× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলে শেষ হচ্ছে নেতানিয়াহুর এক যুগের শাসন?
google_news print-icon

ইসরায়েলে শেষ হচ্ছে নেতানিয়াহুর শাসন?

ইসরায়েলে-শেষ-হচ্ছে-নেতানিয়াহুর-শাসন?
রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে রোববার পার্লামেন্টে যান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এএফপি
মধ্যপন্থি ইয়ার ল্যাপিডের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন কট্টর ডানপন্থি নাফতালি বেনেট। নতুন জোট সরকার গঠনের জন্য ল্যাপিডের হাতে বুধবার পর্যন্ত সময় আছে। এ প্রচেষ্টা সফল হলে ইসরায়েলে শেষ হবে নেতানিয়াহুর ১২ বছরের শাসন।

ইসরায়েলে প্রস্তাবিত নতুন ঐকমত্যের সরকার গঠন হলে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

এমন পরিস্থিতিতে জোট সরকার গঠন দেশটির নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে সতর্ক করেছেন লিকুদ পার্টির প্রধান।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, মধ্যপন্থি ইয়ার ল্যাপিডের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন কট্টর ডানপন্থি নাফতালি বেনেট। এই দুই নেতার মধ্যে সম্ভাব্য চুক্তিতে সমর্থন না দিতে ডানপন্থি রাজনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।

নতুন জোট সরকার গঠনের জন্য ল্যাপিডের হাতে বুধবার পর্যন্ত সময় আছে। এ প্রচেষ্টা সফল হলে ইসরায়েলে শেষ হবে নেতানিয়াহুর ১২ বছরের শাসন।

২০০৯ সাল থেকে টানা প্রধানমন্ত্রী পদে আছেন নেতানিয়াহু। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্তও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

সব মিলিয়ে ইসরায়েলের ৭৩ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী ৭১ বছর বয়সী নেতানিয়াহু।

দুর্নীতির অভিযোগে বিচার চলছে নেতানিয়াহুর। চলতি বছরের মার্চের সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হন তিনি।

গত দুই বছরে ইসরায়েলে চারটি সাধারণ নির্বাচন হয়। কোনোবারই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো দল।

জোট সরকার গঠনেও কোনো দল সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি বলে প্রতিবারই নতুন সাধারণ নির্বাচনের দিকে ধাবিত হয়েছে দেশটি।

এ অবস্থায় ইসরায়েলের প্রায় একটি প্রজন্মকে নেতৃত্ব দেয়া নেতানিয়াহু রোববার বলেন, ‘বামপন্থি জোট সরকার ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যতের প্রতি হুমকি। এ ধরনের সরকারের হাতে দেশের নেতৃত্ব তুলে দেবেন না।’

বেনেটের বিরুদ্ধে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ তুলেছেন নেতানিয়াহু। ল্যাপিডের সঙ্গে জোট বাঁধবে না বলে শুরুতে জানিয়েছিলেন বেনেট। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জোটবাঁধার আলোচনা শুরু ‘শতাব্দীর সবচেয়ে বড় প্রতারণা’ বলে মন্তব্য করেছেন নেতানিয়াহু।

এর আগে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে জোট সরকার গঠনে দলীয় আলোচনা শুরুর ঘোষণা দেন ৪৯ বছর বয়সী বেনেট।

তিনি বলেন, ‘নেতানিয়াহু এখন আর ডানপন্থি সরকার গঠনের চেষ্টা করছেন না। কারণ তিনি জানেন যে ডানপন্থিরা নিজেদের অবস্থান হারিয়েছেন। এখন নিজের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তির ওপর নির্ভর করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার চেষ্টা করছেন তিনি।

‘এ অবস্থায় বন্ধু ইয়ার ল্যাপিডের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনে যা করতে হয় আমি করব।’

এ ঘোষণার আগেই ইসরায়েলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রস্তাবিত চুক্তি অনুযায়ী আপাতত নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন বেনেট। পরে পালাক্রমে এ দায়িত্ব নেবেন ৫৭ বছর বয়সী ল্যাপিড।

চুক্তির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।

প্রস্তাবিত এ জোটে ইসরায়েলের ডান, বাম ও মধ্যপন্থিরা এক কাতারে আসবেন। আদর্শগত অবস্থান এক না হলেও নেতানিয়াহুকে উৎখাত করার লক্ষ্যে জোটবদ্ধ হতে মরিয়া দলগুলো।

নেতানিয়াহু জোট সরকার গঠনে ব্যর্থ হওয়ার পর জোট গঠনে ২ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয় সাবেক অর্থমন্ত্রী ল্যাপিডকে।

সবশেষ নির্বাচনে নেতানিয়াহুর ডানপন্থি লিকুদ পার্টি সবচেয়ে বেশি আসন পায়। দ্বিতীয় সর্বাধিক আসন পায় ল্যাপিডের ইয়াশ আতিদ পার্টি।

