শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকায় একদিকে যেমন হাতির আতঙ্কে মানুষ, তেমনি হাতিও আছে মানুষের আতঙ্কে। হাতির আশ্রয়স্থলে গড়ে উঠেছে মানুষের বসতবাড়ি। আশ্রয় ও খাদ্যের সন্ধানে তাই ফসলের ক্ষেত এবং বাড়িঘরে হাতি ঢুকে পড়লে শুরু হচ্ছে হাতি-মানুষে লড়াই।
দেশের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় একসময় বিরাট এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ছিল। ধীরে ধীরে তা সংকুচিত হয়ে এসেছে। পাহাড়ে আদিবাসীদের বসবাস থাকলেও নানা জায়গা থেকে মানুষ পাহাড় কেটে বসতবাড়ি গড়ে তুলছেন। বর্তমানে বন বিভাগের শত শত একর জমি দখলের কবলে।
একসময় এ পাহাড়ে হাতিসহ নানা জীবজন্তুর অভয়ারণ্য থাকলেও মানুষ বন দখল করে বসবাস শুরু করায় হারিয়ে যাচ্ছে প্রাণীর আবাসস্থল। বেশির ভাগ বন্য প্রাণী এলাকা থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। অবশিষ্ট আছে শুধু হাতি।
একাধিক প্রজাতির হাতির দল বাংলাদেশ ও ভারতের পাহাড়ি এলাকায় বিচরণ করে। কিন্তু বাংলাদেশ অংশে হাতির আবাসস্থল মানুষের দখলে থাকায় নিরাপদে থাকতে পারছে না হাতি। স্থানীয় লোকজন হাতিকে নানাভাবে বিরক্ত করছেন। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে হাতি।
পাহাড়ে হাতির খাদ্যসংকট থাকায় তারা নেমে আসছে লোকালয়ে। ক্ষতি করছে ধান, শাকসবজিসহ নানা কৃষি আবাদ। এতে কৃষকেরা আছেন হাতির আতঙ্কে।
আর এ সময় হাতি তাড়াতে নানা উপায় গ্রহণ করছেন স্থানীয় কৃষক। ফসল ও বাড়িঘর বাঁচাতে দেয়া হচ্ছে বিদ্যুতায়িত তারের বেড়া। ফলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রতি বছর মারা পড়ছে হাতি। তবে বন বিভাগ সব সময় তা অস্বীকার করে আসছে।
এদিকে হাতি তাড়াতে গিয়ে প্রতিবছরই মানুষ মারা পড়ছেন হাতির আক্রমণে।
অন্যদিকে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে প্রশাসন কাজ করছে বলে জানালেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক আল মাসুদ। তিনি বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসনের নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছি। সমস্যাটি জটিল। এটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। স্থানীয়ভাবে তা সমাধান করা সম্ভব নয়।’
জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশিদ জানান, ‘আমরা হাতির নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে তোলার উপায় খুঁজছি।’
চট্টগ্রাম থেকে আসা বাংলাদেশ এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের প্রশিক্ষক ও হাতি বিশেষজ্ঞ আদনান আজাদ বলেন, বিশাল এলাকায় বিস্তৃত ছিল সীমান্তবর্তী এ গারো পাহাড়, ছিল ঘন জঙ্গল। এখানেই হাতির অভয়ারণ্য ছিল। কিন্তু মানুষ বন কেটে বসতি স্থাপন ও ফসল আবাদ শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, হাতিরা ভাবছে, এখনও এটিই তাদের আবাসস্থল। এখানে হাতি নয়, মানুষই অনুপ্রবেশ করেছে। আর হাতি যখন তার আবাসস্থলে ফিরে আসছে, তখন মানুষ তাদের নানাভাবে অত্যাচার করছে। হাতি নিজেদের রক্ষা করতেই মানুষের ওপর হামলা করছে। এতেই শুরু হয়েছে হাতি-মানুষে লড়াই। এ থেকে বাঁচতে হলে এখানে করলা, মরিচ, লেবু, তামাকসহ এমন ফসলের চাষ করতে হবে, যা হাতি পছন্দ করে না। আর গড়ে তুলতে হবে হাতির অভয়ারণ্য।
গত দুই দশকে হাতির আক্রমণে নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন শতাধিক মানুষ। বাড়িঘর, ফসল, গাছপালার ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে কয়েক কোটি টাকার ওপরে। অপর দিকে একই সময়ে নানা কারণে মারা গেছে ১৮টি হাতি। তাই পাহাড়ে হাতির সমস্যা সমাধানে কাঁটাযুক্ত গাছ রোপণ, এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম গঠন, বৈদ্যুতিক ফেঞ্চিংসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণের দাবি স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন:ইতালি নেয়ার কথা বলে লিবিয়ায় আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির আলোচিত ঘটনায় ৭ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা। মামলার পর মানবপাচার দলের প্রধান মুকুল ঠাকুরের মেয়ে-জামাতা ফরিদপুরের সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এসএম শাকিল হোসাইনকে গ্রেপ্তার করেছে সালথা থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া এসএম শাকিল হোসাইন উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামের মৃত নওফেল মাতুব্বরের ছেলে। বর্তমানে তিনি সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কয়েক মাস আগে তিনি বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের মুকুল ঠাকুর নামক এক ব্যক্তির মেয়েকে।
শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সালথা থানার ওসি মোহাম্মাদ ফায়েজুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিপণের দাবিতে লিবিয়ায় ভিকটিম শাকিলকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। এ ঘটনায় শাকিলের বাবা টিটুল মিয়া প্রথমে মামলা করতে চাননি। অবশেষে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে মানবপাচার দমন আইনে ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।’
