যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরের প্রতিক্রিয়ায় স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানকে ঘিরে বৃহস্পতিবার এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করে চীন। এর অংশ হিসেবে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পাশাপাশি বেশ কিছু যুদ্ধবিমান ও রণতরি মোতায়েন করে বৈশ্বিক পরাশক্তিটি।
তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ মনে করে চীন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দ্বীপরাষ্ট্রটিতে পেলোসির সফরকে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ‘মারাত্মক, বেপরোয়া ও দায়িত্বজ্ঞানহীন উসকানি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বেইজিং।
চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা’ রক্ষায় তাদের দৃঢ়সংকল্প প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে মহড়াটির আয়োজন করা হয়েছে, যেটি শেষ হবে আগামী রোববার।
এমন বাস্তবতায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সামনে এনে সেগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
চীনের সামরিক মহড়া কতটা উদ্বেগজনক
রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন (সিসিটিভি) জানিয়েছে, তাইওয়ানের আশপাশে ছয়টি অঞ্চলে ১৮০ কিলোমিটার উপকূলজুড়ে সমুদ্র ও আকাশপথে এ মহড়া হচ্ছে। এতে অংশ নিচ্ছে যুদ্ধ, বোমারু বিমানসহ শতাধিক উড়োজাহাজ ও ১০টি রণতরি।
মহড়ার সমালোচনা করে তাইওয়ান বলেছে, এটি তাদের জলসীমায় অনুপ্রবেশ এবং সমুদ্র ও আকাশপথ অবরোধের শামিল।
মহড়ার প্রথম দিনে তাইওয়ানের জলসীমার আশপাশে বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে চীন, যেটি ১৯৯৬ সালের পর প্রথম। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১১টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে চীন, যেগুলো দংফেং ব্যালিস্টিক অস্ত্র।
তাইওয়ান সীমান্তবর্তী দেশ জাপান বলেছে, চীনের ছোড়া কমপক্ষে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইইজেড) পড়েছে। দেশটি চীনের এমন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
মহড়াস্থলের আশপাশে থাকা জাহাজ ও উড়োজাহাজগুলোকে বিকল্প পথ বেছে নেয়ার তাগিদ দিয়েছে তাইওয়ানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী তাইপের তাওইউয়ান বিমানবন্দরে বেশ কিছু ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, চীনের মহড়ার কারণে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে তাইওয়ানগামী কোরিয়ান এয়ার এবং এশিয়ানা এয়ারলাইনসের ফ্লাইট সর্বোচ্চ দুই দিন পর্যন্ত বাতিল রাখা হয়েছে।
চীন কি তাইওয়ানে হামলা চালাতে পারে
চীনের নজিরবিহীন মহড়ায় দেশটি আসলেই তাইওয়ানে হামলা চালাতে চায় কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমস বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য নিচ্ছে, যাদের একজন মহড়াকে ‘চীনের পুনঃএকত্রীকরণের’ প্রদর্শনী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
চীনের মূল ভূখণ্ডের সামরিক বিশ্লেষক সং ঝংপিংকে উদ্ধৃত করে সিসিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বর্তমানে যে আভিযানিক পরিকল্পনার মহড়া চলছে, ভবিষ্যৎ কোনো সামরিক সংঘাতের ক্ষেত্রে সেটি সরাসরি সমর অভিযানে রূপ নিতে পারে।’
এ ধরনের বক্তব্যের পরও বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ বলছেন, তাইওয়ানে অন্তত নিকট ভবিষ্যতে কোনো যুদ্ধ চায় না চীন কিংবা তাদের বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জার্মান মার্শাল ফান্ডের এশিয়া কর্মসূচির পরিচালক বনি গ্লেজার আল জাজিরাকে বলেন, ‘চীনের চূড়ান্ত সীমাকে চ্যালেঞ্জ করে বাড়তি কোনো ব্যবস্থা না নিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাইছে চীন।
‘তাইওয়ানের ওপর অবরোধ আরোপ করতে তারা (চীন) সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শন করছে, তবে (প্রেসিডেন্ট) শি চিনপিং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না। তিনি তাইওয়ানে হামলা চালানোর কোনো পরিকল্পনা নেননি।’
সামরিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, বিশ্বের সর্ববৃহৎ সামরিক বাহিনী থাকা চীন গায়ের জোরে তাইওয়ান দখল করতে চাইলেও উল্লেখযোগ্য ঝুঁকিতে পড়বে। সে ক্ষেত্রে চীনকে লক্ষাধিক সেনা নিয়ে তাইওয়ান প্রণালি পাড়ি দিতে হবে। সে পথে বিমান ও নৌবাহিনীর গোলায় পড়তে হবে চীনাদের।
পর্যবেক্ষকরা আরও বলছেন, তাইওয়ান প্রণালি অতিক্রম করে দেশটির উপকূলে চীনের সেনারা পৌঁছাতে পারলেও আরেকটি বিপত্তিতে পড়তে হবে তাদের। তাইওয়ানের অমসৃণ সমুদ্রতীরজুড়ে খুব কম সৈকতই আছে যেখানে চীনারা তাদের সশস্ত্র সেনা, ট্যাংক কিংবা কামানের মতো অস্ত্র খালাস করতে পারে।