অন্যদিকে ১২০ আসনের পার্লামেন্ট নেসেটে কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি আসনে জয় পেয়ে শক্ত অবস্থানে আছে বেনেটের দলও।

ল্যাপিড ও বেনেটের দল ঐক্যবদ্ধভাবে জোট সরকার গঠনে সক্ষম।

ল্যাপিডের দল সরকার গঠনে প্রাথমিকভাবে ২৮ দিনের সময় পেলেও গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল-হামাস সহিংসতার কারণে ব্যাহত হয় সে প্রক্রিয়া।

১০ থেকে ২০ মে পর্যন্ত সহিংসতায় ৬৫ শিশুসহ প্রাণ যায় ২৬০ জনের বেশি ফিলিস্তিনির। আহত হয় দুই হাজারের বেশি মানুষ। গৃহহীন হয় এক লাখের বেশি।

ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে আরব ও ইহুদিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

এ অবস্থায় ল্যাপিডের সঙ্গে সরকার গঠনের আলোচনা বাতিল করে দেয় সম্ভাব্য জোটে অংশ নিতে চাওয়া আরব-ইসলামিক রাম পার্টি।

গত শনিবার বেনেট ও অন্য এক নেতাকে তিন ভাগে প্রধানমন্ত্রিত্ব ভাগ করে নেয়ার প্রস্তাব দেয় নেতানিয়াহুর দল। সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দলগুলো।

আরও পড়ুন:
পাসপোর্টে ইসরায়েল শব্দ বাদ দেয়ায় ক্ষোভ ফখরুলের
বাংলাদেশিরা ইসরায়েলে যেতে পারবে না যে কারণে
আমরা ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিইনি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
The victims live with the painful memories of Rana Plaza

রানা প্লাজার দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন ক্ষতিগ্রস্তরা

রানা প্লাজার দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন ক্ষতিগ্রস্তরা রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক শ্রমিক এসেছেন সেদিনের সেই স্মৃতিকে মনে করে। ছবি: নিউজবাংলা
শ্রমিক ও তাদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর দাবি, ১১ বছর আগে সেদিন পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের কারখানায় কাজ করতে বাধ্য করিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। ঘটনার এতদিন পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত হতাহতদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মালিক কিংবা সরকারপক্ষ।

ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা ধসের ভয়াবহ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। ৯ তলা ভবনের পুরোটাই ধসে পড়ে আহত হয়েছেন অনেক শ্রমিক। পঙ্গুত্ব নিয়ে বছরের পর বছর ধরে মানবেতর দিনযাপন করছেন তাদের অনেকে।

শারীরিক যন্ত্রণায় অসুস্থ হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মারা গেছেন কেউ কেউ। যারা বেঁচে আছেন এখনও তাদের তাড়া করে দুঃসহ সেদিনের স্মৃতি। পুনর্বাসন আর ক্ষতিপূরণের আশায় বুক বেঁধে আছেন রানা প্লাজার সেই ক্ষতিগ্রস্তরা।

শ্রমিক ও তাদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর দাবি, ১১ বছর আগে সেদিন পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের কারখানায় কাজ করতে বাধ্য করিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। ঘটনার এতদিন পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত হতাহতদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মালিক কিংবা সরকারপক্ষ।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনার ৫টি পোশাক কারখানার ১ হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক মারা যান। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রায় ২ সহস্রাধিক শ্রমিক।

কী ঘটেছিল সেদিন, সে কথা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন আহত শ্রমিক শিলা বেগম। তিনি বলেন, ২৩ এপ্রিল সকালে কারখানায় আসার পর মালিকপক্ষ ছুটি দিয়ে দেয়। আবার পরদিন ২৪ এপ্রিল বিকেলে শিপমেন্ট আছে জানিয়ে কারখানায় বাধ্যতামূলক আসার কথা জানিয়ে মাইকিং করে। না আসলে ওভারটাইমের টাকা কেটে নেয়ার কথা বলে মালিকপক্ষ।

তিনি বলেন, ২৪ এপ্রিল সকালে কারখানায় সব শ্রমিক আসার পর সকাল পৌনে ৮টার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারটের চালু করা হয়। এরপরই হঠাৎ বিকট শব্দে পুরো কারখানা ধুলোয় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। ওই সময় আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। যখন জ্ঞান ফেরে তখন আমি বিশাল আকৃতির বীমের নিচে আটকে পড়ে আছি।

