ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক ও সংগীতশিল্পী ছিলেন আমরিনা ভাট। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছিল তার হাজার হাজার ফলোয়ার। গত ২৫ মে গুলি করে তাকে খুন করা হয়। পরিবারের মূল উপার্জনক্ষম সদস্যের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ সবাই।
ঘটনার দিন আমরিনার আত্মীয় যুবায়ের আহমেদ শেখ মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন। এ সময় তিনি গুলির শব্দ শুনতে পান, তারপর চিৎকার।
দ্রুত ছুটে যান ঘটনাস্থলে। দেখেন ঘরে পড়ে আছেন ৩০ বছরের আমরিনা। তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
ঘটনার সময় আমরিনার সঙ্গে ছিলেন তার ১১ বছরের ভাগনে ফারহান। সে জানায়, একটি প্রোগ্রামের বুকিং দেয়ার জন্য দুজন লোক এসেছিল আমরিনার কাছে। প্রোগ্রামের বিষয়ে যখন তাদের কাছে জানতে চান আমরিনা, তখন তারা বন্দুক বের করে গুলি চালায়।
প্রাণ বাঁচাতে আমরিনা ভেতরের দিকে দৌড় দেন। তখন একজন তার পিছু নেয় এবং আবার গুলি করে। ফারহানের হাতেও লাগে একটি গুলি।
আহত আমরিনা এবং ফারহানকে হাসপাতালে নিতে হন্যে হয়ে গাড়ি খুঁজছিল তাদের পরিবার। একসময় গাড়ি পাওয়া যায়। তবে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মারা যান আমরিনা। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে ভাগনে ফারহান।
ভারত অধ্যুষিত কাশ্মীরে এ ধরনের ধারাবাহিক হামলা কয়েক সপ্তাহ ধরেই চলছে। ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই অঞ্চলটির পুরো মালিকানা দাবি করে এলেও দুটি অংশে ভাগ করে কাশ্মীরে শাসন চালাচ্ছে দিল্লি-ইসলামাবাদ। ১৯৮৯ সাল থেকে দিল্লির শাসনের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক বিদ্রোহও দেখেছে কাশ্মীরবাসী।
আমরিনার ওপর হামলার কয়েক দিন আগে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন সরকারি কর্মচারীকে তার অফিসের ভেতর গুলি করে হত্যা করা হয় বুদগাম জেলায়। এ সপ্তাহে প্রাণ হারিয়েছেন এক স্কুলশিক্ষক।
আমরিনার মৃত্যুর দুদিন পর কাশ্মীর পুলিশ জানায়, তারা খুনিদের হত্যা করেছে। খুনিরা সম্প্রতি পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বায় যোগ দিয়েছিল বলেও দাবি করে পুলিশ। তবে তারা কেন আমরিনাকে টার্গেট করেছিল, তা নিশ্চিত করতে পারেনি কাশ্মীর পুলিশ।
Both killed newly joined local #terrorists identified as Shahid Mushtaq Bhat R/O Hafroo Chadoora #Budgam & Farhan Habib R/O Hakripora #Pulwama. They had #killed TV artist on the instruction of LeT Cmdr Lateef. 01 AK 56 rifle, 4 magazines and a pistol recovered: IGP Kashmir https://t.co/VeoHZRkdEO
— Kashmir Zone Police (@KashmirPolice) May 26, 2022
আমরিনার বাবা খাজির মহম্মদ ভাট বলেন, ‘আমার মেয়ে ছিল পরিবারের মূল উপার্জনকারী ব্যক্তি। ওর ওপর কেন হামলা জানি না। ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ্নে আছি।’
খাজির ভাট জানান, শুরুতে মেয়ের গান গাওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে ছিলেন তিনি। সংগীতে মনোযোগ দেয়ার জন্য কিশোর বয়সে তিনি স্কুল ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে আমরিনার মা ২০০৮ সালে মারা গেলে সংগীতে আর বাধা দেননি তিনি।
‘আমার স্ত্রী আমাকে বলেছিল আমরিনা আমার বিরোধিতার কারণে আঘাত পেয়েছিল। তার আবেগকে সম্মান জানানো দরকার আমাদের।’
আমরিনা তার পরিবারের সহযোগিতায় ছোট-বড় কয়েকটি চ্যানেলে কাজ করতে শুরু করেন। তবে জনপ্রিয়তা পান সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও আপলোড শুরুর পর থেকে।
আমরিনা যখন মারা যান, ইনস্টাগ্রামে তার ২৫ হাজারের বেশি ফলোয়ার ছিল। এই প্ল্যাটফর্মটিতে তিনি সিনেমার গান এবং সংলাপে নিজের লিপ-সিঙ্কিং ভিডিও আপলোড করতেন। শোকবার্তায় প্লাবিত হওয়া সে প্রোফাইলটি এখন মুছে ফেলা হয়েছে।
ইউটিউবে আপলোড করতেন নানা ইস্যু নিয়ে ছোট ছোট ডিভিও। গত সোমবার পর্যন্ত আমরিনার ১৯ হাজারের বেশি সাবস্ক্রাইবার ছিল। বিদ্যুৎ সংকটসহ নানা সমস্যার তথ্য তুলে ধরায় দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন আমরিনা।
খাজির ভাট বলেন, ‘আমরিনা ভারতের স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবসের মতো অনুষ্ঠানগুলোয় অংশ নিত। বেশ কয়েকটি পুরস্কার রয়েছে তার।
‘সে জনপ্রিয় ছিল, সবাই তাকে চিনত। ওর মৃত্যুর পর বিভিন্ন দলের রাজনীতিবিদরা আমাদের সঙ্গে দেখা করে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন।’
কাশ্মীরের বেশির ভাগ টেলিভিশন শিল্পীদের মতো আমরিনারও অভিনয়ের কাজ পাওয়া কঠিন ছিল। বিশেষ করে যখন থেকে কাশ্মীরে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী দূরদর্শন বন্ধ হয়ে যায়।
প্রবীণ স্থানীয় এক অভিনেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেন, ‘অভিনয়ের সুযোগ গত কয়েক বছরে কমে গেছে। ২০১৯ সাল থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, যখন ভারত ৩৭০ অনুচ্ছেদ (কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা) প্রত্যাহার করেছিল।’
