প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উদযাপনে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের উদ্যোগে শুরু হয়েছে তিন দিনের বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী।
‘বাংলাদেশ: উন্নয়নের ১ যুগ’ শিরোনামের এ প্রদর্শনীতে রয়েছে সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গত এক যুগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, বৈশ্বিক অঙ্গনে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার আলোকচিত্র। শেখ হাসিনার জীবনের বিভিন্ন মুহূর্তের দুর্লভ ছবিও রয়েছে প্রদর্শনীতে।
রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের শেরাটন ঢাকা হোটেলে রোববার বেলা ১১টায় ফিতা ও কেক কেটে উদ্বোধন করা হয় তিন দিনের এই আয়োজন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এবং সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে কানাডিয়ান হাইকমিশনার বেনেইট প্রিফন্টেইন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মময় সংগ্রামী জীবন নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করায় ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন জানান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের উৎসব নানাভাবে পালন হচ্ছে, হবে। সারা বাংলাদেশে নানা জায়গায় পালিত হচ্ছে, দেশের বাইরেও হচ্ছে। কিন্তু আমি বলতে চাই, তার ৭৫ বছরের এই জীবনের বিভিন্ন সংগ্রাম, আন্দোলন, কর্মময় জীবনের যে ব্যাপ্তি সেটি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার অনন্য মাধ্যম হচ্ছে এই প্রদর্শনী।’
প্রদর্শনীর আলোকচিত্র সম্পর্কে স্পিকার বলেন, ‘এখানে লক্ষ করে দেখেছি, চিত্রগুলো বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা যায়। টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম; বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা, ভাই-বোনদের মাঝে তার বেড়ে ওঠা; শিক্ষাজীবন; সাংসারিক জীবন; পারিবারিক জীবন; সন্তানদের ছবি এখানে আছে। এরপর তিনি কীভাবে রাজনীতিতে এলেন, কীভাবে বাংলাদেশের হাল ধরলেন, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, চারবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন- তার সব কিছুই চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যারা এখানে আসবেন তারা অনেক নতুন তথ্য পাবেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে জাতীয় সংসদের স্পিকার বলেন, “আমি লক্ষ করেছি, একটা জায়গাতে তার খুব পাওয়ারফুল একটি স্টেটমেন্ট আছে। সম্ভবত ১৯৮৪ সালে তিনি জাতীয় সংসদের সামনে দাঁড়িয়ে এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘এই সংসদ জনতার সংসদ’। এই যে গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাস, মানুষের শক্তির প্রতি যে বিশ্বাস, মানুষের সমর্থনের প্রতি যে বিশ্বাস, সেটি তার রাজনীতির মূল চালিকাশক্তি। তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তখনও তার বক্তব্যে সেটির সুস্পষ্ট প্রতিফলন দেখেছি।
"আজ তিনি চারবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, তার যে ভিত, সেটা তিনি অনেক কষ্টে রচনা করেছেন। অনেক দুঃসহ পথ পাড়ি দিয়ে এই অবস্থানটি তাকে নিজের জন্য তৈরি করতে হয়েছে এবং বাংলাদেশের জন্য তৈরি করতে হয়েছে।"
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতের ঘটনা এবং এর পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতির কথা তুলে ধরে স্পিকার বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যখন লিখতে হয় বা বলতে হয়- আমি বিশ্বাস করি ১৯৮১ সালের ১৭ মে তারিখটি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি টার্নিং পয়েন্ট। কারণ সেই দিন প্রধানমন্ত্রী, তখনকার শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে স্বজনহারা বেদনা নিয়ে ফিরে এসেছিলেন। সেদিন ‘ঝড়-বৃষ্টির আঁধার রাতে আমরা আছি তোমার সাথে’ এমন স্লোগানে মুখরিত হয়েছিল বাংলার মাটি।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নকে যে পর্যায়ে নিয়ে গেছেন সেটি সত্যিই বিস্ময়কর মন্তব্য করে স্পিকার বলেন, ‘বিশ্বনেতারাও সমস্বরে বলছেন, এটি একটি উন্নয়ন বিস্ময়।