শিলা বেগম বলেন, উদ্ধারকারীরা এরপর আমাকে বাঁচাতে পারলেও গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি। অপারেশনের পর এত বছর ধরে নানা শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছি। ওই সময় সরকার ও বিদেশি বায়ারদের সামান্য সহযোগিতা পেলেও তা চিকিৎসার পেছনেই শেষ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সরকার কিংবা মালিকপক্ষ দীর্ঘ ১১ বছর হয়ে গেলেও আমাদের কোনো খোঁজ রাখেনি। এ রকমভাবে বেঁচে থাকার চাইতে সেদিন মরে গেলেও অনেক শান্তি পেতাম। অন্তত এত কষ্ট বয়ে বেড়াতে হতো না। অর্থাভাবে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে হতো না। আমরা দ্রুত আমাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন চাই।

মনির হোসেন নামে ষষ্ঠ তলায় কাজ করা আরেক শ্রমিক বলেন, ঘটনার দিন আমিসহ আরও সাতজন ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকা পড়েছিলাম। পাশেই আরও দুই-তিনজন আটকে পড়ে বাঁচার আকুতি করছিল। সেই দৃশ্য আমি কোনদিনও ভুলতে পারব না। ওই ঘটনায় আমার কোমড়ের হাড় ভেঙ্গে যায়। শরীরের অনেক জায়গায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হই।

তিনি বলেb, রানা প্লাজা ভবন ধসের ১১ বছর পার হয়ে গেলেও আমি ক্ষতিপূরণ পাইনি। সাহায্য হিসেবে যে অর্থ পেয়েছিলাম তা চিকিৎসার পেছনেই খরচ হয়ে গেছে। শুধু ২৪ এপ্রিল আসলেই আমাদের খোঁজ করে সাংবাদিকরা। তা ছাড়া আর কেউ আমাদের খবরও নেয় না। আমরা দুঃসহ যন্ত্রণার জীবন নিয়ে বেঁচে থেকেও যেন মরে গেছি।

রানা প্লাজার দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন ক্ষতিগ্রস্তরা
সেদিনের সেই ভয়াবহ স্মৃতি স্মরণ করে দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখছেন শ্রমিকরা। ছবি: নিউজবাংলা

গুরুতর আহত ইয়ানুর আক্তার নামে এক শ্রমিক বলেন, আমার বয়স যখন ১৩ বছর তখন পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে বাধ্য হয়েই রানা প্লাজায় চাকরি নিয়েছিলাম। চতুর্থ তলার একটি কারখানায় হেলপার পদে কাজ করতাম। ছয় ভাই-বোন ও মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাবো ভেবেছিলাম। কিন্তু সেদিনের ঘটনা আমার জীবন থেকে সব কেড়ে নিয়ে গেছে। ভবনের নিচে চাপা পড়ার কারণে আমার হাত ও পায়ে ছয়টি অপারেশন করতে হয়েছে। এরপর থেকে কাজ তো দূরের কথা স্বাভাবিক কাজও করতে পারি না। তারপরও পরিবারকে বাঁচাতে কাজ খুঁজে যাচ্ছি। যখন যা পাই তাই করি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার ১১ বছর পার হয়ে গেল এখনও আমাদের পুনর্বাসনে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। প্রতিবছর এই দিনে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে আসি আমাদের দুঃখের কথাগুলো জানানোর জন্য। কিন্তু মিডিয়ায় সেগুলো প্রচার হলেও তা কেউ শোনে না বলে আমার মনে হয় না। আমাদের চোখের পানির মূল্য যেন কারও কাছে নেই। অভিশপ্ত এই জীবন নিয়ে বাঁচা আর সম্ভব হচ্ছে না। একে তো শারীরিক যন্ত্রণা। তার উপর মাঝে মধ্যেই সেই ভয়ানক স্মৃতি মনে হলে ঘুমের মধ্যে আঁতকে উঠি।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, বাংলাদেশে এই যে, এত বড় ঘটনা ঘটল। বিশ্বের মধ্যে এত বড় ট্র্যাজেডি। এই ঘটনায় আইন অনুযায়ী গার্মেন্টস মালিকরা দায়ী থাকে। কিন্তু আমরা দেখছি যে, গার্মেন্টস মালিকরা দায়ী থাকলেও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে এবং তাদের ব্যাপারে কোনো আওয়াজ নেই। তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থাও নেই।

তিনি বলেন, শুধু ভবন মালিক রানা শাস্তি পাচ্ছে, রানা জেলে আছে। কিন্তু যারা যারা গার্মেন্টসের মালিক তারা সবাই বাইরে। তারা হয়তো তাদের ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করছে। অথচ ওই কারখানাতে ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করত। তারা হয়ত বড় ব্যবসা করছে। মালিকরা ব্যবসা করছে। শুধু এটাতে ভিকটিম হয়েছে যারা শ্রমিক তারা। চিকিৎসা, বিচারের ও পুনর্বাসনের দাবিতে তারা মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, ১১ বছরেও এর কোনো প্রতিকার হয়নি। উপরন্তু অনেক ঘটনা আছে, মামলা আছে সেসব মামলায় কিন্তু দ্রুত শাস্তি হয়, বিচার হয়। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করা হয়। কিন্তু এই রানা প্লাজার এত বড় ঘটনার পরেও আমরা দেখছি, বিচার কার্যক্রম শেষ হয়নি এবং এটার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা শাস্তি পায়নি। আদৌ হবে কি না তার নিশ্চয়তা নেই।