সরকার কয়েক মাস ধরে চলাফেরা এবং যোগাযোগের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। অনেকটা করোনার সময় লকডাউনের মতো, যা জীবিকাকে আরও চাপে ফেলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সে কারণেই আমরিনা তার দক্ষতা প্রদর্শনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিরেছিলেন।
ভাগনে ফারহানের কাছে আমরিনা একজন মমতাময়ী খালা, যিনি তার স্কুলের ফি পরিশোধ করতেন, নতুন নতুন জামা কিনে দিতেন, মোবাইলে গেম খেলতে দিতেন।
ফারহান বলে, ‘আগামী বছর আমাকে কম্পিউটার কিনে দেয়ার প্রমিজ করেছিলেন।’
আরও পড়ুন:ঝড়ের সময় বজ্রপাত ও প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় সীমান্তবর্তী দুই দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে কমপক্ষে ৮৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে আল জাজিরা।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তানজুড়ে ঝড়ে কমপক্ষে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির কর্মকর্তারা জরুরি সেবা সংস্থাগুলোকে উচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
পাকিস্তানের বেশির ভাগ প্রাণহানি হয় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ায়, যেখানে প্রবল বর্ষণ ও আকস্মিক বন্যায় ভূমিধসে বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি উপড়ে যায় গাছ।
দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিতে ধসে যায় বিপুলসংখ্যক বাড়িঘর।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের এক মুখপাত্র জানান, অঞ্চলটিতে বৃষ্টিজনিত কারণে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সপ্তাহে আরও বৃষ্টি হতে পারে।
পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও ব্যাপক বৃষ্টি হয়। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে বন্যায় সাতজন প্রাণ হারান।
বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ার এবং বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী কুয়েটার সড়ক।
এমন বাস্তবতায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ টেলিভিশনে দেয়া বক্তব্যে বলেন, তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ত্রাণসামগ্রী সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন।
আফগানিস্তানে বন্যা
দেশটির প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, মৌসুমি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ৩৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে। দেশটিতে আহত হয়েছেন ২৭ জন।
তিনি জানান, বন্যায় ছয় শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে এবং প্রায় ২০০ গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে।
ওই মুখপাত্র জানান, বন্যায় বিপুল কৃষিজমির পাশাপাশি ৮৫ কিলোমিটারের বেশি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আরও পড়ুন:ঈদের দিন সকালে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে একটি স্কুলবাস উল্টে ৬ শিশু নিহত হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অন্তত ২০ জন।
মহেন্দ্রগড় জেলার কানিনা শহরের কানিনা-দাদরি সড়কে বৃহস্পতিবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বাসটি জিএল পাবলিক স্কুল নামের স্থানীয় একটি বেসরকারি স্কুলের ছিল বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। ঈদের দিন সরকারি ছুটি থাকা সত্ত্বেও স্কুলটি খোলা ছিল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আজতকের খবরে বলা হয়, দুর্ঘটনাকবলিত বাসটিতে ৩৫ থেকে ৪০টির মতো শিশু ছিল। দুর্ঘটনার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের ৬ জনকে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ৫ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি একজনকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। তবে কিছুক্ষণ পর তারও মৃত্যু হয়।
বাসচালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে দাবি স্থানীয়দের।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা চালায় পুলিশ। স্থানীয়দের অভিযোগের পর চালক মদ্যপ ছিলেন কি না, সে ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১২ আহত শিক্ষার্থীকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের রোহতকের একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মহেন্দ্রগড় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ধারণা, বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চালক একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা মারে। তিনি মদ্যপ থাকার কারণেই এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে।
