ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ময়লাবাহী গাড়ির সংখ্যা ৩৩০টি। অথচ স্থায়ী চালক আছেন অর্ধেকেরও কম, ১২৯ জন। যান্ত্রিক ত্রুটি না থাকলে শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সব গাড়িই ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়। তাহলে বাকি অর্ধেক গাড়ি চালান কারা?
বাস্তবতা হলো, দুই সিটির অর্ধেকের বেশি গাড়ি চালান মাস্টাররোল ও দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োজিত চালকরা। স্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত চালকদের বাইরে যারা ময়লা বহনকারী ভারী ট্রাকগুলো চালান, তাদের একটা বড় অংশই অপেশাদার। তদের অধিকাংশেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।
আবার যারা স্থায়ী নিয়োগ পেয়ে চালক হিসেবে আছেন, তাদেরও একটা অংশ নিজে গাড়ি না চালিয়ে চাবি তুলে দেন অন্যের হাতে। সেই প্রক্সি চালকও আবার লাইসেন্সধারী নন।
দুই সিটির পরিসংখ্যান ও সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, চালক সংকট এবং স্থায়ী চালকদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে ময়লাবাহী ভারী ট্রাকগুলো চালাচ্ছেন অদক্ষরা। এর জনবহুল নগরে হামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ মানুষ।
গত সপ্তাহে ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নটর ডেম কলেজের এক শিক্ষার্থী এবং একজন সাবেক সংবাদকর্মী মারা যান।
নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, অপেশাদার এবং লাইসেন্সবিহীন ব্যক্তিদের দিয়ে ময়লাবাহী গাড়িগুলো চালানোর কারণে সড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে। সাম্প্রতিক দুটি মৃত্যু সেটাই প্রমাণ করে।
গত ২৪ নভেম্বর গুলিস্তানে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে হল মার্কেটের পাশের সড়কে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান নটর ডেম কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান।
ঘটনাস্থল থেকেই রাসেল নামে চালককে আটক করা হয়। রাসেলের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, তিনি মাস্টাররোলে একসময় পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সেই চাকরি আগেই চলে গেছে। তিনি হারুন নামে একজনের কাছ থেকে গাড়িটা নিয়ে চালাচ্ছিলেন।
পুলিশ ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, হারুনও দুর্ঘটনা ঘটানো গাড়িটির প্রকৃত চালক নন। তিনিও পরিচ্ছন্নতাকর্মী। হারুন গাড়িটি নিয়েছেন স্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত চালক ইরানের কাছ থেকে। রাসেল ও হারুন গ্রেপ্তার হলেও পলাতক রয়েছেন ইরান।
নাঈমের মৃত্যুর পর থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আবার আন্দোলন শুরু করেন বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালেই বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর পান্থপথে আহসান কবীর খান নামে এক সাবেক সংবাদকর্মী মারা যান। উত্তর সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী একটি গাড়ির চাপায় তিনি প্রাণ হারান।
চালক হানিফ গাড়ি ফেলে পালিয়ে গেলেও গত শনিবার তাকে চাঁদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গ্রেপ্তারের পর হানিফ র্যাবকে জানিয়েছেন, তিনি উত্তর সিটি করপোরেশনের বেতনভুক্ত চাকরিজীবী নন। সিটি করপোরেশনের গাড়ি থেকে তেল চুরি করে বিক্রিই হানিফের আয়ের উৎস।
দক্ষিণে গাড়ি ১৮৫, চালক ৯৫
বাসা, মার্কেট, প্রতিষ্ঠান থেকে ময়লা নিয়ে রাখা হয় সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে। সেখান থেকে ময়লা সংগ্রহ করে ময়লাবাহী ভারী ট্রাক মাতুয়াইলে ভাগাড়ে ফেলে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, তাদের ময়লাবাহী ভারী ট্রাকের সংখ্যা ১৮৫টি। এর বিপরীতে তাদের নিয়োগ করা চালকের সংখ্যা ৯৫। এই ৯৫ জনের মধ্যে ১৯ জন গত মাসে নিয়োগ পেয়েছেন।
বাকি গাড়িগুলো দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন কর্মচারী দিয়ে চালানো হয়।
সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডের পাশে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী গাড়ির স্ট্যান্ড। সোমবার ওই স্ট্যান্ডে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন চালকের সঙ্গে। তারা জানান, পর্যাপ্ত চালক না থাকায় সিটি করপোরেশনের যেসব কর্মচারী গাড়ি চালাতে পারেন, তাদের দিয়ে ভারী ট্রাকগুলো চালানো হয়।
