বাংলাদেশে দূরত্বভেদে বাস ভাড়ার হার একই থাকলেও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তা উল্টো। যাত্রী যত দূরের গন্তব্যে যাবে, বাস ভাড়ার হার তত কমে আসবে।
তবে বাংলাদেশে লঞ্চ ভাড়ার ক্ষেত্রে দূরত্বের হিসাবে ভাড়ার হার দুটি হলেও বাস ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি কখনও বিবেচনায় আনা হয় না।
ফলে কেউ ১০ কিলোমিটার দূরত্বে গেলে যে হারে ভাড়া দিতে হয়, ৪০০ কিলোমিটার গেলেও একই হারে ভাড়া দিতে হয়। অথচ বাংলাদেশের তুলনায় ডিজেলের দাম লিটারে অন্তত ২৪ টাকা বেশি হলেও কলকাতায় স্বল্প দূরত্বের তুলনায় দূরপাল্লায় বাস ভাড়া ঢাকার চেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবেই চার ভাগের এক ভাগেরও কম।
কলকাতায় নির্ধারিত ভাড়া আদায় করা হলেও ঢাকায় নির্ধারিত ভাড়ার দ্বিগুণ আদায় করায় এই পার্থক্য আরও বেশি গিয়ে ঠেকে।
বাংলাদেশে ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর গত রোববার বাস ভাড়া বাড়িয়ে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, তাতে দূরপাল্লার বাসের ভাড়া কিলোমিটারে ১ টাকা ৮০ পয়সা, মহানগরে বড় বাসে কিলোমিটারে ২ টাকা ১৫ পয়সা আর মিনিবাসে ২ টাকা ৫ পয়সা বলে জানানো হয়েছে।
কোনো যাত্রী যদি ১০ কিলোমিটার যান, তাহলেও একই হার, আবার যদি ৪০০ কিলোমিটার যান, তাহলেও একই হারে ভাড়া দিতে হয়।
একই দিন লঞ্চের ভাড়া বাড়িয়ে যে আদেশ দেয়া হয়েছে, সেখানেও বিষয়টি এত সরল নয়। সেখানে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত লঞ্চের ভাড়া কিলোমিটারে ২ টাকা ৩০ পয়সা এবং ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে কিলোমিটারে ২ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
লঞ্চের ভাড়া নির্ধারণ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংগঠন বিআইডব্লিউটিএ-এর চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটা লঞ্চ যখন দূরপাল্লায় যায়, যখন সেটি ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে যায়, তখন তার খরচ কমে আসে। তাই বড় দূরত্বে ভাড়া কম রাখা হয়। দূরপাল্লায় যাত্রীদের যদি একই হারে ভাড়া দিতে হয়, তাহলে সেটি তাদের জন্য চাপ হয়ে যায়। এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের যাত্রীদের ভাড়ার হার কম নির্ধারণ করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দূরত্ব যত বেশি হয়, ভাড়ার হার ক্রমান্বয়ে কমে আসা উচিত। ভারত বা পাকিস্তানে যদি দূরপাল্লায় আপনি যান, তাহলে ভাড়া অর্ধেক কম।’
ভাড়ার হারে স্ল্যাব না থাকা বা বেশি হারে ভাড়া নির্ধারণের পেছনে পরিবহনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বাস নির্ভরতাকে দায়ী করেছেন এই পরিবহন বিশেষজ্ঞ। তিনি ভারতের ট্রেন নেটওয়ার্কের বিষয়টি তুলে ধরে বলেছেন, সেখানে সড়কপথের তুলনায় বেশি যাত্রী পরিবহন করা হয় রেলে, পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে তাই। কিন্তু বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ যাত্রী আর ৮৫ শতাংশ পণ্য পরিবহন সড়কনির্ভর। ফলে সড়ক পরিবহনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের একাধিপত্য এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে অবশ্যই ভোক্তা তথা যাত্রীদের রাখা উচিত। নইলে তাদের পক্ষ থেকে এসব কথা আসলে কেউ বলে না। কিন্তু আমাদের যে ভাড়া নির্ধারণের ১২ সদস্যের কমিটি, সেখানে কেবল মালিক এবং শ্রমিক পক্ষ আর সরকারের লোকজন।’
বাসের ক্ষেত্রে দূরত্ব যা-ই হোক না কেন, একই হারে ভাড়া কেন- এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর বক্তব্য পাওয়া যায়নি সংস্থাটির চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার ফোন না ধরায়।
ভাড়া পুনর্নির্ধারণ কমিটির বৈঠকে অংশ নেয়া ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কম ভাড়ার ব্যবস্থা করা তো আমাদের দাবি। দূরে গেলে ভাড়া কমবে, এটা যুক্তিসংগত।’
