গত শতকের সত্তরের দশকের ঘটনা। সেই সময়ে দেশজুড়ে ইন্দিরা গান্ধীর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের এককাট্টা করে চলেছেন ভারতের প্রবাদপ্রতিম জননেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ। ঠিক এমনই এক সময়ে কলকাতায় এসেছিলেন তিনি।
সেখানে তখন যুব কংগ্রেসের কর্মীরা তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলেন। তাদেরই মধ্যে এক মহিলা কর্মী জয়প্রকাশের গাড়ির বনেটে উঠে রীতিমতো নাচতে শুরু করলেন। সত্তর দশকের ওই যুব কংগ্রেস কর্মীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনায় খবরের শিরোনামে উঠে আসেন মমতা।
ওই দশকেই কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের হাত ধরে রাজনীতিতে হাতেখড়ি মমতার।
জীবনের শুরু থেকেই প্রতিবাদী মমতা। লড়াই তার রক্তে। তরুণ বয়সে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে জয়প্রকাশের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে তার ‘বাড়াবাড়ি’ অনেকেরই চোখে পড়ে।
১৯৮৪ সালে সিপিএমের হেভিওয়েট নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কংগ্রেস তেমন ভালো প্রার্থী পাচ্ছিল না। একে সোমনাথ, তার ওপর যাদবপুর, যা বাম দলের ঘাঁটি। ভারতের প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী তখন মমতাকেই বেছে নেন।
ভুল করেননি রাজীব। কেউই যেখানে দাঁড়ানোর পক্ষে না, সেখানে মমতা দাঁড়ালেন এবং জিতলেনও। বামদুর্গেই হারিয়ে দিলেন সোমনাথকে। পুরস্কার হিসেবে পেলেন কেন্দ্রের মন্ত্রিত্ব।
কিন্তু তিনি মমতা। মন্ত্রিত্বও বেশিদিন ভালো লাগেনি তার। তাকে করা হয় যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। রাজীব গান্ধীর স্নেহ তার ওপর সবসময়ই ছিল। তাই কংগ্রেসের অনেক নেতাই সমীহ করতেন মমতাকে।
১৯৮৯ সালে যাদবপুরে প্রথম এবং এখন পর্যন্ত শেষবারের মতো হারতে হয় মমতাকে। সিপিএমের প্রার্থী মালিনী ভট্টাচার্য ফিরিয়ে আনেন বামদুর্গ। তাতেও দমেননি মমতা। বরং আরও বেশি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ে ফেরেন তিনি।
মমতা মানেই চরম বাম বিরোধিতা। সিপিএমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠ হিসেবে কংগ্রেসের তাবড় তাবড় নেতাদের পেছনে ফেলে দুর্বার গতিতে কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের মন জয় করে নেন তিনি।
১৯৮৯ সালে হারলেও ১৯৯১ সালে কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে জেতেন মমতা। এরপর তাকে আর কেউ হারাতে পারেননি। ’৯১ পর ’৯৬, ’৯৮, ’৯৯, ২০০৪ ও ২০০৯ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
এর মধ্যে কংগ্রেসের ‘হাত’ প্রতীক ছেড়ে মমতা নিজেই তুলে নেন তৃণমূল কংগ্রেসের ‘ঘাসফুল’ প্রতীক। ১৯৯৮ সালে দলটি গঠন করেন তিনি। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, সিপিএমের সঙ্গে আপোষ করেছে দলটি।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে রাজীব গান্ধী, পি ভি নরসিমা রাও, অটলবিহারি বাজপেয়ি ও মনমোহন সিংয়ের মন্ত্রিসভায় ছিলেন মমতা। দায়িত্ব সামলেছেন রেলসহ একাধিক মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু লড়াইয়ের মাটি ছাড়েননি তিনি।
পায়ে হাওয়াই চটি, সাধারণ সুতি শাড়ি আর অতি সাদামাটা জীবনযাত্রাকে পুঁজি করে মমতা ছুটে বেরিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। শারীরিক আক্রমণও তাকে দমাতে পারেনি। ব্যর্থতার পরও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।
২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে টাটা কোম্পানিকে সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ির কারখানা করতে চাষীদের অমতে জমি দিতে চেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলও (এসইজেড) করতে চেয়েছিলেন তিনি।
ওই দুই ইস্যু নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন মমতা। নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েকজন নিহত হন। শিউরে ওঠে গোটা রাজ্য। আর সিঙ্গুরে অনশনে বসেন মমতা নিজেই।
প্রতিবাদের মুখে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়তে বাধ্য হয় টাটা। নন্দীগ্রামেও হয়নি এসইজেড।
