কথায় কথায় হাসিতে ভেঙে পড়া নুসরাত জাবীন বিভাকে নিয়ে অফিসের সহকর্মীদের রসিকতার কোনো শেষ নেই। কাজের মাঝে বিভার এই হাসির দমক মাতিয়ে রাখে সবাইকে।
বিভাও চান আজীবন এভাবে হেসে যেতে, তবে এত হাসি নিয়ে খানিকটা দুঃখবোধও আছে এই তরুণীর। একবার পরিচিত এক নারী তার কষ্টের কথা বলছিলেন, সেই কথা কানে পৌঁছানোর আগেই বিভার মুখে ছড়িয়ে পড়ে স্বভাবসুলভ হাসি। কয়েক বছর আগের সেই ঘটনা মনে করে এখনও বিব্রত হন বিভা।
বিজ্ঞান বলছে, মানুষ সব সময় আনন্দের কারণেই হাসে না। তীব্র শোক বা কষ্টের সময়েও অট্টহাস্যে ফেটে পড়েন অনেকে। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, বিভ্রান্তি, এমনকি বিব্রতবোধের অনুভূতি থেকেও হাসির ছাপ পড়তে পারে মুখে।
মৃত মানুষের দাফনের সময় শোকাবহ পরিবেশেও কেউ হেসে ফেলেছেন, এমন নজির অসংখ্য। তবে এই হাসি মোটেই আনন্দের নয়, বিজ্ঞানীরা বলছেন, দুঃখের হাসিও মানুষের একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া এবং এ ধরনের ঘটনা হরহামেশা ঘটে আশপাশে।
হাসিকে সাধারণভাবে একটি মানসিক প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ হিসেবে ধরে নেয়া হয়। মানুষ জন্মের তিন মাস বয়সেই হাসতে শেখে। এমনকি কোনো কোনো গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, গর্ভের শিশুর মুখমণ্ডলেও হাসির রেশ ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
নবজাতকের মুখে কথা ফুটতে শুরুর আগেই হাসির রেখা দেখা যায় কেন- তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন মনোবিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, হাসি সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে কথার চেয়েও বড় ভূমিকা রাখে। এটি এক জনের সঙ্গে আরেক জনের সম্পর্কের প্রাথমিক সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে। গোমড়ামুখো মানুষের চেয়ে তাই হাস্যোজ্জ্বল ব্যক্তির গ্রহণযোগ্যতা সমাজে অনেক বেশি।
তবে হাসি অনেক সময়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিও তৈরি করতে পারে। শোকাবহ বা কষ্টের মুহূর্তেও কেন অনেকে হাসেন তা নিয়ে ১৯৬০ এর দশকে একটি গবেষণা করেছিলেন মনোবিজ্ঞানী স্ট্যানলি মিলগ্রাম। মিলগ্রাম অর্থের বিনিময়ে কিছু স্বেচ্ছাসেবক বেছে নিয়ে তাদেরকে ‘শিক্ষক’ মনোনীত করেছিলেন। এই শিক্ষকদের দায়িত্ব ছিল কিছু ‘শিক্ষার্থীকে’ প্রশ্ন করা। তবে শিক্ষার্থীরা আসলে ছিলেন একেকজন অভিনেতা, যা শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত স্বেচ্ছাসেবকদের অজানা ছিল।
গবেষণার সময় বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীরা প্রশ্নের ভুল উত্তর দিলে তাদের ১৫ থেকে ৪৫০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক শক দেয়া হবে। তবে বাস্তবে বিদ্যুতের তারে কোনো বিদ্যুৎপ্রবাহ ছিল না। স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষকেরা প্রশ্ন শুরুর পর একের পর এক ভুল উত্তর দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা (অভিনেতা)। এসব ভুলের জন্য তাদের দেহে শিক্ষকেরা বিদ্যুতের তার স্পর্শ করলে তারস্বরে অভিনেতারা চিৎকার শুরু করেন। এটি যে অভিনয় সেটি মোটেই বুঝতে পারেননি স্বেচ্ছাসেবকেরা।