তাহলে দূরের যাত্রীদের ভাড়ার হার কম রাখার বিষয়টি বিআরটিএ বিবেচনায় আনেনি কেন, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যারা ভাড়া নির্ধারণ করে, এই প্রশ্নের উত্তর শুধু সেসব কর্তৃপক্ষই দিতে পারবে।’
বৈঠকে প্রসঙ্গটি তোলা হয়েছিল কি না, এমন প্রশ্নে সংস্থাটির সভাপতি বলেন, তিনি সেখানে ছিলেন না। তাদের প্রতিনিধি বিষয়টি বলেছিলেন কি না, সেটি জানা নেই।
পশ্চিমবঙ্গে যে পদ্ধতিতে বাস ভাড়া
সম্প্রতি কলকাতায় ডিজেলের দাম লিটারে ৫ রুপির মতো কমানো হলেও গত কয়েক মাসে ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
এখন প্রতি লিটারে দাম পড়ছে ৮৯ দশমিক ৭৮ রুপি। প্রতি রুপি বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ টাকা ১৬ পয়সা হারে দাম দাঁড়ায় ১০৪ টাকা ১৪ পয়সা। অর্থাৎ বাংলার দুই অংশে লিটারে দামে পার্থক্য ২৪ টাকা ১৪ পয়সা।
পশ্চিমবঙ্গে তেলের দাম বাড়ানোর কারণে বেসরকারি বাসমালিকরা ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন। প্রাদেশিক সরকার এখনও সাড়া না দিলেও বাসমালিকরা নিজেদের মতো বিভিন্ন স্ল্যাবে ৫ থেকে ১০ টাকা ভাড়া বাড়িয়েছেন।
সেখানে সরকারি যে পরিবহন সেবা, তা চলছে পুরোনো ভাড়াতেই। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগম নামে বাস সংস্থাটি কলকাতা ও শহরের উপকণ্ঠে সেবা দেয়।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমের জেলাগুলোর জন্য দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন (এসবিএসটিসি)। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর জন্য উত্তরবঙ্গ পরিবহন নিগম (এনবিএসটিসি) রাজ্যব্যাপী পরিবহন পরিষেবা দেয়।
পাশাপাশি বেসরকারি বাস পরিষেবা চালু রয়েছে রাজ্যজুড়ে।
পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন দপ্তরের বাস ভাড়া নিয়ে সবশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল ২০১৮ সালের ৮ জুন। কলকাতা ও শহরতলির সাধারণ বাসের ভাড়ার চার্টে উল্লেখ করা হয়েছে, চার কিলোমিটার পর্যন্ত ৭ রুপি। চার কিলোমিটার থেকে আট কিলোমিটার পর্যন্ত ৯ রুপি।
অর্থাৎ যাত্রী চার কিলোমিটার পর্যন্ত বাসে গেলে কিলোমিটারে ১ দশমিক ৭৫ রুপি ভাড়া দিতে হয়। অন্যদিকে কেউ চার কিলোমিটারের বেশি, অথচ আট কিলোমিটারের কম যান, তাহলে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়ার হার ১ টাকা সাড়ে ১২ পয়সা পর্যন্ত নেমে আসে।
আবার কেউ যদি ১২ কিলোমিটার থেকে ১৬ কিলোমিটার যান, তাহলে তাকে দিতে হয় ১০ রুপি। অর্থাৎ সে ক্ষেত্রে ভাড়ার হার কমে কিলোমিটারে ৬৩ থেকে ৮৩ পয়সা পর্যন্ত পড়ে।
আবার কেউ যদি ১৬ কিলোমিটার থেকে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত যান, তাহলে এই বাড়তি গন্তব্যের জন্য দিতে হয় বাড়তি ১ টাকা। অর্থাৎ তখন কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া হয় ৫৫ থেকে ৬৯ পয়সা।
আবার কোনো যাত্রী যদি ২০ থেকে ২৪ কিলোমিটার যান, তাহলে তাকে ভাড়া দিতে হয় ১২ রুপি। সে ক্ষেত্রে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া হয় ৫০ থেকে ৬০ পয়সা।
২৪ কিলোমিটারের পর থেকে প্রতি চার কিলোমিটারে ভাড়া ১ রুপি করে পড়ে। অর্থাৎ ২৪ কিলোমিটারের বেশি যাত্রায় কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া বাড়ে ২৫ পয়সা করে।
মিনিবাসের ক্ষেত্রে ভাড়ার হার কিছুটা বেশি। তবে সেখানেও দূরত্ব বাড়লে ভাড়ার হার কমে আসে।
সেখানে তিন কিলোমিটার পর্যন্ত ভাড়া ৮ রুপি। তিন থেকে ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত ভাড়া ৯ রুপি। ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভাড়া ১০ রুপি।
১০ থেকে ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ১১ রুপি আর ১৬ কিলোমিটারের পর থেকে প্রতি তিন কিলোমিটার অন্তর ভাড়া ১ রুপি করে বাড়বে।
দূরপাল্লার এক্সপ্রেস সার্ভিসের ক্ষেত্রে ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত ভাড়া সাড়ে ৮ রুপি। ছয় কিলোমিটারের পরে অতিরিক্ত কিলোমিটারপ্রতি ৭৫ পয়সা বাড়বে।
আন্তরাজ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে প্রথম ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত ১২ রুপি। ছয় কিলোমিটারের পর অতিরিক্ত প্রতি কিলোমিটারের জন্য ৭৫ পয়সা বাড়বে।
