ভাই ওবায়দুল কাদের ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয়ার পরও থামছেন না আবদুল কাদের মির্জা। পৌরসভায় সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে কর্মসূচি পালন করে আলোচনায় আসা এই মেয়র প্রার্থী বলেছেন, এই নির্বাচনকে তিনি নিয়েছেন আন্দোলনের অংশ হিসেবে।
কাদেরের ভাইয়ের অভিযোগ দলের একাংশের বিরুদ্ধে। বলেছেন, অন্য নির্বাচনী এলাকা থেকে এসে তার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পোস্টার বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীর লোকেরা ছিঁড়ছে না, ছিঁড়ছে ফেনী ও মাইজদী থেকে পাঠানো গুন্ডাপান্ডারা। যারা অস্ত্র পাঠিয়েছেন, তারা এগুলো করছেন আমাকে উত্ত্যক্ত করতে। আমি সাহস করে সত্য কথা বলেছি, বলব মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।’
প্রশাসনও তার বিরুদ্ধে লেগেছে বলে দাবি কাদেরের ভাইয়ের। বলেন, ‘তারা আমার বিরুদ্ধে। কারণ, আমি তাদের গোমর ফাঁস করে দিয়েছি।’
ভোটের প্রচারে বৃহস্পতিবার বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পথসভায় বক্তব্য রাখছিলেন কাদের মির্জা। বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনার শাহদাত হোসেন চৌধুরী সাহেবকে বলেছি, নিরপেক্ষ ভোট করে দেয়ার জন্য।’
কাদের মির্জা নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার তিন বারের মেয়র। ১৬ জানুয়ারির ভোটে আবার তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। গত রোববার বসুরহাটে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি নিয়ে রাজপথে অবস্থান আর ‘বিপ্লবী’ বক্তব্য দিয়ে তিনি মনযোগ কেড়েছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই সেদিন বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বৃহত্তর নোয়াখালীতে তিন চার জন ছাড়া কোনো এমপি ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না। এমপিরা সেখানে সন্ত্রাস লালন করেন, আওয়ামী লীগের নেতারা ছোট চাকরিতেও ঘুষ খান।
বিএনপি প্রশংসা করছে কাদের মির্জার। বলছে, তারা যে ভোটে কারচুপির অভিযোগ আনেন, সেটা প্রমাণ হয়েছে কাদেরের ভাইয়ের বক্তব্যে।
ওবায়দুল কাদের নিজ ভাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার ইঙ্গিত দিয়েছেন। বুধবার দলীয় কর্মসূচিতে তিনি বলেন, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে পার পাবেন না কেউ।
ভাইয়ের এই হুঁশিয়ারির পরও থামছেন না কাদের মির্জা। বলেন, ‘আমি এই নির্বাচনকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছি। বহিষ্কার করলে সে দিনের মতো সেখানে (জিরো পয়েন্ট) গিয়ে শুয়ে থাকব। কেউ সঙ্গে না গেলে একা থাকব।’
চাকরি নিতে ঘুষের যে অভিযোগ গত রোববার তোলেন কাদের মির্জা সেটিরও পুনরাবৃত্তি করেছেন তিনি।
বলেন, এক জন পুলিশ কত টাকা বেতন পায়? চাকরি নিতে তাকে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়। এক জন স্কুলের পিয়নকে চাকরি নিতে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়। সর্বত্র অনিয়ম।
গরিব মানুষ সরকারি অফিসে গেলে দুই-তিন হাজার টাকা দিতে হয় অভিযোগ করে কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় কেউ কেউ আমাকে বলে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে আসতে। আমি কি পাগল হয়ে গেছি?’
