বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের উপসর্গে মৃত্যুর পরিসংখ্যান নিয়ে একটি ডেটা ভিজ্যুয়াল তৈরি করেছে ডেটাভিত্তিক কনটেন্ট পোর্টাল ডেটাফুল।
শুক্রবার পোর্টালটির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯: বাংলাদেশের সংখ্যার মানচিত্রায়ণ’ শিরোনামের এই ভিজ্যুয়ালটিতে দেশের ৬৪ জেলায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মৃতের একটি চিত্র প্রকাশ করা হয়েছে। এর জন্য দেশের আটটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুক্রবার সকালে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এটি উন্মোচন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বেনজির আহমেদ, ভাইরোলজিস্ট ডা. নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক শাহরিয়ার করিম ও দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক গাজী নাসিরুদ্দিন আহমেদ ।
অধ্যাপক আরেফিন বলেন, সংখ্যা হলো আজকের দিনের বড় শক্তি। সঠিক তথ্য উপাত্ত থাকলে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়। এ ধরনের উদ্যোগের ভেতর দিয়ে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকরা উপকৃত হবেন।
জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে ডেটার ব্যবহার বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ডা. বেনজির বলেন, করোনা বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা প্রয়োজন। তিনি ডেটা ভিজ্যুয়ালটিতে নিশ্চিত কোভিড-১৯-এ মৃতের সংখ্যা যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।
ডা. নজরুল উপসর্গভিত্তিক খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমকে যে সতর্কতা অবলম্বন হয় তা স্মরণ করিয়ে দেন ।
তার এ মতের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে গাজী নাসিরুদ্দিন বলেন, মহামারির সময় সংবাদ সংগ্রহের একটি গাইডলাইনের প্রয়োজন।
নতুন ডেটার ভিত্তিতে ভিজ্যুয়ালটি নিয়মিত হালনাগাদ করা হবে বলে জানান ডেটাফুলের উদ্যোক্তা পলাশ দত্ত।
ডাচ প্রতিষ্ঠান ফ্রি প্রেস আনলিমিটেডের সহায়তায় তৈরি ডেটা ভিজ্যুয়ালটি দেখা যাবে এই ঠিকানায়: https://bdcorona.info.
বাংলাদেশে শুক্রবার পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৪১৩ জনে পৌঁছেছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৬১ জনে।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের শুক্রবার প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য বলছে, বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৫ জন। রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার ২৯৫ জনে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের আসল সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
বাংলাদেশে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও সংবিধান লঙ্ঘন করে কেউ যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এটি ভুলে গেলে চলবে না।’
তিনি বলেন, শুধু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া অন্য কেউ বিকল্প উপায়ে ক্ষমতায় আসতে চাইলে তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘এটা মাথায় রাখতে হবে। তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।’
জনগণ ভোট দিলে ক্ষমতায় আসবেন জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তিনি দেশের অভ্যন্তর থেকে উদ্ভূত অনেক বাধা মোকাবিলা করে ক্ষমতায় রয়েছেন। জনগণ যদি আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়, তাহলে দলটি আবার ক্ষমতায় আসবে।
যারা বলছেন নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন, তাদের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলতে চাই, নির্বাচন বানচালের এই চেষ্টা দেশের বাইরে থেকেও করা উচিত নয়।’
তিনি বলেন, ‘যদি দেশের বাইরে থেকে নির্বাচন বানচাল করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের জনগণও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। আমরা দেখতে চাই, দেশের বাইরে থেকেও যেন কোনো চেষ্টা না হয়।’
দেশে ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’ স্লোগানটি চালু করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার দল এটি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। জনগণ এখন তাদের ভোটাধিকার নিয়ে যথেষ্ট সচেতন।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় সরকারের হারানোর কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
নিজ বাসভবনে শুক্রবার রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। খবর ইউএনবির।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের হারানোর কিছু নেই। ভিসা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ নিয়ে সরকার চিন্তিত নয়। কারণ সরকার কোনো ভুল করছে না।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো কারণ নেই, যেহেতু সরকার তাদের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত আশ্বাস পেয়েছে।’
সাংবাদিকরা আরও নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রশ্ন করতে থাকলে প্রতিমন্ত্রী তাদের পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘সম্প্রতি কি এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে?’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এটা ‘ইমপ্লাইড’ যে মার্কিন বিবৃতিতে বিএনপি-জামায়াতকে বিরোধী দল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেমনটি আগের আলোচনাগুলোতে দেখা গেছে।’’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে সহিংসতা ও নৈরাজ্যে জড়িয়ে পড়ায় বিরোধীরা সম্ভবত তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন সরকারের বর্তমান সিদ্ধান্ত যদি তাদের রুটিন কাজকে ব্যাহত করে, তবে সিদ্ধান্তের আওতায় ব্যক্তিদের সম্পর্কে জানার পর সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করবে।
‘যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বাংলাদেশের মানুষের নাম বা সংখ্যা প্রকাশ করবে না।’