এই গবেষণায় দেখা গেছে, ৪৫ ভাগ স্বেচ্ছাসেবক কিছুক্ষণ পরেই শিক্ষার্থীদের ‘বৈদ্যুতিক শক’ দিতে অস্বীকৃতি জানান, তবে ৬৫ ভাগ শকের মাত্রা বাড়াতে আগ্রহী ছিলেন। শিক্ষার্থীরা যখন আর্ত চিৎকারের অভিনয় করছিলেন, তখন অনেক স্বেচ্ছাসেবক ভয়ঙ্কর মানসিক চাপে ভুগলেও তাদের মুখ জুড়ে ছিল বিব্রতকর হাসি।
মজার বিষয় হল, কথিত শিক্ষার্থীদেরকে ‘শক’ দেয়ার মাত্রা যত বাড়ছিল শিক্ষকদের মানসিক চাপজনিত হাসিও তত বাড়ছিল। এই গবেষণার ভিত্তিতে স্ট্যানলি মিলগ্রাম সিদ্ধান্তে পৌঁছান, অপ্রতিরোধ্য আবেগ মানুষকে একটি বিশেষ শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়ার দিকে পরিচালিত করে, আর সেই প্রতিক্রিয়া হলো- ‘হাসি’।
হাসি যতটা সহজ, ততটাই জটিল
হাসতে দেখলেই মানুষ আনন্দে আছেন, এমন ভাবনা মাথা থেকে একদম ঝেড়ে ফেলাই ভালো। একই ভাবে কান্নার ক্ষেত্রেও দুঃখের ধারণাও সব সময় ঠিক নয়। এ কারণেই প্রিয় মানুষকে কাছে পেয়ে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলার উদাহরণ অসংখ্য, আবার প্রিয়জনকে হারিয়ে হাহাকারের ভুলে অট্টহাসির ঘটনাও বিরল নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক কষ্টের মাঝে হাসির কারণ নিয়ে গবেষণা করেছেন। সাইকোলজিক্যাল সায়েন্স জার্নালে ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয় তাদের নিবন্ধ।
এই গবেষক দলটির দাবি, মানবীয় আবেগের সংঘাতপূর্ণ অবস্থা ‘নাটকীয় বাহ্যিক প্রতিক্রিয়া’র জন্ম দেয় অথবা শরীরে যে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়ামূলক সংকেতকে (হাসি-কান্না) উসকে দিতে পারে। যেমন লটারিতে লাখ টাকা জয়ের আনন্দে যেখানে উচ্ছ্বসিত হওয়ার কথা সেখানে আপনি কখনও কখনও চোখ পানিতে ভাসিয়ে ফেলতে পারেন, আবার প্রেমিকার চলে যাওয়ার কষ্টের মাঝেও আপনি হো হো করে হেসে উঠতে পারেন।
ইয়েল ইউনিভার্সিটির গবেষক দল বলছেন, দৃশ্যত এই ‘অস্বাভাবিক’ প্রতিক্রিয়ার মূল কারণ হলো, অতিশক্তিশালী কিছু মানসিক উদ্দীপনা, যার প্রকাশ ঘটে অনিয়ন্ত্রিত ভঙ্গীতে।
স্নায়ুবিজ্ঞানী ভি.এস. রামচন্দ্রন তার ‘আ ব্রিফ ট্যুর অফ হিউম্যান কনসাসনেস’ এ দাবি করেছেন, সাধারণ হাসি আর মানসিক চাপ-যন্ত্রণার মধ্যে হাসির মধ্যে শারীরবৃত্তীয় কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তার মতে, কষ্টের মধ্যে আমরা যে হাসি দিয়ে থাকি সেটি বেরিয়ে আসে গলার ভেতর থেকে, আর সাধারণ হাসির দমক আসে পেট থেকে। যে কারণে আনন্দের হাসির তোড়ে পেটে ব্যথা অনুভব করেন অনেকে।
রামচন্দ্রন বলছেন, কষ্টের মধ্যে হাসিরও বেশ কিছু উপযোগিতা আছে। চাপের মধ্যে থেকেও এই এ ধরনের মৃদু বা অট্টহাসিতে আমরা অপরকে আশ্বস্ত হতে সংকেত দেই। আমরা অন্যকে জানাতে চাই- ‘ঘাবড়াবেন না, আমি ভালো আছি। নিজেকে সামলে নেয়ার চেষ্টা করছি।’
হাসি কি ভালো ওষুধ?