এ ছাড়া স্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত কয়েকজন অসাধু চালক নিজেরা না চালিয়ে অন্যকে দিয়ে গাড়ি চালান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একজন পুরোনো চালক নিউজবাংলাকে বলেন, যারা প্রকৃত চালকের বদলি হিসেবে চালান, তারা কিছু টাকা ওই চালকের কাছ থেকে পান। বাকি টাকা বরাদ্দ তেলের অংশ বিক্রি করে তারা আয় করেন। সিটি করপোরেশন এদের কোনো টাকা দেয় না।
মহিউদ্দিন নামে এক চালক বলেন, ‘রাতে জ্যাম ঠেলে দুই থেকে তিনটি ট্রিপ দেয়া যায়। প্রতি ট্রিপ পৌঁছানোর পর স্লিপ দেয়া হয়। সেই স্লিপ অনুযায়ী আমরা তেল পাই। ট্রিপ প্রতি গড়ে এক থেকে দুই লিটার তেল থাকে।’
অনেক সময় গাড়ির কাজ নিজেকেই করাতে হয় বলে দাবি করেন এই চালক। এতে অনেক সময়ই তেল বিক্রি করে পাওয়া টাকা ও গাড়ি মেরামতের খরচ সমান সমান হয়ে যায়।
মো. আলী নামে এক চালক বলেন, ‘আমাদের চালকের সংখ্যা কম এটা সত্য। কিন্তু বর্তমান মেয়র উদ্যোগ নিলে এ সমস্যা থাকবে না। আমি ’৯৬ সাল থেকে গাড়ি চালাই। আমার গাড়ি কোনোদিন কাউকে দেইনি। অন্য কেউ দিলে সেটা আমার জানা নেই।’
এই চালকের সঙ্গে কথা বলার সময় এগিয়ে আসেন আরেক চালক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার পর নিয়োগ পাওয়া সব চালকই গাড়ি চালাচ্ছেন। আগে তাদের অনেকে নিজেরা না চালিয়ে অন্যদের দিয়ে গাড়ি চালাতেন।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের স্থায়ী নিয়োগ পাওয়া চালকদের বাইরে যারা গাড়ি চালান, তারাও সিটি করপোরেশনের কর্মচারী, অন্য কাজ করেন। বাড়তি হিসেবে দৈনিক মজুরিতে তারা ময়লার গাড়ি চালিয়ে থাকেন।’
দৈনিক মজুরিতে যারা গাড়ি চালান, তারা কত করে পান এবং প্রত্যেকের ভারী যান চালানোর লাইসেন্স আছে কি না সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি আবু নাছের।
চালক সংকটের মাঝে কীভাবে ময়লাবাহী গাড়িগুলো সচল রাখা হয়েছে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে চাননি দক্ষিণ সিটির মহাব্যবস্থাপক (পরিবহন) বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস।
নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটিতে বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসও রয়েছেন। গত ২৪ নভেম্বর গঠিত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন জমার আগে কোনো মন্তব্য করতে চান না বিপুল চন্দ্র।
উত্তরে গাড়ি ১৪৭, চালক ৩৪
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ময়লা বহনকারী গাড়ির সংখ্যা ১৪৭টি। তাদের মধ্যে স্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত চালক ৩৪ জন। এর বাইরে ৬৭ জন চালক আছেন, যারা মাস্টাররোলে চালক হিসেবে চাকরি করেন। বাকি ৪৬ জন দক্ষ শ্রমিক, যারা উত্তর সিটিতে চাকরি করেন। বাড়তি কাজ হিসেবে গাড়ি চালান।
১৪৭ জন চালকেরই গাড়ি চালানোর লাইসেন্স আছে বলে দাবি করেন ডিএনসিসির মহাব্যবস্থাপক(পরিবহন) মিজানুর রহমান। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক চালকের লাইসেন্স আছে। সেকেন্ডারি স্টেশন থেকে তারা রাতের বেলা গাড়িতে করে আমিনবাজার পেরিয়ে বুলিয়ারপুর ল্যান্ডফিল্ডে ময়লা ফেলে আসে।’
ময়লাবাহী গাড়িগুলো ভারী যান হলেও পান্থপথে গাড়িচাপায় একজনের মৃত্যুতে মারুফ নামে যে চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার ভারী গাড়ি চালানোর লাইসেন্স ছিল না। তার কাছে হালকা যান চালানোর লাইসেন্স ছিল।
তিনি কীভাবে ভারী গাড়ি চালাচ্ছিলেন-এমন প্রশ্নে মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি তদন্তনাধীন। তদন্ত শেষে বলা যাবে।’
ময়লাবাহী গাড়ি নিয়ে অব্যবস্থাপনার সঙ্গে যারা যারা যুক্ত, প্রত্যেককে বিচার এবং জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন বুয়েটের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সারওয়ার জাহান। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ময়লাবাহী গাড়িগুলোর বেপরোয়া চলাচল, উল্টোপথে যাওয়া, অদক্ষ চালক দিয়ে চালানো- সব অভিযোগ পুরনো। এর ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। শুধু চালক-শ্রমিক নন, যারা এই অব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত, তাদের চিহ্নিত করে বিচার করতে হবে। যাদের অবহেলায় এগুলো হচ্ছে, তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।'
কোনো ধরনের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ।
তিনি বলেছেন, ‘আমি কোনো দুর্নীতি করব না। কোনো দুর্নীতি প্রশ্রয়ও দেব না। আমি মানুষ হিসেবে ভুল করতেই পারি, তবে ভুল হলে ধরিয়ে দেবেন। আমার কাজের গতি যেন ত্বরান্বিত হয়, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নতুন উপাচার্য।
