× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
Why do Americas homeless keep going to jail?
google_news print-icon
দীর্ঘ পাঠ

আমেরিকার গৃহহীনরা কেন বারবার জেলে যেতে চান

গৃহহীন
ওয়াশিংটনের স্পোকেন শহরের ক্রিস কারভান রাস্তার জীবনের চেয়ে জেলখানাকে শান্তিদায়ক মনে করেন। ছবি: ইনভেস্টিগেটওয়েস্ট
ক্রিস কারভারের মতো ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে জেল ভয়ের কোনো জায়গা নয়। গৃহহীনতা নিয়ে সামাজিক টানাপড়েনে ভোগা মানুষ যেকোনো আশ্রয় বেছে নিতে পিছ পা হন না। তারা সেতুর নীচে পড়ে থাকেন, ফুটপাতে তাঁবু খাটান এবং এখন যা বাড়ছে সেই কারাগারে বন্দি হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রে গৃহহীন অনেকে দিন-রাত পার করেন রাস্তায়। তীব্র শীতে প্রতিবছর অনেকে মারাও যান। কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি এসব মানুষের অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রের জীবনকে ঘৃণা করেন। তাদের সামনে থাকে শুধু দুটি নির্দয় পছন্দ- তীব্র ঠান্ডার মাঝে রুক্ষ জীবনযাপন, নয়ত কারাগারে দিন কাটানো।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিষয়ক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টিগেটওয়েস্ট বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। উইলসন ক্রিসিওনের প্রতিবেদনটি ভাষান্তর করা হলো নিউজবাংলার পাঠকের জন্য।

ডাক পড়ার আগে ক্রিস কারভার দুই ঘণ্টা আদালত কক্ষে অপেক্ষা করছিলেন। স্পোকেন মিউনিসিপ্যাল ​​জজ মেরি লোগান অবশেষে তাকে দাঁড়াতে বলেন- ‘আমরা এখন আপনার মামলা নিয়ে কাজ করছি।’

পায়ের সঙ্গে কসরৎ করে উঠে দাঁড়ান কারভার। তার দাড়ি নোংরা। চোখের চারপাশে শাখা-প্রশাখার মতো বিস্তৃত ট্যাটু। ক্লান্ত চোখে শিশুসুলভ হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছেন।

বিচারক লোগান সরাসরি কারভারের দিকে তাকান, তার পিছনে একটি আমেরিকান পতাকা টাঙানো।

‘তাহলে বলুন, মিস্টার কারভার, আপনি কি নিজের প্রতিনিধিত্ব করার দায়িত্ব একজন অ্যাটর্নির ওপর ছাড়তে রাজি নন?’

থ্যাঙ্কসগিভিং ডেতে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের স্কিডরোর ভিড়েঠাসা ফুটপাতে একজন গৃহহীনের তাঁবু দেখা যাচ্ছিল। রেকর্ড বলছে, লস অ্যাঞ্জেলেসে গত বছর তীব্র শীতে অন্তত ১৪ জন গৃহহীনের মৃত্যু হয়েছে।

‘হ্যাঁ ম্যাম’- কারভারের জবাব।

বিচারক বলেন, ‘এটা (আইনজীবী নিয়োগ) আপনার অধিকার মিস্টার কারভার। আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি কেন এবং কী কারণে আপনি... আইনজীবী নিয়োগে আপনার তো কোনো অর্থ খরচ হবে না...!‘

তাকে থামিয়ে দেন কারভার; ‘কারণ আমার অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছরের জেল এবং এটা আমার কাছে কিছুই নয়।’

অবাক কণ্ঠে বিচারক বলেন, ‘দুঃখিত, আপনি কী বলতে চাইছেন?’

কারভার কথা চালিয়ে যান, ‘আমি গৃহহীন, রাস্তায় পড়ে থাকি। তাই জেলে একটি বছর আমার কাছে কিছুই নয়… তাছাড়া আমি জানি না এ অবস্থায় আমি আর কী করতে পারি।’

বিচারক গলায় জোর এনে বলেন, ‘আমি মোটেই আপনার চিন্তাকে গ্রহণ করতে পারছি না। কারণ বাড়ি হারিয়ে জেলখানাকেই আপনি বাড়ি হিসেবে ভাবতে চাইছেন।’

কাঁধ ঝাঁকান কারভার- ‘জেলখানার বাইরেও আমি গৃহহীন, তাই হয়ত...।’

আমেরিকার গৃহহীনরা কেন বারবার জেলে যেতে চান

টি ওয়াশিংটন রাজ্যের স্পোকেনে শীত মৌসুমের এক ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকের ঘটনা। ক্রিস কারভার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, পরবর্তী কয়েক মাস রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর চেয়ে জেলে কাটানোই ভালো।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো যথেষ্ট গুরুতর। অপরাধমূলক অনুপ্রবেশ, একটি গির্জার সিঁড়িতে মলত্যাগ এবং যে গলিতে ঘুমিয়েছিলেন সেখান দিয়ে যাওয়া একটি গাড়িতে স্কেটবোর্ড ছুড়ে মারা। এসব অপরাধের ক্ষেত্রে একজন সরকারি আইনজীবী কারভারের জেলের মেয়াদ কমাতে সাহায্য করতে পারতেন, তবে তিনি এই সাহায্য নেননি।

নিয়মিতভাবে গৃহহীনদের নিয়ে যারা কাজ করেন তারা কারভারের এমন অবস্থানে বিস্মিত নন। তারা বলছেন, এমন ঘটনা অনেকবার দেখা গেছে। এর সামান্য অংশ মাঝেমধ্যে সংবাদমাধ্যমে খবর হিসেবে প্রকাশিত হয়।

ইন্ডিয়ানায় ২০২১ সালে পুলিশ মামলা না করা পর্যন্ত এক ব্যক্তি হাসপাতাল ছেড়ে যেতে অস্বীকৃতি জানান। মিসিসিপিতে ২০১৯ সালে ক্রিসমাসের ঠিক আগে একজন গৃহহীন একটি ভবনের জানালা ভেঙে দেন, যাতে শাস্তি হিসেবে তিনি জেলে রাত কাটাতে পারেন। ওয়াশিংটনে ২০১৮ সালে দীর্ঘ কারাদণ্ড পেতে এক ব্যক্তি চতুর্থবারের মতো ব্যাংক ডাকাতিতে অংশ নেন।

এসব ঘটনাকে গৃহহীনতা নিয়ে চলমান সংকটের বাইরের দিক হিসেবে ধরে নিলেও, কারভারের মতো ব্যক্তিরা সারা দেশে জরুরি নীতি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া ক্রমবর্ধমান একটি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছেন।

এই নীতি হলো শহরগুলো কীভাবে নিরাশ্রয় ও ভবঘুরে মানুষদের বিষয়টি মোকাবিলা করছে। রাজনীতিকরা প্রায়ই এসব ব্যক্তিদের অমানুষ হিসেবে দেখান। আমেরিকার শহরগুলো যে মারা যাচ্ছে এই মানুষেরা কি তার জীবন্ত প্রমাণ?

কারাগারকে অস্থায়ী আবাস হিসেবে ব্যবহার করাকে কেউ স্মার্ট বা মানবিক বলে বিশ্বাস করেন না। এটি অর্থনৈতিক দিক থেকেও ভালো কোনো অর্থ বহন করে না। কারণ এটি অন্যান্য বিকল্পের তুলনায় বেশি ব্যয়বহুল। সবার জন্য আবাসন নিশ্চিতের পক্ষের ব্যক্তিরা বলছেন, এসব ঘটনার অর্থ হলো কোথাও ভয়ঙ্কর কোনো ভুল হচ্ছে।

সিয়াটলের কিং কাউন্টি রিজিওনাল হোমলেস অথরিটির প্রধান মার্ক ডনস বলছেন, ‘এটি একটি জাতীয় পরিস্থিতি, যা অনেককে আবাসন বঞ্চিত করেছে। এর ফলে নানা ধরনের অস্থিরতার মুখোমুখি ব্যক্তিরা অবিশ্বাস্য নিষ্ঠুর পছন্দ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।’

এ ঘটনা কেবল সিয়াটল এবং সান ফ্রান্সিসকোর মতো জায়গায় দেখা যাচ্ছে না। স্পোকেনের (জনসংখ্যা ২ লাখ ২০ হাজার) মতো ছোট ও মাঝারি আয়তনের শহরগুলোও এমন সমস্যায় আক্রান্ত। পরিবার গড়ে তোলার জন্য এসব শহর দীর্ঘদিন ধরে সাশ্রয়ী এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে এখন আর সে অবস্থা নেই।

গত দুই বছরে আবাসনের দাম ৬০ শতাংশ বেড়েছে। স্পোকেনের ডাউনটাউনের কোণ দখল করা গৃহহীনদের আকস্মিক উপস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে তা নিয়ে শহরের লোকজন দ্বিধাবিভক্ত।

শহরের বামপন্থি মনোভাবের সিটি কাউন্সিল আরও আশ্রয়ের জায়গা ও আবাসনের স্থাপনা তৈরির জন্য চাপ দিচ্ছে, যেগুলোতে নিয়ম মানার খুব বেশি বাধ্যবাধকতা নেই।

