২০১৮ সালের গ্রীষ্মে টানা তিন মাস ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকার সংকল্প চেপে বসে ব্রিটিশ লেখক জোহান হ্যারির মনে। নিতান্ত খেয়ালের বশে হলেও এই অভিজ্ঞতা তাকে নতুন এক পৃথিবীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই অভ্যস্ত জীবনে হঠাৎ করে পরিবর্তন নিয়ে এলে মানুষ বেশ কিছু জটিলতার মুখোমুখি হয়। হ্যারির ক্ষেত্রে এই জটিলতা শুরু হয়ে যায় ইন্টারনেট ছেড়ে দেয়ার আগে- সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকেই।
কারণ ইন্টারনেট ফিচারবিহীন একটি মোবাইল ফোন খুঁজে বের করতেই তাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। অবশেষে বোস্টনের এক দোকানি তাকে এমন একটি মোবাইল ফোন দেন যাতে ইন্টারনেটের গতি খুবই কম। দোকানি তাকে বললেন, ‘এই মোবাইল দিয়ে আপনি বড়জোর ইমেইল পড়তে পারবেন…।’
এ পর্যন্ত বলতেই হ্যারি দোকানিকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ইমেইল তো ইন্টারনেটেরই অংশ। আমি তিন মাসের জন্য একদম অফলাইনে চলে যেতে চাই।’
হ্যারির পরিকল্পনা শুধু যে দোকানির বুঝতে সমস্যা হয়েছে তা নয়, হ্যারির বন্ধুরাও তাকে নিয়ে শুরুতে বিভ্রান্ত হয়েছেন।
‘চুরি যাওয়া মনোযোগ: কেন আপনি মনোযোগ দিতে পারেন না- এবং কীভাবে আমরা আরও গভীর চিন্তা করতে পারি’ শিরোনামে নতুন একটি বইয়ে হ্যারি এসব অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। গত ২৫ জানুয়ারি বইটি প্রকাশিত হয়েছে।
বইয়ে হ্যারি লিখেছেন, ‘শুরুতে আমার পরিকল্পনা অন্যদের কাছে এতটাই উদ্ভট মনে হয়েছিল যে বারবার তাদেরকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে হয়েছে।’
সে যা-ই হোক, কোনো প্রতিবন্ধকতাই হ্যারির পরিকল্পনাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি। কারণ ইন্টারনেটময় জীবন থেকে যেভাবেই হোক কিছুদিনের জন্য তিনি মুক্তি চাইছিলেন।
গবেষণা সংস্থা ডিএসকাউট-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে একজন মানুষ অন্তত ৩ ঘণ্টা ১৫ মিনিট সময় ইন্টারনেটে ব্যয় করেন। আর প্রতিদিন গড়ে আমরা ২ হাজার ৬১৭ বার মোবাইলের টাচস্ক্রিন স্পর্শ করি। এই অবিরাম সংযোগ আমাদের জীবন উন্নত করার বদলে বরং খারাপের দিকেই নিয়ে যাচ্ছে- এমনটাই মত গবেষকদের।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকদের মতে, ইন্টারনেটের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতা আমাদের মনোযোগের ব্যাপ্তিকে অনেকাংশে কমিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে বেশির ভাগ মানুষ সর্বোচ্চ দুই মিনিট ১১ সেকেন্ড টানা মনোযোগ ধরে রাখতে পারছেন।
ইমেইল আর মেসেঞ্জারের আওয়াজ কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নোটিফিকেশন আমাদের মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। যে বিষয় থেকে আমরা মনোযোগ হারাচ্ছি সেখানে ফিরে যেতে আমাদের অন্তত গড়ে ২৩ মিনিট সময় লাগছে।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নের শুরুতেই ম্যাসাচুসেটসের প্রিন্সটাউনে ছোট্ট একটি আবাস ভাড়া নেন ৪২ বছরের হ্যারি। এই জায়গাটি ছিল একেবারেই সঙ্গীবিহীন। ছিল না কোনো চাকরির যন্ত্রণা কিংবা বাচ্চাকাচ্চাও।
তাই হ্যারির এমন বিচ্ছিন্ন জীবন কারও ওপর কোনো প্রভাব ফেলেনি। শেষ পর্যন্ত তিনি একটি মোবাইল ফোনের খোঁজ পান, যাতে কোনো ধরনের ইন্টারনেট সংযোগ ছিল না। এ ধরনের মোবাইল খুব বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য তৈরি হয়, জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে যেন ব্যবহার করা যায়।