কঠিন পরিস্থিতিতে হাসিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবে মনে করার সামাজিক প্রবণতা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হাসি আটকানোর চেষ্টাও যথেষ্ট বিব্রতকর। এ অবস্থা দূর করতে মেডিটেশনের মাধ্যমে মন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা যেতে পারে। বিশেষ পরিস্থিতিতে গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মনকে চাপমুক্ত রাখা সম্ভব। এর ফলে অনিয়ন্ত্রিত হাসির বিড়ম্বনাও এড়ানো যায়।
তবে যতই লোকনিন্দা হোক, কঠিন চাপের মুহূর্তে হেসে ফেলা সব সময় কিন্তু খারাপ নয়। বরং কখনও কখনও এটি আমাদের ভালো থাকার জন্যই প্রয়োজন।
কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ আলবার্টার কাইনসিওলজি, স্পোর্ট অ্যান্ড রিক্রিয়েশন অনুষদের অধ্যাপক বিলি স্ট্রিয়ান বলছেন, ‘আমার মনে হয় এমন অনেক কঠিন পরিস্থিতি রয়েছে যেখানে হালকা হওয়ার জন্য বেশি বেশি হাসা প্রয়োজন। এসব পরিস্থিতিতে হাসি এক ধরনের ওষুধ হিসেবে কাজ করতে পারে।
‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, হাসি প্রাকৃতিক চাপমুক্তকরণ উপায় হিসেবে কাজ করে। হাসির মনোজাগতিক সুবিধার মধ্যে রয়েছে এটি উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং চাপ কমায়।’
আমেরিকান জার্নাল অফ লাইফস্টাইল মেডিসিন জার্নালে ২০১৬ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিবন্ধে দাবি করা হয়, হাসি বেশ কিছু শারীরবৃত্তীয় সুবিধাও দিয়ে থাকে। চিকিত্সকরা হাসিকে কীভাবে একটি প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন, সে বিষয়ে পরামর্শও দেয়া হয়েছে ওই নিবন্ধে। গবেষণায় বলা হয়, হাসির সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম, পেশীর প্রশান্তি এবং বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি।
হাসি আমাদের শরীরে অক্সিজেন প্রবাহ বাড়ায় এবং এর ফলে প্রাকৃতিকভাবে মস্তিষ্কে এন্ডোরফিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। এই প্রক্রিয়াটি হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের মতো অঙ্গগুলোকে উদ্দীপ্ত করে। মানসিক চাপের সঙ্গে দেহের দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। হাসি উদ্বেগ কমিয়ে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করে। গবেষণায় দেখা গেছে, অট্টহাসি রক্তের মধ্যে অ্যান্টিবডি এবং টি-কোষের সংখ্যা বাড়াতেও সহায়তা করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারির সময়ে বিশ্বব্যাপী বেড়েছে বিষণ্নতা, এ অবস্থা কাটাতে বে-হিসাবী হাসির উপযোগিতাও বেড়েছে অনেক। বিলি স্ট্রিয়ান বলছেন, ‘বিষণ্ন সময়ে আমরা যত বেশি জীবনের হালকা দিক খুঁজে পেতে পারি এবং হাসির সুযোগ তৈরি করতে পারি, তত আমরা ভালো থাকব। আপনি যদি হাসির সমস্ত সুবিধাগুলো একটি ট্যাবলেটে পুরে ফেলতে পারতেন, তবে নিঃসন্দেহে সেটি বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ওষুধের তালিকায় সবার ওপরে থাকত।’
ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের নেতৃত্বাধীন মেটার প্ল্যাটফর্মগুলো স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউব এবং অ্যামাজন ব্যবহারকারীদের তথ্য গোপনে নজরদারি করছে বলে অভিযোগ করে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ফেডারেল আদালত।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চের বরাত দিয়ে বুধবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ফেসবুক ২০১৬ সালে ‘ঘোস্টবাস্টারস’ নামে একটি গোপন প্রজেক্ট চালু করেছিল যাতে স্ন্যাপচ্যাট ও এর সার্ভার ব্যবহারকারীদের মধ্যে নেটওয়ার্ক ট্রাফিক এনক্রিপ্ট এবং ডিক্রিপ্ট করা যায়।