মহেন্দ্রগড় জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা আরশ ভার্মা বলেছেন, ‘বাসচালকের (মদ্যপ থাকার) বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে তার একটি মেডিক্যাল পরীক্ষাও হয়েছে।’
সরকারি নথি থেকে এনডিটিভি জানিয়েছে, ২০১৮ সালে বাসটির ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও পরে তা আর নবায়ন করা হয়নি।
দুর্ঘটনার খবরে শোক প্রকাশ করেছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়াব সাইনি।
এক এক্স পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘কানিনায় স্কুলবাস দুর্ঘটনায় আমি শোকাহত। যারা নিষ্পাপ শিশুদের হারাল, ওইসব পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’
ছুটির দিনেও কেন স্কুলটি খোলা ছিল, তার তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হরিয়ানার শিক্ষামন্ত্রী সীমা ত্রিখা।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে মাজারে যাওয়ার পথে তীর্থযাত্রীদের বহনকারী একটি ট্রাক খাদে পড়ে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় বুধবার রাতে বেলুচিস্তানের হাব জেলায় শাহ নুরানী মাজারে যাওয়ার পথে ওই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জিও নিউজ জাানিয়েছে।
বেলুচিস্তান সরকারের একজন মুখপাত্র জি জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
সিন্ধুর ঠাট্টা থেকে তীর্থযাত্রীদের বহনকারী ট্রাকটি খুজদার জেলার শাহ নুরানি মাজারে যাওয়ার সময় হাব জেলায় খাদে পড়ে যায়।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি জেলা প্রশাসনকে আহতদের দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মিয়ানমারে হাজার হাজার মুসলিম রোহিঙ্গাকে হত্যা ও বাস্তুচ্যুত করার প্রায় সাত বছর পর এখন তাদেরই সাহায্য নিচ্ছে দেশটির সামরিক জান্তা।
রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে বিবিসি সোমবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের মধ্যে অন্তত ১০০ জনকে সাম্প্রতিক সপ্তাহে যুদ্ধরত জান্তার পক্ষে লড়াই করার জন্য বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হয়েছে।
নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ছদ্মনাম ব্যবহার করেছে বিবিসি।
৩১ বছর বয়সী রোহিঙ্গা মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি ভীত ছিলাম, কিন্তু আমাকে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল।’
রাখাইনের রাজধানী সিত্তওয়ের কাছের একটি শিবিরে থাকেন তিনি। এক দশক ধরে বাস্তুচ্যুত অন্তত দেড় লাখ রোহিঙ্গা এ ধরনের শিবিরে থাকছেন।
গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে একদিন রাতে মোহাম্মদের কাছে আসেন এক শিবিরনেতা। তাকে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে বলে জানান ওই নেতা।
মোহাম্মকে তখন বলা হয়েছিল, এটা সেনাবাহিনীর আদেশ। আদেশ পালন না করলে তার পরিবারের ক্ষতি করা হবে।
বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে, সেনা কর্মকর্তারা শিবিরগুলোর (ক্যাম্প) আশপাশে ঘোরাফেরা করেন। তারা তরুণ রোহিঙ্গাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য সেনাবাহিনীতে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
২০১২ সালে রাখাইনের বসতি থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বিতাড়িত করা হয়। এরপর অনেক রোহিঙ্গা বিভিন্ন শিবিরে থাকতে শুরু করেন। পাঁচ বছর পর ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও নিধন অভিযান শুরু করলে ওই সময় সাত লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
ওই সময় মিয়ানমারে হাজারো রোহিঙ্গা হত্যা ও ধর্ষণের শিকার হয়। রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
সম্প্রতি আরাকান আর্মি নামক একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে রাখাইনে বিশাল এলাকা হারানোর পর একই সেনাবাহিনী এখন রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক নিয়োগ করছে।
দেশটির অন্য অংশে বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জান্তাও বিপুল সংখ্যক সৈন্য হারিয়েছে। তারা নিহত ও আহত হয়েছে এবং অনেক আত্মসমর্পণ করেছে।
আরও পড়ুন:দাবদাহ মোকাবিলায় ভারতের মুম্বাইয়ের নগর কর্তৃপক্ষ শহরের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রোগীদের জন্য কোল্ড রুমের ব্যবস্থা করেছে এবং সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ হিট স্ট্রোকের ওষুধ মজুত রেখেছে।
তীব্র দাবদাহ ও গরম বাড়তে পারে এমন শঙ্কা থেকে কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ নিয়েছে বলে শুক্রবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়।
কোল্ড রুম এমন একটি কক্ষ যেটি কম তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য ডিজাইন করা হয়।
মহারাষ্ট্রের রাজধানী শহর মুম্বাইয়ের গভর্নিং সিভিক বডি বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন বলছে, তারা শহরের ১০৩টি ওষুধের দোকান শীতাতপনিয়ন্ত্রীত করা হয়েছে।
