× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Who shot dead journalist Shirin?
google_news print-icon

সাংবাদিক শিরিনের মৃত্যু কার গুলিতে?

সাংবাদিক-শিরিনের-মৃত্যু-কার-গুলিতে?
যে স্থানে গুলিবিদ্ধ হন শিরিন আবু আকলেহ সেখানে পোর্ট্রেট রেখে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। ছবি: এএফপি
শিরিন হত্যার পর ধারণ করা একটি ভিডিওর প্রাথমিক ফরেনসিক অডিও বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বন্দুকের গোলাগুলি প্রায় ১৭৭ থেকে ১৮৪ মিটার দূরে শুরু হয়। ধারণা করা হচ্ছে যে অস্ত্র ও গুলি ব্যবহার করা হয়েছে তা ওই এলাকায় আইডিএফ ও সশস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ব্যবহৃত অস্ত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

আল জাজিরায় কাজ করা ফিলিস্তিনি-আমেরিকান সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি শহর জেনিন থেকে রিপোর্ট করার সময় ১১ মে সকালে মাথায় গুলির আঘাতে নিহত হন। তিনি সে সময় ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) একটি অভিযান কভার করছিলেন। ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতার মাঝে এটি ছিল জেনিনে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী পরিচালিত কয়েকটি অভিযানের অন্যতম। আইডিএফের কয়েকটি অভিযানে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।

সাংবাদিক শিরিন হত্যার পরের ঘটনার ভিডিও দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তিনি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বিশৃঙ্খল মুহূর্তগুলো দেখা যায় ভিডিওতে। দেখা গেছে, অন্যরা তার মরদেহের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

ভিডিও থেকে প্রমাণিত, শিরিনের মাথায় গুলি লেগেছিল।

ভিডিওতে যেমনটা দেখা গেছে, সে সময় শিরিন আরেকজন সাংবাদিকের সঙ্গে ছিলেন। তার পরনে পরিষ্কার অক্ষরে ‘প্রেস’ লেখা নীল রঙের ভেস্ট ও মাথায় হেলমেট ছিল।

শিরিন নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট দাবি করেন, ‘সশস্ত্র ফিলিস্তিনিদের এলোপাতাড়ি গুলিতে তার মারা যাওয়ার ‘সম্ভাবনা আছে’। তবে পরে এক সংবাদ সম্মলনে ইসরায়েলের ডিফেন্স মিনিস্টার বেনি গান্টজ বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের গুলিতে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে, আবার দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের পক্ষের গুলিতেও তার মৃত্যু হতে পারে। আমরা বিষয়টির তদন্ত করছি।’

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও আল জাজিরা এ ঘটনায় সরাসরি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়, শিরিন কাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন সেটা ‘পরিষ্কার’ নয়।

ভিডিও, অডিও বিশ্লেষণ করে পুরো বিষয়টিকে দেখার চেষ্টা করেছে নেদারল্যান্ডসের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সাইট বেলিংক্যাট। তাদের প্রতিবেদন অবলম্বনে লিখেছেন রুবাইদ ইফতেখার।

শিরিন হত্যার সময় তার সঙ্গে থাকা সাংবাদিকদের দাবি, আইডিএফ সৈন্যরা কোনো সতর্ক বার্তা ছাড়াই তাদের ওপর গুলি চালায়। সাংবাদিকদের বিশ্বাস, তাদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেট করা হয়েছে।

এ হত্যায় আইডিএফ নিজেদের সৈনিকের দায় স্বীকার করে নিলেও, ১৩ মে তারা যে অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে শিরিনের মৃত্যুকে দুর্ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

উন্মুক্ত সোর্সের ছবি ও ভিডিওতে দেখে কার গুলিতে শিরিন নিহত হয়েছেন পূর্ণাঙ্গভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবে এগুলো থেকে বোঝা সম্ভব, ঘটনা কী ঘটেছিল এবং সেগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বিবৃতির তুলনা করা যেতে পারে।

আইডিএফের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের সৈন্য ও শিরিনের মাঝখানে অন্য যোদ্ধা থাকতে পারে। এতে আরও বলা হয়, একজন ইসরায়েলি সৈন্যের বুলেট অসাবধানতাবশত তাকে আঘাত করে। তবে আইডিএফ ও সাংবাদিকদের মাঝে ওই রাস্তায় অন্য কোনো সশস্ত্র ব্যক্তির অস্তিত্ব ভিডিও ফুটেজে নেই। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সমস্ত প্রত্যক্ষদর্শী ও সাংবাদিকরা সরু ওই রাস্তায় এমন কোনো যোদ্ধাকে দেখেননি বা দেখলেও সেটা বলেননি। তাদের বক্তব্য তাই ইসরায়েলি সৈন্যদের থেকে আলাদা।

আইডিএফের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বন্দুকধারীরা আইডিএফ বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি করে। ওইভাবে শিরিন আঘাত পেতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বন্দুকধারীরা একটি গলিপথ থেকে আইডিএফ সৈন্যদের দিকে দ্রুত গুলি ছুড়ছে।

শিরিনের মৃত্যুর পর মুহূর্তে যখন এক ব্যক্তি তার মৃতদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করছেন, সে সময় যে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে তা উদ্দেশ্যহীন নয়, বরং তা ধীরগতির ও ইচ্ছাকৃত। এ থেকে বোঝা যায়, একঝাঁক গুলি না করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে গুলি করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিওগুলোতে চিত্রিত বন্দুকধারীদের অবস্থান আইডিএফ সৈন্যদের তুলনায় শিরিনের কাছ থেকে অনেক দূরে। অথবা তারা অবস্থান শিরিনকে দেখার বা লক্ষ্য করার মতো অবস্থানে নেই।

অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া ইমেজ ও ভিডিও আর সেই সঙ্গে বেলিংক্যাটের করা একটি অডিও বিশ্লেষণও সাক্ষীর সাক্ষ্যের দিকগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে হয়।