পশ্চিমবঙ্গে টানা ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকা বামদুর্গের পতন ঘটান মমতাই। ২০১১ সালের ২০ মে পশ্চিমবঙ্গের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি।
নিয়ম মেনে লোকসভা ছেড়ে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দুইবার বিধায়ক নির্বাচিত হন মমতা। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের মানসিকতা থেকেই লড়ছেন পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম থেকে।
ভারতে এ মুহূর্তে মমতা একমাত্র নারী মুখ্যমন্ত্রী। আঞ্চলিক নেতাদের মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয়ও তিনি। এখনও সমান প্রতিবাদী; মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসেও প্রতিবাদী চেহারা ছাড়েননি তিনি।
সম্প্রতি পায়ের হাড়ে চিড় ধরেছে মমতার। তবু হুইল চেয়ারে করে দলের হয়ে প্রচারে ব্যস্ত ৬৬ বছর বয়সী এই রাজনীতিক। গোটা রাজ্য চষে বেড়াচ্ছেন। কারণ তার দলের একমাত্র মুখ তিনিই। তাকে ঘিরেই কর্মীদের উচ্ছ্বাস।
১০ বছর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের উন্নয়নে মমতার অবদান কম নয়। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামো, সামাজিক প্রকল্প থেকে শুরু করে বেশ কিছু ক্ষেত্রে নতুন চিন্তাভাবনার প্রয়োগ করেছেন।
তাই ভোটের মাঠে প্রচারে এসে বিরুদ্ধ শিবিরের প্রধান সেনাপতি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘মমতা দিদিকে আমি বহুদিন চিনি। তিনি খারাপ নন। কিন্তু তার রিমোট কন্ট্রোল এখন অন্যের হাতে।’
মোদির বক্তব্যের লক্ষ্য, মমতার ভাইয়ের ছেলে তৃণমূলের সংসদ সদস্য অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। অভিষেকের প্রতি সন্তানসম দুর্বলতা রয়েছে সংসারজীবনে পা না রাখা মমতার। ঘনিষ্ঠজনেরাও বিষয়টি জানেন। আর তাই অভিষেকের ওপর ক্ষুব্ধ অনেকেই।
অভিষেককে বিজেপির প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্যে ‘তোলাবাজ ভাইপো’ বলেছেন। বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে অভিষেকের বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে নীরব মমতা।
মমতার আমলে সবচেয়ে বড় অভিযোগ- দুর্নীতি। তার আঁকা ছবি কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হওয়া নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। আছে তৃণমূলের তৃণমূলস্তর থেকে ওপরতলা পর্যন্ত দুর্নীতির অভিযোগও।
অবশ্য দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূলের অনেক নেতা নির্বাচনের আগে দলবদল করে বিজেপি শিবিরে যোগ দিয়েছেন। তাই দেখার পালা, দুর্নীতি মমতার পদ্ম-কাঁটা হয় কি না।
মমতা এবারের বিধানসভা নির্বাচনে জিতলে হ্যাট্রিক করবেন। আর হারলে? ৬৬ বছর বয়সে ফের ময়দানে নেমে তিনি লড়াই করতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকেরই। বিশেষ করে তিনি অসুস্থ। তার শরীরে রয়েছে বহু আঘাতের চিহ্ন।
তবু তিনি মমতা। পশ্চিমবঙ্গের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা সবাই এ বিষয়ে একমত, মমতা পারেন না এমন কোনো কাজ নেই।
বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা এখন পর্যন্ত বলছে, দলবদলে ব্যাপক ক্ষতি হলেও পশ্চিমবঙ্গে মমতার নেতৃত্বে ঘাসফুলই ফুটবে।
কলকাতার কালীঘাট এলাকায় সাধারণ এক পরিবারে ১৯৫৫ সালের ৫ জানুয়ারি জন্ম মমতার। মা গায়ত্রী দেবী ও বাবা প্রমীলেশ্বর বন্দোপাধ্যায়। মমতার বাবাছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। কলকাতার শ্রীশিক্ষায়তন কলেজ থেকে বি এ পাস করার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ পাস করেন। পরে কলকাতার যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজ থেকে এল.এল.বি ডিগ্রি অর্জন করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে খাদে পড়া একটি বাসের ৪৬ যাত্রীর মধ্যে ৪৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পরিবহন বিভাগ।