সিভিক বডি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, হিট স্ট্রোক রোগীদের চিকিৎসার জন্য ১৪টি বড় হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজের কোল্ড রুমে দুটি করে শয্যা থাকবে। হিট স্ট্রোক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের জন্য মেডিক্যাল অফিসার এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এপ্রিল এবং মে থেকে তুলনামূলকভাবে গরম বাড়তে থাকে। তাই এ সময় হিট স্ট্রোকের প্রবণতাও বেড়ে যায়।
নাগরিক সংস্থাটি হিট স্ট্রোক এড়াতে সতর্কতা অবলম্বন ও সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছে।
আরও পড়ুন:ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে কংগ্রেস তাকে প্রার্থী করার কথা ভাবছে বলে সূত্রের বরাতে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
বুধবার গোয়া, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং দমন ও দিউ- এই চার রাজ্যের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি (সিইসি) ১৮ জনের নাম অনুমোদন করেছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেস সানিয়া মির্জার জনপ্রিয়তা ও তার সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের দিকে নজর রেখে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কংগ্রেস সর্বশেষ ১৯৮০ সালে হায়দরাবাদে জিতেছিল এবং কে এস নারায়ণ সাংসদ হয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, সানিয়ার নাম প্রস্তাব করেছিলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক কংগ্রেস নেতা মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ২০১৯ সালে সানিয়া মির্জার বোন আনাম মির্জার সঙ্গে বিয়ে হয় ক্রিকেটারের ছেলে মহম্মদ আসাদুদ্দিনের।
আজহারউদ্দিন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তেলেঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যেখানে তিনি জুবিলি হিলস আসন থেকে ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) মাগন্তি গোপীনাথের কাছে ১৬০০০ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন।
এআইএমআইএম-এর একটি শক্ত ঘাঁটি হায়দরাবাদ, এই অঞ্চলে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির’ (কংগ্রেস) সাম্প্রতিক পুনরুত্থান এআইএমআইএমের আধিপত্যের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যা একটি তীব্র কঠিন লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
১৯৮৪ সালে সুলতান সালাহউদ্দিন ওয়াইসি হায়দরাবাদ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং পরে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এআইএমআইএম প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন।
এর পর আসাদ্দুদ্দিন ওয়াইসি ২০০৪ সাল থেকে এই আসনটি ধরে রেখে উত্তরাধিকার বহন করছেন। ২০১৯ সালে ওয়েইসির বিরুদ্ধে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি তার আধিপত্য বজায় রেখে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫৮.৯৪% পেয়ে আসনটি জিতেছিলেন।
এই লোকসভা নির্বাচনের জন্য হায়দরাবাদে বিজেপি মাধবী লতাকে প্রার্থী করেছে, এবং বিআরএস গদ্দাম শ্রীনিবাস যাদবকে প্রার্থী করেছে।
৫৪৩টি সংসদীয় আসনের নির্বাচন সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, যা ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১ জুন শেষ হবে। তেলেঙ্গানায় ভোট হবে ১৩ মে।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের শাংলা জেলার বিশাম এলাকায় মঙ্গলবার গাড়িবহরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিকসহ কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
মালাকান্দ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ আলি গান্দাপুরের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামাবাদ থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ার দুসু এলাকার ক্যাম্পে যাওয়ার পথে চীনের প্রকৌশলীদের গাড়িবহরে বিস্ফোরকভর্তি গাড়িটি উঠিয়ে দেয় আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী।
তিনি আরও বলেন, ‘হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিক ও তাদের পাকিস্তানি চালক নিহত হন।’
হামলার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাটি ঘিরে ফেলেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্তে নামায় এ পথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইসলামাবাদে চীনা দূতাবাস গিয়ে রাষ্ট্রদূত জিয়াং জ্যায়দংয়ের কাছে শোক প্রকাশ করেন।
এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘চায়না-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডরের (সিপিইসি) শত্রুরা আরও একবার এ ধরনের কাপুরুষোচিত কাজ করে একে ব্যাহত করার চক্রান্ত করেছে, কিন্তু অশুভ অভিলাষ পূরণে কখনই সফল হবে না তারা।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য