আম্পান ও ইয়াসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিবছর পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ বাঁধ ভেঙে যায়। বাঁধ ভাঙা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বুধবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘প্রতিবছর যদি হাজার হাজার লাখ লাখ কোটি টাকা জলে যায়, তাহলে আমি জলকে বাঁধব কী করে? জল তো আমায় বেঁধে ফেলছে?’
ইয়াস ও আম্পান দুর্যোগে ভেঙে গেছে একের পর এক বাঁধ। ভেসে গেছে বিস্তীর্ণ জনবসতি। বাঁধ ভাঙা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, ইরিগেশনের নামে বাঁধ ভাঙা সারাচ্ছি আর প্রতিবছরই তা ভেঙে যাচ্ছে। এই অবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ রুখতে গেলে প্রকৃতিকে কাজে লাগাতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রকৃতিই সহায়ক।'
মুখ্যমন্ত্রী সেচ দপ্তরের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘আম্পানের পর তোমরা কাজ করলে কতবার কত টাকা দিয়েছিলাম…আম্পানের পর তাহলে তোমরা যে কাজ করলে… ইয়াসের পর কতগুলো বাঁধ ভাঙল? তাহলে টাকাটা কি জলে চলে যাচ্ছে? আম্পানে পড়ে যাওয়া গাছগুলো বাঁধের কাজে লাগানো যেত। সেই গাছগুলো কোথায়?'
প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে বলেন, ‘কয়েক মাস আগে আম্পান হয়েছে। গাদা গাদা গাছ পড়েছে। সেই সময় কলকাতায় তো এখানে-ওখানে কয়েক হাজার গাছ পড়েছে। সেই গাছগুলো কোথায়, কী অবস্থায় আছে, তিন দিনের মধ্যে আমি রিপোর্ট চাই।’
ইয়াসের ধাক্কায় তছনছ হয়ে যাওয়া দীঘা সৈকতের সৌন্দর্যায়ন ফাউন্ডেশনে গলদ রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে ইয়াসে বিধ্বস্ত সুন্দরবনের দুর্গত এলাকা বুধবার পরিদর্শনে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ ও তৃণমূলের যুবনেতা অভিষেক ব্যানার্জি বলেন, ‘বাঁধ ভাঙছে কেন তা নিয়ে তদন্ত হবে। আগে যারা সেচমন্ত্রী ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে। মুখ্যমন্ত্রী তো বলেছেন, তদন্ত হবেই।’
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন সাবেক দুই সেচমন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জি এবং শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলে থেকে কাজ করতে পারছিলেন না বলে দল ছেড়েছিলেন।
দেশের উষ্ণতম মাস এপ্রিল। এ মাসে সাধারণত অন্য সময়ের চেয়ে বেশি থাকে গরম। চলতি বছরের এপ্রিলে তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে বিভিন্ন জেলায়, যার ফলে প্রচণ্ড অস্বস্তিতে ভুগছেন বিভিন্ন বয়সীরা।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানায়, দেশের ছয়টি জেলার ওপর দিয়ে বইছে তীব্র দাবদাহ।
এমন বাস্তবতায় অধিদপ্তরের এক আবহাওয়াবিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এ সময়ে এমন গরম অস্বাভাবিক কি না। জবাবে খন্দকার হাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অ্যাবনরমাল (অস্বাভাবিক) কোন সেন্সে বলবেন? আমাদের দেশে ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রারও রেকর্ড আছে কিন্তু। এখন তো গ্রীষ্মকাল। মার্চ, এপ্রিল, মে এই তিন মাস গ্রীষ্মকাল। এ সময়ে বৃষ্টিপাত হলে তাপমাত্রাটা কম হবে।
‘বৃষ্টিপাত যখনই বন্ধ হবে, তাপমাত্রাটা বাড়বে, তবে এখন তাপমাত্রা যেটা স্বাভাবিক কথার কথা, তার চাইতে বেশি আছে। দিন এবং রাতের তাপমাত্রা দুইটাই বেশি আছে স্বাভাবিকের চাইতে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় তিন থেকে চার ডিগ্রি বেশি আছে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় এক থেকে দুই ডিগ্রি বেশি আছে।’
দুপুর দুইটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় অ্যাকুওয়েদার ডটকম নামের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৫১ শতাংশ।
একই সময়ে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাওয়া অঞ্চল চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যেখানে বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ।
তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ার বিষয়ে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘জলবায়ুগতভাবে কিন্তু এপ্রিল মাসটা আমাদের উষ্ণতম মাস। এ সময়ে দিনের স্থায়িত্বটা বড় (বেশি)। সূর্য মাথার ওপর। তা ছাড়া বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। বৃষ্টিপাত যে এলাকাগুলোতে, সেখানে তাপমাত্রা কিছুটা কমছে।
‘আর যে জায়গাগুলোতে বৃষ্টিপাত নাই, সেই জায়গাগুলোতে কিন্তু আপনার তাপমাত্রার ইয়েটা বেশি হচ্ছে। গরমটা বেশি হচ্ছে।’
গরম বাড়ার পেছনে মনুষ্যসৃষ্ট কিছু কারণ তুলে ধরে এ আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে আমাদের জলাশয়গুলো ভরাট হচ্ছে; গাছগাছড়া কমে যাচ্ছে। মানুষের এসি (এয়ার কন্ডিশনার), ফ্রিজ ব্যবহার বেশি হয়ে যাচ্ছে।’
তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কোনো সম্পর্ক আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানুষ ক্লাইমেট চেঞ্জে (জলবায়ু পরিবর্তন) অবদান রাখছে। ক্লাইমেট চেঞ্জ তো আছেই।’
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চারি আনি পাড়া এলাকায় বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ৩৫ বছর বয়সী নাজমা আক্তার একই এলাকার আবদুল মান্নানের স্ত্রী। তিনি চার সন্তানের মা।
নান্দাইল মডেল থানার ওসি আবদুল মজিদ বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া শেষে রাতে পান কিনতে বের হন নাজমা আক্তার। বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় পরিবারের লোকজন তার খোঁজ শুরু করলে সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে ধানক্ষেতে ওই নারীকে ক্ষতবিক্ষত উলঙ্গ অবস্থায় মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা।
‘পরে খবর পেয়ে নাজমার পরিবারের লোকজন গিয়ে তাকে শনাক্ত করে। এরপর পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চাঁন মিয়া, ফাহিম ও নাঈম নামে তিন যুবককে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। নাজমার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
আরও পড়ুন:গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে গরু চুরি মামলার এক আসামির ছুরিকাঘাতে ওই মামলার বাদী হত্যার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তি মারা যান।
নিহত রাহিদুল ইসলাম বাবু (৩২) উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের পূর্বগোপালপুর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে।
বুধবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নে আমলাগাছি-ঢোলভাঙা সড়কের বেলতলা নামক এলাকায় হামলা চালিয়ে আহত করা হয় তাকে।
মামলার জেরেই রাহিদুলকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) উদয় কুমার সাহা নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, চলতি বছরের একটি গরু চুরি মামলার বাদী ছিলেন রাহিদুল ইসলাম। আর ওই মামলর আসামি ছিলেন খলিলসহ অন্যরা।
উদয় কুমার বলেন, সেই মামলার জেরে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মহদীপুর ইউনিয়নে আমলাগাছি-ঢোলভাঙা সড়কের বেলতলা নামক এলাকায় একই মামলার আসামিরা পরিকল্পিতভাবে রাহিদুলের ওপর হামলা চালায়। ওই সময় হামলাকারীরা রাহিদুলের বুকে ছুরিকাঘাত করে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তিনি মারা যান।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক পুলিশি তদন্তে আসামিরাই রাহিদুলকে হত্যা করেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঘটনার পরপরই একজনকে আটক করা হয়েছে। চুরি মামলার মূল আসামি ও ঘটনার সাথে জড়িত খলিলসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতিও চলছে।
ঝালকাঠিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
ফারাহ গুল নিঝুম বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারের জন্য পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। এ ছাড়া যারা পঙ্গুত্বের শিকার হয়েছেন, তাদের প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা এবং আহতদের জন্য এক লাখ টাকা সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হবে।’