স্ন্যাপচ্যাটের ভূতের (ঘোস্ট) মতো লোগোর সঙ্গে মিল রেখে ফেসবুক এটির নাম দিয়েছে ‘প্রজেক্ট ঘোস্টবাস্টারস’।
আদালতের নথি অনুসারে, ঘোস্টবাস্টারস প্রজেক্টটি স্ন্যাপচ্যাটের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন ও ব্যবহারকারীর আচরণ বোঝার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
নথিতে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা করা সে সময়ের অভ্যন্তরীণ ফেসবুক ইমেইলগুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ২০১৬ সালের জুনে মার্ক এমন একটি ইমেইলে বলেন, স্ন্যাপচ্যাট তাদের সিস্টেম এনক্রিপট (যে পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্য গোপন কোডে রূপান্তরিত হয় যা তথ্যের প্রকৃত অর্থ লুকিয়ে রাখে) করার কারণে অ্যাপটির অভ্যন্তরীণ কোনো তথ্য ফেসবুকের কাছে নেই।
তাই তাদের সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে একটি নতুন উপায় বের করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন মার্ক। এর জন্য একটি কাস্টম সফটওয়্যার তৈরির কথা জানান তিনি।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই পরবর্তীতে ফেসবুকের প্রকৌশলীরা ঘোস্টবাস্টারস তৈরি করেন। পরে অ্যামাজন এবং ইউটিউবকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রকল্পটি প্রসারিত করা হয়ে।
ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতের তথ্য অনুসারে, ফেসবুকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভদের একটি দল এবং প্রায় ৪১ জন আইনজীবী প্রজেক্ট ঘোস্টবাস্টারে কাজ করেছেন, তবে ফেসবুকের কিছু কর্মী এ প্রকল্পের বিপক্ষে ছিলেন। তারা এটি নিয়ে তাদের উদ্বেগও প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন:শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স তাদের নতুন স্মার্টফোন লাইনআপে যুক্ত করেছে যুগান্তকারী নতুন ফিচার ‘ম্যাগচার্জ’।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ার এফ-ওয়ান ইন্টারন্যাশনাল সার্কিটে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক আয়োজনে নতুন নোট ৪০ সিরিজ উদ্বোধন করে করে ব্র্যান্ডটি। সেই আয়োজনেই অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ম্যাগনেটিক চার্জিং ফিচারের যাত্রা শুরুর কথা জানায় ইনফিনিক্স।
ম্যাগচার্জের মতো চার্জিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন বাজারে এই প্রথম। এ প্রযুক্তি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলে আশা করছে ইনফিনিক্স।
ম্যাগনেটিক চার্জিংয়ের সুবিধাজনক ব্যবহার নিশ্চিত করতে নোট ৪০ সিরিজের সঙ্গে আছে ইনফিনিক্সের ম্যাগকিট। এ কিটে ফোনের ব্যাককাভার হিসেবে দেয়া হয়েছে ম্যাগকেস। এর সঙ্গে আরও আছে ম্যাগনেটিক চার্জিং প্যাড ম্যাগপ্যাড এবং ম্যাগনেটিক পাওয়ার ব্যাংক ম্যাগপাওয়ার।
ইনফিনিক্সের নতুন নোট ৪০ সিরিজের নোট ৪০, নোট ৪০ প্রো, নোট ৪০ প্রো ফাইভজি এবং অত্যাধুনিক নোট ৪০ প্রো+ ফাইভজি স্মার্টফোনগুলোতে পাওয়া যাবে ম্যাগচার্জ ফিচারটি।
এবারের সিরিজটিতে দেয়া হয়েছে ইনফিনিক্সের অল-রাউন্ড ফাস্টচার্জ ২.০ প্রযুক্তি, ১০০ ওয়াট পর্যন্ত মাল্টি-স্পিড ফাস্টচার্জ এবং ২০ ওয়াটের ওয়্যারলেস ম্যাগচার্জ। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের চার্জিং মোড ব্যবহার করতে একটি কাস্টম চিপ দেয়া হয়েছে এ সিরিজের ফোনগুলোতে।