তাইওয়ানে যেকোনো ধরনের হামলা চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর সংঘাতে রূপ নেয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিলেও ১৯৭৯ সালের তাইওয়ান রিলেশনস অ্যাক্ট অনুযায়ী, আত্মরক্ষার্থে দ্বীপরাষ্ট্রটিকে সাহায্যে বাধ্য আমেরিকা। চলতি বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তাইওয়ানে চীনের যেকোনো আক্রমণকে সামরিকভাবে প্রতিহত করা হবে।
ভবিষ্যৎ কোনো হামলার ক্ষেত্রে তাইওয়ানকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দেয়ার বিষয়টি বাইডেন শুধু মূল্যবোধতাড়িত হয়েই বলেননি। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, দ্বীপরাষ্ট্রটি কৌশলগত দিক থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
‘এটা এ কারণে যে, পিপলস লিবারেশন আর্মির (চীনের সামরিক বাহিনী) আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার জন্য বিবেচিত প্রথম কয়েকটি দ্বীপের একটি এটি (তাইওয়ান)’, বলেন যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক জুন তেউফেল দ্রেয়ার।
তিনি আরও বলেন, তাইওয়ানের দখল নেয়ার মানে হলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বন্দর কাওহসিউংয়ে প্রবেশাধিকার পাওয়া। এ বন্দর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড গুয়ামে যাওয়া যাবে।
পেলোসির সফর নিয়ে চীনের সমস্যা কী
চীন কখনও তাইওয়ান শাসন করেনি, তবে দেশটি ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের ভূখণ্ডটিকে নিজেদের অংশ মনে করে।
ওয়াশিংটন ও তাইপের মধ্যে যেকোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের খোলাখুলি বিরোধিতা করে আসছে চীন সরকার। বৈশ্বিক পরাশক্তিটি পেলোসির সফরকে উসকানি ও তাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হিসেবে দেখেছে।
পেলোসি এমন এক সময়ে তাইওয়ান সফর করেছেন, যার মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর ২০তম সম্মেলনে বসবেন চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা। ওই সম্মেলনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলাপকালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনংপি ‘তাইওয়ান নিয়ে আগুনের খেলা’ না খেলতে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে দেন।
শি আরও বলেন, তাইওয়ানের স্বাধীনতা এবং স্বশাসিত দ্বীপটিতে বিদেশি হস্তক্ষেপের ঘোর বিরোধী তিনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও পেলোসির এ সফরে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের ক্ষতিগ্রস্ত সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। এটি একই সঙ্গে তাইওয়ান প্রণালিজুড়ে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:মিয়ানমারে রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নৃশংসতার ঘটনায় ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সাত দেশের জোট জি-৭-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
তারা এক যৌথ বিবৃতিতে এ অবস্থান ব্যক্ত করেন বলে শনিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউএনবি।
বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়, যৌথ বিবৃতিতে তারা মিয়ানমারে অস্ত্র ও জেট ফুয়েলসহ অন্যান্য উপকরণের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য সব দেশের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
জোটভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সব রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিয়ে কথা বলেছেন। তারা একটি অর্থবহ ও টেকসই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে অবিলম্বে যেকোনো সহিংসতা বন্ধ, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতাদের থেকে শুরু করে নির্বিচারে আটক সব বন্দিদের মুক্তি এবং সব অংশীজনের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপ প্রতিষ্ঠার জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি শুক্রবার বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রতি মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে, যেকোনো ধরনের জোরপূর্বক শ্রম থেকে বিরত থাকতে এবং সব বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি ও অভাবী মানুষের কাছে দ্রুত, নিরাপদ ও অবাধ মানবিক প্রবেশাধিকার দেয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি।’
মিয়ানমারে সংঘটিত গুরুতর অপরাধের জন্য জবাবদিহি অপরিহার্য উল্লেখ করে জি-৭ দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২৬৬৯ নম্বর প্রস্তাবের (২০২২) ব্যাপক বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেছি। মিয়ানমার বিষয়ক নবনিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূতের নেতৃত্ব এবং দেশটিতে আবাসিক সমন্বয়কারী নিয়োগের মাধ্যমে এ সংকটে জাতিসংঘের আরও সম্পৃক্ততা সমর্থন করি।’