জেলার গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় বুধবার দুপুরে প্রাইভেটকার ও ইজিবাইককে পেছন থেকে ট্রাক ধাক্কা দেয়। এতে ১৪ জন নিহত ও কয়েকজন আহত হন।
সেতুর টোল প্লাজায় সিমেন্টবোঝাই বেপরোয়া গতির ট্রাক তিনটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও একটি প্রাইভেট কারকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ১২ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। হাসপাতালে নেয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়।
পাবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) আসনের সংসদ সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মকবুল হোসেনের দুই ছেলের রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে।
বাবা এমপি হওয়ার কারণেই দুই ভাই এখন দুটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে দাবি করেছেন জেলার রাজনৈতিক নেতাদের অনেকে। তবে এমপি মকবুল হোসেন বলছেন, এই চাওয়া নেতা-কর্মীদের।
এমপি মকবুলের দুই ছেলের একজন ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র গোলাম হাসনায়েন রাসেল মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, পুরো উপজেলায় নিজের পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে বড় ছেলে রাসেলকে উপজেলা নির্বাচনে এবং ছোট ছেলে ইবনুল হাসান শাকিলকে পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাতে যাচ্ছেন এমপি মকবুল।
এ নিয়ে উপজেলার নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে আশঙ্কা ভোটার ও নেতাকর্মীদের।
বুধবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পত্র দিয়ে ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করেন এমপি মকবুল হোসেনের বড় ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনায়েন রাসেল। এরপরই তিনি আসন্ন ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভাঙ্গুড়া উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা-কর্মী জানান, নিজ উপজেলার রাজনীতি নিজেদের কবজায় রাখার জন্য সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন তার বড় ছেলেকে প্রথমে ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র এবং পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করেছেন। ছোট ছেলে ইবনুল হাসান শাকিলকে করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
তারা বলছেন, এবার বড় ছেলে রাসেলকে পৌর মেয়র থেকে সরিয়ে করতে যাচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। আর ছোট ছেলে ইবনুল হাসান শাকিলকে পৌরসভার মেয়র নির্বাচন করাতে যাচ্ছেন।
নেতা-কর্মীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কাউকে সমর্থন না দিতে ও নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার না করতে এমপি-মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এমপি মকবুল হোসেনের সমর্থনেই তার বড় ছেলে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এমপিপুত্র ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় আর কেউই প্রার্থী হতে সাহস পাচ্ছেন না। সে ক্ষেত্রে এমপিপুত্র বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারেন।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. বাকিবিল্লাহ বলেন, ‘আমি নির্বাচনে প্রার্থী হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এমপির ছেলে যেখানে প্রার্থী হচ্ছে, সেখানে নির্বাচন কোনোভাবেই প্রভাবমুক্ত হবে না। আমি এ কারণে প্রার্থী হচ্ছি না।’
ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি লোকমান হোসেন বলেন, ‘এসব বলে কী লাভ বলেন। দলের নির্দেশনা খোদ এমপি সাহেব মানেন না। তার ভয়ে কোনো নেতা কিছু বলে সাহস পায় না। নেতাদের ডেকে এমপি বলেন দেন- তোমরা লোকজন নিয়ে আমার বাড়িতে গিয়ে আমার ছেলেকে তোমাদের জন্য চাইবে। ব্যস, এক দুই শ মোটরসাইকেল নিয়ে নেতা-কর্মী তার বাড়িতে গিয়ে তার ছেলেকে প্রথমে মেয়র হিসেবে চান, তিনি অনুমতি দেন। এবারও একইভাবে ছেলেকে উপজেলা চেয়ারম্যান করার অনুমতি দিয়েছেন। এটা তার কৌশল।’