পশ্চিমবঙ্গে সরকারি বাসের তুলনায় বেসরকারি বাসে ভাড়া কিছুটা বেশি। যেমন কলকাতার ধর্মতলা বাস টার্মিনাল থেকে সরকারি বাসে মালদা যেতে গেলে ২৫৬ রুপি, কিন্তু বেসরকারি বাসে ভাড়া পড়ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ রুপি।
রাজ্যের বেসরকারি কোনো বাসে ফেয়ার চার্ট নেই। দূরপাল্লার বেসরকারি বাসের ভাড়া বাসের সিট আর দূরত্বের ওপর নির্ধারণ হয়। সেখানেও দূরত্ব যত বেশি হয়, ভাড়ার হার তত কম।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পাঁচটি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
সফররত কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মঙ্গলবার এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর হয়।
পাঁচ চুক্তির মধ্যে রয়েছে- উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি, দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি, সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি এবং দু দেশের ব্যবসা সংগঠনের মধ্যে যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি।
পাঁচ সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে- কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং বন্দর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।
চুক্তিগুলোর মধ্যে প্রথমটিতে কাতারের পক্ষে বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন হামাদ আল থানি ও বাংলাদেশের পক্ষে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, দ্বিতীয়টিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, তৃতীয়টিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, চতুর্থটিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং পঞ্চমটিতে কাতার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান শেখ খলিফা বিন জসিম আল থানি ও বাংলাদেশের ফেডারেশন অব চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম সই করেন।
সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে সব কটিতে কাতারের পক্ষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি এবং বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সই করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিমুল হলে একান্ত বৈঠক হয় শেখ হাসিনা ও শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পৌঁছালে মঙ্গলবার সকালে কাতারের আমিরকে ফুল দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কদিন ধরেই দাবদাহে পুড়ছে জনজীবন। গরমে অতিষ্ঠ মানুষ। দিনভর তীব্র তাপপ্রবাহ, তবে রাতে কিছুটা স্বস্তি মিলছে। এই অবস্থা থেকে আপাতত মুক্তি মিলছে না।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ যেভাবে বয়ে যাচ্ছে, আরও কটা দিন এভাবেই তা চলবে। কোথাও কোথাও সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে এতে গরম তেমন একটা কমবে না।
মঙ্গলবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার ও রাঙ্গামাটি জেলাসহ ঢাকা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এতে বলা হয়, সিলেট বিভাগে দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশের দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংম পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
পরবর্তী পাঁচ দিনের আবহাওয়াও প্রায় একই থাকতে পারে জানিয়েছে অধিদপ্তর।
এর আগে সোমবার চলমান তাপপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে ৭২ ঘণ্টার জন্য দেশজুড়ের রেড অ্যালার্ট জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তার আগেও গত ১৯ এপ্রিল তিন দিনের হিট অ্যালার্ট দেয়া হয়। অ্যালার্ট থাকবে ২৫ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত।
টানা কদিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা বেড়েছে। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহী, পাবনা, বরিশালেও প্রচণ্ড গরম। সোমবার খুলনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুসারে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে সোমবার।
