গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখাতে আর ছিল কেবল দেড় মাসের অপেক্ষা। এরপরেই হয়তো বিশ্বের সবচেয়ে খর্বাকৃতির গরু হতে পারত রানি। এর আগে হঠাৎ মৃত্যু হয় প্রাণীটির।
সাভারের এই আলোচিত গরুর মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকর্মীরা সরাসরি পান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছ থেকে। তবে শুরুর দিকে এই তথ্য অস্বীকার করেন রানির মালিক। পরে বিষয়টি স্বীকার করে ফেসবুকে পোস্ট দেন।
সংবাদকর্মীদের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রানি আগে থেকেই অসুস্থ ছিল। তাকে শেষ সময়ে চিকিৎসার জন্য আনা হয়।
এসব খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর রানির মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলেন এলাকার লোকজন। ফেসবুকেও অনেকে এ নিয়ে পোস্ট দেন। তাদের ধারণা, গিনেসে নাম লেখাতে খামারমালিক মরিয়া হওয়ায় রানির অসুস্থতা এমনকি মৃত্যুর বিষয়টিও ধামাচাপা দিতে চেয়েছিলেন।
রানির মৃত্যুর দুই দিন আগে তার খোঁজ নিতে আশুলিয়ার কুরগাঁও এলাকার শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের ওই খামারে যান নিউজবাংলার প্রতিবেদক। তখন তাকে খামারে ঢুকতে দেয়া হয়নি। দেখতে দেয়া হয়নি রানিকে।
কারণ জানতে চাইলে খামারের একজন বলেন, স্টাফদের অসুস্থতার কারণে মালিকের নির্দেশে সেখানে প্রবেশ একেবারেই বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে সেদিনই ফোন দেয়া হয় খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. আবু সুফিয়ানকে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, তাদের নিজস্ব প্রাণিচিকিৎসক নিয়মিত রানিকে দেখতে আসেন। রানি সুস্থ আছে।
এর দুই দিন পর বৃহস্পতিবার সাভার উপজেলার উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মোতালিব নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন, রানি মারা গেছে। মুমূর্ষু অবস্থায় গরুটিকে তার কাছে আনা হয়। তাই তাকে বাঁচানো যায়নি।
রানির অসুস্থতা ও মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে মঙ্গলবার খামার এলাকায় যান নিউজবাংলার প্রতিবেদক, কথা বলেন আশপাশের লোকজনের সঙ্গে। তারা জানান, আগে রানিকে খামারের যে অংশে রাখা হতো, সেটি বাইরে থেকেই দেখা যেত। তবে, বেশ কিছুদিন ধরে রানিকে সেখান থেকে সরিয়ে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। খামারে দর্শনার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশও বন্ধ করে দেয়া হয়।
ওই খামারের পাশেই বাড়ি লোকমান হোসেনের। স্থানীয় সাংবাদিকদের তিনিই রানির বিষয়ে খোঁজখবর দিতেন। তার দাবি, গত বৃহস্পতিবার তিনিই প্রথম জানতে পেরেছিলেন যে রানি মারা গেছে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মারা যাওয়ার আগে রানিরে আমি খামারে দেখি নাই। করোনার কারণে ওনারা আমাদের ঢুকতে দিত না লোকজন অনেক বেশি হয় দেইখা। এই কারণে আমিও যাইতাম না। এলাকার লোকজন প্রাচীরের ওপর দিয়া রানিরে দেখার চেষ্টা করত।
‘বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভারের সরকারি পশু হাসপাতালের একজন পরিচিত লোক আমারে ফোন করে জানাল, ভাই পাঁচ মিনিট আগেই রানি মারা গেল। বলছে, আমার চোক্ষের সামনে মারা গেছে। পরে আমি সাংবাদিকদের ফোন দিয়া জানাইছি।’
পশু চিকৎসক মো. আতিকুজ্জামান ওই খামারে গিয়ে নিয়মিত রানিকে দেখতেন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মারা যাওয়ার দুই-তিন দিন আগেও আমি খামারে গিয়ে রানিকে দেখে এসেছিলাম। তখন স্বাভাবিক ছিল। কোনো সমস্যা ছিল না।