দুর্নীতির বিরুদ্ধে বক্তব্য থামাবেন না জানিয়ে কাদের মির্জা বলেন, তিনি এখন শত্রু হয়ে গেছেন। বলেন, ‘কবিরহাটে আমাদের কর্মীদের দিকে তাকানো যায় না। চার-পাঁচজন সব লুট করে খাচ্ছে। এই কথাগুলো আমি বললে অপরাধ। বলা যাবে না, আমার বিরুদ্ধে অস্ত্র পাঠায়।’
হুমকি দিয়ে লাভ হবে না জানিয়ে বলেন, কারাগারকেও ভয় পান না তিনি। বলেন, ‘আমি ’৮২ সাল থেকে জেল খেটেছি। তিতা হয়ে গেছি জেল খাটতে খাটতে। এগুলোকে ভয় পেয়ে লাভ নাই।...আর মেরে ফেলবেন? সেটা শেষ।’
তিনি বলেন, ‘এই প্রশাসন আজ মনে করে শেখ হাসিনাকে আমরা বানাইছি, যা ইচ্ছা তা করব। রাজনৈতিক নেতাদের দুর্নীতির বিচার হয়, এতে মানুষ খুশি। কিন্তু প্রশাসনের লোক যে এটার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচার হয় না।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মানুষের সেবা করে যাওয়াটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশনের পাশাপাশি ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে, যাতে সব অনিয়ম দূর হয় এবং জমি নিয়ে হানাহানি বন্ধ হয়।’
বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় ভূমি সম্মেলন-২০২৩ ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাতটি প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপি ৬টি ভূমি অফিস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। রেকর্ড পুড়িয়ে দেয়া হয়। ফলে ভূমি অফিসের দুরবস্থা সবার নজরে এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় সরকার চারশ’ আধুনিক ভূমি অফিস করে দিয়েছে।
‘একদিক থেকে ভালো হয়েছে যে, ওদের আগুন লাগানোর ফলে নতুন ও আধুনিক ভূমি অফিসের ব্যবস্থা হয়েছে। আর এও প্রমাণ হয়েছে- ওরা ধ্বংস করে আর আওয়ামী লীগ সৃষ্টি করে মানুষের কল্যাণে। মানুষের সেবা করে যাওয়াটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের অনিয়ম দূর হোক। আমরা আজ ৭টি উদ্যোগ উদ্বোধন করলাম। প্রতিটি উপজেলায় উন্নত ভূমি অফিস ও রেকর্ড সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসবের সুবাদে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন সহজ হবে।’
সম্পদ বণ্টন নিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা দেখি- বোনকে বঞ্চিত করে ভাই। আবার বোনও ভাইকে বঞ্চিত করে। বোন বোনকে বঞ্চিত করে এমন ঘটনাও আছে। বণ্টন ব্যবস্থাটা ডিজিটালাইজড করলে এই সমস্যা হবে না।
‘অধিকাংশ পারিবারিক সমস্যা এই বণ্টনের কারণে হয়। খুন-খারাবিও হয়। এর মধ্য দিয়ে অনেক পারিবারিক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। মানুষ শান্তি পাবে। মানুষের জীবনের শান্তি ও সমৃদ্ধি আমাদের কামনা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ অনলাইনে আদায় করা হবে। দেশের সাধারণ জনগণের পাশাপাশি ১৯২টি দেশ থেকে কল সেন্টারে বা ভূমি সেবা পোর্টালে আবেদন করলে প্রবাসীদের ঠিকানায়ও খতিয়ান পাঠানো হবে। ইতোমধ্যে অনলাইনে ৭৭০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। সে হিসাবে দিনে গড়ে রাজস্ব আদায় ৫ কোটি টাকার বেশি।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশনের পাশাপাশি ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। ১৬১২২ নম্বরে ফোন করে কিংবা ঘরে বসে পোর্টাল থেকে নামজারি, খতিয়ান নেয়া এবং ভূমি কর দেয়া যাচ্ছে।
ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ ঠেকাতেও নেয়া হয়েছে ব্যবস্থা। ভূমিতে নতুন নিয়োগ বিধিমালার মাধ্যমে নিয়োগের সমস্যারও সমাধান করা হয়েছে। সামনে আর জনবল সংকট থাকবে না। সব উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের যানবাহনও দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এবং ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উপজেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন এবং তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন, এমন আইনের ৩৩ ধারাটি বাতিল ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।
হাইকোর্টের রায়ের ফলে উপজেলা চেয়ারম্যানদের ওপর ইউএনওদের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব থাকল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। এখন থেকে উপজেলা পরিষদে ইউএনওরা সাচিবিক সহায়তা দেবেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী।