দায়িত্ব নিয়েই সবার প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আমি আপনাদেরই লোক, আমি বঙ্গবন্ধুর লোক, আমি প্রধানমন্ত্রীর লোক। আমাকে সবাই সহযোগিতা করবেন, ভুল হয়ে ধরিয়ে দেবেন। তবে কেউ আমাকে পিছু টানবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমি কারও অন্যায় আবদার শুনব না। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখাতে নয়, আমি আপনাদের বন্ধু হয়ে কাজ করতে চাই। আমি আপনাদের পাশে থেকে সব সমস্যা সমাধান করব।’
চিকিৎসকদের উদ্দেশে নতুন উপাচার্য বলেন, ‘আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করলেই আমি সবচেয়ে খুশি হব। অন্যকিছু দিয়ে আমাকে খুশি করা যাবে না। কেউ দায়িত্ব পালন করতে না পারলে দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে। যিনি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে পারবেন, তিনিই দায়িত্ব নেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ আমার বন্ধু। তিনি আমাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বিদায় নিয়েছেন। আমি শারফুদ্দিন আহমেদকে শুভেচ্ছা জানাই।’
ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি সুনির্দিষ্ট কোনো গ্রুপের লোক নই। আমি কোনো ধরনের গ্রুপে যেতে চাই না। এ বয়সে আমার কোনো গ্রুপিংয়ের প্রয়োজন নেই। আমাকে যে আস্থা এবং বিশ্বাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে পাঠিয়েছেন, আমি সেটাকে মূল্যায়ন করতে চাই।’
উদ্বোধনের দীর্ঘদিন পরও সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু না হওয়া প্রসঙ্গে নতুন উপাচার্য বলেন, ‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।’ এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উপাচার্য বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমার দায়বদ্ধতা আছে। আমি বিদেশ থেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক-ট্রেইনারদের নিয়ে এসে আমাদের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। আশা করি, সেবায় প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের অন্যতম জায়গায় অবস্থান করবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বিশ্বের অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা উপাচার্য হিসেবে তার একমাত্র অ্যাজেন্ডা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার প্রদান করেনি বলে শিক্ষামন্ত্রীর দাবির একদিন পর এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইউনূস সেন্টার।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে ইউনূস সেন্টার জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১৪-১৬ মার্চ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত বাকু ফোরাম একাদশে বিশিষ্ট বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিজামি গানজাভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার থেকে অধ্যাপক ইউনূসকে পাঠানো বাকু ফোরামের অফিশিয়াল অনুষ্ঠানসূচিতেও অধ্যাপক ইউনূস ইউনেস্কোর পুরস্কার গ্রহণ করবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। অধ্যাপক ইউনূসকে বাকু ফোরামের সমাপনী নৈশভোজে যোগদানের বিষয়টি বিশেষভাবে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, যাতে তিনি ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কারটি গ্রহণের জন্য মঞ্চে সশরীর উপস্থিত থাকেন।
ইউনূস সেন্টার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনেস্কোর পুরস্কারের বিষয়টি উল্লেখ করে। অধ্যাপক ইউনূসকে প্রদত্ত ‘ট্রি অফ পিস’ ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত পদকের একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এর আগে ২০২৩ সালের জুনে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয় পরিদর্শনের সময় ইউনেস্কো এবং অধ্যাপক ইউনূস প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সংগঠন ইউনূস স্পোর্টস হাবের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল ইউনেস্কোর ফিট ফর লাইফ ফ্ল্যাগশিপের অধীন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে উভয় প্রতিষ্ঠানের একসঙ্গে কাজ করে যাওয়া।
এর আগে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনের চেয়ারম্যান মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, “নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার দেয়নি।”
তিনি বলেন, “আজারবাইজানের গঞ্জাভি ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ড. ইউনূসকে ইসরাইলের একজন ভাস্কর ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কারে ভূষিত করেন।”