‘ওইদিন (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টার দিকে হঠাৎ করেই আমাকে ফোন দিছে। বলছে যে, এই রকম পেট ফুলে গেছে। তখন আমি বলছি, আমি উপজেলা পশু হাসপাতালে আছি পাঠায় দেন।’
মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তাদের পার্সোনাল ডাক্তার না। আমি আরেকটা কোম্পানিতে (এসআই গোদরেজ) জব করি। তবে ওখানে মাঝে মধ্যেই যাওয়া হয়। আমার মনে হয়, পেটে অতিরিক্ত পরিমাণ গ্যাস জমে গিয়েছিল। গ্যাস জমে পেটটা ফুলে গিয়েছিল।
‘গ্যাস তো অনেক কারণেই জমতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় যে, দানাদার খাবার গুঁড়া, ভুসি এগুলা খাওয়াইলে পেটে গ্যাস জমে যায়। তা ছাড়া রানি যেহেতু বামন টাইপ, তাই ইমিউনিটিও অনেক কম ছিল। পরে আমরা হাসপাতালে অনেক চেষ্টা করেছি রিকভার করার জন্য। কিন্তু রিকভার করতে পারি নাই।’
উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মোতালিব বলেন, ‘গরুটা দুই দিন ধরে অসুস্থ ছিল। এটার শরীরে অ্যান্টিবডি তেমন নাই। ওরা হয়তো পচা-বাসি খাবার খাওয়াইছে। আবার ফিডও খাওয়াইছে মনে হয়। ওরাও বলছে, ফিড খাওয়াইছে।
‘দানাদার খাবার বেশি খাওয়াইলে অনেক সময় পেট ফুলে যেতে পারে, গ্যাস হতে পারে। যার কারণে ফুড পয়জনিং হয়ে মারা গেছে। গরুটা মুমূর্ষু অবস্থায় আমাদের কাছে নিয়ে আসছে। আনার পরে আমরা যথার্থ চিকিৎসা যা দেয়ার দিয়েছি। কিন্তু চিকিৎসায় কোনো উন্নতি হয় নাই। তারপরে গরুটা মারা গেছে।’
এ ধরণের খর্বাকৃতি স্বল্প ইমিউনিটির গরুর যত্ন কেমন হওয়া উচিত, রানিকে সেভাবে রাখা হয়েছিল কি না- তা জানতে যোগাযোগ করা হয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলামের সঙ্গে।
নিউজবাংলাকে তিনি জানান, এ ধরনের গরু যেহেতু স্বাভাবিক না, সেহেতু এগুলোর যত্ন-আত্তিও অন্যসব গরুর মতো নেয়ার সুযোগ নেই। এমনকি এ ধরনের গরুকে অন্যগুলোর চেয়ে আলাদা জায়গাতেই রাখা দরকার।
সাজেদুল বলেন, ‘আমি প্রথম যখন রানিকে দেখতে সেখানে যাই, তখনই তাদের (খামার কর্তৃপক্ষ) বলেছিলাম এর যত্ন নিতে হবে বিশেষভাবে। তাদের জানিয়েছিলাম, স্বাভাবিক গরুকে যে পরিমাণ খাবার দেয়া হয়, রানিকে সে পরিমাণ দেয়া যাবে না। তার ওজন বুঝে পরিমিত খাবার দিতে হবে। যেহেতু এটি আকারে ছোট, তাই অন্য গরুর থেকে এটিকে আলাদা করে রাখতে হবে।’
রানির যত্নে কোনো ত্রুটি ছিল কি না, জানতে চাইলে সাজেদুল বলেন, ‘এটি আমি বলতে পারব না। রানির বিষয়ে বিভিন্ন সময় খামার কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে ফোন করে পরামর্শ নিতেন। রানিকে শেষ সময়ে যখন নিয়ে আসে, তখন পরীক্ষা করে বোঝা গেছে যে এটি অন্তত দুই দিন ধরে অসুস্থ।
‘যখন রানি অসুস্থ হয়, তখনই আমাদের খবর দেয়া উচিত ছিল। তাহলে সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা দিলে হয়তো রানিকে বাঁচানো যেত।’
সাজেদুল মনে করেন, যে গরু নিয়ে দেশে-বিদেশে এত চর্চা হচ্ছে, তার রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে খামার কর্তৃপক্ষের আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন ছিল।
রানির অসুস্থতার খবর কেন আগে জানানো হলো না, সেই প্রশ্নও তোলেন এই চিকিৎসক।
রানির মৃত্যুর পর একটি বেসরকারি টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ রিপোর্টার জাহিদুর রহমান ফেসবুকে লেখেন, ‘আমরা আসলে কেমন? দেখেন একটা খর্বাকৃতির গরুর জন্য আমাদের কতই না উচ্ছ্বাস, উৎসাহ! গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম ওঠানো নিয়ে কথা! সেই খর্বাকৃতির গরুটা অসুস্থতা নিয়ে আজ মারা গেল। যেতেই পারে। জন্ম-মৃত্যু যেখানে সৃষ্টিকর্তার হাতে।