আল জাজিরা জানায়, বৃহস্পতিবারের ওই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া একমাত্র যাত্রী আট বছর বয়সী এক মেয়ে, যাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, জোহানেসবার্গ থেকে ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে মামাতলাকালা এলাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সেতুর ব্যারিয়ারে ধাক্কা খায় বাসটি। পরে ১৬৪ ফুট নিচের খাদে পড়া যানটিতে আগুন ধরে যায়।
পার্শ্ববর্তী দেশ বতসোয়ানা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার লিমপোপো প্রদেশের মরিয়া যাওয়ার পথে বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়।
ইস্টার সানডে উপলক্ষে লিমপোপোতে জনপ্রিয় উৎসবের আয়োজন করা হয়। এ বছর ৩১ মার্চ দিবসটি উদযাপন করা হবে।
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পূর্ণ তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবহনমন্ত্রী সিন্ডিসিওয়ে চিকুঙ্গা।
দুর্ঘটনায় কিছু কিছু যাত্রীর দেহ এমনভাবে পুড়ে গেছে যে, ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া তা শনাক্ত করা যাবে না।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার দপ্তর জানায়, বাস দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বতসোয়ানার প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন:পশ্চিমা ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার। এমনকি এর বাইরে পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক বা বাল্টিক কোনো দেশের ওপরও হামলা চালাবে না তারা। তবে ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিলে তা ধ্বংস করা হবে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
স্থানীয় সময় বুধবার রাশিয়ার বিমান বাহিনীর পাইলটদের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব কথা বলেছেন তিনি।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে পূর্ব দিক থেকে রাশিয়ার দিকে অগ্রসর হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। তবে রাশিয়ার এসব অঞ্চলের ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন পুতিন।
তিনি বলেন, ‘এ জোটভুক্ত দেশগুলোর প্রতিও কোনো আগ্রাসন দেখানো হবে না। পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক বা বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোকে ভয় দেখানো হচ্ছে বলে যেসব কথা রটানো হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ বাজে কথা।’
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে অর্থ, অস্ত্র ও বুদ্ধি দিয়ে সমর্থন করার অভিযোগ এনে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এ কারণেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর যে সম্পর্ক, তা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে।’
পশ্চিমারা ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেয়ার বিষয়ে পুতিন বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ইউক্রেনের পরিস্থিতি পাল্টাবে না। আর ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান ও রকেট লঞ্চারের মতো ওগুলোকেও (এফ-১৬) আমরা ধ্বংস করব।’
তিনি বলেন, ‘এসব যুদ্ধবিমান যদি ইউক্রেনের বাইরের কোনো দেশ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে আসে, তবে সেসব স্থানও আমাদের বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে, তা সে যে স্থানই হোক না কেন।’
এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কাও বাড়াবে বলে এ সময় সতর্ক করেন তিনি।
আরও পড়ুন:গাজা উপকূলে ইসরায়েলি সৈন্যরা দুজন নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার পর তাদের মরদেহ বুলডোজার দিয়ে বালুর নিচে চাপা দেয়ার একটি ভিডিও ফুটেজ সম্প্রচার করেছে আল জাজিরা।
এ ঘটনা তদন্তের জন্য বুধবার জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নাগরিক অধিকার ও অ্যাডভোকেসি সংগঠন ‘দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন (সিএআইআর)’।
আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার সিএআইআরের এ আহ্বানের কথা জানানো হয়।