ইউনেস্কো থেকে পুরস্কার পেয়েছেন বলে ড. ইউনূস যে দাবি করেছেন তা অসত্য বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন:রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আঞ্চলিক কার্যালয় স্থানান্তরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অফিসটি সরিয়ে মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ সংলগ্ন মোহাম্মদপুর কমিউনিটি সেন্টারে নেয়া হচ্ছে। এই কমিউনিটি সেন্টারে হবে ডিএনসিসি’র অঞ্চল-০৫ এর অস্থায়ী আঞ্চলিক কার্যালয়।
বৃহস্পতিবার সকালে আঞ্চলিক কার্যালয়ের মালামাল স্থানান্তরের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়।
কারওয়ান বাজারে ডিএনসিসির আঞ্চল-৫ এর কার্যালয়ের সামনে সকালে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিএনসিসির কার্যালয় স্থানান্তরের মাধ্যমে কারওয়ান বাজারের স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। ঈদের আগে অফিসের সবকিছু সরিয়ে নেয়া হবে এবং ঈদের পর ভবনটি ভাঙা হবে। ঈদের পর ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে থাকা ১৭৬টি দোকান গাবতলীতে সরিয়ে নেয়া হবে। একইসঙ্গে অস্থায়ী আরও ১৮০টি দোকান গাবতলীতে স্থানান্তর করা হবে।’
প্রসঙ্গত, কারওয়ান বাজার থেকে ডিএনসিসির পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়সহ দোকানপাট স্থানান্তরের বিষয়ে ১৮ মার্চ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ডিএনসিসি। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সভায় ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের পর কারওয়ান বাজারে ডিএনসিসির পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা হবে। কারণ যেকোনো সময় এটি ধসে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে বহু মানুষের জীবন হুমকিতে রয়েছে। কারওয়ান বাজারের পাইকারি কাঁচাবাজারের এই ব্যবসায়ীদের গাবতলিতে ডিএনসিসির পাইকারি কাঁচাবাজারে স্থানান্তর করা হবে।’
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান তৃতীয়।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র্যাঙ্কিংয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৬৭ নিয়ে রাজধানীর বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় রয়েছে।
একই সময়ে যথাক্রমে ১৮৬ ও ১৭২ স্কোর নিয়ে তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভারতের দিল্লি ও থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ সকালের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ১৭ দশমিক ৪ গুণ বেশি।
এ সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে আইকিউএয়ার চারটি পরামর্শ দিয়েছে। এক, বাইরে গিয়ে ব্যায়াম না করা; দুই, বাসা-বাড়ির জানালা বন্ধ রাখা যেন দূষিত বায়ু ঘরে প্রবেশ না করতে পারে; তিন, বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করা এবং চার, এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৬৭। এর মানে হলো ওই সময়টাতে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাসের মধ্যে বসবাস করতে হয় রাজধানীবাসীকে।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে টানা তিন দিন ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর ছিল। মানে সামান্য হেরফের হলেও অস্বাস্থ্যকর বাতাসের চক্রেই ঘুরপাক খাচ্ছে ঢাকা।
একই সময় ১০০টি দেশের এ তালিকায় ২৫ স্কোর নিয়ে সর্বশেষ অবস্থানে থাকা আফগানিস্তানের কাবুলের বাতাস ছিল ‘ভালো’।
আরও পড়ুন:নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইউনেস্কো থেকে যে ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার পেয়েছেন বলে প্রচার করা হয়েছে, তা প্রতারণামূলক এবং সর্বৈব মিথ্যাচার বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এ ধরনের মিথ্যাচার দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবে।
বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ইউনেস্কোর সদর দপ্তরে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেখান থেকে তারা আমাদের নিশ্চিত করেছেন যে, ইউনেস্কো ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এ ধরনের কোনো সম্মাননা প্রদান করেনি।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ড. ইউনূস আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে গজনভি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে ইসরায়েলের ভাস্কর্য শিল্পী মিজ হেদভা সের তাকে ‘ট্রি অফ পিস’ সম্মাননা স্মারক দেন।’