এদিন রাত ৯টায় ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে পোস্টে এ কথা জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে সোমবার রাত ৯টায়। এ সময় ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।
পোস্টে জানানো হয়, বর্তমানে দেশব্যাপী চলছে তীব্র তাপদাহ। এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ বিভাগ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে জনজীবনে স্বস্তি বজায় রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এর আগে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড ছিল রোববার ১৫ হাজার ৬৬৬ মেগাওয়াট।
দেশজুড়ে চলমান তাপপ্রবাহে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ঘাটতির কারণে দেশে বিদ্যুতের প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। সূত্র: ইউএনবি
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) তথ্য অনুযায়ী, সোমবার বিকেল ৩টায় দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ২২০ মেগাওয়াট। সে সময় দেশ জুড়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং ছিল ৯৯৬ মেগাওয়াট।
এদিন সন্ধ্যায় বিদ্যুতের চাহিদার পূর্বাভাস ছিল ১৫ হাজার ৬৬৬ মেগাওয়াট এবং সরবরাহের পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ২০০ মেগাওয়াট।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে গিয়ে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়ে গেছে।
তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুৎহীনতায় গ্রামের মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। শেষ মুহূর্তের সেচ কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মকভাবে।
বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া সংবাদে জানা যায়, এই গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের মাত্রা গ্রামীণ মানুষের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার তথ্যে দেখা যায়, দৈনিক তিন হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে দেশে এই সময়কালে গ্যাস উৎপাদন হয়েছে তিন হাজার ৪৬ মিলিয়ন ঘনফুট।
এ অবস্থায় বেশ কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিশেষ করে যেগুলো প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করে থাকে, সেগুলোতে গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো দু’হাজার ৩১৬ দশমিক ৯ এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে এক হাজার ৩৪৯ দশমিক ৯ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে।
আরও পড়ুন:ট্রেনে ভ্রমণের ভাড়া বাড়ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে রেয়াত সুবিধা তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই ভাড়া বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাড়া বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে ৪ মে থেকে। ২৪ এপ্রিল থেকে বর্ধিত ভাড়ায় আগাম টিকিট বিক্রি করা হবে। তবে পণ্য পরিবহনে ভাড়া বাড়ছে না।
বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বাদে অন্যান্য রুটের যাত্রীরা ১০০ কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণে ভাড়ায় ২০ শতাংশ রেয়াত পান। ২৫১ থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরত্বে রেয়াত পান ২৫ শতাংশ। আর ৪০০ কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণে ৩০ শতাংশ রেয়াত পান। রেলওয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দূরত্বভিত্তিক এই রেয়াত সুবিধা আর থাকছে না।
রেল ভ্রমণে রেয়াত প্রত্যাহারের প্রস্তাব গত মাসে অনুমোদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে- এমন খবর প্রচার হয়। অবশ্য সে সময়ে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম ভাড়া বৃদ্ধির সেই খবরকে গুজব বলে দাবি করেন।