‘বিশ্বের মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে আমাদের পদ্মা সেতু। প্রধানমন্ত্রীর মতো একজন নেতা আছেন বলেই আজকে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো একটি সেতু নির্মাণ করতে পেরেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যার নেতৃত্বে পেয়েছি একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ; তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দর্শন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের দর্শন।’
স্পিকার তার বক্তব্যের শেষপর্যায়ে রবি ঠাকুরকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেন-
‘ভেঙেছ দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময়, তোমারি হউক জয়।
তিমিরবিদার উদার অভ্যুদয়, তোমারি হউক জয়।’
বিশেষ অতিথি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা উন্নয়নের কাণ্ডারি। উন্নত-সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার।
‘প্রধানমন্ত্রীর মেধা, প্রজ্ঞা, মনন ও একাগ্রতায় বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বকে চমকে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে এসডিজি অর্জনে সরকার দৃঢ়ভাবে কাজ করে চলছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের রোল মডেল।’
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না থাকলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন সফল হতো না। সারা বিশ্বে তিনি এখন অনুকরণীয় রাষ্ট্রনায়ক ও অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। শুধু দেশ ও মানুষের অধিকারের সুরক্ষায় নয়, তিনি বিশ্বের মানুষের অধিকারের সুরক্ষায় অবিরাম সংগ্রাম করে চলেছেন।’
অনুষ্ঠানের সম্মানীয় অতিথি কানাডিয়ান হাইকমিশনার বেনেইট প্রিফন্টেইন বলেন, ‘এই আয়োজনে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই প্রদর্শনী থেকে আমি প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি।‘
বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন দেশটির রাষ্ট্রদূত।
অনুষ্ঠানে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘আমাদের প্রজন্ম কেন যেন বুঝে উঠতে পারেনি যে, শেখ হাসিনা আমাদের জন্য কত বড় গিফট। আজ থেকে ১০০ বছর পর যে প্রজন্ম আসবে, তারা যখন পেছনে তাকাবে, তখন আমাদের চেয়ে অনেক বেশি বঙ্গবন্ধুকন্যাকে তারা মূল্যায়ন করতে পারবে।
‘আমি যখন ওয়াশিংটন ডিসিতে যাই তখন আব্রাহাম লিংকনের বিশাল স্ট্যাচুর সামনে দাঁড়াই। আমার কেন যেন মনে হয়, জর্জ ওয়াশিংটন আমেরিকাকে স্বাধীন করেছেন, কিন্তু আমেরিকা যখন ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছিল, আব্রাহাম লিংকন তখন তাকে আটকে ধরে ঠিক করেন। বাংলার রাজনীতিতে শেখ হাসিনা হলেন সেই আব্রাহাম লিংকন।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
তিনি বলেন, ‘এই আয়োজন করতে আমাদের এক বছর ধরে কাজ করতে হয়েছে। আসলে গত ১২ বছরে দেশে এত উন্নয়ন হয়েছে যে, মানুষ তার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সংগ্রামী জীবনের কথা ভুলে গেছেন। আমরা চেষ্টা করেছি, এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে উপস্থাপন করতে।’
ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘শেখ হাসিনার সংগ্রামী জীবন ও উন্নয়নের চিত্র সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতেই এই প্রদর্শনীর আয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথায় নয়, সব সময়েই কাজে বিশ্বাসী। তার অনন্য নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন দর্শন বদলে দিয়েছে জাতির ভাগ্য।