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার শুক্রবার এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনবিকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ভিসার তথ্য গোপনীয়।’
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই নীতি ঘোষণার পর থেকে ঘটনাগুলো খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে।
ব্রায়ান শিলার বলেন, ‘তথ্যপ্রমাণ যত্ন সহকারে পর্যালোচনা করার পর আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্যদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি।’
চলতি বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ২১২(এ)(৩)(সি)(‘৩সি’) ধারার অধীনে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন।
এই নীতিমালার অধীনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা সম্পর্কিত বিধিনিষেধ আরোপ করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ২০২৩ সালের ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর শুক্রবার বলেছে, তারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নিচ্ছে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের আজকের পদক্ষেপগুলো শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য এবং যারা বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।’
তিনি বলেন, ‘এর (ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ব্যক্তি) মাঝে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত আছেন।’
মিলার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়, তার সমর্থনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আরও পড়ুন:যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ ছেড়ে মানবজাতির কল্যাণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে স্থানীয় সময় শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। খবর বাসসের
তিনি বলেন, ‘আজ আপনাদের সকলের কাছে, বিশ্বনেতাদের কাছে আমার আবেদন, যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ পরিহার করুন এবং আমাদের জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্থায়ী শান্তি, মানবজাতির কল্যাণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করুন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারি ও জলবায়ু সংকটের প্রভাব এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য, অর্থায়ন এবং জ্বালানি নিরাপত্তার ওপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নয়ন-লক্ষ্যসমূহ অর্জনে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বহুপাক্ষিক কূটনীতিকে জোরদারকরণ, জাতিসংঘের উপর অর্পিত দায়িত্বসমূহ পালন করার জন্য প্রচেষ্টা ও সাহসী বক্তব্য, এবং বৈশ্বিক সংকট উত্তরণে সুদূরপ্রসারী ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সবসময় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসেকে সমর্থন জানায়।’
প্রধানমন্ত্রী ইউএনজিএ অধিবেশনে প্রদত্ত তার ভাষণে রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য সংকট, মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি), সন্ত্রাসবাদ এবং সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
গত বারের মত এবারসহ মোট ১৯তম বারের মতো শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রদত্ত ভাষণের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন।
এ বছরের ইউএনজিএর মূল প্রতিপাদ্য হলো: ‘আস্থা পুনর্গঠন ও বিশ্বব্যাপী সংহতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা: সকলের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও স্থায়িত্বের লক্ষ্যে ২০৩০ অ্যাজেন্ডা এবং এর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে ত্বরান্বিতকরণ পদক্ষেপ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭৫ এর বিয়োগান্তক অধ্যায় তুলে ধরে বলেন, ‘আমি নিজে নিপীড়িত এবং যুদ্ধ ও হত্যার নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে যুদ্ধ, হত্যা, অভ্যুত্থান ও সংঘাতের ভয়াবহতার কারণে মানুষ যে বেদনা ও যন্ত্রণা সহ্য করে তা অনুভব করতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার পিতা, জাতির পিতা ও বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেদিন আমার মা, আমার তিন ছোট ভাই, দুই ভ্রাতৃবধূ, চাচাসহ পরিবারের মোট আঠারো সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল।
তিনি ও তার ছোট বোন বিদেশে থাকায় সেই বর্বরতা থেকে বেঁচে যান বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ত্রিশ লাখ দেশবাসীকে হত্যা এবং দুই লাখ নারীকে নির্মম নির্যাতনের কথাও তিনি ভাষণে উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগণের প্রতি বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কেননা ইতোমধ্যেই তাদের বাস্তুচ্যুতির ছয় বছর পেরিয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আমরা অস্থায়ীভাবে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু পরিস্থিতি এখন আমাদের জন্য সত্যিই অসহনীয় হয়ে উঠেছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক হতাশার জন্ম দিয়েছে। এই পরিস্থিতি সম্ভাব্য মৌলবাদকে ইন্ধন দিতে পারে।’
এই অবস্থা চলমান থাকলে এটি আমাদের আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে বলেও আশঙ্কা ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় এবং সেখানে তারা শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে আগ্রহী। আসুন আমরা এই নিঃস্ব মানুষের জন্য তাদের নিজের দেশে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করি।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াতে বাধাদানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকা বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