অন্যদিকে শহরের মেয়র নাডিন উডওয়ার্ড একজন সাবেক টিভি উপস্থাপক এবং রক্ষণশীল ব্যক্তিত্ব। ২০১৯ সালের নির্বাচনে খুব সামান্য ব্যবধানে জয় পাওয়া উডওয়ার্ড নির্বাচনি প্রচারের সময় কোনো জবাবদিহি ছাড়াই গৃহহীনদের ঘর দেয়ার নীতির সমালোচনা করেছিলেন। তিনি এখনও গৃহহীনদের নিছক ‘গুদামজাত করা এবং স্যান্ডউইচের মতো আবাসন’ দেয়ার বিরোধিতা করছেন।

কারভার রাস্তা থেকে জেলের চক্রে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। গর্ব করে তিনি জানান, স্পোকেনে দীর্ঘতম সময়ের গৃহহীন ব্যক্তিদের তালিকায় তার অবস্থান দ্বিতীয়। রাস্তায় ২৫ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন।

তাকে ক্রমাগত টিকিট দেয়া হয়েছে, গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং জেলে পাঠানো হয়েছে। তার অনেক দাবি যাচাই করা অসম্ভব। তবে নথিপত্র বলছে, শুধু স্পোকেনেই তিনি ১৬ বার শাস্তি পেয়েছেন। কারভারের ১৮তম জন্মদিনের পর থেকে এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে এই শহর ছাড়াও অন্যত্র ৪৩টি অভিযোগ আনা হয়েছে৷

বেশির ভাগ অভিযোগ ছিল অহিংস অপরাধ; যেমন গাঁজা রাখা, চুরি বা ভিক্ষাবৃত্তি। কয়েকটি অভিযোগ ছিল হিংসাত্মক, যেমন ধাক্কাধাক্কি ও চতুর্থ-ডিগ্রি হামলা সংক্রান্ত।

১৯৯৯ সালে আইডাহোতে আইন প্রয়োগকারী সদস্যদের ওপর আক্রমণের অভিযোগে তাকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে দাঙ্গার অভিযোগে ২০০৭ সালে এক বছর জেল খাটেন তিনি।

স্পষ্টতই তার ক্ষেত্রে জেল ভয়ের কোনো জায়গা নয়। গৃহহীনতা নিয়ে সামাজিক টানাপড়েনে ভোগা কারভারের মতো মানুষ যেকোনো আশ্রয় বেছে নিতে পিছ পা হন না। তারা সেতুর নীচে পড়ে থাকেন, ফুটপাতে তাঁবু খাটান এবং এখন যা বাড়ছে সেই কারাগারে বন্দি হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।

আমেরিকার গৃহহীনরা কেন বারবার জেলে যেতে চান

লোগানের কোর্টরুমের ঘটনার প্রায় এক মাস পর গত মার্চে আমি কারভারের সঙ্গে প্রথম দেখা করি।

তিনি একটি পেট্রল পাম্পের সামনে ফুটপাথ ধরে হাঁটছিলেন। পরনে রোদে পোড়া ইনসুলেটেড বিব ওভারঅল এবং কম্বল মোড়ানো একটি কোট। পায়ে আঘাতের কারণে একদিকে ঝুঁকে হাঁটেন। আমি কাছে যেতেই তিনি বসে পড়েন এবং ফের উঠে দাঁড়াতে সাহায্যের প্রয়োজন হয়েছিল।

আমি নিজের পরিচয় দিয়ে জানাই তার সম্পর্কে বিচারক লোগানের কাছ থেকে জেনেছি। কারভারের সঙ্গে কথা বলতে একটি উষ্ণ জায়গায় যাই। সেটি ছিল স্থানীয় এক সহায়তাকেন্দ্র, যেখানে তিনি বিনামূল্যে খাবার পান।

কারভার প্লাস্টিকের চামচ দিয়ে একটি জার থেকে পিনাট বাটার বের করে আনেন। উষ্ণ পরিবেশ আর খাবার বাকপটু করে তোলে তাকে। ফেব্রুয়ারিতে আদালতের কক্ষে ওই দিনের পর তিনি এক মাস কারাগারে ছিলেন। এই প্রথম তিনি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কমদিন কারাভোগ করেছেন।

কারভার বলেন, শীতের ঠান্ডা মাসগুলোতে একটি যৌক্তিক পছন্দ হতে পারে কারাগার। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, বহু মানুষের সঙ্গে গাদাগাদি করে থাকা তিনি ঘৃণা করেন, সেখানে নিরাপদও বোধ করেন না।

সমাজসেবা কর্মীরা বলছেন, গৃহহীনদের মধ্যে এটি একটি সাধারণ অভিযোগ।

কারভার স্বাভাবিক ভঙ্গীতে তার অপরাধমূলক রেকর্ড সম্পর্কে জানাচ্ছিলেন। গর্বিত গলায় বলেন, বেশিরভাগ পুলিশ সদস্য তাকে প্রথম নামেই চেনেন। তার অভিযোগ, রাস্তার জীবন নির্বিবাদে কাটাতে চান, কিন্তু পুলিশ তাতে বাধা দেয়।

তিনি বলেন, ‘আমি একদিকে, আর ওরা অন্য দিকে।’

তবে তিনি স্বীকার করেন, রাস্তায় জীবন একাকিত্বের।

পরিবার?

তিনি বলেন, ‘গত ৩০ বছরে তাদের কাউকে দেখিনি। এখন আমি তাদের চিনতেও পারব না।’

তারপর তিনি একাকী জীবনের একটি কারণ ব্যাখ্যা করেন। তিনি বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছেন। এটি এমন একটি মানসিক স্বাস্থ্যগত অবস্থা যা মেজাজের চরম পরিবর্তন ঘটায়।

কারভার বলছিলেন, এতটাই খারাপ অবস্থা তৈরি হয় যে তিনি অনেক সময় হুঁশ হারিয়ে ফেলেন। তখন মনে হয় কাউকে হত্যা করে রক্তের পুকুরে শুইয়ে রেখেছেন।

তিনি দাবি করেন, এভাবে তিনি মানুষ হত্যাও করেছেন এবং আইডাহো রাজ্যে এ অপরাধে তাকে অমৃত্যু কারাগারে রাখার উপক্রম হয়েছিল। তবে চূড়ান্ত রায়ের আগে আত্মরক্ষার বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায় তিনি ছাড় পান।

জেলখানা বেশ উপকারী জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে নিজের জন্য ভালো খাবার এবং একটি কক্ষ পাওয়া যায়। সেখানে অন্য কাউকে আঘাত করার ঝুঁকি নেই।

আমি জানতে চাই, ‘একটা নির্দিষ্ট আবাসন ও চাকরি সম্পর্কে তাহলে কী বলবেন?’

জবাবে কারভার বলেন, একটা সময় ছিল যখন সবকিছু একসঙ্গে মিলেছিল।

পাঁচ বছর আগে স্পোকেন থেকে ৪০ মিনিট দূরের আইডাহোর কোর ডে’লাইন শহরের একজন যাজক কারভারকে একটি স্টিল বিম কারখানায় চাকরি এবং একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকার সুযোগ পেতে সাহায্য করেন৷

তারপর একদিন পুলিশের ধাওয়া খাওয়া এক কিশোরের গাড়ি তাকে ধাক্কা দেয়। কারভার কয়েক মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, এরপর আবার চাকরি ও ঘর হারান।

তিনি এমন গল্পই আমাকে বলেছিলেন। তবে পরে আমি আবিষ্কার করি মানুষ হত্যা, পরিবারকে কখনোই দেখা যায়নি, পুলিশের তাড়া খাওয়া গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা- এসব গল্পের প্রায় সবটাই অসত্য।

এগুলো তিনি বিচারক এবং পরিষেবাদানকারীদের কাছে নিজের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে সাজিয়েছেন, যারা ভাবছেন কেন তিনি রাস্তায় আছেন এবং কেন একটি উষ্ণ বিছানার জন্য স্বেচ্ছায় নিজের অধিকার ছেড়ে দিচ্ছেন।

আমেরিকার গৃহহীনরা কেন বারবার জেলে যেতে চান

সিয়াটলের কিং কাউন্টি রিজিওনাল হোমলেসনেস অথরিটির প্রধান ডনসের কাছে একজন ব্যক্তির স্বেচ্ছায় নিজের অধিকার সমর্পণের গল্পটি নতুন কিছু নয়। তার মতে, আমাদের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল, রাস্তার কঠিন জীবনের মধ্যে থাকা মানুষকে সাহায্য করতে এই দেশটি কীভাবে ব্যর্থ এটি তার আরেকটি দৃষ্টান্ত।

ডনস বলেন, ‘আমি গল্পটি অনেক, অনেক, বহুবার শুনেছি। এ বিষয়ে কোনো অ্যাকাডেমিক পেপার সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে আমরা যারা আবাসন, গৃহহীনতা এবং জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করি তারা এটি জানি।’

বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণা রয়েছে। শেফিল্ড হ্যালাম ইউনিভার্সিটি ২০১০ সালে রাস্তায় বসবাসকারী ৪০০ জনের ওপর জরিপে চালিয়ে দেখেছে, তাদের মধ্যে ৩০ শতাংশ মানুষ রাতের বেলায় জেলহাজতে থাকার উদ্দেশ্যে ছোটখাটো অপরাধ করেন।

যুক্তরাজ্যের অর্থায়নে চলা একটি ওয়াচডগ ২০২০ সালে আরেক গবেষণায় দেখতে পায়, স্বেচ্ছায় গ্রেপ্তার হওয়া গৃহহীনদের অনেকে ছাড়া পাওয়ার পর আবার জেলে ফিরে গেছেন।

গবেষণা প্রতিবেদনে একজন ব্যক্তি বলেছেন, ‘থাকার জায়গা না পেয়ে আমি আবার জেলে যেতে চেয়েছি।’

শুধু জেলে যাওয়ার জন্য মানুষ অপরাধ করেছে এমন উদাহরণ খুঁজে পাওয়া মোটেই কঠিন নয়।

আগের বছরের হ্যালোইনের সময় ওয়াশিংটনের লংভিউয়ে একজন গৃহহীন কারাগারে জায়গা পেতে বেপরোয়া গাড়ি চালিয়েছিলেন। তবে জেলের পরিবর্তে পুলিশ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে গেলে তিনি সেখান থেকে চলে যান। এরপর একটি গাড়ি থেকে বন্দুক চুরির মতো আরও গুরুতর অপরাধ করেন। পুলিশ গ্রেপ্তার করার সময় আনন্দ প্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি উষ্ণতার মধ্যে থাকার জন্য জেলে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’

বেপরোয়া গাড়ি চালনা ও আগ্নেয়াস্ত্র চুরির অপরাধে সেই থেকে তিনি জেলে আছেন।

লংভিউয়ের পুলিশ ক্যাপ্টেন ব্র্যান্ডেন ম্যাকনিউ বলছেন, ‘লোকজন যতটা না স্বীকার করে, তার চেয়েও এটা বেশি ঘটছে। পুলিশ হিসেবে আমরা এসব ঘটনার সঙ্গে পরিচিত।’

রাস্তায় যার যত বেশি সময় কাটে তার তত বেশি জেলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সেটা তিনি পছন্দ করুন বা না-ই করুন।

সিয়াটলে করোনা মহামারির আগে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা শহরের মোট জনসংখ্যার আনুমানিক ১ শতাংশ ছিল। তবে সেখানকার কারাগারে বন্দিদের প্রায় ২০ শতাংশ ছিল গৃহহীন, যাদের বেশিরভাগই ছোট অপরাধে জেলে গিয়েছিলেন।

প্রিজন পলিসি ইনিশিয়েটিভের গবেষণা দেখা গেছে, সাধারণ নাগরিকের তুলনায় গৃহহীন ব্যক্তিদের অপরাধমূলক ইতিহাস ১০ গুণ বেশি। আশ্রয়হীনতার কারণে পুলিশের সঙ্গে তাদের মুখোমুখি হওয়া ও জেলে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

শহরের নীতিগুলোতে ফুটপাতে শুয়ে থাকা, অযথা ঘোরাঘুরি করা বা ভিক্ষাবৃত্তিকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে। শহরগুলো আশ্রয়ের স্থান নির্ধারণ করে গৃহহীনতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার আইনকে ন্যায্যতা দেয়। এ ক্ষেত্রে যুক্তি হলো, যে কেউ চাইলেই রাস্তার বাইরে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বেছে নিতে পারেন।

তবে আশ্রয়কেন্দ্রের শয্যাগুলো প্রয়োজনের সঙ্গে খুব কমই তাল মিলিয়ে চলে। এবং কারভারের মতো কিছু মানুষ এসব আশ্রয়কেন্দ্র ফাঁকা থাকার পরেও এড়িয়ে যান।

তারা বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে তারা অনিরাপদ ও অস্বস্তি বোধ করেন। অথবা সেখানে এমন নিয়ম আরোপ করা হয় যা অনুসরণ অযোগ্য। করোনা মহামারি চলার সময় অন্যদের সঙ্গে জায়গা ভাগ করে নেয়ার বিষয়টি পরিস্থিতিকে আরও বিপজ্জনক করে তোলে।

গৃহহীনদের নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা বলছেন, একজন ব্যক্তি কত ঘন ঘন কারাগার বেছে নিচ্ছেন তার চেয়ে বোঝা জরুরি কেন তিনি এটা করছেন। মৌলিক জায়গা থেকে, এটি উত্তর না পাওয়ার মতো কোনো কঠিন প্রশ্ন নয়।

কিং কাউন্টি রিজিওনাল হোমলেসনেস অথরিটির প্রধান ডনস বলেন, ‘আপনি কি কখনও কোনো সুরক্ষা ছাড়াই বাইরে ঘুমানোর চেষ্টা করে দেখেছেন? শীতের রাতের কথা ছেড়ে দিন, বসন্তের রাতেও এমন অবস্থায় আপনার হাত-পা খোয়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।’

কেউ কেন কারাগার বেছে নেন তা সত্যিকার অর্থে বোঝার অর্থ হল তারা কীভাবে সেই পছন্দের দিকে ধাবিত হলেন সেটি অনুধাবনের চেষ্টা করা।

ডনস বলছেন, ‘সেই আলোচনার শুরুতে অবশ্যই স্বীকার করে নিতে হবে, দেশ একটি আবাসন সংকটের মধ্যে রয়েছে। এই সংকট মানুষদের স্থিতিশীল ঠিকানার বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। তাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে।

‘গৃহহীনতা একটি আবাসন সংকটজনিত সমস্যা। এটি অপরাধমূলক বা ক্ষতিকর পদার্থের ব্যবহার বা আচরণগত সমস্যা নয়।’

কারও জেলে যাওয়ার ইচ্ছা পূরণের বিষয়ে মিশ্র অনুভূতি রয়েছে লংভিউ পুলিশ ক্যাপ্টেন ম্যাকনিউয়ের।

তিনি বলেন, ‘গৃহহীন ইস্যুতে গ্রেপ্তার আপনি বন্ধ করতে পারবেন না। তবে ঘরহীনদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে দরিদ্রদের অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়। সেই সঙ্গে এটি তাদের আচরণকে স্থায়ীত্ব দেয়।’

অবশ্য কখনও কখনও গৃহহীন ব্যক্তি এত গুরুতর অপরাধ করেন যে তা উপেক্ষা করা যায় না।

আমেরিকার গৃহহীনরা কেন বারবার জেলে যেতে চান

চার বছর আগে ম্যাকনিউ একজন গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করতেন। সে সময় পুলিশের রেডিওতে একটি কল আসে। দক্ষিণ-পশ্চিম ওয়াশিংটনের কলম্বিয়া নদীর ধারে ৩৭ হাজার জনসংখ্যার শহর লংভিউতে পুলিশ স্টেশন থেকে মাত্র আধা ব্লক দূরে একটি ব্যাংকে ডাকাতি চলছে।

জিম্মি, গুলি, ধাওয়া এমন সব খারাপ পরিস্থিতির প্রস্তুতি নিয়ে ম্যাকনিউ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তবে এসবের পরিবর্তে তিনি ৬৮ বছর বয়সী একজনকে দেখতে পান, যার মাথাভর্তি টাক। মোটা চশমা পরা রিচার্ড গর্টন নামের ওই ব্যক্তি ব্যাংকের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন।

ম্যাকনিউ বলেন, ‘তাৎক্ষণিক স্পষ্ট হয়ে যায় অস্বাভাবিক কিছু একটা ঘটেছে।’

গর্টন গ্রেপ্তার হতেই চেয়েছিলেন। ম্যাকনিউ শিগগিরই জানতে পারেন কয়েক বছর আগেও তিনি (গর্টন) জেলে যাওয়ার আশায় উত্তরে প্রায় ২০০ মাইল দূরে বেলিংহাম, ওয়াশিংটনে তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি করেন। প্রতিবার গর্টন ছিলেন শান্ত, পুলিশ আসার পর স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন।

লংভিউতে ২০১৮ সালে ব্যাংক ডাকাতির জন্য সাত বছরের সাজা পান গর্টন। তিনি এখন অ্যাবারডিনের স্টাফোর্ড ক্রিক সংশোধন কেন্দ্রে আছেন।

তিনি আমাকে বলেছেন, বেলিংহামে প্রথম ব্যাংক ডাকাতি করেন ২০১৪ সালে। কারণ তখন তিনি ভেবেছিলেন একটি পাবলিক হাউজিং কমপ্লেক্সে নিজের অ্যাপার্টমেন্টটি হারাতে বসেছেন।

ডাকাতির প্রথম ঘটনায় তাকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এরপর একজন দণ্ডিত অপরাধী হিসেবে স্থায়ী আবাসন নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই তিনি আরেকটি ব্যাংক ডাকাতি করেন, তারপরে আরেকটি, যতক্ষণ না তিনি তিন বছরের জেল পান।