‘খামারের মালিক শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. আবু সুফিয়ানকে ফোন দিলাম ঘটনার সত্যতা জানার জন্য। তিনি বেমালুম অস্বীকার করলেন। বললেন, তার “রানি” মরেনি। বোঝেন অবস্থা! এই গরুটি তো আর কোটি টাকার ব্যাংক লোন নিয়ে কেনা নয়। তো সেই গরুর মৃত্যুর খবর তিনি কেন অস্বীকার করছেন? কারণ একটাই। তার আকাঙ্ক্ষা, এই খবর কোনোমতে চেপে রাখলে দেড় মাস পর গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে তাদের নাম উঠবে।’
এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সুফিয়ান। তবে নিজের প্রতিক্রিয়া নিউজবাংলার প্রতিবেদককে ইনবক্স করেন।
তিনি বলেন, ‘রানিকে আবিষ্কারের পর থেকেই সব প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বন্ধুগণ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তা, চারিগ্রাম এলাকার সর্বস্তরের জনগণের সার্বিক সহযোগিতায় বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পায় রানি। অনেক শৌখিন ক্রেতা উচ্চমূল্যে রানিকে কিনেও নিতে চান।
‘কিন্তু আমাদের ইচ্ছে ছিল বাংলাদেশের হয়ে গিনেস বুকে আগে ওর নামটা লেখানো। তারপর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে শিকড় অ্যাগ্রোর পক্ষ থেকে উপহার দেয়া। এ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা আবেদনও করে রেখেছিলাম… রানি তো রানি-ই। পৃথিবীর একমাত্র ইউনিক পিস। স্বাভাবিকভাবে সেলিব্রিটি হবার পর রানির নিরাপত্তার কারণে ওর চলাফেরা আমাদের সীমিত করতে হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে ছোট গরু আমাদের রানি মারা গেল।’
তিনি জানান, রানিকে ওই রাতেই খামারে মাটিচাপা দেয়া হয়।
রানির খবর গত ৫ জুলাই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপরই দেশব্যাপী জনপ্রিয় হয় ২০ ইঞ্চির এই গরুটি। দুই বছর বয়সী রানিকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে এএফপি, বিবিসি, অস্ট্রেলিয়ার এবিসি, ফ্রান্সের ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর, সংযুক্ত আরব আমিরাতের গালফ নিউজসহ অনেক সংবাদমাধ্যম।
সে সময় বক্সার ভুট্টি জাতের এই গরুকে কিনতে আগ্রহ দেখান শৌখিন ক্রেতা ও খামারমালিকরা। এর জন্য সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত দিতেও রাজি ছিলেন কেউ কেউ। তবে খামার কর্তৃপক্ষ গিনেস বুকে নাম ওঠার আগে রানিকে হাতছাড়া করতে নারাজ ছিলেন সে সময়।
শেষমেশ চিরতরেই হাতছাড়া হয়ে গেল রানি।
আরও পড়ুন:দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি থেকে বের হয়ে নিজস্ব প্রশ্নপত্রে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তির আবেদন শুরু হবে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক খাদেমুল ইসলাম জানান, চলতি ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক পর্যায়ের লেভেল-১ সেমিস্টার-১ এ চারটি ইউনিটের অধীনে আটটি অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হবে।
গত ১৩ জানুয়ারি হাবিপ্রবির অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের ৬৮তম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে জিএসটি গুচ্ছতে না থাকার ও স্বতন্ত্রভাবে নিজস্ব (প্রশ্নপত্রে) তত্ত্বাবধানে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ লক্ষ্যে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত ভর্তির জন্য আবেদন করা যাবে। যাচাই-বাছাই শেষে আগামী ২১, ২২, ২৩ ও ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।
