প্রাণ আছে এমন সবকিছুর স্বাভাবিক স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধির জন্যে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান হলো ভিটামিন। ভিটামিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দেহকে রোগমুক্ত রাখতে সহায়তা করে।
১৯২১ সালে বিজ্ঞানী ক্যাশিমির ফ্র্যাঙ্ক ভিটামিন আবিষ্কার করেন।
ভিটামিন কত প্রকার ও কী কী, তা আমরা ছোটবেলাতেই জেনেছি। আজ ভিটামিন ‘এ’ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ভিটামিন ‘এ’
ভিটামিন ‘এ’ মূলত চর্বিতে দ্রবণীয় একটি ভিটামিন। নির্দিষ্ট কিছু খাবারে প্রাকৃতিকভাবে এ ভিটামিনটি পাওয়া যায়। তাই একে স্নেহদ্রাব্য ভিটামিনও বলা হয়ে থাকে।
শরীরে ভিটামিন ‘এ’র অভাবে দৃষ্টিস্বল্পতা বা রাতকানা রোগ দেখা দেয়। অর্থাৎ, আমাদের চোখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ভিটামিন ‘এ’ অপরিহার্য। চোখের রেটিনা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার কারণে এই ভিটামিনটি ‘রেটিনাল’ নামেও পরিচিত।
ভিটামিন ‘এ’ মূলত একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদের জন্যও এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এটি ত্বকের স্বাস্থ্য, টিস্যু গঠন, শ্লেষ্মা ঝিল্লি, বিভিন্ন কোষের কাজ, হাড় ও দাঁতের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রয়োজনীয়তা
গবেষণায় দেখা যায়, একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর দৈনিক ৭০০ মাইক্রোগ্রাম এবং পুরুষের ৯০০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘এ’ গ্রহণ করা উচিত।
চলেন জেনে নিই, কী কী কারণে আমাদের ভিটামিন ‘এ’ গ্রহণ করা দরকার-
অভাবজনিত সমস্যা
গুরুত্বপূর্ণ এ ভিটামিনটির অভাবে শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মাঝে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো-
উপকারিতা
ভিটামিন ‘এ’র উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। চলুন দেখে নিই, শরীরে এই ভিটামিনটির বিশেষ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে-
সতর্কতা
শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় হলেও অতিরিক্ত ভিটামিন ‘এ’ সেবনে হিতে বিপরীত হতে পারে। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভিটামিন এ খেলে বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া ও ত্বক থেকে চামড়া ওঠার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গবেষণা বলছে, শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ জমা থাকলে যকৃতের (লিভার) গুরুতর ক্ষতি হতে পারে। এর ফলে স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা ও অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকিও বাড়ে।
ভিটামিন ‘এ’র আধিক্যের ফলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্টের সমস্যা ইত্যাদিও দেখা দিতে পারে।
মেয়েদের পিরিয়ডের সমস্যা, বিশেষ করে পিরিয়ড নিয়মিত না হওয়া, এমনকি বন্ধ হয়ে যেতে পারে শরীরে বেশি পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ জমা থাকলে।
শরীরে মাংসপেশী শিথিল হয়ে যাওয়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
যেসব খাবারে পাওয়া যাবে ভিটামিন ‘এ’
ভিটামিন ‘এ’র অভাব বা আধিক্য- দুটোই মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। তাই এর ভারসাম্য বজিয়ে রেখে এটি গ্রহণ করাই উত্তম।
মূলত আমাদের দৈনন্দিন খাবারের মধ্য থেকেই আমরা ভিটামিন ‘এ’ পেয়ে থাকি। আর তার বাইরে প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেয়ে মেটাতে পারি এর প্রয়োজনীয়তা।
তবে যেহেতু রোজকার খাবার থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে এ ভিটামিন পাওয়া যায়, তাই চলুন জেনে নেই কোন কোন খাবার প্রাত্যহিক খাবারের তালিকায় যুক্ত করলে সহজেই এর চাহিদা মেটাতে পারবেন।
ভিটামিন ‘এ’ মূলত পাওয়া যায় দুই ধরনের উৎস থেকে। উদ্ভিদজাত উৎস ও প্রাণীজ উৎস।
উদ্ভিদজাত উৎসের মধ্যে হলুদ ও সবুজ শাকসবজির পাশাপাশি রঙিন ফলমূল থেকে পাওয়া যায় ভিটামিন ‘এ’। সাধারণত যে শাকসবজি বা ফলের রঙ যত গাঢ় হয়, তাতে ভিটামিন ‘এ’ বেশি পরিমাণে থাকে।
গাজর, মিষ্টি কুমড়ো, পাকা পেঁপে, মাখন, ব্রোকলি, কমলা লেবু, বাদাম, অ্যাভোকাডো, চিজ ইত্যাদিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ থাকে।
এছাড়া, প্রাণীজ উৎস হিসেবে রয়েছে মাংসাশী প্রাণী, মাছের তেল বা তেলযুক্ত মাছ, মাংস, ডিম, কলিজা ইত্যাদি খাবার থেকে ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়।
শিশুর শরীরে ভিটামিন ‘এ’-এর অভাব দূর করতে মায়ের বুকের দুধ, ৬ মাস পূর্ণ হলে সবুজ-হলুদ শাকসবজি, ফলমূল, ডিম- খাওয়ালে এই ভিটামিনের অভাব দেখা দিবে না বলে বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে।
গবেষকদের মতে যে পাঁচটি খাবার খেলে ভিটামিন ‘এ’র অভাব দেখা দিবে না-