‘মুজিব শতবর্ষে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উদযাপন হচ্ছে। এই তিনটি আনন্দের মুহূর্তকে ধারণ করেই আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন ২০০৯ সালে। এরপর আরও দুবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগেই শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন রূপকল্প ২০২১। সেই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পরের গল্প শুধুই এগিয়ে যাওয়ার। একসময়ে যে বাংলাদেশ পরিচিত ছিল বন্যাকবলিত, দারিদ্র্যপীড়িত দেশ হিসেবে, সেই দেশই এখন সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার উন্নয়নদর্শন তরুণদের সামনে তুলে ধরে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতেই এ আয়োজন বলে জানিয়েছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম, অগ্রণী ব্যাংকের এমডি ও সিইও মোহম্মদ শামস্-উল ইসলাম, পদ্মা ব্যাংকের এমডি ও সিইও এহসান খসরু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূর আলী ও ইউনিক গ্রুপের চেয়ারপারসন সেলিনা আলী।
প্রদর্শনীটি মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক।
প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠান হবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায়। শেরাটন ঢাকা হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি থাকবেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের সব ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফল প্রকাশ করেন।
ঘোষিত ফল অনুযায়ী কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন গভর্নমেন্ট এম এম সিটি কলেজের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী মণ্ডল। তার স্কোর ১০৫ দশমিক ৭৫।
এই ইউনিটে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জুবায়দা জাহান। তার স্কোর ১০২ দশমিক ৩৪।
আর বাণিজ্য বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের ইসরাত জাহান ইকতা। তিনি মোট নম্বর পেয়েছেন ৯৬।
ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন অথৈ ধর। তিনি চট্টগ্রামের গভর্নমেন্ট কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। তার প্রাপ্ত স্কোর ১০৫ দশমিক ৫০।
এই ইউনিটে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন বি এ এফ শাহীন কলেজের মাহতাব সরকার জামি। তিনি মোট নম্বর পেয়েছেন ৯২ দশমিক ৫০। আর মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের রিদোয়ানুল করিম রাইয়ান। তিনি মোট নম্বর পেয়েছেন ১০১।
বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন প্রতীক রসুল। তার স্কোর ১১১ দশমিক ২৫। তিনি নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এই ইউনিটে মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের নাফিসা তাবাসসুম। তিনি মোট নম্বর পেয়েছেন ৯৮ দশমিক ৫। আর বাণিজ্য বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন। তিনি পেয়েছেন ৯৪ নম্বর।
এছাড়া চারুকলা ইউনিটে প্রথম হয়েছে বাঁধন তালুকদার। তিনি বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। ভর্তি পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৮ দশমিক ১৬।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের সব ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফল প্রকাশ করেন।
ফল ঘোষণার শুরুতে কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। ফল প্রকাশের পর তা ওয়েবসাইটে দেখা যাবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২ হাজার ৯৩৪ আসনের বিপরীতে ১ লাখ ২ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পাস করেছেন ১০ হাজার ২৭৫ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ১০ দশমিক ০৭ শতাংশ।
এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন গভর্নমেন্ট এম এম সিটি কলেজের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী মণ্ডল। তার স্কোর ১০৫ দশমিক ৭৫।
আর ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। ১ হাজার ৫০ আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৩৪ হাজার ৩৬৭ জন শিক্ষার্থী। পাস করেন ৯ হাজার ৭২৩ শিক্ষার্থী। পাসের হার ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
এই ইউনিটে প্রথম হয়েছে অথৈ ধর। তিনি চট্টগ্রামের গভর্নমেন্ট কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী। তার প্রাপ্ত স্কোর ১০৫ দশমিক ৫০।
বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১ মার্চ। ১ হাজার ৮৫১টি আসনের বিপরীতে অংশগ্রহণ করেন ১ লাখ ৯ হাজার ৩৬৩ জন শিক্ষার্থী। পাস করেছেন ৯ হাজার ৭২৩ জন শিক্ষার্থী। পাসের ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন প্রতীক রসুল। তার স্কোর ১১১ দশমিক ২৫। তিনি নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ৯ মার্চ। ১৩০ আসনের বিপরীতে অংশগ্রহণ করেন ৪ হাজার ৫১০ জন শিক্ষার্থী। আর পাস করেছেন ৫৩০ জন। পাসের হার ১১ দশমিক ৭৫।
এই ইউনিটে প্রথম হয়েছে বাঁধন তালুকদার। তিনি বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। ভর্তি পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৮ দশমিক ১৬।
যেভাবে ফল জানা যাবে
ভর্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ শিক্ষার্থী তার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার রোল নম্বর, বোর্ডের নাম, পাসের সন এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার রোল নম্বরে মাধ্যমে https://admission.eis.du.ac.bd ওয়েবসাইট থেকে পরীক্ষার ফল জানতে পারবেন।
তাছাড়া যেকোনো মোবাইল নম্বর থেকে কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের জন্য DU ALS , বিজ্ঞান ইউনিটের জন্য DU SCI , ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের জন্য DU BUS , চারুকলা ইউনিটের জন্য DU FRT টাইপ করে ১৬৩২১ নম্বরে send করে ফিরতি SMS-এ ফল জানতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
উত্তীর্ণ ও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তারিখগুলো
উত্তীর্ণ ও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা ৩ এপ্রিল বিকেল ৩টা থেকে ২৫ এপ্রিল রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে বিস্তারিত ফরম ও বিষয়ের পছন্দক্রম ফরম পূরণ করবেন।
বিষয় পছন্দক্রম অনলাইনে দেয়ার সুবিধার্থে ১ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা তার ভর্তিযোগ্য বিষয়ের তালিকা ওয়েবসাইট থেকে নামাতে পারবেন। তালিকাটি প্রিন্ট করে তাতে পছন্দক্রম আগে লিখে রাখলে পছন্দক্রম অনলাইনে প্রদানে ভুল এড়ানো যাবে।
উত্তীর্ণ বিভিন্ন কোটায় আবেদনকারীদের ২১ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে কোটার ফরম সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনের অফিস থেকে সংগ্রহ এবং যথাযথভাবে তা পূরণ করে ডাউনলোডকৃত বিষয় পছন্দক্রমের কপিসহ ওই সময়ের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ডিনের অফিসে জমা দিতে হবে।
ফল নিরীক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনের অফিসে এক হাজার টাকা ফি প্রদান সাপেক্ষে ৩১ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত অফিস চলাকালীন আবেদন করা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ বছর ট্রান্সজেন্ডার কোটায় কোনো শিক্ষার্থী আবেদন করেননি। আর প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া সব শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ বছর থেকে আর্থিক সহযোগিতা হিসেবে বৃত্তি প্রদানের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ প্রায় শেষের পথে রয়েছে।
আরও জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এক্সটেনশন ভবনটি আগামী জুনের শেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান থেকে বুঝে পাবে। সেখানে এক হাজার শিক্ষার্থীর আসন সংকুলান করা হবে। এতে কিছুটা কমবে আসন সমস্যা।
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকাকে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবেদন ফের নামঞ্জুর করেছে কুমিল্লা আদালত।
সহকারী প্রক্টরের পক্ষে তার আইনজীবীরা জামিন আবেদন করলে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কুমিল্লা জেলা আদালতের বিচারক নাসরিন জাহান তা নামঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী আবদুল মমিন ফেরদৌস। তারা আবারও জামিন আবেদন করবেন বলে জানান তিনি।
অবন্তিকার পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নুরুর রহমান বলেন, আজ বৃহস্পতিবার প্রক্টর দ্বীন ইসলামের পক্ষে তার আইনজীবীরা জামিন আবেদন করলে বিচারক নামঞ্জুর করেন।
এদিকে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ায় সন্তুষ প্রকাশ করেছেন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। তিনি বলেন, আম্মান ও দ্বীন ইসলাম জামিন পেলে মামলা প্রভাবিত করতে পারে।