এ সংক্রান্ত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশের মাধ্যমে জানাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন:সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে সরওয়ার আহমেদ চৌধুরী আবদাল ও সাধারণ সম্পাদক পদে জুবায়ের বখত জুবের বিজয়ী হয়েছেন।
তারা দুজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার সৈয়দ মোহাম্মদ তারেক শুক্রবার ভোর ছয়টায় এ ফল ঘোষণা করেন। ওই সময় তাকে সহযোগিতা করেন সহকারী নির্বাচন কমিশনার এম. আবদুল করীম আকবরী ও জামিল আহমদ।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সমিতির ২ নম্বর হলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
আইনজীবী সমিতির ২৬ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৬৫ জন প্রার্থী।
সভাপতি পদে বিজয়ী সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল পান ৭৭০ ভোট। তিনি সিলেট মহানগরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে রয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা এটিএম ফয়েজ ৬৫৮ ভোট পান।
সিনিয়র সহসভাপতি পদে আওয়ামী লীগ নেতা জ্যোতির্ময় পুরকায়স্থ (কাঞ্চন) সর্বোচ্চ ৫৯১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জোছনা ইসলাম ৩৫৫, আলী হায়দার ২৩৩ এবং সৈয়দ ফেরদৌস ২১৩ ভোট পান।
সহসভাপতি-২ পদে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগপন্থি ও জুলাই অভ্যুত্থানের ঘটনায় করা মামলার আসামি মোহাম্মদ মোখলিসুর রহমান। তিনি সর্বোচ্চ ৪৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুস সোহেব আহমদ (৩৮২), আবদুল হান্নান (৩৭৮) ও আফরোজ আহমদ (৬৪) ভোট পান।
সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হন জুবায়ের বখত জুবের। সাবেক এ ছাত্রলীগ নেতা ৩০৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগপন্থি গোলাম রাজ্জাক ৫৮, বিএনপিপন্থি জোহরা জেসমিন ২৪, বামপন্থি দেলোয়ার হোসেন দিলু ২৮৫, আওয়ামী লীগপন্থি মাসুদুর রহমান মুন্না ৪৮, আওয়ামী লীগপন্থি মমিনুর রহমান টিটু ২৭৯, জামায়াতপন্থি আজিম উদ্দিন ১৮৪ ও বিএনপিপন্থি মশরুর চৌধুরী শওকত ২৪২ ভোট পান।
সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগপন্থি ওয়াহিদুর রহমান চৌধুরী ৭০৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিপন্থি ইকবাল আহমদ ৪৭৮ ও বিএনপিপন্থি তাজ রিহান জামান ২৩৬ ভোট পান।
যুগ্ম সম্পাদকের ২ পদে বিএনপিপন্থি রব নেওয়াজ রানা ৪২০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতপন্থি আমিনুর রব চৌধুরী ১৫১, আওয়ামী লীগপন্থি কানন আলম ২৮৩, বিএনপিপন্থি সেবা বেগম ৩৫, বিএনপিপন্থি তানভীর আক্তার খান ২২২, জনতা পার্টির তাহামিনুল ইসলাম খান ২০২ ভোট পান।
এ ছাড়াও সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যের ১১টি পদের বিপরীতে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ীরা হন। তারা হলেন অ্যাডভোকেট মো. গিয়াস উদ্দিন (৯৮৫ ভোট), এ.এস.এম. আব্দুল গফুর (৯২৩ ভোট), এ.কে.এম. ফখরুল ইসলাম (৯১৬ ভোট), মো. জামিলুল হক জামিল (৯১৪ ভোট), আবদুল মালিক (৮৯১ ভোট), কল্যাণ চৌধুরী (৮১৬ ভোট), আশিক উদ্দিন (৭৭৯ ভোট), জুবের আহমদ খান (৭৩৯ ভোট), আবু মো. আসাদ (৬৬৩ ভোট), মো. আলীম উদ্দিন (৬৬০ ভোট) এবং মো. ছয়ফুল হোসেন (৬২৬ ভোট)।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে শুক্রবার বাসের ধাক্কায় বিএনপির নেতাসহ মোটরসাইকেলের তিন আরোহী নিহত হয়েছেন।
ভোররাত চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তিনজন হলেন মিরসরাইয়ের মায়ানী বড়ুয়াপাড়ার বাসিন্দা ও বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রুবেল বড়ুয়া এবং নিপ্পু বড়ুয়া ও সনি বড়ুয়া।