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র পদ থেকে সদ্য পদত্যাগী ও চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম হাসনায়েন রাসেল বলেন, উপজেলার সব নেতাকর্মী এমপি সাহেবের বাড়িতে গিয়ে আমাকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করতে অনুরোধ করেছেন, এভাবেই জনগণের চাপেই আমি প্রার্থী হয়েছি। আপাতত উপজেলা নির্বাচন নিয়েই ব্যস্ত আছি।
ছোট ভাই শাকিল পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা তো জনগণ নিয়ে থাকি, জনগণ যদি চাই তাহলে হবে। যদি আমাদের দ্বারা ভালো কিছু পেয়ে থাকে তাহলে তো জনগণ আমাদেরকে বেছে নেবেই। জনগণ যেটা মেনে নেবে সেটার বাইরে তো আমরা কিছু করতে পারবো না।
এ বিষয়ে পাবনা-৩ আসনের এমপি মকবুল হোসেন বলেন, ‘উপজেলার সব ইউনিটের নেতা-কর্মী আমার বাড়িতে এসে রাসেলকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে চেয়েছে। আমি বাধ্য হয়ে তাদের বলেছি। তোমরা যেহেতু তাকে প্রার্থী হিসেবে চাচ্ছো তাহলে নেও। কিন্তু আমি কাউকে কিছু বলতে পারব না। ছোট ছেলেকে মেয়র পদে নির্বাচন করার মন চাইবে না, কারণ দুই ছেলেই যদি জনপ্রতিনিধি হয় তাহলে সংসার দেখবে কে?’
ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে চায় বাংলাদেশ।
প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে বুধবার রাজধানীর পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে দেয়া বক্তব্যে খাদ্যে ঘাটতি পূরণে সরকারের ব্যবস্থা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, “১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকার গঠন করি, আমরা দেখলাম ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্যঘাটতি। আর তা ছাড়া প্রাণী, পশুর খাদ্যের তো অভাবই। এই অবস্থায় আমরা যাত্রা শুরু করেছিলাম। তখন রিজার্ভ মানিও তেমন ছিল না। আবার ইনফ্লেশনও (মূল্যস্ফীতি) অনেক বেশি ছিল।
“এশিয়াতে তখন খাদ্যমন্দা। ওই অবস্থায় যাত্রা শুরু করে আমাদের লক্ষ্য ছিল যে, আমরা কারও কাছে হাত পেতে চলব না। নিজের ফসল নিজে উৎপাদন করব। তার কারণ হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সবসময় বলতেন যে, ‘আমরা কারও কাছে ভিক্ষা চাইব না। কারণ ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না।’”
তিনি বলেন, ‘ভিক্ষুক জাতির কখনও ইজ্জত থাকে না। কাজেই আমরা মান-সম্মান নিয়েই বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে চাই। আর সেই আদর্শ নিয়েই কিন্তু আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছি।’
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ‘আসমানে যাইওনারে বন্ধু ধরতে পারব না তোমায়’সহ অনেক জনপ্রিয় গানের গীতিকার, সুরকার শিল্পী মতিউর রহমান হাসান ওরফে পাগল হাসান।
সুনামগঞ্জের ছাতকের সুরমা ব্রিজ এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারান তিনি।
পাগল হাসান অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন। ওই সময় তার সঙ্গে থাকা ছাত্তার নামের একজনের মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনায় অটোরিকশার চালকসহ তিনজন গুরুতর আহত হন।
প্রাণ হারানো পাগল হাসানের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকের শিমুলতলা গ্রামে।
পুলিশের ভাষ্য, দোয়ারবাজার থেকে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিল অটোরিকশাটি। খালি বাসটি গোবিন্দগঞ্জ থেকে ছাতক যাচ্ছিল। পথে সুরমা ব্রিজ এলাকায় অটোরিকশায় ধাক্কা দেয় বাসটি। ওই সময় পাগল হাসান ও ছাত্তার ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অন্য তিন যাত্রী গুরুতর আহত হন।
ছাতক থানার ওসি শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে ছাতক ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার জালাল আহমদ বলেন, ‘ঘটনাস্থলেই পাগল হাসানসহ আরেকজন মারা যান। আমরা পুলিশের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছি।
‘আহত তিনজনের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
মন্তব্য