রেল সূত্র জানিয়েছে, ঈদযাত্রার কারণে এতদিন ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি। ২৪ এপ্রিল থেকে বর্ধিত ভাড়ায় টিকিট বিক্রি করা হবে। আর ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে ৪ মে থেকে।
যাত্রীর আবেদনে সংযোজন করা অতিরিক্ত বগির ভাড়াও বাড়বে। সংযোজিত বগির শোভন শ্রেণিতে ২০ শতাংশ এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (স্নিগ্ধা) ও অন্যান্য উচ্চ শ্রেণিতে ৩০ শতাংশ রিজার্ভেশন সার্ভিস চার্জ যোগ করা হবে ভাড়ার সঙ্গে।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ৩২১ কিলোমিটার। ১০০ কিলোমিটারের পর ২০ শতাংশ এবং ২৫০ কিলোমিটারের পর ২৫ শতাংশ ছাড় পান যাত্রীরা। এই রুটে শোভন চেয়ারের ভাড়া ৩৪৫ টাকা। বিরতিহীন সোনার বাংলা ট্রেনে এই শ্রেণিতে ভাড়া ৪০৫ টাকা। কিন্তু রেয়াত সুবিধাবিহীন এবং বিরতিহীন পর্যটক এক্সপ্রেসে ভাড়া ৪৫০ টাকা। রেয়াত সুবিধা উঠে গেলে সাধারণ ট্রেনেও শোভন চেয়ার শ্রেণিতে ভাড়া হবে ৪০৫ টাকা।
লোকসান কমাতে এমন সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৯৯২ সালে ট্রেনের ভাড়ায় রেয়াত সুবিধা দেয়া শুরু করে। এবার লোকসান কমাতে সেই রেয়াত সুবিধা বাতিল করছে রেলওয়ে। আয় বাড়াতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রেলকে বাড়তি গুরুত্ব দেয়। রাষ্ট্রায়ত্ত এই পরিবহন সংস্থার উন্নয়নে এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় করা হয়েছে। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয় ৪০ হাজার কোটি টাকার মতো। বিপরীতে রেল আয় করেছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। ১ টাকা আয় করতে ২ টাকা ৭৮ পয়সা খরচ করছে রেলওয়ে। আয়-ব্যয়ের এই ব্যবধান কমিয়ে আনতেই ভাড়া বাড়াতে যাচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ।
সবশেষ ২০১২ ও ২০১৬ সালে ট্রেনের ভাড়া বাড়িয়েছিল রেল। ২০১৬ সালে ভাড়া বাড়ানো হয় ৭ থেকে ৯ শতাংশ। নতুন নির্মিত পদ্মা সেতু রেল সংযোগ এবং চট্টগ্রামের দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে পন্টেজ চার্জ যোগ করে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন রেল সেতুর প্রতি কিলোমিটারকে ২৫ কিলোমিটার এবং ভায়াডাক্ট বা রেল ফ্লাইওভারের প্রতি কিলোমিটারকে পাঁচ কিলোমিটার হিসাব করে বাণিজ্যিক দূরত্ব নির্ধারণ করা হয়। এতে বাণিজ্যিক দূরত্ব বেড়েছে। রেয়াত সুবিধা না থাকায় বাণিজ্যিক দূরত্বের কারণে ভাড়া বাড়বে।
পণ্য পরিবহনে ভাড়া বাড়ছে না
যাত্রী ভাড়ায় রেয়াত সুবিধা বাতিল হলেও পণ্য পরিবহনে তা অব্যাহত থাকবে। কারণ পরিবহন করার মতো পণ্যের সংকট রয়েছে। তাই ব্যবসায়ীদের আগ্রহ ধরে রাখতে পণ্য পরিবহনে বিদ্যমান সুবিধা বহাল রাখা হবে।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-সানিকে ঢাকায় লালগালিচা অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে। দু’দিনের সরকারি সফরে সোমবার বিকেলে ঢাকায় পৌঁছার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
আমির ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ বিমান বিকেল ৫ টার দিকে ঢাকায় বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় ২১ বার তোপধ্বনি করা হয়।
এরপর আমিরকে অস্থায়ী অভিবাদন মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানের অংশ হিসেবে গার্ড অফ অনার দেয়া হয়। এ সময় দু’দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। কাতারের আমির প্যারেড পরিদর্শন করেন। সূত্র: বাসস
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতারের আমিরকে প্রেজেন্টেশন লাইনে অপেক্ষমাণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় আমিরও তার প্রতিনিধিদের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. নসরুল হামিদ বিপু, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে ঢাকায় এসেছেন কাতারের আমির।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কাতারের আমির তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে অবস্থান করবেন।