গার্মেন্টস খাতে এর প্রভাব পড়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা গার্মেন্টস সেক্টরে প্রভাব পড়বে অবশ্যই। গার্মেন্টসের মালিকরা চাচ্ছে যে, গার্মেন্টসে যদি কাজ করতে এসে কোনো শ্রমিক মারা যায় তাহলে এর জন্য তার কোনো শাস্তি হবে না। বিচারের আওতায় আনা হবে না। এর আগেও তাজরিনসহ বিভিন্ন গার্মেন্টসে দুর্ঘটনা ঘটেছে। মানে মানুষের যে বিচার পাওয়ার যে অধিকার সেই জায়গাটা কিন্ত হারিয়েছে। শ্রমিকরা কর্মস্থলে নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারছে না।

খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যারা যারা আমাদের প্রডাক্টটা ব্যবহার করে তারাও কিন্তু আওয়াজ তুলছে। এখনও চলছে যাতে কর্মপরিবেশ নিশ্চিত হয়। কিন্তু আওয়াজ ওঠার পরও আমরা দেখছি যে যথাযথ ব্যবস্থা কিন্তু নেয়া হচ্ছে না। যার কারণে এই ধরনের পরিস্থিতি হলে আমাদের দেশের গার্মেন্টসের এক্সপোর্টে কিন্তু এই প্রভাবটা পড়বে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Prime Ministers red carpet reception in Thailand

প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে, লাল গালিচা সংবর্ধনা

প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে, লাল গালিচা সংবর্ধনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সফরকালে থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরে ব্যাংকক পৌঁছালে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুপুর ১টা ০৮ মিনিটে (স্থানীয় সময়) পৌঁছালে থাই উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল তাকে স্বাগত জানান। খবর ইউএনবির

বিমানবন্দরে তাকে স্ট্যাটিক গার্ড অফ অনার এবং ১৯ বার গান স্যালুট দেয়া হয়।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

কর্মকর্তারা জানান, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতেই এ সফর।

১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর এ প্রথম বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সফর এটি।

২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সফরকালে থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে লেটার অফ ইনটেন্টসহ বেশ কয়েকটি সহযোগিতা নথি সই হবে।

‘দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি, জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সম্পর্ক সম্প্রসারণে পর্যটন খাতে সহযোগিতা ও শুল্ক সম্পর্কিত পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আরও ২টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সহযোগিতা চাইবে জানিয়ে হাছান মাহমুদ জানান, নৌ সংযোগের বিষয়েও আলোচনা হবে।

২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হবে। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে নথি সই শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন দুই প্রধানমন্ত্রী।

সফরকালে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাকলাওচাওহুয়া এবং ও রানি সুথিদা বজ্রসুধাবিমালাক্ষণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে এ বহুপক্ষীয় সফরে ২৫ এপ্রিল কমিশন ফর ইউএনএসকাপের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিয়ে সেখানে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একই দিনে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়া আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

‘লিভারেজিং ডিজিটাল ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অষ্টম অধিবেশনটি টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ অ্যাজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে অঞ্চলব্যাপী সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ জোরদার করার একটি সুযোগ হবে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটাল উদ্ভাবন কীভাবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে অবদান রাখতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারি নেতা ও মন্ত্রী এবং অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারদের এ অধিবেশনে একত্রিত করবে।

আরও পড়ুন:
দেশীয় খেলাকে সমান গুরুত্ব দিন: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না: প্রধানমন্ত্রী
মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির দিকে চোখ রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Istiska prayer in Pabna for rain

বৃষ্টির জন্য পাবনায় ইসতিসকার নামাজ

বৃষ্টির জন্য পাবনায় ইসতিসকার নামাজ তীব্র গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য বুধবার সকালে খোলা আকাশের নিচে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেন পাবনাবাসী। ছবি: নিউজবাংলা
নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বয়ানে মাওলানা আবদুস শাকুর বলেন, ‘পৃথিবীর মাটি যখন শুকিয়ে যায় বা অনাবৃষ্টি ও খরা দেখা দেয় এবং কূপ ও ঝরনা পানি কমে যায় অথবা নদী শুকিয়ে যায় তখন ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়। খোলা মাঠে জামায়াতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এই নামাজে কোনো আজান বা ইকামত নেই।’

অতি তীব্র দাবদাহ, সঙ্গে কড়া রোদ আর অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পাবনাসহ এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবন। অনাবৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে আম, লিচু ও ফসল।