এতে বলা হয়, এই ব্যক্তিদের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্য রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় তার সমর্থনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এসব ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারেন। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত অন্য ব্যক্তিরাও ভবিষ্যতে এই নীতির অধীনে ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, যাদের ভিসার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে এর মধ্যে বর্তমান এবং সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত।
এতে বলা হয়, এই পদক্ষেপগুলো শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য। যারা বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায়, এর মাধ্যমে তাদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটছে।
কর্মসংস্থানের জন্য ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় গমনেচ্ছুদের সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছে ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশন।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ হাইকমিশন লক্ষ্য করেছে যে, কতিপয় অসাধু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অস্ট্রেলিয়ায় কাজের প্রলোভন দেখিয়ে আগ্রহীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
দেশটিতে চাকরি পেতে আগ্রহীদের কাজের ভিসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করার জন্য প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহায়তা নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। খবর বাসসের।
এতে আরও বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ায় অস্থায়ী ও স্থায়ী ভিসায় কর্মী নেয়ার জন্য ‘টেম্পোরারি স্কিল শর্টেজ সাবক্লাস ৪৮২’ নামে একটি ভিসা চালু রয়েছে। এই ভিসার ক্ষেত্রে বয়সের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও পেশাদার কর্মীদের অস্ট্রেলিয়ায় কাজের জন্য যাওয়ারর সুযোগ রয়েছে। এই ভিসা পাওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া সরকার অনুমোদিত একজন স্পন্সর (নিয়োগকারী) প্রয়োজন হয়। এছাড়া সংশ্লিষ্ট পেশার শিক্ষাগত যোগ্যতা, বিশেষ করে ট্রেড পেশার জন্য অস্ট্রেলিয়ান কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী সার্টিফিকেট-৩/৪ অথবা ডিপ্লোমা প্রয়োজন হয়। স্কিল লেভেল ১ মাত্রার পেশার জন্য ব্যাচেলর বা মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন। যেকোনো পেশার ক্ষেত্রে কমপক্ষে তিন থেকে চার বছরের পূর্ণকালীন কাজের অভিজ্ঞতা দরকার হয়।
অভিজ্ঞতা প্রমাণের জন্য চাকরির নিয়োগপত্র, বিগত দুই বছরের বেতন বিবরণী, ব্যাংকের হিসাব বিবরণী প্রয়োজন হয়। সংশ্লিষ্ট পেশায় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলে পাঁচ থেকে ছয় বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। তবে সংশ্লিষ্ট পেশায় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে রিকগনিশন অব প্রায়োর লারনিংয়ের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় নিদিষ্ট সংখ্যক কলেজ থেকে পেশা সংক্রান্ত শিক্ষাগত সনদ অর্জন করা যায়। পেশা বিবেচনায় আইইএলটিএসের স্কোর প্রয়োজন হয় ৫ থেকে ৬। আইইএলটিএস ছাড়াও অন্যান্য স্বীকৃত পরীক্ষা যেমন টোফেল, পিটিই গ্রহণযোগ্য।
বিজ্ঞতিতে জানানো হয়, বিদেশি কর্মীদের কাজের দক্ষতা অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই করাতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের কয়েকটি পেশার জন্য দক্ষতা যাচাই করানোর প্রয়োজন হয় না। সেগুলো হলো-অটোমোটিভ ইলেকট্রিশিয়ান, ক্যাবিনেট মেকার, কারপেন্টার, কারপেন্টার ও জয়েনার, ডিজেল মোটর মেকানিক, ইলেকট্রিশিয়ান (জেনারেল), ইলেকট্রিশিয়ান (স্পেশাল ক্লাস), ফিটার (জেনারেল), ফিটার ও টারনার, ফিটার-ওয়েল্ডার, জয়েনার, মেটাল ফেবরিকেটার, মেটাল মেকানিস্ট (ফার্স্টক্লাস), মোটর মেকানিক (জেনারেল), প্যানেল বিটার, পেস্ট্রিকুক, সিটমেটাল ট্রেড ওয়ার্কার, টুলমেকার, ওয়েল্ডার (ফার্স্টক্লাস)। টেম্পোরারি স্কিল শর্টেজ ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়া কর্মীদের বার্ষিক বেতন কমপক্ষে ৭০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার।
এ ভিসার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে অস্ট্রেলিয়ার হোম অফিসের লিংকে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী চলতি বছরের শেষের দিকে বা আগামী বছরের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
দূতাবাসকে উদ্ধৃত করে ইউএনবির খবরে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও অবাধ নির্বাচনকে এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ। সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রকাশ্য আহ্বানকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন আজরা জেয়া।
সাক্ষাতের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেয়া পোস্টে আজরা জেয়া লিখেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের পার্শ্ব ইভেন্টের সহআয়োজক হওয়ার আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফের দেখা হওয়ায় সম্মানিত বোধ করছি। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের গুরুত্ব, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারত্ব এবং ৯ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গাকে রাখার মহতী কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশংসার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি।’
আরও পড়ুন:দেশের আট বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, তিনটিতে হতে পারে মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, দক্ষিণ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে বিহার এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু উত্তরাংশে সক্রিয় এবং বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গায় মোটামুটি সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
বৃষ্টিপাতের বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গা এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
মন্তব্য