উল্লিখত পাঁচটি খাবারই সহজলভ্য ও আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার খুব পরিচিত কয়েকটি নাম। তাই শরীরের প্রাত্যহিক ভিটামিন ‘এ’র প্রয়োজনীয়তা মেটাতে উপরোক্ত খাবারগুলো নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। এরপর থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ক্রমশ বেড়ে চলেছে। প্রকোপটা রাজধানী ঢাকায় শুরু হলেও ক্রমে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত সারা দেশে আরও নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় মারা গেছেন তিনজন। বাকি ৬জন মহানগরীর বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৬৭ জন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৯জনের মৃত্যু ছাড়াও নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৩৫৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। তাদের মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ৬৭১ ও ঢাকা মহানগরীর বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ৬৮৬ জন ভর্তি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৯ হাজার ৭৯৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩ হাজার ৪৫৭ এবং ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগে ৬ হাজার ৩৪০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৯৯ হাজার ১৮৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৮১ হাজার ৮৮৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ১৭ হাজার ৩০১ জন।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৪২৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৭৭ হাজার ৮০৩ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানের ১ লাখ ১০ হাজার ৬২১ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৫১৮ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৭৪৯ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৬৯ জন।
আরও পড়ুন:বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্থায়ী মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য অনুমতি চেয়ে আবারও আবেদন করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এই আবেদন করেছেন।
সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে এই আবেদন করা হয়েছে জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা এক আবেদনেও সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার বিষয়টি উল্লেখ ছিল।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন বলে জানিয়েছে বিএনপি। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিক্যাল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে।
দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন ৭৭ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে যান। দেশে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে ‘সাময়িক মুক্তি’ দেয় সরকার। এর পর বিভিন্ন সময় তার দণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ ছয় মাস করে বাড়ানো হয়।
আরও পড়ুন:ছুটির দিনে স্বাভাবিকভাবেই কর্মজীবীদের ঘুম ভাঙতে একটু দেরি হয়। অফিসে যাওয়ার তাড়া নেই, নেই তেমন কোনো জরুরি কাজও। অন্য দিনের মতো মোবাইল ফোন বা ঘড়িতে বেজে ওঠে না অ্যালার্ম।
এই ঘুমে একটু স্বস্তি পেলেও বিষয়টি কিন্তু মোটেই শরীরের জন্য উপকারী নয়। এমন অনিয়ন্ত্রিত ঘুমে হতে পারে হৃদরোগসহ নানা জটিলতা।
ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনার গবেষণায় উঠে এসেছে বিপদবার্তা। অন্য দিনের তুলনায় ছুটির দিনে প্রতি ঘণ্টা অতিরিক্ত ঘুমে হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে ১১ শতাংশ।
গবেষকরা বলছেন, শুধু হৃদরোগই নয়, এই অনিয়মিত ঘুমে বাড়ে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনাও। খারাপ হয় মেজাজ। ছুটির দিনে অতিরিক্ত ঘুমের কারণে স্মৃতির সমস্যা, মনঃসংযোগের অভাব, অবসাদ, হাইপারটেনশনের মতো সমস্যাগুলোও বাড়তে থাকে।
গবেষকদের মত, বেশি ঘুমে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি। শরীর নিষ্ক্রিয় করে দেয়। এটা ধূমপান ও মদ্যপানের মতোই ক্ষতিকর।
ইউনিভার্সিটি অফ সিডনির সিডনি স্কুল অফ পাবলিক হেলথের গবেষকরা আরও মারাত্মক বিপদবার্তা দিয়েছেন। তাদের মতে, চরম অলসতা ও ঘুমানোর সঙ্গে আয়ু কমে আসার বিষয়টি জড়িত।
যারা নড়াচড়া না করে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকেন এবং বেশি ঘুমান, তাদের শারীরিক অবস্থা অন্যদের থেকে বেশি খারাপ থাকে। তাই সুস্থ থাকতে ঘুমেরও রুটিন দরকার। ছুটির দিন এলেই যে বেশি ঘুমাতে হবে, সেটি মোটেও ঠিক নয়।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫৮ জন।
বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২ হাজার ৯৫০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭২৬ জন। আর ঢাকার বাইরে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ২২৪ জন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৯ হাজার ৯৬৭ জন রোগী। তাদের মধ্যে ৩ হাজার ৫৩৮ জন ঢাকায় এবং ৬ হাজার ৪২৯ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৩১ জন। তাদের মধ্যে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯০৬ জন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) কেবিনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মেডিক্যাল বোর্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
বিএনপির মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান মঙ্গলবার এই তথ্য জানান। সূত্র: ইউএনবি
তিনি বলেন, ‘আমি বিকেল ৫টায় ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি বলেছেন, চেয়ারপারসন মেডিক্যাল বোর্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। ডা. জাহিদ তার জন্য সবাইকে দোয়া করতে বলেছেন।’
বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। কয়েকদিন ধরে তিনি একই অবস্থায় আছেন। তাকে মেডিক্যাল বোর্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
ডা. রফিকুল আরও বলেন, ‘অতীতে আমরা দেখেছি আ স ম আবদুর রব, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এমপি হাজী সেলিম চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেছেন। সরকার যদি প্রথম থেকে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দিত, তাহলে তার এই অবস্থা হতো না।’
সোমবার সকাল আটটা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানি কিছুটা কমেছে। গতকাল ১৯ জনের মৃত্যু হলেও আজ তা ১৫ জনে নেমেছে। আর ডেঙ্গু নিয়ে সারা দেশের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ১২৩ জন। গতকাল এ সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৩৩ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৭৪ জন, আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৩৪৯ জন।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১০ হাজার ১৫৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৫৮১ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৫৭৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৮০ হাজার ৪৯০ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯১ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৮২ জন। ঢাকায় ৭৬ হাজার ২৯২ এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৬ হাজার ৪৯০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৯৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের হার মাত্র ৩৮ শতাংশ বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘গ্লোবাল রিপোর্ট অন হাইপারটেনশন ২০২৩’ নামে একটি প্রতিবেদন।
২০১৯ সালে বাংলাদেশে ২ লাখ ৭৩ হাজার মানুষ হৃদরোগজনিত অসুস্থতায় মৃত্যুবরণ করেছে, যার ৫৪ শতাংশের জন্য দায়ী উচ্চ রক্তচাপ। তবে সেবার আওতা বাড়ানো হলে ২০৫০ সালের মধ্যে ৭ দশমিক ৬ কোটি মৃত্যু এড়ানো সম্ভব।
সোমবার রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবনে ‘হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় ‘প্রগতির জন্য জ্ঞান’ নামক সংস্থা কর্মশালাটির আয়োজন করে। কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৪ জন সাংবাদিক অংশ নেন।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, সম্প্রতি কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকায় উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ অন্তর্ভুক্তকরণ একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এটি দ্রুত বাস্তবায়ন হলে দেশব্যাপী উচ্চ রক্তচাপজনিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ক্রমবর্ধমান প্রকোপ ও মৃত্যু কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধের সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে এ খাতে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান তারা।
কর্মশালায় এসেনসিয়াল ড্রাগস্ কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) উপমহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) জাকির হোসেন বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’
ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথের অধ্যাপক ডা. মলয় কান্তি মৃধা বলেন, ‘উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচরণে পরিবর্তন আনা জরুরি।’
সভায় আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ এবং ‘প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
অনুষ্ঠানে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের হাইপারটেনশন কন্ট্রোল বিষয়ক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. শামীম জুবায়ের ও ‘প্রজ্ঞা’র উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কর্মসূচির সমন্বয়ক সাদিয়া গালিবা প্রভা।
মন্তব্য