আরও পড়ুন:সরকারি শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের আশায় মালয়েশিয়ায় যাওয়া বাংলাদেশি প্রবাসীদের পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার জেনেভা থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কয়েক মাস বা তার বেশি সময় ধরে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ও অসম্মানজনক।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা বিশেষজ্ঞরা হলেন- দাসত্বের সমসাময়িক রূপ, কারণ ও পরিণতি বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি টোমোয়া ওবোকাতা, মানবপাচার বিশেষ করে নারী ও শিশুপাচার সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিনিধি সিওভান মুল্লালি, প্রবাসীদের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত গেহাদ মাদি ও রবার্ট ম্যাককরকোডেল (চেয়ার-র্যাপোর্টিয়ার), ফার্নান্দা হপেনহাইম (ভাইস-চেয়ার), পিচামন ইয়োফানটং, দামিলোলা ওলাউই, এলজবিয়েতা কারস্কা এবং ব্যবসা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা দল।
জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘প্রবাসীদের ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং তাদের শোষণ, অপরাধীকরণ ও অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে রক্ষা করার জন্য মালয়েশিয়ার জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার।’
তারা উল্লেখ করেন, অনেক প্রবাসী মালয়েশিয়ায় এসে দেখেন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি নেই এবং অনেক সময় তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও থাকতে বাধ্য করা হয়।
এর ফলে এসব প্রবাসী গ্রেপ্তার, আটক, দুর্ব্যবহার ও বহিষ্কারের ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্রবাসী কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে সক্রিয় অপরাধী চক্র। এতে প্রবাসীরা প্রতারিত হচ্ছেন, ঘন ঘন ভুয়া কোম্পানিতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে এবং অতিরিক্ত নিয়োগ ফি দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। যে কারণে তাদের ঋণের বোঝা বেড়ে যাচ্ছে।’
তারা বলেন, ‘আমরা রিপোর্ট পেয়েছি যে উভয় সরকারের কিছু উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বা এটি প্রশ্রয় দিচ্ছেন। এটা অগ্রহণযোগ্য এবং এর অবসান হওয়া দরকার।’
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘এই শোষণমূলক নিয়োগের অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। এখন পর্যন্ত এই বেসরকারি ব্যবসা এবং প্রতারণামূলক নিয়োগ সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া উভয় দেশের ভূমিকাই অপর্যাপ্ত।’
তারা আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে অনেক অসহায় প্রবাসীদের অপরাধীতে পরিণত করা হয়েছে এবং শোষণের শিকার হওয়ার কথা জানাতে গিয়ে কেউ কেউ তীব্র প্রতিহিংসার মুখোমুখি হয়েছেন।’
বিবৃতিতে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশকে এসব ঘটনার তদন্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা।
ব্যবসা ও মানবাধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের নীতিমালা মেনে চলতে মালয়েশিয়াকে আহ্বান জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘মালয়েশিয়াকে অবশ্যই পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শ্রম অভিবাসনকে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে হবে।’
মালয়েশিয়ার ব্যবসাক্ষেত্রগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাত থেকে প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ষা করতে এবং এই ব্যবসাগুলোতে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে তাদের পরামর্শ হচ্ছে, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ, সুরক্ষা ও সহায়তা, মানবপাচারের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনি সুরক্ষা প্রয়োগ এবং দেশের আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা সমুন্নত রাখতে মালয়েশিয়াকে অবশ্যই প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা এর আগে এসব বিষয় নিয়ে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন:ইরানের ইস্পাহানে শুক্রবার ‘ইসরায়েলের’ হামলার তাৎক্ষণিক জবাব দেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘ঘটনার বিদেশি উৎসের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা বাইরের কোনো হামলার শিকার হইনি এবং আলোচনা হামলার চেয়ে বেশি হচ্ছে অনুপ্রবেশ নিয়ে।’
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, ইস্পাহানের কাছে বিস্ফোরণের পর কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। সেখানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়নি।