শিরিনের মৃত্যুর প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশের পরপর ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আইডিএফ বাহিনী এমন একটি অবস্থানে পৌঁছেছে, যা ১৯০ থেকে ২৫০ মিটার দক্ষিণে প্রসারিত। ওই অবস্থান থেকে শিরিনকে গুলি করা হয়েছিল। এটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ টুইটারে পোস্ট করা অন্য একটি ভিডিওর অডিও বিশ্লেষণ থেকে অনুমান করা যায়, শিরিনের মৃত্যুর পর তার সহকর্মীদের দিকে ১৭৭ থেকে ১৮৪ মিটার দূর থেকে গুলি করা হয়েছিল। একই ফুটেজেও দেখা যাচ্ছে, বন্দুকের গুলিগুলো দক্ষিণে শুরু হয়েছে যখন পূর্বোক্ত ব্যক্তি শিরিনের দেহ উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।

শিরিনকে যে স্থানে গুলি করা হয়েছিল তার দক্ষিণে আইডিএফ সৈন্যদের আবির্ভাবের সঠিক সময় ফেসবুক ভিডিওটি থেকে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী ও ক্যামেরা অপারেটরদের ধারণ করা ফুটেজ থেকে মেটাডেটা বা আইডিএফের ভিডিও এ বিষয়ে আরও স্পষ্টতা তৈরি করতে পারে। এটি শিরিনের মৃত্যুর সময় সৈন্যদের অবস্থানের সম্ভাবনাকে আরও নির্দিষ্ট করতে সক্ষম হবে।

ঘটনাস্থল

প্রত্যক্ষদর্শী ও শিরিনের সহকর্মীরা একাধিক ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যাতে জেনিনে গুলি চালানোর পরের ঘটনাগুলো দেখা যায়।

শহরের পশ্চিমে বালাত আল শুহাদা রাস্তায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। নিচের স্ক্রিনশটটি শিরিনের শুটিংয়ের পর নেয়া একটি ভিডিও থেকে নেয়া হয়েছে। এটি টুইটারে আল জাজিরার একজন প্রযোজক শেয়ার করেন। এটি ড্যাশবোর্ড ও ছাদে অবস্থিত ক্যামেরা থেকে রাস্তার চিত্র সংগ্রহ করা ক্রাউড সোর্সিং সাইট ম্যাপিলারির এক ব্যবহারকারীর ২০২০ সালের ওই স্থানের তোলা একটি ছবির সঙ্গে মিলে যায়।

সাংবাদিক শিরিনের মৃত্যু কার গুলিতে?
আল জাজিরার এক প্রযোজক শিরিন হত্যাকান্ডের স্থানের একটি ভিডিও শেয়ার করেন। ছবি: স্ক্রিনশট

হত্যার সময়

একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, শিরিন পড়ে আছেন। সেগুলোর ছায়ার দৈর্ঘ্য বিশ্লেষণ করে বের করা সম্ভব এ হত্যাকাণ্ড কখন ঘটেছে।

বেলিংক্যাট গোলাগুলির প্রথম যে ভিডিওটি পেয়েছে সেটি টেলিগ্রামে শেয়ার করা হয় স্থানীয় সময় সকাল ৬.৩৬ মিনিটে। শিরিনের সঙ্গে থাকা আরেক সাংবাদিক আলি আল-সামুদি, যিনি নিজেও গুলিবিদ্ধ হন, তিনি ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে যাওয়ার পুরো সময় লাইভ স্ট্রিম করেন। তার লাইভ স্ট্রিম শুরু হয় সকাল ৬.৩৩ মিনিটে।

সাংবাদিক শিরিনের মৃত্যু কার গুলিতে?
ভিডিওর স্ক্রিনশটে ছায়ার দৈর্ঘ্য পরিমাপ করে হত্যাকান্ডের সময় নির্ণয় সম্ভব। ছবি: বেলিংক্যাট

এই ভিডিওতে ছায়ার দৈর্ঘ্য বিশ্লেষণ করে ভিডিওটি কখন ধারণ করা হয়েছে সেই সময় নির্ণয় করা সম্ভব। ওপরে উল্লেখিত ভিডিও যেটি আল জাজিরার প্রযোজক শেয়ার করেছেন সেখানে ক্যামেরা বালাত আল শুহাদা সড়ক বরাবর পশ্চিম দিকে মুখ করা। এরপর ক্যামেরা ঘোরানো হয় দক্ষিণ দিকে যেখানে আবু আকলেহর মরদেহ পড়ে ছিল। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মানুষজন ও রোড সাইনের ছায়া পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম দিকে পড়েছে।

জেনিনে সকালের সংঘর্ষ

ওইদিন সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয় সকাল ৬টা নাগাদ। টেলিগ্রামে ৫.৫৯ মিনিটে শেয়ার করা একটি ভিডিও শিরিন মারা যাওয়ার স্থানের প্রায় ১২০ মিটার পূর্বদিকে রেকর্ড করা হয়। সেখানে গুলির শব্দ শোনা যায় এবং দূরের বিল্ডিংয়ের ওপর সাদা ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়।

শিরিনের মৃত্যুর পর, কয়েকজন ইসরায়েলি ভাষ্যকার জেনিনে অদেখা লক্ষ্যবস্তুতে সশস্ত্র লোকজন গুলি চালাচ্ছেন এমন বেশ কয়েকটি ভিডিওর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

অন্য একটি ভিডিওতে (‘ভিডিও টু’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে) দেখা যায়, একটি গলিপথে একজন লোক রাইফেল দিয়ে গুলি করছেন৷ ইসরায়েলি মিডিয়া রিপোর্ট ও আইডিএফ জানিয়েছে, অভিযানের সকালে এই ভিডিওটি ধারণ করা হয়। যিনি গুলি করার অংশটি ভিডিও করেছেন তিনি অন্য সশস্ত্র ব্যক্তিদের দলের অংশ। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রী শুরুতে বলেন, এই ভিডিওতে যে গুলি চালানো হয়েছে তাতেই শিরিন নিহত হয়েছেন। তবে, ফুটেজ বিশ্লেষণে এ ধরনের দাবি সঠিক বলে মনে হয়নি।

ইসরায়েল ও অধিকৃত ফিলিস্তিনে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বিটিসেলেম, ভিডিও টু ধারণের জায়গায় গিয়েছিল। তারা একটি ভিডিও করে যেখানে ওই জায়গাটি পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। ওই ভিডিওর মাধ্যমে বেলিংক্যাট ভিডিও টুর জিওলোকেশন নিশ্চিত হয়েছে। শিরিন যেখানে নিহত হন সেখান থেকে ওই লোকেশন ২৭০ মিটার দূরে।