এক বন্ধু হ্যারিকে একটি ল্যাপটপ ধার দিয়েছিলেন, যার মধ্যে কোনো ওয়াইফাই সংযোগ ছিল না। ব্যাপারটা এমন যে, কোনো কারণে রাত ৩টার সময়ে ঘুম ভেঙে গেলে তিনি চাইলেও তখন ইন্টারনেটে প্রবেশ করতে পারবেন না।
ইন্টারনেটবিহীন জীবনের প্রথম সপ্তাহটি হ্যারির খুব বিক্ষিপ্ত আর ধোঁয়াশায় কেটেছিল। এ সময় তিনি মাঝে মাঝে স্থানীয় ক্যাফেতে বসে বই পড়েছেন, কখনও অপরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন। আর বেশির ভাগ সময় কেটেছে নিজের চিন্তার ভেতরে ডুব দিয়ে। আরেকটি বিষয় তিনি অনুভব করেছেন তা হলো- নীরবতা! বছরের পর বছর এই নীরবতা তার জীবনে ছিল অনুপস্থিত।
হ্যারির মনে হলো, ইন্টারনেটসহ মোবাইল ফোন আর ল্যাপটপ আনাড়ি বাচ্চাদের মতো, সারাক্ষণ শুধু চিৎকার চেঁচামেচি করে। ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন অবস্থায় মনে হয়, বাচ্চাগুলোকে একজন প্রতিপালকের দায়িত্বে দেয়া হয়েছে। ফলে তাদের চিৎকার আর বমির দৃশ্য চোখে পড়ছে না।
কিছুটা উদ্বেগও অবশ্য কাজ করছিল হ্যারির মধ্যে। মনে হচ্ছিল, না জানি কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল তিনি মিস করছেন কিংবা কোনো গুরুত্বপূর্ণ টুইট। কোনো গুরুত্বপূর্ণ লেখা হয়তো তার পড়ার অপেক্ষায় বসে আছে। এমনও কয়েক দিন গেছে, অবচেতনেই পকেটে থাকা মোবাইলে হাত চলে গেছে।
২০২১ সালে পিউ রিসার্চের এক জরিপ অনুযায়ী, আমেরিকার ৩১ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিরবচ্ছিন্নভাবে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। ২০১৫ সালের জরিপে এই হারটি ছিল ২১ শতাংশ।
মজার ব্যপার হলো, ১৯৮৬ সালে একজন মানুষ টেলিভিশন, রেডিও এবং পড়াশোনার মধ্য দিয়ে এক দিনে গড়ে যে পরিমাণ তথ্যের মুখোমুখি হতেন তা ৪০টি সংবাদপত্রের সমপরিমাণ। তবে ২০০৭ সালের হিসাবে একজন মানুষ গড়ে প্রতিদিন ১৭৪টি পত্রিকার সমান তথ্যের মুখোমুখি হতেন। অর্থাৎ প্রতি আড়াই বছরে দ্বিগুণ পরিমাণ তথ্যের মুখোমুখি হয়েছে মানুষ। চমকপ্রদ এই তথ্যটি ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপক মার্টিন হিলবার্টের।
সেই হিসাবে আজকের দিনের মানুষ গড়ে ৭০০ পত্রিকার সমান তথ্যের মুখোমুখি হচ্ছেন প্রতিদিন।
হিলবার্টের মতে, কোনো জৈবিক মস্তিষ্কের জন্য এক দিনে এ পরিমাণ তথ্যের মুখোমুখি হওয়া একটু বেশিই হয়ে যায়। এর ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানুষ শুধু কোনো বিষয়বস্তুর সারমর্মটুকুতে চোখ বুলায়। তথ্যের আধিক্যের জন্যই টুইট করা শিরোনামের ৭০ শতাংশই অপঠিত থেকে যায়। এমনকি যারা এগুলোকে রিটুইট করেন, তারাও ভেতরের খবরটুকু পড়ে দেখেন না।
বর্তমান ইন্টারনেট যুগে আমরা যেভাবে পড়ি তা অনেকটা বুফে খাওয়ার মতো। প্লেটে প্লেটে নানা সুস্বাদু খাবার, কিন্তু এর কোনোটির স্বাদই আমরা পুরোপুরি নিতে পারি না।
এর ফলে মানুষের বই পড়ার অভ্যাসও ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। ১৯৯২ সালের হিসাবে শুধু আনন্দের জন্য বছরে অন্তত একটি বই পড়তেন আমেরিকায় এমন মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬১ শতাংশ। ২০১৭ সালের হিসেবে এই সংখ্যাটি ৫৩ শতাংশে নেমে এসেছে।
তা ছাড়া ২০০৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে আমেরিকানদের প্রাত্যহিক বই পড়ার সময় ২৮ মিনিট থেকে কমে ১৬ মিনিটে এসে ঠেকেছে।
২০১৮ সালের মধ্যে অবসরে গেম খেলা কিংবা কম্পিউটার ব্যবহারের সময় বেড়ে হয়েছে প্রতিদিন প্রায় ২৮ মিনিট।