তৃতীয় ডাকাতির পর তিনি রাস্তায় জীবনযাপনের চেষ্টা করেন। তিনি স্পোকেনে ইউনিয়ন গসপেল মিশনে সাহায্য চেয়েছিলেন, তবে ধর্মের প্রয়োজনীয় বিধান মেনে চলতে পারেননি। একই ঘটনা ঘটে পোর্টল্যান্ডেও।

আর তাই কারামুক্তির মাত্র ১০ দিন পর তিনি আবার একটি ব্যাংকে ডাকাতির জন্য লংভিউ গিয়েছিলেন। এ দফায় দীর্ঘমেয়াদে কারাদণ্ড পাওয়ার বাসনা পূর্ণ হয়।

গর্টন জানান, তার এখন খারাপ লাগছে। তবে খারাপ লাগার কারণ এটা নয় যে, তিনি ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার উপর কোনো বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছেন। কারণটি হলো, তাকে বলা হয়েছে শেষবার ডাকাতির সময় পরিস্থিতির ধাক্কায় ব্যাংক টেলার (ক্যাশ ব্যবস্থাপনাকর্মী) খুব বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন।

গর্টন বলেন, ‘আমি সচেতন হয়েই এ পথে এসেছি। আমি জানি আঘাতপ্রাপ্ত লোকজন প্রায়ই ঘুরে দাঁড়ান এবং অন্যদের আঘাত করেন। কে জানে এখন এই ব্যাংক টেলার কোন পথে যাবেন?’

কলোরাডোর একটি উচ্চ-মধ্যবিত্ত এলাকা গোল্ডেনে পরিবারের একমাত্র সন্তান হিসেবে গর্টন বেড়ে ওঠেন। তিনি একটি স্টেট কলেজে পড়াশোনা করেছেন এবং বছরের পর বছর কম বেতনে কেরানি ধরনের চাকরি করেন। এরপরেও লোকজনের সঙ্গে মিশতে তার সমস্যা হতো।

গর্টন বলেন, ২০০০ সালে তার অটিজম ধরা পড়ে এবং এই প্রতিবন্ধকতার সুবিধা পেতে শুরু করেন। প্রতি মাসে ৭০০ ডলার ভাতার পাশাপাশি তাকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পাবলিক হাউজিংয়ে থাকার সুযোগ দেয়া হয়।

একপর্যায়ে তিনি বাসস্থান হারানোর ভয় পেতে শুরু করেন। অবশ্য তিনি কখনোই কোনো সমাজসেবা সংস্থার সাহায্য চাওয়ার কথা বিবেচনা করেননি। নির্ভর করার মতো পরিবারের কোনো সদস্যও ছিল না। প্রথম ব্যাংক ডাকাতি করার পর বন্ধুরাও তাকে অস্বীকার করতে শুরু করেন।

গর্টন বলেন, ‘তারা (বন্ধুরা) আমাকে বুঝতে পারেনি। আমার সঙ্গে ওরা কিছু করতে চায় না।’

গর্টন জানেন না কারাগার থেকে বের হয়ে কীভাবে বাঁচবেন। তিনি বলেন, ফের অপরাধে জড়াতে চান না অথবা আরও কোনো লোককে আঘাত করতে চান না। তাই অপরাধ এড়িয়ে যেভাবে চলা যায় সে বিষয়ে মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

গর্টন বলেন, ‘আমি মনে করি গৃহহীনতার যন্ত্রণা সহ্য করার যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’

আমেরিকার গৃহহীনরা কেন বারবার জেলে যেতে চান

প্রিলের এক শীতল রৌদ্রোজ্জ্বল সকাল। স্পোকেনের উচ্চতম ভবনগুলোর ছায়ায় ডেভেনপোর্ট হোটেল টাওয়ারের পিছনে একটি গলিতে কারভার ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। শহরের ফ্ল্যাগশিপ বিলাসবহুল হোটেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এ এলাকায়।

একটি আচ্ছাদিত সিঁড়ির নীচে গড়ে তোলা নিজের ক্যাম্পের দেয়াল ঘেঁষে বসেন কারভার। পেছনেই দেখা যাচ্ছে ‘অনুপ্রবেশ নয়’ চিহ্ন। দুই ব্লক দূরে ট্র্যাক ধরে ছুটে চলছে ট্রেন। কারভারের সারা দেহ নিজের মলে মাখামাখি। তার কোনো তাঁবু নেই।

তিনি বলেন, ‘তাঁবু মানেই পুলিশের লক্ষ্যবস্তু।’

শহরের রাস্তার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা এগিয়ে আসতেই তিনি কম্বল গুটিয়ে নিয়ে একটি ছেঁড়া ব্যাগে প্যাক করেন। ব্যাগ থেকে বাতাস বের করে দিতে হাত দিয়ে চাপ দেন। এবার তিনি কম্বলটি গায়ের কোটের নীচে ভরে রাখতে পারবেন।

তার হাত ফাটা ও শুকনো, ঠান্ডা বাতাসে রক্তপাত শুরু হয়েছে, ব্যথায় শক্ত। কম্বলগুলো সুরক্ষিত হয়ে গেলে তিনি হিঁসহিঁস শব্দ তুলে গলিতে পা বাড়ান।

কারভার দক্ষিণে কয়েকটি ব্লক পরের শালম মিনিস্ট্রিজের দিকে যাচ্ছেন। সেখানকার কর্তৃপক্ষ তাকে প্যানকেক এবং ওটমিলের তিনটি টু-গো বক্স দেবে।

অন্য গৃহহীনদের পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় নতুন প্রজন্মের রুক্ষ জীবনযাপনকারীদের নিয়ে তার কণ্ঠে খেদ ঝরে। কারভার বুঝতে পারেন না এরা একসঙ্গে নেশা করার পরেও কীভাবে একে অপরকে ঠকাচ্ছে, মারধর করছে, এমনকি হত্যাও করছে।

কারভার একাকী শুধু গাঁজার নেশা করেন, সূঁচকে ভয় পান বলে কালেভদ্রে মেথ গ্রহণ করেন।

তিনি জানান, রাস্তায় লোকজনের চোখের দিকে তাকাতে ভয় পান, কারণ তারা তাকে আক্রমণ বা ছিনতাই করতে পারেন।

তিনি বলেন, বহু বছর হয়ে গেছে কোনো নারীর সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়েছে। বয়ফ্রেন্ডরা মারধর করলে তারা এসে কান্নাকাটি করত, তবে এরপর আবার বয়ফ্রেন্ডদের কাছেই ফিরে যেত।

এটি কারভারের জন্য একটি সাধারণ সকাল। দুঃসহ অবস্থায় তার ঘুম ভেঙেছে। তিনি খাবার, বাথরুম ও শান্তিতে বিশ্রাম নেয়ার জায়গা খুঁজছেন। তিনি যেখানেই যান, ‘কোনো অনুপ্রবেশ নয়’ চিহ্নগুলো মনে করিয়ে দেয় তিনি অনাহূত।

কিছু দিন আগের মতো আজও তিনি স্থানীয় একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে গিয়ে থামেন। রোগী না হওয়ার পরেও কর্তৃপক্ষ তাকে ভিতরে যেতে দেয়।

সামনের দিকে একজন নারী লাইটার খুঁজছিলেন, তিনি কারভারকে দেখতে পান।

তিনি বলেন, ‘ওহ, কারভার, আমি জানি তোমার লাইটার আছে।’

‘এই নিন’, কারভার এগিয়ে যান।

এই সাহায্যের বিনিময়ে ওই নারী কারভারকেও একটি সিগারেট ধরিয়ে দেন। কারভারের আচরণ অত্যন্ত ভদ্র ও বন্ধুত্বপূর্ণ, তবে নারীটি চলে যাওয়ার পরই তিনি ভেঙচি কাটেন।

‘উফ, মেন্থল।’

নিরাময় কেন্দ্রের ভিতরে তিনি গ্রুপ থেরাপির জন্য ব্যবহৃত ডাইনিং টেবিলে একটি চেয়ার টেনে নিয়ে খাবারের বাক্স খোলেন।

ওটমিল এতই আঠালো যে প্লাস্টিকের কাঁটাচামচ প্রায় ভেঙে যায়। প্যানকেকগুলো পুড়ে গেছে। খাবারের সঙ্গে পাওয়া কিশমিশের ছোট বাক্সগুলো তিনি ফেলে দেন।

কিছু কুকিজ ও কফি আনতে কারভার উঠে যান। ফিরে এসে দেখেন রেবেকা নামে এক নারী চেয়ার দখল করে আছেন।

কারভার বলেন, ‘মাফ করবেন রেবেকা, আপনি আমার চেয়ারে বসেছেন।’

রেবেকা চেয়ার ছেড়ে দেন। তবে ফের অন্য কুকি এনে বসেতে গিয়ে দেখেন, টেবিলের প্রতিটি চেয়ার খালি থাকার পরেও রেবেকা আবার তার চেয়ারেই বসেছেন।

এরপরেও কারভার ভদ্র স্বরে বলেন, ‘রেবেকা, আপনি আমার চেয়ারে বসেছেন। আপনি কি এটা ছেড়ে দেবেন?’