উন্নত ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতার জন্য নোট ৪০ সিরিজে আছে ১২০ হার্টজের প্রাণবন্ত থ্রিডি-কার্ভড অ্যামোলেড ডিসপ্লে। প্রধান ক্যামেরা হিসেবে সিরিজটিতে আছে ওআইএস সাপোর্টসহ শক্তিশালী ১০৮ মেগাপিক্সেলের সুপার-জুম ক্যামেরা সিস্টেম। এ ছাড়াও ফোনের পেছনের অংশ থেকে বিশেষ ধরনের লাইটিংয়ের জন্য এতে যুক্ত করা হয়েছে অ্যাকটিভ হ্যালো লাইটিংয়ের মতো এআই প্রযুক্তি।
ইনফিনিক্সের নতুন এ স্মার্টফোন সিরিজ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রোডাক্ট ডিরেক্টর উইকি নিইয়ে বলেন, ‘ইনফিনিক্স নোট ৪০ সিরিজ বাজারে আনার মাধ্যমে চার্জিং প্রযুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। চার্জিংয়ের অভিজ্ঞতাকেই বদলে দেবে এই সিরিজ। ‘এ ছাড়াও আমাদের নিজস্ব চিপ চিতা এক্স১-এর মাধ্যমে নতুন যুগে প্রবেশ করেছে অলরাউন্ড ফাস্টচার্জ। এখন এতে আছে মাল্টি-স্পিড চার্জিং এবং এক্সট্রিম টেম্পারেচার চার্জিংয়ের মতো ফিচার।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্ভাবনী ম্যাগচার্জ অ্যাক্সেসরি কিট ফোন ব্যবহারকারীদের দেবে নিরবচ্ছিন্ন চার্জিং ইকোসিস্টেম। এসব অগ্রগতির ফলে ব্যবহারকারীরা সারা দিন যেকোনো পরিস্থিতি ও আবহাওয়ায় পাওয়ারড-আপ থাকতে পারবেন।’
গত বছর অল-রাউন্ড ফাস্টচার্জ প্রযুক্তিসহ নোট ৩০ সিরিজ বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে আসে ইনফিনিক্স। সিরিজটিতে আছে ৬৮ ওয়াটের ওয়্যারড চার্জিং এবং ১৫ ওয়াটের ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি। এ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মাদার বোর্ডে সরাসরি চার্জ নেয়ার জন্য এতে আছে বাইপাস চার্জিং এবং আইফোন সেভার হিসেবে পরিচিত ওয়্যারলেস রিভার্স চার্জিং প্রযুক্তি।
চার্জিং, লুক ও পারফরম্যান্সে অভূতপূর্ব আপডেট নিয়ে এখন বাংলাদেশের বাজারে আসার অপেক্ষায় আছে নোট ৪০ সিরিজ। নতুন এ নোট সিরিজের জন্য শুরু হয়ে গেছে প্রি-বুকিংও।
আরও পড়ুন:প্রযুক্তি নির্ভর পৃথিবী পাল্টাচ্ছে প্রতিদিন। বর্তমান সময়ে যেকোনো কাজ, শিক্ষা কিংবা বিনোদনের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে ল্যাপটপের ব্যবহার। আধুনিক জীবনের সব রকমের প্রয়োজন মেটাতে ক্রমাগত আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে এসব ডিভাইস।
ফলে যত বেশি কাজ, তাপও উৎপন্ন হচ্ছে সেই হারে। এই তাপ কমাতে সাধারণত পোর্টেবল কুলিং ফ্যান ব্যবহার করা হয়। এভাবে বাহ্যিক তাপ কমানো গেলেও ল্যাপটপের ভেতরে আটকে পড়া তাপ নিয়ে চিন্তা থেকেই যায়।
তবে ল্যাপটপেই যদি একটি শক্তিশালী কুলিং সিস্টেম থাকে, তাহলে বাহ্যিক কুলিং ফ্যানের আর প্রয়োজন হয় না। বিষয়টি মাথায় রেখে গত বছর ইনবুক সিরিজের এক্স২ ল্যাপটপ বাজারে আনে ইনফিনিক্স। এই ল্যাপটপের ভেতরে আছে আইস স্টর্ম ১.০ নামক কুলিং প্রযুক্তি। এটি ল্যাপটপে একটি আদর্শ তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্যে করে। আইস স্টর্ম কুলিং সিস্টেম তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে মিলিটারি-গ্রেডের বায়ু চলাচল ব্যবস্থা। গেমিংসহ অন্যান্য কাজ কিংবা বিনোদনের সময় যা নিঃশব্দে পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে।
ইনফিনিক্সের এই প্রযুক্তিটি ল্যাপটপের কুলিং সিস্টেমের গুরুত্ব তুলে ধরে। ল্যাপটপ কিংবা এর ব্যবহারকারী, উভয়ক্ষেত্রেই এর প্রভাব রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক, কীভাবে কার্যকর কুলিং সিস্টেম ব্যবহারকারীদের কাজে আসে এবং এর মাধ্যমে কী কী সমস্যার সমাধান হয়?