আইনের ৩৩ (১) ধারায় বলা হয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন এবং তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন। ৩৩ (২) ধারায় বলা হয়, পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিপালন এবং বিধি মাধ্যমে নির্ধারিত অন্যান্য কার্যাবলী পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সম্পাদন করবেন।
রায়ের পরে আইনজীবী হাসান এম এস আজিম বলেন, ‘উপজেলা পরিষদে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকা সত্ত্বেও একজন নির্বাহী কর্মকর্তাকে বেশি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ কারণে ৩৩ ধারা বাতিল চেয়ে রিট করা হয়েছিল। সেই রিটের দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আজকে রায় ঘোষণা করেছেন। রায়ে ৩৩ ধারা বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।’
উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ এর ১৩ (ক) ১৩ (খ) ও ১৩ (গ) ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে এগুলো চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালের ১৫ জুন রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ওই বছরের ১৬ অক্টোবর রুল জারি করা হয়।
রুলে উপজেলা পরিষদে ইউএনওদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদসংক্রান্ত আইনের ৩৩ ধারা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আজিজসহ তিনজন উপজেলা চেয়ারম্যান এ রিট করেন।
আরও পড়ুন:দেশের আটটি বিভাগে বর্ষণের আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি বাড়তে পারে শুক্রবার পর্যন্ত।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে বলা হয়, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গা এবং রংপুর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, বৃহস্পতিবার ঢাকায় সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ৫৩ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি বাড়তে পারে।
অধিদপ্তর জানায়, বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় সিলেটে। মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে। বুধবার দেশের সর্বনিম্ন ১৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
আরও পড়ুন:গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পরবর্তী সময়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনে কী কী সংশোধনী থাকবে, তা চূড়ান্ত করা হবে।
তবে, প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় জাতীয় নির্বাচনে এখনকার মতো জেলাভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা রাখার পাশাপাশি আসনভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা রাখারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ প্রস্তাব অনুমোদন হলে নির্বাচন কমিশন প্রতি আসনে একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে পারবে।
বর্তমানে প্রতি জেলার সব কটি নির্বাচনী আসনের জন্য একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা থাকেন। সাধারণত জেলা প্রশাসকেরা (ডিসি) তাঁদের জেলার নির্বাচনী আসনগুলোর জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা হয়ে থাকেন।
এছাড়া প্রস্তাবিত খসড়ায় নির্বাচনী কার্যক্রমে গণমাধ্যমকর্মী ও পর্যবেক্ষকদের কাজে বাধা দিলে দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে রিপ্রেজেন্টেশন অফ দ্য পিপল (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্টের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
সভা শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘নতুন করে ১৪টি ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। সংশোধনের প্রস্তাব করা বিষয়গুলো নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়েছে, তবে কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়ার সময় এসব বিষয়ে পুনরায় আলোচনা হবে।
‘বেশ কিছু ধারা নিয়ে মন্ত্রিসভার পর্যবেক্ষণ রয়েছে। সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তী সভায় আলোচনা করা হবে।’
সচিব বলেন, ‘আগে শুধু জেলায় একজন করে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হতো। এখন সংসদীয় আসনের ভিত্তিতে একাধিক রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া যাবে, সংশোধনীতে সেই প্রস্তাব করা হয়েছে।
‘বিদ্যমান আইনে সেবা প্রদানকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের বকেয়া বিল প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ৭ দিন আগে পরিশোধের বিধান রয়েছে।