মায়ানী ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আশরাফ উদ্দিন জানান, তিনজন হোটেলে নাশতা করে বাড়ি ফেরার পথে বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘মিরসরাইয়ে দুর্ঘটনায় তিন মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।’
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
এ দুর্ঘটনায় শতাধিক বাড়িঘর পুড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
টেকনাফের নয়াপাড়া মৌচনি ক্যাম্পের জি-ব্লকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নয়াপাড়া ক্যাম্পের ইনচার্জ আবদুল হান্নান বলেন, ‘ক্যাম্পে আগুন লাগলে মুহূর্তেই আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে চারপাশ। এ সময় আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুর।’
মৃত শিশুর পরিচয় এখনও জানা যায়নি বলেও জানান তিনি।
১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ কাউসার সিকদার বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ও রোহিঙ্গাদের এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুড়ে গেছে শতাধিক বাড়িঘর। এ ছাড়াও আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় এপিবিএন।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের একটি পাহাড়ি ছড়া থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা-বাগানের ফাঁড়ি কুরঞ্জি এলাকার একটি ছড়া থেকে দীপেন মুন্ডার (৩৫) মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
দীপেন কুরমা চা বাগানের ফাঁড়ি কুরঞ্জি এলাকার প্রসাদ মুন্ডার ছেলে।
পুলিশের ভাষ্য, বৃহস্পতিবার সকালে কুরঞ্জি পুঞ্জির কাছে পাহাড়ি ছড়ায় একটি লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন। তার শরীরে ছিল একাধিক আঘাতের চিহ্ন। পরে স্বজনরা সেখানে গিয়ে লাশটি দীপেন মুন্ডার বলে শনাক্ত করে।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ আরও জানায়, বুধবার রাতে দুর্বৃত্তরা দীপেনকে নির্মমভাবে হত্যা করে কুরঞ্জি এলাকার একটি পাহাড়ি ছড়ায় লাশ ফেলে দিতে পারে।
এদিকে কমলগঞ্জ থানাকে বিষয়টি অবগত করলে খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কমলগঞ্জ থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেনের নেতৃত্বে লাশ উদ্ধারে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
দীপেনের বাবা প্রসাদ মুন্ডা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ছেলের সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল কি না, জানা নেই। শেষকৃত্যানুষ্ঠান শেষে মামলা করব।’
কমলগঞ্জ থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন জানান, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় দীপেনের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। পূর্বশত্রুতার জেরে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করতে পারে।
আরও পড়ুন:হাওর অঞ্চলে সারের বাফার গুদাম করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. ছাইফুল আলম।
তিনি বলেন, ‘হাওর অঞ্চলের কৃষকদের জন্য অনেক দূর থেকে সার সরবরাহ করতে হয়। এ কারণে পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যায়। এ অবস্থায় হাওর অঞ্চলে সারের বাফার গুদাম করা প্রয়োজন।
‘সম্প্রতি কৃষি উপদেষ্টার সঙ্গে জুম মিটিংয়ে এখানকার কৃষি কর্মকর্তার সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ হলরুমে সোমবার দুপুরে আয়োজিত অবহিতকরণ কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