পারফরম্যান্স
ল্যাপটপ অতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে প্রথম সমস্যা হয় এর পারফরম্যান্সে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে ল্যাপটপের কাজের মান ও গতি কমে যায় এবং ল্যাগ সৃষ্টি হয়। একে থার্মাল থ্রটলিং বলে। কার্যকর কুলিং সিস্টেম দ্রুত এই তাপমাত্রা কমিয়ে এনে নিরবচ্ছিন্নভাবে উন্নত পারফরম্যান্সের লেভেল বজায় রাখতে পারে। ফলে মাল্টিটাস্কিং করা সহজ হয়, সফটওয়্যারগুলো দ্রুত কাজ করে এবং ব্যবহারকারীদের সামগ্রিক অভিজ্ঞতাও ভালো হয়।
স্থায়িত্ব ও জীবনকাল
ল্যাপটপের সিপিউ ও জিপিউ’র মতো অভ্যন্তরীণ উপাদানগুলো বেশ তাপ সংবেদনশীল। সময়ের সঙ্গে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে এসব উপাদানের ক্ষতি হয়। এতে ডিভাইসের নির্ভরযোগ্যতা কমে যায় এবং জীবনকালও সংক্ষিপ্ত হয়ে আসে। এক্ষেত্রে একটি ভালো কুলিং সিস্টেম দক্ষতার সঙ্গে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে অকালে হার্ডওয়্যার নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এমন সক্রিয় ব্যবস্থা ল্যাপটপের জীবনকাল বাড়িয়ে তোলার পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের আর্থিক লোকসানও কমিয়ে আনে।
পরিবেশবান্ধব
তাপমাত্রা বেশি হলে ফ্যানকে আরও বেশি কাজ করতে হয়, ফলে আরও বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়। ল্যাপটপে সার্বক্ষণিক ফ্যানের ব্যবহার কমিয়ে কার্যকরভাবে তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে উন্নত কুলিং সিস্টেম। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়, বিদ্যুৎ বিল কমে আসে এবং পরিবেশের সুরক্ষা হয়।
স্বস্তি এবং স্বাস্থ্য
ডিভাইসের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ল্যাপটপ ব্যবহার করা খুবই অস্বস্তিকর। বিশেষভাবে, যখন কোলের উপর রেখে ব্যবহার করতে হয় তা অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে তোলে। দীর্ঘ সময় এভাবে ল্যাপটপ ব্যবহার করলে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ত্বক পুড়ে যাওয়াসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও, ফ্যান অতিরিক্ত শব্দ করলে তা ব্যবহারকারীর মনোযোগেও বিঘ্ন ঘটায়। ল্যাপটপ ঠান্ডা রেখে নিঃশব্দে কার্যক্রম বজায় রাখার মাধ্যমে এসব ঝুঁকি কমিয়ে আনে আইস স্টর্ম ১.০-এর মতো অত্যাধুনিক কুলিং সিস্টেমগুলো।
তাই ল্যাপটপের কুলিং সিস্টেম শুধু ডিভাইসের পারফরম্যান্স ও জীবনকালের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং ব্যবহারকারীর স্বস্তি, সুস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্যও এটি জরুরি।
ইনফিনিক্সের ইনবুক সিরিজের এক্স২ এবং ওয়াই২ প্লাস ল্যাপটপ দেশজুড়ে রায়ানস, স্টারটেক ও দারাজের মতো অনুমোদিত রিটেইলারদের কাছে পাওয়া যাচ্ছে। ১৪ থেকে ২০ মার্চ রায়ানস-এর ব্র্যান্ড উইক চলাকালীন ইনফিনিক্স ল্যাপটপ কিনলেই ক্রেতারা পাবেন একটি পাওয়ার ব্যাংক, একটি মাউস প্যাড এবং ১০০০ টাকার শপিং ভাউচার।
আরও পড়ুন:হঠাৎ করেই যেন রাতের অন্ধকার নেমে এসেছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারীদের জীবনে। আচমকা বিভ্রাটে পড়ে ভীত হয়ে পড়েন অনেকে।
তবে শেষ পর্যন্ত জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা নন, বরং ক্ষতির মুখে পড়েছিল কর্তৃপক্ষ। আর এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সময়ও নিতে হয়েছে বেশ।
এমন অবস্থায় ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম বন্ধ থাকায় কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে মূল প্রতিষ্ঠান মেটা, তা নিয়ে সূত্রের বরাতে তথ্য দিয়েছে সংবাদ প্রতিদিন।
প্রতিবেদন বলছে, প্রায় দেড় ঘণ্টার ওই বিভ্রাটে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে মেটা। সবমিলিয়ে ৩ বিলিয়ন অর্থাৎ প্রায় ৩০০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে আচমকাই অকেজো হয়ে পড়ে ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ইউজারদের অ্যাকাউন্ট নিজে থেকেই লগ আউট হয়ে যায়।
পরে অবশ্য এক্সে এসে মার্ক জাকারবার্গ জানান, সার্ভার ডাউন। সেই কারণেই কাজ করছে না মেটার দুই প্ল্যাটফর্ম। তবে দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।
এর পরই মাস্ককে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ইলন মাস্কও অবাক হয়ে যাবেন এই ভেবে যে এক্স হ্যান্ডেলে আচমকা এত ভিড় কেন?