রেবেকা আবার সরে যান। অবশেষে ঝামেলার মিমাংসা হয়। কারভার তার প্যানকেকের ওপর সিরাপ ছড়িয়ে দেন, মাথা নিচু করে নিবিষ্টভাবে দেখেন কীভাবে সিরাপ কেকের উপর দিয়ে ঝরে পড়ছে।

তিনি একটি চিনির কুকি নিয়ে কফিতে ডুবিয়ে রাখেন। চারপাশে লোকজনের উপস্থিতিকে তিনি পাত্তা দিচ্ছেন না। এভাবে খাবার শেষ করতে ৩০ মিনিট লেগে যায়। সবশেষে নিজের জোগাড় করা সিগারেটের বিনিময়ে তিনি আরেক গৃহহীনের কাছ থেকে আধা কাটন দুধ নিয়ে গলায় চালান করেন।

একটি গ্রুপ সেশন শুরুর প্রস্তুতির মধ্যেই কারভার নিরাময় কেন্দ্র ছেড়ে বাইরের শীতার্ত পরিবেশে চলে আসেন।

তিনি বলেন, এরকম ঠান্ডা দিন কাঙ্ক্ষিত বিকল্প হিসেবে জেলখানাকে সামনে নিয়ে আসে। সেখানে অন্তত শান্তিতে খাওয়ার জন্য শহরজুড়ে ঘুরে বেড়ানোর প্রয়োজন পড়ে না।

আমি জিজ্ঞাসা করি, শীতকালে তিনি কোনটি পছন্দ করেন: জেল, নাকি রাস্তার জীবন?

একটু চিন্তা করে তার জবাব, ‘জেলখানা।’

তারপর একটি শর্ত যোগ করেন, ‘যদি সেখানে আমি গাঁজা খেতে পারতাম!’

আমেরিকার গৃহহীনরা কেন বারবার জেলে যেতে চান

ডিসিভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক আরবান ইনস্টিটিউটের সহযোগী ভাইস প্রেসিডেন্ট সারাহ গিলেস্পি গৃহহীনদের ক্ষেত্রে ‘পছন্দ (চয়েস)’ শব্দটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করেন।

ইস্যুটির একজন গবেষক হিসেবে গিলেস্পি রাস্তার জীবন বা জেলে যাওয়াকে মানুষের পছন্দ ভাবার বিষয়টিকে ‘মিথ’ বলে অভিহিত করতে চান। তার গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষকে যদি আবাসন থাকা বা না থাকার সুবিধা বাছাইয়ের সুযোগ দেয়া হয় তাহলে বেশিরভাগ মানুষ আবাসনকেই বেছে নেবে।

গিলেস্পি বলেন, ‘আমরা জানি সমাধানগুলো কী। এই জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় আনতে প্রয়োজনীয় সমাধানের জন্য আমাদের কী করতে হবে।’

তিনি বলেন, গৃহহীনতা থেকে কারাগারে যাওয়ার চক্রের অবসান ঘটানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায়টি খুব পরিষ্কার। আর সেটি হলো সবার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা।

হিউস্টনে গবেষণাপ্রসূত উচ্চাভিলাষী ‘হাউজিং ফার্স্ট’ পদ্ধতি মানুষকে বিনামূল্যে বা সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসন দেয়ার মাধ্যমে দুর্দান্তভাবে গৃহহীনতা সমস্যার মোকাবিলা করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবার জন্য আবাসন নিশ্চিতের পদক্ষেপ নেয়া হলে আশ্রয়কেন্দ্র, পুলিশ পরিষেবা এবং কারাগারে ব্যয়ের তুলনায় অর্থের সাশ্রয় ঘটবে।

যুক্তরাষ্ট্রে যাদের সহায়তা প্রয়োজন তাদের জন্য স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করতে কত খরচ হবে সে বিষয়ে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত কোনো অনুমান নেই।

তবে বাড়িভাড়া নিয়ে হিমশিম খাওয়া পরিবারকে সহায়তা দেয়া ফেডারেল হাউজিং ভাউচার প্রোগ্রামের একটি আরবান ইনস্টিটিউট বিশ্লেষণ বলছে, সহায়তার জন্য যোগ্য প্রতি পাঁচজন ভাড়াটের মধ্যে মাত্র একজন এটি গ্রহণ করেন। যোগ্য সবাইকে এ সহায়তার আওতায় আনা হলে অতিরিক্ত ১ কোটি ৯৭ লাখ মানুষ যোগ হবে। এতে যুক্তরাষ্ট্রে বছরে আনুমানিক ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলার খরচ হবে।

গিলেস্পি ডেনভারভিত্তিক একটি কর্মসূচির উদ্ধৃতি দিয়েছেন, যারা ক্রিস কারভারদের মতো দীর্ঘদিন ধরে গৃহহীন ও ঘনঘন পুলিশের মুখোমুখি হচ্ছেন এমন ব্যক্তিদের বিনামূল্যে বা বড় ভর্তুকিতে আবাসন সুবিধা দিচ্ছে। এসব ভাড়াটে এখনও মাদক গ্রহণ বা অ্যালকোহল সেবন করতে পারেন এবং বাড়িতে রাখতে পারেন। তবে তাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য এবং মাদকাসক্তি নিরাময়ের সেবা বিদ্যমান।

তিন বছর কাটার পর ডেনভার কর্মসূচির আওতায় আসা ব্যক্তিদের প্রায় ৮০ শতাংশের থিতু হওয়ার মতো আবাসন বহাল রয়েছে। গিলেস্পির যুক্তি, এটাই বড় প্রমাণ যে দীর্ঘদিন ধরে ঘরছাড়ারাও বাড়ি পেলে তা গ্রহণ করেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো, একটি নিয়ন্ত্রিত গ্রুপের তুলনায় এই কর্মসূচির আওতায় আবাসন পাওয়া ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা ৪০ শতাংশ কমে গেছে।

খরচের দিক থেকে হিসাব করলে এ ধরনের সরাসরি আবাসন প্রকৃতভাবে অর্থ বাঁচাতে পারে। কর্মসূচির আওতায় জনপ্রতি আবাসন খরচ বছরে ১৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার ডলার। আরবান ইনস্টিটিউটের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, অন্যান্য পরিষেবা যেমন রাস্তার ঝাড়ু দেয়া, আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনা, পুলিশি কর্মকাণ্ড এবং জরুরি তৎপরতাসহ অন্যান্য ব্যয়ের তুলনায় এই খরচ অর্ধেক।

গিলেস্পির যুক্তি, জেল ব্যবস্থাপনা, গৃহহীনতা এবং জরুরি পরিষেবা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি বড় অংকের অর্থ ব্যয় হয়। এই পরিষেবাগুলোর পেছনে ব্যয়ের হিসাব করলে আবাসনে বিনিয়োগ করা অনেক বেশি যৌক্তিক।

কিং কাউন্টির হোমলেসনেস অথরিটির ডনসও মনে করছেন, কারভারের মতো ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা সর্বোত্তম উপায়। পর্যাপ্তসংখ্যক জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র থাকাও জরুরি, তবে অনেকেই এটি ব্যবহার করতে চাইবেন না। আশ্রয়কেন্দ্রের পেছনে ব্যয় করা কিছু ডলার আবাসনে বিনিয়োগ করে আরও ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।

এমনকি তথাকথিত তাঁবুর শহরে পরিষেবা দেয়াও বেশ ব্যয়বহুল। সান ফ্রান্সিসকো শহর কর্তৃপক্ষ পরিচালিত গৃহহীনদের একটি ক্যাম্পে প্রতি তাঁবুর পেছনে বছরে আনুমানিক ৬০ হাজার ডলার খরচ হয়।

আগে হোটেল ছিল এমন ভবনগুলো সরকারিভাবে কেনার পক্ষে ডনস। কারণ এগুলো দ্রুত সাশ্রয়ী দামের আবাসনে রূপান্তর করা সম্ভব।

একটি আবাসন ব্যয়ের চেয়ে একজন গৃহহীকে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থাপনার খরচ অনেক বেশি। অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ভেরা ইনস্টিটিউট অফ জাস্টিসের তথ্য অনুসারে, একজন ব্যক্তিকে এক বছরের জন্য জেলে পাঠাতে গড়ে ৪৭ হাজার ৫৭ ডলার খরচ হয়, আর তাকে এক বছরের জন্য কারাগারে রাখতে ব্যয় হয় ৩৩ হাজার ২৭৪ ডলার।

এ কারণেই কলোরাডো কোয়ালিশন ফর দ্য হোমলেস-এর পাবলিক পলিসি অফিসার ক্যাথি অল্ডারম্যানের মতো বিশেষজ্ঞরা যুক্তি দেন, ডেনভারের মতো কর্মসূচিগুলোকে প্রয়োজনের সঙ্গে মানানসই করে তুলতে হবে। তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি যত বার কারাগার বেছে নেন, ততবার একটি ভঙ্গুর ব্যবস্থাপনার চিত্র প্রতিফলিত হয়।

অল্ডারম্যান বলেন, ‘এটি নীতিগত, রাজনৈতিক এবং তহবিলগত একটি ব্যর্থতা।’