হ্যারি লিখেছেন, ‘বই পড়া মানুষের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই অভ্যাস মানসিক চাপ কমানোর পাশাপাশি জীবনকেও দীর্ঘায়িত করতে পারে। প্রতিদিন ৩০ মিনিট বই পড়া মানুষের আয়ুষ্কাল অন্তত দুই বছর বাড়িয়ে দিতে সক্ষম।’ তা ছাড়া এই বিষয়টি কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে মনোযোগী হওয়ার প্রশিক্ষণও দেয় মানুষকে।
হ্যারিকে নরওয়ের গবেষক অ্যান ম্যাঙ্গেন বলেছিলেন, ‘টাচস্ক্রিনে আমরা শুধু দেখি আর সারাংশে মনোযোগ দিই। অনেকটা চেরি ফল কুড়ানোর মতো। মানের চেয়ে পরিমাণকেই অগ্রাধিকার দিই।’
ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতার শুরুর দিকেও এ ধরনের মানসিকতায় আটকে ছিলেন হ্যারি। তিনি পাগলের মতো চার্লস ডিকেন্সের বিষয়ে কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই পড়তে শুরু করেছিলেন।
তবে সেই তড়িঘড়ি অবস্থা থেকে হ্যারি শিগগিরই বেরিয়ে আসেন। প্রতিদিন সকালে তিনি তিনটি পত্রিকা কিনতেন এবং পড়তেন। পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ জানার জন্য তাকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো।
হ্যারির বিচ্ছিন্ন সময়ে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডের একটি পত্রিকা অফিসে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করেন এক বন্দুকধারী। অন্য সময় হলে এই খবরটি সবার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই পেতেন হ্যারি। বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাটিং করে ঘটনার আদ্যোপান্ত জেনে নিতেন। তবে আলোচিত সেই খবরটি পরদিন সকালে পেয়েছিলেন তিনি।
এ বিষয়ে হ্যারি লিখেছেন, ‘আমার যা জানার প্রয়োজন ছিল তা একটি মৃত গাছে (পত্রিকা) মাত্র ১০ মিনিট পড়েই জেনে গেলাম।’
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হ্যারির উপলব্ধি হলো, তার জীবনে ইন্টারনেটের প্রয়োজন নেই বললেই চলে। ছয় বন্ধুর নম্বর তার ফোনে সেভ করা ছিল, যাতে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করা যায়। আর জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তিনি ৯১১ নম্বরে ফোন করতে পারতেন।
এ ছাড়া কোনো বিষয়ে আগ্রহ হলে তিনি স্থানীয় লাইব্রেরিতে গিয়ে অনুসন্ধান করতেন। পরদিনের আবহাওয়ার খবর জানতে চাইলে তিনি শহরতলিতে আড্ডারত মানুষের কাছেই জেনে নিতেন।
ইন্টারনেট-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় হ্যারি সবচেয়ে বেশি যা মিস করেছেন তা হলো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
২০১৮ সালে আগস্টের শেষ সপ্তাহে তিন মাসের ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতা শেষ করে আবারও বাকি পৃথিবীর সঙ্গে যুক্ত হন হ্যারি। তিনি ভেবেছিলেন, এ সময়ের মধ্যে তার ইমেইল হয়তো উপচে পড়ছে কিংবা বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতরা তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। যদিও প্রত্যেক ইমেইলের জন্য স্বয়ংক্রিয় একটি উত্তর তিনি সেট করে রেখেছিলেন। যেখানে বলা হয়েছিল, পুরো গ্রীষ্মকাল তিনি যোগাযোগের বাইরে থাকবেন।
যা ভেবেছিলেন, তার কিছুই হয়নি শেষ পর্যন্ত। বলা যায়, ওই সময়টিতে কেউই তার খোঁজ নেননি। ইমেইল আর ইনবক্সে তিন মাসের যত বার্তা ছিল, তা দুয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পড়ে শেষ করে ফেলেন তিনি।
হ্যারি লিখেছেন, ‘পৃথিবী আমার অনুপস্থিতি খুব সহজেই মেনে নিয়েছে!’
ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতার অভিজ্ঞতা নিয়ে আজকের দিনে হ্যারি পুরোপুরি বদলে গেছেন, বিষয়টি এমন নয়। তবে এটা ঠিক, তিনি নিজের মনোযোগকে ইন্টারনেট বিনোদনে ভাসিয়ে দিতে এখন দ্বিতীয়বার ভাবছেন।
আরও পড়ুন:গবেষকরা এআইনিয়ন্ত্রিত এমন ক্যালকুলেটর তৈরি করেছেন যা বলে দিতে পারে আপনি আপনার মৃত্যুর ঠিক কতটা কাছে। ল্যানসেট ডিজিটাল হেলথ-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় এমনটা জানানো হয়েছে।
এআই-চালিত ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (AI-ECGs) একজন ব্যক্তির ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য সমস্যা এবং এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকির পূর্বাভাস দিতে পারে। অবশ্য দৈনন্দিন চিকিৎসা পরিষেবায় সেগুলো এটি ব্যবহার করা হয়নি।
বর্তমানে এআই ক্যালকুলেটরের এই ভবিষ্যদ্বাণী পৃথক রোগীদের জন্য স্পষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করে না। সেসঙ্গে জীববিজ্ঞানের সঙ্গে এর কার্যকারিতা সারিবদ্ধ নয়। এই সমস্যাগুলো মোকাবেলায় ল্যানসেট গবেষকরা AI-ECG রিস্ক এস্টিমেটর (AIRE) নামে একটি নতুন টুল তৈরি করেছেন।
মৃত্যুর পূর্বাভাস দিয়ে AIRE ভবিষ্যতে হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে হৃৎপিণ্ড পাম্প করা বন্ধ করে দেয়, যার ফলে দশটির মধ্যে প্রায় আটটি ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সমস্যা এবং প্রাথমিকভাবে রোগীর মৃত্যু ঘটে।
গবেষকরা বলছেন, ‘আমরা AI-ECG রিস্ক এস্টিমেটর (AIRE) প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে পূর্ববর্তী AI-ECG পদ্ধতির সীমাবদ্ধতাগুলো সমাধানের চেষ্টা করেছি।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সংস্থা ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের অধীনে দুটি হাসপাতাল আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকে এই প্রযুক্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। আর বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন যে এটি পাঁচ বছরের মধ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা জুড়ে ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
হাসপাতালে আসা রোগীরা এআই ‘ডেথ ক্যালকুলেটর’ থেকে আনুমানিক আয়ুষ্কালের পূর্বাভাস পেতে পারে। এই টুলটি একটি একক ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ECG) পরীক্ষা ব্যবহার করে, যা কয়েক মিনিটের মধ্যে হার্টের কার্যকলাপ রেকর্ড করে অজানা স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো শনাক্ত করতে পারে। AI-ECG বা AIRE নামে পরিচিত এই প্রোগ্রামটি ৭৮ শতাংশ পর্যন্ত নির্ভুলতার সঙ্গে ECG-এর পর ১০ বছরের মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকি সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারে বলে গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে।
ল্যানসেট গবেষকরা এক লাখ ৮৯ হাজার ৫৩৯ রোগীর ১ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ইসিজি পরীক্ষার ফলাফলের ডেটাসেট ব্যবহার করে প্রযুক্তিটির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তারা দেখেছেন, এটি তিন-চতুর্থাংশ (৭৬ শতাংশ) ক্ষেত্রে এবং ভবিষ্যতের এথেরোস্ক্লেরোটিক কার্ডিওভাসকুলার রোগের মতো গুরুতর হৃদযন্ত্রের সমস্যা (যেখানে ধমনি সংকীর্ণ, রক্তপ্রবাহকে কঠিন করে তোলে) দশটির মধ্যে সাতটি ক্ষেত্রে শনাক্ত করেছে।
শুধু রোগ নির্ণয় নয়, ‘এআই ডেথ ক্যালকুলেটর’ স্বাস্থ্য ঝুঁকির একটি পরিসরও জানাবে যা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি AIRE শনাক্ত করে যে আপনি একটি নির্দিষ্ট হৃদযন্ত্রের ছন্দের সমস্যার উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন, তাহলে আপনি এটিকে প্রতিরোধ করতে আরও বেশি সক্রিয় হবেন।
রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনের থাকা বা না-থাকার বিষয় নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বিশ্বস্ত সূত্র নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানায়।
সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদের বৃহস্পতিবারের বৈঠকে অন্যান্য ইস্যুর পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির বিষয়টিও আলোচনায় আসে। এ সময় সিদ্ধান্ত হয় রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করবেন কিনা বা তিনি এ পদে থাকবেন কিনা সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মতামত নেয়া হবে এবং সে অনুযায়ী পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনের থাকা না-থাকা নিয়ে দেশজুড়ে নানা আলোচনার মধ্যে গতকাল বুধবার দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির শীর্ষপর্যায়ের তিন নেতা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে তাদের অবস্থান জানিয়েছেন। দলটি এ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না। বিএনপি মনে করে, রাষ্ট্রপতি পদে শূন্যতা হলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে।
দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে রাষ্ট্রপতির ‘ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নেই’ মর্মে বক্তব্য প্রকাশ হওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবি তুলে গত মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করে। ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনের সামনেও বিক্ষোভ করা হয়।
এর আগে গত সোমবার রাষ্ট্রপতির মন্তব্যের ব্যাপারে সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি, এটা হচ্ছে মিথ্যাচার এবং এটা হচ্ছে ওনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল।
‘কারণ, তিনি নিজেই ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন।’
আরও পড়ুন:জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) মুনীরা সুলতানা।
এ নিয়োগ দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় আসে।
জাদুঘরটি বাংলাদেশের একমাত্র বিজ্ঞান জাদুঘর এবং জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
প্রোটিন নিয়ে গবেষণা করে ২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন রসায়নবিদ।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে বুধবার জানানো হয়, এ বছর তিন গবেষকের মধ্যে একজনকে পুরস্কারের অর্ধেক এবং বাকি দুজনকে অর্ধেক দেয়া হয়েছে।
সাইটে উল্লেখ করা হয়, কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন নিয়ে গবেষণার জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে ডেভিড বেকারকে। অন্যদিকে প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাসের জন্য ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন এম. জাম্পারকে এ পুরস্কারের অর্ধেক দেয়া হয়।নো হ বু এ
তিন গবেষকের মধ্যে হ্যাসাবিস ও জাম্পার জ্ঞাত প্রায় সব প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাস দিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) সফলভাবে কাজে লাগান। অন্যদিকে ডেভিড বেকার প্রোটিনের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানার পাশাপাশি সম্পূর্ণ নতুন কিছু প্রোটিন উদ্ভাবন করেন।
পদার্থবিজ্ঞানে এবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির গবেষক জন জে. হপফিল্ড ও কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটির গবেষক জেফরি ই. হিন্টন।
সুইডেনের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট) পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংকে সক্ষম করা মৌলিক আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে জন জে. হপফিল্ড ও জেফরি ই. হিন্টনকে।
এতে উল্লেখ করা হয়, হপফিল্ড একটি কাঠামো নির্মাণ করেন, যেটি তথ্য মজুত ও পুনর্নির্মাণ করতে পারে। অন্যদিকে হিন্টন এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা ডেটাতে স্বতন্ত্রভাবে প্রোপার্টি আবিষ্কার করতে পারে। বর্তমানে ব্যবহৃত বৃহদাকার স্নায়বিক নেটওয়ার্কের জন্য এ উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ।
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে ১৯০১ সাল থেকে। আজকের আগে ১১৭ জন এ পুরস্কার পান।
এ শাস্ত্রে সবচেয়ে কম ২৫ বছর বয়সে নোবেল পান লরেন্স ব্র্যাগ, যিনি ১৯১৫ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন। সবচেয়ে বেশি ৯৬ বছর বয়সে নোবেল পুরস্কার পান আর্থার অ্যাশকিন। তিনি ২০১৮ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে মঙ্গলবার।