আল জাজিরার দুই মিনিটের ওই ভিডিওটিতে দুই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একজনকে হাত উঁচু করে সাদা কাপড়ের টুকরো ওড়াতে দেখা যায়।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদা কাপড় দেখিয়ে ওই ফিলিস্তিনি হয়ত বোঝাতে চাচ্ছিলেন তারা কোনো হুমকি নন। দুজনই উপকূল বরাবর একটি উন্মুক্ত এলাকায় হাঁটছিলেন, সম্ভবত তারা উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন।
সিএআইআর জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার উপকূলে দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে, যারা কোনো হুমকি ছিল না। এরপর তাদের মৃতদেহ মাটিচাপা দেয়ার জন্য একটি সামরিক বুলডোজার ব্যবহার করা হয়।
এমন জঘন্য যুদ্ধাপরাধের আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিল বলেছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের ‘ইচ্ছে মতো’ হত্যা করছে এবং তাদের মৃতদেহগুলো ‘আবর্জনার মতো’ ব্যবহার করছে।
গণহত্যামূলক ইসরায়েলি সরকারকে জাতিসংঘের তদন্ত করা উচিত বলে মনে করছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুন:ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে কংগ্রেস তাকে প্রার্থী করার কথা ভাবছে বলে সূত্রের বরাতে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
বুধবার গোয়া, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং দমন ও দিউ- এই চার রাজ্যের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি (সিইসি) ১৮ জনের নাম অনুমোদন করেছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেস সানিয়া মির্জার জনপ্রিয়তা ও তার সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের দিকে নজর রেখে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কংগ্রেস সর্বশেষ ১৯৮০ সালে হায়দরাবাদে জিতেছিল এবং কে এস নারায়ণ সাংসদ হয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, সানিয়ার নাম প্রস্তাব করেছিলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক কংগ্রেস নেতা মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ২০১৯ সালে সানিয়া মির্জার বোন আনাম মির্জার সঙ্গে বিয়ে হয় ক্রিকেটারের ছেলে মহম্মদ আসাদুদ্দিনের।
আজহারউদ্দিন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তেলেঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যেখানে তিনি জুবিলি হিলস আসন থেকে ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) মাগন্তি গোপীনাথের কাছে ১৬০০০ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন।
এআইএমআইএম-এর একটি শক্ত ঘাঁটি হায়দরাবাদ, এই অঞ্চলে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির’ (কংগ্রেস) সাম্প্রতিক পুনরুত্থান এআইএমআইএমের আধিপত্যের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যা একটি তীব্র কঠিন লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
১৯৮৪ সালে সুলতান সালাহউদ্দিন ওয়াইসি হায়দরাবাদ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং পরে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এআইএমআইএম প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন।
এর পর আসাদ্দুদ্দিন ওয়াইসি ২০০৪ সাল থেকে এই আসনটি ধরে রেখে উত্তরাধিকার বহন করছেন। ২০১৯ সালে ওয়েইসির বিরুদ্ধে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি তার আধিপত্য বজায় রেখে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫৮.৯৪% পেয়ে আসনটি জিতেছিলেন।
এই লোকসভা নির্বাচনের জন্য হায়দরাবাদে বিজেপি মাধবী লতাকে প্রার্থী করেছে, এবং বিআরএস গদ্দাম শ্রীনিবাস যাদবকে প্রার্থী করেছে।
৫৪৩টি সংসদীয় আসনের নির্বাচন সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, যা ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১ জুন শেষ হবে। তেলেঙ্গানায় ভোট হবে ১৩ মে।
রাশিয়ার মস্কোতে গত শুক্রবার কনসার্ট হলে ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার দায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) স্বীকার করলেও এ ধরনের আক্রমণের সামর্থ্য জঙ্গি সংগঠনটির আছে বলে বিশ্বাস করে না রাশিয়া।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার তার দেশের এ অবস্থান ব্যক্ত করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