বিটিসেলেমের ভিডিওতে আরও দেখা যায়, সশস্ত্র লোকটি যে গলিতে গুলি চালাচ্ছিল সেটির শেষে একটি প্রাচীর রয়েছে। শিরিন যেখানে নিহত হয়েছেন সেটি এ জায়গা নয়। অর্থাৎ, ভিডিও টু-তে গুলি করতে থাকা ব্যক্তিটির গুলি চালিয়ে শিরিনকে হত্যা করা সম্ভব নয়। যদিও সোশ্যাল মিডিয়াতে এর উল্টোটা চাউর হয়েছে।

১১ মে সকালে জেনিনে অভিযানের সময় রেকর্ড করা ভিডিও টুর সমর্থনে বেশ কিছু তথ্য আছে। প্রথমত, বেলিংক্যাট প্রথমে ভিডিও পায় ১১ মে সকাল ৬টা ৪১ মিনিটে টেলিগ্রামে। এই ভিডিওর ফ্রেমের একাধিক রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানের পর তা থেকে ওই সময়ের আগে কোনো ফল পাওয়া যায়নি৷

দ্বিতীয়ত, ইসরায়েলি রাজনীতিক ও মিডিয়ার দাবিতে যে ভিডিওটি রেকর্ড করা হয় সেখানে বিটিসেলেমের টিম গিয়েছিল। ওই ভিডিওর বন্দুকধারী শিরিনের মৃত্যুর জন্য দায়ী হতে পারে এমনটা দাবি ছিল ইসরায়েলের। সবশেষে, আইডিএফের বডি ক্যামের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সৈন্যরা একটি সমান্তরাল গলিপথে নেমে যাচ্ছে, যেখানে ভিডিও টুর বন্দুকধারী তার অস্ত্র থেকে গুলি ছুড়ছিল।

‘সকালে জেনিনে আইডিএফ সৈন্যদের সকালের কার্যক্রম’ শীর্ষক আইডিএফ প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সৈন্যরা বিটিসেলেমের ভিডিওতে যে গলি দেখা গেছে সে রকম একটা গলিপথ দিয়ে যাচ্ছে। এই দুই ভিডিওর তুলনা করলে দেখা যায়, ভিডিও টুর সশস্ত্র ব্যক্তিরা ও আইডিএফ সৈন্যরা সমান্তরাল গলিপথে অবস্থান করছিল। শিরিন যখন নিহত হন তখন ওই দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি চলছিল।

আইডিএফের বডিক্যাম ভিডিওর শেষে দেখা গেছে সৈন্যরা একটি রাস্তায় দৌড়ে বেরিয়ে আসে। সেখানে তখন পাঁচটি সাঁজোয়া যান অপেক্ষা করছিল। আইডিএফের এই অবস্থানটি ছিল, যেখানে শিরিনকে গুলি করে হত্যা করা হয় সেখান থেকে একই রাস্তার দক্ষিণে। কনভয়ের সামনের গাড়িটি শিরিনকে গুলি করার স্থান থেকে প্রায় ১৯০ মিটার দক্ষিণে অবস্থিত ছিল। আর পেছনের গাড়ির দূরত্ব ছিল ২৫০ মিটার।

ফেসবুকে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আপলোড করা একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একই আইডিএফ গাড়ির কনভয় যাচ্ছে ও একই স্থানে এসে থামছে, যে স্থানটি আইডিএফের বডি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা গেছে। আপলোডের সময়টি আইডিএফ সৈন্যরা কখন ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে তার একটি উচ্চসীমা বেঁধে দেয়। অন্য কথায়, ভিডিওটি অবশ্যই ৬টা ৪০ মিনিটের আগে রেকর্ড হয়েছে। কারণ ওই সময় সেটি ফেসবুকে আপলোড করা হয়।

ভিডিওটি বাড়ির ভেতর থেকে রেকর্ড করা হয়েছে বলে যে ব্যক্তি এটি রেকর্ড করেছেন তার নিরাপত্তার স্বার্থে বেলিংক্যাট এটির সঙ্গে কোনো লিঙ্ক রাখেনি।

বডিক্যাম ভিডিওর শেষে আইডিএফের অবস্থান একজন ক্যামেরা ক্রু প্রায় ১০০ মিটার উত্তরে ছয়টি ভিডিওর একটি সিরিজে রেকর্ড করেন। তার অবস্থান ছিল আইডিএফের অবস্থান এবং শিরিনকে গুলি করা স্থানের মধ্যে। এই ভিডিওগুলো টেলিগ্রামে পোস্ট করা হয়।

আইডিএফ বডি ক্যামেরার ফুটেজ ও টেলিগ্রাম ভিডিওগুলো থেকে দেখা যাচ্ছে, শিরিনকে যেখানে গুলি করে হত্যা করা হয় সে জায়গার প্রায় ২০০ মিটার নিচে রাস্তার একটি অংশ আইডিএফের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ভিডিও থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়, তার পাশের রাস্তাগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণের জন্য সংঘর্ষ হচ্ছিল। এমন কোনো ফুটেজ বা ছবি পাওয়া যায়নি, যা থেকে বোঝা সম্ভব আইডিএফ সৈন্য ও শিরিনের মধ্যে কোনো ফিলিস্তিনি যোদ্ধা অবস্থান করছিল।

তবে আরেকটি সোশ্যাল মিডিয়া ভিডিওতে (‘ভিডিও থ্রি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে) কাছাকাছি রাস্তার কোণে একদল ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে৷ তাদের গোলাগুলি করতে দেখা যাচ্ছে। আইডিএফ সাঁজোয়া কনভয়ের দক্ষিণে আনুমানিক এক ব্লক দূরত্বে ভিডিওটির নেয়া হয়েছে (ম্যাপিলারিতে যা দেখা যাচ্ছে)।

ভিডিওতে স্বল্প বিরতি দিয়ে পরপর গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।

ভিডিও টু, ভিডিও থ্রি ও আইডিএফ বডি ক্যাম ভিডিও একসঙ্গে বিবেচনায় নিলে জেনিনে ওইদিন সকালে ভিডিওতে ধারণ করা দুটি পক্ষের অবস্থানের একটি আনুমানিক চিত্র পাওয়া যায়।