তীব্র এ গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে পাবনা জেলা শহরের টার্মিনাল এলাকার দারুল আমান ট্রাস্টের ক্যাম্পাসে খোলা আকাশের নিচে বুধবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে ইসতিসকার নামাজ ও দোয়া করেছেন পাবনাবাসী।

নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড খরা থেকে রেহাই পেতে মহান আল্লাহর কাছে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন পাবনা ইসলামীয়া ফাজিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক ও মসজিদে আত তাকওয়ার পেশ ইমাম মাওলানা আবদুস শাকুর।

তাওবাতুন নাসুহা বা একনিষ্ঠ তাওবার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টি কামনা করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করা হয়। এ সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্তিসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ প্রার্থনাও করা হয়।

নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বয়ানে আবদুস শাকুর বলেন, ‘পৃথিবীর মাটি যখন শুকিয়ে যায় বা অনাবৃষ্টি ও খরা দেখা দেয় এবং কূপ ও ঝরনা পানি কমে যায় অথবা নদী শুকিয়ে যায় তখন ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়। খোলা মাঠে জামায়াতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এই নামাজে কোনো আজান বা ইকামত নেই।’

এদিকে তীব্র গরমের মধ্যে ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার পাবনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস বলছে এ তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুন:
দাবদাহে পুড়ছে জীবন, পুড়বে আরও
এবার ভারি বর্ষণের কবলে সৌদি আরব, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট
বৃষ্টি হয়তো হবে, তবে গরম কমবে না
আমিরাতে ৭৫ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত, নিহত অন্তত ১
তীব্র গরমের পর স্বস্তির বৃষ্টি

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
There will be no gas in Shanirakhra Jurain from noon

শনির আখড়া-জুরাইনে দুপুর থেকে গ্যাস থাকবে না

শনির আখড়া-জুরাইনে দুপুর থেকে গ্যাস থাকবে না ফাইল ছবি
আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে জানিয়ে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস গ্যাস।

গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি কাজের জন্য বুধবার তিন ঘণ্টা রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় গ্যাস থাকবে না।

এদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করবে।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, যেসব এলাকায় সব শ্রেণির গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।

আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে জানিয়ে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস গ্যাস।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Arafat Islam is the new director of RABs media wing

র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের নতুন পরিচালক আরাফাত ইসলাম

র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের নতুন পরিচালক আরাফাত ইসলাম কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। ছবি: র‌্যাব
কমান্ডার আরাফাত ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রেষণে র‌্যাবে যোগ দেন। তিনি ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত র‌্যাব-১৩-এর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

বাহিনীটি বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কমান্ডার আরাফাত ইসলাম, (এনডি), বিপিএম (সেবা), এনইউপি, পিসিজিএম, বিএন অদ্য ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ তারিখে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি কমান্ডার খন্দকার আল মঈন (সি), বিপিএম (বার), পিএসসি, বিএনের স্থলাভিষিক্ত হলেন।

‘কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একজন চৌকস অফিসার। তিনি ১৯৯৫ সালে ৩৫তম বিএমএ লং কোর্সের সাথে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই এক্সিকিউটিভ ব্রাঞ্চে কমিশন লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন নৌ বাহিনীতে ছোট ও মাঝারি বিভিন্ন জাহাজের অধিনায়ক হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। কমান্ডার আরাফাত ইসলাম দেশ ও বিদেশে নৌবাহিনীর বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।’

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কমান্ডার আরাফাত ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রেষণে র‌্যাবে যোগ দেন। তিনি ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত র‌্যাব-১৩-এর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আরও পড়ুন:
বান্দরবানে সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজার উদ্ধার
ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে উদ্ধার ৬ বন্যপ্রাণী
ময়মনসিংহে তিন হাসপাতাল এক ক্লিনিক সিলগালা
ডিসি এসপি র‌্যাবের সিও পরিচয়ে টাকা হাতিয়ে নিত চক্রটি
নওগাঁয় ৭২ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেপ্তার

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Prime Minister leaves Dhaka for Thailand

থাইল্যান্ডের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ

থাইল্যান্ডের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার সকালে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি। খবর বাসসের

প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটির অবতরণের কথা রয়েছে।

২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার থাইল্যান্ড সফর উপলক্ষে সোমবার তার মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি একটি দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় উভয় সফর।’

তিনি বলেন, এই সফর উভয় পক্ষের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এতে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের (বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড) মধ্যে সহযোগিতার নতুন জানালা উন্মোচিত হবে।

গত জানুয়ারিতে সরকার গঠনের পর এটিই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।

সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড দুই দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনার অভিপ্রায়পত্রসহ বেশ কিছু সহযোগিতার নথিতে স্বাক্ষর করবে।

বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড সরকারী পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি, শক্তি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য পর্যটন খাতে সহযোগিতা এবং শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আরও দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার সম্ভাবনা রয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই সফর বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’ পর্যালোচনার সুযোগ তৈরি করবে।