জাখারোভা বলেন, মস্কোর কনসার্ট হলে হামলা চালানোর মতো সামর্থ্য আইএসের আছে, এমনটি বিশ্বাস করা অত্যন্ত কঠিন।
সাম্প্রতিক ওই হামলায় নিহত হন কমপক্ষে ১৪৩ জন। আহত অনেককে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
মস্কোর উপকণ্ঠে ক্রোকাস সিটি হলে হামলায় ইউক্রেনের জড়িত থাকার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। যদিও এ দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তিনি।
রাশিয়ায় ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার পর দায় স্বীকার করে আইএস। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দাবি করেন, তাদের কাছে থাকা গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, হামলাটি চালায় আইএসের আফগান শাখা ইসলামিক স্টেট খোরাসান।
হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ বারবার নাকচ করেছে ইউক্রেন, তবে জাখারোভার ভাষ্য, ইউক্রেনকে হামলার দায় থেকে বাঁচাতে ত্বরিত গতিতে আইএসের ওপর দায় চাপায় পশ্চিমা দেশগুলো।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিন ও দেশটির অবরুদ্ধ উপত্যকা গাজার নির্যাতিত মানুষকে সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রে ইরান কখনও ইতস্তত বোধ করবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
গাজার শাসক দল হামাসের পলিট ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়ার নেতৃত্বে সংগঠনটির একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার তেহরানে সাক্ষাৎ করতে গেলে আয়াতুল্লাহ এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে প্রেস টিভি।
খামেনিকে উদ্ধৃত করে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, ‘ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এবং গাজার নিপীড়িত ও সহিষ্ণু জনগণকে সমর্থনের ক্ষেত্রে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান কখনও ইতস্তত বোধ করবে না।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় বিরতিহীন এ হামলায় গাজায় প্রাণ গেছে কমপক্ষে ৩২ হাজার ৪১৪ জনের।
এমন বাস্তবতায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে ‘ঐতিহাসিক ধৈর্য’ ধরার জন্য গাজাবাসীর প্রশংসা করে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বলেন, এ ধৈর্য ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য মর্যাদা ও গর্বের উৎসে পরিণত হয়েছে।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের শাংলা জেলার বিশাম এলাকায় মঙ্গলবার গাড়িবহরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিকসহ কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
মালাকান্দ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ আলি গান্দাপুরের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামাবাদ থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ার দুসু এলাকার ক্যাম্পে যাওয়ার পথে চীনের প্রকৌশলীদের গাড়িবহরে বিস্ফোরকভর্তি গাড়িটি উঠিয়ে দেয় আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী।
তিনি আরও বলেন, ‘হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিক ও তাদের পাকিস্তানি চালক নিহত হন।’
হামলার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাটি ঘিরে ফেলেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্তে নামায় এ পথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইসলামাবাদে চীনা দূতাবাস গিয়ে রাষ্ট্রদূত জিয়াং জ্যায়দংয়ের কাছে শোক প্রকাশ করেন।
এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘চায়না-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডরের (সিপিইসি) শত্রুরা আরও একবার এ ধরনের কাপুরুষোচিত কাজ করে একে ব্যাহত করার চক্রান্ত করেছে, কিন্তু অশুভ অভিলাষ পূরণে কখনই সফল হবে না তারা।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য