ভিডিও থ্রি ঠিক কোন সময়ে ধারণ করা হয়েছে সেটা বের করা সম্ভব হয়নি।

তবে লক্ষণীয় বিষয়, যে ভিডিওটি আল জাজিরার এক সাংবাদিক পোস্ট করেছেন যেখানে শিরিনের সহকর্মীকে গোলাগুলির মুখে পড়তে দেখা যাচ্ছে; সেখানে শটগুলো লক্ষ্য করে ও ইচ্ছাকৃতভাবে করা হচ্ছে বলে মনে হয়। উদ্দেশ্যহীন ও একাধারে গুলি ছোড়া হয়নি। গুলি ছোড়ার এই প্যাটার্নটি ক্রসফায়ারের নয়, বরং সাংবাদিকদের দিকে ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেট করে করার সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করে। ভিডিও থ্রির ব্যক্তিদের অবস্থান উল্লেখযোগ্যভাবে আইডিএফ কনভয়ের দক্ষিণে ও শিরিনের অবস্থান থেকে বেশ খানিকটা দূরে।

এ ছাড়া বেলিংক্যাটের করা একটি অডিও বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, শিরিনের মৃত্যুর পরপর তার অবস্থানের দিকে গুলি চালানো হয়েছিল ভিডিও থ্রি-তে সশস্ত্র লোকদের অবস্থানের কাছ থেকে।

বুলেটের গতি ও শব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা স্টেট ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক রবার্ট সি. মারের সঙ্গে কথা বলেছে বেলিংক্যাট। মার অডিও ফরেনসিক বিশ্লেষণ করেন। সোশ্যাল মিডিয়ার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ও আইডিএফ ও অন্য অস্ত্রধারীদের অস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে শুটার ও শিরিনের কাছে থাকা ক্যামেরাধারীর দূরত্ব নির্ণয়ের জন্য তাকে অনুরোধ করে বেলিংক্যাট। ভিডিও ক্লিপটিতে দেখা যায়, শিরিন গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরেও দক্ষিণ দিক থেকে তাদের ওপর গুলিবর্ষণ হতে থাকে।

বেলিংক্যাটকে করা ই-মেইলে মার লেখেন, ‘ভিডিওতে থাকা অডিও শুনে যা বোঝা যাচ্ছে তা হলো, ১ মিনিট ৫৬.২৫ সেকেন্ড ও ২ মিনিট ১৯.৫৩৮ সেকেন্ডে দুইবার গুলির শব্দ পাওয়া যায়। দুটি শব্দের ক্ষেত্রেই শুরুতে একটি শক্তিশালী ক্র্যাক সাউন্ড ও ৩০০ মিলিসেকেন্ড (.৩ সেকেন্ড) পর একটা দুর্বল শব্দ পাওয়া যায়।

‘আমার মতে, শুরুর শব্দটা কোনো সুপারসনিক বুলেটের শক ওয়েভ ক্যামেরার মাইক অতিক্রম করার সময়ের শব্দ। পরের শব্দটা বন্দুকের নলের বিস্ফোরণের।’

ঘটনার সময় আইডিএফ বা ফিলিস্তিনিদের ব্যবহৃত অধিকাংশ অস্ত্রগুলোকে উপরোক্ত ভিডিওগুলোতে দেখা যাচ্ছে। সেগুলো এম ফোর বা সিআর ফিফটিন সিরিজের ৫.৫৬ মিলিমিটার রাইফেল। যেগুলো ব্যারেলের দৈর্ঘ্য ছিল ২৯২ থেকে ৩৬৮ মিমি। ২০১০ সালে সুইডেনের ন্যাটো ওয়েপনস অ্যান্ড সেনসরস ওয়ার্কিং গ্রুপ একটি প্রেজেন্টেশনে ৫.৫৬ মিমি গুলির ক্ষেত্রে নলের গতি ও ব্যারেলের দৈর্ঘ্যের একটি তুলনা প্রকাশ করে।

সেখানে বলা হয়, ন্যাটোর ব্যবহৃত গুলি এসএস ওয়ানওনাইন ৫.৫৬ মিমি ব্যবহার করলে বুলেটের গতি দাঁড়াবে প্রতি সেকেন্ডে ৮২০ থেকে ৮৬৬ মিটার। এ থেকে বোঝা যায়, ওপরের ভিডিওতে ক্যামেরা থেকে রাইফেল ১৭৭ থেকে ১৮৪ মিটার দূরত্বে ছিল।

মার এই হিসেবের সঙ্গে সাবধানতা ও সতর্কতার একটি নোট যোগ করেন। তিনি লেখেন, ‘দূরত্বের অনুমান বাতাসের তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে, যেহেতু এটি শব্দের গতিকে প্রভাবিত করে।’

বুলেটের ক্যালিবার বিশ্লেষণ করা প্রতিবেদনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ যে শিরিনকে যে বুলেটটি হত্যা করে সেটি ছিল ৫.৫৬ মিমি।

মার উল্লেখ করেছেন, বুলেটের অনুমিত গতিতে সামান্য পার্থক্যের ফলে গণনায় পরিবর্তন হতে পারে। তিনি যোগ করেন, ‘সম্ভবত বড় প্রশ্ন হল বুলেটের গতি সম্পর্কে আমার অনুমান। যদি বুলেটটি ধীর সুপারসনিক গতিতে ছোটে তবে দূরত্বের অনুমান দীর্ঘ হবে। আর যদি বুলেটটি দ্রুত সুপারসনিক গতিতে ছোটে, তবে দূরত্বের অনুমান কম হবে।’

দৃষ্টিরেখা

ওই অঞ্চলের ছবি থেকে আরও কিছু ক্লু পাওয়া যায়। যা থেকে ধারণা করা সম্ভব শিরিন ও অন্য সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে ওই শুটার কোথায় অবস্থান করছিল।

জেনিন ক্যাম্প টেলিগ্রাম চ্যানেলে শেয়ার করা একটি ছবি তোলা হয়েছে যেখানে শিরিন নিহত হয়েছেন। এটি অনেকগুলো ছবির একটি, যেখানে ফিলিস্তিনিরা তার মৃত্যুর স্থানে ফুল দিচ্ছেন। ক্যামেরাটি সরাসরি দক্ষিণ দিকে মুখ করা, যা আইডিএফ কনভয় এবং সশস্ত্র লোকদের অবস্থান থেকে দৃষ্টি রেখা কী হতে পারে সেটার একটা আনুমানিক ধারনা দেয়।