এসব নীতি বিতর্কগুলোর বাস্তব কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় কারভারের মতো ব্যক্তিরা দুর্ভাগ্যের চক্রেই ঘুরপাক খেতে থাকেন।

ইডাহোর পোস্ট ফলসে বেটি আরফোর্ডের বাড়িটি সাদা রঙের, সামনের লন উজ্জ্বল সবুজে ঝকঝক করছে। পরিপাটি বাড়িটি আশেপাশের বাচ্চাদের বাস্কেটবল খেলার শব্দ, কুকুরের ঘেউ ঘেউ, ঘাস কাটার যন্ত্রের গুঞ্জনে মুখরিত।

এই দৃশ্য ঠিক ২৫ মাইল দূরে স্পোকেনের রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো আরফোর্ডের মেজ সন্তান ক্রিস কারভারের জীবনের থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত।

৭০ বছর বয়সী আরফোর্ড বলেন, পাঁচ বছর আগে ছেলের সঙ্গে তার শেষ কথা হয়েছে। কারভার তখন ভাঙা ডান নিতম্ব ও ফিমার নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তার জরুরি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়েছিল।

তিনি (কারভার) পুলিশের হাত থেকে পালানোর চেষ্টা করা কোনো কিশোরের গাড়ির আঘাতে আহত হননি, যেমনটি তিনি এখন লোকজনদের বলছেন। প্রকৃতপক্ষে একটি ঝোপের চারপাশে ঘোরাঘুরি করার সময় তিনি সাইকেল থেকে পড়ে যান এবং তার পা ভেঙে যায়।

অস্ত্রোপচারের পরপরই চিকিৎসকদের পরামর্শ উপেক্ষা করে কারভার একটি হুইল চেয়ার নিয়ে ব্যান্ডেজসহ হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান।

এর কারণ হিসেবে মা আরফোর্ডকে তিনি কী বলেছিলেন? তিনি সেখানে নাকি গাঁজা খেতে পারছিলেন না!

কারভার ৩০ বছর ধরে পরিবারের কাউকে দেখতে না পাওয়ার যে দাবি করেছেন বাস্তবতা তার বিপরীত।

প্রকৃতপক্ষে আরফোর্ড- যিনি সাত বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে একটি মানসিক স্বাস্থ্য ক্লিনিক চালিয়েছেন তিনি বলেন, ছেলেকে সাহায্য করার চেষ্টা বছরের পর বছর ধরে করেছেন। এখনও তিনি স্থানীয় কারাগারের লগ চেক করে দেখেন, ছেলে কোথায় আছে।

আরফোর্ড বলেন, ‘আমরা জানি না ওর জন্য কী করতে হবে। আমার ভয় হয়, একদিন হয়ত শুনতে পাব ওকে কেউ খুন করেছে।’

কেলগ শহরের কাছেই দুই একর জমির ওপর বড় একটি বাড়ি কারভারদের। খ্রিস্টান পরিবারে বড় বোন ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে তিনি বেড়ে ওঠেন। কেলগ ছোট একটি শহর, যেখানে জনপ্রিয় স্কি রিসোর্ট রয়েছে৷ তার বাবা গ্যারি কারভার পাশের বাঙ্কার হিল খনির ইলেকট্রিশিয়ান ছিলেন। সপ্তাহান্তে পুরো পরিবার ক্যাম্পিং করতে যেত।

আরফোর্ড বলছিলেন, ‘গুরুতর এডিএইচডির (অ্যাটেনশন-ডেফিসিট/হাইপারঅ্যাকটিভ ডিসঅর্ডার) সম্ভাব্য ফল হিসেবে স্কুলে সবসময় ওর সমস্যা ছিল। ও অন্য বাচ্চাদের বিরক্ত করত, যে কারণে ওরা পাল্টা ধমক দিত। ও প্রায়ই স্কুল থেকে পালিয়ে যেত, রাতের খাবার পর্যন্ত বাড়ি ফিরত না।’

মিডল স্কুলে ভর্তির আগে তিনি (আরফোর্ড) কারভারকে কয়েক বছর হোম-স্কুল করিয়েছিলেন। তবে ছেলে সেই পরিবেশকে ‘কাজে লাগাতে পারেনি’ এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ শিক্ষা সহায়তার ব্যবস্থাও আরফোর্ড করতে পারেননি।

তিনি ডিস্ট্রিক্ট সুপারিন্টেডেন্টের কাছে যান। এলাকার আমেরিকান সিনেটরকে চিঠি লেখেন। তিনি একটি বিকল্প স্কুলের চেষ্টা করেছিলেন। একটি ঐতিহ্যবাহী স্কুলে ভর্তির আগে প্রায় ছয় মাস কারভারের জন্য একজন পূর্ণকালীন শিক্ষক ছিলেন। তবে এর কোনোটি কাজ করেনি।

কিশোর বয়সে কারভার প্রায়ই সমস্যা করতেন। বাসায় ভাংচুর চালাতেন, চুরি করতেন, মিথ্যা বলতেন। অন্য শিশুদের কাছ থেকেও পালটা গালি আরও বাড়ছিল। আরফোর্ড বলেন, ১৪ বছর বয়সে আশেপাশের কিছু শিশু ওকে শিক্ষা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা ওর পায়ে দাহ্য তরল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওর পায়ে সেই পোড়া দাগ এখনও আছে।

কারভারের দাবি অনুযায়ী তিনি বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত কিনা আরফোর্ডের জানা নেই। তবে আক্রান্ত হয়ে থাকলেও তিনি অবাক হবেন না। আরফোর্ড নিশ্চিত, তার ছেলে হিংস্র ব্যক্তি নন। তার সঙ্ঘাত শুধু সত্যের সঙ্গে।

আরফোর্ড বলেন, ‘সত্য যখন অধিকতর ভালো, তখনও সে মিথ্যা বলবে। সে একটি মিথ্যা বলা শুরু করে এবং তারপর এতবার বলতে থাকে যাতে সেটি বাস্তব মনে হয়।’

মা বলছিলেন, কারভার শুধু প্ররোচিত হয়েছেন, কখনও এর পরিণতি বিবেচনা করেননি। হাতে টাকা এলেই সঙ্গে সঙ্গে উড়িয়ে দেন।

একটি বিষয় আরফোর্ড মনে করতে পারেন- তার ছেলে মাছ ধরা খুব পছন্দ করত। কখনও একাকী মাছ ধরত। তবে বাড়িতে সে কী করবে সে বিষয়ে কখনোই নিশ্চিত হতে পারতেন না আরফোর্ড।

১৮ বছরে পৌঁছানোর পর চুরি, লোকজনের ওপর চড়াও হওয়ার মতো অপকর্মের অভিযোগে কারভার গ্রেপ্তার হতে শুরু করেন। আরফোর্ড বলেন, কারভার ভয়ঙ্কর কোনো মাদক গ্রহণ না করলেও গাঁজা রাখার দায়ে প্রায়ই গ্রেপ্তার হয়েছেন।

কারভারের নিজের অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়ার বন্দোবস্তের জন্য এডিএইচডি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সামাজিক নিরাপত্তা সহায়তা পেতে সাহায্য করেন আরফোর্ড। তবে এই তহবিল ব্যবস্থাপনার সময় মায়ের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ তোলেন কারভার। পরে পুরো ব্যবস্থাপনা নিজের কাছে নিয়ে সহায়তার অর্থ অন্য কাজে ব্যয় শুরু করেন।

আরফোর্ড বলেন, ‘অর্থের বিষয়ে ওর কোনো ধারণা নেই। সহায়তা পাওয়ামাত্র সে বাইরে গিয়ে সব খরচ করে ফেলত, এভাবে প্রথম কয়েক দিনের মধ্যেই কপর্দকশূন্য হয়ে যেত। অনেকেই তাকে আবাসন বা চিকিৎসাসেবা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। এটা সে হয় গ্রহণ করে না, নয়ত গ্রহণ করার পর একটি ঝামেলা পাকায়।’

আরফোর্ড জানেন না কীভাবে ছেলেকে সাহায্য করবেন। তিনি এখনও ভাবেন, স্কুলে পড়ার সময় কারভারের মতো শিশুকে আরও বোঝার সুযোগ ঘটলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতো। এখন কারভারের বয়স প্রায় ৫০ বছর, জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি রাস্তায় বা জেলে কাটিয়েছেন।

আরফোর্ড মনে করেন, তার ছেলের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসা প্রয়োজন।

তবে আইনত যতক্ষণ না তাকে নিজের বা অন্যদের জন্য হুমকি বলে মনে করা হবে ততক্ষণ তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কেন্দ্রে পাঠানো যাবে না। আমেরিকায় অনেক আগে থেকেই আইনটি বিদ্যমান। এতে মনে করা হয়, কারও জন্য হুমকি নন এমন কাউকে প্রাতিষ্ঠানিক কেন্দ্রে আটকে রাখা নির্দয়তা।

এরপরেও আরফোর্ড বিশ্বাস করেন, তার ছেলে মানসিক হাসপাতাল বা কারাগারে থাকার সময়ে সবচেয়ে শান্তিতে ছিল। সে আবদ্ধ ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ভালো থাকে।

আরফোর্ড বলেন, তার ছেলেও হয়ত নিজের সম্পর্কে একই কথা ভাবে।

আমেরিকার গৃহহীনরা কেন বারবার জেলে যেতে চান

স্পোকেন শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি গির্জার সামনে সিঁড়িতে বসে আমি কারভারের কাছে জানতে চাই, তিনি নিজের জন্য কী চান। যদি তিনি নিজের জীবনের পরবর্তী কয়েক বছরকে একটি সুগঠিত রূপ দিতে সক্ষম হন, তাহলে সেটি কেমন হবে?