গত ১৫ মার্চ রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরোজ সাদাত অবন্তিকা সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায় দিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টের কিছুক্ষণ পরই কুমিল্লায় বাসা থেকে ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি প্যাঁচানো তার মরদেহ উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বাদী হয়ে কোতয়ালি মডেল থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে দ্বীন ইসলাম ও আম্মান সিদ্দিকীর নাম উল্লেখ ও বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। পরে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়া হয় ওই দুজনকে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ৫ কর্মী আহত হয়েছেন। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বেঞ্চের ওপর পা তুলে বসার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রলীগের সিনিয়র-জুনিয়র গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। এ সময় উভয় পক্ষ লোহার রড ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন- ওয়াহিদুল রহমান সুজন, মঈনুল ইসলাম, তৌহিদুল করিম ইমন, জাহিদ ও আমিন ফয়সাল বিদ্যুৎ।
চকবাজার থানার ওসি ওয়ালি উদ্দীন আকবর বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ আছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম বলেন, ‘বেঞ্চে পা তুলে বসা নিয়ে সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। তেমন বড় কিছু না, চড়-থাপ্পর মেরেছে। কেউ গুরুতর আহত হয়নি। পরে নিজেরাই মিটমাট করে নিয়েছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে সব ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষার ফল বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হবে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট; বিজ্ঞান ইউনিট; ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট এবং চারুকলা ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষার ফল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রকাশ করা হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রশাসনিক ভবনে অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করবেন।
এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা। বিভিন্ন ইউনিটের পরীক্ষা চলে ৯ মার্চ পর্যন্ত।
ভর্তি পরীক্ষায় মোট ১২০ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বর এবং মাধ্যমিক (এসএসসি) বা সমমান ও উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) বা সমমানের পরীক্ষার ফলের ওপর ২০ নম্বর বরাদ্দ দেয়া ছিল।
দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক নিয়মে সপ্তাহে দু’দিন শুক্র ও শনিবার ছুটি থাকছে। তবে আগামী বছর থেকে সাপ্তাহিক ছুটি কেবল শুক্রবারে সীমিত করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে শনিবার স্কুল খোলা রাখার এই ছুটি রমজানে স্কুল বন্ধ রেখে সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক আলোচনা সভায় এমন তথ্য জানান।
মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাসে বিদ্যালয় খোলা থাকা নিয়ে নানা ধরনের প্রচার-অপপ্রচার হয়েছে। যেহেতু এ বছর বিষয়টি এভাবে এসেছে, আগামীতে আমরা বিষয়টি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করব।’
তিনি বলেন, ‘বছরে ৫৩ সপ্তাহে ৫২টি শনিবার রয়েছে। সেখানে যদি বিদ্যালয় কিছুটা খোলা রাখি, তাহলে রমজানের ক্ষেত্রে বিতর্ক সৃষ্টির অপপ্রয়াস যারা করছে তাদের সেই অপপ্রয়াস বন্ধ করা যাবে।
‘সে লক্ষ্যে আমরা একটি পরিকল্পনা করব। যাতে এটা নিয়ে আবারও কেউ আদালতে গিয়ে মিথ্যা বুঝিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে রায় নিয়ে এসে অপচেষ্টা করতে না পারে, রাস্তায় এসে মানববন্ধন করতে না পারে। আমরা সংবেদনশীলতার জায়গায় শ্রদ্ধাশীল। আমরা আলেম-ওলামার সঙ্গেও আলোচনা করব। তাদেরও একটা অবস্থান আছে এটা নিয়ে।’