সফরকালে হাছান বলেন, আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার জন্য বাংলাদেশের আবেদনের বিষয়টি ঢাকা জোরালোভাবে উত্থাপন করবে।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য হিসেবে থাইল্যান্ডের প্রতি তার তাগিদ পুনর্ব্যক্ত করবে।

তিনি বলেন, যেহেতু থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার উভয়ই আসিয়ানভুক্ত, তাই রোহিঙ্গা ইস্যুটি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

হাছান বলেন, উচ্চ পর্যায়ের সফরে বিনিয়োগ, পর্যটন, জ্বালানি, স্থল ও সমুদ্র সংযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড যৌথ কার্যক্রমের মাধ্যমে পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারে এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন, বৌদ্ধ সার্কিট কর্মসূচি প্রচারের পাশাপাশি ভ্রমণ ও অবকাশ শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দক্ষতা বিনিময় করতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, পর্যটন শিল্পে এই সহযোগিতা উভয় দেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।

২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে থাই প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন স্বাগত জানাবেন এবং তাকে একটি আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) একান্ত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন, নথিতে স্বাক্ষরে উপস্থিত থাকবেন, একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং এরপর সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে থাই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া একটি রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।

সফরকালে, প্রধানমন্ত্রী রাজপ্রাসাদে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাক্লাওচাওয়ুহুয়া এবং রানী সুথিদা বজ্রসুধাবিমলালক্ষণের রাজকীয় দর্শকদের সঙ্গে থাকবেন।

প্রধানমন্ত্রী ২৫ এপ্রিল ইউএনএসক্যাপ-এর ৮০ তম অধিবেশনে যোগদান করবেন এবং সেখানে ভাষণ দেবেন।

একই দিনে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল এবং এসক্যাপের নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়াহ আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

‘লিভারেজিং ডিজিটাল ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৮০তম অধিবেশনটি টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে অঞ্চলব্যাপী সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ জোরদার করার একটি সুযোগ হবে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটাল উদ্ভাবন কীভাবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারি নেতা ও মন্ত্রী এবং অন্যান্য মূল অংশীজনদের এই অধিবেশনে একত্রিত করা হবে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
21 children who lost their parents in the Rana Plaza collapse are growing up in Orca Homes

রানা প্লাজা ধসে বাবা-মা হারানো ২১ শিশু বেড়ে উঠছে ‘অরকা হোমসে’

রানা প্লাজা ধসে বাবা-মা হারানো ২১ শিশু বেড়ে উঠছে ‘অরকা হোমসে’ গাইবান্ধার ‘অরকা হোমস’-এ বেড়ে উঠছে শিশুরা। ছবি: নিউজবাংলা
দুর্ভাগা ২১ শিশু, কিশোর-কিশোরী মমতার আশ্রয়ে বেড়ে উঠছে গাইবান্ধার ‘অরকা হোমস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। কেউ হারিয়েছে বাবাকে, কেউ বা মাকে। কেউ কেউ আবার বাবা-মা উভয়কে হারিয়ে একেবারেই হয়েছে নিঃস্ব। কারও কারও বাবা-মা আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন আজীবনের জন্যও।

ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর পূর্ণ হলো। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটেছিল বাংলাদেশ তথা এশিয়ার অন্যতম বড় এই শিল্প দুর্ঘটনা।

সেদিন অত্যন্ত ব্যস্ততম সময় সকাল পৌনে ৯টার দিকে সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামে একটি ৯ তলা ভবন ধসে মারা যান ১ হাজার ১৭৫ জন শ্রমিক, আহত হন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকেই আজীবন পঙ্গুত্ববরণ করে বেঁচেও যেন মরে গেছেন।

লোমহর্ষক এই ট্রাজেডির সাথে সাথে আল আমিন মিয়া, জিয়াদ হোসেন, তাহমিনা আক্তার ও বীথিসহ অনেক শিশু, কিশোরের জীবনেও নেমে আসে ট্রাজেডি। সেদিনের হতাহতের অনেকের সন্তানই এখন নিঃসঙ্গতা আর অর্থাভাবে ভিন্ন ভিন্ন পথে।

এমন দুর্ভাগা ২১ শিশু, কিশোর-কিশোরী মমতার আশ্রয়ে বেড়ে উঠছে গাইবান্ধার ‘অরকা হোমস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। কেউ হারিয়েছে বাবাকে, কেউ বা মাকে। কেউ কেউ আবার বাবা-মা উভয়কে হারিয়ে একেবারেই হয়েছে নিঃস্ব। কারও কারও বাবা-মা আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন আজীবনের জন্যও। এ ছাড়াও আরও ৩১ জন এতিম-অসহায় শিশু-কিশোর-কিশোরীর ঠিকানা হয়েছে অরকা হোমসে।