আইডিএফের কনভয় ও ভিডিও টু এবং ভিডিও থ্রিতে সশস্ত্র লোকদের অবস্থান থেকে উত্তরে দৃষ্টিসীমা/রেখা একটি কবরস্থানের প্রাচীর দ্বারা আংশিকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। কবরস্থান ও এর প্রাচীরের কারণে রাস্তাটি একক একটি সরু লেনের রাস্তায় পরিণত হয়।

সাংবাদিক শিরিনের মৃত্যু কার গুলিতে?
সশস্ত্র ব্যক্তিদের অবস্থান থেকে উত্তরে দৃষ্টিসীমা রেখা একটি কবরস্থানের প্রাচীরে আংশিকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। ছবি: বেলিংক্যাট

এই প্রাচীরটি স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবির পাশাপাশি ওইদিনের ভিডিও ফুটেজে দৃশ্যমান।

কবরস্থানের প্রাচীরই শুধু রাস্তার উত্তরে দেখার ক্ষেত্রে বাধা দেয়। সারা সকাল জুড়ে, রাস্তার পশ্চিম দিকে গাড়ি পার্ক করা ছিল, যা আইডিএফ কনভয়ের রাস্তার স্তরের অবস্থান থেকে উত্তরে গুলি করা ও ভিডিও টু এবং ভিডিও থ্রিতে সশস্ত্র লোকদের গুলি করাকে আরও কঠিন করে তুলেছিল।

টেলিগ্রামে শেয়ার করা আরেকটি ছবিতে কবরস্থানের প্রাচীর ও হলুদ গাড়ির কারণে দৃষ্টিসীমার বাধা স্পষ্ট। ছবিটি রাস্তার দক্ষিণ দিকে একটি পাহাড় থেকে তোলা হয়েছে। যেখান থেকে শিরিন নিহত হওয়ার অবস্থান উত্তরে।

ওপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আইডিএফ অবস্থান থেকে আবু আকলেহকে যেখানে গুলি করে হত্যা করা হয় সেখানে দৃষ্টিসীমা সংকীর্ণ।

এটি তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ সাদা টি-শার্ট পরা ব্যক্তি যিনি শিরিনকে সাহায্য করতে গেছেন, তার আচরণ থেকে বোঝা যায়, তাদের দিকে তখনও দক্ষিণ থেকে গুলি ছোড়া হচ্ছে। যেমনটা ভিডিওতে দেখা গেছে। ভিডিওর ১ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড ও ২ মিনিট ২০ সেকেন্ডে শিরিনকে তোলার চেষ্টার সময় ওই ব্যক্তি রাস্তার কেন্দ্রের দিকে পূর্ব দিকে সরে আড়াল থেকে বেরিয়ে আসেন। উভয় সময় আমরা একটি করে গুলির শব্দ শুনতে পাই, যা লোকটির যথেষ্ট কাছাকাছি। যার ফলে তিনি রাস্তার পশ্চিম দিকের একটি দেয়ালের সঙ্গে নিজেকে চেপে আড়াল হতে বাধ্য করে। ওপরের ছবিতে দেখা হলুদ গাড়ি ও নিচের ছবিতে গাছটি দেয়ালের কাছাকাছি দাঁড়ালে তার আড়াল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

আইডিএফ অবস্থানের সামান্য পশ্চিমে একটি উঁচু ভবন থাকায় শুটার একটি উঁচু অবস্থান থেকে গুলি চালাতে পারে এমন সম্ভাবনাও রয়েছে। এটি শিরিন ও তার সহকর্মীরা গাছের আড়াল থেকে ও প্রাচীর থেকে দূরে সরে গেলে তা দেখার একটি অবস্থান তৈরি করে।

ওপেন সোর্সের সারসংক্ষেপ

বর্তমানে ওপেন সোর্স ভিডিওগুলো থেকে শিরিনকে হত্যা করার নির্দিষ্ট মুহূর্ত বা তাকে গুলি করার বিশদ বিবরণ পাওয়া সম্ভব নয়। তবে, একাধিক সাক্ষীর সাক্ষ্য আইডিএফ সৈন্যদের দিকে ইঙ্গিত করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া ভিডিওগুলো তাদের দাবিকে নাকচ করার জন্য যথেষ্ট নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি তাদের সমর্থন করে বলে মনে হয়।

ওপেন সোর্স ভিডিওতে দেখা যায়, আইডিএফ সৈন্যরা ও সশস্ত্র গোষ্ঠী রাস্তায় লড়াই করার সময় শিরিন রাস্তায় পড়ে ছিলেন। সে সময় আইডিএফের একটি স্পষ্ট গতিপথ ছিল ও যেখানে তাকে গুলি করা হয় তারা সেটার কাছে অবস্থান করছিল। এটি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জন্য আরও বাধাগ্রস্ত ও দূরবর্তী অবস্থান।

বডিক্যাম ফুটেজে দেখা আইডিএফ সাঁজোয়া যানবাহনের নেতৃস্থানীয় যানটি শিরিনকে গুলি করার স্থান থেকে প্রায় ১৯০ মিটার দূরে অবস্থান করছিল। ভিডিও থ্রিতে রাস্তায় গুলি চালাতে দেখা গেছে যে সশস্ত্র দলটিকে তারা ছিল প্রায় ৩০০ মিটার দূরে।

সাংবাদিক শিরিনের মৃত্যু কার গুলিতে?
নীল বৃত্তের স্থানে আবু আকলেহ গুলিবিদ্ধ হন। কমলা বৃত্তের স্থান থেকে টেলেগ্রাম ভিডিও নেয়া হয় আর সবুজ রঙের অঞ্চলে আইডিএফ সৈন্যরা অবস্থান করছিল। ছবি: বেলিংক্যাট