ভাস্কর হেদভা সেরও নিশ্চিত করেছেন যে, এটি ইউনেস্কোর সম্মাননা বা পুরস্কার নয়। এটি গজনভি ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রদত্ত একটি পুরস্কার।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইউনেস্কো সদর দপ্তরকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করব। ড. ইউনূস ও ইউনেস্কোর নাম নিয়ে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে সেটি অনৈতিক এবং অপরাধমূলক। সেটি আমাদের দেশের জন্য মানহানিকর- এ তথ্যও জানাব।’
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি ভাস্কর্য শিল্পীর দেয়া পুরস্কারকে ড. ইউনূস ইউনেস্কোর পুরস্কার হিসেবে প্রচার করেছেন। এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও অপমানকরও বটে।
‘ইউনূস সেন্টারের ওয়েবসাইটে এটি ইউনেস্কোর পুরস্কার হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। ইউনূস সেন্টারকে অনুরোধ করব যে, এভাবে এ ধরনের ভয়াবহ মিথ্যাচার প্রচারণা থেকে তারা যেন বিরত থাকে। তা না হলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে বুধবার ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে ইউনেস্কো কর্তৃক ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার প্রদানের সংবাদটি সঠিক নয় এবং ইউনুস সেন্টার কর্তৃক দাবিকৃত সম্মাননা ইউনেস্কোর কোনো পুরস্কার বা সম্মাননাও নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল জুবাইদা মান্নান।
এ ধরনের সংবাদ প্রচারকে ‘প্রতারণামূলক ও পরিকল্পিত মিথ্যাচার’ বলে আখ্যায়িত করে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে ইউনূস সেন্টারকে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সম্প্রতি ঢাকার কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় এবং ইউনূস সেন্টারের অফিশিয়াল ওয়েব পেইজে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো কর্তৃক ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার প্রদানের সংবাদটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের (বিএনসিইউ) দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।
“ইউনূস সেন্টার কর্তৃক প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে পত্রিকায় যে সংবাদ ছাপা হয়েছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৬ মার্চ আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত ১১তম গ্লোবাল বাকু ফোরোমে ড. ইউনূসকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়, কিন্তু ইউনেস্কো ঢাকা অফিস জানিয়েছে, প্যারিসস্থ ইউনেস্কো সদরদপ্তর এই বিষয়ে একেবারেই অবহিত নয়।
“১১তম বাকু ফোরাম যেখানে এই সম্মাননা দেয়ার সংবাদ প্রচার হয়েছে, সেখানে ইউনেস্কোর কোন অফিশিয়াল প্রতিনিধিই ছিল না। অধিকন্তু, ইউনূস সেন্টার কর্তৃক দাবিকৃত সম্মাননা ইউনেস্কোর কোনো পুরস্কার বা সম্মাননাও নয়।”
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “ড. ইউনুসকে ‘ট্রি অফ পিস’ নামক একটি ভাস্কর্য স্মারক/সম্মাননা প্রদান করেন ইসরায়েলি ভাস্কর্য শিল্পী মিজ হেদভা সের। মিজ হেদভা নিজে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে, ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে ‘ট্রি অফ পিস’ প্রদানে ইউনেস্কোর কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।
“নিজামী গনজবী ইন্টারন্যাশন্যাল সেন্টারের আমন্ত্রণে ইসরায়েলি ভাস্কর্য শিল্পী মিজ হেদভা সের ড. ইউনুসকে এটি প্রদান করেন। মিস হেদভা সের ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক কূটনীতি বিষয়ক গুইউইল অ্যাম্বাসেডর, কিন্তু ইউনেস্কোর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিনিধি নন এবং ইউনেস্কোর কোনো পুরস্কার/সম্মাননা দেয়ার এখতিয়ারও রাখেন না।
“সুতরাং, উল্লিখিত বাস্তবতার নিরিখে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস পরিচালিত ইউনূস সেন্টার কর্তৃক প্রেরিত এবং প্রচারিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রতারণামূলক বলে মনে করে তার নিন্দা জানাচ্ছে।
“বাংলাদেশ ইউনেস্কোর অন্যতম সক্রিয় সদস্য রাষ্ট্র। ভবিষ্যতে ইউনেস্কোর মতো জাতিসংঘের এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ এবং সুখ্যাতিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নাম অপব্যবহার থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ইউনূস সেন্টারকে সতর্ক করা হলো।”
এই বিষয়টি যেহেতু প্রতারণামূলক এবং পরিকল্পিত মিথ্যাচার, সেহেতু তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তার ব্যাখা চাওয়া হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১ জানুয়ারি বাংলাদেশের আদালত ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ টেলিকমের আরও তিনজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন, যেটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন।