মহিবুল হাসান বলেন, ‘মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে অন্য পাবিভিন্ন ধর্মের মানুষও রয়েছে। এদের মধ্যে এক ধরনের মানুষ রয়েছে যারা অবিশ্বাস, সহিংসতামূলক ও শ্রেষ্ঠত্বমূলক মনোভাব সৃষ্টি করে বিভিন্ন সময়ে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়। পাঠক্রম থেকে শুরু করে পাঠ্যবইকেও ওসিলা বানিয়ে তারা এসব অস্থিতিশীলতা তৈরি করে।
‘আমরা অনেক ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা আমাদের অনেক উপদেশ দিয়েছেন, যাতে কেউ কোনো ধরনের বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস না পায়। আমরা সব বিষয় আরও কেয়ারফুলি দেখব।’
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এমন ধরনের ইঙ্গিত পেলেও সেটার নিরসন করা হবে। এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা শিক্ষাব্যবস্থাকে একধরনের গোঁড়ামির দিকে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা। আর এটা দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যমান।’
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার।
সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমদ ও বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে প্রাথমিক বিদ্যালয় রমজানে ১০ দিন এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫ দিন খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বিষয়টি আদালত পর্যন্তও গড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামকে চাকরি প্রদানের বিনিময়ে মিষ্টি খেতে দশ লাখ টাকার প্রস্তাব দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে রহস্যময় ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েছেন মিথি নামের এক তরুণী৷
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে চাকরি প্রদানের অনুরোধ জানিয়ে প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন এবং পরবর্তীতে ওই বার্তাটি পাঠান তিনি। হোয়াটসঅ্যাপ আইডিতে তার নাম দেখা যায় মিথি।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচএম আলী হাসান ইবি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
ক্ষুদেবার্তায় ওই তরুণী লিখেছেন, ‘স্যার,,, ১০ লাখ মিষ্টি খেতে নেন স্যার, এটা আপনি আর আমি ছাড়া কেউ জানবে না ইনশাআল্লাহ, আমার সত্যিই ওখানে কেউ নেই, প্লিজ স্যার চাকরিটা খুব দরকার।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে উপাচার্যকে ফোন দিয়ে একটি অপরিচিত মেয়ে যোগাযোগ করতে চাচ্ছিল। উপাচার্যের সাড়া না পেয়ে মেয়েটি ম্যাসেজ পাঠায় যে, যদি তাকে চাকরি দেয়া হয় তাহলে ১০ লাখ টাকা দেবে।
‘এরপরই আমরা ইবি থানায় একটি জিডি করি যাতে ভবিষ্যতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটি প্রকাশ হলেও কোনো সমস্যা না হয়।’
এ বিষয়ে ইবি থানার এসআই মেহেদী হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে রেজিস্ট্রার মহোদয় একটি জিডি করেছেন। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
বিষয়টি নিয়ে ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘এক নারী হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলতে চান। এ সময় তার পরিচয় কী? কী বিষয়ে কথা বলতে চান? এসব জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাকরির বিষয়ে।
‘তখন আমি বললাম, চাকরির বিষয়ে আমি কোনো কথা বলি না। তখন তিনি বলেন, চাকরিটা তার খুব দরকার। পরে আমি ফোন কেটে দিলে তিনি হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে চাকরি প্রদানের বিনিময়ে মিষ্টি খেতে দশ লাখ টাকার প্রস্তাব দেন।’
উপাচার্য বলেন, ‘আমার ধারণা, এটা কোনো সংঘবদ্ধ চক্রের কাজ। আমাকে ফাঁদে ফেলার জন্য তারা এটা করতে পারে। তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পূর্বাপর যে তৎপরতা চালিয়েছে, এ ফোনকল তারই অংশ হতে পারে।
‘এরা আমার মানক্ষুণ্ণ করার জন্য এ কাজ করে থাকতে পারে। আমি রেজিস্ট্রারকে তাৎক্ষণিক থানায় জিডি করতে বলেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবারও বলছি, আমি কোনো ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই। আমার সময়ে সকল নিয়োগ স্বচ্ছতার সঙ্গে দিয়েছি, যে যোগ্য তাকে নিয়োগ দিয়েছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য