বাবা-মা হারানো দেশের বিভিন্ন জেলার এসব শিশুর লেখাপড়া, খেলাধুলা ও বিনোদনসহ পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন ওল্ড রাজশাহী ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশন (অরকা)।

২০১৪ সালে অরকা হোমসের প্রথম কার্যক্রম শুরু হয় চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গায়। রানা প্লাজা ধ্বসের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই একই বছরের ২২ ডিসেম্বর গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দুরে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে অরকা-হোমস প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলাবিশিষ্ট দুটি এবং পরবর্তীতে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে চার তলাবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। যেখানে ৫২ জন এতিম অসহায় শিশু, কিশোর-কিশোরী বসবাস করছে।

এর মধ্যে ২১ জন মেয়ে ও ৩১ জন ছেলে রয়েছে। তাদের মধ্যে বর্তমানে ২১ জন রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির শিশু-কিশোর-কিশোরী রয়েছে। সেখানে তারা থেকে-খেয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৯ জন মেয়ে, ১২ জন ছেলে। এই ২১ জন ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে এখানকার ৩১ জন শিশু-কিশোরের কেউ মাধ্যমিক পেরিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়তে, কেউ কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত হতে আবার কারও কর্ম-সংস্থান হওয়ায় অরকা হোমস ছেড়ে চলেও গেছেন।

কেবল মা হারাদের মধ্যে ওই সময়ে (২০১৪) আসা সব থেকে কম বয়সী শিশু ছিল সৌরভ। সৌরভের বাড়ি জামালপুর জেলার সদর উপজেলার বলমুই পাড়া গ্রামে। সৌরভ যখন অরকা হোমসে তখন বয়স মাত্র ছয় বছর। সৌরভের বয়স এখন ১৭। সে নবম শ্রেণিতে পড়ে। ছয় বছর বয়সে আসা শিশু সৌরভের তখনকার কোনো কিছুই মনে পড়ে না। তবে, বড় হওয়ার সাথে সাথে সবই জেনে গেছে সৌরভ। প্রতিবছরই পড়ে পত্রিকার পাতায়, দেখে টেলিভিশনে। হতে হয় সাংবাদিকদের মুখোমুখি। মনে না থাকলেও যেন আজকের এই দিনে সৌরভকে তার মায়ের কথা মনে করিয়ে দেন গণমাধ্যমকর্মীরাই।

একান্ত সাক্ষাৎকারে নিউজবাংলার গাইবান্ধার এই প্রতিবেদককে সৌরভ জানায়, তারা বাবা বাদশা মিয়া কাজ করতে অক্ষম হওয়ায় তার মা কল্পনা বেগম সাভাবের একটি পোশাক শ্রমিকের কাজ নেয়। তার মা ওই ভবনের তিন তলায় পোশাক কারখানার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারান তিনি। এরপর এতিম সৌরভের জায়গা হয় গাইবান্ধার অরকা হোমসে।

রানা প্লাজা ধসে বাবা-মা হারানো ২১ শিশু বেড়ে উঠছে ‘অরকা হোমসে’
জীবনের গল্প শোনাচ্ছে শিশু সৌরভ। ছবি: নিউজবাংলা

সৌরভ বলে, ‘শুনেছি আমার যখন ছয় বছর; তখন মা রানা প্লাজায় মারা যায়। ধ্বংসযজ্ঞের ১৬ দিন পর মাকে খুঁজে পায় বাবা-ভাই ও আমার স্বজনরা। তখন নাকি মায়ের দেহ গলে পঁচে গেছিলো, কিন্তু তার গলায় থাকা পোশাক কারখানার আইডি কার্ড দেখে বাবা-মাকে চিনে নেয়।’

সৌরভ বলে, ‘মায়ের আয় করা টাকায় আমাদের পরিবার চলত। মা চলে যাওয়ার পর আমাদের ভালো চলছিল না। পরে এখানে রেখে যায় বাবা। একমাত্র বড় ভাই বিয়ে করে সংসার করছে। বাবাও দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। এখন খোঁজ-খবর রাখছে বয়স্ক (বৃদ্ধ) দাদা। এখানে আমি ভাল আছি।’

মাকে মনে পড়ে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে সৌরভ বলে, ‘সব সয়ে গেছে। ছয় বছরের শিশু থাকতেই আমি মাকে হারিয়েছি তো, এখন খুব একটা কষ্ট হয় না! তবে, প্রতিবছর এই দিনটি আসলে সাংবাদিক এবং বিভিন্নভাবে মায়ের কথা মনে পড়ে।’

