ব দেন। জটিল এই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই নাকের সঙ্গে শরীরের রক্তনালীর সংযোগ দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালন শুরু হয়েছে কৃত্রিম নাকে।

আরও পড়ুন:
গর্ভে শিশুর হৃদযন্ত্রে ত্রুটি সারানো কতটা সম্ভব?
নাক দিয়েও দেখতে পায় কুকুর
ঢাবির গবেষণা মেলায় আরবি হরফের কঙ্কাল কীভাবে
সন্তান পরিবর্তন আনে বাবাদের মস্তিষ্কেও
হঠাৎ ব্রেকআপ? সামলাবেন কীভাবে?

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Schneider Electric organized Innovation Day in Dhaka

ঢাকায় ‘ইনোভেশন ডে’ আয়োজন করেছে স্নাইডার ইলেকট্রিক

ঢাকায় ‘ইনোভেশন ডে’ আয়োজন করেছে স্নাইডার ইলেকট্রিক স্নাইডার ইলেকট্রিকের আয়োজনে ঢাকায় হলো ইনোভেশন ডে। ছবি: সংগৃহীত
স্নাইডার ইলেকট্রিকের ইনোভেশন ডে আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল গ্রাহকদের জন্য একটি সহযোগী প্ল্যাটফর্ম দেয়া, পাশাপাশি শিল্পের সর্বশেষ প্রযুক্তি প্রবণতাগুলো দেখানো।

এনার্জি ম্যানেজমেন্ট এবং অটোমেশন ট্রান্সফরমেশনের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান স্নাইডার ইলেকট্রিক সম্প্রতি ইলেকট্রিসিটি ৪.০ কনসেপ্টকে পরিচিত করাতে ঢাকায় আয়োজন করেছে ‘ইনোভেশন ডে’।

সরকারি কর্মকর্তা, গ্রাহক, চ্যানেল পার্টনার এবং পরিবেশকরা এই আয়োজন অংশ নেন। ভবিষ্যতের একটি টেকসই নেট-জিরো পাওয়ার সল্যুশন এবং প্রযুক্তির বিভিন্ন ফিচারগুলো দেখানো হয় আয়োজনে।

ইলেকট্রিসিটি ৪.০ হলো অল-ইলেকট্রিক এবং অল-ডিজিটালের সমন্বয় যা এনার্জিকে পরিষ্কার, সবুজ এবং টেকসই করা।

ইলেট্র্রিফিকেশন এনার্জিকে সবুজ করে তোলে এবং ডিজিটাল এনার্জিকে স্মার্ট এনার্জিতে পরিণত করে, তাই ইলেকট্রিসিটি ৪.০ হলো আরও টেকসই এবং স্থিতিস্থাপক ভবিষ্যতের এনার্জির সমাধান।

স্নাইডার ইলেকট্রিকের ইনোভেশন ডে আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল গ্রাহকদের জন্য একটি সহযোগী প্ল্যাটফর্ম দেয়া, পাশাপাশি শিল্পের সর্বশেষ প্রযুক্তি প্রবণতাগুলো দেখানো।

ভবিষ্যতে জিরো কার্বন নিঃসরণের যে উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, ইনোভেশন ডে আয়োজন ডিজিটাল সেই টেকসই পদ্ধতি গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কাজ করবে।

স্নাইডার ইলেকট্রিক ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের জোন প্রেসিডেন্ট, ইন্ডিয়া, অ্যান্ড সিইও এবং এমডি অনিল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে ক্রমাগত একটা উপস্থিতি বাড়াতে চাই এবং আমরা চাই সামনের দিনে একটা টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে। আমরা গত ২০ বছর থেকে বংলাদেশে প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছি এবং সেই ধারাবাহিকতায় স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, বাসাবাড়ির জন্য সোল্যার ইলেকট্রিফিকেশনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছি।

‘এনার্জি ইফিসিয়েন্সি হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। ভবিষ্যৎ সমীকরণ খুব সহজ। বাংলাদেশের প্রয়োজন হবে ডিজিটাল ইফিসিয়েন্সি, ডিকার্বনাইজেশনের জন্য ইলেকট্রিক এবং টেকসই স্মার্ট ও একটি গ্রিন এনার্জি। আমরা ডিজিটাল রূপান্তরের এই পথচলায় পছন্দের প্রথম অংশীদার হতে চাই।’

স্নাইডার ইলেকট্রিক বাংলাদেশের পরিচালক, জেনারেল ম্যানেজমেন্ট জহির আহমেদ বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল এবং স্থায়িত্ব ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এর প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। বিদ্যুতের মাথাপিছু ব্যবহার ক্রমাগত বৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭% ধরে রেখেছে।

‘২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ৩৪ হাজার মেগাওয়াট এনার্জির প্রয়োজন হবে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, বিদ্যুতের খরচে এই বিশাল উল্লম্ফন গ্রিন এবং নির্ভরযোগ্য, এবং আমরা এই যাত্রায় আমাদের অংশীদার ও গ্রাহকদের ক্ষমতায়ন করতে কাজ করে যাচ্ছি।’

বাংলাদেশের উৎপাদন খাত ক্রমাগত বেড়েই চলেছে এবং দেশে একটি শক্তিশালী শিল্পপ্রবৃদ্ধি ঘটছে, যা এনার্জির চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে। এনার্জির চাহিদা মেটাতে এবং সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে, নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য ডিজিটাল এবং টেকসই রূপান্তর প্রয়োজন।

বিষয়টি মাথায় রেখে, বাংলাদেশ সরকার প্রত্যেকের এনার্জির অ্যাক্সেস নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। গত কয়েক বছরে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে প্রশংসনীয় অগ্রগতি হয়েছে।

আরও পড়ুন:
ঢাকায় ‘ইনোভেশন ডে’ করল স্নাইডার ইলেকট্রিক

মন্তব্য

p
উপরে