পাল্টা জবাব দিয়েছেন এক্সের মালিক মাস্কও। তিনি লেখেন, এই প্ল্যাটফর্মে এই ধরনের মেসেজ লেখা যাচ্ছে, সবাই তা দেখতে পাচ্ছে। কারণ আমাদের সার্ভার খুব ভালো চলছে।
আরও পড়ুন:এক ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর অবশেষে ঠিক হয়েছে ফেসবুক। রাত দশটা ৩৫ মিনিটে লগইনের চেষ্টা করলে দেখা যায়, সচল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অন্যতম বৃহৎ এ প্লাটফরমটি।
বিস্তারিত আসছে…
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক হঠাৎ করে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের ব্যবহারকারীরা কেউ ফেসবুকে লগইন করতে পারছেন না। এমনকি ফেসবুকে সক্রিয় থাকা আইডিগুলোও স্বয়ংক্রিয়ভাবে লগআউট হয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার পর থেকে এ সমস্যার কথা জানাতে থাকেন ব্যবহারকারীরা।
প্রযুক্তি ওয়েবসাইট ডাউন ডিটেক্টরও ফেসবুক ব্যবহারে সমস্যার কথা নিশ্চিত করেছে। এক্সের ট্রেন্ডিং ফিডেও ফেসবুক সার্ভার ডাউনের বিষয়টি উঠে এসেছে।
ফেসবুকের পাশাপাশি মেটার আওতাধীন ইনস্টাগ্রাম ও মেসেঞ্জারও ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
ব্যবহারকারীরা জানান, হঠাৎ করেই তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগ আউট হয়ে যায়। পরে তারা লগ ইন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পুরো বিশ্বজুড়ে ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামে সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিশ্বের কোথাও কেউ ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামে প্রবেশ করতে পারছে না। এই দুটি মাধ্যমের ওয়েবসাইট এবং অ্যাপস উভয়ই অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
মেটা কিংবা ফেসবুক তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কিছুই জানায়নি।
টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলোতে দেশের মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য ঘুরছিল ২০২৩ সাল থেকেই। এসব তথ্য কেনাবেচার কথাও শোনা গেছে। গ্রাহক-তথ্য বিক্রির ক্ষেত্রে নতুন একটি ভুয়া ব্যবসা শুরু করেছে একটি চক্র। এসব তথ্যের বিক্রি বাড়াতে সম্প্রতি দেশের প্রতিষ্ঠিত মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর নামও জুড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
শুরুর দিকে ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামের বিশেষ সফটওয়্যারের (বট) মাধ্যমে কাজটি করা হয়েছে বলে জানা গেলেও পরে এর পাশাপাশি ওয়েবসাইট খুলেও ভুয়া তথ্যের এই জমজমাট ব্যবসা চলছে। চক্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তাদের দেয়া বিজ্ঞাপনে বেশ কিছু নামি-দামি ব্যাংকের গ্রাহকের তথ্য রয়েছে বলেও প্রচার চালাচ্ছে। নিত্যনতুন কৌশলে তারা গ্রাহককে ধোঁকা দেয়ার এই ব্যবসা করে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য বেহাত হওয়ার পর টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রচার হওয়া নির্দিষ্ট একটি লিংকে ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও জন্মতারিখ দিলেই তার অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য বেরিয়ে আসছিল। একইভাবে এখানেও কিছু মানুষের তথ্য বেরিয়ে আসছে।
তবে যে তথ্য এখানে পাওয়া যাচ্ছে তার সত্যতা নিরূপণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় অনেকে এটাকে ভূঁইফোড় ব্যবসা বলেও আখ্যায়িত করছেন। বেশকিছু ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, মোবাইল নম্বর দিলে আবার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বা নাম এমন কিছু তথ্য আসছে।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা বলেন, ‘এ ধরনের তথ্য যারা অনলাইনে বিভিন্ন মাধ্যমে বিক্রি করছে এবং প্রলোভনে পড়ে যারা কিনছে তারা উভয়েই সমান অপরাধী। বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ ও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইনের খসড়ায় উভয়েরই জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।