ওসি বলেন, ‘মামলার পর শুক্রবার সকালে আসামি শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি মামলার প্রধান আসামি মুকুল ঠাকুরের মেয়ে-জামাতা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল অনেক তথ্য দিয়েছেন।’
ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা) মো. আছাদুজ্জামান বলেন, ‘লিবিয়ায় শাকিলের ওপর নির্মম নির্যাতন ও মুক্তিপণের বিষয়টি প্রথম থেকেই আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে আসছি। এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি ভিকটিমকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
প্রসঙ্গত, অভাবের সংসারে পরিবারের মুখে একটু হাসি ফোটাতে লেখাপড়া বাদ দিয়ে চার মাস আগে প্রতিবেশী মুকুল ঠাকুর নামের এক দালালের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে ইতালির উদ্দেশ্য রওয়ানা হন শাকিল মিয়া। কিন্তু দালালরা তাকে ইতালির বদলে লিবিয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে আটকে রেখে দালালরা আরও ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। একইসঙ্গে শাকিলের ওপর চলতে থাকে নির্মম নির্যাতন।
আরও পড়ুন:ঈদযাত্রায় মানুষের ভোগান্তি ও গলার কাঁটা ছিল উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক, কিন্তু এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তির করতে মহাসড়কে পুরোদমে চলছে চার লেন প্রকল্পের কাজ।
সড়কে গাড়ির চাপ সামাল দিতে ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড় থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত চার লেন চালু করা হয়েছে। ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতের স্বস্তি ফেরাতে দ্রুতই কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন যাত্রী ও চালকেরা।
সংশ্লিষ্টরাও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ওই সব স্থানে রাত-দিন কাজ করছে।
তারা জানান, বছরের দুইটি ঈদের সময় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার মহাসড়ক পারাপারে যাত্রী ও চালকদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো। প্রতিদিন উত্তরের ২২ জেলার প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার যানবাহন চলাচল করলেও ঈদযাত্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট, কিন্তু এবার সে চিত্র হবে অন্যরকম।
সাসেক-২ প্রকল্পের সুফল পাবে এ অঞ্চলের মানুষ। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড় থেকে বগুড়ার মির্জাপুর পর্যন্ত দুই লেনের মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮০৫ কোটি টাকা।
চালক ও যাত্রীরা জানান, ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে রাস্তা উন্নীতকরণ ও ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ অধিকাংশ জায়গায় শেষ হলেও হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় আন্তর্জাতিক মানের ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণকাজের অনেক জায়গায় চার লেনের কাজ চলমান রয়েছে। এর ফলে কিছু কিছু জায়গায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে।
এসআই এন্টারপ্রাইজ বাসের চালক হাফিজুর রহমান বাবু বলেন, বিগত দিনের চেয়ে এ বছর মহাসড়কের অবস্থা অনেক ভালো। বগুড়া পর্যন্ত চার লেনের কাজ শেষের দিকে। কিন্তু এখনও অনেক জায়গায় খানাখন্দ রয়েছে। ঈদের আগে মেরামত করা হলে যানজট হবে না।
শ্যামলী পরিবহনের চালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের ভূঁইয়াগাতী থেকে ঘুড়কা বেলতলা পর্যন্ত ঈদযাত্রায় সমস্যা হতে পারে। দ্রুত এ স্থান সংস্কার ও মহাসড়কে পুলিশ মোতায়েন থাকলে যানজট থাকবে না।
সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক-২) প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ঈদযাত্রায় ঘরে ফেরা মানুষের যাতায়াতে যেন বিঘ্ন না ঘটে, এ জন্য হাটিকুমরুল মোড়ে এক মাস আগেই কংক্রিটের রাস্তা মেরামত করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ চারটি লেনের মেরামত কাজ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বিশেষ করে কড্ডার মোড় ও নলকার মোড়ে প্রতি বছর যানজট বেশি দেখা গেলেও, এবার এ জায়গাগুলোতে আন্ডারপাস খুলে দেয়ায় দূরপাল্লার গাড়িগুলো ওপর দিয়ে চলে যাবে। আর অন্য গাড়িগুলো আন্ডারপাসের নিচ দিয়ে চলাচল করলে আশা করা যাচ্ছে, এ বছর যানজট হবে না। এবারের ঈদযাত্রা হবে অনেকটা স্বস্তিদায়ক।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, এ বছর মহাসড়কের অবস্থা খুবই ভালো। ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে সব তথ্য সড়ক বিভাগের কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সেগুলো ৩১ মার্চের মধ্যে সংস্কার করে দেয়ার কথা দিয়েছেন।