তিনি উত্তর দেন, ‘এ রকমই, নতুন কিছু না আসা পর্যন্ত।’

আমি জিজ্ঞেস করি, ‘কী আসা পর্যন্ত?’

এর জবাব তার জানা নেই।

কারভার উল্লেখ করেন, তার এক বন্ধু একটি আবাসনে আছেন, যেখানে তিনি গাঁজা খেতে পারেন এবং কেউ তাকে বিরক্ত করে না।

আমরা ক্যাথলিক চ্যারিটিজ ইস্টার্ন ওয়াশিংটন পরিচালিত একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স থেকে আসা রাস্তার ধারে বসে আছি। এটি স্পোকেনে প্রতিষ্ঠানটির ‘হাউজিং ফার্স্ট’ নীতি কৌশলের আওতায় বাস্তবায়িত একটি প্রকল্প। কোনো জবাবদিহি ছাড়াই আবাসন দেয়ার এই ধারণা নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে বিতর্ক রয়েছে।

আমি জিজ্ঞেস করি, ‘আপনি কি থাকার ঘর চান?’

তার জবাব, ‘ঘরটি কেমন হবে তার ওপর নির্ভর করছে।’

হঠাৎ তিনি বিষয় পরিবর্তন করেন; ‘আমি গাঁজা সেবন করলে আপনি কি আপত্তি করবেন?’

নিরাময়কেন্দ্রের চত্বরে ধূমপানের অনুমতি নেই, তাই তিনি ব্লক পেরিয়ে একটি গির্জার সিঁড়িতে বসেন। ‘অনুমতিহীন প্রবেশ নিষিদ্ধ’ লেখাটিকে তিনি উপেক্ষা করেন। গাঁজার স্টিকে তিনবার টান দিয়ে ধোঁয়া ছাড়েন। তার পৃথিবী যেন নিশ্চল ও ঘোলাটে হয়ে আসে। তার কথামালা- যেগুলো সাধারণত অস্পষ্ট বিড়বিড় ধরনের, তা অনেক পরিষ্কার হয়ে আসে।

১৯৮৬ সালের ৯ জুলাই নিজের ১৩তম জন্মদিনে কীভাবে তুষারপাত হয়েছিল সে গল্প শোনান। একটি নির্দয় পৃথিবীতে তার অবস্থানের আরেকটি প্রতিফলন ঘটায় এই গল্প।

কারভারের জন্মদিনটি উষ্ণ ও রৌদ্রোজ্জ্বল হওয়ার কথা থাকলেও তিনি তুষারপাতের কথা শোনান। আবহাওয়ার রেকর্ড অনুসারে এ বক্তব্যও অসত্য।

গল্পটি চলতে থাকে। কারভার তুষার দেখে মায়ের ঘরে গিয়ে তাকে বলেন।

‘মা দেখো, জুলাই মাসে তুষার ঝরছে।’

মা বিশ্বাস করেন না।

তিনি অনুনয় করেন, ‘দেখো না, সত্যি তুষার পড়ছে।’

তারপর কারভারের গল্প অনুযায়ী, মা বাইরে ফিরে তাকান। তিনি দেখেন ছেলে সত্যি বলছে। মা তখন তার মতোই হতবাক। ছেলের জন্মদিনে সমস্ত দিন ধরে ঝরছে তুষার।

মা বলেন, ‘সত্যিই তো! জুলাই মাসে তুষারপাত হচ্ছে!’

গল্পটি শেষ করে কারভার হাসেন।

পুলিশের একটি দল এলাকায় টহলে বেরিয়েছে। কারভার তার কোট গুছিয়ে নিয়ে একটি গলিতে সেঁধিয়ে যান।

আরও পড়ুন:
রাশিয়ার কৃষি ও চিকিৎসাপণ্যে নিষেধাজ্ঞা নেই: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান
খাসজমি দখলমুক্ত করে উপহারের ঘর
পশ্চিমে ইসলামফোবিয়ার পর এবার ‘রুশোফোবিয়া’
আমেরিকা-রাশিয়ার সর্বনাশে চীনের পৌষমাস

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
The US is sending military anti missile systems to Israel

ইসরায়েলে সেনা, ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী ব্যবস্থা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েলে সেনা, ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী ব্যবস্থা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদরদপ্তর পেন্টাগনের ‍মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার সেনা ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনকে দেশটির সেনাবাহিনী সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যে বৃহত্তর সমন্বয় করেছে, তার অংশ হিসেবে আখ্যা দেন। 

ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধের শঙ্কার মধ্যে ইহুদি রাষ্ট্রটিতে সেনা ও উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী ব্যবস্থা পাঠানো হবে বলে রোববার জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

গত ১ অক্টোবর ইরান থেকে ইসরায়েলে ১৮০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর তেল আবিবের পাল্টা হামলার পরিকল্পনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা পাঠানোর এ ঘোষণা দিল।

রয়টার্স জানায়, ইসরায়েলকে সুরক্ষা দিতে সেনা ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননের পর মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর যুদ্ধ ঠেকাতে ইসরায়েলকে ভেবেচিন্তে পাল্টা হামলা করতে গোপনে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রকাশ্যে দেয়া বক্তব্যে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিরোধিতা এবং জ্বালানি অবকাঠামোতে আক্রমণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদরদপ্তর পেন্টাগনের ‍মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার সেনা ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনকে দেশটির সেনাবাহিনী সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যে বৃহত্তর সমন্বয় করেছে, তার অংশ হিসেবে আখ্যা দেন।

তার ভাষ্য, সামরিক এ সহায়তার উদ্দেশ্য ইসরায়েলকে সমর্থনের পাশাপাশি ইরান এবং তেহরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর হামলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের রক্ষা।

আরও পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেড়ে ৪১ হাজার ৭৮৮
গাজায় হামাস সরকারের প্রধান নিহত, দাবি ইসরায়েলের
বৈরুতের প্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় ছয়জন নিহত
জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিল ইসরায়েল
ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের

মন্তব্য

জীবনযাপন
Verma Jasim fruitful talks in USA

যুক্তরাষ্ট্রে ভার্মা-জসিম ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনা

যুক্তরাষ্ট্রে ভার্মা-জসিম ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনা যুক্তরাষ্ট্রের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড ভার্মার সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন। ছবি: ইউএনবি 
আলোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, রোহিঙ্গা ইস্যু, শ্রম আইন সংস্কারের মতো বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার ওপর আলোকপাত করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড ভার্মার সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ’ বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন।

বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর ও সম্প্রসারণ এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব এ বৈঠক করেছেন।

তাদের আলোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, রোহিঙ্গা ইস্যু, শ্রম আইন সংস্কারের মতো বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার ওপর আলোকপাত করা হয়।

পররাষ্ট্র সচিব যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জন বাসের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের গতিতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা গভীর করার উপায় এবং অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলোতে কার্যকর সহযোগিতা এগিয়ে নেয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।

পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী ইউএসটিআর ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

তিনি রপ্তানি বহুমুখীকরণে পারস্পরিক সহযোগিতা, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা থেকে উৎপাদিত আরএমজির ডিএফকিউএফ প্রবেশাধিকার, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের নিবন্ধন সহজীকরণ ও নিবন্ধন ফি হ্রাস, শ্রম আইন সংস্কার এবং ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কো-অপারেশনে (ডিএফসি) প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা করেন।

আরও পড়ুন:
ইতালি ডিসেম্বরের মধ্যে ২০ হাজার ভিসা নিষ্পত্তি করবে
নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ
শেখ হা‌সিনা ভারতে না অন্য কোথাও, জানে না সরকার
ঘুষ নিয়ে ডিসি নিয়োগের অভিযোগ, প্রতিবেদনকে ‘ভুয়া’ বললেন সচিব
পদায়নের দুদিন পরই ওএসডি নৌ-সচিব

মন্তব্য

জীবনযাপন
Hurricane Helen 44 dead in US

ঘূর্ণিঝড় হেলেন: যুক্তরাষ্ট্রে ৪৪ জন নিহত

ঘূর্ণিঝড় হেলেন: যুক্তরাষ্ট্রে ৪৪ জন নিহত যুক্তরাষ্ট্রে ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ। ছবি: ইউএনবি
ঝড়ে উঁচু ওক গাছ উপড়ে পড়ায় বাড়িঘর ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা বন্যার পানি থেকে মানুষকে বাঁচাতে ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে শুক্রবার ঘূর্ণিঝড় হেলেনের আঘাতে অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন।