রবি/২০২৪-২৫ অর্থবছরে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় বোরো আবাদ বৃদ্ধিতে করণীয় বিষয়ে কর্মশালার আয়োজন করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা এবং হাওর খুবই বৈচিত্র্যময়। আমরা যদি কৌশলী হই, এখানকার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পারি এবং সঠিকভাবে কাজ করতে পারি, তাহলে খাদ্য উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব।’
বিএডিসির কর্মকর্তাদের এখানে কিছুটা অবহেলা রয়েছে উল্লেখ করে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘বিষয়টি সচিব মহোদয় অবহিত আছেন। এ অবহেলা কাটিয়ে উঠতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ফসলের মাঠ যদি ভালো না হয়, তবে বীজও ভালো হবে না। সে জন্য আগে ফসলের মাঠ ভালো করতে হবে। বীজ সরবরাহের ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে যে এলাকার জন্য যে জাত উপযোগী, সেটাই দিতে হবে।’
জমিতে সুষম মাত্রায় সার ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জমিতে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সার ব্যবহার করা হচ্ছে। সুষম মাত্রায় সার ব্যবহারের ক্ষেত্রে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ভূমিকা রাখতে হবে। কৃষকদেরকে বোঝাতে হবে।
‘জৈব সারের ব্যবহার বাড়াতে হবে। জৈব সার ব্যবহারে রাসায়নিক সারের ওপর চাপ কমে আসবে এবং মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।’
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ উইং) কৃষিবিদ আবু মো. এনায়েত উল্লাহ।
কর্মশালায় জেলার ১৩টি উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কৃষক ও সংবাদকর্মীরা অংশ নেন।এতে বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার বিষয়গুলো তুলে ধরেন তারা।
আরও পড়ুন:মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ২ কেজি ১৮ গ্রাম ওজনের ১৮টি স্বর্ণের বারসহ নুর হোসেন (৪৮) নামের ভারতীয় এক নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সীমান্তের ১০৪ নম্বর পিলারের কাছ থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
নুরের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হৃদয়পুর গ্রামে।
৬ বিজিবি চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মাদ জাহিদুর রহমান জানান, মুজিবনগরের সীমান্ত মাঠের মধ্যে দিয়ে স্বর্ণ চালান হবে, এমন খবরের ভিত্তিতে সীমান্তের মেইন পিলার ১০৪-এর সাব পিলার ৫-এর কাছে অবস্থান নেন মুজিবনগর সীমান্ত চৌকির (বিওপি) টহল কমান্ডার হাবিলদার রফিকুল ইসলামসহ বাহিনীর সদস্যরা। সন্দেহভাজন একজন বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করলে তাকে চ্যালেঞ্জ করেন বিজিবির সদস্যরা। ওই সময় পালানোর চেষ্টা করলে বিজিবি সদস্যরা তার পেছনে ধাওয়া করেন।
পরে মাঠের মধ্যে থেকে আটক করা হয়। ওই সময় নুর হোসেনের শরীর তল্লাশি চালান বিজিবির সদস্যরা। তার কোমরের সঙ্গে প্যান্টের ভেতর স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো তিনটি প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। প্যাকেটের মধ্য থেকে ২ কেজি ১৮ গ্রাম ওজনের ১৮টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় হাবিলদার রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ছাড়াও স্বর্ণের বারগুলো মেহেরপুর ট্রেজারি অফিসে জমার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য