তিনি জানান, ঈদযাত্রায় মানুষের নিরাপদে ঘরে ফেরা ও নিশ্চিন্তে যাতায়াতে মহাসড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৭৫০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হবে। মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ থাকবে, সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি মোবাইল টিম থাকবে।
আরও পড়ুন:নীলফামারী সদরে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সদরের সোনারায় ইউনিয়নের আরাজি কুখাপাড়া বাবুরহাট গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার রাতে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শোভা রাণী রায় নামের ওই নারীর স্বামী দীপু রায়কে পুলিশ আটক করেছে।
প্রাণ হারানো শোভা রানী রায় সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নের মহববত বাজিতপাড়া এলাকার হরিপদ রায়ের মেয়ে। তার স্বামী দীপুর বাড়ি দিনাজপুরের চিরির বন্দরের ফেরসাডাঙ্গা এলাকায়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, পাঁচ বছর আগে শোভার স্বামীর মৃত্যু হয়। শোভা ও দীপু উভয়েই নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে চাকরি করতেন। ইপিজেডে চাকরির সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
পুলিশ আরও জানায়, দীপু রায় তার প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে গত ৪ মার্চ শোভা রায়কে বিয়ে করেন। ঘটনার আগে নীলফামারী সদরের নারায়ণ মাস্টারের ভাড়া বাসায় প্রথম স্ত্রী নমিতা রাণী রায় দীপুর খোঁজ নিতে এলে প্রথম বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হন শোভা। এর পর থেকে এ নিয়ে দীপুর সঙ্গে তার বিবাদ সৃষ্টি হয়।
নীলফামারী সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দীপু রায় বাসায় এসে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শোভাকে ডাকাডাকি করেও সাড়া পাননি। তখন পাশের জানালা দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় শোভাকে দেখতে পান। পরে অন্য ভাড়াটিয়ারা দীপুকে ধরে পুলিশে খবর দিলে বাহিনীর সদস্যরা এ ব্যক্তিকে আটকের পাশাপাশি মরদেহটি উদ্ধার করেন।
ওসি আরও জানান, দীপুর প্রথম বিয়ের বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে শোভা আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে স্বামী দীপুকে আটক করা হয়।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে শোভার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশর এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বর্তমান কমিটির উপজেলা ছাত্রলীগের এবং ছাত্রলীগের একাংশের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
পৌরসভার হলরুমে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সংবাদ সম্মেলন উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্যরা।
এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় সোনাইমুড়ী বাজারে রাজমহল রেস্তোরায় দেলোয়ার হোসেন সুজন ও শ্যামল উদ্দিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একাংশ উপজেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অছাত্র, চাঁদাবাজি, দখলবাজ, অছাত্র, বিভিন্ন মামলার আসামি, টেন্ডারবাজি, নানা বিষয়ে ছাত্রলীগের নেতা পরিচয়দানকারী বিবাহিতসহ নানা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বর্তমান কমিটির উপজেলা ছাত্রলীগ নানা অভিযোগ ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফ হোসেন বলেন, ‘সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের গত বছরের ১৫ মে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। চাঁদাবাজি মামলার আসামি, পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বিএনপি জামাতের লোক, সরকারি জায়গা দখলকারী, অটোরিকশার চাঁদাবাজরা এখন ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিচ্ছে। গত বুধবার ছাত্রলীগের কিছু নেতা পরিচয়দানকারী সংবাদ সম্মেলন করেছে।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফ আরও বলেন, ‘এ সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামে তারা বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা, কাল্পনিক তথ্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে বিভিন্ন অভিযোগ উপস্থাপন করেছে। এ ধরনের ভিত্তিহীন তথ্য পরিবেশন করে তারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে। বুধবার তাদের করা সম্মেলনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘ছাত্রলীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন। এ সংগঠনের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ ওঠা সুখকর নয়। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি পৌর এলাকার পুরাতন কলেজ ও পৌরসভা খেয়াঘাটের উন্মুক্ত ইজারায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী তরিকুল ইসলাম শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
উন্মুক্ত ইজারা স্থগিত করায় মাঝিমাল্লা সম্প্রদায়ের ইজারা পেতে আর কোনো বাধা থাকল না।