‘কাজেই যারা এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে এলে শাস্তির সম্মুখীন হবেন। এর চেয়ে বড় বিষয় হলো এমন তথ্য কিনে কখনোই টাকা পাওয়ার কোনো সুযোগ বাংলাদেশে নেই।’
সূত্র বলছে, গত বছরের জুলাই মাসে প্রথম রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন বিভাগ থেকে ‘লাখ লাখ’ মানুষের তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটে। তার দুই থেকে তিন মাস পর স্মার্ট কার্ডের তথ্য বেহাতের তথ্য সামনে আসে। এখন এসব তথ্যকেই নতুন মোড়কে মোবাইল ব্যাংকিং এবং প্রচলিত ব্যাংকের গ্রাহক তথ্য হিসেবে হাজির করা হচ্ছে।
তবে তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে দেখা গেছে, একেক গ্রুপে একেক রকম তথ্য আসছে। কোথাও গ্রাহকের সঙ্গে সঙ্গে তার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর আছে বলে বলা হচ্ছে। আবার কোথাও মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং জন্মতারিখের উল্লেখ থাকছে। কোথাও কোথাও ছবি থাকার দাবিও করা হচ্ছে।
দেশের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অক্টাগ্রাম লিমিটেড যারা ইথিক্যাল হ্যাকিং নিয়ে কাজ করে। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান শাহরিয়ার দিচ্ছেন ভয়াবহ তথ্য। তিনি বলেন, ‘মূলত প্রলোভনে পড়েই অনেকে এমন তথ্য কিনে থাকেন। সম্প্রতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আমাদের একটি যৌথ এনালাইসিসে দেখা যায়- যারা তথ্য চুরি করেছে, তারা তথ্য বিক্রির সময় সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের তথ্যও সংরক্ষণ করে রাখে।
‘যেহেতু ক্রয়কারীর তথ্য ওরা সংরক্ষণ করছে, ফলে ভবিষ্যতে গ্রাহক হ্যাকিং, ব্ল্যাক মেইলসহ নানা জটিলতার ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। তখন কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গিয়ে তারা বলতেও পারবেন না কেন এবং কী কারণে তিনি অনলাইনে প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন।’
তবে গ্রাহকদের তথ্য এভাবে অবাধে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ঘুরে বেড়ানোর দাবি করায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর মানুষের নাস্থা তৈরি হওয়া বা অহেতুক ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ের এই প্রচারণা মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর দৃষ্টিতেও এসেছে। তারা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য না করলেও বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে আমরা প্রতিনিয়তই তথ্যগত নানা অপপ্রচারের শিকার হই। এবারকার বিষয়ও আমাদের দৃষ্টিতে এসেছে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আমরা এটি অবহিত করেছি।’
বর্তমানে যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ও ছবি লাগে। তবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে যে তথ্য ঘুরছে বলে বলা হচ্ছে এসব তথ্য সত্য হলেও এ দিয়ে কিছুই করা যাবে না বলেও মনে করিয়ে দেন ওই প্রযুক্তিবিদ।
তবে তথ্য-প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজ থেকে তথ্য বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনার খবরে এমনিতেই মানুষ এ নিয়ে অস্বস্তিতে আছে। এখন তাদেরকে বিভ্রান্ত করাটা আগের চেয়ে সহজ। ফলে সত্য-মিথ্যা নানা কথা বলে সুযোগ সন্ধানী কেউ কেউ ব্যবসা করে থাকতে পারে।
বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র ডেটাবেজে ১২ কোটির মতো মানুষের তথ্য রয়েছে।
মন্তব্য