শিরিন হত্যার পর ধারণ করা একটি ভিডিওর প্রাথমিক ফরেনসিক অডিও বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বন্দুকের গোলাগুলি প্রায় ১৭৭ থেকে ১৮৪ মিটার দূরে শুরু হয়। ধারণা করা হচ্ছে যে অস্ত্র ও গুলি ব্যবহার করা হয়েছে তা ওই এলাকায় আইডিএফ ও সশস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ব্যবহৃত অস্ত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই অনুমান আইডিএফের অবস্থান এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীর অবস্থানের চেয়ে সাংবাদিক হত্যার স্থানের মধ্যে আনুমানিক দূরত্বের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত।

৫১ বছর বয়সী শিরিন আবু আকলেহকে ১৩ মে পূর্ব জেরুজালেমের মাউন্ট জায়ন প্রোটেস্ট্যান্ট কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
61 journalists killed in Israel Hamas war CPJ

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে নিহত ৬১ সাংবাদিক: সিপিজে

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে নিহত ৬১ সাংবাদিক: সিপিজে গাজায় নিহত সাংবাদিকের পাশে স্বজনের আহাজারি। ছবি: সিপিজে
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সংস্থাটির বরাত দিয়ে শনিবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, শুক্রবার পর্যন্ত নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে ৫৪ জন ফিলিস্তিন, চারজন ইসরায়েল ও তিনজন লেবাননের নাগরিক।

ফিলিস্তিনের গাজার শাসক দল হামাসের সঙ্গে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর ৬১ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সংস্থাটির বরাত দিয়ে শনিবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, শুক্রবার পর্যন্ত নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে ৫৪ জন ফিলিস্তিন, চারজন ইসরায়েল ও তিনজন লেবাননের নাগরিক।

সিপিজের ভাষ্য, যুদ্ধে ১১ জন সাংবাদিক আহত ও তিনজন নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৯ সাংবাদিক।

সংস্থাটি আরও জানায়, অনেক সাংবাদিক নিহত, নিখোঁজ কিংবা হুমকির শিকার হওয়ার অসমর্থিত খবর পাওয়া গেছে, যা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ইসরায়েলে ঢুকে গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় নির্বিচার হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে অবরুদ্ধ উপত্যকায় বিপুলসংখ্যক বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত হয় ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। অন্যদিকে হামাসের হামলায় নিহত হয় প্রায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি।

আরও পড়ুন:
যুদ্ধবিরতির পাঁচ দিনে মুক্ত ১৮০ ফিলিস্তিনি, হামাস ছাড়ল ৮১ জনকে
ইসরায়েল থেকে মুক্ত ৩৩ ফিলিস্তিনি, হামাস ছাড়ল ১১ জনকে
গাজায় যুদ্ধবিরতি আরও দুই দিন
গাজায় যুদ্ধবিরতি বাড়াতে চুক্তির কাছাকাছি মিসর কাতার
গাজায় যুদ্ধবিরতি শেষ হচ্ছে সোমবার, মেয়াদ বাড়াতে চায় সব পক্ষই

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Seventh day of prisoner exchange 30 Palestinians and 8 Israelis freed

বন্দি বিনিময়ের সপ্তম দিন: ৩০ ফিলিস্তিনি ও ৮ ইসরায়েলি মুক্ত

বন্দি বিনিময়ের সপ্তম দিন: ৩০ ফিলিস্তিনি ও ৮ ইসরায়েলি মুক্ত মুক্তিপ্রাপ্ত একজন ফিলিস্তিনি বন্দি। ছবি: আল জাজিরা
এর আগের দু দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ছিল ছয় দিন, সেই মেয়াদ শেষ হয় বুধবার। এরপর বৃহস্পতিবার আরও একদিন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের সপ্তম দিনে আরও ৩০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। অন্যদিকে উপত্যকার শাসক দল হামাস ছেড়ে দিয়েছে আটজন ইসরায়েলি জিম্মিকে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার রাতে বন্দি বিনিময়ের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

এর আগের দু দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ছিল ছয় দিন, সেই মেয়াদ শেষ হয় বুধবার। এরপর বৃহস্পতিবার আরও একদিন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, হামাস বলেছে, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সপ্তম দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে সম্মত হয়েছে।

অবশ্য এর আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো কথা জানালেও, ঠিক কতদিন তা বাড়বে তা জানায়নি।

দেড় মাসের বেশি সময় গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হওয়ার পর গত শুক্রবার থেকে সোমবার নাগাদ চার দিনের যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই পক্ষ।

সেই যুদ্ধবিরতি আরও দুই দিন বাড়িয়ে বুধবার পর্যন্ত করতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। সেটিকে স্থায়ী রূপ দিতে চাপ দিচ্ছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল।

ইসরায়েলে ঢুকে হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।

আরও পড়ুন:
গাজায় যুদ্ধবিরতি বাড়াতে চুক্তির কাছাকাছি মিসর কাতার
গাজায় যুদ্ধবিরতি শেষ হচ্ছে সোমবার, মেয়াদ বাড়াতে চায় সব পক্ষই
৫২ বন্দি বিনিময়, গাজায় ত্রাণের ১২০ ট্রাক
আরও ১৭ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
‘চুক্তি লঙ্ঘনে’ বেঁকে বসল হামাস, বন্দিবিনিময়ে অনিশ্চয়তা

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Saudi wants a long term ceasefire in Gaza

গাজায় দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি চায় সৌদি

গাজায় দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি চায় সৌদি সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ। ছবি: রয়টার্স
জাতিসংঘে সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখানে স্পষ্ট বক্তব্য দিতে এসেছি যে, সাময়িক যুদ্ধবিরতি যথেষ্ট নয়। দরকার যুদ্ধবিরতি।’

গাজার শাসক দল হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সাময়িক যুদ্ধবিরতি যথেষ্ট নয় জানিয়ে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব।

সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে এ আহ্বান জানান বলে বুধবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘের সদরদপ্তরে সাংবাদিকদের উদ্দেশে সৌদির সর্বোচ্চ কূটনীতিক বলেন, বর্তমানে গাজায় যে পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী যাচ্ছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে অপ্রতুল।

তিনি বলেন, ‘বিপদের বিষয় হলো যদি এই…যুদ্ধবিরতি শেষ হয়ে যায়, তাহলে আমরা ফের আগের দেখা হত্যাযজ্ঞে ফিরব, যা অসহনীয়।’

সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা এখানে স্পষ্ট বক্তব্য দিতে এসেছি যে, সাময়িক যুদ্ধবিরতি যথেষ্ট নয়। দরকার যুদ্ধবিরতি।’

দেড় মাসের বেশি সময় গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হওয়ার পর গত শুক্রবার থেকে সোমবার নাগাদ চার দিনের যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই পক্ষ। সেই যুদ্ধবিরতি আরও দুই দিন বাড়িয়ে বুধবার পর্যন্ত করতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। সেটিকে স্থায়ী রূপ দিতে চাপ দিচ্ছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল।

আরও পড়ুন:
৫২ বন্দি বিনিময়, গাজায় ত্রাণের ১২০ ট্রাক
আরও ১৭ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
‘চুক্তি লঙ্ঘনে’ বেঁকে বসল হামাস, বন্দিবিনিময়ে অনিশ্চয়তা
ইসরায়েলি জাহাজে ড্রোন হামলা
ইসরায়েলের কারাগার থেকে শুক্রবার মুক্ত ফিলিস্তিনি কারা

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
180 Palestinians freed in five days of ceasefire Hamas released 81

যুদ্ধবিরতির পাঁচ দিনে মুক্ত ১৮০ ফিলিস্তিনি, হামাস ছাড়ল ৮১ জনকে

যুদ্ধবিরতির পাঁচ দিনে মুক্ত ১৮০ ফিলিস্তিনি, হামাস ছাড়ল ৮১ জনকে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর মাকে জড়িয়ে ধরেন ওমর আতশান। ছবি: এএফপি
আল জাজিরার বুধবারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাঁচ দিনের এই বন্দি বিনিময়ে ইসরায়েল নারী ও শিশুসহ মোট ১৮০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। হামাস মুক্তি দিয়েছে ৮১ জিম্মিকে, যাদের বেশিরভাগই ইসরায়েলি নাগরিক।

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শাসক দল হামাস এবং ইসরায়েলের চার দিনের যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় শুরু হয় শুক্রবার। এর পর সোমবার এ কার্যক্রম বাড়ানো হয় আরও দুই দিন, অর্থাৎ বুধবার পর্যন্ত।

হামাস সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, কাতার ও মিসরের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী সাময়িক যুদ্ধবিরতি দুই দিন বাড়ানো হয়েছে।

যুদ্ধবিরতি দুই দিন বাড়ানোর চুক্তির মধ্যে রয়েছে হামাসের কাছে থাকা ইসরায়েলের ২০ বন্দি এবং ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ৬০ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিষয়টি।

বন্দি বিনিময় শুরু হওয়ার পঞ্চম দিন মঙ্গলবার ৩০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। হামাস মুক্তি দিয়েছে ১০ জিম্মিকে।

আল জাজিরার বুধবারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাঁচ দিনের এই বন্দি বিনিময়ে ইসরায়েল নারী ও শিশুসহ মোট ১৮০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।

হামাস মুক্তি দিয়েছে ৮১ জিম্মিকে, যাদের বেশিরভাগই ইসরায়েলি নাগরিক।

ইসরায়েলে ঢুকে গত ৭ অক্টোবর হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় বোমা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এসব হামলায় গাজায় প্রাণ যায় কমপক্ষে ১৪ হাজার ৮৫৪ ফিলিস্তিনির। অন্যদিকে হামাসের হামলায় প্রাণ যায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলির।

দু্ই পক্ষের ব্যাপক প্রাণহানি ও গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে শুক্রবার থেকে সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল ও হামাস।

আরও পড়ুন:
আরও ১৭ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
‘চুক্তি লঙ্ঘনে’ বেঁকে বসল হামাস, বন্দিবিনিময়ে অনিশ্চয়তা
ইসরায়েলি জাহাজে ড্রোন হামলা
ইসরায়েলের কারাগার থেকে শুক্রবার মুক্ত ফিলিস্তিনি কারা
গাজায় ‘পূর্ণ’ যুদ্ধবিরতি চান মালালা

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Gaza ceasefire extends for two more days

গাজায় যুদ্ধবিরতি আরও দুই দিন

গাজায় যুদ্ধবিরতি আরও দুই দিন সাময়িক যুদ্ধবিরতির মধ্যে উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণের দিকে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। অন্যদিকে ত্রাণসামগ্রী ও জ্বালানিবাহী ট্রাক যাচ্ছে উত্তর গাজায়। ছবি: ইব্রাহিম আবু মুস্তাফা/রয়টার্স
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক বিবৃতিতে বলেন, গাজা উপত্যকায় মানবিক যুদ্ধবিরতি আরও দুই দিন বাড়াতে চুক্তি হয়েছে।

ফিলিস্তিনের গাজার শাসক দল হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চার দিনের যুদ্ধবিরতি আরও দুই দিন বাড়াতে ‍চুক্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানিয়েছেন বলে সোমবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে মাজেদ বলেন, গাজা উপত্যকায় মানবিক যুদ্ধবিরতি আরও দুই দিন বাড়াতে চুক্তি হয়েছে।

গাজার শাসক দল হামাস বিবৃতিতে জানিয়েছে, কাতার ও মিসরের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী সাময়িক যুদ্ধবিরতি দুই দিন বাড়ানো হয়েছে।

এর আগে মধ্যস্থতাকারী দুই দেশ মিসর ও কাতার চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে জানিয়েছিলেন মিসরের স্টেট ইনফরমেশন সার্ভিসের (এসআইএস) প্রধান দিয়া রাশওয়ান।

যুদ্ধবিরতির চতুর্থ দিন সোমবার রাশওয়ানের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, যুদ্ধবিরতি দুই দিন বাড়ানোর চুক্তির মধ্যে রয়েছে হামাসের কাছে থাকা ইসরায়েলের ২০ বন্দি এবং ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ৬০ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিষয়টি।

এসআইএসের প্রধান বলেন, সোমবার ১১ ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তির বিনিময়ে ৩৩ ফিলিস্তিনিকে কারামুক্তির বিষয়ে সমঝোতা আলোচনা চলছে।

ইসরায়েলে ঢুকে গত ৭ অক্টোবর হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় বোমা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এসব হামলায় গাজায় প্রাণ যায় কমপক্ষে ১৪ হাজার ৮৫৪ ফিলিস্তিনির। অন্যদিকে হামাসের হামলায় প্রাণ যায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলির।