‘প্রস্তাবিত আইনে প্রার্থীর বকেয়া বিল পরিশোধের সময় বাড়িয়ে মনোনয়নপত্র জমাদানের আগের দিন পর্যন্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সচিব মাহমুদুল হোসাইন বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মী এবং পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এখানে একটা বিধান রাখা হয়েছে। কেউ গণমাধ্যমকর্মী ও পর্যবেক্ষকদের আইনানুগ কাজে বাধা দিলে সে ক্ষেত্রে ২ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:কোনো ব্যাংকে এক পরিবার থেকে তিনজনের বেশি পরিচালক না থাকার বিধান রেখে ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন ২০২৩-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা কমিটির এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান।
তিনি বলেন, বর্তমানে এক পরিবার থেকে চারজন পরিচালক থাকতে পারার বিধান রয়েছে। এটা পরিবর্তন করে এখন সর্বোচ্চ ৩ জন করা হয়েছে।
এছাড়া ভূমি উন্নয়ন কর আইন ২০২২-এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়েছে আজকের মন্ত্রিসভায়। পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে একাদশ জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সংলাপে আহ্বান করেননি বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা জানান।
গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এ চিঠি দেয়া হয়। চিঠি দেয়ার পাঁচদিন পর মঙ্গলবার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুললেন সিইসি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আপনাদের উদ্দেশে দুটো কথা বলবো। গণমাধ্যমে আমরা দেখেছি, আমাদের এখান থেকে আমরা অনানুষ্ঠানিক পত্রে বিএনপি মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। আনুষ্ঠানিক নয়। অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারেন- এমন একটি চিঠি দিয়েছিলাম গত বৃহস্পতিবার শেষ বেলায়। বিভিন্ন বক্তব্য থেকে মনে হয় চিঠিটা উনারা পেয়েছেন।’
নির্বাচন কমিশনের আলোচনার ডাকে বিরোধী দল বিএনপি সাড়া দেবে কি না তা জানা যাবে মঙ্গলবার। নির্বাচন কমিশনের চিঠির জবাবে তাদের অবস্থান কী হবে তা নির্ধারণ করতেই স্থায়ী কমিটির সভার ডাক দিয়েছে বিএনপি। রাত ৮টায় এক ভার্চুয়াল সভা করবে দলটি।
সংবাদ সম্মেলনে সিইসি বলেন, আমি ধরেই নিয়েছি উনারা (বিএনপি) চিঠিটা পেয়েছেন।
বিএনপিকে সংলাপে আহ্বান করেননি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সংলাপ বিষয়টা কিন্তু আনুষ্ঠানিক। আমরা উনাদেরকে সুস্পষ্টভাবে বলেছি, আনুষ্ঠানিক না হলেও অন্তত অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় আসতে পারেন। আমরা এই আমন্ত্রণ, আহ্বান অত্যন্ত বিনীতভাবে জানিয়েছি। এরপর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সত্য মিথ্যা জানলাম।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘বলা হয়েছে বা অনেকে বলতে চেয়েছেন এটা সরকারের একটা কূটকৌশল। আমি আপনাদের মাধ্যমে পুরো জাতিকে অবহিত বা আশ্বস্ত করতে চাই। এই পত্রের সঙ্গে সরকারের কোনো রকম সম্পর্ক নেই বা ছিল না। যদি কেউ এটাকে কূটকৌশল মনে করতে চান, তবে এটি নির্বাচন কমিশনের কূটকৌশল হতে পারে, সরকারের কূটকৌলশ নয়।
‘আর নির্বাচন কমিশন কখনোই কূটকৌশল হিসেবে এই কাজটি করেনি। নির্বাচন কমিশন প্রথম থেকেই আমরা অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করি।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন মনে করে গণতন্ত্রের স্বার্থে, নির্বাচনের স্বার্থে বিশেষ করে দলগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন। সংসদীয় গণতন্ত্রে দলীয় শাসনটাই হচ্ছে মূখ্য। বিদ্রোহী প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর দ্বারা কখনো সরকার গঠন করা সম্ভব না, সেজন্য আমাদেরও লক্ষ্য আমাদের দলগুলো চর্চার মাধ্যমে আরো সমৃদ্ধ হোক, আরো সংহত হোক এবং দলীয় চর্চা এবং সংস্কৃতির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চর্চা আরো সংহত হোক। সেটা আমাদের প্রথমদিন থেকে সদিচ্ছা। সেই সদিচ্ছার প্রতিফলন আমাদের প্রথমদিন থেকে আমরা সব সময় আমাদের মাধ্যমে ঘটানোর চেষ্টা করেছি।’
আরও পড়ুন:দেশের ছয়টি বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, এ ছাড়া অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে অধিদপ্তর এমন বার্তা দিয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জানানো হয়- ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে খেপুপাড়ায় ১৬ মিলিমিটার।
সংস্থাটির পূর্বাভাসে বলা হয়, সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য