ঝড়ে উঁচু ওক গাছ উপড়ে পড়ায় বাড়িঘর ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা বন্যার পানি থেকে মানুষকে বাঁচাতে ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করেছেন।

নিহত লোকজনের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের তিন কর্মীও আছেন।

এক নারী ও তার এক মাস বয়সী যমজ সন্তান এবং ৮৯ বছর বয়সী এক নারীর বাড়ি উপড়ে পড়া গাছের নিচে চাপা পড়েছে।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) হিসাব অনুযায়ী, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, সাউথ ক্যারোলিনা ও ভার্জিনিয়ায় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

ক্যাটাগরি ৪ মাত্রার হারিকেনটির আঘাতে জর্জিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি হাসপাতালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

গভর্নর ব্রায়ান কেম্প বলেন, কর্তৃপক্ষকে ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে এবং রাস্তা সচল করতে চেইনসো ব্যবহার করতে হয়েছিল।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে ফ্লোরিডার গ্রামীণ বিগ বেন্ড এলাকার একটি জনবহুল অঞ্চলে আঘাত হানার সময় বাতাসে ঝড়টির সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪০ মাইল (২২৫ কিলোমিটার)।

এ দুর্যোগে দেড় হাজার কোটি থেকে ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের সম্পত্তির ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা করছে মুডি’স অ্যানালিটিকস।

ধ্বংসযজ্ঞটি উত্তর-পূর্ব টেনেসি পর্যন্ত কয়েক শ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল। এর ফলে ৫৪ জনকে ইউনিকোই কাউন্টি হাসপাতালের ছাদে নেয়ার পর সেখান থেকে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং হাসপাতালে আর কাউকে রাখা হয়নি বলে জানিয়েছে ব্যালাড হেলথ।

নর্থ ক্যারোলাইনার ন্যাশ কাউন্টিসহ কয়েকটি এলাকায় টর্নেডো আঘাত হেনেছে, যাতে চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের জন্য প্রার্থনা করছেন। ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির প্রধান ওই এলাকায় যাচ্ছেন। সংস্থাটির দেড় হাজারের বেশি কর্মী মোতায়েন করেছে এবং তারা ৪০০ জনকে উদ্ধার করতে সহায়তা করেছেন।

আরও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের আরও সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানালেন বাইডেন
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বিস্তৃত আলোচনা অর্থবহ সম্পর্কের ভিত্তি
দেশ পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি দলের বৈঠক
অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি-উন্নয়নে সহযোগিতা পুনর্ব্যক্ত যুক্তরাষ্ট্রের

মন্তব্য

জীবনযাপন
The United States has assured Bangladesh of assistance to bring back the huge amount of stolen money

চুরি হওয়া বিপুল অর্থ ফেরত আনতে বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস যুক্তরাষ্ট্রের

চুরি হওয়া বিপুল অর্থ ফেরত আনতে বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সময় বৃহস্পতিবার একটি হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বৈঠক করেন। ছবি: বাসস
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভালো অংশীদার হতে চাই। আমরা বাংলাদেশের জন্য দ্রুত কাজ করব।’

বাংলাদেশ পুনর্গঠনে সহায়তা করতে ঢাকার সঙ্গে ওয়াশিংটন একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে চুরি হয়ে যাওয়া কোটি কোটি টাকা ফেরত আনার ক্ষেত্রে তারা সহায়তা করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সময় বৃহস্পতিবার একটি হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বৈঠক করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বতর্মানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক সফরে রয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভালো অংশীদার হতে চাই। আমরা বাংলাদেশের জন্য দ্রুত কাজ করব।’

অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘অপরিসীম’ শ্রদ্ধা রয়েছে।

দেশের সংকটপূর্ণ সময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করায় ইউনূসের প্রশংসা করেন ব্লিঙ্কেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের পুনর্গঠনের দায়িত্ব নিয়েছে এবং তিনি বিশ্বব্যাংকের মতো বহুপক্ষীয় সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সহায়তা চেয়েছেন।

আরও পড়ুন:
শেষ টেস্টে টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
সংস্কার: বাংলাদেশকে ৩৫০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও চামড়া খাতে বিনিয়োগ করতে চায় পাকিস্তান
বাংলাদেশের সঙ্গে সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারত্ব জোরদার চায় চীন
পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে ভারতের সঙ্গে বৈঠক শিগগিরই: রিজওয়ানা

মন্তব্য

জীবনযাপন
Tauhid and Melanies discussion on strengthening Bangladesh Canada relations

বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্ক জোরদারে তৌহিদ ও মেলানির আলোচনা

বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্ক জোরদারে তৌহিদ ও মেলানির আলোচনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে মঙ্গলবার বৈঠক করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি। ছবি: বাসস
বৈঠকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ থেকে শুরু করে জলবায়ু পরিবর্তন এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতার বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে মঙ্গলবার দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করার বিষয় বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি।

বৈঠকের বিষয়ে এক বার্তায় উল্লেখ করা হয়, বৈঠককালে উভয় নেতা দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতাকে আরও গভীর করার উপায়গুলো অন্বেষণ করেন এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে চলমান সংস্কার উদ্যোগের জন্য কানাডার সমর্থনের ওপর জোর দেন।

বৈঠকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ থেকে শুরু করে জলবায়ু পরিবর্তন এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতার বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

জোলি ক্রান্তিকালে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য কানাডার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত এবং মানবাধিকার, টেকসই উন্নয়ন এবং জলবায়ু অভিযোজনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক ইস্যুতে সহযোগিতা বাড়াতে তার সরকারের আগ্রহের কথা জানান।

বৈঠকটি বাংলাদেশের এমন এক ক্রান্তিকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে প্রশাসন ও অর্থনৈতিক খাতে উল্লেখযোগ্য সংস্কার চলছে।

এসব সংস্কারের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন নিশ্চিত করতে কানাডার মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের আরও সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানালেন বাইডেন
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফের মূল নীতি হার বাড়াল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ বাংলাদেশের
যুক্তরাষ্ট্রে বাইডেন-মোদি আলোচনায় বাংলাদেশ ইস্যু
অশ্বিনের ঘূর্ণিতে বড় ব্যবধানে হার বাংলাদেশের

মন্তব্য

জীবনযাপন
Biden welcomed more US Bangladesh engagement
হোয়াইট হাউসের বিবৃতি

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের আরও সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানালেন বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের আরও সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানালেন বাইডেন বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা। ফাইল ছবি
হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট বাইডেন দুই সরকারের মধ্যে আরও সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বাংলাদেশকে তার নতুন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশ ও আমেরিকার মধ্যে আরও সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছে হোয়াইট হাউস।

স্থানীয় সয় মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের (ইউএনজিএ) ফাঁকে দুই নেতার সাক্ষাতের পর হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট বাইডেন দুই সরকারের মধ্যে আরও সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বাংলাদেশকে তার নতুন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অন্তর্বতী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ায় অধ্যাপক ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারত যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ৮ আগস্ট অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন।

আরও পড়ুন:
দিল্লির সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক বজায় রাখাই ঢাকার লক্ষ্য: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ইনিংসের শুরুতেই চাপে বাংলাদেশ
ব্যাংকিং খাত সংস্কারে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক: অর্থ উপদেষ্টা
চেন্নাই টেস্ট: প্রথম ঘণ্টায় তিন শিকার হাসানের
ভারতের বিপক্ষে টস জিতে বোলিংয়ে বাংলাদেশ

মন্তব্য

জীবনযাপন
Biden Younus meeting in New York on Tuesday

নিউ ইয়র্কে বাইডেন-ইউনূস বৈঠক মঙ্গলবার

নিউ ইয়র্কে বাইডেন-ইউনূস বৈঠক মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কোলাজ: ইউএনবি
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে স্থানীয় সময় সোমবার রাতে নিউ ইয়র্কে পোঁছাবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস। সেখানে সাইড লাইনে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, শুধু দুজনের মধ্যেই বৈঠকটি হতে যাচ্ছে।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ গত কয়েক দশকে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেননি।’

আগামী ২৩ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক সফর করবেন বাইডেন।

প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নিউ ইয়র্ক সফর নিয়ে প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরে বলেন, ২৪ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেয়ার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট বাইডেন আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি মোকাবিলা, বৈশ্বিক সমৃদ্ধি এগিয়ে নেয়া এবং মানবাধিকার রক্ষায় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করতে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে স্থানীয় সময় সোমবার রাতে নিউ ইয়র্কে পোঁছাবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস। সেখানে সাইড লাইনে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আবদুল মুহিত এবং ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের সিডিএ সালাহউদ্দিন মাহমুদ স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটায় বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা।

আরও পড়ুন:
রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
ইউনূসকে যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের মেজরিটি হুইপের সমর্থন
সীমান্তে হত্যা বন্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
জাতিসংঘে ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে যা বললেন উপদেষ্টা
জাতিসংঘ অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী ৭ জন

মন্তব্য

p
উপরে