দু্ই পক্ষের ব্যাপক প্রাণহানি ও গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে শুক্রবার থেকে চার দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল ও হামাস। সেই যুদ্ধবিরতি আরও বাড়াতে দুই পক্ষকেই চাপ দেয় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মহল।

আরও পড়ুন:
ইসরায়েলি জাহাজে ড্রোন হামলা
ইসরায়েলের কারাগার থেকে শুক্রবার মুক্ত ফিলিস্তিনি কারা
গাজায় ‘পূর্ণ’ যুদ্ধবিরতি চান মালালা
২৪ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস, স্বজনদের অপেক্ষায় ফিলিস্তিনিরা
গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Egypt Qatar close to deal to extend Gaza ceasefire

গাজায় যুদ্ধবিরতি বাড়াতে চুক্তির কাছাকাছি মিসর কাতার

গাজায় যুদ্ধবিরতি বাড়াতে চুক্তির কাছাকাছি মিসর কাতার সাময়িক যুদ্ধবিরতির মধ্যে উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণের দিকে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। অন্যদিকে ত্রাণসামগ্রী ও জ্বালানিবাহী ট্রাক যাচ্ছে উত্তর গাজায়। ছবি: ইব্রাহিম আবু মুস্তাফা/রয়টার্স
মিসরের স্টেট ইনফরমেশন সার্ভিসের প্রধান দিয়া রাশওয়ানের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, যুদ্ধবিরতি দুই দিন বাড়ানোর চুক্তির মধ্যে রয়েছে হামাসের কাছে থাকা ইসরায়েলের ২০ বন্দি এবং ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ৬০ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিষয়টি।

ফিলিস্তিনের গাজার শাসক দল হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চার দিনের যুদ্ধবিরতি আরও দুই দিন বাড়াতে মধ্যস্থতাকারী দুই দেশ মিসর ও কাতার চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন মিসরের স্টেট ইনফরমেশন সার্ভিসের (এসআইএস) প্রধান দিয়া রাশওয়ান।

যুদ্ধবিরতির চতুর্থ দিন সোমবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

রাশওয়ানের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, যুদ্ধবিরতি দুই দিন বাড়ানোর চুক্তির মধ্যে রয়েছে হামাসের কাছে থাকা ইসরায়েলের ২০ বন্দি এবং ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ৬০ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিষয়টি।

এসআইএসের প্রধান বলেন, সোমবার ১১ ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তির বিনিময়ে ৩৩ ফিলিস্তিনিকে কারামুক্তির বিষয়ে সমঝোতা আলোচনা চলছে।

ইসরায়েলে ঢুকে গত ৭ অক্টোবর হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় অব্যাহত বোমা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এসব হামলায় গাজায় প্রাণ যায় কমপক্ষে ১৪ হাজার ৮৫৪ ফিলিস্তিনির। অন্যদিকে হামাসের হামলায় প্রাণ যায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলির।

দু্ই পক্ষের ব্যাপক প্রাণহানি ও গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে শুক্রবার থেকে চার দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল ও হামাস। সেই যুদ্ধবিরতি আরও বাড়াতে দুই পক্ষকে চাপ দিয়ে যাচ্ছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মহল।

আরও পড়ুন:
‘চুক্তি লঙ্ঘনে’ বেঁকে বসল হামাস, বন্দিবিনিময়ে অনিশ্চয়তা
ইসরায়েলি জাহাজে ড্রোন হামলা
ইসরায়েলের কারাগার থেকে শুক্রবার মুক্ত ফিলিস্তিনি কারা
গাজায় ‘পূর্ণ’ যুদ্ধবিরতি চান মালালা
২৪ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস, স্বজনদের অপেক্ষায় ফিলিস্তিনিরা

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Hamas Israel ceasefire swaps 52 prisoners Relief trucks in Gaza

৫২ বন্দি বিনিময়, গাজায় ত্রাণের ১২০ ট্রাক

৫২ বন্দি বিনিময়, গাজায় ত্রাণের ১২০ ট্রাক গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরুর আগের দিন বৃহস্পতিবার উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহতে পানি সংগ্রহের জন্য কন্টেইনার নিয়ে অপেক্ষা করছে শিশুরা। ফাইল ছবি
মিসরের রাষ্ট্রীয় তথ্য বিভাগের প্রধান দিয়া রাসওয়ান আল জাজিরাকে জানান, যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিনে ৩৯ ফিলিস্তিনির বিনিময়ে হামাস ১৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে।

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে চারদিনের যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিনে রোববার দুপক্ষে ৫২ জন বন্দি বিনিময় হয়েছে বলে জানিয়েছে মিসর। ৩৯ ফিলিস্তিনির বিনিময়ে হামাস ১৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। আর ত্রাণসামগ্রী ও জ্বালানি নিয়ে গাজায় ঢুকেছে ১২০টি ট্রাক।

মিসরের রাষ্ট্রীয় তথ্য বিভাগের প্রধান দিয়া রাসওয়ানের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা রোববার রাতে এ তথ্য জানায়।

দিয়া রাসওয়ান জানান, তৃতীয় দফায় এই বন্দি বিনিময়ে ৩৯ ফিলিস্তিনির বিনিময়ে হামাস ১৩ জন ইসরায়েলিকে মুক্তি দিয়েছে। আর মিসরের রাফা সীমান্ত দিয়ে ‌ওষুধসহ ত্রাণবাহী ১২০টি ট্রাক বিনা বাধায় গাজায় পৌঁছেছে। এর মধ্যে জ্বালানি তেল ও রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারবাহী দুটি করে ট্রাক রয়েছে।

দেড় মাসের বেশি সময় পর ফিলিস্তিনের গাজায় শুক্রবার যুদ্ধবিরতি শুরু করেছে ইসরায়েল ও উপত্যকার শাসক দল হামাস।

আরও পড়ুন:
২৪ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস, স্বজনদের অপেক্ষায় ফিলিস্তিনিরা
গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু
গাজা ও ইসরায়েল থেকে বন্দি বিনিময় হবে কীভাবে
কাল থেকে গাজায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু
আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালকসহ কয়েকজন চিকিৎসক গ্রেপ্তার

মন্তব্য

p
উপরে