সুইডেনের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট) পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করবে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
পুরস্কার ঘোষণার সব তথ্য নোবেলপ্রাইজ নামের ওয়েবসাইটে গিয়ে সরাসরি দেখা যাবে। এ বছরের নোবেল পুরস্কারের সমস্ত ঘোষণা nobelprize.org ও নোবেল পুরস্কার কমিটির ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
প্রথা অনুযায়ী অক্টোবরের প্রথম সোমবার হিসেবে এবার ৭ অক্টোবর চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।
যৌথভাবে ২০২৪ সালের চিকিৎসাশাস্ত্রের নোবেল পুরস্কার জিতে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকান।
ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেম্বলি মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার জন্য তাদের এ পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নোবেল কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেম্বলি ‘মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার জন্য’ ভিক্টর অ্যামব্রোস এবং গ্যারি রাভকানকে সোমবার চিকিৎসা বা ওষুধশাস্ত্রে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার-২০২৪ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
১৯০১ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান জার্মানির নাগরিক ভিলহেল্ম কনরাড রন্টগেন। এক্সরে বা রঞ্জন রশ্মি আবিষ্কার এবং এবং এ ধরনের রশ্মির যথোপযুক্ত ব্যবহারিক প্রয়োগে সফলতা অর্জনের জন্য তিনি এ পুরস্কার পান।
আরও পড়ুন:চলতি বছর চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শারীরতত্ত্বে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন। দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার ও জিন নিয়ন্ত্রণে এর ট্রান্সক্রিপশন-পরবর্তী ভূমিকাবিষয়ক গবেষণার জন্য তাদেরকে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এই আবিষ্কার কোনো প্রাণীর দেহ গঠন ও কীভাবে কাজ করে তা বুঝতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশ সময় সোমবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে সুইডেনের স্টকহোমে এ বছরের চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শারীরতত্ত্বে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস।
ভিক্টর অ্যাবব্রোস ১৯৫৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
এছাড়া ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত একই প্রতিষ্ঠানে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুয়েটসের প্রধান গবেষক হন। বর্তমানে তিনি ম্যাসাচুসেটস মেডিক্যাল স্কুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাচারাল সায়েন্সের প্রফেসর হিসেবে কাজ করছেন।
নোবেল জয়ী গ্যারি রাভকুন ১৯৫২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। তিনি ১৯৮৫ সালে ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল এবং হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের প্রধান গবেষক হন। বর্তমানে তিনি এখানেই জেনেটিকসের প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চিকিৎসাশাস্ত্রে গত বছর নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন ক্যাথলিন কারিকো ও ড্রিউ ওয়েইসম্যান। এমআরএন করোনা টিকা আবিষ্কারের জন্য তাদেরকে পুরস্কার দেয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ‘নোবেল’, যা ১৯০১ সাল থেকে দেয়া হয়ে আসছে। এ পুরস্কারটির নামকরণ করা হয়েছে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামানুসারে।
উনবিংশ শতকে এই বিজ্ঞানী শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিনামাইট আবিষ্কার করে বিপুল অর্থের মালিক হন। তিনি উইল করে যান যে তার যাবতীয় অর্থ থেকে যেন প্রতি বছর পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্য এই পাঁচটি খাতে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের পুরস্কার দেয়া হয়। ১৯৬৯ সাল থেকে এই পাঁচ বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হয় অর্থনীতিও।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য