মাঝিমাল্লা বহুমুখী সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর শতকরা ১০ ভাগ মূল্য বৃদ্ধিতে এ সমিতি ইজারা নিয়ে ঘাট পরিচালনা করে আসছে। এ বছর উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করায় উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করে মাঝিমাল্লা বহুমুখী সমবায় সমিতি। পিটিশনের প্রেক্ষিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
উচ্চ আদালতের আদেশের অ্যাডভোকেট প্রত্যয়ন কপিসহ ইজারাদার কর্তৃপক্ষ ঝালকাঠি পৌর মেয়র বরাবরে আবেদন করেন মাঝিমাল্লা সমিতির নেতারা। পরে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার।
রিটকারী আইনজীবী তরিকুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠির খেয়াঘাট সমূহের জন্য ঝালকাঠি পৌরসভা একটি উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করেছে। নীতিমালা অনুযায়ী মাঝিমাল্লা (পাটনি) সম্প্রদায়ের পাওয়ার কথা। উন্মুক্ত ইজারাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়। পিটিশনের শুনানি শেষে আদালত উন্মুক্ত ইজারা স্থগিত করেছে।
তিনি আরও জানান, এখন থেকে প্রথমে মাঝিমাল্লা সমিতি ইজারা নেবে। যদি কোনো কারণে সমিতির পক্ষ থেকে ইজারা নিতে অস্বীকার বা অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করতে পারবে। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের মাধ্যমে মাঝিমাল্লা সম্প্রদায় তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেয়েছে।
পৌর সচিব শাহিন সুলতানা বলেন, ‘আমরা শুধু আবেদিত দরপত্রসমূহ উন্মুক্ত করে প্রকাশ করছি। বাছাই করে গুছিয়ে রাখছি। আমরা এর বেশি কিছুই করতে পারব না।’
নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝালকাঠির পুরাতন কলেজ ও পৌর খেয়াঘাটের ইজারা বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। এ মুহূর্তে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। দরপত্র আহ্বানের পরে টেক কমিটি আছে তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার, পৌর সচিব শাহিন সুলতানাসহ পৌর কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ দুপুরে এসব ঘাট ইজারার দরপত্র বাক্স উন্মুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন:নাটোরের নলডাঙ্গায় এক স্কুলছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো হিমেল হোসেন (১৫) উপজেলার পিপরুল গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে। সে পাটুল-হাপানিয়া স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নলডাঙ্গা থানার ওসি মো. মনোয়ারুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে হিমেলকে তার সহপাঠী ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর থেকে হিমেলের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার স্বজনরা। পরে রাত হলেও বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন এবং বিষয়টি পুলিশকে জানান।
ওসি বলেন, পুলিশ হিমেলকে উদ্ধারে অভিযানে নামে। অভিযানে হিমেলের বন্ধু পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পার্থের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হিমেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হিমেলের মাথায় আঘাত, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মেহেদি, শিমুল ও সুজন নামে আরও তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী সীমান্তে পায়ুপথে স্বর্ণের বার পাচারের ঘটনায় একজনকে আটক করেছে খুলনা-২১ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।
মসজিদবাড়ী এলাকার বিজিবি চেকপোস্টের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
আটক হওয়া মনোর উদ্দিনের বাড়ি বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামে।
খুলনা-২১ বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পুটখালী ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে সীমান্তের মেইন পিলার ১৭ এর ৭ এস এর ১৬৮ আর পিলার হতে ৫০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে মসজিদবাড়ী বিজিবি চেকপোস্ট এলাকায় গোপন অবস্থান করে।
‘স্বর্ণ পাচারকারী মনোর উদ্দিন একটি ইজিবাইকে করে স্বর্ণের চালানটি ভারতে পাচারের উদ্দেশে সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল। তখন মনোর উদ্দিনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রথমে তার শরীর তল্লাশি করে কোনো স্বর্ণ পাওয়া যায়নি। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করে তার পায়ুপথে স্বর্ণের বারগুলো আছে।
‘এ সময় তাকে আটক করে বেনাপোল বাজারে রজনী ক্লিনিকে শরীর স্ক্যানিং করে পায়ুপথে ছয় পিস স্বর্ণের বারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তারপর তার কাছ থেকে স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়, যার ওজন ৭০০ গ্রাম।’
খুলনা-২১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার স্বর্ণসহ এক পাচারকারী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ধারকৃত স্বর্ণের চালানটি যশোর ট্রেজারিতে আছে। আটক ব্যক্তিকে বেনাপোল পোর্ট থানায় পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য