ইস্পাহান শহরের কাছে ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ক্ষেত্র রয়েছে, যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম।
আরও পড়ুন:ইরানের ইস্পাহানে বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলের হামলার খবরে শুক্রবার পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে উল্লেখ করে রয়টার্স জানিয়েছে, এশিয়ার শেয়ার ও বন্ডে ধস নামে, যেখানে উল্লম্ফন দেখা যায় স্বর্ণ ও অশোধিত জ্বালানি তেলের দামে।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি হামলার বিষয়টি জানার পর পুঁজিবাজার ও তেলের বাজারে শুরুতে যে প্রভাব পড়ে, সেটি কমে এসেছে। হামলার পরিসর ছোট এবং কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়নি বলে ইরানের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এমন বাস্তবতা সৃষ্টি হয়।
শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিভিত্তিক এমএসসিআইয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সূচকের পতন হয় দুই দশমিক ছয় শতাংশ, যেটি পরবর্তী সময়ে কমে দাঁড়ায় দুই শতাংশে।
অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার শঙ্কায় ব্রেন্টের অশোধিত জ্বালানি তেলের দাম শুরুতে চার দশমিক দুই শতাংশ বাড়লেও পরবর্তী সময়ে তা কমে বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়ায় দুই দশমিক চার শতাংশ। মূল্যবৃদ্ধি কমার পর ব্যারেলপ্রতি ব্রেন্টের অশোধিত তেলের দাম দাঁড়ায় ৮৯ দশমিক ২২ ডলারে।
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, ইস্পাহানের কাছে বিস্ফোরণের পর কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। সেখানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়নি।
ইস্পাহান শহরের কাছে ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ক্ষেত্র রয়েছে, যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের তিনটি ড্রোন ইরান ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করেছে দেশটির মহাকাশ সংস্থা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শুক্রবার কোয়াডকপ্টারের ছবি সংযুক্ত করে দেয়া পোস্টে ইরানের মহাকাশ সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন দালিরিয়ান লিখেন, ‘তারা (ইসরায়েল) বলেছে যে, আমরা ৫০০ সুইসাইড ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছি...এখন তারা জবাব দিয়েছে এই তিন কোয়াডকপ্টার (ড্রোনসদৃশ আকাশযান) দিয়ে, যার সবগুলোকে ভূপাতিত করা হয়েছে।’
হাসির ইমোজি দিয়ে ওই পোস্টে দালিরিয়ান আরও লিখেন, ‘তারা শুধু বলেছে যে, তারা (হামলার) আগে আমেরিকাকে জানায়নি।’
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের হামলার খবরের মধ্যে ইরানের স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম শুক্রবার বলেছে, দেশটির পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদে আছে।
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
এদিকে ইরানের মহাকাশ সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন দালিরিয়ান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া পোস্টে লিখেন, দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সফলভাবে কিছু ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এ মুহূর্তে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কোনো খবর নেই।
ইস্পাহানের কাছে শেকারি সেনা বিমানঘাঁটিতে তিনটি বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ।
আরও পড়ুন:ইরানের একটি স্থানে ইসরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে বৃহস্পতিবার রাতে জানিয়েছে এবিসি নিউজ।
যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি এ খবর জানায়।
এবিসির বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স শুক্রবার জানায়, ইরানের কেন্দ্রস্থলে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই ইরানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেল।
এবিসির প্রতিবেদনের সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ইস্পাহান, সিরাজ ও তেহরানে বিমান চলাচল স্থগিত রাখা হয়েছে।
ইরানের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক ক্ষেত্র রয়েছে ইস্পাহান প্রদেশে। অঞ্চলটিতে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কেন্দ্রে থাকা নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রও রয়েছে।
গত শনিবারের হামলার জবাব দেয়ার কথা জানিয়েছিল ইসরায়েল। দেশটি বড় পরিসরে কোনো হামলা চালালে এবং এর জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা করলে গাজা যুদ্ধ পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য