মঙ্গলবার সকালে কাতারের আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এরপর সকাল সোয়া ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিমুল হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন।
পরবর্তীতে এই সফরে দু’দেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চুক্তিগুলো হলো- দ্বৈত কর ও কর ফাঁকি পরিহার, আইনি বিষয়ে সহযোগিতা, সমুদ্র পরিবহন, পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা, দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের স্থানান্তর এবং একটি যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদ প্রতিষ্ঠা।
এর বাইরে শ্রমশক্তি, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতাসহ পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দুপুরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনের দরবার হলে কাতারের আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন।
সন্ধ্যায় বিশেষ বিমানে করে আমির কাতারের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ তাকে বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন।
আরও পড়ুন:দেশের যে কোনো কারখানায়ই এখন থেকে শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করা যাবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। সূত্র: ইউএনবি
বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে শ্রমিক আইন সংশোধনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা মূলত বাংলাদেশের শ্রম আইন, শ্রমিকদের অধিকার এবং তা নিয়ে আমরা কী কাজ করছি সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
‘এছাড়া ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সম্মতির হার অর্থাৎ ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার জন্য কত শতাংশ শ্রমিক প্রয়োজন তা জানতে চেয়েছেন প্রতিনিধিরা।
আনিসুল হক বলেন, ‘ট্রেড ইউনিয়নে গঠনের ক্ষেত্রে ২০১৬ সালের দিকে শ্রমিকদের সম্মতির হার ছিল ৩০ শতাংশ। ২০১৭ সালে যখন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সম্মেলনে যাই, তখন এই হার ২০ শতাংশে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এই হার আরও কমানো হবে, তবে সেটি ধীরে ধীরে।
‘এবার যখন সংশোধনী হয়, তখন প্রথম প্রস্তাব ছিল- এটাকে ২০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে নিয়ে আসব। কিন্তু সেখানে একটা ক্যাভিয়েট (শর্ত) ছিল, এটা শুধু যেসব কারখানায় তিন হাজার বা তার চেয়ে বেশি শ্রমিক কর্মরত, তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে। সেই সীমাও উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শ্রম আইন নিয়ে সমস্যা যখন হয়েছিল, রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ফেরত আনা হয়েছিল, তার পরের আলোচনায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি- আমরা এটা সবার জন্য করবো, কোনো ক্যাপ (সীমা) থাকবে না। সেটাও আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের জানিয়েছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ শ্রমিক আইন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ যেটা হচ্ছে, সেখানে প্রযোজ্য হবে। আগে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন লেবার অ্যাক্টে প্রযোজ্য হওয়ার কথা ছিল। সেই সংশোধনী আমরা করেছি। যে ১১টি বিষয় তারা জানতে চেয়েছিলেন তাতে এগুলো ছিল।’
যেসব বিষয়ে কাজ শেষ হয়েছে সেসব প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
আনিসুল হক বলেন, ‘প্রতিনিধিরা শ্রমিক অধিকার নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন। এটা চলমান কাজ। শ্রমিকদের অধিকার দিন দিন বাড়বে, কমবে না।’
বাংলাদেশের শ্রম আইন ও অধিকারের বিষয়ে শোনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানান তিনি।
আনিসুল হক আরও বলেন, ‘সবসময় শ্রমিকদের অধিকার যা আছে, তার থেকে বেশি যাতে তারা পায় এবং অধিকার বাস্তবায়ন করা, তারা যাতে সেটা ভোগ করতে পারে, সেটা সরকার নিশ্চিত করবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য