কোনো স্বপ্ন আছে- এমন প্রশ্নে সৌরভ বলে, বড় হয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। আর শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে আমার মা জীবন দিয়েছেন। একটা মা হারা শিশুর আশ্রয় হয়েছে অরকা হোমসে। আমিও এরকম একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার স্বপ্ন দেখি। যেখানে অসহায়-এতিম ছেলে-মেয়েরা ছাড়াও আমাদের মতো গরীব ঘরের সন্তানেরা বিনা টাকায় খেয়ে- থেকে পড়া লেখা করতে পারেব। তারাও প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশের অসহায়দের পাশে দাঁড়াবে। এভাবেই দেশটি একদিন সহযোগিতার হাতেই পূর্ণ হবে। হয়তো তখন কেনো মাকে শ্রমিকের কাজে গিয়ে জীবন দিতে হবে না।

প্রতিষ্ঠানটির সহকারি ম্যানেজার মিল্লাত মন্ডল। তিনি প্রতিষ্ঠাকালীন সময় (২০১৪) থেকেই অরকা হোমসে আছেন। পরে সৌরভকে নিয়ে কথা হয় তার সাথে।

সৌরভের সম্পর্কে জানতে চাইলে স্মৃতিচারণ করে তিনি এই প্রতিবেদকের কাছে বলেন, ২০১৪ সালে সৌরভ যখন এখানে আসে তখন ওর বয়স ছয় বছর। তখন এটি এতো প্রসারিত ছিল না, ছিল না জনবলও। ও এখন অনেক বড় হয়েছে। এখানে আসার পর টানা এক মাসেরর বেশি সময় ধরে সৌরভ প্রায় সার্বক্ষণিক মায়ের জন্য, বাড়ির জন্য কেঁদেছে। ওকে আমরা সবাই অনেক স্নেহে মানুষ করেছি। কারণ, সব থেকে ছোট এবং কম বয়সের ছিল সেদিনের মা হারা শিশু এই সৌরভ।

তিনি আরও বলেন, মা হারা সৌরভ অনেক ভদ্র এবং নম্র। সৌরভ প্রচণ্ড মেধাবী। এখানে আসার পর পড়া-লেখা শুরু হয় সৌরভের। সৌরভ দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক ক্লাসেই প্রথম (এক রোল)। আর এবার নবম শ্রেণিতে উঠেছে সৌরভ। সৌরভ জীবনে অনেক বড় হোক।

শুধু সৌরভই নয়, আল আমিন মিয়া, জিয়াদ হোসেন, তাহমিনা আক্তার, বীথিসহ হোমসে আশ্রয় হওয়া সবারই আছে প্রায় একই রকম শোকগাথা ইতিহাস। তবে, এতিম-অসহায় এই শিশুদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করেই চলেছেন অরকা হোমস।

ক্যাম্পাসটি ঘুরে দেখা যায়, প্রকৃতির ছাঁয়াঘেরা অরকা হোমসের পুরো ক্যাম্পাস। এক ক্যাম্পাসের ভেতরেই সকল ভবন। চারতলা ভবনটিতে থাকে ছেলেরা। আর মেয়েরা থাকে তিন তলার দুটি ভবনের একটিতে। এখানে থাকা শিশু-কিশোরের সবাই পড়াশোনা করছে পাশের মুসলিম একাডেমিতে।

এখানে আছে খেলার মাঠ, লাইব্রেরি ও বিনোদনের ব্যবস্থা। এছাড়া তাদের দেখভালের জন্য রয়েছেন একজন তত্ত্বাবধায়ক, একজন ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার, নারী কেয়ারটেকারসহ আটজন। তাদের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকজন গৃহশিক্ষকও। রয়েছেন শরীরচর্চার শিক্ষক। ধর্ম শিক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। নামাজের জন্য ক্যাম্পাসের ভিতরের রয়েছে সুন্দর পাকা মসজিদ।

গাইবান্ধা অরকা হোমসের তত্বাবধায়ক মো. জাহিদুল হক নিউজবাংলকে বলেন, ‘রানা প্লাজা ধ্বসের পর ২০১৪ সালে মাত্র ৮টি বাচ্চা নিয়ে গাইবান্ধায় অরকা হোমসের যাত্রা শুরু হয়। এখন এখানে বাচ্চা রয়েছে ৫২টি। তার মধ্যে ২১ টি বাচ্চা রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির বাবা-মা হারানো; বাকিরা এতিম অসহায়। তাদের পড়াশোনা থেকে সবকিছুই আমরা দিচ্ছি। এছাড়া তাদের কর্মসংস্থান এবং মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থাও আমাদেরি দায়িত্ব।’

তিনি বলেন, ‘রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন অরকার দেশ-বিদেশে থাকা সদস্যদের আর্থিক সহায়তায়ই মূলত হোমসের ব্যয় মেটানো হয়। এছাড়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বিজিএমইএ প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ আর্থিক অনুদান দিয়ে আসছে।’

তবে, সম্প্রতি তারা (বিজিএমইএ) সেই সহযোগিতা করতে গরিমসি করছেন বলে অভিযোগ ছিল তত্ত্বাবধায়কের।

মন্তব্য

p
উপরে