এ ছাড়াও আয়কর আইন লঙ্ঘনের জন্য তার ব্যক্তিগত আয়কর দাবি আদালতে বিচারাধীন। সুতরাং, তিনি যতদিন আদালত কর্তৃক নির্দোষ প্রমাণিত না হন, ততদিন তাকে কোনো মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার কিংবা সম্মাননা প্রদান সমীচীন নয় বলেও উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশে ইউনেস্কোর সঙ্গে কার্যক্রমের জন্য সরকারের ফোকাল পয়েন্ট হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন। কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে, কেউ যাতে ইউনেস্কোর নামের অপব্যবহার কিংবা অপপ্রয়োগ না করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করা। সে হিসেবে ইউনেস্কোর নাম অপব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের পক্ষ থেকে ইউনেস্কো ঢাকা অফিস এবং ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির সঙ্গে পরামর্শ করে ইউনেস্কো সদর দপ্তরকে অবহিত করা হবে।
আরও পড়ুন:বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত রেখে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে সরকারের নির্বাহী আদেশে ৮ বারের মতো তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হলো।
বুধবার রাষ্ট্রপতির আদেশে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ আবু সাঈদ মোল্লা প্রজ্ঞাপনে সই করেন।
মুক্তির বর্ধিত মেয়াদে খালেদা জিয়া ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং এ সময় তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে দাখিলকৃত আবেদন এবং আইন ও বিচার বিভাগের আইনগত মতামতের আলোকে ‘দ্য কোড অব ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর’-এর ধারা-৪০১(১) এ দেয়া ক্ষমতাবলে দুটি শর্তে (ঢাকাস্থ নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা ও দেশের বাইরে যেতে পারবেন না) তার (খালেদা জিয়ার) দণ্ডাদেশ ২৫ মার্চ থেকে ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হলো।’
গত ৬ মার্চ খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। পরে সেই আবেদনের বিষয়ে মতামত নিতে সেটি আইন মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়। আইন মন্ত্রণালয় আগের দুটি শর্তে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর বিষয়ে মতামত দেয়।
সর্বশেষ গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ ২৫ মার্চ শেষ হয়।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতা বাড়লে মাঝে মাঝে তাকে হাপাতালে নিতে হচ্ছে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা শেষে গত ১৪ মার্চ গুলশানের বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এর আগে ১৩ মার্চ রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
দুটি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া কারাবন্দি ছিলেন। নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন:মেট্রো ট্রেন চলাচলের সময় বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের খবর এক দিন আগেই জানা গিয়েছিল। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে কতটা বেশি সময় ধরে কখন এ ট্রেন চলাচল করবে।
মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক জানিয়েছেন, আজ থেকে রাত ৯টার পরও মেট্রো ট্রেন চলবে।
তিনি জানান, বুধবার থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে সবশেষ ট্রেন ছাড়বে রাত ৯টায় এবং মতিঝিল স্টেশন থেকে সবশেষ ট্রেন ছাড়বে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে।
এমএএন ছিদ্দিক আরও জানান, বুধবার ১৬ রমজান থেকে ঈদুল ফিতরের আগের দিন পর্যন্ত মেট্রো ট্রেন এক ঘণ্টা বেশি সময় ধরে চলবে। বর্ধিত সময়ে আরও ১০টি ট্রেন চলাচল করবে। এতে দিনে মেট্রো ট্রেন চলাচলের সংখ্যা হবে ১৯৪ বার। আর এই সময়টাতে প্রতিদিন ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫২ জন যাত্রী চলাচলের সুযোগ পাবেন।
বর্তমানে সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত মেট্রো ট্রেন চলাচল করে। পিক আওয়ারে (সকাল ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা এবং বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা) ৮ মিনিট পর পর মেট্রো ট্রেন চলাচল করে। আর বেলা ১১টা থেকে বেলা ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অফ পিক আওয়ারে মেট্রো ট্রেন চলাচল করে ১২ মিনিট পর পর।
মন্তব্য